মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৬ বৈশাখ ১৪৩২

আঞ্চলিক সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ দিল্লিতে

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর। অলংকরণ: মামুন হোসাইন
জেসমিন পাপড়ি
প্রকাশিত
জেসমিন পাপড়ি
প্রকাশিত : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:৩৯

দুই দেশের জাতীয় নির্বাচন ও পরিবর্তিত বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বৈঠককে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর এ অঞ্চলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটের মধ্যে এ অঞ্চলের আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি মূলত সফরকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

তিন বছর পর কাল সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে ভারতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সফর দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ছাড়াও আঞ্চলিক রাজনীতি-সহযোগিতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি নানা বৈশ্বিক সংকট, বিশেষ করে মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতার বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন দুই নেতা। অনেকটাই অচল আঞ্চলিক ফোরাম সার্কের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ায় আশা জাগাচ্ছে। এ অবস্থায় হাসিনা-মোদি বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে।

বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতীয় পক্ষেও এ সফর নিয়ে ব্যাপক আশাবাদ রয়েছে। শেখ হাসিনার সফর সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফরসহ উচ্চপর্যায়ের সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এবারের সফর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর এ সফর দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

সফরের বিষয়ে ধারণা পেতে দৈনিক বাংলা কথা বলেছে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ সফরে বড় ধরনের কোনো চুক্তি হচ্ছে না। কয়েকটি রুটিন এমওইউ স্বাক্ষর হবে। তবে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। বিশেষ করে জ্বালানি, খাদ্যনিরাপত্তা, বাণিজ্য, পানিবণ্টন, সংযুক্তি ও নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীও মনে করেন, সফরটি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। গত সপ্তাহে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় হাইকমিশনার বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পরিবহন যোগাযোগের উন্নতি হলে শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও তা বড় ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ভারতের সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা চলছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেগুলোর বিষয়ে দুই দেশ একমত হতে পারবে সেগুলোই স্বাক্ষর হবে।

তবে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন মনে করেন, এ সফর থেকে বড় কোনো প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের নানা দিক নিয়েই আলোচনা হবে। বাংলাদেশের উদ্বেগগুলো ভারতকে জানানো হবে। তবে ভারত যে সেগুলোর সমাধান সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেবে, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের চাওয়াগুলো আমরা (বাংলাদেশ) মোটামুটি পূরণ করেছি। ভারত তাতে খুশি। আমাদের চাওয়াগুলোর বেশির ভাগই সমাধান হয়নি। ভারত ধরে নিয়েছে, তারা যদি বাংলাদেশের ইচ্ছাগুলো পূরণ না-ও করে তাহলেও বাংলাদেশ তাদের পাশেই থাকবে। কাজেই বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানে ভারত অতটা জরুরি প্রয়োজন বোধ করছে না।’

তবে এই সফরের রাজনৈতিক দিকটিও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিসের (সিজিএস) পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছে। এর বড় কারণ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উলফার মতো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একসময় বাংলাদেশে আশ্রয় পেলেও আওয়ামী লীগ সরকার তা বন্ধ করেছে। ফলে ওই এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রাখা নিয়ে ভারতের যে চিন্তা ছিল তা শেখ হাসিনার শাসনকালে নেই। তাই হাসিনা সরকারের ওপর সে দেশের মানুষ ও রাজনীতিকদের আস্থা প্রকট।

ড. ইমতিয়াজের মতে, ভারত চাইবে বাংলাদেশে এমন একটি দল ক্ষমতায় থাকুক, যাদের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে যেন কোনো ভাটা না পড়ে।

তবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বৈশ্বিক রাজনীতির বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ড. দেলোয়ার হোসেন।

দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, গত এক যুগে বাংলাদেশ-ভারতের অংশীদারত্ব এবং সম্পর্কের যে প্রসার ঘটেছে, তা আরও এগিয়ে নেয়াই হবে প্রধান ইস্যু। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব যখন একধরনের মেরুকরণের দিকে যাচ্ছে; সেখানে চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, অর্থাৎ আঞ্চলিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে খোলামেলা কথাবার্তা হতে পারে।

সম্পর্কের স্বর্ণ-সময়েও চাওয়া-পাওয়ায় ভারসাম্যহীনতা

বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কের স্বর্ণ-সময় পার করছে বলে দাবি করে আসছেন দুই দেশের নেতারা। তার পরও গত এক দশকে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তির জায়গায় বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, ভারতকে সড়কপথে ট্রানজিট দেয়া, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি, ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা চুক্তি কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে বাংলাদেশের সহায়তার মতো বড় সহযোগিতার বিনিময়ে দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশের পাওয়ার পরিমাণ তুলনামূলক কম। এক দশক ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি না হলেও ত্রিপুরার সাব্রুম অঞ্চলের মানুষের পানির কষ্ট মেটাতে ফেনী নদীর পানি দিয়েছে বাংলাদেশ।

২০১০ সালে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় তিন দফায় ৭ দশমিক ৮৬২ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ১ বিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে ভারত। নানা শর্তের কারণে এই অর্থ কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

তবে চুক্তির প্রায় ৪০ বছর পরে ছিটমহল বিনিময়কে বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি বলে ধরা হয়। ট্রানজিটের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য সরবরাহ সহজ হলেও ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠানোর বাধা দূর হয়নি বাংলাদেশের। এ ছাড়া সীমান্ত হত্যা নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে। ভারতের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ঘোষণা দিলেও আশানুরূপ ভারতীয় বিনিয়োগ এখনো পাওয়া যায়নি। এমনকি রোহিঙ্গা সংকটেও ভারতকে প্রত্যাশিতভাবে পাশে পায়নি ঢাকা।

