সুনামগঞ্জ শহর ছিল দ্বীপের মতো। শহরের সাতটি খাল দিয়ে মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করত। বৃষ্টির পানি এসব খাল দিয়ে চলে যেত হাওরে। তিন যুগ আগেও সুনামগঞ্জের মানুষ জানত না জলাবদ্ধতা কী। আর এখন বৃষ্টি হলেই জেলা শহরটির মানুষজনকে পানিতে আটকা পড়তে হয়।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার যে সাতটি খালে একসময় স্রোত ছিল তার পাঁচটিরই এখন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দায়। এগুলো হলো বড়পাড়া খাল, তেঘরিয়া খাল, কামারখাল, বলাইখালী খাল, নলুয়াখালী খাল, ধোপাখালী খাল ও ঘাবরখালী খাল।
অবৈধ দখলদারদের কারসাজিতে এসব খালের ওপর এখন বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মধ্য শহরের কামারখাল দখল করে রাখা ৮৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত হলেও উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে পৌরসভার তৈরি করা ছোট ছোট ড্রেন পানি নিষ্কাশনের কাজে আসছে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। নর্দমার পানি ঘরে ঢুকছে। অস্বাস্থ্যকর ও অসহনীয় পরিবেশে থাকতে হচ্ছে পৌরবাসীদের। গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জ পৌরসভার বেশ কিছু এলাকা বসবাসের অযোগ্য হওয়ার মতো অবস্থা। বাইরে বৃষ্টি আর ঘরের ভেতর পানি এই পরিস্থিতিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
এই খালগুলো পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) উচ্চ আদালতে মামলা করেছে। আদালত সম্প্রতি সুনামগঞ্জ পৌর শহর ও আশপাশের এলাকার পাঁচটি খালের দখলদারদের পূর্ণ তালিকা করে তাদের উচ্ছেদের আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে খালগুলোর সীমানা নির্ধারণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরের খালগুলোর উদ্ধারকাজ বিলম্বিত হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। গত মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কামারখালসহ পাঁচ খাল উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
কাদের দখলে খাল
মধ্য শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গুরুত্বপূর্ণ ‘কামারখাল’ অস্তিত্ব হারানো খালগুলোর মধ্যে অন্যতম। সুরমা নদীর পাড়ের উত্তর আরপিননগর থেকে শুরু হয়ে রায়পাড়া, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কালীবাড়ী-বাঁধনপাড়া হয়ে বাঁধনপাড়া-ক্ষিতিশকর পয়েন্টমুখী সড়ক পার হয়ে কিছ দূর এগিয়ে শেষ হয়েছিল খালটি। এই কামারখালে এখন আছে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বহুতল বাড়িসহ ৮৪টি অবৈধ স্থাপনা। দখলদারদের তালিকা সম্প্রতি চূড়ান্ত করেছে সুনামগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। এগুলো হচ্ছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর আরপিননগরের খুশবুল মিয়া, রশিদ বখত মুকুল, মইনুল মিয়া, রাসেল মিয়া, কামরুল ইসলাম, সেলিম মিয়া, মহিমা বেগম, অদুদ মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মধ্য আরপিননগরের আলী নুর, আপ্তাবুন নেছা, আব্দুল মনির রনি, আব্দুল হামিদ, মো. খসরু মিয়া, পপি বেগম, ফরহাদ মিয়া, গোলাম হোসেন, সুজন মিয়া, আবু হানিফা, লুৎফুর রহমান, মুজিবুর রহমান, সিরাজ মিয়া, খোরসেদ আলম, রুমি বেগম, মোর্শেদ আলী, খায়রুল ইসলাম, রুকম চৌধুরী, মানিক মিয়া, সনৎ কুমার সোম, কৃষ্ণ রায়, রায়পাড়ার চন্দন সাহা, মো. মইনুদ্দিন, আব্দুল মতিন, বড়পাড়ার আবু জাফর, হাজীপাড়ার রানু দাস, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের গোলাম জাকেরীন, গোলাম কিবরিয়া, গোলাম দবির, গোলাম কবির, আরপিননগরের সিরাজুল ইসলাম, স্টেশন রোডের আব্দুল হাসিম, আরপিননগরের মো. আলী, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের গোলাম সাবেরীন সাবু, কালীবাড়ীর স্বপন কুমার দাস, চন্দন কুমার সাহা, সুদীপ দেব, নানু দেব, জামাইপাড়ার আয়েশা আজাদ, দিগ্বীজয় চৌধুরী, শামীম তালুকদার, নুর মিয়া, আব্দুল হান্নান, দিল হক, এনামুল হক, মঙ্গল প্রাচী, সুরঞ্জন পাসী, আব্দুর রউফ (জনর), সুনু মিয়া, আজর আলী গেদা, বাঁধনপাড়ার সাকির আহমদ, মহিলা কলেজ রোডের তোফাজ্জল হোসেন, বাঁধনপাড়ার আকবর আলী, রাহেলা খাতুন, বাঁধনপাড়ার আকবর আলী, বিনয় পাল, হাসমত আলী, আরজ আলী, সত্তার মিয়া, খোকন মিয়া, মখদ্দছ আলী। এই তালিকার সবাই বহুতল ভবনসহ স্থায়ী স্থাপনা করে খাল অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন।
তাদের তৈরি করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে কমিউনিটি সেন্টার, উত্তর আরপিননগর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ পৌরসভার গণশৌচাগার, কালীবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুলচান্দ উচ্চবিদ্যালয়ের দেয়াল, সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের দেয়াল ও গার্ডরুম, মধ্য আরপিননগরের লুৎফিয়া হুসাইনিয়া নূরজাহান বখত মাদ্রাসা, আরপিননগর মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিনের বাসস্থান এবং মধ্য আরপিননগর কবরস্থান।
এ ছাড়া তেঘরিয়া, বড়পাড়াখাল, বলাইখালী ও নলুয়াখালী খালও গত তিন যুগের মধ্যে দখল হয়েছে। কেবল ধোপাখালী ও ঘাবরখালী খাল এখনো দৃশ্যমান রয়েছে।
