সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
১৭ চৈত্র ১৪৩১

তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই, চুয়াডাঙ্গায় বসন্তেই গ্রীষ্মের আঁচ

গরমের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট বেড়েছে। রোজাদারদের জন্য তা আরও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত 
ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৫ ২১:১১

চলছে বসন্ত; গ্রীষ্ম আসতে এখনও বাকি অন্তত দুই সপ্তাহ, এর মধ্যেই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ১৮ শতাংশ থাকায় গরমের অনুভূতি আরও বেড়েছে।

রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে এমন তীব্র গরমে নাকাল জেলার সাধারণ মানুষ। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে রোজাদারদের কষ্ট বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। কেউ কেউ শরীরে দুর্বলতা অনুভব করছেন, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ভুগছেন বেশি।

চুয়াডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘রোজা রেখে এই গরম সহ্য করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দুপুরের পর বাইরে বের হওয়া যায় না। গরমে মাথা ঘুরছে, শরীরও দুর্বল লাগছে।’

নিম্ন-আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের কষ্ট আরও বেশি। চুয়াডাঙ্গা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা নাম না প্রকাশ করতে চাওয়া এক রিকশাচালক বলেন, ‘কাজ না করলে খাবার জুটবে না, কিন্তু এই গরমে রোজা রেখে রিকশা চালানো খুব কষ্টকর; গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে পারদ বেড়ে যাচ্ছে।’

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে, গরমের কারণে শহরের রাস্তাঘাট তুলনামূলক ফাঁকা। অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। তবে দিনমজুর, শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রোদ-গরম উপেক্ষা করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা হাসান আলী বলেন, ‘বাজারে ক্রেতা কম আসছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ বের হচ্ছে না। আমরা তো ঘরে বসে থাকতে পারি না, বিক্রি না করলে সংসার চলবে কীভাবে?’

প্রচণ্ড রোদের মধ্যে বাস ও রেল স্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক কম দেখা গেছে।


নওগাঁয় ঈদে ঘুরতে বের হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যুবক নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর সাপাহারে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শাহিন আলম (১৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই জন।

সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কালাইবাড়ী-দিঘিরহাট আঞ্চলিক সড়কের মিরাপাড়া নামক স্থানে এই দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহিন আলম (১৭) পোরশা উপজেলার পশ্চিম হরিপুর গ্রামের মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ছেলে।

আহতরা হলেন, সাপাহার উপজেলার আলাদীপুর গ্রামের তাহিরের ছেলে আহসান আলী(১৭) এবং জামিরুল(১৭), জামিরুল পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল গ্রামের মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে।

সাপাহার থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বন্ধু মিলে ঈদে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন। অতিরিক্ত গতির কারনে মোটরসাইকেলটি মিরাপাড়া নামক স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে শহিন আলম নিহত হন। তার সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা বাকি দুই জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আহসান আলীর অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।


নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে শোলাকিয়ায় ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

প্রায় ৬ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর সেখানে ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় মুসল্লিদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল এই ঈদগাহ ময়দান।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় দেশের বৃহৎ এই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জামাতে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। খুতবা শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

এছাড়া নামাজ শেষে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের জন্য দোয়া করাসহ ফিলিস্তিনের গাজায় নিহত ও বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এর আগে রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজ শুরুর প্রস্তুতি নিতে সংকেত দেওয়া হয়।

এতে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেজাবে রহমত, পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাসহ সর্বস্তরের প্রায় ৬ লাখ মানুষ।

নামাজ শেষে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনানো হয়, স্মরণকালের বৃহত্তম এবারের ঈদ জামাতে আনুমানিক ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন।

এবার ঈদকে কেন্দ্র করে পাঁচ স্তরের নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পাঁচ প্লাটুন বিজিবিসহ র‍্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয় মুসল্লিদের। তাছাড়া প্রথমবারের মতো নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো সেনাবাহিনী।

জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মুসুল্লিদের ঢল নামে শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দূর থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।

একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে বিপুলসংখ্যক মুসুল্লি নিয়ে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।

মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হজরত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে ২৬৫টি কাতার রয়েছে।


রোহিঙ্গারা আগামী বছর নিজ দেশে ঈদ করার স্বপ্ন দেখছে

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদ উদযাপন। ছবি: রহমত উল্লাহ
আপডেটেড ৩১ মার্চ, ২০২৫ ১৫:২৩
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ ( কক্সবাজার)

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। সব মিলিয়ে এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্প ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের বসবাস। বাংলাদেশে আশ্রয়রত সাড়ে ৭ বছরের বেশি সময় ধরে আশ্রয়রত এসব রোহিঙ্গারা বছরে দুটি করে (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহা) ১৬টি ঈদ কাটিয়েছেন এই ক্যাম্পে।
সোমবার সকালে ৮ টার পর উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ঈদের নামাজ আদায় করেছে তারা।
এদের রাখাইনে মিয়ানমার সেনাদের চালানো নির্যাতনের বিভীষিকা আর অভাবের দাপটে এই উৎসবের রং সেখানে অনেকটাই বিবর্ণ।
রোহিঙ্গা শিবিরে ঈদের নামাজ আদায়ের পর কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন ইমাম ও মুসল্লিরা। মোনাজাতে অংশ নেয়া মুসলিমরা নির্যাতনের বিচার চেয়ে ও বাংলাদেশে সরকার-জনগনের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।
এদিকে সম্প্রতি ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গা যেন আগামী ঈদ নিজেদের মাতৃভূমিতে উদযাপন করতে পারে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া গতকাল রোববার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে ঈদের শুভেচ্ছা জানান ইউনূস।
এ বিষয়ে টেকনাফের লেদা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সাত বছর হতে চলছে। তবুও আমাদের কোনো কূল-কিনারা হচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের ঈদের আনন্দ বলতে কিছু নেই। আমরা 'খোলা কারাগারে' কষ্টের জীবন যাপন করছি। আমাদের বন্দিশালা থেকে মুক্ত করতে ডক্টর ইউনুস সরকার এসেছে। এটার জন্য আমরা বেশি খুশি এবং আনন্দিত। ডক্টর ইউনুসের কথায় আমরা আশাবাদী। আগামী বছর নিজ দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবো। '
তিনি বলেন, 'ক্যাম্প পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গা যেন আগামী ঈদ নিজেদের মাতৃভূমিতে উদযাপন করতে পারে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, সেটা শুনে আমাদের মাঝে নিজ দেশে ফেরার স্বপ্ন আলোর মুখ দেখছে। বিশেষ করে ঈদের নামাজে দোয়া চেয়েছি এ ঈদ যেন শেষ ঈদ হয় এদেশে (বাংলাদেশ)। আগামীতে যেন আমাদের ঈদ আরাকানে হয় এমন প্রত্যাশা আমাদের।'
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনা নির্যাতনের ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে তখন প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা এসেছিল। বর্তমানে পুরানোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।
শরণার্থী জীবনে “টাকা-পয়সা নাই, চলাফেরার সুযোগ নাই,” মন্তব্য করে মংডু থেকে আসা টেকনাফের জাদিমুড়া ক্যাম্পের বসবাসকারী রশিদ আহমেদ (৭২) বলেন, “আমরা দেশে যেভাবে ঈদ করতাম, এখানে সেভাবে ঈদ করতে পারিনি। কারণ সবকিছুর পরও এটা আমাদের দেশ না। এই জন্য আমাদের কোনও আনন্দ নেই। কোথাও বের হতে ভয় লাগে। বিশেষ করে সেদেশে (মিয়ানামারে) আমাদের শৈশবের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আছে সেখানে বাপ-দাদাসহ অনেক স্বজনদের কবর।'
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের দিন উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিবিরে শিশুরা সকাল থেকেই সেজেগুজে, নতুন জামা-কাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে।
শিশুদের জন্য টেকনাফের লেদা-জাদিমুড়াসহ কয়েকটি জায়গায় নাগরদোলা, চড়কিসহ মিনি মেলা বসেছে। এর আয়োজক নুর কামাল বলেন, এই মেলা কমপক্ষে তিন দিন থাকবে। এখানে শিশুরা এসে খুব আনন্দ উপভোগ করছে।
টেকনাফের জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, মিয়ানমারে অনেক আনন্দের ঈদ ছিল আমাদের। কিন্তু এখানে আমাদের সে খুশির ঈদ হয়না। এখানে মেহমান হিসাবে আছি। দেশে (মিয়ানমারে) ঈদ করে মা বাবার কবর জিয়ারত করতে পারতাম, নিজ মহল্লার মসজিদে গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারতাম। সেটি এখানে সম্ভব হচ্ছে না। নিজ দেশে চলাচল করতে ভয় ছিলনা,।
তিনি বলেন, ' ১৪ মার্চ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইফতার মাহফিলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী ঈদ নিজ দেশে উদযাপন করতে পারবে-তাদের এমন কথা শুনে আমাদের মন কেঁদে উঠে আরাকানের জন্য। আশা করছি তাদের এমন আশ্বাস আমাদের সাহস জোগায়। কেননা আমাদের খাদ্য সহতায় সংকট নিয়ে বড় সমস্যা ছিল। কিন্তু তাঁরা (প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস) যাওয়ার পর পরই সমাধান হয়েছে। তাই দেশে ফেরা নিয়ে তাদের কথা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছি খুব। '
রোহিঙ্গাদের মতে, কক্সবাজারের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ১৩৫০টি মসজিদ ও ৯৫০টি নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মত্তব) রয়েছে। এসব মসজিদ ও নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্টানে (আজ) ঈদের নামাজ আদায় করেছেন শরণার্থী রোহিঙ্গারা।
জানতে চাইলে ১৬ -এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি কাউসার সিকদার বলেন, 'রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেছেন। তবে কেউ যাতে ক্যাম্প থেকে বাইরে না যায়, সেজন্য তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ক্যাম্পে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকেও নজরদারি রাখা হচ্ছে।'


