খুলনা মহানগরীতে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) খুলনা কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন।
এর আগে মাসুদ কর্মরত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার তদন্ত পরিদর্শক পদে। তার আগে ছিলেন খুলনার তেরখাদা থানার এসআই হিসেবে। এই দুই থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায়ও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগে ওই দুই থানা থেকে তাকে প্রত্যাহারও করা হয়েছিল।
খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, ‘কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত রোববার রাতে তার বাবা একটি মামলা করেছেন। পুলিশ মাসুদকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।’ মামলার বরাতে ওসি বলেন, ‘গত ১০ মে মাসুদের সাথে ওই কলেজছাত্রীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তখন মেয়েটি তার ছবি অন্য একটি আইডি থেকে ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে বলে, মাসুদের কাছে ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চায়। পরে তার সাথে মাসুদ নিয়মিত কথা বলতো।
‘এক পর্যায়ে রোববার দুপুরে ওই ছাত্রীকে ফেসবুকে নিরাপত্তা শেখাতে ডেকে নিয়ে এসে মাসুদ ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটিকে হুমকি ধামকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তখন মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়।’
ওসি হাসান আল-মামুন জানান, ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষনিকভাবেই মাসুকদে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করে পুলিশ। একইসঙ্গে মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণ মামলাটির মাসুদের অতীত সম্পর্কেও জেনেছি। তার বিরুদ্ধে আগেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
মাসুদের আগের কর্মস্থল খুলনার তেরখাদা থানার সদর ইউনিয়ন পরিষদর সদস্য জাহাঙ্গীর মুন্সি বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ তেরখাদায় কর্মরত ছিলেন। তখন সদরের দক্ষিণ পাড়ায় রাজা মুন্সির বিবাহিত মেয়ে রুনাকে তিনি উত্যক্ত করতে শুরু করেন। পরে রুনার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনাটি জানাজানি হলে রুনাকে তার স্বামী রনি ডিভোর্স দেয়। পরে এক সন্তানসহ রুনাকে বিয়ে করেন মাসুদ। সেই স্ত্রী এখন তার ঘরে আছেন।’
জাহাঙ্গীর মুন্সি জানান, সে সময় ওই ঘটনাটি তেরখাদায় বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় এবং পুলিশের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস বেড়ে যায়। চারদিক থেকে পুলিশের নিন্দা শুরু হয়। পরে বাধ্য হয়ে ওই থানা থেকে মাসুদকে প্রত্যাহার করা হয়।
১৩ বছর আগের সেই বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাদের এলাকায় চাকরি করতে এসে আমাদের নিরাপদে রাখা তো দূরের কথা। সে পরের বউ ভাগিয়ে নিয়ে যায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে আমরা এটা আশা করি না।’
এদিকে তালা থানার তদন্ত পরিদর্শক থাকার সময়ও মাসুদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠেছিল। তালা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের মো. সেলিম জানান, তাদের একটি জমি সংক্রান্ত আদালতের মামলা ২০১৭ সালে তালা থানার অধীনে তদন্ত হচ্ছিল। তখন তাদের প্রতিপক্ষের বাড়িতে তদন্তে গিয়ে মাসুদ একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে সেই প্রেমের সূত্রেই প্রতিপক্ষের পক্ষ নিয়ে জমি দখল করিয়ে দেন মাসুদ।
সেলিম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। তখন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় থেকে মাসুদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। এতে সে দোষী প্রমাণিত হলে তালা থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।’
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, ‘মাসুদের পোস্টিং ছিল পিবিআই হেড কোয়ার্টারে। তাকে খুলনা কার্যালয়ে সংযুক্ত রাখা হয়েছিল। ধর্ষণ মামলার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিবিআই-এর হেড কোয়ার্টারে চিঠি দেয়া হয়েছে।’
রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আমবাগান এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী ও চালক।
নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের কাজীপাড়ার সোয়ার আলীর ছেলে আবু তোরাব (৪৫), রাঙামাটির কাউখালীর তালুকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে নূর নাহার (৪০), রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ার ডাবুয়া মংশি মারমার মেয়ে মিনু মারমা (৩৫), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মিরহাটের মাহাবুবুর রহমান বাচ্ছু (৫৫), চট্টগ্রামের রাউজানের মো. জয়নাল আবেদীন (৬৩) ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির মৃত গুলজারের ছেলে ইজাদুল (২৫)। ইজাদুল সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেতবুনিয়ার মনারটেক এলাকায় রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা (চট্ট মেট্রো থ ১১-৯১৭৩) ও বিপরীত দিক আসা পিকআপের (চট্ট মেট্রো ন ১১-৬৪৯২) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে অটোরিকশাটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজন এবং চট্টগ্রামে মেডিক্যালে একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, এটা মর্মান্তিক ঘটনা। ৬ জনের মধ্যে তিনজনকে রাঙামাটির মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মর্গে এবং একজন রাউজানের জেকে মেমোরিয়াল হাসপাতালে আছে।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পলাতক চালককে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ভোলার দৌলতখানে অভিযান পরিচালনা করে ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে দৌলতখানের মদনপুরের চর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, আলাউদ্দিন (৪৫), জহির উদ্দিন বাবর (৪৮) এবং লোকমান (৪২)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৩ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ টি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৯ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
কোস্ট গার্ড বলছে, গ্রেপ্তাররা সবাই দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরের বাসিন্দা এবং পেশাদার কুখ্যাত ডাকাত।
আজ শুক্রবার বিকেলে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদে ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২ টায় কোস্ট গার্ড বেইস ভোলা’র একটি দল দৌলতখান উপজেলার মদনপুরের চর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৩ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ টি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৯টি ১ হাজার টাকার জাল নোটসহ ৩ জন কুখ্যাত ডাকাতকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
আনন্দমুখর পরিবেশে ও বর্ণিল সাজে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘বৈশাখী পার্বণ ১৪৩২’। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স-এর উদ্যোগে দিনব্যাপী এ উৎসবে ছিলো নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, বাঙালি খাবার, বৈচিত্র্যময় স্টল, বাংলার লোকজ ও সাজসজ্জার উপকরণ। এতে ফুটে ওঠে বাঙালির সংস্কৃতির রঙ ও সৌন্দর্য। ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ইউনিভার্সিটির এনেক্স ভবনের সামনে খেলার মাঠে এই উৎসবে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইয়াসমীন আরা লেখা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী। রঙিন ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায়, আনন্দঘন পরিবেশে মেতে উঠেছিল পুরো ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণ।
ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বাহারি ধরণের স্টল স্থাপন করেন। সেখানে ঐতিহ্যবাহী পণ্যের প্রদর্শনীর পাশাপাশি শোভা পায় বৈশাখী মিষ্টি-মন্ডা, বাতাসা, মুড়ি, চিড়া ও মোয়া ইত্যাদি।
বাঙালি জীবনধারার নানা দিক তুলে ধরতেই এবারের আয়োজনে ছিলো নাগরদোলা ও বায়োস্কোপ। গ্রামীণ পরিবেশে সাজানো হয় প্রবেশপথ ও রং তুলির আঁচড়ে সেজেছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়াল। উৎসবের প্রথম পর্বে ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্বে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত নৃত্য, গান, আবৃত্তি ও অভিনয় উপভোগ করেন উপস্থিত সকলে।
উপাচার্য ড. ইয়াসমীন আরা বলেন, বৈশাখের এই আয়োজন কেবল একটি অনুষ্ঠান নয় বরং এটা আমাদের শেকড়কে ছুঁয়ে দেখার মূল উপলক্ষ। যেখানে জড়িত থাকে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। অনুষ্ঠান আয়োজকরা জানান, এই উৎসব ছিল শুধুমাত্র আনন্দের নয় বরং একতা, সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মিলনমেলা।
দিবসটির অন্যতম আকর্ষণ ছিল ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করেন ব্যান্ড দল ‘আকাশ গায়েন’। নবর্বষের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালকবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টর, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন স্টুডেন্ট ক্লাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল দর্শক প্রাণভরে উপভোগ করেন উৎসবের রঙিন আমেজ। অনুষ্ঠানের স্পন্সর হিসেবে ছিলো এক্সিম ব্যাংক ও কো-স্পন্সর হিসেবে ছিলো হক কনসালটেন্সি।
