রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

পাঁচ বার হাত বদল হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায়

প্লাস্টিকের নৌকায় চড়ে অবৈধপথে সাগর পাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:৩০

বেকার ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন কুমিল্লার মিলন হোসেন। পূর্ব পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকাপ্রবাসী আল আমীনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে চট্টগ্রামের শফিউল আলম ও ঢাকার পল্টন এলাকার নুর আলমের সঙ্গে দেখা করতে বলেন আল আমীন। শফিউল ও নুর আলম তার ছেলেকে ৩ লাখ টাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা পাঠানোর নিশ্চয়তা দেন। তারপর এক দিন পাসপোর্টসহ ছেলে রিয়াজ হোসেন পাটোয়ারীকে তুলে দেন শফিউল ও নুর আলমের হাতে। তারপর থেকেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় ছেলের সঙ্গে। যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শফিউল আলম, নুর আলম এবং আল আমিনও।

মাস তিনেক পর হঠাৎ ছেলে রিয়াজ তাকে ফোন করে জানান, আফ্রিকার সীমান্তবর্তী একটি জঙ্গলে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করছে মানব পাচার ও অপহরণকারীদের আন্তর্জাতিক একটি চক্র। এই চক্রকে ৬ হাজার ডলার না দিলে তাকে মেরে ফেলবে। ব্যবসায়ী মিলন হোসেন বুঝতে পারেন বিদেশে পাঠানোর নামে নিজেই ছেলেকে মানব পাচার ও অপহরণকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছেন।

ছেলের ফোন পাওয়ার পর অপহরণকারী চক্রের কথামতো আবারও দেখা করেন সেই শফিউল আলমের সঙ্গে। হাতে তুলে দেন ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। টাকা পেয়ে আবারও আত্মগোপনে চলে যান শফিউল। শেষে বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে যান মিলন। গত বছরের ১৩ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ছেলেকে পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেন মিলন হোসেন।

মানব পাচারের এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানতে পারে, পাঁচ বার হাত বদল হয়ে রিয়াজকে পাচার করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। পাচারকারী ও অপহরণকারী চক্র আরও টাকার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্তে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণের টাকা নিয়েছে। পরে ডিবির ডেমরা জোনাল টিম অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্য শফিউল আলম ও রুহুল আমীন চঞ্চলকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা দৈনিক বাংলাকে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শফিউল ও চঞ্চল জানিয়েছে তারা রিয়াজকে প্রথমে ঢাকা থেকে দুবাই নিয়ে যান। দুবাইয়ে নিয়ে তাকে আন্তর্জাতিক পাচার ও অপহরণ চক্রের আরেক সদস্য এজাজের হাতে তুলে দেয়া হয়। এজাজ তাকে দুবাই থেকে কেনিয়ার নাইরোবি নিয়ে চক্রের আরেক সদস্যের হাতে তুলে দেয়। তারা নাইরোবি থেকে রিয়াজকে মোজাম্বিকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আরেক হাত বদল হয়ে রিয়াজকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্তবর্তী দেশ সোয়াজিল্যান্ড বা ইসোয়াতিনিতে। সেখানে সাঈদ নামে চক্রের আরেক সদস্য তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্তে নিয়ে চক্রের আরেক সদস্য পাকিস্তানি নাগরিক আমীরের হাতে তুলে দেয়। আমীর তাকে নিয়ে সীমান্তবর্তী একটি এলাকায় আটকে রেখে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন শুরু করে। রিয়াজকে দিয়ে তার বাবাকে ফোন করিয়ে মুক্তিপণের জন্য ৬ হাজার ডলার দাবি করে। আমীরের কথামতো ৬ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চক্রের দেশীয় এজেন্ট শফিউলের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন রিয়াজের বাবা।