দখলদারের তালিকায় থাকা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার গোলাম সাবেরীন সাবু বলেন, ‘কামারখালের এই অংশ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আদালতে আমাদের মামলা চলছে। মামলায় ইতোমধ্যে আমাদের পক্ষে ডিক্রি হয়েছে। এরপর আর সরকারপক্ষে আপিল করা হয়নি।’
সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নুরুল ইসলাম বজলু বললেন, ‘আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম খাল চিহ্নিতের কিছু কাজ হয়েছিল। কামারখালের সুরমা নদীর লাগোয়া উত্তর আরপিননগরের মুখটি আশির দশকে প্রয়াত পৌর চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেনের সময় বন্ধ করা হয়েছিল। এরপর প্রয়াত পৌর চেয়ারম্যান মমিনুল মউজদীন ও আয়ুব বখ্ত জগলুলের সময়ও আরও দুটি স্থাপনা হয়েছে ওখানে। শহরবাসীর প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করি আমি।’
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত বলেন, ‘কয়েক বছর হয় বৃষ্টির মৌসুম এলেই প্রকৃতি আমাদের জানান দিয়ে যাচ্ছে। এই শহরে বাস করতে চাইলে পানি নিষ্কাশনের বড় আকারের ব্যবস্থা করা ছাড়া উপায় নেই। কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি হলে আমি নিজেও জলাবদ্ধতায় পড়ি। এর কষ্ট আমি বুঝি। খালগুলো উদ্ধার করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আধাআধি কাজ করলে এটি অর্থহীন হবে। এ জন্য সবার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। জনগণ, প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বিত উদ্যোগ আমি প্রত্যাশা করছি।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন বললেন, ‘আদালতে নির্দেশনা প্রতিপালনের চেষ্টা করছি আমরা। ইতোমধ্যে কামারখালের দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে। বড়পাড়া খাল চিহ্নিত করতে গত সোমবার প্রশাসনের সর্বোচ্চ জনবল নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ওখানেও দখলদার চিহ্নিত হয়েছে। শিগগিরই লাল দাগ দেয়াও শুরু হবে। অন্য তিন খাল উদ্ধার নিয়েও প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।’
খালগুলো উদ্ধারে বেলার নোটিশ
গত ২০ জুন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পাঁচটি খাল উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভূমি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর বিভাগ-১) নির্বাহী প্রকৌশলী, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবার নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। বেলার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস হাসানুল বান্না ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠান। নোটিশে সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া খাল, বড়পাড়া খাল, কামারখাল, বলাইখালী খাল ও নলুয়াখালী খালের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, এসব খালের দখলদারদের চিহ্নিত করে তাদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বেলার পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়। আদালত চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে এসব খালের দখলদারদের তালিকা করে তাদের উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন। কিন্তু এই আদেশের পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো শহরের তেঘরিয়া ও বড়পাড়া খালের ওপর ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। যেটি আদালত অবমাননার শামিল।
বেলার সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক আইনজীবী শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, এসব খাল উদ্ধারে স্থানীয়ভাবে যেমন দাবি আছে, তেমনি আমরাও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করেছি। দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই নোটিশ দেয়া হয়েছে। এর পরও কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আইয়ুব আলী দুলা (৫২) নামে এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের।
রোববার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টার টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকা হতে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা।
তিনি বলেন, ‘সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকায় এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ ওই রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি রাত পৌনে ১২টা থেকে সোয়া ১২টার মধ্যে ঘটানো হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে অটোটিসহ চালকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং চালকের পরিহিত পোশাকের ভেতরে থাকা কিছু নগদ টাকাও পাওয়া গেছে। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং প্রাথমিক পুলিশি তদন্তে মনে হচ্ছে ঘটনাটি পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটানো হতে পারে, ছিনতাই নয়।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ জড়িতদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’