অপহরণের সাতদিন পর মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী। তবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে একদিন পর বৃহস্পতিবার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে। অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী বর্তমানে তাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বার্তা সংস্থা ইউএনবি বলেন, ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিবৃতি দিয়েছে যে তারা তাদের সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ফিরে পেয়েছে। আমরা ওই ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারে সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাও নিজেদের পরিবার সদস্যদের ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাহলে এখন মোটামুটি ধরে ধরে নেওয়া যায় যে ওই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরিবারের হেফাজতে আছেন।’
বিজু উৎসব উদ্যাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাতনামা স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা চালককে ওই সময় ছেড়ে দিয়েছিল।
পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় শুরু থেকে ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে জেএসএস–সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।
কুড়িয়ে পাওয়া এক অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সাভারে বংশী নদীর পাড়ে ময়লার ভাগাড় থেকে একমাস বয়সের এক শিশুকে কুড়িয়ে পায় এক বৃদ্ধ নারী। ওই শিশুটির হৃদপিন্ডে রয়েছে জটিল ত্রুটি। এ খবর জানার পর হতভাগ্য শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশে শিশুটির চিকিৎসা সহায়তা করছেন বিএনপির নেতারা।
আজ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম ও ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি, ছাত্রদল (উত্তর) আহ্বায়ক তমিজ উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাসুদ, ঢাকা জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম, যুবদল নেতা চম্পক, বিএনপি নেতা হযরত আলী, সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন মাতবর, ছাত্রদল নেতা নাঈম প্রমুখ।
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় যাত্রাদলের জীবন কাহিনী নিয়ে লেখা "রূপশ্রী অপেরা" বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রীতি সম্মিলিত অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলা একাডেমি গবেষণা কর্মকর্তা ও প্রাবন্ধিক-গবেষক মামুন সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নওগাঁ শহরের ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারের অডিটোরিয়ামে মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাড. ডিএম আব্দুল বারী।
এসময় বক্তব্য রাখেন- সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, কবি ও গবেষক আতাউল হক সিদ্দিকী, রূপশ্রী অপেরা বইয়ের লেখক এম.এম রাসেল ও যাত্রা শিল্পী সন্তোষ কুমার দাস সহ অন্যরা। এসময় যাত্রাশিল্পের সাথে জড়িত পরিবারের সদস্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুধিজনরা উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রাশিল্প আমাদের সংস্কৃতি ও এর ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। এক সময় গ্রাম বাংলার বিনোদনের মাধ্যম বলা যায় এই যাত্রাশিল্প। যেখানে উচ্চ শব্দ ও চড়া আলোর ব্যবহার এবং অতিনাটকীয় ভাবভঙ্গি ও আবৃত্তির মাধ্যমে যাত্রার উপস্থাপনা করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি নাটক, পালা, পুঁথি ছিলো বিনোদনের মাধ্যম। শীতের রাতে চাদর মুড়ি দিয়ে রাত জেগে গ্রামবাংলার মানুষ যাত্রা দেখায় মজে থাকত। বিশেষ করে- দেবি সুলতানা, আনারকলি, মহুয়া সুন্দরী ও কাশেম মালার প্রেম যাত্রা ছিল অন্যতম। দর্শক শ্রোতা নৈতিক মুল্যবোধ, ব্যক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে যাত্রাপালা প্রভাবিত করতো। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে যাত্রাপালা বিলিন হয়ে গেছে। "রূপশ্রী অপেরা" বইটিতে স্থান পেয়েছে যাত্রার উঠে আসা এবং বিলিন হওয়ার গল্প। যাত্রাপালার সাথে যেসব শিল্পী জড়িত তাদের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার গাজীখালী নদীর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বেইলি সেতু এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য যেন মরণফাঁদ। ২০১১ সালে নির্মিত বিকল্প এই সেতুটি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছে। সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের কারণে সেতুর একটি অংশ প্রায় ৫ ফুট দেবে যাওয়ায় এটি একদিকে কাত হয়ে পড়েছে এবং সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে সাটুরিয়া, ধামরাই ও নাগরপুর উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি সাটুরিয়া ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বিশেষ করে প্রতি বৃহস্পতিবার হাটের দিনে এখানে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এবং তাদের অনেকেই এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ব্যবহার করেন। সেতুটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক শিশু শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
