মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৫ বৈশাখ ১৪৩২

শিক্ষক সংকটে ধুঁকছে নওগাঁর প্রাথমিক শিক্ষা

বদলগাছী উপজেলার বিলাসবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ২১:৫৫

প্রবাদে আছে ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’। কিন্তু নওগাঁয় প্রাথমিক স্তরেই সেই শিক্ষাকার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষকসংকটে। একটি-দুটি নয়, এই জেলায় প্রধান শিক্ষক নেই ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এ ছাড়া ৫২০টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য এই জেলায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসও সংকটের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, এ জেলায় মোট ১ হাজার ৩৭৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০টি সরকারি প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। নওগাঁ সদর উপজেলায় ২১টি, আত্রাই উপজেলায় ৩৮টি, ধামইরহাট উপজেলার ২৫টি, নিয়ামতপুর উপজেলায় ১৭টি, পত্নীতলা উপজেলায় ২৬টি, পোরশা উপজেলায় ১৩টি, বদলগাছী উপজেলায় ৩০টি, মহাদেবপুর উপজেলায় ৪৬টি, মান্দা উপজেলায় ৪২টি, রানীনগর উপজেলায় ৩৪টি এবং সাপাহার উপজেলায় ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এ ছাড়া এ জেলায় ৫২০ জন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য।

নওগাঁর বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক শূন্যতার কারণে বিদ্যালয়গুলোয় কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। এ ছাড়া তাদের অতিরিক্ত পাঠদানের পাশাপাশি ও দাপ্তরিক কাজে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে।

মান্দা উপজেলার চকশ্রীকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাহারুল ইসলাম বাদশা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ১৮৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক পাঁচজন। দাপ্তরিক কাজেই বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয়।’

মহাদেবপুর উপজেলার শালগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রায় দুই বছরের মতো হলো প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমাকে দাপ্তরিক কাজ, শিক্ষা অফিসে বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের কাজে যেতে হয়। আবার পাঠদানও করাতে হয়। আমাদের বিদ্যালয়ে মোট ১৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আমিসহ শিক্ষক পাঁচজন।’ একই কথা নওগাঁ সদর উপজেলার চকএনায়েত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা নাছরিনেরও।

যা বলছেন অভিভাবক ও বিদ্যালয়সংশ্লিষ্টরা

মান্দার শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের জয়ন্ত সরকার বলেন, শ্রীকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার মেয়ে পড়াশোনা করে তৃতীয় শ্রেণিতে। সেখানে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বেশি ক্লাস নিতে পারেন না বলে আমার মেয়ে বলেছিল আমাকে। আর একই শিক্ষককে অনেকগুলো ক্লাস নিতে হয়, যার কারণে ঠিকমতো পাঠদান হয় না। বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত।’

মহাদেবপুর উপজেলার শালগ্রামের মিজানুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলে শালগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। প্রধান শিক্ষক নেই, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আছেন, তাকে তো বেশির ভাগ সময় দাপ্তরিক কাজ করতে হয়। চারজন শিক্ষক দিয়ে কীভাবে স্কুল চলে? আমার ছেলে মাঝে মাঝে বলে, একজন স্যার অনেকগুলো ক্লাস নেন।’

সদর উপজেলার চকএনায়েত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু মো. বখতিয়ার ইনাম ববিন বলেন, প্রধান শিক্ষকসহ আরও দুই শিক্ষক খুবই প্রয়োজন। এতগুলো শিক্ষার্থীর পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষকসংকটের কারণে। অভিভাবক হিসেবে দাবি করছি, যেন দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। আত্রাই উপজেলার নবাবের তাম্বু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাফিউল ইসলামও বললেন, প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

এই অবস্থার ঠিক বিপরীত দৃশ্য প্রধান শিক্ষক ও প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক থাকা বিদ্যালয়গুলোর। এমনই একটি বিদ্যালয় নওগাঁ সদর উপজেলার চররামচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হোসনে আরা রিতা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আসমাতুন নাহারের আন্তরিকতায় আমাদের বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ভালোভাবেই চলছে। ক্লাসের বাইরেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। করোনায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন অনেকটা ভালো। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করছে। রেজাল্টও ভালো।’

এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্থানীয় ফারহানা খাতুনের যমজ মেয়ে। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়েরা চররামচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। মেয়েরা বিদ্যালয়ে আনন্দের সঙ্গেই যায়। পড়াশোনায়ও ভালো। শিক্ষকরাও খুব আন্তরিক। অভিভাবক হিসেবে বিদ্যালয়টি নিয়ে কোনো রকম অভিযোগ নেই।’

বদলগাছী উপজেলার বিলাসবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফতাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সঠিকভাবে পাঠদান করানোর। বাচ্চাদের পরম আনন্দের সঙ্গেই আমরা পাঠদান করাই। তারাও হাসিখুশিতে আসে। শিক্ষক বা অন্যান্য সংকট নেই।’

শাম্মী আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘বিলাসবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাদের ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করে। শিক্ষার মান ভালো। শিক্ষকরাও খুবই আন্তরিক। মাঝেমধ্যেই আমাদের নিয়ে অভিভাবক মিটিং করে। আমরাও নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, নওগাঁ জেলায় মোট ১ হাজার ৩৭৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ৩০০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এ ছাড়া ৫২০ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদগুলো শূন্য থাকার বিষয়টি আমরা শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি। চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সুরাহা হবে।’


দেশের সকল বিভাগেই বৃষ্টির সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও পটুয়াখালী জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

গতকাল রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যৌথভাবে রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর, সৈয়দপুর ও রাজারহাটে ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত যৌথভাবে রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর ও তেঁতুলিয়ায় ৪১ মিলিমিটার বা মিমি।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ২৬ মিনিটে।


নারীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দুই সন্তানকে হত্যা, আসামির মৃত্যুদণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বরগুনায় এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে দুই শিশুসন্তান বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা মামলায় ইলিয়াস পহলান নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মো. ইলিয়াস পহলান (৩৪) বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।

মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রঞ্জু আরা শিপু, আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসান হাবীব স্বপন। আইনজীবী রঞ্জু আরা শিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ওই নারী তার মেয়ে তাইফা (৩) ও ছেলে হাফিজুলকে (১০) নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় ইলিয়াস তাকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে বাধা দেন ওই নারী। এ সময় তাইফা ও হাফিজুলের ঘুম ভেঙে গেলে ইলিয়াস ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকেই কুপিয়ে আহত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হাফিজুল নিহত হয়, আর বরিশালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশু তাইফা।

তবে গুরুতর আহত ওই নারী দীর্ঘ চিকিৎসার পর প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পরই ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।

তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ইলয়াস পহলানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী তাকে সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

এ ছাড়াও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছর করে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।


ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 দেবাশীষ দেবু, সিলেট

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট। রোববার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট উড়াল দেবে স্পেনের উদ্দেশে। এর মাধ্যমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হবে পণ্য পরিবহন।

সিলেট থেকে বিভিন্ন পণ্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে এখানকার বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনাল না থাকায় ঢাকা থেকে পণ্য রপ্তানি করতে হতো ব্যবসায়ীদের। তাই সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে কার্গো টার্মিনাল স্থাপন ও ফ্লাইট চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার সুযোগে সিলেটের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের এই দাবিটি পূরণ হতে যাচ্ছে।

সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু হওয়াকে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে যাওয়া হিসেবে দেখছেন এখানকার রপ্তানিকারকরা। তবে ফ্লাইট চালু হলেও প্যাংকিং হাউস না থাকায় এখনই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সিলেটে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ও বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বাজারের জন্য আধুনিক মানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইউডিএস) যুক্ত রয়েছে এতে। ১০০ টন ধারণক্ষমতার ওসমানীর কার্গো টার্মিনালের ২০২২ সাল থেকেই পণ্য পরিবহনের জন্য প্রস্তুত ছিল, তবে নানা কারণে এতদিন তা চালু হয়নি। অবশেষে রোববার স্পেনের ইনডিটেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট চালু হবে।

