শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১ জুলাই, ২০২৪ ১৮:২৪

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কিভাবে হবে তা নিয়ে অনেক আগে থেকেই আলোচনা চলছিলো। অবশেষে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)।

আজ সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এনসিসিসির বৈঠকে এটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রস্তাব করেছিলাম, আগে যা যা ছিল, সেভাবেই থাকছে। ছোটোখাটো কিছু সংশোধনীসহ মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়েছে। আজকের সভায় প্রস্তাবিত কাঠামো, নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ লিখিত এবং ৩৫ শতাংশ কার্যক্রমভিত্তিক থাকছে।’

চূড়ান্ত অনুমোদনের ফলে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার সামষ্টিক মূল্যায়নের লিখিত অংশের ওয়েটেজ হচ্ছে ৬৫ শতাংশ। আর কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ হচ্ছে ৩৫ শতাংশ। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কার্যক্রম বলতে বোঝানো হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান করা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি।

এর আগে গত মে মাসে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। সেটিই আজ চূড়ান্ত হয়েছে।

বিষয়:

‘ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াড’ প্রতিযোগিতার ফাইনাল শনিবার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিকস, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, শিল্পকলা এবং গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যতিক্রমী আয়োজন ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের সমাপনী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আগামীকাল শনিবার দুপুর ৩টার দিকে শাহাবাগ জাতীয় জাদুঘরে এ অনুষ্ঠান হবে। প্রথমবারের মতো এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে আইটেসারেক্ট টেকনোলজিস।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, শিল্পকলা ও গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এই জমকালো অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন।

ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের আহ্বায়ক ও প্রধান উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এবং ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ডা. দীপু মনি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের হুইপ অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাসুদ কামাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) প্রেসিডেন্ট রাসেল টি আহমেদ, এডিএন গ্রুপের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল এবং প্রাইম ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও হাসান ও রশিদ।

অনুষ্ঠানে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন বিভাগে কুইজ এবং প্রজেক্ট প্রদর্শনী এবং দুপুর ৩ টা থেকে সমাপণী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হবে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ কুইজ ও প্রজেক্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দসহ প্রযুক্তিবিদ ও প্রযুক্তিবিষয়ক শিল্পের ঊর্ধ্বতন ব্যাক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হামিদ।

এই অলিম্পিয়ারে ৬টি ভিন্ন লেভেলের শিক্ষার্থীরা মোট ৮ টি বিভাগে রেজিস্ট্রেশন ফি ছাড়াই অংশ নেন। বাংলাদেশে ৩১০টি স্কুল, ৬১টি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৩২টি কলেজ, ২২টি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান এবং ২৫টি মাদ্রাসা থেকে কুইজ এবং প্রোজেক্টে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৭ হাজার ৯৭৬ জন। কুইজ নিবন্ধন সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৭৪৯। প্রোজেক্টের জন্য নিবন্ধন সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২২৭ এবং ৫৩ জন মেন্টর এবং বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন।

এ ছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩০টি ক্লাব, ২৯০ জন ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং ৪ হাজার ৭০২ জন ভলেন্টিয়ার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এই অলিম্পিয়াডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশে সব স্তরের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার প্রথম সিজন ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ থেকে শুরু হয়।


৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু ২৮ আগস্ট

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আগামী ২৮ আগস্ট এই পরীক্ষা শুরু হবে। চলবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্ধারিত দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে প্রার্থীদের আবশ্যিক ও পদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর এই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শুধু মানসিক দক্ষতা বিষয়ে পরীক্ষা শুরু হবে বেলা সাড়ে ১২টায়। বিভাগভিত্তিক ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে একযোগে এই পরীক্ষা চলবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরীক্ষার হল ও আসন বিন্যাসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলো পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

এর আগে ৪৬তম বিসিএসসের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই বিসিএস থেকে মোট ৩ হাজার ১৪০টি পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৩৭ হাজারের অধিক প্রার্থী।

গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১০ হাজার ৬৩৮ জন। উত্তীর্ণ প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।

বিষয়:

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ, হাইকোর্টের রায় বহাল

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করতে বলেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করেন। আমরা শুনব।

প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আন্দোলন হচ্ছে হোক। রাজপথে আন্দোলন করে কি হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। তিনি বলেন, আপিল বিভাগে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে।