সেতুটির বিপজ্জনক অবস্থা উপলব্ধি করে নির্মাণকারী সংস্থা, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ), একটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগিয়ে তাদের দায়িত্ব সেরেছে। সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, ‘সাবধান, ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতু। এই বিকল্প সেতু দিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিষেধ।’
তবে পেটের দায়ে ও প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন সেতুটি ব্যবহার করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০১০-১১ অর্থবছরে গাজীখালী নদীর ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের প্রকল্প গৃহীত হয় এবং ২০১৩ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবরে সেটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। নতুন সেতু চালু হওয়ার পর ভারী যানবাহন চলাচল করলেও, বিকল্প ডাইভারশন বেইলি সেতুটি পথচারীদের জন্য রয়ে যায়। এলাকাবাসীর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সওজ কর্তৃপক্ষ সেতুটি অপসারণ করেনি।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিকল্প রাস্তার ওপর নির্মিত স্টিলের বেইলি সেতুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেবে গিয়ে মারাত্মকভাবে হেলে আছে। সেতুর একাংশ সংযোগ সড়ক থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। সেতুর পিলারের পাশেই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন থাকায় মাটি সরে যাওয়ার কারণে সেটিও যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ওষুধ ব্যবসায়ী মো. লিয়াকত আলী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিন কিন্ডারগার্টেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজের প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হচ্ছে। কোমলমতি শিশুদের কথা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিকল্প সেতুর পাটাতনে মরিচা ধরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাতে চলাচলকালে অনেকেই আহত হচ্ছেন। এলাকাবাসী মিলে নিজেদের খরচে কিছু স্থানে ওয়েল্ডিং করে গর্তগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। হাসপাতালগামী রোগী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সেতুটি মেরামত করা দরকার।
সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার সরকার বিকল্প সেতুটি নিচু করে নির্মাণ করার সমালোচনা করে বলেন, ‘বর্ষাকালে সেতুর দুপাশে কচুরিপানা জমে পরিবেশ দূষিত করে এবং মশার উপদ্রব বাড়ে। আমরা সেতুটি উঁচু করে নতুন করে নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মামুনুর অর রশিদ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছেই এই সেতুটি অবস্থিত। এটি সংস্কার করা হলে এলাকার মানুষ এবং হাসপাতালে আসা রোগীরা উপকৃত হবেন।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবাশীষ সাহা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সেতু দিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি একটি ডাইভারশনের ওপর নির্মিত বিকল্প সেতু ছিল। জনগণের অনুরোধ ও বাধার কারণে এটি অপসারণ করা যায়নি। তবে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতবাড়িতে প্রবেশ করে উল্টে যায়। সেই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক ঘুমন্ত নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা টার দিকে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের ভূঞাপুর পৌর এলাকার টেপিবাড়ী মোড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম মোছা. রমেছা বেগম (৫৫)। সে ভূঞাপুর পৌর এলাকার টেপিবাড়ী এলাকার আব্দুল কদ্দুসের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, ফজর নামাজ আদায় করে রমেছা বেগম ঘুমিয়ে পড়ে এবং তার স্বামী কদ্দুস নামাজ পড়তে মসজিদে চলে যান। এর মধ্যেই হঠাৎ জামালপুরগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রমেছার বসতঘরে ঢুকে উল্টে পড়ে এবং সেই ট্রাক চাপায় ঘুমন্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ সময় স্থানীয়রা ট্রাক চালককে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ভূঞাপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।
ভূঞাপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনন্ত দাস সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে ঢুকে উল্টে যায় এবং সেই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক নারী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে।
বৈসুক উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ছোটবাড়ি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।