গ্যালিস্টার ইনফিনিট অ্যাভিয়েশনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির পুরো বিষয় তত্ত্বাবধান করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সংশ্লিষ্টরা জানান, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রমের নিরাপত্তা দেবে বেবিচক। আর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এতদিন ভারতের পেট্রাপোল ও গেদে স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির (ট্রান্সশিপমেন্ট) যে সুবিধা বাংলাদেশ পেত, গত ৮ এপ্রিল তা বাতিল করে দিল্লি। এরপর সড়কপথে দিল্লি বিমনবন্দর হয়ে আকাশপথে কার্গো পরিবহনের বিকল্প হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফিশ এক্সপোর্ট গ্রুপের সাবেক সভাপতি হিজকিল গুলজার বলেন, ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট এ অঞ্চলের রপ্তানিকারকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। আমরা দীর্ঘদিন থেকে এ দাবি জানিয়ে আসছি। এটি চালুর মাধ্যমে সিলেটের রপ্তানিকারকদের নতুন সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। এর ফলে সিলেটের পান, সাতকরা, লেবু, মাছসহ কিছু পণ্য রপ্তানি আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে কেবল দেশের ব্যবসায়ীরা নয়, ভারতের সেভেন সিস্টার্সের ব্যবসায়ীরাও এই বিমানবন্দর থেকে সুবিধা নিতে পারবেন।

এ ব্যাপারে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ জানান, ঢাকার পর ওসমানীতে দ্বিতীয় কার্গো স্টেশন প্রস্তুত করা হয়েছে। শুরুতে ইউরোপের কয়েকটি দেশে পণ্য সরবরাহ করা হবে।

অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় সুবিধা যোগ হলে সিলেট থেকেই স্থানীয় পণ্য রপ্তানিও সম্ভব হবে উল্লেখ করে হাফিজ আহমদ বলেন, তবে এখনই তা সম্ভব নয়। কারণ সিলেটের প্রধান রপ্তানি পণ্য শাক-সবজি, যা দ্রুত পচনশীল। এ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে আরএ-থ্রি প্রটোকল ছাড়াও প্রয়োজন আধুনিক প্যাকিং হাউস।

জানা যায়, রোববার ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, সচিব নাসরীন জাহান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এবং মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।


নিজের ঘর সাজাতে জুড়ি নেই বাবুই পাখির

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গয়ঘর গ্রামে তালগাছে বাবুই পাখির বাসা। ছবি: সালাহউদ্দিন শুভ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহউদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার

কবি রজনীকান্ত সেনের ভাষায়, ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই, আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি ঝড়ে।’ স্থপতি বাবুই পাখিটি জানে, নিজের যতই কষ্ট হোক, তালগাছের পাতায় শ্রমে-আনন্দে তৈরি নিজের ঘরেই সুখ।

বর্তমানে তালগাছ অনেকটা কমে গেলেও গ্রাম থেকে একেবারে হারিয়ে যায়নি। এখনো গ্রামের কোনো পুকুর বা দীঘিরপাড়ে, পথের পাশে দু-একটা তালগাছ দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক বছর ধরে স্থপতি বাবুই পাখির আবাসস্থল হয়ে আছে তালগাছ।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামে এ রকম একটি তালগাছে বাবুই পাখির বাসা গড়ে উঠেছে, যা আলাদাভাবে অনেকের নজর কাড়ছে।

সম্প্রতি গয়ঘর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বাড়ির পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে তালগাছ। গাছের বিভিন্ন পাতায় বাসা বুনেছে স্থপতি পাখি বাবুই। এক দুটি নয়, বাসা হবে প্রায় শখানেক। কোনো বাসা বোনার কাজ শেষ, কোনোটিতে চলছে বুনন। তখন বিকেল। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে, মেঘলা আকাশ। একটু পর সন্ধ্যা হবে। পাখিদের ফেরার সময় হয়েছে।

এ সময় দেখা যায়, কোনো বাবুই বাসার ওপরে বসছে, কেউ বাসার ভেতরে ঢুকেছে। কেউ উড়ে যাচ্ছে। কোনো বাবুই পাতার ওপর বসে চারদিকটা দেখে নিচ্ছে। কেউ তালগাছ ছেড়ে আশপাশের গাছে গিয়ে বসছে, আবার ফিরে আসছে। পাখিদের এমন চঞ্চলতার দৃশ্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ।

