রংপুরের তারাগঞ্জে চিকলী নদীর শাইলবাড়ী খেয়াঘাটের বাঁশের সাঁকোটি তীব্র স্রোতে ভেঙে ভেসে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ। সাঁকোর অভাবে এখন অতিরিক্ত চার কিলোমিটার পথ ঘুরে রিকশা কিংবা ভ্যানে করে উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরেও তারা এখানে কোনো সেতু পাননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে শাইলবাড়ী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিকলী নদী। নদীটির শাইলবাড়ী খেয়াঘাটে স্বাধীনতার পর থেকেই সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ের পরিক্রমায় সেখানে কোনো পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়নি। দুর্ভোগ কমাতে নদীপাড়ের লোকজন সেখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে গেলে স্রোতের তীব্রতাও বেড়ে যায়। এতে দুর্বল ও অস্থায়ী বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে ভেসে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের সাঁকোটির মাঝ বরাবর ভেঙে নদীতে পড়ে আছে। সাঁকোর নিচে একটি অকেজো নৌকা পড়ে আছে। জরুরি প্রয়োজনে কেউ কেউ হাঁটুপানি মাড়িয়ে নদী পার হচ্ছেন। অনেকে আবার অতিরিক্ত পথ ঘুরে বিকল্প সড়কে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন।
শাইলবাড়ী গ্রামের মনোয়ারা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘ছবি তোলোছেন, এটা (এখানে) কি নয়া পুল (সেতু) হইবে? পুল না হইলে ভোট দিবার যাইমো না (যাব না)।’
মনোয়ারার সঙ্গে সুর মিলিয়ে দর্জিপাড়া গ্রামের রোকেয়া বেগম বলেন, ‘মোর (আমার) কোনো জমি-জাগা নাই। স্বামীর কোমরোত ব্যথার তকনে কাম কইরার পায় না (কোমরে ব্যথার কারণে কাজ করতে পারে না)। মোর কষ্ট দেখি ইউএনও স্যার শাইলবাড়ী ঘাটের পাশোত উচ্চগ্রামোত (উচ্চগ্রামে) পাকা ঘর (আশ্রয়ণ প্রকল্পের) দিছে। মাইনসের (অন্যের) বাড়িত কাম-কাজ করি আসি শান্তিতে ঘুমাও। কিন্তু বাঁশের সাঁকোর কোনা ভাঙি যাওয়ায় মোর তো যাওয়া-আইসার খুব সমস্যা হওছে।’
ভীমপুর গ্রামের দিনমজুর রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করি চাঁদা তুলি এটে (এখানে) সোবায় মিলি সাঁকো কোনা বানাছনো। তাক (সেটি) এবার পানির স্রোতোত (স্রোতে) ভাঙি গেল। এতে হামার (আমাদের) যাতায়াতের খুব কষ্ট হওছে।’
মহেশখোলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার (৬৫) বলেন, ‘যুদ্ধের পর থাকি যতোবারে ভোট হইছে, ততোবারে নেতারা কথা দিছে, এটে সেতু বানে (বানিয়ে) দিবে। কিন্তু ভোট শ্যাষ হইলে আর কাকো (কাউকে) পাওয়া যায় না। সবায় হামাক (আমাদের) আশা দেয়, কথা থোয় (রাখে) না। সেতুর আশায় জীবনই শ্যাষ হইল। তাও এটে সেতু হইল না। এটে সেতু বানাইতে কী সমস্যা?’
আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রাসেল বলেন, বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় দর্জিপাড়া, খ্যানপাড়, ডাঙ্গাপাড়া, মহেশখোলা, শাইলবাড়ী, নলুয়ারডাঙ্গা, প্রামাণিকপাড়া, কোরানীপাড়া, ভীমপুর, মৌলভীপাড়া ও বানিয়াপাড়াসহ ১২ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ না থাকায় সাঁকোটি সংস্কার করতে পারছি না। তবে এখানে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ হায়দার জামান বলেন, সেতুর জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
বৈসুক উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ছোটবাড়ি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।
ছোটবাড়ি পাড়ার কার্বারী কিনারাম ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ সদস্য প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক রেভিলিয়াম রোয়াজাসহ ছোটবাড়ি পাড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার তুলেদেন পরে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সারা শরীরজুড়ে সিগারেট-কয়েলের ছ্যাঁকা ও আঘাতের দাগ। উপড়ে ফেলা হয়েছে হাতের নখ। অমানুষিক এই নির্যাতন করা হয়েছে মাত্র ছয় বছর বয়সি একটি শিশুর ওপর।
পাবনা শহরের ছাতিয়ানি এলাকার শিশু সোয়াইব হোসেনকে অপহরণের পর আটকে রেখে রাতের বেলায় চলত এমন নির্যাতন। প্রতিবন্ধী বানিয়ে দিনে নামানো হতো ভিক্ষাবৃত্তিতে। উদ্ধারের পর ক্ষুধা ও নির্যাতনে সোয়াইবের কঙ্কালসার দেহ চিনতে কষ্ট হচ্ছে মায়ের।
গত শুক্রবার শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বিপ্লব (৩০) নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ছয় মাস আগে গত ৭ অক্টোবর বিস্কুট কিনে দেওয়ার কথা বলে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব (৬) পাবনা শহরের ছাতিয়ানি এলাকার আমিনুল ইসলাম ও সোহানা জাহানের ছেলে। বাবা অন্যত্র বিয়ে করায় মায়ের কাছে থাকত শিশুটি।
অপহরণকারী রফিকুল ইসলাম বিপ্লব উপজেলার শানির দিয়ার এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অপহরণের পর সন্তানের খোঁজ না পেয়ে গত ৭ অক্টোবর পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা সোহানা জাহান। আত্মগোপনে থাকা অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লব শিশু সোয়াইবের মাকে ফোন করে অপহরণে কথা জানান। বেশির ভাগ সময় তার ফোন বন্ধ থাকত। জিডির পর ফোন নাম্বার ট্র্যাক করে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে পুলিশ। গত শুক্রবার খুলনার রূপসা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভিক্ষারত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকেও আটক করা হয়।
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব জানায়, রাতে তাকে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখা হতো। সহজে কিছু খেতে দিত না। তার শরীরে দাঁতের কামড় বসিয়ে চামড়া তুলে ফেলা হতো। সারা শরীরে দেওয়া হতো সিগারেট ও কয়েলের আগুনের ছ্যাঁকা। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। রাতের এমন নির্যাতন শেষে দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাতো বিপ্লব।
সোয়াইবের মা সোহানা জাহান বলেন, ‘পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সেদিন বিপ্লব আমার কাছ থেকে ছেলেটাকে নিয়ে যায় বিস্কুট কিনে দেবে বলে। তারপর থেকে ছেলেকে আর খুঁজে পাইনি। পরে সে ফোন করে জানিয়েছিল যে আমার ছেলেকে সে অপহরণ করেছে। তারপর থেকে তার ফোনও বন্ধ। এরপর সদর থানায় গিয়ে ঘটনা জানিয়ে জিডি করি।’
সোহানা জাহান আরও বলেন, ‘উদ্ধারের পর প্রথম দেখায় ছেলেকে চিনতেই পারিনি। দিনের পর দিন কীভাবে আমার শিশুসন্তানকে নির্যাতন করেছে ভাবতেই বুকটা ফেটে যায়। প্রায় প্রতিবন্ধী বানিয়ে ফেলেছে। কঙ্কালসার শরীর নিয়ে ছেলেটা হাসপাতালের বেডে। নড়াচড়াও করতে পারছে না। অমানুষ বিপ্লবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শিশুটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান ডা. মাসুদুর রহমান প্রিন্স বলেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার হাতের একটা আঙুল কেটে ফেলতে হবে। সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। ঠিকমতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, অপহরণ করে নিয়ে শিশুটিকে এক প্রকার প্রতিবন্ধী বানিয়ে তাকে ভিক্ষা করাতো অভিযুক্ত বিপ্লব। তথ্যপ্রযুক্তি ও খুলনার রূপসা ফেরিঘাট ফাঁড়ি পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার ও শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে অভিযুক্ত বিপ্লবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর শিশু সোয়াইব হোসাইন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যৌথভাবে যশোর ও রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৩৫ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি পরিচালনায় বছরে সরকারের ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচ হলেও কোনো সুফল নেই। সড়কে পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় সেবা দিতে পারছে না। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোল সড়কে স্কেল চালু করলে এ রুটে বাণিজ্য কমার আশঙ্কায় স্কেল ব্যবহারে তাদের আপত্তি রয়েছে।