ছোটবাড়ি পাড়ার কার্বারী কিনারাম ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ সদস্য প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক রেভিলিয়াম রোয়াজাসহ ছোটবাড়ি পাড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার তুলেদেন পরে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সারা শরীরজুড়ে সিগারেট-কয়েলের ছ্যাঁকা ও আঘাতের দাগ। উপড়ে ফেলা হয়েছে হাতের নখ। অমানুষিক এই নির্যাতন করা হয়েছে মাত্র ছয় বছর বয়সি একটি শিশুর ওপর।
পাবনা শহরের ছাতিয়ানি এলাকার শিশু সোয়াইব হোসেনকে অপহরণের পর আটকে রেখে রাতের বেলায় চলত এমন নির্যাতন। প্রতিবন্ধী বানিয়ে দিনে নামানো হতো ভিক্ষাবৃত্তিতে। উদ্ধারের পর ক্ষুধা ও নির্যাতনে সোয়াইবের কঙ্কালসার দেহ চিনতে কষ্ট হচ্ছে মায়ের।
গত শুক্রবার শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বিপ্লব (৩০) নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ছয় মাস আগে গত ৭ অক্টোবর বিস্কুট কিনে দেওয়ার কথা বলে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব (৬) পাবনা শহরের ছাতিয়ানি এলাকার আমিনুল ইসলাম ও সোহানা জাহানের ছেলে। বাবা অন্যত্র বিয়ে করায় মায়ের কাছে থাকত শিশুটি।
অপহরণকারী রফিকুল ইসলাম বিপ্লব উপজেলার শানির দিয়ার এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অপহরণের পর সন্তানের খোঁজ না পেয়ে গত ৭ অক্টোবর পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা সোহানা জাহান। আত্মগোপনে থাকা অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লব শিশু সোয়াইবের মাকে ফোন করে অপহরণে কথা জানান। বেশির ভাগ সময় তার ফোন বন্ধ থাকত। জিডির পর ফোন নাম্বার ট্র্যাক করে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে পুলিশ। গত শুক্রবার খুলনার রূপসা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভিক্ষারত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকেও আটক করা হয়।
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব জানায়, রাতে তাকে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখা হতো। সহজে কিছু খেতে দিত না। তার শরীরে দাঁতের কামড় বসিয়ে চামড়া তুলে ফেলা হতো। সারা শরীরে দেওয়া হতো সিগারেট ও কয়েলের আগুনের ছ্যাঁকা। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। রাতের এমন নির্যাতন শেষে দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাতো বিপ্লব।
সোয়াইবের মা সোহানা জাহান বলেন, ‘পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সেদিন বিপ্লব আমার কাছ থেকে ছেলেটাকে নিয়ে যায় বিস্কুট কিনে দেবে বলে। তারপর থেকে ছেলেকে আর খুঁজে পাইনি। পরে সে ফোন করে জানিয়েছিল যে আমার ছেলেকে সে অপহরণ করেছে। তারপর থেকে তার ফোনও বন্ধ। এরপর সদর থানায় গিয়ে ঘটনা জানিয়ে জিডি করি।’
সোহানা জাহান আরও বলেন, ‘উদ্ধারের পর প্রথম দেখায় ছেলেকে চিনতেই পারিনি। দিনের পর দিন কীভাবে আমার শিশুসন্তানকে নির্যাতন করেছে ভাবতেই বুকটা ফেটে যায়। প্রায় প্রতিবন্ধী বানিয়ে ফেলেছে। কঙ্কালসার শরীর নিয়ে ছেলেটা হাসপাতালের বেডে। নড়াচড়াও করতে পারছে না। অমানুষ বিপ্লবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শিশুটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান ডা. মাসুদুর রহমান প্রিন্স বলেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার হাতের একটা আঙুল কেটে ফেলতে হবে। সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। ঠিকমতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, অপহরণ করে নিয়ে শিশুটিকে এক প্রকার প্রতিবন্ধী বানিয়ে তাকে ভিক্ষা করাতো অভিযুক্ত বিপ্লব। তথ্যপ্রযুক্তি ও খুলনার রূপসা ফেরিঘাট ফাঁড়ি পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার ও শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে অভিযুক্ত বিপ্লবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর শিশু সোয়াইব হোসাইন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যৌথভাবে যশোর ও রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৩৫ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি পরিচালনায় বছরে সরকারের ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচ হলেও কোনো সুফল নেই। সড়কে পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় সেবা দিতে পারছে না। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোল সড়কে স্কেল চালু করলে এ রুটে বাণিজ্য কমার আশঙ্কায় স্কেল ব্যবহারে তাদের আপত্তি রয়েছে।