ঢাকা মহানগর ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় মানব পাচারের ক্ষেত্রে চক্রটি সাধারণত ঢাকা-দুবাই বা ঢাকা-কাতার রুট ব্যবহার করে। ঢাকা থেকে দুবাই বা কাতার হয়ে কেনিয়া, তানজিনিয়া বা মোজাম্বিকে নেওয়া হয়। কারণ এসব দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে প্রবেশের সুযোগ আছে। শুধুমাত্র কোনো একটি হোটেল বুকিং করতে পারলেই ওইসব দেশে প্রবেশ করা সহজ। সেখান থেকে সড়ক পথে বা নদী পার হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নেওয়া হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্তর্জাতিক মানব পাচার ও অপহরণকারী চক্রে বাংলাদেশি নাগরিকেরাই বেশি সম্পৃক্ত। এ ছাড়া স্থানীয় ও পাকিস্তানি নাগরিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব অপকর্ম করে থাকে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের শেষের দিকে মানব পাচার ও অপহরণকারী চক্রের কবলে থাকা ২৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছিল দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা ফিরতি পথে ইথিওপিয়া গিয়ে আবারও চক্রের হাতে আটকা পড়ে। ইথিওপিয়াতে তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করে অনেকের পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করে চক্রটি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তারা ওই চক্রের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে আসে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় মানব পাচারের অসংখ্য ঘটনার একটি রিয়াজ। অনেকেই এই চক্রের কবলে পড়ে আফ্রিকা যাচ্ছেন। চক্রের সদস্যরা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে যেতে ইচ্ছুকদের সেখানে পাচার করে।

চক্রটির মূল উদ্দেশ্যই থাকে আফ্রিকার সীমান্তে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করা। ঘটনাস্থল ভিন্ন দেশ হওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও তাদের সহজেই শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারে না।

তবে আলোচিত এই মামলার তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটের একটি যৌথ দল দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছে।

তদন্তে পাঁচ সদস্যের পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট দল

ঢাকা মহানগর ডিবি কর্মকর্তারা জানান, আলোচিত এই ঘটনায় বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকায়ও মানব পাচার-সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছে। দেশে গ্রেপ্তার আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে তদন্ত দলটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পাচার ও অপহরণের শিকার রিয়াজের জবানবন্দি গ্রহণ ও আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) সহায়তায় আসামিদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেবে।

২২ সেপ্টেম্বর ১০ দিনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন ঢাকা মহানগর ডিবির সাবেক যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম (ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে পদায়িত), ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত উপকমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কামরুজ্জামান ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ।

তদন্ত দলের একজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে জানান, তারা এই মামলার তদন্তের পাশাপাশি সেখানে মানব পাচার ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবেন। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় মাদারীপুরের এক বাসিন্দাকে অপহরণ ও হত্যার একটি মামলাও তাদের কাছে তদন্তাধীন আছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই মামলারও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন তারা।

এ ছাড়া সরেজমিনে ভুক্তভোগী, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিসহ স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তারা চক্রের সদস্যদের একটি তালিকা তৈরির চেষ্টা করবেন। এটি করা গেলে দক্ষিণ আফ্রিকায় কেউ মানব পাচার বা অপহরণের শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীদের দেশীয় এজেন্টদের শনাক্ত করা যাবে। ইন্টারপোল তাদের এই তদন্তে সার্বক্ষণিক সহায়তা করবে।

তদন্ত তদারক দলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দুটি মামলার তদন্তের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছি। সেখানে ভিকটিমের সাক্ষ্য নেয়াসহ ওই দেশে অবস্থান করা আসামিদের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করব।’

