রংপুরের তারাগঞ্জের ইকোরচালী হাজীপাড়া এলাকায় খারুভাজ সেতুর কাছে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। এর আগে গত ৪ মে রংপুরের পাগলাপীর সলেয়াশা বাজারে একটি থ্রি-হুইলার ও একটি মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে প্রাণ হারান পাঁচজন। কেবল এই দুটি দুর্ঘটনা নয়, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে প্রতিনিয়তই এ রকম দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে, তাতে বেড়ে চলেছে হতাহতের সংখ্যা।
হাইওয়ে পুলিশের তথ্য বলছে, এই মহাসড়কে গাইবান্ধার ধাপেরহাট থেকে নীলফারীর সৈয়দপুর পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার অংশের ১৫টি স্থানে গত ১০ মাসে এ রকম সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৩৮ জন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনার কারণে এই ১৫টি স্থান রীতিমতো ‘মৃত্যুফাঁদ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
এসব স্থানে দুর্ঘটনার পেছনে গাড়িচালক থেকে শুরু করে যাত্রী ও পুলিশও দায়ী করছে তিন চাকার যানবাহনকে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ককে তিন চাকার যান মুক্ত করতে পারলেই দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করছেন তারা।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩ নভেম্বর সৈয়দপুর বাস টার্মিনাল এলাকার কাছে ট্রাকচাপায় তিন শ্রমিক নিহত হন। পরদিন ৪ নভেম্বর সৈয়দপুরেরই দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের রাবেয়া বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় বাসের ধাক্কায় ভ্যানচালক ও এক যাত্রী নিহত হন। ২৭ নভেম্বর তারাগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজের সামনে আরেক দুর্ঘটনায় নিহত হন চারজন। ২৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের কলাবাগান এলাকায় বাসচাপায় নির্বাচন কর্মকর্তা নিহত হন।
এ বছরের ২৭ জানুয়ারি মিঠাপুকুরে এক অটোরিকশাকে বাঁচাতে গিয়ে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। ৯ ফেব্রুয়ারি সৈয়দপুরে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় মৃত্যু হয় একজনের। ২১ ফেব্রুয়ারি ইকরচালী পাকারপুল এলাকায় বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন দুজন। ১৮ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ি বড়দরগা এলাকায় বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন দুজন। ২৪ এপ্রিল তারাগঞ্জে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাঁচাতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। ২৭ এপ্রিল সাদুল্লাপুরের মহেশপুরে বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি হলে নিহত হন তিনজন। মে মাসের দুর্ঘটনার কথা বলা হয়েছে আগেই।
ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ বলছে, এই মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। কোনো কোনো দুর্ঘটনায় প্রাণহানি না থাকলেও আহত হচ্ছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
হাইওয়ে পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট থেকে রংপুরের দমদমা ব্রিজ পর্যন্ত এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পাঁচটি- পীরগঞ্জের আঙরার ব্রিজ, মাদারহাট, পীরগঞ্জের লালদিঘি, মিঠাপুকুরের জায়গীরহাট ও দমদমা ব্রিজ। অন্যদিকে দমদমা ব্রিজ থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্পট ১০টি। এর মধ্যে তারাগঞ্জের বেলতলী, সলেয়াশা বাজার, সামিট ফুড কোম্পানিসংলগ্ন সড়ক, হাজিরহাট আকিজ বিড়ি মোড়, সৈয়দপুরের কামারপুকুর ও সৈয়দপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন বাজার এলাকা অন্যতম।
হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও পরিবহন শ্রমিকরা বলেন, ‘এই মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহন। নসিমন, করিমন, ভটভটি ছাড়াও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চালকরা যেখানে-সেখানে এসব যানবাহন দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলেন। সিগন্যাল না মেনে ইচ্ছামতো চলে এসব যানবাহন। হুটহাট মোড় নেয়া এবং তিন চাকার অন্য যানবাহনগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এগুলো।
সরেজমিন ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরেও দেখা গেছে, তিন চাকার যানবাহনগুলোর সংখ্যা অনেক বেশি। এসব যানবাহনের চালকদের বড় অংশই কিশোর। বাস বা অন্য পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলার চেষ্টা করে তারা। বাস ও ট্রাকচালকদের অভিযোগ, তিন চাকার যানবাহনের চালকদের বেশির ভাগই অদক্ষ।
অটোরিকশাচালকরা অবশ্য কোনো সমস্যা হয় না বলে জানান। তারাগঞ্জের সলেয়াশা বাজার এলাকার রহমত আলী। তিনি বলেন, ‘রাস্তার এক পাশ দিয়ে অটো চালাই। কোনো সমস্যা হয় না। মাঝে মধ্যে যখন বড় বড় বাস ও ট্রাক যায়, তখন একটু সচেতন থাকতে হয়।’ পুলিশ মামলা দেয় কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে কখনো মামলা দেয়নি।’
মহাসড়কের পাগলাপীর এলাকায় কথা হয় অটোরিকশাচালক মনির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি সৈয়দপুর থেকে রংপুরের মেডিকেল মোড় পর্যন্ত যাত্রী আনা-নেয়া করি। কোনো সমস্যা হয় না। আমাকে কখনো কেউ মামলা দেয় নাই।’