স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ভারত-বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বরাবরই স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে। তাদের মতে, শ্রীলঙ্কায় চীনের প্রভাব নিয়ে সব সময় অস্বস্তি ছিল ভারতের। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কোন্নয়নও ভাবাচ্ছে ভারতকে। ফলে সব সময়ের জন্য ভারতমুখী বাংলাদেশ দেখতে চাওয়া নয়াদিল্লি আসন্ন বৈঠকে বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের মাত্রার বিষয়টিও তুলতে পারে। ঢাকার পক্ষ থেকে সে প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার-পরবর্তী পরিস্থিতিও আলোচনায় আসতে পারে। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে বাড়তে থাকা ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার উপ-আঞ্চলিক শাখার বিস্তার নিয়েও আলোচনা করবে দুই দেশ।

ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় না দিয়ে সেভেন সিস্টার্স-খ্যাত ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে শান্তি ফেরানোয় বাংলাদেশের ভূমিকার কথা সব সময় স্বীকার করে আসছে প্রতিবেশী দেশটি। এ বছরের মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সফরকালে উলফা দমনে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাবাংলাদেশের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও ওপর গুরুত্ব দেবে ভারত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত হত্যা কমে এলেও তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফলে এটি নিয়েও জোর দেবে বাংলাদেশ। সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যাতে মানব, মাদক ও সব ধরনের চোরাচালান বন্ধের মতো বিষয়ও তোলা হবে। এ ছাড়া দুই দেশেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, এ সফরে প্রতিরক্ষা খাতে নতুন কোনো চুক্তি সই হবে না। ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছিল। ওই সময় ঋণচুক্তির আওতায় প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ভারত। তবে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ওই ঋণের সদ্ব্যবহার করেনি বাংলাদেশ।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর সফর সামনে রেখে এ বছরের আগস্টের শুরুতে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের প্রতিরক্ষা সংলাপে ওই ঋণচুক্তির ব্যবহারসহ সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাণিজ্য ও জ্বালানি

বাংলাদেশ ও ভারত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব জোরদারের লক্ষ্যে ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা)’ বিষয়ে একটি যৌথ সমীক্ষার ফল নিয়ে দুই দেশই ইতিমধ্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. দেলোয়ার হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের অর্থনীতির আকার অত্যন্ত বৃহৎ এবং শক্তিশালী। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ শিল্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি বিবেচনায় রেখে সেপা চুক্তি করতে হবে। এই চুক্তির শর্তগুলো বাংলাদেশের জাতীয় ও বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, সেটা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি মাথায় রাখতে হবে।’

গবেষণা সংস্থা সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, যথাযথ দর-কষাকষির মাধ্যমে এ চুক্তি করলে ভারতে রপ্তানি বাড়বে। একই সঙ্গে ভারতের বিনিয়োগ বাড়বে। ভারতের বিনিয়োগকারীদের উৎপাদিত পণ্য তাদের দেশে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে রপ্তানি হবে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দুই দেশের মধ্যকার ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে পাট রপ্তানির ওপর ভারতের আরোপিত ‘অ্যান্টি-ডাম্পিং’ শুল্ক অপসারণের বিষয়টি তুলবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়ে, বিশেষ করে গম, চাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের বিষয়টি দুই দেশের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। এসব পণ্য আমদানির চাহিদা ভারতকে আগাম জানানো হলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির বিষয়টি বিবেচনায় রাখার আশ্বাস দিয়েছে দেশটি।

প্রধানমন্ত্রীর সফরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এ ঘোষণা দিতে পারেন। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জানা যায়, পরিশোধিত ডিজেল আমদানি করতে ঢাকাকে প্রস্তাব দিয়েছে নয়াদিল্লি।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে ভারত জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আমরা তাদের সহায়তা চাইব, তাদের উদ্বৃত্ত থাকলে তাদের কাছ থেকে জ্বালানি আনার জন্য চুক্তি করতে চায় ঢাকা।’

ভারতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বা উপ-আঞ্চলিক এনার্জি হাব গঠন নিয়েও আলোচনা করবেন হাসিনা-মোদি। বাংলাদেশ নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে চায়। একই সঙ্গে এই অঞ্চলে জ্বালানি নিরাপত্তা কানেকটিভিটি বিষয়টি নিয়েও যৌথভাবে কাজ করতে চায়। এ জন্য ভারতের ভূমি ব্যবহার করে নেপাল-ভুটানে যাতায়াতের সুবিধা চায় বাংলাদেশ।

অন্যদিকে কানেকটিভিটির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে দিল্লি­। ১৯৬৫ সালের আগের কানেকটিভিটিতে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ বেশি তাদের। রেলওয়ের ক্ষেত্রে আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ, খুলনা-মোংলা রেল সংযোগ এবং দুই দেশের মধ্যে নতুন ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস চালুতে সন্তোষ প্রকাশ করতে পারেন দুই নেতা। এ ছাড়া দুই দেশের রেলওয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশিক্ষণের জন্য একটি সমঝোতা প্রস্তুত করা হয়েছে।

জানা যায়, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে এলওসি বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এলওসির আওতায় তিন দফায় ৭ দশমিক ৮৬২ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখন পর্যন্ত ১ বিলিয়ন ডলারের মতো ছাড় করেছে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশই এ বিষয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছে, যা সমাধান করে অর্থ ছাড়ের ঘোষণা আসতে পারে এই সফরেই।

আলোচনায় কুশিয়ারার পানি

দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা চুক্তির জন্য এবারও তাগিদ দেবে বাংলাদেশ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে ২০১১ সাল থেকে ঝুলে থাকা তিস্তা নিয়ে এবার কোনো সুখবর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে,তীয় গণমাধ্যমের ত প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে দিল্লি গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তারপরও যে তিস্তা নিয়ে কোনো সুখবর আসছে না তা নিশ্চিত।