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মানব পাচার মামলায় শাস্তির হার খুবই কম। যদি আমরা ঘটনার মূলে গিয়ে অনুসন্ধান বা তদন্ত করে যথাযথভাবে অভিযোগপত্র দিতে পারি তাহলে পাচারকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের পাচারকারীদের মনেও ভয় ঢুকবে যে বাংলাদেশের পুলিশ বিদেশে গিয়ে তদন্ত করছে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি পরিসংখ্যান বলছে, মানব পাচারের ঘটনায় দেশে প্রতি মাসে গড়ে অর্ধ শত মামলা হলেও বিচার শেষে সাজা খুবই কম। ২০২১ সালে একটি মামলায় দুজনের সাজা হয়েছে। বর্তমানে মানব পাচার-বিষয়ক প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মামলা আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মানব পাচারের মামলায় অনেক সময় আসামি ও বাদীপক্ষ আপস করে ফেলে। তদন্তেও দুর্বলতা থাকে। এ ছাড়া সাক্ষীরাও আদালতে সাক্ষ্য দিতে চান না। এজন্য আদালতও আসামিদের দণ্ড দিতে পারেন না। এ জন্য মানব পাচারের মামলায় অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে তদন্তে প্রয়োজনীয় ও আইনগত সব ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

পাচার-অপহরণের পাশাপাশি খুনেরও শিকার বাংলাদেশিরা

দক্ষিণ আফ্রিকায় মানব পাচার, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের পাশাপাশি খুনের শিকারও হচ্ছেন বাংলাদেশি নাগরিকেরা। প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের অনেক পলাতক সন্ত্রাসী আত্মগোপন করে আছেন। তারা প্রবাসী বাংলাদেশি এবং স্থানীয়দের নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। মানব পাচারের পাশাপাশি সেখানে অবস্থানরত প্রবাসীদের অপহরণ করে মুক্তিপণও আদায় করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামাজিক সংগঠন মুক্ত বাংলার প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘চলতি বছরই দক্ষিণ আফ্রিকায় শতাধিক মানুষ পাচার, অপহরণ ও খুনের শিকার হয়েছেন। প্রবাসী হওয়ার কারণে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তত বেশি গুরুত্বও দেয় না। আর বাংলাদেশের দূতাবাসের এসব নিয়ে আগ্রহ অনেক কম।’

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মাদারীপুরের বাসিন্দা রেজাউল আমান মোল্লা নামে এক প্রবাসীকে পুমালাঙ্গা এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এর ১০ দিন পর ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের ফান্ডারভেল পার্ক এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। অপহরণকারী চক্র তাকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল। ওই ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছিল।

গত ২৬ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনের মিচেলসপ্লেন এলাকায় বসবাসরত মাদারীপুরের আক্তার প্রধানকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারী চক্র তাকে নির্মম নির্যাতনের ভিডিও করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ দাবি করে। স্থানীয় প্রবাসীরা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এর মধ্যেই ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুইন্সটাউনের বাসিন্দা মুন্সীগঞ্জের আলামীন নামে এক তরুণকে অপহরণ করা হয়।

প্রবাসীরা জানান, চক্রের বাংলাদেশি সদস্যরা প্রথমে সখ্য গড়ে তুলে টার্গেটের অর্থবিত্ত সম্পর্কে খোঁজ নেয়। পরে চক্রের স্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অপহরণ করে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী অধিকারকর্মী এস এইচ মোহাম্মদ মোশারফ বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্তমানে যে দেড় লাখ বাংলাদেশি আছেন তার অধিকাংশই অবৈধ পথে আসা। মূলত এরাই অপহরণ বা খুনের শিকার হচ্ছেন। চলতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় ৯১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছেন, যার অধিকাংশই ডাকাতের হাতে খুন বা অপহরণের হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব চক্রের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিরাই জড়িত।’


সুন্দরবনে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগীকে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুন্দরবনে কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ করিম শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সুন্দরবনের আদাচাই ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনী তার দলবল নিয়ে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে উক্ত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলটি বনের ভেতরে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর সহযোগী মো. আল আমিনকে ১ টি একনলা বন্দুক, ১ রাউন্ড তাজা গোলা ও ৬ রাউন্ড ফাঁকা কার্তৃজসহ আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতকে জিজ্ঞেসাবাদের মাধ্যমে খুলনা হতে পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে করিম শরীফ বাহিনীর আরেক সহযোগী রেজাউল গাজী বাবুকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফের সাথে ডাকাতি এবং ডাকাত দলকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ দিয়ে সহযোগিতা করছিল বলে জানা যায়।

উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র ও অন্যান্য মালামালসহ আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে আওতাধীন উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে এ সকল অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্ট গার্ডের এরূপ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।


যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে ডিএসসিসি’র বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান

নগর ভবন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।

পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।

এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।

এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।


মৌলভীবাজারে ভেঙে গেল কৃষকের স্বপ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহ্উদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার

ভাগ্য খারাপ, আমন ফসলের ক্ষতি বোরো ফসলে পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার তাও হলো না। এমনটাই বলছিলেন হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া।

প্রতি বিঘায় যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ বোরো ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ৮ থেকে ১০ মণ ধান মিলবে। কারণ, বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গেলেও সেই ধান কাটার পরে দেখা মিলছে চিটা। এমনটা জানান আরেক চাষি আহমদ মিয়া।

মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া আহমদ মিয়ার মতো অনেক চাষির কণ্ঠে এমনই আক্ষেপ। তাদের মুখে নেই হাসি। ভেঙে গেছে সোনালী স্বপ্ন। প্রকৃতির বিরূপ আচরণই বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল হাওর পারের চাষিদের সোনালী স্বপ্নকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।

টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে শিলাবৃষ্টিতে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরপারের বোরো ধানের ফলন।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে বোরো মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল অনেক চাষির। কিন্তু বোরো মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে ধানে পোকা ধরে ধান চিটা হয়ে যায়।

হাওরপারের চাষিরা বলছেন, আমনের পর বোরো ফসলের যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠা দুষ্কর। আমন ফসলের ক্ষতি ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা হলো না তাদের। ফলে টানাপড়েন শুরু হবে সংসারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বড় তিনটি হাওর হাকালুকি, হাইলহাওর ও কাউয়াদীঘি ছাড়াও ছোট ছোট হাওর এবং উপরিভাগে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর।

৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন রসুলপুর এলাকার চাষি আব্দুর রকিব। প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১০ মণ ধান পাব কিনা সন্দেহ আছে। এখন ধারদেনা করে চালাতে হবে।

পাড়াশিমইল গ্রামের চাষি মিজু আহমদ বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার অনেকেই আমন ধান পায়নি। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বোরো ফসলই ভরসা ছিল, কিন্তু সেই বোরো ফসলেই পোকা ও চিটা দেখা দেয়। ১০ বিঘা জমি চাষ করি। খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, এখন খরচ তোলাই দায়।’

বানেশ্রী এলাকার ষাটোর্ধ্ব চাষি পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। এরফলে এবার বোরো ধান অর্ধেকের মতো পাব।’

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে ২০২৪ সালের বন্যায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পানির অভাবে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলো। হাওরের নদী-খাল খনন ও পানির উৎস থাকলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতো। কৃষকদের কৃষি ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে, তবে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের কারণে কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।


বিদ্যালয় নয় যেন পানের বাজার!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শুক্রবার খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার পানের বাজার বসিয়েছেন। এতে ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম আকারে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত পানের বাজার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১০ সালে তিনতলা সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার শুক্রবার পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষেধ করলেও তিনি তা মানছেন না। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শতাধিক ব্যবসায়ী পান বিক্রি করছেন। এতে বিদ্যালয় ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিতে একাকার হয়ে আছে।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, আব্দুল্লাহ, সুমাইয়া জানায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রতি শুক্রবার বাজার বসান। ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা বিদ্যালয়ে ফেলে রেখে যায়। ওই ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইজারাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা।

পান ব্যবসায়ী সোবাহান মিয়া বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পান বিক্রি করতে বসিনি। ইজারাদার আমাদেরকে পান বিক্রি করতে বসিয়েছেন।’