পরিবহন শ্রমিকরা অবশ্য তিন চাকার যানবাহনকে তাদের নির্বিঘ্ন চলায় অন্যতম বাধা বলে মনে করেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রংপুর বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ বলেন, ‘মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধের দাবির কথা আমরা অসংখ্যবার জানিয়েছি। আন্দোলনও করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সড়কে দেখবেন বাসের চেয়ে অটোরিকশা, ভটভটি বেশি। সড়কে তিন চাকার যানবাহনের চলাচল বন্ধ হলেই দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। আশা করব কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে নজর দেবে।’
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও তিন চাকার যানবাহনের বিষয়টি স্বীকার করে নিচ্ছে পুলিশও। বড় দরগা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান আলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার অংশে পীরগঞ্জের আঙ্গার ব্রিজসহ আরও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রয়েছে। আমরা এসব এলাকায় নিয়মিত পুলিশ বসিয়ে রাখি, যেন তিন চাকার যান মহাসড়কে চলতে না পারে। আমরা নিয়মিত মামলা দিচ্ছি। যে কারণে এই এলাকাগুলোতে তিন চাকার যানচলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে।’
তারাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ওসি শেখ মো. মাহবুব মোরশেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মামলা আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম। সড়ক দুর্ঘটনা হলে কেউ মামলা করতে চায় না। পুলিশ বাদী হয়েই মামলা করতে হয়। আমরা সেটা করে থাকি। আইন প্রয়োগ আমরা করছি। কিন্তু মানুষকেও সচেতন হতে হবে।।’
পশ্চিমাঞ্চল হাইওয়ে পুলিশের (রংপুর জোন) সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া মহাসড়কে আবারও তিন চাকার যানচলাচল বেড়ে যাওয়াতেও দুর্ঘটনাও বাড়ছে। আমরা তিন চাকার যানবাহন ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিনিয়তই এ ধরনের যানবাহনের নামে মামলা দিচ্ছি। মহাসড়কের চিহ্নিত দুর্ঘটনাকবলিত স্থানগুলোতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডগান নিয়েও অভিযান চালানো হয় প্রায়ই। কিন্তু শুধু পুলিশের চেষ্টায় কিছু হবে না। সবাই মিলে চেষ্টা না চালালে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব না।’
হাইওয়ে পুলিশের বক্তব্যে মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের কথা উঠে এলেও সেটি মানতে নারাজ রংপুর সড়ক বিভাগ। বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বগুড়া থেকে রংপুর মডার্ন মোড় হয়ে সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যে মহাসড়ক, তাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নেই। অল্প কিছু জায়গা আছে, সেসব জায়গায় সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড দেয়া আছে।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বাঘাবাড়ীতে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের মাইজদীকোর্ট এলাকায় ৮৯ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩২ মিনিটে।
সুন্দরবনে কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ করিম শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সুন্দরবনের আদাচাই ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনী তার দলবল নিয়ে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে উক্ত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলটি বনের ভেতরে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর সহযোগী মো. আল আমিনকে ১ টি একনলা বন্দুক, ১ রাউন্ড তাজা গোলা ও ৬ রাউন্ড ফাঁকা কার্তৃজসহ আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতকে জিজ্ঞেসাবাদের মাধ্যমে খুলনা হতে পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে করিম শরীফ বাহিনীর আরেক সহযোগী রেজাউল গাজী বাবুকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফের সাথে ডাকাতি এবং ডাকাত দলকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ দিয়ে সহযোগিতা করছিল বলে জানা যায়।
উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র ও অন্যান্য মালামালসহ আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে আওতাধীন উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে এ সকল অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্ট গার্ডের এরূপ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।
পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।
এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভাগ্য খারাপ, আমন ফসলের ক্ষতি বোরো ফসলে পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার তাও হলো না। এমনটাই বলছিলেন হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া।
প্রতি বিঘায় যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ বোরো ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ৮ থেকে ১০ মণ ধান মিলবে। কারণ, বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গেলেও সেই ধান কাটার পরে দেখা মিলছে চিটা। এমনটা জানান আরেক চাষি আহমদ মিয়া।
মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া আহমদ মিয়ার মতো অনেক চাষির কণ্ঠে এমনই আক্ষেপ। তাদের মুখে নেই হাসি। ভেঙে গেছে সোনালী স্বপ্ন। প্রকৃতির বিরূপ আচরণই বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল হাওর পারের চাষিদের সোনালী স্বপ্নকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।
টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে শিলাবৃষ্টিতে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরপারের বোরো ধানের ফলন।
স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে বোরো মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল অনেক চাষির। কিন্তু বোরো মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে ধানে পোকা ধরে ধান চিটা হয়ে যায়।
হাওরপারের চাষিরা বলছেন, আমনের পর বোরো ফসলের যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠা দুষ্কর। আমন ফসলের ক্ষতি ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা হলো না তাদের। ফলে টানাপড়েন শুরু হবে সংসারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বড় তিনটি হাওর হাকালুকি, হাইলহাওর ও কাউয়াদীঘি ছাড়াও ছোট ছোট হাওর এবং উপরিভাগে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর।
৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন রসুলপুর এলাকার চাষি আব্দুর রকিব। প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১০ মণ ধান পাব কিনা সন্দেহ আছে। এখন ধারদেনা করে চালাতে হবে।
পাড়াশিমইল গ্রামের চাষি মিজু আহমদ বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার অনেকেই আমন ধান পায়নি। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বোরো ফসলই ভরসা ছিল, কিন্তু সেই বোরো ফসলেই পোকা ও চিটা দেখা দেয়। ১০ বিঘা জমি চাষ করি। খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, এখন খরচ তোলাই দায়।’
বানেশ্রী এলাকার ষাটোর্ধ্ব চাষি পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। এরফলে এবার বোরো ধান অর্ধেকের মতো পাব।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে ২০২৪ সালের বন্যায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পানির অভাবে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলো। হাওরের নদী-খাল খনন ও পানির উৎস থাকলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতো। কৃষকদের কৃষি ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে, তবে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের কারণে কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।
বরগুনার আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শুক্রবার খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার পানের বাজার বসিয়েছেন। এতে ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম আকারে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত পানের বাজার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১০ সালে তিনতলা সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম শিকদার শুক্রবার পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষেধ করলেও তিনি তা মানছেন না। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় শতাধিক ব্যবসায়ী পান বিক্রি করছেন। এতে বিদ্যালয় ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিতে একাকার হয়ে আছে।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, আব্দুল্লাহ, সুমাইয়া জানায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রতি শুক্রবার বাজার বসান। ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা বিদ্যালয়ে ফেলে রেখে যায়। ওই ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইজারাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা।
পান ব্যবসায়ী সোবাহান মিয়া বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পান বিক্রি করতে বসিনি। ইজারাদার আমাদেরকে পান বিক্রি করতে বসিয়েছেন।’
স্থানীয় এইচ এম দেলোয়ার মুন্সি বলেন, ইজারাদারকে এমন কাজের প্রতিবাদ করেছি কিন্তু তিনি তা মানছেন না। ইজারাদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখতে ইজারাদারকে অবশ্যই পানের বাজার বসানো থেকে বিরত রাখতে হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন স্বপন বলেন, বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসিয়েছেন। তাকে বাজার বসাতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তিনি তা শোনেননি।
তিনি আরও বলেন, পান ব্যবসায়ীদের রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারাই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
খেকুয়ানী বাজার ইজারাদার শাহ আলম সিকদার বলেন, বাজারে সরকারি জায়গা না থাকায় এখানে বাজার বসানো হয়েছে। বিগত দিনে এ বিদ্যালয়ের নিচতলায় পানের বাজার বসত, তাই আমিও বসিয়েছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় কোনো মতেই বাজার বসানো যাবে না। যারা বাজার বসিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রামে রিকশা উল্টে সড়কের পাশের ড্রেনে পড়ে যাওয়ার ১৫ ঘণ্টা পরচাকতাই খাল থেকে ৬ মাস বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিখোঁজ হওয়া স্থানের চার কিলোমিটার দূরে শনিবার স্থানীয়রা শিশু শেরিশের লাশ দেখতে পায় বলে জানায় পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারীঢ পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশটি উদ্ধার করেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা ওই শিশুর মাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দ্রত সেখানে যান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি উদ্ধার অভিযানে নির্দেশনা দেন।