তবে দীর্ঘ ১২ বছর পরে গত ২৫ আগস্ট যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে কুশিয়ারার নদীর পানি বণ্টনের লক্ষ্যে এমওইউ চূড়ান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বণ্টনের রূপরেখা নিয়ে সমঝোতার বিষয়টি এবার আলোচনা হবে। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির আওতায় এই নদীর পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে দেশের যৌথ সমীক্ষার ঘোষণা আসতে পারে দুই নেতার বৈঠক শেষে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের পরিবারের জন্য বৃত্তি

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচির তথ্য থেকে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ সদস্যের উত্তরসূরিদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ‘মুজিব স্কলারশিপ’ দেবেন শেখ হাসিনা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে যথাক্রমে এককালীন ৫০০ এবং ১ হাজার ডলার করে দেয়া হবে। প্রসঙ্গত, বিশেষ কর্মসূচির আওতায় ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের বৃত্তি দিয়ে আসছে ভারত।

অন্যদিকে টেকসই উন্নয়নে নেতৃত্ব দেয়ায় শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করবে দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (টেরি)। সাবেক টাটা এনার্জি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এখন টেরি নামে পরিচালিত হচ্ছে।

নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত দিয়েই সফর শুরু

সফরসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে পৌঁছাবেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিল্লিতে হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তার ভারত সফরের কর্মসূচি শুরু করবেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই মাজার জিয়ারত করতেন।

সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা একান্ত এবং প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক করবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তালিকায় থাকা সমঝোতা স্মারক সই হবে। একই দিন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা।

৭ সেপ্টেম্বর ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির সিইও এবং ব্যবসায়ী কমিউনিটির সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন। ওই দিন দুপুরে তিনি দিল্লি থেকে রাজস্থানে আজমির শরিফ দরগাহে যাবেন। সেখানে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাবেন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিবসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একদল প্রতিনিধি। থাকবেন ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরাও।

এর আগে ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর দিল্লি সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগের বছরও দিল্লি সফর করেন তিনি।


মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত হাইকোর্টের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে খালপাড়ের খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।

সেই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।

এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী লিটন আহমেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী জহিরুল ইসললাম।

আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খুররাম শাহ মুরাদ। তিনি বলেন, ‘যে স্থানকে চিহ্নিত করে এই হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে তা একেবারেই অনভিপ্রেত। কারণ ওই স্থানে হাট বসানোর কোন পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই। এই হাট বসানোর ইজারা গৃহীত হলে ঈদ-উল আযহার সময় আবাসিক এলাকার মানুষের বাসা-বাড়ির গেটের সামনে পশুর হাট বসে যায়। ফলে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এছাড়া পশুর হাট বসানো হলে আবাসিক এলাকার কোন মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না। সবকিছু বিবেচনা করে হাইকোর্ট মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানোর ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।’

গত ২১ এপ্রিল ১১টি স্থানকে চিহ্নিত করে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর লক্ষ্যে ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন লিগ্যাল রাইটস এর পক্ষে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন সিকদার।


ফেনীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ফেনীর পরশুরামে মুহুরি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে আওয়ামী লীগ নেতা মিরু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে এবং নাগরিক কমিটির সংগঠক ইমাম হোসেন সজীবসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়।

পরশুরাম পৌর ভ‚মি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধিত) ৪/৫/১১/১৫ ধারায় এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজহারে বলা হয়, মুহুরী নদীর বিলোনীয়া খেয়াঘাটের ১০০ গজ দক্ষিণ থেকে বাউরখুমা মৌজার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত মুহুরি নদীর বালুমহাল (প্রথম অংশ) ১৪৩০ বাংলা সনে পূর্ণ মেয়াদে শাপলা টেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মিরু চৌধুরীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ইজারাদারদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ও অবস্থানগত ছাড়পত্র জমা দেবেন এই শর্তে মিরু চৌধুরীকে ইজারা চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মিরু চৌধুরী ছাড়পত্র জমা না দেওয়ায় তাকে ওই বালুমহালের কার্যাদেশ ও দখল দেয়নি জেলা প্রশাসক। এরপর ১৪৩২ বাংলা সনে ইজারার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলেও অদ্যাবধি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ১৪৩১ বাংলা সনের শুরু হতে অদ্যাবধি ওই বালুমহাল ইজারাবিহীন অবস্থায় আছে।

বালু মহালের কার্যাদেশ ও দখল প্রদান না করা সত্ত্বেও আইন অমান্য করে মিরু চৌধুরী ইমাম হোসেন সজিবের সঙ্গে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বালুমহাল সাবলীজ দেয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

এরপর সজিবের নেতৃত্বে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুহুরি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বেআইনিভাবে দুই কোটি পচিশ লাখ টাকার নয় লাখ ঘনফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদীর উভয় পাড়ে বিক্রির উদ্দেশে স্তুপ করে রাখে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে নদীর পাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং নদীর পাড়ের জমি ও বসতঘর ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মীর আহমেদ চৌধুরী (৬০), মো. ইমাম হোসেন সজীব (৩৫), হাবিব উল্যা (৫০), পিংকু ভুঞা (৩৮), মো. হারুন ভুঞা (৩৫), ছায়দুল হক হাজারী (৩৫), আলী হোসেন (৪০), আবদুল মুনাফ (৪৮), আবদুল কাদের (৩৭) আবদুস সামাদ (৩৪), মো. মোস্তফা আবদুল হামিদ (৩৩), মো. রিপন (৪০), মো. এমরান (৪২), স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর (২৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মো. ফারুক (২৭), মো. শিশু (৩৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মো. শাহজালাল (৩৩), মো. ছিদ্দিক (৩৫), মো. আলম (২৯), মোহাম্মদ বাবুল (২৯), মনছুর আলী (৫০), মাহবুল হক (৫১), উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাহার সর্দার (৪৫), বাবুল মিয়া (৩৯), আবদুর রহিম (৪০), হারেছ মিয়া (৩৮), জাহিদুল করিম (৩৯), মোহাম্মদ বাবু (২৫), মোহাম্মদ কাইয়ুম (৩৬), নুরুন্নবী (হোনা মিয়া) (৪৫), আমির হোসেন (৪২), জাকির হোসেন (৪০),