স্থানীয় এইচ এম দেলোয়ার মুন্সি বলেন, ইজারাদারকে এমন কাজের প্রতিবাদ করেছি কিন্তু তিনি তা মানছেন না। ইজারাদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখতে ইজারাদারকে অবশ্যই পানের বাজার বসানো থেকে বিরত রাখতে হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন স্বপন বলেন, বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। তাকে বাজার বসাতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তিনি তা শোনেননি।

তিনি আরও বলেন, পান ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারাই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার বলেন, বাজারে সরকারি জায়গা না থাকায় এখানে বাজার বসানো হয়েছে। বিগত দিনে এ বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসত, তাই আমিও বসিয়েছি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় কোনো মতেই বাজার বসানো যাবে না। যারা বাজার বসিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


চট্টগ্রামের ড্রেনে নিখোঁজ শিশুর লাশ চাকতাই খাল থেকে উদ্ধার

চট্টগ্রামে ড্রেনে নিখোঁজ শিশুর লাশ চাকতাই খাল থেকে উদ্ধার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রামে রিকশা উল্টে সড়কের পাশের ড্রেনে পড়ে যাওয়ার ১৫ ঘণ্টা পরচাকতাই খাল থেকে ৬ মাস বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিখোঁজ হওয়া স্থানের চার কিলোমিটার দূরে শনিবার স্থানীয়রা শিশু শেরিশের লাশ দেখতে পায় বলে জানায় পুলিশ।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারীঢ পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশটি উদ্ধার করেছে।

এর আগে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা ওই শিশুর মাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দ্রত সেখানে যান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি উদ্ধার অভিযানে নির্দেশনা দেন।

মেয়র বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারই প্রধান কাজ। ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ করছেন। রিকশাযাত্রী মায়ের কোল থেকে ছয় মাসের শিশু নালায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন পানিতে স্রোত ছিল।


গাজীপুরে ফ্ল্যাটে মিলল দুই শিশুর গলা কাটা লাশ

দিনদুপুরে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি ভাড়া বাসা থেকে দুই শিশুর গালা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, তাদের কুপিয়ে ও গলা কেটে খুন করা হয়েছে। শিশুদুটি সম্পর্কে ভাইবোন ছিল।

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় পূর্ব আরিচপুর রূপবানের মার টেক এলাকা থেকে লাশদুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলো- আব্দুল্লাহ (৩) ও মালিহা (৬)। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার তাতোয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল বাতেনের সন্তান।

পূর্ব আরিচপুর এলাকার সানোয়ার নামের এক ব্যক্তির আটতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন আব্দুল বাতেন।

নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ (শুক্রবার) বিকালে নিহত শিশুদের মায়ের চিৎকারে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্বজনরা। এরপর শিশুদুটির গলাকাটা রক্তাক্ত নিথর দেহ দেখতে পান তারা। পরে তারা থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

এ সময় নিহতদের মা বাসায় থাকলেও তাদের বাবা বাসার বাইরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কী কারণে শিশুদুটিকে এমন নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে, কারা করেছে এমন কাজ—তাৎক্ষণিকভাবে এসব ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


২৫১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে ডিএমপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

হারানো, চুরি ও ছিনতাইকৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৫১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।

আজ বৃহস্পতিবার উপ-পুলিশ কমিশনারের (তেজগাঁও বিভাগ) কার্যালয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজানের উপস্থিতিতে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন প্রকৃত মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, হারিয়ে যাওয়া, চুরি ও ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় মোবাইল ফোন মালিকরা বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত একমাসে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ ৬৩টি, হাতিরঝিল থানা পুলিশ ৫৪টি, মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ৪০টি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ ৩২টি, আদাবর থানা পুলিশ ৩২টি ও তেজগাঁও থানা পুলিশ ৩০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।