ঈদের আর মাত্র বাকি দুইদিন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এর ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। মহাসড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায় স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ৪২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং যার মোট টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৮৫০ টাকা।
এরমধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশে ২৭ হাজার ২৩২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৯৫০ টাকা এবং সিরাজগঞ্জের সেতু পশ্চিম অংশে ১৬ হাজার ১৯৫ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, যানজট নিরসনে সেতুর উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মীর সাজেদুর রহমান জানান, মহাসড়কে পরিবহনের খুব চাপ রয়েছে। এতে পরিবহনগুলো খুবই ধীরগতিতে চলাচল করছে। এ ছাড়া সেতুর উপর একটি বাস নষ্ট হওয়ায় পাঁচ মিনিট বন্ধ ছিল পরিবহন চলাচল। পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণেও অন্য পরিবহনগুলোতে ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বাগেরহাটে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে জেলার কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট শহরের বাসস্টান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভেঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের উপর পড়ে বাসের চালকসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টার এ ঘূর্ণিঝড়ে জেলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। সেই সাথে বিধ্বস্ত কয়েক শত কাঁচা ও আধা কাঁচা বাড়িঘর। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ।’
তিনি বলেন, ‘জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা ও ৬শ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে।’
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মুজিববর্ষের ৪র্থ ধাপে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না- প্রধানমন্ত্রীর এমন অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে। সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও নাহিদ তামান্না মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় ২১০ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য মুজিব শতবর্ষের ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য ২ শতাংশ জমির ওপর ২টি সেমি পাকা ঘর, ১টি রান্না ঘর ও ১টি টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এতে করে ২১০টি পরিবারের ঘর নির্মাণ করতে মোট ব্যয় হবে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউএনও।
সরেজমিনে উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশদ্বারে লাগানো রয়েছে প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড। উঁচু জমিতে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে বাড়িগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রশংসা করে জানান, প্রকল্পের ঘরগুলো এখন মানসম্মতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘর তৈরিতে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সব সময় তদারকি করছেন, কাজের নির্মাণ সামগ্রী এবং নির্মাণ কাজ মানসম্মত। এক সাথে অনেকগুলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করায় প্রকল্পটির সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে, যা দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। ছোট ছোট ঘর নির্মাণে উন্নত সামগ্রী ব্যবহার করায় দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অসহায় মানুষগুলো তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়ে রঙিন এ ঘরে বসবাস করার যে স্বপ্ন দেখছিলেন তা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দেশের কোন মানুষ গৃহহীন বা না খেয়ে থাকবে না, তাই তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলায় ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, ‘ঘর নির্মাণ কমিটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে নিয়জিত আছেন। আমি কাজগুলো সব সময় তদারকি করছি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মনিটরিং অফিসার এসে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরগুলো খুবই কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয় এবং সচিত্র প্রতিবেদন রাখা হয়। প্রকল্পের কাজ নিয়মানুযায়ী সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।’
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিখোঁজের এক দিন পর সাকিব সিকদার (১০) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাচঁরুখী গ্রামে নানা বাড়ির পাশ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাকিব রুপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকার জিকু সিকদারের ছেলে।
আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, ১৭-১৮ দিন আগে শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার পাঁচরুখী গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তার মা তাকে ব্লেড আনতে বাজারে পাঠান। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফিরেনি। এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তার নানাদের নতুন বাড়ির পাশে শিশুটির লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। সে সামান্য বাকপ্রতিবন্ধী ছিল।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মুহুরীগঞ্জে আজ সকালে রেলপথ পারাপারের সময় বালুবোঝাই ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের একজন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারাকা গ্রামের আবুল হাওলাদারের ছেলে ট্রাকচালক মো. মিজান (৩২)। অপর নিহত ট্রেনযাত্রীর নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকটি অন্তত ১০০ মিটার সামনে গিয়ে পড়ে। গেইটম্যান মো. সাইফুল ট্রেন অতিক্রম করার সময় সেখানে ছিলেন না।
ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক শাহ আলম জানান, রেললাইনের উপর পড়ে থাকা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক সরিয়ে নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম ট্রেন দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বিদ্যুতের খুঁটিতে মোটরসাকেলের ধাক্কায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার লক্ষ্মীকুড়া বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কুড়িগ্রামের রৌমারির জনাব আলীর ছেলে সাইদুর রহমান (২৮) ও তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২২)।
বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, ‘ভোরে ঈদের ছুটিতে সাইদুর তার স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থেকে নিজ বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারিতে যাচ্ছিলেন। সকাল ৮টার দিকে হালুয়াঘাটের লক্ষ্মীকুড়া বাজার এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে দ্রুত গতির মোটরসাইকেলটি ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাইদুর। পরে আশপাশের লোকজন সোনিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’
মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন এবং এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি মো. মাহবুবুল হক।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যানবাহনের অত্যাধিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ফলে গজারিয়া অংশে ১৩ কিলোমিটার জুড়ে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশেও এমন অবস্থা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া পাখির মোড় এবং তেতৈতলা হাঁস পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ঢাকামুখী লেনে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও কুমিল্লামুখী লেনে ধীর গতিতে যান চলাচল হচ্ছে। গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটার এলাকায় যানজট রয়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি এবং নারায়ণগঞ্জের অংশেও যানজট রয়েছে।
ফেনীগামী প্রাইভেটকারচালক নুরুল হক বলেন, ‘কাঁচপুর থেকেই জ্যামে পড়ি আমরা। কাঁচপুর থেকে গজারিয়ার ভবেরচরে আসতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে গেল। রাস্তায় কোথাও এক্সিডেন্ট হয়েছে বা গাড়ি নষ্ট হয়েছে এরকম কিছু দেখলাম না কিন্তু রাস্তায় প্রচুর যানবাহন।’
গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘যানজট নয়, তবে যানবাহনের ধীর গতি রয়েছে। মহাসড়কে একটি গাড়ি বিকল হয়েছিল তা আমরা সরিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘মূলত ঈদযাত্রা শুরু হওয়ায় যানবাহনের অত্যাধিক চাপই ধীরগতির কারণ। হাইওয়ে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির চেষ্টায় দূর্বৃত্তের হামলায় দুই আনসার সদস্যসহ ৫ জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন। আত্মরক্ষার্থে আনসার সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
বুধবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক ভবনের গেটে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-মহা ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে ৫০-৬০ জনের একটি সশস্ত্র দল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক ভবনের গেট দিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে প্রবেশের চেষ্টা করে। বাঁধা দিলে অস্ত্রধারীরা গেটে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের উপর হামলা করে। এসময় নিরাপত্তাকর্মীদের ডাক চিৎকারে আনসার সদস্যরা ছুটে গেলে তাদের উপরও হামলা করে ডাকাত দল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার সদস্যরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে ডাকাল দলটি পালিয়ে যায়। ডাকাত দলের হামলায় দুই আনসার সদস্যসহ ৫ জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছে। তাদের হামলায় দুই আনসার সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ৩ জনকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাস বলেন, ‘অস্ত্রধারীদের হামলায় ৫ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। পুলিশ হামলাকারীদের শনাক্ত ও আটকে অভিযান শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় রাস্তা পার হবার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে ভিটিকান্দি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের চালক, গুরতর অবস্থায় তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