মেয়র বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারই প্রধান কাজ। ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ করছেন। রিকশাযাত্রী মায়ের কোল থেকে ছয় মাসের শিশু নালায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন পানিতে স্রোত ছিল।
গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি ভাড়া বাসা থেকে দুই শিশুর গালা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, তাদের কুপিয়ে ও গলা কেটে খুন করা হয়েছে। শিশুদুটি সম্পর্কে ভাইবোন ছিল।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় পূর্ব আরিচপুর রূপবানের মার টেক এলাকা থেকে লাশদুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলো- আব্দুল্লাহ (৩) ও মালিহা (৬)। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার তাতোয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল বাতেনের সন্তান।
পূর্ব আরিচপুর এলাকার সানোয়ার নামের এক ব্যক্তির আটতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন আব্দুল বাতেন।
নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ (শুক্রবার) বিকালে নিহত শিশুদের মায়ের চিৎকারে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্বজনরা। এরপর শিশুদুটির গলাকাটা রক্তাক্ত নিথর দেহ দেখতে পান তারা। পরে তারা থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ সময় নিহতদের মা বাসায় থাকলেও তাদের বাবা বাসার বাইরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কী কারণে শিশুদুটিকে এমন নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে, কারা করেছে এমন কাজ—তাৎক্ষণিকভাবে এসব ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
হারানো, চুরি ও ছিনতাইকৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৫১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার উপ-পুলিশ কমিশনারের (তেজগাঁও বিভাগ) কার্যালয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজানের উপস্থিতিতে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন প্রকৃত মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, হারিয়ে যাওয়া, চুরি ও ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় মোবাইল ফোন মালিকরা বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত একমাসে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ ৬৩টি, হাতিরঝিল থানা পুলিশ ৫৪টি, মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ৪০টি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ ৩২টি, আদাবর থানা পুলিশ ৩২টি ও তেজগাঁও থানা পুলিশ ৩০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
চট্টগ্রাম নগরের বারেক বিল্ডিং মোড়ে ডাকাতের আস্তানায় চালানো অভিযানে দুই পুলিশ সদস্য ছুরিকাঘাতে আহতের ঘটনায় ডাকাত চক্রের মূলহোতা আরিফ হোসেন ওরফে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৫০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডবলমুরিং থানার আওতাধীন বারেক বিল্ডিং মোড়ের একটি ফাঁকা প্লটে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। তখন পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত হলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের ঘিরে ধরে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চক্রের মূল হোতা আরিফ হোসেন ছুরি দিয়ে পুলিশকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর থেকেই আরিফ হোসেন আমাদের নজরে ছিল। সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে যে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যবহার করে সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।
তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চলবে বলেও জানান ওসি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাহবুব আলম সুমন নামে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক পিয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সরকারি অনুদানের কথা বলে ও প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সনমান্দি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নুরউদ্দিনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার, একই ইউনিয়নের গিরদান গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তাসলিমা বেগম ও নাজিরপুর গ্রামের মুকবিল হোসেনের ছেলে জনি মিয়া।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ করে টাকা অর্থ সহায়তা দেবেন বলে প্রচার করেন। সেই অর্থ পেতে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে ৬ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে বলে জানান। পিওনের কথা বিশ্বাস করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ তাকে ৬ হাজার টাকা করে ব্যাংকে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নাম করে তিনি আবেদনকারীদের মোবাইল ফোনে সান্ত্বনা এসএমএস দিয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে বিষয়টি আবেদনকারীদের সন্দেহ হলে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে তাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা জমা হয়নি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা বলে নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩২ জনের কাছ থেকে তিনি এক থেকে দেড় লাখ, গাভী দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২৬ জনের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতা পাইয়ে দেওয়ার জন্যও টাকা নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী স্বর্ণা আক্তার জানান, তারা গরিব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, তাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা টাকা নিয়েছেন। অফিসে এসে জানতে পেরেছি তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন।