গত ৯ জুন সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে, না কি বাতিল হবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

গত ৯ জুন সকালে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।


‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ চালুর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো নেওয়া হয়নি কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা। গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ও প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাসও বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, সরকারের কারও পক্ষ থেকে আলোচনার কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তারা আলোচনায় প্রস্তুত এবং দ্রুত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া শুরু করতে চান। কিন্তু দাবির সুরাহা না হলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের উপায় থাকবে না। সোমবার (১ জুলাই) থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়।

১ জুলাই থেকে চালু হওয়া কর্মসূচি অনুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪০০টির মতো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয় কর্মসূচির আওতায় পেনশন দেওয়া হবে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বলছে, নতুন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের সুবিধা কমবে। ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক ও তাদের অবমাননাকর। তারা নতুনদের জন্য এই আন্দোলন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের দাবি তিনটি-প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে (প্রশাসনে জ্যেষ্ঠ সচিবেরা যে ধাপে বেতন-ভাতা পান) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি শুধু প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল।

মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ ছাড়া প্রসাশনিক কাজ বন্ধ করে রেজিস্টার ভবনের সামনে অবস্থান নেন আরেকটি অংশ।

তাদের অভিযোগ, বৈষম্যমূলক এই পেনশন স্কিম জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এই স্কিম প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহার ছাড়াও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন ও সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে দেশের ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতির এই কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে পালন করছে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলো। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনের মাঠে সরব হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমিতিগুলোও।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: অর্থমন্ত্রী

এদিকে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াংমিং ইয়ংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যয়-এর প্রাসঙ্গিক বিষয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে। গতকাল কর্তৃপক্ষের জনংসযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’-এর স্কিম যাত্রা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থায় আনয়নের লক্ষ্যে অন্যান্যে পাশাপাশি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য এ স্কিম প্রবর্তন করা হয়।

বর্তমানে ৪০৩টি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯০টির মতো প্রতিষ্ঠানে পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে। অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠান কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের (সিপিএফ) আওতাধীন। সিপিএফ সুবিধার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, কোনো পেনশন পান না। তা ছাড়া সরকারি, স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও দেশের বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ একটি সুগঠিত পেনশনের আওতার বাইরে আছে। সরকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য একটি সুগঠিত পেনশন কাঠামো গড়ে তোলার জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রবর্তন করেছে।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ এর ১৪ (২) ধারা অনুযায়ী, দেশের সব মানুষের জন্য পেনশন স্কিম প্রবর্তনের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ১ জুলাই ২০২৪ বা তৎপরবর্তীতে যোগদানকারী সব কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় স্কিমের আওতাভুক্ত হবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিরত আছেন, তারা আগের মতো সব পেনশন সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে শিক্ষকদের জিম্মি করা হচ্ছে: জিনাত হুদা

এদিকে প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে সারা দেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতাসহ অন্য শিক্ষকরা কলাভবনের মূল ফটকে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। এ আন্দোলন নিয়ে অনেক ধরনের অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যই এ আন্দোলন করছেন। আর প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে।’

উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশের কথা বাদই দিলাম... যেহেতু সবকিছুই বাদ দিচ্ছি; এই উপমহাদেশের দিকে তাকান, ভারত, শ্রীলঙ্কা এমনকি পাকিস্তানেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি। যাদের বিরুদ্ধে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম, তাদের দেশেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি।’

সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি ও ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফুর রহমান বলেন, ‘এই পেনশন স্কিমটি শিক্ষকদের মান-সম্মানের ব্যাপার। যারা পেনশন স্কিমের পক্ষে কথা বলছে, তারা তাদের নিজস্ব অবস্থান বজায় রাখার জন্য এসব বলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্ররা সবসময় আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এই জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলন। যদি সরকার এই স্কিম বাতিলে আরও কালক্ষেপণ করেন, তাহলে আমাদের আন্দোলনে দেশের সাধারণ জনগণও অংশগ্রহণ করবেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও এই আন্দোলনে আমাদের কোনো মতপার্থক্য নেই। সব দল-মতনির্বিশেষে আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে একমত।’

কর্মসূচিতে অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এম ওহিদুজ্জামান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছিরসহ আরও অনেকে। এ সময় শিক্ষকরা তাদের বক্তব্যে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দেন।