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, নুরুল হাকিম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


জীবাশ্ম জ্বালানিতে এডিবির ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ পরিহারের আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কর্তৃক বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্প বিশেষ করে ফসিল ফুয়েল ও এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) প্রকল্পে বিনিয়োগের বিরোধিতা করেছে পরিবেশ সচেতন নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন সংগঠন।

এডিবির ৫৮তম বার্ষিক সভার পূর্বে জ্বীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ না করার দাবিতে যৌথভাবে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) এবং বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট)।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নগরীর কর্নফুলীর মইজ্যাটেকে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এডিবি এখন পর্যন্ত ২৮৮৪.৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ৪০০ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে ৮২ দশমিক ৯ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পে। মাত্র ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ সৌরবিদ্যুতে, এবং বায়ুশক্তিতে কোনো বিনিয়োগই করা হয়নি। জীবাশ্মভিত্তিক প্রকল্পে প্রতি মেগাওয়াটে ২০ লাখ ৪ হাজার ডলার বিনিয়োগ হলেও, সৌরবিদ্যুতে তা মাত্র ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার।’

চট্টগ্রাম ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সদস্য ও অধিকার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওসমান জাহাঙ্গীর বলেন, এডিবি খুলনার ১৫০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্টে উন্নীত করতে অতিরিক্ত ১০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেছে। অথচ গত ১১ বছরে এই প্রকল্পের পেছনে সরকারকে ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবুও গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা না থাকায় প্রকল্পটি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। একইভাবে, খুলনায় রূপসার মতো ৮০০ মেগাওয়াটের এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলেও, এখনও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি, ফলে এই প্রকল্পগুলো অচল সম্পদে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যার ফলে সরকারকে বিপুল অঙ্কের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হতে পারে।

ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও তরুণ পরিবেশ কর্মী সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, ‘যখন বিশ্ব নবায়ণযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন এডিবির এই ধাঁচের বিনিয়োগ জলবায়ু সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে এবং বাংলাদেশের মতো জলবায়ুঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।’

ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ জরুরি। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, পরিবেশ ও সমাজকেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তারা এডিবিকে আহ্বান জানান, অবিলম্বে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় নবায়ণযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগের দিকে অগ্রসর হতে।

আয়োজকরা জানান, ৫৮তম এডিবি বার্ষিক সভার প্রাক্কালে এ ধরনের প্রতিবাদী কার্যক্রম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে, যাতে এডিবি ও অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলো তাদের বিনিয়োগ নীতিতে জলবায়ু ন্যায্যতা ও টেকসই উন্নয়নের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়।

আলোচনা ও প্রচারাভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন আইএসডিই বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা রইসুল ইসলাম, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট চট্টগ্রামের মেন্টর রাসেল উদ্দীন, যুব ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা সভাপতি আরফিন সুমন, যুব গ্রুপের সদস্য জহির উদ্দীন হিমেল, সাজ্জাদ হোসেন রনি, ডলি আক্তার, ইমতিয়াজ হোসেন মিরাজ, সাদিয়া জাহান সিথী, জাহেদুল ইসলাম, মুহিবুল ইসলাম মুহিব প্রমুখ।


নড়াইলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নড়াইলের কালিয়ায় প্রতিপক্ষের বাড়ির পেছন থেকে রফিকুল মোল্যা নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের রিকাইল শেখের বাড়ির পেছন থেকে রফিকুলের লাশটি উদ্ধার করে কালিয়া থানা পুলিশ।

নিহত রফিকুল মোল্যা (৩৮) ওই গ্রামের আজিজুল মোল্যার ছেলে।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ এপ্রিল কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে আফতাব মোল্যা গ্রুপের ফরিদ মোল্যা (৫৭) নামে একজন নিহত হন। পরে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা করা হয়। এ হত্যা মামলায় মিলন মোল্যা পক্ষের রফিকুলকে আসামি করা হয়। তিনি পলাতক ছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে রফিকুলের পা বাধা লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কালিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হেফাজতে নেয়।

ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে।


শীতের কম্বল এখনো পড়ে রয়েছে চেয়ারম্যানের অফিসে!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

শীতকালে সরকারের বরাদ্দকৃত কম্বল বিতরণ না করে ফেলে রাখা হয়েছে মৌলভীবাজারের নাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে। এতে শীতকালে শীতবস্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছেন হতদরিদ্র শীতার্তরা।

জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে শীতবস্ত্র বিতরনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয় কম্বল। শীত চলে গেলেও মৌলভীবাজারের নাজিরাবাদ ইউনিয়নে এখনো পড়ে রয়েছে এসব কম্বল।