চট্টগ্রামে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করা ডাকাত চক্রের হোতা আরিফ গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চট্টগ্রাম নগরের বারেক বিল্ডিং মোড়ে ডাকাতের আস্তানায় চালানো অভিযানে দুই পুলিশ সদস্য ছুরিকাঘাতে আহতের ঘটনায় ডাকাত চক্রের মূলহোতা আরিফ হোসেন ওরফে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৫০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডবলমুরিং থানার আওতাধীন বারেক বিল্ডিং মোড়ের একটি ফাঁকা প্লটে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। তখন পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত হলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের ঘিরে ধরে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চক্রের মূল হোতা আরিফ হোসেন ছুরি দিয়ে পুলিশকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর থেকেই আরিফ হোসেন আমাদের নজরে ছিল। সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে যে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যবহার করে সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।

তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চলবে বলেও জানান ওসি।


উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়েছেন পিয়ন

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিওন সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:৩০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাহবুব আলম সুমন নামে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক পিয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সরকারি অনুদানের কথা বলে ও প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সনমান্দি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নুরউদ্দিনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার, একই ইউনিয়নের গিরদান গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তাসলিমা বেগম ও নাজিরপুর গ্রামের মুকবিল হোসেনের ছেলে জনি মিয়া।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ করে টাকা অর্থ সহায়তা দেবেন বলে প্রচার করেন। সেই অর্থ পেতে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে ৬ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে বলে জানান। পিওনের কথা বিশ্বাস করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ তাকে ৬ হাজার টাকা করে ব্যাংকে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নাম করে তিনি আবেদনকারীদের মোবাইল ফোনে সান্ত্বনা এসএমএস দিয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে বিষয়টি আবেদনকারীদের সন্দেহ হলে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে তাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা জমা হয়নি।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা বলে নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩২ জনের কাছ থেকে তিনি এক থেকে দেড় লাখ, গাভী দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২৬ জনের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতা পাইয়ে দেওয়ার জন্যও টাকা নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী স্বর্ণা আক্তার জানান, তারা গরিব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, তাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা টাকা নিয়েছেন। অফিসে এসে জানতে পেরেছি তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন।

অভিযুক্ত পিওন মাহবুব আলম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি।

সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


অনিয়ম-দুর্নীতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে কৃষি অফিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রতিটি খাতেই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে কৃষি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছে কর্মকর্তা শাহিন রানা। কৃষকদের জন্য ধান, সয়াবিন, বাদাম ও ভুট্টা কাটার যন্ত্রপাতি বরাদ্দ এনে তা প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ট্রেনিং, প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর নামে কৃষকদের এনে নামমাত্র নাস্তা ও সামান্য নগদ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সাদা কাগজ স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে বিদায় করা হয়। কৃষি অফিসটি এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করছেন এই কর্মকর্তা।

অভিযোগ উঠেছে, কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের সিংহভাগ লুটপাট হচ্ছে। তারা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হয় কৃষকদের স্বাক্ষর ও টিপসই।

এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানার পকেটে। সরকারি বরাদ্দের এক-চতুর্থাংশও কৃষকরা পাচ্ছেন না। অফিসের যন্ত্রপাতি (মেশিন) থেকে শুরু করে প্রতিটি খাত থেকে কৃষি কর্মকর্তার বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাস্তা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান অন্তত ১৫ জন কৃষক।

বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাদের জন্য সরকার কি পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকরা পাচ্ছেন কতটুকু। তারা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে কিছুই জানায় না। উল্টো তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি ধমকিও দেন এ কর্মকর্তা। এতে কৃষকরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

কৃষি অফিস বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, খেসারি, মসুর, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন কৃষককে ৫ একরের একটি করে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা। কোন গ্রুপে ১৫ হাজার আবার কোন গ্রুপে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। হেক্টর-প্রতি কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক,নগদ টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা তাও দেওয়া হয়েছে নামমাত্র।