একই দাবিতে সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনের মল চত্বরে এসে জড়ো হন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারাও দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এসময় অবিলম্বে দাবি না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব মূল ফটকে তালা ঝোলানোরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। দাবি আদায়ে উপাচার্যকে ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনার আহ্বান জানান তারা।

কর্মচারীরা বলেন, সচিবরা আমাদের ওপর তাদের তৈরি করা অন্যায় নীতি চাপিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের বুকের ওপর দিয়ে গাড়িতে করে অফিসে যান। আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাস্তা বন্ধ করে দেব। ফলে তারাও আর আমাদের বুকের ওপর দিয়ে অফিসে যেতে পারবেন না। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেব। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে সারা দেশ অচল হয়ে যাবে।


দ্বিতীয় দিনেও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কেন্দ্রে যান শিক্ষার্থীরা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে গত কয়েক দিন ধরেই টানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই বৃষ্টিপাতের ফলে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে কাজকর্ম করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। আষাঢ় মাসের এই বৃষ্টির মধ্যেই সারা দেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

গত রোববার (৩০ জুন) পরীক্ষার প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনেও বৃষ্টিতে ভোগন্তির শিকার হতে দেখা গেছে পরীক্ষার্থীদের। এদিনও পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও বৃষ্টির ভোগান্তি মাথায় নিয়ে পরীক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

মঙ্গলবার এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে বেলা ১টায় শেষ হয়। তবে বৃষ্টির জন্য ঢাকা-চট্টগ্রামসহ প্রায় সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শুক্রাবাদের রাসেল স্কয়ারে নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে দেখা গেছে, রিকশা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছান পরীক্ষার্থীরা। ছাতা মাথায় থাকলেও অনেক পরীক্ষার্থী আধাভেজা হয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। শুধু নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে ভোগন্তিতে পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

গত ৩০ জুন অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে অনেক পরীক্ষার্থীকে ভিজে বাসায় পৌঁছাতে হয়। অভিভাকরাও পড়েন ভোগান্তিতে। ওই দিনও পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় থেকে বৃষ্টির ভোগান্তিতে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। ছাতা নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে আধাভেজা অবস্থায় পৌঁছান অনেকে।

এদিকে কয়েক দিন টানা বৃষ্টিপাতের আভাস থাকায় এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। তাতে প্রয়োজনে দেরিতে পরীক্ষা শুরু করে সময় আধাঘণ্টা বা এক ঘণ্টা সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।

আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, তাই পরীক্ষার্থীদের সময় হাতে নিয়ে বের হওয়া উচিত হবে। তারপরও কেউ যদি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছে, তাকে সময় সমন্বয় করে পুরো সময়ে পরীক্ষা দিতে সুযোগ দেওয়া হবে। সেই নির্দেশনা আমরা দিয়েছি।

আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশারের সই করা জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিন প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষার দিনগুলোতে বৃষ্টি থাকলে প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কেন্দ্রের মূল ফটক খুলে দিয়ে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, অনিবার্য কারণে কোনো কেন্দ্রের পরীক্ষা শুরু করতে আধাঘণ্টা কিংবা এক ঘণ্টা দেরি হলে জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় সেই আধাঘণ্টা বা এক ঘণ্টা সময় সমন্বয় করে পরীক্ষা শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগামী চার-পাঁচ দিনও দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আভাস রয়েছে।

অন্যদিকে বন্যার কারণে সিলেট শিক্ষা বোর্ড এবং সিলেট বিভাগের চার জেলায় মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে। ফলে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে প্রথম দিনে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১ লাখ ২২ হাজার ৫৫২ জন।


বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে জবিতে মানববন্ধন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে অবমাননা ও কটূক্তি করার প্রতিবাদে কটূক্তিকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অধ্যয়নরত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম জবি শাখার আয়োজনে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সম্প্রতি জবিতে কিছু শিক্ষার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে অবমাননা ও কটূক্তি করেছে। আমরা যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি আমরা তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