অভিযোগ রয়েছে, নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ নিজের পছন্দমতো ব্যক্তিদের এসব কম্বল বিতরণ করছেন। তাই নিজের ইউনিয়ন অফিসের একটি কক্ষে সরকারের এসব বরাদ্দকৃত কম্বল ফেলে রেখেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্য বলেন, শীত চলে যাচ্ছে কম্বলগুলো হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করার জন্য আমরা বারবার বলেছি। কিন্তু চেয়ারম্যান শীতার্তদের মাঝে এটি বিতরণ না করে ইউনিয়ন অফিসে স্টক করে রেখেছেন। এটা এক রকমের দায়িত্বে অবহেলা ও খামখেয়ালি। এ বিষয়ে নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হৃষিকেশ চৌধুরী বলেন, কতটি বরাদ্দ পেয়েছি সঠিক মনে নেই। যা বরাদ্দ ছিলো বিতরণ করা হয়েছে। শীতের বরাদ্দ পাওয়া কিছু কম্বল এখনও রয়ে গেছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্ত মো. তাজউদ্দিন বলেন, এরকম করার কোন সুযোগ নেই, ব্যবস্থা নিচ্ছি।


‘জনগণের নেতৃত্বে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা’র জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জনগণের নেতৃত্বে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনাবিষয়ক জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ১৭টি ওয়ার্ডের ১০৬টি স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবা সংক্রান্ত জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার লেকশোর হোটেলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) এই উদ্যোগ পরিচালনা করেছে, এই প্রকল্পে সহায়তা করেছে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) এবং যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)।

এই পরিকল্পনা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (সিডাব্লিউএসআইপি) জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করবে।

কর্মশালায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, ব্রিটিশ হাইকমিশন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ ৮০ জনেরও বেশি অংশীজন অংশ নেন। এই সভার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের পরিকল্পনার ফলাফল উপস্থাপন, অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ, প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিতকরণ এবং পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পরবর্তী পদক্ষেপে ঐকমত্যে পৌঁছানো।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধীনে জলবায়ু ঝুঁকির বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম ওয়াসার অনুমোদনক্রমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরিকল্পনাটি স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট চাহিদা ও দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা ওয়ার্ড ও মহানগর পর্যায়ে ধারাবাহিক পরামর্শের মাধ্যমে যাচাই ও পরিমার্জন করা হয়েছে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন একটি বাস্তব চ্যালেঞ্জ। অভিযোজনকে কার্যকর করতে এটিকে জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বিত এবং স্থানীয় প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।’

জিসিএ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. এম ফয়সাল রহমান বলেন, ‘জনগণের এই পরিকল্পনা সিডাব্লিউএসআইপি প্রকল্পে বাস্তবায়নের পাশাপাশি চট্টগ্রামের নগর কর্তৃপক্ষের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ ও মানসিকতার পরিবর্তনের ওপর জোর দেন। তিনি ওয়াটারএইডকে সব ওয়াসার সঙ্গে এই ফলাফল আদান প্রদানের আহ্বান জানান।

ব্রিটিশ হাইকমিশনের এবিএম ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘এই পরিকল্পনা জলবায়ু সহিষ্ণু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং জাতীয় নগরনীতির জন্য সহায়ক হবে।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এই পরিকল্পনাকে তাদের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসার সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে সকল নাগরিকের জন্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা আশাবাদী, তবে ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটাতে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।’


আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল

৩৩ বছর পরও শাহপরীর দ্বীপে বাতাসে ভাসে কান্না
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

তেত্রিশ বছর পেরিয়েও টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সেন্টমার্টিনের আকাশে-বাতাসে এখনো ভেসে বেড়ায় কান্নার শব্দ। ১৯৯১ সালের ভয়াল ২৯ এপ্রিল রাতে প্রকৃতির নির্মম থাবায় হারিয়ে যায় হাজারো প্রাণ, ভেসে যায় শত শত স্বপ্ন।

টেকনাফের দক্ষিণ প্রান্তে, নাফ নদীর মোহনার ঠিক গা ঘেঁষে থাকা এই ছোট্ট দ্বীপটিতে সেই রাতে সাগরের উন্মত্ত ঢেউ যেন গিলে খেয়েছিল মানবসভ্যতাকে। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দ্বীপের হাজারো ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে যায়, অগণিত মানুষ হারিয়ে যায় ঢেউয়ের গ্রাসে।

আজ ২৯ এপ্রিল স্মৃতির পাতায় বিভীষিকার রাত

চারপাশে শুধু পানি আর আর্তচিৎকার। শিশুরা মায়ের কোলে চেপে চুপ হয়ে গিয়েছিল। মায়েরা সন্তানকে বাঁচাতে নিজের প্রাণ দিয়েছিল। -চোখের কোণে পানি নিয়ে বলেন শাহপরীর দ্বীপের প্রবীণ বাসিন্দা খালেদ। ওই রাতের তাণ্ডবে হারিয়ে যান তার স্ত্রী ও তিন সন্তান। এখনো নাফ নদীর পাশে দাঁড়ালে তিনি শুনতে পান সেই রাতের হাহাকার। ভোরের আলো ফুটলেও চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। স্মরণ করেন তিনি।

টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, সাবরাং, হ্নীলা, টেকনাফ সদরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা সেই রাতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পরিবার হারানো মানুষগুলো এখনও চোখের জলে স্মরণ করেন সেই বিভীষিকাময় রাতের কথা।

স্থানীয় প্রবীণ আব্দুল আজিজ (৬৫) বলেন, ‘রাতে হঠাৎ দেখি পানি আমাদের ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারদিক অন্ধকার আর পানির তোড়ে ভেসে যায় সব কিছু। অনেক মানুষ সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল, কিন্তু কেউ কাউকে বাঁচাতে পারেনি।’