এএসসিপি প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে কৃষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন কৃষক। ওই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষকের জন্য খাবার বাবদ বরাদ্দ ৪০০ টাকা এবং ব্যাগ বাবদ ৬৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০০ টাকা দামের ১ প্যাকেট বিরিয়ানি আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকার একটি ব্যাগ। তাদের অভিযোগ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাশতা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে কৃষক ও যন্ত্রপাতি বরাদ্দের তালিকা চাইলে তিনি আজ নয় কাল বলে তালবাহানা করে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদক কাগজপত্রের জন্য কৃষি অফিস অন্তত তিনবার গিয়ে তার কাছ থেকে এসব তথ্য নিতে পারেননি।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, গত বছর কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা কাটার মেশিন ৮ টি,কম্বাইন হারভেস্টার ২ টি,রিপার ৪ টি,রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ওয়াকিং টাইপ ২ টি ও পাওয়ার স্প্রয়ার ১ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা চাষ না হলেও এ কর্মকর্তা লুটপাটের উদ্দেশ্যে ধান কাটার মেশিন বাদ দিয়ে ভুট্টা কাটার মেশিনের চাহিদা পাঠান। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ৮ টি মেইজ শেলার (ভুট্টা মাড়ার মেশিন) বরাদ্দ দেন। মেশিনগুলো প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার অনুগত লোকজনের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে ফটোসেশান করে ওই মেশিন অন্যদের নিকট নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেন। ৪ টি রিপার পেলেও ওইগুলো তার পছন্দের এক দালালের মাধ্যমে ভৈরব নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে।

উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট এলাকার মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন একটি মেইজ শেলার মেশিন। ১৫ দিনের মাথায় তিনি ওই মেশিনটি অন্য এক কৃষকের নিকট বিক্রি করে দেন।

চরলরেন্স এলাকার হাছন আলীর নামে একটি মেইজ শেলার মেশিন বরাদ্দ দেখানো হয়। তার ফোন নম্বরে কল করা হলে নাম্বারটি ঢাকার এক বাসিন্দা দাবী করে বলেন, তার বাড়ী ঢাকায়, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেননা। তার ফোন নাম্বার কৃষি অফিসের তালিকায় কেন থাকবে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পুষ্টি বাগানের জন্য বিভিন্ন গ্রুপে ১৪৫ জন কৃষককে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি কৃষককে ৫টি গাছের চারা,২৫০ টাকার বীজ, ও ৪৫০ টাকার সার দিয়ে বাকি টাকা সম্পূর্ণ তার পকেটে ঠুকান বলে অভিযোগ করেন ৫ জন কৃষক।

এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় বাগান পরিচর্যার জন্য শতাধিক কৃষককে ট্রেনিং দেওয়া হয়। এতে প্রত্যেক কৃষকের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষি কর্মকর্তা সাদা-কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দুইভাগ ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ নিয়ে কৃষকদের সাথে কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডাও হয়েছে বলে তিনজন কৃষক এ প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেন।

এছাড়া এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষক ট্রেনিংয়ের নামে ২০ টাকার নাস্তা,১২০ টাকার দুপুরের খাওয়া ও নগদে ২৫০ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ভাবেই চলছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি।

এসএসিপি প্রকল্পে ট্রেনিং নেওয়া সাহেবের-হাট এলাকার কৃষক খুরশিদ আলম বলেন, একবার একটা ট্রেনিং করে তিনি ৮০০ টাকার ভাতা পেয়েছেন।

চরফলকন এলাকার কৃষক মো. ইউসুফ জানান, তার একটি পুষ্টি বাগান রয়েছে। কখনো ট্রেনিং করেননি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে একটা আমের চারা, লেবুর চারা ও একটি সাইনবোর্ড ছাড়া তিনি কিছুই পাননি।

চরলরেন্স এলাকার কৃষক মোঃ ইউসুফ জানান, তার একটি টমেটো বাগান রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে একবার ২ হাজার ৫০০, আবার ৩ হাজার টাকা ও কিছু বীজ পেয়েছেন তিনি।