প্রতিবছর সড়ক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। তবে পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকচালকরা সড়ক আইন না মানায় অল্প দিনেই সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। এতে সড়ক ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে দুর্ঘটনা। সড়ক পথে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাড়াতে জাপানি এনজিও সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল পৌর গেট এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ওয়িং স্কেল স্থাপন করে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট ওয়িংস্কেল পরিচালনায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা চুক্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইউডিসিকে টেন্ডার দেয় সরকার। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মকর্তা প্রকৌশলী ও কর্মচারীসহ স্কেল পরিচালনায় ৪২ জন কাজ করছেন। নিরাপত্তায় রয়েছে ৭ জন আনসার সদস্য। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনে প্রথম টনে ৫ হাজার ও দ্বিতীয় টনপ্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে স্কেলে অতিরিক্ত পণ্য শনাক্ত হলেও জরিমানা আদায় বা ওভার লোড বন্ধে কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণে অর্থ বিফলে যাচ্ছে এবং অতিরিক্ত পণ্য বহনে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলেন, নওয়াপাড়া ও ভোমরা বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোলে স্কেল চালু করলে এ রুটে ব্যবসা কমে আসবে। পার্শ্ববর্তী বন্দরগুলোতে স্কেল চালু হলে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি ব্যবহার করবেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জমান সনি বলেন, পদ্মা নদীর এপারে বেনাপোলসহ আরও চারটি বন্দর রয়েছে। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দর। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দরে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন না করে বেনাপোল বন্দরসংলগ্ন সড়কে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করে আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল যশোর সড়কে ওজন স্কেল স্থাপনকে সাধুবাদ জানায়। তবে অন্য তিনটি বন্দরে ওজন স্কেল স্থাপন করে একত্রে চারটি বন্দর সংলগ্ন সড়কে ওজন স্কেল চালু করার দাবি জানায়। শুধু বেনাপোলে সড়কে ওজন স্কেল চালু করা করা হলে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেনাপোল বন্দর। এ জন্য এ স্কেল ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
বেনাপোলের ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোল-যশোর সড়কের পৌর গেট এলাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করার ফলে ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী মোংলা, ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দরে কোনো ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়নি। বেনাপোল সড়কের ওজন স্কেল চালু করা হলে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। অন্য বন্দর দিয়ে ট্রাকে মাল একটু কম বা বেশি হলেও কোনো সমস্যা হবে না। তাহলে কেন আমি এ বন্দর দিয়ে মাল এনে জরিমানা দিব? পার্শ্ববর্তী অন্য বন্দরগুলোয় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল চালু করা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি রোকনুজ্জামান জানান, বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে থাকে। এ বন্দরে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বেনাপোল-যশোর সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। ট্রাকগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য বহন করলেও কোনো ওজন স্লিপ না থাকার কারণে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বেনাপোল পৌর গেটে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ স্কেলটি চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা সদরে আজ সুরমা নদীতে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে বিভিন্ন ভারতীয় কসমেটিক্স সামগ্রী ও বিস্কুট জব্দ করেছে টাস্কফোর্স।
আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে সুরমা নদীর সাহেব বাড়িঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান হৃদয়-এর নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়।
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সুরমা নদীর সাহেববাড়ি ঘাট এলাকায় টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে মালিকবিহীন একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ ভারতীয় বেটনোবিট সি, হোয়াইট টোন, পন্ডস ব্রাইট ক্রিম ও অন্যান্য কসমেটিক্স আইটেমসহ মোট ছয়হাজার ১৩০ পিস কসমেটিক্স সামগ্রী এবং চারহাজার ১৭০ প্যাকেট ভারতীয় বিস্কুট জব্দ করা হয়। জব্দকৃত সামগ্রির আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯২০ টাকা।