ক্ষয়ক্ষতি আর হারানোর হিসাব

সরকারি হিসাবে, পুরো কক্সবাজার জেলায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ১ লাখ ৩৮ হাজার। শুধু শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনেই দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটে, যদিও স্থানীয়দের মতে প্রকৃত সংখ্যা ছিল তার চেয়েও বেশি। গোটা দ্বীপজুড়ে দেখা গিয়েছিল লাশের স্তূপ, উধাও হয়েছিল পানির নিচে ফসল, গবাদি পশু, জীবন-জীবিকা।

দুর্যোগের পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বীপটি ছিল বিচ্ছিন্ন; খাবার, পানি, চিকিৎসা কিছুই পৌঁছাতে পারেনি। বহু পরিবার বাধ্য হয়েছিল ঘরছাড়া হতে। কেউ কেউ জীবিকার আশায় ভিন্ন জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হয়।

বর্তমানের চ্যালেঞ্জ

তিন দশক পেরিয়ে গেলেও শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন এখনো ঝুঁকির মধ্যে। সামুদ্রিক ভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপের আয়তন দিনদিন ছোট হচ্ছে। কয়েকটি বাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টার তৈরি হলেও তা এখনো পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

‘বাঁধ ভেঙে গেলে আমরা আবারও সেই দিনের মতো হারিয়ে যাব। আজ ২৯ এপ্রিল আমাদের শুধু ইতিহাস নয়, সতর্কবার্তাও।’- বলেন স্থানীয় শিক্ষক কলিম উল্লাহ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, দুর্যোগ পূর্বাভাস ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং স্থানীয় জনগণকে সচেতন করে তোলার ওপর জোর দিতে হবে এখনই, নইলে ভবিষ্যতের ঘূর্ণিঝড় আবার নতুন করে বেদনার ইতিহাস লিখবে।

ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা

পরিবেশবিদদের মতে, শাহপরীর দ্বীপসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া ভবিষ্যতের বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নয়। সচেতনতা, টেকসই অবকাঠামো ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নই হতে পারে আগামী দিনের প্রতিরক্ষাকবচ।

এদিকে জলবায়ুর প্রভাবে বদলে যাচ্ছে শাহপরীর দ্বীপ উপকূলবর্তী মানুষের জীবনযাত্রা। নাফ-সাগরের এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে, কিন্তু জীবনযুদ্ধে উপকূলের মানুষের দুঃখ শেষ হয় না জালিয়াপাড়ার বাসিন্দাদের। ভাঙাগড়ার যুদ্ধে মানুষ চিন্তিত তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রতি বছরই নাফ নদ-সাগর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবুও অসহায় এসব মানুষ নাফের পাড়ে থাকার সংগ্রাম করছেন। শাহপরীর দ্বীপ নাফের পাড়ে জালিয়াপাড়া ও গোলারপাড়া। সেখানে এখনও ১ শ পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই বলে নাফের ধারেই আশ্রয় নিয়ে বাঁচার যুদ্ধ করছেন তারা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘নদী ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে। তাদের সরকারি সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। আর বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে দ্রুত।’


দেশের সাত জেলায় বজ্রাঘাতে ১৩ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় চারজন এবং কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে তিনজন মারা গেছেন। এসব জায়গায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগরের কোরবানপুর পূর্বপাড়ার একটি মাঠে কৃষক নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া পাশাপাশি জমিতে ধান কাটছিলেন। এ সময় বজ্রপাত শুরু হলে এর আঘাতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হন আরেক কৃষক নাজির।

একই সময় খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগচ্ছ গ্রামের কয়েকজন শিশু মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে এর আঘাতে ফাহাদ, জিহাদ ও আবু সুফিয়ান নামে তিনজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে ফাহাদ ও জিহাদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রাঘাতে কিশোরগঞ্জের হালালপুর গ্রামে ইন্দ্রজিৎ দাস নামে একজন মারা গেছেন। এ ছাড়া রানীগঞ্জ গ্রামে ধানের খড় ঢাকতে গিয়ে বজ্রাঘাতে ফুলেছা বেগম এবং খয়েরপুর হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে স্বাধীন মিয়া নামে এক যুবক বজ্রাঘাতে মারা গেছেন।

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার বুড়িগাঙ্গাল হাওরে সকালে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান কলেজ শিক্ষার্থী রিমন তালুকদার। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে এর আঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে জমি থেকে খড় আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে নিহত হয়েছেন বিশাখা সরকার নামে এক নারী।

নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোণার মদনে আজ মাদরাসায় যাওয়ার পথে বজ্রাঘাতে আরাফাত মিয়া নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে বজ্রাঘাতে মারা যান মাদ্রাসা শিক্ষক দিদারুল। মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অলিদুজ্জামান জানান, আরাফাত নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বজ্রাঘাতে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, সোমবার দুপুরে কালবৈশাখী ঝড় হয় চাঁদপুরের কচুয়ায়। ঝড়ের সময় বজ্রপাতের বিকট শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে বিশকা রানী সরকার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের নাহার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিশকা রানী নাহারা গ্রামের পূর্বপাড়া মন্দির ওয়ালা বাড়ির হরিপদ সরকারের স্ত্রী।

শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের বেপারীকান্দি এলাকায় বজ্রাঘাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তার নারীর নাম শেফালী বেগম (৩৫)। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা কৃষক ছোরহাব বেপারীর স্ত্রী।

নিহতের পরিবার জানায়, দুপুরে তিনি ও তার স্বামী গরুর জন্য ঘাস আনতে বিলে যান। ফেরার সময় বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। সেখানে বজ্রাঘাতে শেফালী আহত হন। তার স্বামী দ্রুত ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শেফালীকে মৃত ঘোষণা করেন।


দেশের সকল বিভাগেই বৃষ্টির সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও পটুয়াখালী জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