তাদের দাবিগুলো হলো, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে নিয়ে কটূক্তি করেছে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম জবি শাখাকে স্বীকৃত সংগঠন হিসেবে নিবন্ধন দিতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মেয়েদের জন্য হলে অবিলম্বে পুনরায় ৫ শতাংশ সিট বরাদ্দ রাখতে হবে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক তানিম ফারহান দৈনিক বাংলাকে বলেন, দেশের ইতিহাস নিয়ে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করেছে তাদেরকে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে। শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের স্থান হতে পারেনা। যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা কিংবা তাদের পরিবারকে অবমাননা করেছে তাদেরকে কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা দেওয়া হবেনা।

সভাপতি রাকিবুল হাফিজ অন্তর জানান, কোটা থাকবে কি থাকবে না, কোটা রাখা হবে কি হবে না, কিংবা কোটা বাতিল বা সংস্কার করা হবে কি না তা নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু যারা এই কোটাকে কেন্দ্র করে মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করবে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করবে তাদের সন্তান ও প্রজন্মকে নিয়ে কটূক্তি করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবেনা। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কোনো অধিকার নেই। তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।

কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দ্যেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাদা বাবারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলেই আপনারা বাকস্বাধীনতা পেয়েছেন। সুতরাং মহান মুক্তিযুদ্ধ কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোনো কটূক্তি চলবেনা।

সম্প্রীতি হাইকোর্টের নির্দেশে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের পর আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে বিভিন্ন অবমাননাকর পোস্ট দিয়ে আসছে।


শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছেন কোটা আন্দোলনকারীরা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ আরও চারটি দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে শিক্ষার্থী এবং চাকরি প্রত্যাশীরা। ফলে ওই এলাকাসহ চারপাশের সড়কের যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা মোড়ে অবরোধ করেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। পদযাত্রাটি ঢাবির বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ শেষে নীলক্ষেত, ঢাকা কলেজ, সায়েন্সল্যাব হয়ে শাহবাগ মোড়ে আসলে শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে পড়েন।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় দখল করে আছেন।

এর আগে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজকের এই কর্মসূচিসহ আরও তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ৩ ও ৪ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত সাতটি সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে একত্র হবেন।

আন্দোলনের আরেক সমন্বায়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে না। উনাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান আমাদের আছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই আন্দোলন করছি।

এর আগে পদযাত্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা?’, ‘মেধা মেধা’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না’, ‘কোটা বাতিল কর, বাতিল কর’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো, পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা–সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।


সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণ ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আহ্বানে এ কর্মবিরতিতে গেছেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ফলে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল সোমবার থেকে একসঙ্গে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী থাকলেও এই কর্মসূচির কারণে সেখানে নীতিগত সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ নেননি।

গতকাল সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। কর্মবিরতির ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদও কর্মবিরতি পালন করছে।

ধারাবাহিক আন্দোলনেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে গত রোববার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের মোর্চা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের দাবি তিনটি হলো ‘প্রত্যয়’ স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সোমবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সব ক্লাস বন্ধ থাকবে; অনলাইন-সান্ধ্যকালীন ক্লাস ও শুক্র-শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ থাকবে; সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে; বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস-সেমিনার-কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন; একাডেমিক কমিটি-সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি ও প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না; অনুষদের ডিনরা তাদের কার্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন; নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না; কোনো বাছাই বোর্ডের সভা হবে না; বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটের কার্যালয়, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন; সান্ধ্যকালীন, শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাস বন্ধ থাকবে; বিভিন্ন গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালকরা কোনো সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন; বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ কর্যালয় বন্ধ থাকবে এবং প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ রাখবেন।

এদিকে, ছাত্রদের কোটাবিরোধী পৃথক আন্দোলনে শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারকে যেন এ আন্দোলনের অংশ না করে সেটা খুলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

গতকাল সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। অনুষদ ও ইনস্টিটিউটগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না।

নিজামুল হক ভূইয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনেরও মহাসচিব। তিনি বলেন, দাবির বিষয়ে এখনো সরকারের কোনো পর্যায় থেকে তারা কোনো আশ্বাস পাননি। তাই এ কর্মসূচি চলবে।

এদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও শিক্ষকদের কর্মবিরতির একইরকম খবর পাওয়া গেছে। আর খুলনা ব্যুরো জানিয়েছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মবিরতিতে গেছেন শিক্ষকরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজ জানান, সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে সব ডিসিপ্লিনের ক্লাস, অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস, মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সব ধরনের পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ডিসিপ্লিন অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার, ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষা, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও হলের প্রভোস্টদের সংশ্লিষ্ট অফিসের কার্যক্রম, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ কর্মবিরতি চলাকালে একাডেমিক ও মডারেশন মিটিং, নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি, নিয়োগ ও পদোন্নয়ন সভা, ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণাধর্মী ও প্রশিক্ষণ সেন্টারের পরিচালকরা সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকেন। বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন, সুপার গ্রেড এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতির কর্মসূচি পালিত হবে।

এদিকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলাকালে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।

অন্যদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি দীপক চন্দ্র মণ্ডল বলেন, বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হয়। ১ থেকে ৪ জুলাই প্রতিদিন অর্ধদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করা হবে।

এছাড়া খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, কর্মদিবসে অথবা ছুটির দিনে অনুষ্ঠিত সব ধরনের ক্লাস (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। শিক্ষকমণ্ডলী পরীক্ষা ও ভর্তি-সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না। শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন তারা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্সের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন। শিক্ষকরা সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কমিটির কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। শিক্ষকমণ্ডলী পরীক্ষা ও ভর্তি-সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল হাসিব বলেন, সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের এ আইনের আওতামুক্ত রাখা এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রণীতব্য প্রহসনের অভিন্ন নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।


কোটাবিরোধী সম্মিলিত আন্দোলনের ডাক শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল ও সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এবার ঢাকায় সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে গণপদযাত্রাসহ তিন দিনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। তারা তাদের এই আন্দোলনের নাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত শিক্ষার্থী সমাবেশ থেকে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে গণপদযাত্রা শুরু হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের একই সময়ে একই কর্মসূচি পালনে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়া আগামী ৩ ও ৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার সব কলেজে একযোগে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সোমবার শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়। এরপর সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, অ্যাকাডেমিক ভবন ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

মিছিলে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা?’, ‘মেধা মেধা, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না’, ‘কোটা বাতিল কর, বাতিল কর, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আগামী চার জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সকল ক্লাস বর্জনের আহবান জানান।

তিনি বলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।

পেনশন স্কিম প্রত্যয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। কিন্তু আমাদের সেসব সুযোগ-সুবিধাগুলো রয়েছে, যেমন- মেডিকেল সেন্টার, হল, লাইব্রেরি, রিডিংরুম এগুলো যেন বন্ধ না হয়।’

এর আগে আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ঢাবি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে একত্রিত হন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করেন। এ সময় তারা কোটাবিরোধী নানান স্লোগান দেন। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না মানব না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়/স্বাধীনতার বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘হাইকোর্টের রায়, মানি না মানব না’, ‘কোটা পদ্ধতি, কোটা পদ্ধতি, মানি না মানব না’ ইত্যাদি।

সমাবেশ শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় সেবা অব্যাহত রাখার দাবি জানান।


ঢাবিকে আর ওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার অঙ্গীকার

উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এস এম মাকসুদ কামালের
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) উচ্চতর গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে গবেষণাপ্রধান আর ওয়ান ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এস এম মাকসুদ কামাল।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে টিএসসিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য তার এই পরিকল্পনার কথা বলেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

স্পিকার বলেন, ‘তরুণদের সামাজিক দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে হবে। তারুণ্য জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময়কে যথাযথভাবে সদ্ব্যবহার করে মেধা ও মননকে শানিত করতে হবে এবং প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত হতে হবে। শিক্ষা মানুষকে জ্ঞানী, দক্ষ এবং মূল্যবোধ সম্পন্ন করে তোলে। তাই শিক্ষার মাধ্যমেই পরিবর্তন সম্ভব। জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম উচ্চশিক্ষা। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের একটি লক্ষ্য ট্রানজেকশনাল, অপরটি ট্রান্সফরমেশনাল। প্রথম লক্ষ্যটির ক্ষেত্রে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শুধু ভালো চাকুরি পাওয়া নয়, বরং এক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ মানবিক বিকাশ ঘটে এবং সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে তার মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয় এবং সে বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জন করে।’