অভিযানে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম-সহ বিজিবি জওয়ানরা অংশ নেন।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জব্দকৃত ভারতীয় পণ্য সুনামগঞ্জ কাস্টমস কার্যালয়ে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ২ লক্ষ ৬ হাজার ৫ শত ৪৭ জন মানুষের বসবাস। এটি জেলার সবচেয়ে ছোট একটি উপজেলা। জেলা সদর থেকে এই উপজেলার দুরুত্ব ১৭ কিলোমিটার। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করে সরকার। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার অবহেলা আর উদাসীনতায় প্রায় ২ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গত রোববার সকাল ৯ টা। নওগাাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের উপচে পড়া ভীড়। হাতে ও পায়ে ব্যথা নিয়ে কয়েকজন রোগী চিৎকার করলেও পাচ্ছে না সেবা। কষ্টে কাটছে তাদের সময়। এসব বিষয় দেখভালের জন্য অফিসে তখনো আসেননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানা। তার অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা ও দাপ্তরিক কাজে সৃষ্টি হচ্ছে নানা জটিলতা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। আর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন দাপ্তরিক কাজে বাহিরে থাকতে হয় মাঝে মধ্যে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানা ১৪ মার্চ ২০২২ সালে এ হাসপাতালের দায়িত্ব নেন। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে তিনি অনুপস্থিত থাকেন। গত বছরের নভেম্বর মাসে কর্মস্থলে ১০ দিন অনুপস্থিত আর ডিসেম্বর মাসে ১৮ দিন অনুপস্থিত, ৬দিন লেট এবং বাকী দিন গুলোতে সে সকাল দশটার পর আসেন এবং দুপুর দেড়টায় অফিস ত্যাগ করেন। তার দেরীতে আসা যেন নিত্য দিনের রুটিনে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বর্তমানে তিনি আরো দেরীতে আসেন। বেশ কয়েকদিন সরেজমিনে গিয়েও তার সত্যতা পাওয়া যায়। শুধু কর্মস্থলে অনপস্থিত নয়, সে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সরকারি গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আসছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি কোয়াটারে থাকার নিয়ম থাকলেও সে যোগদানের পর থেকেই নওগাঁ সদর থেকে অফিস করেন। আর এভাবেই তিনি সেবাগ্রহীতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনের পর দিন, এমন কি মাসের পর মাস ইচ্ছেমতো চাকুরি করে চলেছেন। যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয়রা বলছেন, গত এক বছর থেকে চালক অভাবে এ্যম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত এই উপজেলার অসহায় রোগীরা। ফলে চালক অভাবে নষ্ঠ হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সটি। এবং গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে হাসপাতালে চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। এবং হাসপাতালের রাজস্ব খাতের ২ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ ৪ মাসেও করেনি কোন মামলা। চলতি মাসের ৭ এপ্রিল আউটডোরে টিকিট কাউন্টারে রোগীর কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৩ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৫ টকা। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার জানালেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত নেওয়া হয় নি কোন ব্যবস্থা।
সচেতন মহল বলছে, সরকারি বিধি অনুসারে একজন কর্মকর্তা তিন বছরের অধিক একই জায়গায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু নিজ কাজে এতো উদাসিনতা আর অবহেলার পরও সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন ডাঃ কানিজ ফারহানা। তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
তবে এসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করেছি, পুলিশ তদন্ত করছে। রোগীর কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৩ টাকার জায়গায় ৫ টাকা বেশী নেওয়ার বিষয়ে তাকে সাবধান করেছি।’
মাসে ১২ দিন অফিস করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাপ্তরিক কাজের জন্য এমনটা মাঝে মাঝে হয়। ব্যক্তিগত কাজে অফিসের গাড়ী ব্যবহারের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত এক বছর ধরে জ্বালানী বাবদ কোন বিল পাই নি। নিজ খরচে গাড়ী ব্যবহার করছি।’
নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাঃ মো আমিনুল ইসলাম এর কাছে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার অবহেলা ও উদাসীনতা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি এই জায়গায়। কোথায় কোথায় সমস্যা আপনি হোয়াটসঅ্যাপে লিখে দিন। আমি দেখছি। বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার গিয়ে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের পাঁচ তরুণসহ ছয়জন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজরা হলেন— জকিগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।
তারা সবাই উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহার মহল গ্রামের বাসিন্দা।
নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে সিলেট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা। পরদিন ১৬ এপ্রিল (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এরপর থেকে তাদের সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ছয়জনের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে কাজ করছে।
নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সফর উদ্দিন।
নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, ‘কক্সবাজার পৌঁছার পর জানিয়েছিল পৌঁছেছে। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন কক্সবাজারে যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে থানায় জিডি করবেন। জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ নিচ্ছে না।’
নিখোঁজ রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, ‘৪ থেকে ৫ বছর ধরে রশিদ চট্টগ্রামে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। কক্সবাজার এই প্রথম গিয়েছে। ওইখানে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। ওইদিনও ওই ঠিকাদারের কাছে তারা যায়। এরপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকতো বা কেউ জিম্মি করত, তাহলে তো টাকা পয়সা চাইতো, এরকম কিছুই না। আমাদের ধারণা তাদের ওইখানে যে লোক নিয়েছে, ওই লোকই কিছু করেছে।’
তবে ঠিকাদারের নাম ঠিকানা কোনো কিছু জানাতে পারেননি নিখোঁজ রশিদের ভাই বাছিত।
নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, ‘তারা প্রায় সময়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম ৫ থেকে ৬ মাস থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। আবার সেখানে গিয়ে কাজ করত। মঙ্গলবারের পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। গতকাল সারারাত থানায় ছিলাম।
তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারের মোবাইল বন্ধ। তবে ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সঙ্গে একজনের নাম বাবুল বলে জানিয়েছেন থানার ওসি। যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পুলিশ জানিয়েছে। আমাদের এলাকার আরও লোকজন সেখানে রয়েছেন তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুঁজি করছেন।’
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘নিখোঁজ ছয়জনই দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কাজ করেন। এখন হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমরা গত ১৮ এপ্রিল বিষয়টি অবগত হয়েছি। এরপর থেকে কাজ করছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বাঘাবাড়ীতে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের মাইজদীকোর্ট এলাকায় ৮৯ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩২ মিনিটে।
সুন্দরবনে কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ করিম শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সুন্দরবনের আদাচাই ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনী তার দলবল নিয়ে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে উক্ত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলটি বনের ভেতরে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর সহযোগী মো. আল আমিনকে ১ টি একনলা বন্দুক, ১ রাউন্ড তাজা গোলা ও ৬ রাউন্ড ফাঁকা কার্তৃজসহ আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতকে জিজ্ঞেসাবাদের মাধ্যমে খুলনা হতে পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে করিম শরীফ বাহিনীর আরেক সহযোগী রেজাউল গাজী বাবুকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফের সাথে ডাকাতি এবং ডাকাত দলকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ দিয়ে সহযোগিতা করছিল বলে জানা যায়।
উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র ও অন্যান্য মালামালসহ আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে আওতাধীন উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে এ সকল অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্ট গার্ডের এরূপ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।
পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।
এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভাগ্য খারাপ, আমন ফসলের ক্ষতি বোরো ফসলে পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার তাও হলো না। এমনটাই বলছিলেন হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া।
প্রতি বিঘায় যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ বোরো ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ৮ থেকে ১০ মণ ধান মিলবে। কারণ, বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গেলেও সেই ধান কাটার পরে দেখা মিলছে চিটা। এমনটা জানান আরেক চাষি আহমদ মিয়া।
মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া আহমদ মিয়ার মতো অনেক চাষির কণ্ঠে এমনই আক্ষেপ। তাদের মুখে নেই হাসি। ভেঙে গেছে সোনালী স্বপ্ন। প্রকৃতির বিরূপ আচরণই বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল হাওর পারের চাষিদের সোনালী স্বপ্নকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।
টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে শিলাবৃষ্টিতে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরপারের বোরো ধানের ফলন।
স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে বোরো মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল অনেক চাষির। কিন্তু বোরো মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে ধানে পোকা ধরে ধান চিটা হয়ে যায়।