নিহতের নাম মো. ইব্রাহিম (৬০)। তিনি গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামের হাবু শিকদারের ছেলে বলে জানা গেছে। মোটরসাইকেল চালকের নাম মাহবুব (২৮)। তিনি গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের মুদারকান্দি গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাস স্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন পথচারী ইব্রাহীম। এসময় ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী একটি মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার ধাক্কা দিলে সেটি পথচারী ইব্রাহিমকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। আহত হয় মোটরসাইকেল চালক মাহবুব। তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছেন স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মোটরসাইকেল চালক মাহবুবকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আহত মোটরসাইকেল চালককে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক প্রাইভেট কারটিকে সনাক্তের করার চেষ্টা চলছে।’
কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা ভবনে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরচক্র ভবনের দুই পাশের জানালার গ্রিল কেটে স্টিলের আলমারি ও ফাইল কেবিনেট ভেঙ্গে নগদ ছয় লাখ টাকা চুরি করেছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার অফিসের কর্মচারীরা এ ঘটনা দেখতে পান।
নৈশ প্রহরী খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি সোমবার সারারাত ভবনেই ছিলাম। সকালে বিশেষ কাজে এতবারপুর যাওয়ার পর অফিস থেকে ফোন করে জানান অফিসে চুরি হয়েছে! কিভাবে কী হয়েছে আমি কিছুই জানি না।’
পৌর সভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে পাম্প চালক ইব্রাহীম খলিল মজুমদার অফিসে এসে এ ঘটনা দেখেন এবং অন্যান্য কর্মচারীরা নিজ নিজ কক্ষে প্রবেশ করে এ ঘটনা দেখেন। এতে হিসাব রক্ষকের কক্ষ, বাজার শাখা, কর ও লাইসেন্স শাখার কক্ষের সাতটি স্টিলের আলমারি ভেঙ্গে ছয় লাখ ১০ হাজার টাকা লুটে নেয় চোররা। সোমবার দিনগত রাতের কোনো এক সময়ে ওই চুরির ঘটনা ঘটে।’
চান্দিনা পৌরসভার মেয়ে মো. শওকত হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘তদন্ত সাপেক্ষে চোর চক্রকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি।’
চান্দিনা থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন, ‘আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। এ ঘটনায় পৌরসভা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
ভোলা উপজেলা সদরের ভেদুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা থেকে ২ শ ৫ মণ মাছ জব্দ করেছে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের একটি দল। সোমবার রাত ৯টার দিকে ফেরিঘাট এলাকার একটি মিনি ট্রাক থেকে ২’শ মণ পোয়া ও ৫ মন ইলিশ জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিএন এইচ এম এম হারুন-অর-রশিদ আজ সকালে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি সদর উপজেলার তুলাতুলি এলাকা থেকে মাছ নিয়ে ফেরিঘাটের দিকে আসে ট্রাকটি। এটি বরিশালের উদ্দেশে যাচ্ছিল।’
অভিযান চালিয়ে মাছ উদ্ধারের পর মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় ট্রাক ড্রাইভারকে।
তিনি আরও বলেন, ‘জব্দ করা মাছ রাতেই স্থানীয় এতিমখানা, মাদ্রাসা ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়।’
ইলিশ সম্পদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মার্চ ও এপ্রিল এ দুই মাস ভোলার মেঘনা এবং তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকার দুটি অভয়শ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় পিকআপের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জহিরুল ইসলাম সবুজ মারা যান।
নিহত যুবকের নাম জহিরুল ইসলাম সবুজ (২৮)। সে পেশায় একজন ভাড়ায় মোটরসাইকেলচালক। নিহত সবুজ নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
সোমবার সকালে কলমাকান্দা উপজেলার রাজাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে জহিরুল মোটরসাইকেল করে তিন বস্তা চিনি নিয়ে কলমাকান্দা সদরে আসছিল। পথে রাজাপুর এলাকায় আসামাত্রই বিপরীত দিক থেকে আসা সাদা রংয়ের একটি পিকআপ গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেলটির ধাক্কা লাগে। এতে করে জহিরুল পিকআপ গাড়ির নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে সেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি দেখে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমন পাল তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পিকআপ গাড়িটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।’