বাবুই দৃষ্টিনন্দন পাখি। এদের বাসা বোনার গঠন বেশ জটিল আর আকৃতিও খুব সুন্দর। নিজের ঘর সাজাতে তাদের জুড়ি নেই। গ্রীষ্মকাল হচ্ছে বাবুই পাখির প্রজনন ঋতু। এ সময় পুরুষ বাবুই তাল, খেজুর, ধান ও ঘাসপাতা থেকে বাসা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। সুতার মতো দু-তিন ফুট লম্বা পাতার চিকন আঁশ ঠোঁটে চেপে নিয়ে আসে। পছন্দের গাছের ডালে সেটা পেঁচিয়ে গিঁট দিয়ে শুরু করে বাসা বোনা। একটি বাসা তৈরিতে সময় লাগে সপ্তাহখানেক। স্ত্রী বাবুই গড়ে তিনটি ডিম পেড়ে থাকে। ডিম থেকে ছানা ফুটতে ১০ থেকে ১৩ দিন সময় লাগে। ছানারা ১৫ থেকে ১৯ দিনে উড়তে শেখে। বাবুই পাখির আয়ুষ্কাল প্রায় চার বছর।

কথিত আছে- বাবুই পাখি রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় গুঁজে রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়।

গয়ঘর গ্রামের মো. আমির মিয়া বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছগুলোতে অনেক বাবুই পাখির বাসা থাকত। কিন্তু এখন তা আর দেখা যায় না। যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের পুরো এলাকাজুড়ে মাত্র একটি তালগাছে তারা বাসা বেঁধেছে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে সকালবেলা আমাদের ঘুম ভাঙে।’

স্থানীয় পরিবেশকর্মী সোনিয়া মান্নান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও পরিবেশের কারণে অসংখ্য প্রজাতির পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ আমাদের পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকগুলো বিলুপ্তির পথে। স্থপতি বাবুই পাখিও এখন তেমন একটা দেখা যায় না। তা ছাড়া আবাসন সংকটও একটা বড় কারণ। পরিবেশ বিপর্যয় ও বিলুপ্তির হাত থেকে বাবুই পাখিকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।

জেলার হাজী ছালামত স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহাঙ্গীর জয়েস বলেন, বাবুই পাখির খাবার ও বাসস্থানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তারা ধান, কীটপতঙ্গ, ঘাস, পাতা, ফুলের মধু প্রভৃতি খেয়ে থাকে। সুতরাং কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে ঝোপঝাড় উজাড়ের বিষয়ে সচেতনতা দরকার। তালগাছ ছাড়াও নারিকেল, সুপারি, খেজুর প্রভৃতি গাছে বাবুই বাসা বানায়। এসব দিন দিন কমছে। এগুলো রক্ষায় নতুন করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে হবে।

বুননশিল্পী বাবুই পাখি ও বাসার সন্ধানে পাখিপ্রেমীরা ছবি তুলতে, কিচিরমিচির শব্দ শোনার জন্য আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতেন। এখন আর তেমন একটা বাবুই পাখি চোখে পড়ে না। পড়ে না বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথে, কোনো পতিত উঁচু ভিটেমাটিতে কিংবা বাড়ির সীমানায় শোভাবর্ধন তালগাছে বাবুই পাখির বাসা দেখা যেত। তা দেখে পাখিপ্রেমীরা মুগ্ধ হতেন। এখন সেই তালগাছও প্রায় বিপন্ন হতে চলছে।

বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের এক নম্বর তফসিল অনুযায়ী এই পাখিটি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।


গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

খুলনা অঞ্চলে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনায় আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরীকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

আজ রোববার এক অফিস আদেশে এ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, তদন্ত কমিটি গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ নির্ণয়, গ্রিড বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দায় নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্যকে কো-অপ্ট করতে পারবে। কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে গ্রিড বিপর্যয় পরিহারের লক্ষ্যে সুপারিশ করবে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- বুয়েট অধ্যাপক ড. মো. এহসান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পিঅ্যান্ডডি) মো. শহীদুল ইসলাম, ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী (পরিচালক) মো. আবদুল মজিদ, বিপিডিবির সিস্টেম প্রটেকশন ও টেস্টিং কমিশনিং সেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান, পিজিসিবি ট্রান্সমিশন-১ এর প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফয়জুল কবির ও বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মাজহারুল ইসলাম।