চট্টগ্রামে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের দিন সকালে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ৬ জন। আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের লোহাগড়ার জাঙ্গালিয়া মাজার গেট এলাকায় সৌদিয়া পরিবহনের বাসের সঙ্গে একটি মিনিবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে লোহাগড়া ফায়ার স্টেশনের ১টি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম চালায়। বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম-পরিচয়ও জানা যায়নি।


গজারিয়ায় মহাসড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ১

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় এয়ারপোর্টগামী মাইক্রোবাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে সে। তার কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৭৯০ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আটককৃত ছিনতাইকারীর নাম বিল্লাল হোসেন ওরফে ফারদিন (২৩)। সে গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে।

গজারিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, রবিবার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত পৌণে তিনটার দিকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ফারদিনকে ধরতে বালুয়াকান্দি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তার বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে। তার কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মোবাইল ফোন এবং ছিনতায়ের নগদ ৪৭৯০টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

খবর নিয়ে জানা যায়,শুক্রবার ( ২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে ঢাকা এয়ারপোর্টগামী একটি মাইক্রোবাস থেকে ৩টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় তিন ছিনতাইকারী। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসটির চালক রাজু বাদী হয়ে গজারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, 'এ ঘটনায় ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছি আমরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আমাদেরকে জানিয়েছে তারা চারজন ছিলো। একজন সিএনজি নিয়ে অপেক্ষা করছিল আর তিনজন সরাসরি ছিনতাইয়ে অংশগ্রহণ করে। বাকি আসামি আটকে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।


ময়মনসিংহে বাসচাপায় মা ও ২ মেয়েসহ নিহত ৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ময়মনসিংহে বাসচাপায় অটোরিকশায় থাকা মা ও দুই মেয়েসহ চারজন নিহত হয়েছেন।