অভিযুক্ত পিওন মাহবুব আলম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি।
সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রতিটি খাতেই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে কৃষি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছে কর্মকর্তা শাহিন রানা। কৃষকদের জন্য ধান, সয়াবিন, বাদাম ও ভুট্টা কাটার যন্ত্রপাতি বরাদ্দ এনে তা প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ট্রেনিং, প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর নামে কৃষকদের এনে নামমাত্র নাস্তা ও সামান্য নগদ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সাদা কাগজ স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে বিদায় করা হয়। কৃষি অফিসটি এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করছেন এই কর্মকর্তা।
অভিযোগ উঠেছে, কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের সিংহভাগ লুটপাট হচ্ছে। তারা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হয় কৃষকদের স্বাক্ষর ও টিপসই।
এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানার পকেটে। সরকারি বরাদ্দের এক-চতুর্থাংশও কৃষকরা পাচ্ছেন না। অফিসের যন্ত্রপাতি (মেশিন) থেকে শুরু করে প্রতিটি খাত থেকে কৃষি কর্মকর্তার বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাস্তা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান অন্তত ১৫ জন কৃষক।
বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাদের জন্য সরকার কি পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকরা পাচ্ছেন কতটুকু। তারা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে কিছুই জানায় না। উল্টো তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি ধমকিও দেন এ কর্মকর্তা। এতে কৃষকরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
কৃষি অফিস বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, খেসারি, মসুর, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন কৃষককে ৫ একরের একটি করে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা। কোন গ্রুপে ১৫ হাজার আবার কোন গ্রুপে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। হেক্টর-প্রতি কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক,নগদ টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা তাও দেওয়া হয়েছে নামমাত্র।
এএসসিপি প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে কৃষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন কৃষক। ওই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষকের জন্য খাবার বাবদ বরাদ্দ ৪০০ টাকা এবং ব্যাগ বাবদ ৬৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০০ টাকা দামের ১ প্যাকেট বিরিয়ানি আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকার একটি ব্যাগ। তাদের অভিযোগ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাশতা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না।
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে কৃষক ও যন্ত্রপাতি বরাদ্দের তালিকা চাইলে তিনি আজ নয় কাল বলে তালবাহানা করে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদক কাগজপত্রের জন্য কৃষি অফিস অন্তত তিনবার গিয়ে তার কাছ থেকে এসব তথ্য নিতে পারেননি।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, গত বছর কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা কাটার মেশিন ৮ টি,কম্বাইন হারভেস্টার ২ টি,রিপার ৪ টি,রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ওয়াকিং টাইপ ২ টি ও পাওয়ার স্প্রয়ার ১ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা চাষ না হলেও এ কর্মকর্তা লুটপাটের উদ্দেশ্যে ধান কাটার মেশিন বাদ দিয়ে ভুট্টা কাটার মেশিনের চাহিদা পাঠান। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ৮ টি মেইজ শেলার (ভুট্টা মাড়ার মেশিন) বরাদ্দ দেন। মেশিনগুলো প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার অনুগত লোকজনের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে ফটোসেশান করে ওই মেশিন অন্যদের নিকট নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেন। ৪ টি রিপার পেলেও ওইগুলো তার পছন্দের এক দালালের মাধ্যমে ভৈরব নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে।
উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট এলাকার মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন একটি মেইজ শেলার মেশিন। ১৫ দিনের মাথায় তিনি ওই মেশিনটি অন্য এক কৃষকের নিকট বিক্রি করে দেন।
চরলরেন্স এলাকার হাছন আলীর নামে একটি মেইজ শেলার মেশিন বরাদ্দ দেখানো হয়। তার ফোন নম্বরে কল করা হলে নাম্বারটি ঢাকার এক বাসিন্দা দাবী করে বলেন, তার বাড়ী ঢাকায়, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেননা। তার ফোন নাম্বার কৃষি অফিসের তালিকায় কেন থাকবে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