গতকাল রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যৌথভাবে রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর, সৈয়দপুর ও রাজারহাটে ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত যৌথভাবে রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর ও তেঁতুলিয়ায় ৪১ মিলিমিটার বা মিমি।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ২৬ মিনিটে।


নারীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দুই সন্তানকে হত্যা, আসামির মৃত্যুদণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বরগুনায় এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে দুই শিশুসন্তান বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা মামলায় ইলিয়াস পহলান নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মো. ইলিয়াস পহলান (৩৪) বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।

মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রঞ্জু আরা শিপু, আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসান হাবীব স্বপন। আইনজীবী রঞ্জু আরা শিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ওই নারী তার মেয়ে তাইফা (৩) ও ছেলে হাফিজুলকে (১০) নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় ইলিয়াস তাকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে বাধা দেন ওই নারী। এ সময় তাইফা ও হাফিজুলের ঘুম ভেঙে গেলে ইলিয়াস ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকেই কুপিয়ে আহত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হাফিজুল নিহত হয়, আর বরিশালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশু তাইফা।

তবে গুরুতর আহত ওই নারী দীর্ঘ চিকিৎসার পর প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পরই ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।

তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ইলয়াস পহলানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী তাকে সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

এ ছাড়াও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছর করে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।


ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 দেবাশীষ দেবু, সিলেট

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট। রোববার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট উড়াল দেবে স্পেনের উদ্দেশে। এর মাধ্যমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হবে পণ্য পরিবহন।

সিলেট থেকে বিভিন্ন পণ্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে এখানকার বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনাল না থাকায় ঢাকা থেকে পণ্য রপ্তানি করতে হতো ব্যবসায়ীদের। তাই সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে কার্গো টার্মিনাল স্থাপন ও ফ্লাইট চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার সুযোগে সিলেটের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের এই দাবিটি পূরণ হতে যাচ্ছে।

সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু হওয়াকে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে যাওয়া হিসেবে দেখছেন এখানকার রপ্তানিকারকরা। তবে ফ্লাইট চালু হলেও প্যাংকিং হাউস না থাকায় এখনই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সিলেটে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ও বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বাজারের জন্য আধুনিক মানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইউডিএস) যুক্ত রয়েছে এতে। ১০০ টন ধারণক্ষমতার ওসমানীর কার্গো টার্মিনালের ২০২২ সাল থেকেই পণ্য পরিবহনের জন্য প্রস্তুত ছিল, তবে নানা কারণে এতদিন তা চালু হয়নি। অবশেষে রোববার স্পেনের ইনডিটেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট চালু হবে।

গ্যালিস্টার ইনফিনিট অ্যাভিয়েশনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির পুরো বিষয় তত্ত্বাবধান করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সংশ্লিষ্টরা জানান, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রমের নিরাপত্তা দেবে বেবিচক। আর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এতদিন ভারতের পেট্রাপোল ও গেদে স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির (ট্রান্সশিপমেন্ট) যে সুবিধা বাংলাদেশ পেত, গত ৮ এপ্রিল তা বাতিল করে দিল্লি। এরপর সড়কপথে দিল্লি বিমনবন্দর হয়ে আকাশপথে কার্গো পরিবহনের বিকল্প হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফিশ এক্সপোর্ট গ্রুপের সাবেক সভাপতি হিজকিল গুলজার বলেন, ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট এ অঞ্চলের রপ্তানিকারকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। আমরা দীর্ঘদিন থেকে এ দাবি জানিয়ে আসছি। এটি চালুর মাধ্যমে সিলেটের রপ্তানিকারকদের নতুন সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। এর ফলে সিলেটের পান, সাতকরা, লেবু, মাছসহ কিছু পণ্য রপ্তানি আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে কেবল দেশের ব্যবসায়ীরা নয়, ভারতের সেভেন সিস্টার্সের ব্যবসায়ীরাও এই বিমানবন্দর থেকে সুবিধা নিতে পারবেন।

এ ব্যাপারে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ জানান, ঢাকার পর ওসমানীতে দ্বিতীয় কার্গো স্টেশন প্রস্তুত করা হয়েছে। শুরুতে ইউরোপের কয়েকটি দেশে পণ্য সরবরাহ করা হবে।

অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় সুবিধা যোগ হলে সিলেট থেকেই স্থানীয় পণ্য রপ্তানিও সম্ভব হবে উল্লেখ করে হাফিজ আহমদ বলেন, তবে এখনই তা সম্ভব নয়। কারণ সিলেটের প্রধান রপ্তানি পণ্য শাক-সবজি, যা দ্রুত পচনশীল। এ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে আরএ-থ্রি প্রটোকল ছাড়াও প্রয়োজন আধুনিক প্যাকিং হাউস।

জানা যায়, রোববার ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, সচিব নাসরীন জাহান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এবং মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।


নিজের ঘর সাজাতে জুড়ি নেই বাবুই পাখির

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গয়ঘর গ্রামে তালগাছে বাবুই পাখির বাসা। ছবি: সালাহউদ্দিন শুভ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহউদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার

কবি রজনীকান্ত সেনের ভাষায়, ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই, আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি ঝড়ে।’ স্থপতি বাবুই পাখিটি জানে, নিজের যতই কষ্ট হোক, তালগাছের পাতায় শ্রমে-আনন্দে তৈরি নিজের ঘরেই সুখ।