প্রতিবছর সড়ক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। তবে পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকচালকরা সড়ক আইন না মানায় অল্প দিনেই সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। এতে সড়ক ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে দুর্ঘটনা। সড়ক পথে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাড়াতে জাপানি এনজিও সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল পৌর গেট এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ওয়িং স্কেল স্থাপন করে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট ওয়িংস্কেল পরিচালনায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা চুক্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইউডিসিকে টেন্ডার দেয় সরকার। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মকর্তা প্রকৌশলী ও কর্মচারীসহ স্কেল পরিচালনায় ৪২ জন কাজ করছেন। নিরাপত্তায় রয়েছে ৭ জন আনসার সদস্য। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনে প্রথম টনে ৫ হাজার ও দ্বিতীয় টনপ্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে স্কেলে অতিরিক্ত পণ্য শনাক্ত হলেও জরিমানা আদায় বা ওভার লোড বন্ধে কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণে অর্থ বিফলে যাচ্ছে এবং অতিরিক্ত পণ্য বহনে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলেন, নওয়াপাড়া ও ভোমরা বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোলে স্কেল চালু করলে এ রুটে ব্যবসা কমে আসবে। পার্শ্ববর্তী বন্দরগুলোতে স্কেল চালু হলে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি ব্যবহার করবেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জমান সনি বলেন, পদ্মা নদীর এপারে বেনাপোলসহ আরও চারটি বন্দর রয়েছে। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দর। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দরে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন না করে বেনাপোল বন্দরসংলগ্ন সড়কে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করে আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল যশোর সড়কে ওজন স্কেল স্থাপনকে সাধুবাদ জানায়। তবে অন্য তিনটি বন্দরে ওজন স্কেল স্থাপন করে একত্রে চারটি বন্দর সংলগ্ন সড়কে ওজন স্কেল চালু করার দাবি জানায়। শুধু বেনাপোলে সড়কে ওজন স্কেল চালু করা করা হলে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেনাপোল বন্দর। এ জন্য এ স্কেল ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
বেনাপোলের ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোল-যশোর সড়কের পৌর গেট এলাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করার ফলে ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী মোংলা, ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দরে কোনো ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়নি। বেনাপোল সড়কের ওজন স্কেল চালু করা হলে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। অন্য বন্দর দিয়ে ট্রাকে মাল একটু কম বা বেশি হলেও কোনো সমস্যা হবে না। তাহলে কেন আমি এ বন্দর দিয়ে মাল এনে জরিমানা দিব? পার্শ্ববর্তী অন্য বন্দরগুলোয় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল চালু করা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি রোকনুজ্জামান জানান, বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে থাকে। এ বন্দরে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বেনাপোল-যশোর সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। ট্রাকগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য বহন করলেও কোনো ওজন স্লিপ না থাকার কারণে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বেনাপোল পৌর গেটে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ স্কেলটি চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা সদরে আজ সুরমা নদীতে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে বিভিন্ন ভারতীয় কসমেটিক্স সামগ্রী ও বিস্কুট জব্দ করেছে টাস্কফোর্স।
আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে সুরমা নদীর সাহেব বাড়িঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান হৃদয়-এর নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়।
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সুরমা নদীর সাহেববাড়ি ঘাট এলাকায় টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে মালিকবিহীন একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ ভারতীয় বেটনোবিট সি, হোয়াইট টোন, পন্ডস ব্রাইট ক্রিম ও অন্যান্য কসমেটিক্স আইটেমসহ মোট ছয়হাজার ১৩০ পিস কসমেটিক্স সামগ্রী এবং চারহাজার ১৭০ প্যাকেট ভারতীয় বিস্কুট জব্দ করা হয়। জব্দকৃত সামগ্রির আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯২০ টাকা।
অভিযানে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম-সহ বিজিবি জওয়ানরা অংশ নেন।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জব্দকৃত ভারতীয় পণ্য সুনামগঞ্জ কাস্টমস কার্যালয়ে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।