আজ রোববার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের গৌরীপুর উপজেলার সাহেব কাচারি চন্দ্রপাড়া মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন—গৌরীপুর উপজেলার দুর্বাচর নামাবাড়ির ওবায়দুর রহমান আকন্দের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৯৫), গৌরীপুর উপজেলার ভাঙনামারি চরের মানিক মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মৎ দিলরুবা (৪০), দিলরুবার দুই মেয়ে রীতি (১৪) ও প্রীতি (৭)।
আহতরা হলেন— ভাঙনামারির নজরুল ইসলামের স্ত্রী শ্যামলী (২০) ও মোহাম্মদ মানিক মিয়ার মাহি (১৪)। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মাজাহারুল আনোয়ার এই দুর্ঘটনার সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী একটি বাস গৌরীপুরগামী একটি যাত্রীবাহী অটোরিকসাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হন।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


খুলনায় যৌথবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, আটক ১১, অস্ত্র উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৫ ১২:৩৩
ইউএনবি

খুলনার সোনাডাঙ্গায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা গোলাগুলির পর ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও গুলি।
শনিবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার পর সোনাডাঙ্গা থানার আরামবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আজম খান।
গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্য, নৌবাহিনীর একজন সদস্য এবং চার সন্ত্রাসী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসি আজম খান জানান, আরামবাগ মসজিদের অপর পাশে একটি বিল্ডিংয়ে কালা লাভলু সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা গোপন বৈঠক করছে—গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক পুলিশ সদস্য আহতও হন।
পরবর্তীতে নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি চলার একপর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান শেষ হয়। এ সময় ১১ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল, একটি একনলা শটগান, একটি কাটা বন্দুক, একটি চাইনিজ কুড়াল, কয়েক রাউন্ড গুলি ও সাতটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আটক সন্ত্রাসীদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ ছিল। তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ৩ জন পুলিশ সদস্য ও নৌবাহিনীর একজন সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের পুলিশ হাসপাতালে এবং নৌবাহিনীর সদস্যকে নেভি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটক সন্ত্রাসীরা হলেন— শেখ পলাশ, কালা লাভলু, আরিফুল, ফজলে রাব্বি, শরীফ, ইমরানুজজান, রিপন, ইমরান, সৈকত রহমান, সহিদুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী।


ঝিনাইদহে ট্রাকের ধাক্কায় নসিমন আরোহী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঝিনাইদহে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত ফজলু শেখ (৫৫) মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত কিয়াম উদ্দিনের পুত্র।

আজ রোববার (৩০ মার্চ) ভোর ৬টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালা বাজার সংলগ্ন ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আরাপপুর হাইওয়ে পুলিশের এসআই একেএম হাসানুজ্জামান জানান, নিহত ফজলু শেখ আজ ভোরে বায়না অনুযায়ী গরুর গোশত কেটে দেয়ার জন্য গরুসহ স্যালোমেশিন চালিত নসিমন যোগে ঝিনাইদহ শহরে যাচ্ছিলেন। পথে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কের কালা বাজারের কাছাকাছি পৌঁছলে একটি সিমেন্টবাহী ট্রাক নসিমনকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ফজলু শেখ চাপা পড়ে নিহত হন।

আরাপপুর হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বাসসকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ভোরের দিকে ঘটনাটি ঘটার কারণে ঘাতক ট্রাকটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে ট্রাকটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।


সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে লক্ষ্মীপুরে ১১টি গ্রামে ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে লক্ষ্মীপুরের ১১টি গ্রামে রোববার ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে।

জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, হোটাটিয়া, শরশোই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপা ও সদর উপজেলার বশিকপুরসহ ১১টি গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লী ঈদ উদযাপন করছে।

সকাল ৮টায় রামগঞ্জ উপজেলার খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় ও নোয়াগাঁও বাজারের দক্ষিণ-পূর্ব নোয়াগাঁও ঈদগাহ ময়দানসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় ঈদের অনেকগুলো জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় ইমামতি করেন মাওলানা রুহুল আমিন । এসব গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লী পৃথক পৃথকভাবে স্ব স্ব ঈদ গাঁ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

মাওলানা ইসহাক (রাঃ) অনুসারী হিসেবে এসব এলাকার মানুষ পবিত্র ভূমি মক্কা ও মদিনার সাথে সঙ্গতি রেখে ঈদসহ সব ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছে। এসব গ্রামের মুসল্লীরা গত ৪১ বছর যাবত সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উ দযাপন করে আসছেন।


৪ লাখ মানুষের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ৪ জন!

আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ১৬:৫৬
খোরশেদ আলম, নোয়াখালী উত্তর

সীমান্তবর্তী উপজেলা সোনাইমুড়ী। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৪ লাখ মানুষের বসবাস এখানে। বিরাট এই জনসংখ্যার চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে জনবল সংকট, প্রয়োজনীয় মেডিকেল মেশিনারিজ ও বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় সেখান থেকে স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মাত্র ৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আর ৪ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। প্রতিদিন কয়েক শ রোগী দেখতে হিমশিম খেতে হয় এই ডাক্তারদের। ভবন-সর্বস্ব সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য বলছে, হাসপাতালে ১১ জন কনসালটেন্টের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র চারজন বিশেষজ্ঞ। ১৭টি মেডিকেল অফিসার পদের বিপরীতে দায়িত্ব পালন করছেন চারজন। ২১ নার্সের দায়িত্ব রয়েছে আটজনের কাঁধে। মিডওয়াইফ চারজনের জায়গায় কাজ করছেন মাত্র একজন। নৈশপ্রহরী তিনটি পদের বিপরীতে রয়েছেন একজন, আর ক্লিনার আটজনের স্থলে রয়েছেন চারজন। এভাবেই জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইনি বিশেষজ্ঞ সোহানা শিকদার গত ছয় মাস পূর্বে অন্যত্র বলদি হওয়ার পর পদটি শূন্য রয়েছে। এই পদে বিশেষজ্ঞ না থাকায় প্রসূতি সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

হাসপাতালে সীমানা প্রাচীর নেই। তিনজন নৈশপ্রহরীর স্থলে রয়েছেন একজন। বিভিন্ন সময় চুরি হয় যাচ্ছে রোগীদের মূল্যবান জিনিসপত্র। মূল ভবন ও আবাসিক কোয়ার্টারের দরজা, জানালা, গ্রিল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া সন্ধ্যার পরে মাদকসেবীদের আনাগোনায় অনিরাপদ হয়ে ওঠে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করলেও তার সুরাহা মেলেনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে বহির্বিভাগে। রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। এছাড়া ডিউটি ডাক্তার ও নার্স সংকট থাকায় যথাযথ সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন ভর্তি রোগীরা। ক্লিনার সংকট থাকায় হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতেও বেগ পেতে হচ্ছে কর্মীদের।

মেডিকেল ইকুইপমেন্ট সংকটে গত ৮ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এক্স-রে সেবা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বার বার মেরামত করে চালানো হলেও পুরাতন মডেলের এক্স-রে মেশিনটি মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়ে রয়েছে। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবের কার্যক্রম বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। বিদ্যুৎ বিভ্রটের কারণে বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারছেন না ল্যাব টেকনিশিয়ানরা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই হাসপাতালে নেই জেনারেটর ব্যবস্থা। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ চলে গেলে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারী না থাকায় জরুরি ও বহির্বিভাগে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালটি নোয়াখালী-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাজনিত রোগীর চাপ থাকে। সে সময় প্রাথমিক চিকিৎসা দিতেও বেগ পেতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকবার চিঠি দিয়েও কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান জানান, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, মেডিকেল অফিসার ও কর্মচারী নেই। গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় সিজার বিভাগ বন্ধ হয়ে গেছে। একজন মিডওয়াইফ দিয়ে ডেলিভারি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রোগীদের বাইরের হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে। নিরাপত্তার অভাবে আবাসিক কোয়ার্টারে বসবাসকারীরা বাসার বরাদ্দ বাতিল করেছেন। প্রায় সময় রোগীদের মোবাইলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। জেনারেটর না থাকায় লোডশেডিং হলে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখতে হয়।