হাওরপারের চাষিরা বলছেন, আমনের পর বোরো ফসলের যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠা দুষ্কর। আমন ফসলের ক্ষতি ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা হলো না তাদের। ফলে টানাপড়েন শুরু হবে সংসারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বড় তিনটি হাওর হাকালুকি, হাইলহাওর ও কাউয়াদীঘি ছাড়াও ছোট ছোট হাওর এবং উপরিভাগে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর।
৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন রসুলপুর এলাকার চাষি আব্দুর রকিব। প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১০ মণ ধান পাব কিনা সন্দেহ আছে। এখন ধারদেনা করে চালাতে হবে।
পাড়াশিমইল গ্রামের চাষি মিজু আহমদ বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার অনেকেই আমন ধান পায়নি। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বোরো ফসলই ভরসা ছিল, কিন্তু সেই বোরো ফসলেই পোকা ও চিটা দেখা দেয়। ১০ বিঘা জমি চাষ করি। খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, এখন খরচ তোলাই দায়।’
বানেশ্রী এলাকার ষাটোর্ধ্ব চাষি পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। এরফলে এবার বোরো ধান অর্ধেকের মতো পাব।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে ২০২৪ সালের বন্যায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পানির অভাবে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলো। হাওরের নদী-খাল খনন ও পানির উৎস থাকলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতো। কৃষকদের কৃষি ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে, তবে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের কারণে কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।
বরগুনার আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শুক্রবার খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার পানের বাজার বসিয়েছেন। এতে ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম আকারে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত পানের বাজার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১০ সালে তিনতলা সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার শুক্রবার পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষেধ করলেও তিনি তা মানছেন না। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শতাধিক ব্যবসায়ী পান বিক্রি করছেন। এতে বিদ্যালয় ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিতে একাকার হয়ে আছে।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, আব্দুল্লাহ, সুমাইয়া জানায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রতি শুক্রবার বাজার বসান। ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা বিদ্যালয়ে ফেলে রেখে যায়। ওই ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইজারাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা।
পান ব্যবসায়ী সোবাহান মিয়া বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পান বিক্রি করতে বসিনি। ইজারাদার আমাদেরকে পান বিক্রি করতে বসিয়েছেন।’
স্থানীয় এইচ এম দেলোয়ার মুন্সি বলেন, ইজারাদারকে এমন কাজের প্রতিবাদ করেছি কিন্তু তিনি তা মানছেন না। ইজারাদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখতে ইজারাদারকে অবশ্যই পানের বাজার বসানো থেকে বিরত রাখতে হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন স্বপন বলেন, বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। তাকে বাজার বসাতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তিনি তা শোনেননি।
তিনি আরও বলেন, পান ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারাই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার বলেন, বাজারে সরকারি জায়গা না থাকায় এখানে বাজার বসানো হয়েছে। বিগত দিনে এ বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসত, তাই আমিও বসিয়েছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় কোনো মতেই বাজার বসানো যাবে না। যারা বাজার বসিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রামে রিকশা উল্টে সড়কের পাশের ড্রেনে পড়ে যাওয়ার ১৫ ঘণ্টা পরচাকতাই খাল থেকে ৬ মাস বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিখোঁজ হওয়া স্থানের চার কিলোমিটার দূরে শনিবার স্থানীয়রা শিশু শেরিশের লাশ দেখতে পায় বলে জানায় পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারীঢ পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশটি উদ্ধার করেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা ওই শিশুর মাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দ্রত সেখানে যান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি উদ্ধার অভিযানে নির্দেশনা দেন।
মেয়র বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারই প্রধান কাজ। ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ করছেন। রিকশাযাত্রী মায়ের কোল থেকে ছয় মাসের শিশু নালায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন পানিতে স্রোত ছিল।