নবীনগরে এক ও দুই টাকার কয়েন অচল: জনমনে অসন্তোষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে এক ও দুই টাকার কয়েন অচল বলেই গণ্য হচ্ছে। এই উপজেলায় ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় এক ও দুই টাকার কয়েন যেন অচল পয়সা। অথচ পাশের উপজেলায় এসব কয়েন সচল বলে গণ্য হচ্ছে। কেন ব্যবসায়ীরা এসব কয়েন নিচ্ছেন না সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন আছে কি না, এ নিয়ে নবীনগরের জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

জমে থাকা এক ও দুই টাকার কয়েন দেখান এক ব্যবসায়ীর ছেলে মো. তামিম। পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ছোট্ট একটি মুদিমালের দোকানে জমে থাকা এক ও দুই টাকার কয়েনের ভিডিও সংগ্রহ করেন প্রতিনিধি। পৌর এলাকার বাসিন্দা চা-বিক্রেতা ফারুক মিয়া বলেন, দোকানে লেনদেন করতে গিয়ে তার কাছে এক ও দুই টাকার অনেক কয়েন জমা হয়েছে। সেগুলো তার কোনো কাজে আসছে না, নবীনগরে কোনো দোকানে কয়েন দিতে গেলে কেউই নিতে চান না, ব্যাংকেও নিতে চায় না। মনে হয় আমি অচল পয়সা দিচ্ছি।

একই রকম অভিযোগ নবীনগর সরকারি হাইস্কুল মার্কেটের দোকানি কামরুল হাসান ইকরামের। এই যুবক বলেন, এখানে কোনো বাজারেই ক্রেতা-বিক্রেতা, কেউই এক ও দুই টাকার কয়েন নিতে চান না। ফলে কারও কাছ থেকে এক টাকা বেশি নিতে হচ্ছে, কারও কাছ থেকে কম। অথচ উপজেলার বাইরে এসব কয়েন লেনদেন হয়। আমরা বিভ্রান্তিকর অবস্থায় আছি এই সমস্যার পরিত্রাণ চাই।

নবীনগর উপজেলা সদরের বাজারগুলোতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে একই রকম তথ্য পাওয়া যায়। এখানে দুই টাকার কাগজের নোটের লেনদেন স্বাভাবিক। এমনকি পাঁচ টাকার কয়েন নিয়েও কারও আপত্তি নেই। তবে এক ও দুই টাকার কয়েন যেন অচল পয়সা। কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ছোট ব্যবসায়ীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। তাদের জমানো কয়েনগুলো কোথায় দেবেন এ নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত তারা। নবীনগর বাজারের একাধিক ক্রেতা বললেন, কয়েনের লেনদেন না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের ওই এক ও দুই টাকা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। আর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় এই অনিয়মটি ধীরে ধীরে নিয়মে রূপ নিচ্ছে। এ কারণে অনেক ক্রেতা ওই টাকার দাবি ছেড়ে দেন।

এক ও দুই টাকার কয়েনের লেনদেন না হওয়ার প্রশ্নে ক্রেতা-বিক্রেতারা ব্যাংকের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েনগুলো নেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলার কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েন লেনদেন বন্ধে ব্যাংকের কোনো হাত নেই। বরং তাদের ভল্টগুলো কয়েনে ভর্তি। পাঁচ টাকার কয়েনের চাহিদা থাকলেও কেউ তাদের কাছ থেকে এক ও দুই টাকার কয়েন নিতে চান না।

নবীনগর সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ও ম্যানেজার আশিক কায়সার দৈনিক বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ব্যাংকের ভল্টে একটা নির্দিষ্টসংখ্যক কয়েন জমা রাখার নিয়ম আছে। আমরা কয়েন নিচ্ছি ও দিচ্ছি। গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেন করার জন্য আমাদের ব্যাংকে পর্যাপ্ত কয়েন জমাও আছে। আমার জানামতে নবীনগর অন্য ব্যাংকগুলোতেও পর্যাপ্ত কয়েন রয়েছে। তবে কেউ যদি পরিমাণে বেশি কয়েন জমা দিতে চায়, সেক্ষেত্রে গ্রাহকের সঙ্গে আগে কথা বলে ট্রানজেকশন আওয়ারে নেওয়ার চেষ্টা করি। কয়েন লেনদেনে করতে সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই এক ও দুই টাকার কয়েন/মুদ্রা লেনদেনে অনীহা রয়েছে। নবীনগরের ব্যাংকগুলোতেও ধাতব মুদ্রা না নেওয়ার কথা শুনেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সরকারি অনুমোদিত মুদ্রা লেনদেনে অচল বলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটা আসলে একটা গুজব ছড়ানো হয়েছে- এই গুজব দূর করার জন্য জরুরিভিত্তিতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এখানকার (নবীনগর) তফসিলি ব্যাংকগুলোর ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিব।


মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে ওবাইদুর রহমান (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার মধুপুর নামক স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে ভারতের পুলিশ।

নিহত ওবাইদুর মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানেফ মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, গতরাতে মহেশপুর উপজেলার গোপালপর গ্রামে ৭ থেকে ৮ জন লোক অবৈধভাবে ভারতে যায়। রাত দেড়টার দিকে তারা বিএসএসএফের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন তারা পালিয়ে আবারো বাংলাদেশের ভিতরে চলে আসে। কিন্তু ওবাইদুর রহমানসহ দু’জন আসতে পারেনি। ওবাইদুর রহমানকে বিএসএফ ধরে ফেলে। বিএসএফ তাকে বস্তায় জড়িয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করে।

সকালে ভারতের অভ্যন্তরে মধুপুর নামক স্থানে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। ওই লাশটি ওবাইদুর রহমানের হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। লাশটি ভারতের বাগদা থানার পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। আরেকজনের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ওমর আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ওবাইদুরের বাড়িতে যান। বাড়িতে সবাই কান্নাকাটি করছেন। তিনি জানান, রাত ১টার দিকে ওপারে গোলগুলির শব্দ শুনেছে গ্রামবাসী। এতে ধারণা করা হচ্ছে ওবাইদুরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

যাদবপুর ইউনিয়নের মেম্বর বাবুল হোসেন জানান, তিনিও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির সংবাদ শুনেছেন। এ ঘটনার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুর নিখোঁজ রয়েছেন। ওপারে পড়ে থাকা লাশটি ওবাইদুরের হতে পারে।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা জানান, ভারতের অভ্যন্তরে একজনের লাশ পড়ে আছে বলে আমি বিজিবির মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

বিজিবির যাদবপুর বিওপির কমান্ডার হাবিলদার মফিজুল ইসলাম জানান, লোকমুখে তিনি এমন খবর পেয়ে সীমান্তে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তবে এখনো কোনো পরিবার তাদের দপ্তরে অভিযোগ করেনি।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম জানান, রবিবার সাকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ভারতের মধুপর বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ফোন করে তাকে জানিয়েছে, ভারতের সীমানার মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সেটা বাংলাদেশি না ভারতীয় বোঝা যাচ্ছে না। ভারতের বাগদা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে হত্যা করে ইছামিত নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। ১৯ দিন পার হলেও তার লাশ এখনো বিএসএফ ফেরৎ দেয়নি। নিহত ওয়াসিম বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।

ওয়াসিমের ভাই মেহেদী হাসান দাবি করেন, গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিমসহ কয়েকজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যায়। ভারত থেকে ফেরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ধাওয়া করলে মহেশপুরের সলেমানপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, কাঞ্চনপুর গ্রামের রাজু, শাাবুদ্দিন, মানিক ও বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ ফিরে আসলেও তার ভাই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে। তাকে নির্যাতনে হত্যার পর লাশ ইছামতি নদীতে ফেলে দেয়। বিজিবি লাশ ফেরৎ চাইলেও ভিসা ও আইনি জটিলতার কারণে ১৯ দিনেও লাশ ফেরৎ পায়নি পরিবার।

ভারতীয় পুলিশ বিজিবিকে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে লাশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু ভারতে গিয়ে লাশ শনাক্ত করার সক্ষমতা ওয়াসিমের পরিবারের নেই বলে জানা গেছে।


রাঙামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আমবাগান এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬।

আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী ও চালক।

নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের কাজীপাড়ার সোয়ার আলীর ছেলে আবু তোরাব (৪৫), রাঙামাটির কাউখালীর তালুকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে নূর নাহার (৪০), রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ার ডাবুয়া মংশি মারমার মেয়ে মিনু মারমা (৩৫), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মিরহাটের মাহাবুবুর রহমান বাচ্ছু (৫৫), চট্টগ্রামের রাউজানের মো. জয়নাল আবেদীন (৬৩) ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির মৃত গুলজারের ছেলে ইজাদুল (২৫)। ইজাদুল সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেতবুনিয়ার মনারটেক এলাকায় রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা (চট্ট মেট্রো থ ১১-৯১৭৩) ও বিপরীত দিক আসা পিকআপের (চট্ট মেট্রো ন ১১-৬৪৯২) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে অটোরিকশাটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজন এবং চট্টগ্রামে মেডিক্যালে একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, এটা মর্মান্তিক ঘটনা। ৬ জনের মধ্যে তিনজনকে রাঙামাটির মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মর্গে এবং একজন রাউজানের জেকে মেমোরিয়াল হাসপাতালে আছে।

তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পলাতক চালককে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।


দেশীয় অস্ত্র ও জাল নোটসহ ৩ ডাকাত গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোলার দৌলতখানে অভিযান পরিচালনা করে ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে দৌলতখানের মদনপুরের চর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, আলাউদ্দিন (৪৫), জহির উদ্দিন বাবর (৪৮) এবং লোকমান (৪২)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৩ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ টি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৯ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

কোস্ট গার্ড বলছে, গ্রেপ্তাররা সবাই দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরের বাসিন্দা এবং পেশাদার কুখ্যাত ডাকাত।

আজ শুক্রবার বিকেলে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদে ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২ টায় কোস্ট গার্ড বেইস ভোলা’র একটি দল দৌলতখান উপজেলার মদনপুরের চর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৩ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ টি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৯টি ১ হাজার টাকার জাল নোটসহ ৩ জন কুখ্যাত ডাকাতকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।


উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘বৈশাখী পার্বণ ১৪৩২’ উদযাপন

আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আনন্দমুখর পরিবেশে ও বর্ণিল সাজে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘বৈশাখী পার্বণ ১৪৩২’। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স-এর উদ্যোগে দিনব্যাপী এ উৎসবে ছিলো নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, বাঙালি খাবার, বৈচিত্র্যময় স্টল, বাংলার লোকজ ও সাজসজ্জার উপকরণ। এতে ফুটে ওঠে বাঙালির সংস্কৃতির রঙ ও সৌন্দর্য। ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ইউনিভার্সিটির এনেক্স ভবনের সামনে খেলার মাঠে এই উৎসবে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইয়াসমীন আরা লেখা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী। রঙিন ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায়, আনন্দঘন পরিবেশে মেতে উঠেছিল পুরো ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণ।

ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বাহারি ধরণের স্টল স্থাপন করেন। সেখানে ঐতিহ্যবাহী পণ্যের প্রদর্শনীর পাশাপাশি শোভা পায় বৈশাখী মিষ্টি-মন্ডা, বাতাসা, মুড়ি, চিড়া ও মোয়া ইত্যাদি।

বাঙালি জীবনধারার নানা দিক তুলে ধরতেই এবারের আয়োজনে ছিলো নাগরদোলা ও বায়োস্কোপ। গ্রামীণ পরিবেশে সাজানো হয় প্রবেশপথ ও রং তুলির আঁচড়ে সেজেছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়াল। উৎসবের প্রথম পর্বে ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্বে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত নৃত্য, গান, আবৃত্তি ও অভিনয় উপভোগ করেন উপস্থিত সকলে।

উপাচার্য ড. ইয়াসমীন আরা বলেন, বৈশাখের এই আয়োজন কেবল একটি অনুষ্ঠান নয় বরং এটা আমাদের শেকড়কে ছুঁয়ে দেখার মূল উপলক্ষ। যেখানে জড়িত থাকে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। অনুষ্ঠান আয়োজকরা জানান, এই উৎসব ছিল শুধুমাত্র আনন্দের নয় বরং একতা, সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মিলনমেলা।