পুষ্টি বাগানের জন্য বিভিন্ন গ্রুপে ১৪৫ জন কৃষককে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি কৃষককে ৫টি গাছের চারা,২৫০ টাকার বীজ, ও ৪৫০ টাকার সার দিয়ে বাকি টাকা সম্পূর্ণ তার পকেটে ঠুকান বলে অভিযোগ করেন ৫ জন কৃষক।
এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় বাগান পরিচর্যার জন্য শতাধিক কৃষককে ট্রেনিং দেওয়া হয়। এতে প্রত্যেক কৃষকের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষি কর্মকর্তা সাদা-কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দুইভাগ ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ নিয়ে কৃষকদের সাথে কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডাও হয়েছে বলে তিনজন কৃষক এ প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেন।
এছাড়া এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষক ট্রেনিংয়ের নামে ২০ টাকার নাস্তা,১২০ টাকার দুপুরের খাওয়া ও নগদে ২৫০ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ভাবেই চলছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি।
এসএসিপি প্রকল্পে ট্রেনিং নেওয়া সাহেবের-হাট এলাকার কৃষক খুরশিদ আলম বলেন, একবার একটা ট্রেনিং করে তিনি ৮০০ টাকার ভাতা পেয়েছেন।
চরফলকন এলাকার কৃষক মো. ইউসুফ জানান, তার একটি পুষ্টি বাগান রয়েছে। কখনো ট্রেনিং করেননি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে একটা আমের চারা, লেবুর চারা ও একটি সাইনবোর্ড ছাড়া তিনি কিছুই পাননি।
চরলরেন্স এলাকার কৃষক মোঃ ইউসুফ জানান, তার একটি টমেটো বাগান রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে একবার ২ হাজার ৫০০, আবার ৩ হাজার টাকা ও কিছু বীজ পেয়েছেন তিনি।
বরাদ্দের বিষয়ে অফিসের এক সহকারী বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দের কোনো কপি আমাদের দেওয়া হয় না। অফিস থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, আমরা ডায়েরিতে নোট করে নিই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানা বলেন, ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তবে তার আমলে কৃষকদের বরাদ্দ সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের পছন্দের কেউ থাকলে নাম দিতে পারেন। আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনাদের দেওয়া নামগুলোকে বরাদ্দের আওতায় নিয়ে আসব।’
ঢাকাসহ দেশের আট বিভাগে গতকাল (বুধবার) কয়েকঘণ্টা ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ার পরেও দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। একিউআই সূচক অনুযায়ী ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের একিউআই স্কোর ১৮৩।
নেপালের কাঠমান্ডু, সেনেগালের ডাকার ও ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় শহর যথাক্রমে ১৭০, ১৬৭ ও ১৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ১৪৯।
যখন দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বাতাসের গুণমানকে 'মাঝারি' বলে বিবেচনা করা হয়।
একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। শহরটির বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে তাদেরকে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গফুর (৫০) ও তাঁর ছেলে মেহেদী হাসান (১৫) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। জানাযা শেষে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি বাবা-ছেলেকে দাফন করা হয়।
আবদুল গফুরের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে রোববার রাতেই ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। সে মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয় বলে জানান থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান। হত্যার ঘটনায় তাৎক্ষনিক পলাশীহাটা গ্রামের মো. রিপন (৩২), নাওগাঁও গ্রামের মৃত সাবান আলীর ছেলে মো. মোজাম্মেল হক (৬৫) ও এক কিশোর (১৩) আটক করে পুলিশ।
ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, সালিশে না যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাড়িতে গিয়ে গণপিটুনি দিয়ে বাবা-ছেলেকে হত্যা করা হয়, মামলার এজাহারে সেটিই উল্লেখ করা হয়েছে। তিনজন আসামিকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীর চাচাতো ভাই আবদুল মোতালেবের কাছে সাড়ে ৭ কাঠা জমি পাঁচ বছর আগে বন্ধক দিয়েছিলেন। দুই লাখ টাকা জমি বন্ধক দিলেও তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং টাকার প্রয়োজন হওয়ায় আরও পাঁচ বছরের জন্য এক লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা ও জমি কিছুই দিতে চাইছিলেন না আবদুল মোতালেব। পরে তাঁর স্বামী অন্য জায়গায় জমি বন্ধক দিতে চাইলে তাতেও বাধা দেন। ওই অবস্থায় স্থানীয়ভাবে সালিসে বসে তিন মাস আগে এক লাখ টাকা দিলেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল মোতালেব।
তিনি আরও বলেন, মেহেদী আমার স্বামীর প্রথম পক্ষের ছেলে। সে একটু বখাটেপনা করত। চার-পাঁচ দিন আগে আবদুল মোতালেবের ফিশারি থেকে দুটি তেলাপিয়া মাছ ধরায় ক্ষুব্ধ হয়ে বকাঝকা করে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়। এর মধ্যে প্রতিবশি বিদেশফেরত একজনের কিছু কাগজ ও মুঠোফোন চুরি হওয়ায় এর অপবাদ দেয় মেহেদীকে। এ নিয়ে সালিস বসালে আমার স্বামী ছেলেকে নিয়ে যায়নি। সে কারণে বাড়িতে এসে হামলা করে তাদের হত্যা করে।