গরিবের বিনামূল্যের চালে প্রভাবশালীদের থাবা

আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ১৬:৫৫
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী ও প্রভাবশালীরা দলের নাম ব্যবহার করে গরিবের ভিজিএফের ১০ কেজির চালে ভাগ বসাচ্ছেন। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন অসংখ্য অসহায়, দুস্থ ও হতদরিদ্ররা। কতিপয় নেতা-কর্মী ও তাদের স্বজনরা চাল উত্তোলন করে প্রকাশ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে।

উপজেলার বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, সরকারিভাবে ভিজিএফের আওতায় উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ২৯৫ জন অহসহায় ও হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে প্রায় ৩২ টন চাল বরাদ্দ এসেছে। তারমধ্যে অলোয়া, গাবসারা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতবরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ঘুরে অসংখ্য দুস্থ ও হতদরিদ্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা পরিষদের বারান্দায় ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ঈদ উপহারের ১০ কেজির একটি স্লিপের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন, কিন্তু পরিষদ থেকে তাদের কোনো স্লিপ দেওয়া হচ্ছে না।

শুধু গোবিন্দাসীতে এমন অনিয়ম নয়- উপজেলার ফলদা, অর্জুনা ও নিকরাইলেও একই চিত্র। চেয়ারম্যানদের চাপ সৃষ্টি করে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে শত শত ভিজিএফের স্লিপ হাতিয়ে নিচ্ছেন কতিপয় নেতা-কর্মী।

বঞ্চিতরা অভিযোগ করে বলেন, মেম্বারদের কাছে গেলে তারা জানান, মাত্র কয়েকটি ভিজিএফের স্লিপ পেয়েছিলেন। কাকে রেখে কাকে দেবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। তারা আরও বলেন, ‘আমরা হতদরিদ্র ও গরিবরা চাল পাচ্ছি না। বিএনপির নাম করে তাদের দলীয় নেতা-কর্মী ও প্রভাবশালীরা সরকারের ঈদ উপহারের চালে ভাগ বসিয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য জানান, ঈদ উপহারের ভিজিএফের মাত্র ৩০-৩৫টি করে স্লিপ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বাকিগুলো তিনি কি করেছেন, তিনিই জানেন।

গোবিন্দাসী ইউপি দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, ‘মেম্বারদের দেওয়া হয়েছে ৩০টি করে, আমি দুস্থদের দেওয়ার জন্য ১৫০টি নিয়েছি, প্রতিটি ওয়ার্ড বিএনপি নিয়েছে ৫০টি করে। এর বাইরে অন্যান্য বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বাকিগুলো বণ্টন করে নিয়েছেন।’

ফলদা ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আবু সাঈদ ওরফে স্বপন বলেন, তিনি নিজে বিতরণের জন্য নিয়েছেন ২০০, উপজেলা পরিষদ থেকে বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে ২০০, দলীয় নেতা-কর্মী নিয়েছে ৬০০ এবং বাকিগুলো মেম্বাদের দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পপি খাতুন বলেন, ‘চেয়ারম্যান মেম্বারদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন প্রকৃত দুস্থ ও হতদরিদ্ররা সরকারের ঈদ উপহার পায় এবং এর কোনো ব্যত্যয় না ঘটে।’


অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের প্রধান আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৫ ২৩:১০
প্রতিনিধি, টেকনাফ (কক্সবাজার)

টেকনাফের পাহাড়ে অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের নেতা কেফায়েত উল্লাহকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১১ রাউন্ড গুলিসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

আজ (২৮ মার্চ) ভোরে টেকনাফের হাজমপুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।


বাহারছড়া ইউনিয়নের কাচ্চাইপিয়া এলাকার নূর হোসেনের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ (২৭) একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ এবং মানব পাচারের অভিযোগ সহ ১১টি মামলা চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি গিয়াস উদ্দিন।

"কেফায়েত উল্লাহ টেকনাফে পরিচালিত একটি পাহাড়ি অপহরণ ও সমুদ্রপথে মানব পাচারকারী চক্রের নেতা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১১ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়," তিনি আরও বলেন।

কেফায়েত উল্লাহকে গ্রেপ্তারের ফলে তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে তাকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৪০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। একই সময়ে উখিয়ার আশেপাশের এলাকা থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছে।


banner close