দিবসটির অন্যতম আকর্ষণ ছিল ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করেন ব্যান্ড দল ‘আকাশ গায়েন’। নবর্বষের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালকবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টর, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন স্টুডেন্ট ক্লাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল দর্শক প্রাণভরে উপভোগ করেন উৎসবের রঙিন আমেজ। অনুষ্ঠানের স্পন্সর হিসেবে ছিলো এক্সিম ব্যাংক ও কো-স্পন্সর হিসেবে ছিলো হক কনসালটেন্সি।


অপহরণের সাতদিন পর মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১৭:৩৮
ইউএনবি

অপহরণের সাতদিন পর মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী। তবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে একদিন পর বৃহস্পতিবার।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে। অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী বর্তমানে তাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বার্তা সংস্থা ইউএনবি বলেন, ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিবৃতি দিয়েছে যে তারা তাদের সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ফিরে পেয়েছে। আমরা ওই ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারে সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাও নিজেদের পরিবার সদস্যদের ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাহলে এখন মোটামুটি ধরে ধরে নেওয়া যায় যে ওই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরিবারের হেফাজতে আছেন।’

বিজু উৎসব উদ্‌যাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাতনামা স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা চালককে ওই সময় ছেড়ে দিয়েছিল।

পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় শুরু থেকে ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে জেএসএস–সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।


কুড়িয়ে পাওয়া অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কুড়িয়ে পাওয়া এক অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সাভারে বংশী নদীর পাড়ে ময়লার ভাগাড় থেকে একমাস বয়সের এক শিশুকে কুড়িয়ে পায় এক বৃদ্ধ নারী। ওই শিশুটির হৃদপিন্ডে রয়েছে জটিল ত্রুটি। এ খবর জানার পর হতভাগ্য শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশে শিশুটির চিকিৎসা সহায়তা করছেন বিএনপির নেতারা।

আজ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম ও ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি, ছাত্রদল (উত্তর) আহ্বায়ক তমিজ উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাসুদ, ঢাকা জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম, যুবদল নেতা চম্পক, বিএনপি নেতা হযরত আলী, সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন মাতবর, ছাত্রদল নেতা নাঈম প্রমুখ।


 "রূপশ্রী অপেরা" বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় যাত্রাদলের জীবন কাহিনী নিয়ে লেখা "রূপশ্রী অপেরা" বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রীতি সম্মিলিত অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলা একাডেমি গবেষণা কর্মকর্তা ও প্রাবন্ধিক-গবেষক মামুন সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নওগাঁ শহরের ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারের অডিটোরিয়ামে মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাড. ডিএম আব্দুল বারী।

এসময় বক্তব্য রাখেন- সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, কবি ও গবেষক আতাউল হক সিদ্দিকী, রূপশ্রী অপেরা বইয়ের লেখক এম.এম রাসেল ও যাত্রা শিল্পী সন্তোষ কুমার দাস সহ অন্যরা। এসময় যাত্রাশিল্পের সাথে জড়িত পরিবারের সদস্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুধিজনরা উপস্থিত ছিলেন।

যাত্রাশিল্প আমাদের সংস্কৃতি ও এর ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। এক সময় গ্রাম বাংলার বিনোদনের মাধ্যম বলা যায় এই যাত্রাশিল্প। যেখানে উচ্চ শব্দ ও চড়া আলোর ব্যবহার এবং অতিনাটকীয় ভাবভঙ্গি ও আবৃত্তির মাধ্যমে যাত্রার উপস্থাপনা করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি নাটক, পালা, পুঁথি ছিলো বিনোদনের মাধ্যম। শীতের রাতে চাদর মুড়ি দিয়ে রাত জেগে গ্রামবাংলার মানুষ যাত্রা দেখায় মজে থাকত। বিশেষ করে- দেবি সুলতানা, আনারকলি, মহুয়া সুন্দরী ও কাশেম মালার প্রেম যাত্রা ছিল অন্যতম। দর্শক শ্রোতা নৈতিক মুল্যবোধ, ব্যক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে যাত্রাপালা প্রভাবিত করতো। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে যাত্রাপালা বিলিন হয়ে গেছে। "রূপশ্রী অপেরা" বইটিতে স্থান পেয়েছে যাত্রার উঠে আসা এবং বিলিন হওয়ার গল্প। যাত্রাপালার সাথে যেসব শিল্পী জড়িত তাদের কথা তুলে ধরা হয়েছে।


banner close