বর্তমানে তালগাছ অনেকটা কমে গেলেও গ্রাম থেকে একেবারে হারিয়ে যায়নি। এখনো গ্রামের কোনো পুকুর বা দীঘিরপাড়ে, পথের পাশে দু-একটা তালগাছ দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক বছর ধরে স্থপতি বাবুই পাখির আবাসস্থল হয়ে আছে তালগাছ।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামে এ রকম একটি তালগাছে বাবুই পাখির বাসা গড়ে উঠেছে, যা আলাদাভাবে অনেকের নজর কাড়ছে।

সম্প্রতি গয়ঘর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বাড়ির পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে তালগাছ। গাছের বিভিন্ন পাতায় বাসা বুনেছে স্থপতি পাখি বাবুই। এক দুটি নয়, বাসা হবে প্রায় শখানেক। কোনো বাসা বোনার কাজ শেষ, কোনোটিতে চলছে বুনন। তখন বিকেল। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে, মেঘলা আকাশ। একটু পর সন্ধ্যা হবে। পাখিদের ফেরার সময় হয়েছে।

এ সময় দেখা যায়, কোনো বাবুই বাসার ওপরে বসছে, কেউ বাসার ভেতরে ঢুকেছে। কেউ উড়ে যাচ্ছে। কোনো বাবুই পাতার ওপর বসে চারদিকটা দেখে নিচ্ছে। কেউ তালগাছ ছেড়ে আশপাশের গাছে গিয়ে বসছে, আবার ফিরে আসছে। পাখিদের এমন চঞ্চলতার দৃশ্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ।

বাবুই দৃষ্টিনন্দন পাখি। এদের বাসা বোনার গঠন বেশ জটিল আর আকৃতিও খুব সুন্দর। নিজের ঘর সাজাতে তাদের জুড়ি নেই। গ্রীষ্মকাল হচ্ছে বাবুই পাখির প্রজনন ঋতু। এ সময় পুরুষ বাবুই তাল, খেজুর, ধান ও ঘাসপাতা থেকে বাসা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। সুতার মতো দু-তিন ফুট লম্বা পাতার চিকন আঁশ ঠোঁটে চেপে নিয়ে আসে। পছন্দের গাছের ডালে সেটা পেঁচিয়ে গিঁট দিয়ে শুরু করে বাসা বোনা। একটি বাসা তৈরিতে সময় লাগে সপ্তাহখানেক। স্ত্রী বাবুই গড়ে তিনটি ডিম পেড়ে থাকে। ডিম থেকে ছানা ফুটতে ১০ থেকে ১৩ দিন সময় লাগে। ছানারা ১৫ থেকে ১৯ দিনে উড়তে শেখে। বাবুই পাখির আয়ুষ্কাল প্রায় চার বছর।

কথিত আছে- বাবুই পাখি রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় গুঁজে রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়।

গয়ঘর গ্রামের মো. আমির মিয়া বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছগুলোতে অনেক বাবুই পাখির বাসা থাকত। কিন্তু এখন তা আর দেখা যায় না। যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের পুরো এলাকাজুড়ে মাত্র একটি তালগাছে তারা বাসা বেঁধেছে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে সকালবেলা আমাদের ঘুম ভাঙে।’

স্থানীয় পরিবেশকর্মী সোনিয়া মান্নান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও পরিবেশের কারণে অসংখ্য প্রজাতির পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ আমাদের পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকগুলো বিলুপ্তির পথে। স্থপতি বাবুই পাখিও এখন তেমন একটা দেখা যায় না। তা ছাড়া আবাসন সংকটও একটা বড় কারণ। পরিবেশ বিপর্যয় ও বিলুপ্তির হাত থেকে বাবুই পাখিকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।

জেলার হাজী ছালামত স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহাঙ্গীর জয়েস বলেন, বাবুই পাখির খাবার ও বাসস্থানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তারা ধান, কীটপতঙ্গ, ঘাস, পাতা, ফুলের মধু প্রভৃতি খেয়ে থাকে। সুতরাং কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে ঝোপঝাড় উজাড়ের বিষয়ে সচেতনতা দরকার। তালগাছ ছাড়াও নারিকেল, সুপারি, খেজুর প্রভৃতি গাছে বাবুই বাসা বানায়। এসব দিন দিন কমছে। এগুলো রক্ষায় নতুন করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে হবে।

বুননশিল্পী বাবুই পাখি ও বাসার সন্ধানে পাখিপ্রেমীরা ছবি তুলতে, কিচিরমিচির শব্দ শোনার জন্য আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতেন। এখন আর তেমন একটা বাবুই পাখি চোখে পড়ে না। পড়ে না বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথে, কোনো পতিত উঁচু ভিটেমাটিতে কিংবা বাড়ির সীমানায় শোভাবর্ধন তালগাছে বাবুই পাখির বাসা দেখা যেত। তা দেখে পাখিপ্রেমীরা মুগ্ধ হতেন। এখন সেই তালগাছও প্রায় বিপন্ন হতে চলছে।

বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের এক নম্বর তফসিল অনুযায়ী এই পাখিটি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।


গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

খুলনা অঞ্চলে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনায় আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরীকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

আজ রোববার এক অফিস আদেশে এ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, তদন্ত কমিটি গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ নির্ণয়, গ্রিড বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দায় নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্যকে কো-অপ্ট করতে পারবে। কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে গ্রিড বিপর্যয় পরিহারের লক্ষ্যে সুপারিশ করবে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- বুয়েট অধ্যাপক ড. মো. এহসান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পিঅ্যান্ডডি) মো. শহীদুল ইসলাম, ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী (পরিচালক) মো. আবদুল মজিদ, বিপিডিবির সিস্টেম প্রটেকশন ও টেস্টিং কমিশনিং সেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান, পিজিসিবি ট্রান্সমিশন-১ এর প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফয়জুল কবির ও বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মাজহারুল ইসলাম।


banner close