ঢাবিকে আর ওয়ান ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘ইতোমধ্যে অ্যাকাডেমিক মাস্টার প্ল্যান এবং অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা দরকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কৃতিত্বপূর্ণ নজির নেই। আত্মনির্ভরশীল, আত্মমর্যাদাশীল ও স্বাবলম্বী জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দক্ষতা-ভিত্তিক, আধুনিক, প্রায়োগিক ও জনকল্যাণমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে আমরা তরুণ প্রজন্মকে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুত করতে চাই। শিক্ষার্থীদের হতাশামুক্ত শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই প্রথম বর্ষের সকল অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

জাতীয় নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, অ্যালামনাই, ব্যবসায়ীসহ সকলের সহযোগিতায় গবেষণা, উদ্ভাবন ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের শিক্ষা মানচিত্রে অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাদ্দাম হোসেন। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

এর আগে উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাবির ১০৪ তম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকাল ১০টায় টিএসসির পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’।


ইউজিসি প্রফেসর হলেন ড. লুৎফুল হাসান ও ড. জেবা ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান ও অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজকে ‘ইউজিসি প্রফেসরশিপ ২০২৩’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। আগামী দুই বছরের জন্য ‘ইউজিসি প্রফেসর’ হিসেবে এদুজন গবেষক দায়িত্ব পালন করবেন। যোগদানের তারিখ থেকে তাদের মেয়াদকাল গণ্য হবে।

কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে ‘ইউজিসি প্রফেসরশিপ’ নিয়োগ কমিটির এক সভায় গতকাল রোববার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজকে নিয়োগের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অধ্যাপক আলমগীর বলেন, ‘দেশের দুজন বিশিষ্ট গবেষককে ইউজিসি প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্মার্ট কৃষি, বায়োকেমিস্ট্রি, মলিকুলার বায়োলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ইমিউনোলজি ও জেনেটিকস বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা এবং দেশের প্রায়োগিক ও মৌলিক গবেষণায় তারা অনন্য নজির স্থাপন করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুবিনা খোন্দকার, কমিশনের গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ‘ইউজিসি প্রফেসরশিপ’ নিয়োগে শিক্ষা, গবেষণা, প্রকাশনা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কর্ম-অভিজ্ঞতা, গবেষণা কাজে সংশ্লিষ্টতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হয়। ইউজিসি প্রফেসরশিপ নীতিমালা অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত খ্যাতিমান শিক্ষক/গবেষকদের ‘ইউজিসি প্রফেসরশিপ’ প্রদান করা হয়। একজন সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত প্রফেসর সর্বোচ্চ যে সুযোগ-সুবিধা পান, তারাও একই সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।


ঢাবি শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির প্রথম দিন আজ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ আরও দুটি দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের কর্মবিরতির আজ প্রথম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে ঢাবি শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হিসেবে আজ কর্মসূচি থাকলেও পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী সেখানেও অংশ নেয়নি শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্য। তবে কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি চলছে। ফলে শিক্ষকদের এই কর্মবিরতির প্রভাব তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। তবে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয় খোলা। সেদিনই এটির প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাবে।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আজ থেকে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতির কথা জানানো হয়।

প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার ছাড়া শিক্ষকদের আরও দুইটি দাবি রয়েছে, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন এবং প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি। এসব দাবি আদায় না হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে আমরা আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছি। সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এতে একাত্মতা ঘোষণা করে কর্মবিরতি পালন করেছেন৷ আমাদের ৩ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, আমাদের দাবি নিয়ে আমরা সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের সঙ্গে একটা আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো আলোচনা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আমাদের সঙ্গে কোনো টেবিল টক বা ডিসকাশনে যাওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি, অর্ধদিবস কর্মবিরতি আর গতকাল পুর্নদিবস কর্মবিরতি করেছি। সবক্ষেত্রেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখেছি। আমরা পরীক্ষা এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আওতামুক্ত রেখেছি। কিন্তু সরকারের কেউই আমাদের কথা শুনবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। এখন আমাদের আর ফিরবার কোনো পথ নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমন একটি সময় অতিবাহিত করছে যেখান একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরাও ভিন্ন ভিন্ন আন্দোলনে আছেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করছেন প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের আন্দোলন আর শিক্ষার্থীরা করছেন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন।

গত ১৩ই মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির পর গত ২০ মে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এরপর ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পরে ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিনদিন সারাদেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। এরপর গতকাল ৩০জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করে আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয় শিক্ষকদের।


banner close