বরাদ্দের বিষয়ে অফিসের এক সহকারী বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দের কোনো কপি আমাদের দেওয়া হয় না। অফিস থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, আমরা ডায়েরিতে নোট করে নিই।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানা বলেন, ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তবে তার আমলে কৃষকদের বরাদ্দ সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের পছন্দের কেউ থাকলে নাম দিতে পারেন। আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনাদের দেওয়া নামগুলোকে বরাদ্দের আওতায় নিয়ে আসব।’


বৃষ্টির পরেও বিশ্বে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঢাকাসহ দেশের আট বিভাগে গতকাল (বুধবার) কয়েকঘণ্টা ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ার পরেও দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। একিউআই সূচক অনুযায়ী ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের একিউআই স্কোর ১৮৩।

নেপালের কাঠমান্ডু, সেনেগালের ডাকার ও ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় শহর যথাক্রমে ১৭০, ১৬৭ ও ১৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ১৪৯।

যখন দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বাতাসের গুণমানকে 'মাঝারি' বলে বিবেচনা করা হয়।

একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়।

এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। শহরটির বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।


চুরির অপবাদে বাবা-ছেলেকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

৮২ জনকে আসামি করে মামলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে তাদেরকে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গফুর (৫০) ও তাঁর ছেলে মেহেদী হাসান (১৫) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। জানাযা শেষে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি বাবা-ছেলেকে দাফন করা হয়।

আবদুল গফুরের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে রোববার রাতেই ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। সে মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয় বলে জানান থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান। হত্যার ঘটনায় তাৎক্ষনিক পলাশীহাটা গ্রামের মো. রিপন (৩২), নাওগাঁও গ্রামের মৃত সাবান আলীর ছেলে মো. মোজাম্মেল হক (৬৫) ও এক কিশোর (১৩) আটক করে পুলিশ।

ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, সালিশে না যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাড়িতে গিয়ে গণপিটুনি দিয়ে বাবা-ছেলেকে হত্যা করা হয়, মামলার এজাহারে সেটিই উল্লেখ করা হয়েছে। তিনজন আসামিকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীর চাচাতো ভাই আবদুল মোতালেবের কাছে সাড়ে ৭ কাঠা জমি পাঁচ বছর আগে বন্ধক দিয়েছিলেন। দুই লাখ টাকা জমি বন্ধক দিলেও তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং টাকার প্রয়োজন হওয়ায় আরও পাঁচ বছরের জন্য এক লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা ও জমি কিছুই দিতে চাইছিলেন না আবদুল মোতালেব। পরে তাঁর স্বামী অন্য জায়গায় জমি বন্ধক দিতে চাইলে তাতেও বাধা দেন। ওই অবস্থায় স্থানীয়ভাবে সালিসে বসে তিন মাস আগে এক লাখ টাকা দিলেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল মোতালেব।

তিনি আরও বলেন, মেহেদী আমার স্বামীর প্রথম পক্ষের ছেলে। সে একটু বখাটেপনা করত। চার-পাঁচ দিন আগে আবদুল মোতালেবের ফিশারি থেকে দুটি তেলাপিয়া মাছ ধরায় ক্ষুব্ধ হয়ে বকাঝকা করে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়। এর মধ্যে প্রতিবশি বিদেশফেরত একজনের কিছু কাগজ ও মুঠোফোন চুরি হওয়ায় এর অপবাদ দেয় মেহেদীকে। এ নিয়ে সালিস বসালে আমার স্বামী ছেলেকে নিয়ে যায়নি। সে কারণে বাড়িতে এসে হামলা করে তাদের হত্যা করে।


বাজি ফাটানো নিয়ে দ্বন্দ্ব: মাদারীপুরের রাজৈরে ১৪৪ ধারা জারি

দুই দিনব্যাপী এ সংঘর্ষে বিস্ফোরণ, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মাদারীপুরের রাজৈরে বাজি ফাটানো নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই গ্রামের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এ সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছে।
পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা যৌথভাবে তৎপরতা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টাব্যাপী রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া মোড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ১০-১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট তাণ্ডব চালানো হয়।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল হক জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।


banner close