শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

কিউই পাখিদের ঘাতক কি মায়াবী স্পিন?

ফাইল ছবি
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত
প্রকাশিত
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত
প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:৫৭

চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ৩০ মিনিটে।

ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার। একই সঙ্গে খেলা সরাসরি দেখা যাবে বেসরকারি টিভি চ্যানেল গাজী টিভি ও টি-স্পোর্টসে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারে টাইগাররা। অন্যদিকে, টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে বর্তমান রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে, এরপর নেদারল্যান্ডসকে হারায় ৯৯ রানে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেই শুরু করবে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের ঠিক আগে বাংলাদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল কিউইরা।

ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৪১ বার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের জয় ৩০টিতে, বাংলাদেশের ১০টিতে। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক রেকর্ড এবং বর্তমান ফর্মের কারণে বিশ্বকাপের ম্যাচে স্পষ্টভাবেই ফেভারিট নিউজিল্যান্ড।

১৯৯৯-এ যাত্রা শুরুর পর ২০১১ আসর ছাড়া বিশ্বকাপের সব আসরেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দেখা হয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্বকাপে পাঁচবারের দেখায় সবগুলোতেই হেরেছে টাইগাররা।

ইনজুরির কারণে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে খেলতে পারেননি উইলিয়ামসন। আজকের ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে উইলিয়ামসনের। ম্যাচের আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আসেন কিউই অধিনায়ক। বাংলাদেশ কেমন প্রতিপক্ষ- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চিতভাবেই উপমহাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে তারা (বাংলাদেশ) খুব ভালোভাবে পরিচিত। দলে বেশ কয়েকজন ম্যাচ জেতানোর মতো খেলোয়াড়ও আছেন। আর আমি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এটিই বলি, বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে এলেই দেখবেন এমন অনেক দল থাকে, যারা কন্ডিশনভেদে ম্যাচ জেতানোর মতো খেলোয়াড়ের সহায়তায় একে অপরকে হারাতে পারে।’

‘প্রতিটি দলের বিপক্ষেই আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকে। দল হিসেবে খেলার গুরুত্বপূর্ণ যে অংশগুলোর প্রতি আপনি নিবদ্ধ থাকতে চান, সেগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করাটা দরকার। কারণ এটা বেশ লম্বা একটা টুর্নামেন্ট। প্রতিটি ম্যাচই কঠিন। নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করাটাই ব্যাপার।’- আরও যোগ করেন উইলিয়ামসন।

টুর্নামেন্টে স্থানীয় কোচদের ভূমিকা কেমন থাকে, এমন প্রশ্নের জবাবে উইলিয়ামসনের উত্তর, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। ভেন্যুর ক্ষেত্রে স্থানীয় কেউ তো কাজে লাগেই। আর যে দেশে আছেন সে দেশ নিয়েও ভালো ধারণা পাওয়া যায়। আমার মনে হয়, সব দলই যতটা সম্ভব হোমওয়ার্ক করে এসেছে এবং অভিজ্ঞতারও দ্বারস্থ হয়েছে। তাই আমি মনে করি অবশ্যই (স্থানীয় কোচ থাকলে) তাতে লাভবান হওয়া যায়।’

যদিও ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ফেভারিট। তারপরও চেন্নাইয়ে গরম এবং স্পিনসহায়ক উইকেট থাকায় ম্যাচ জয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাসী থাকবে বাংলাদেশ।


ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমিফানাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। হিউস্টনে আজ শুক্রবার সকালে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হয় মেসির দল। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হয়।

শুরু থেকেই বেশ অগোছালো ফুটবল খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আক্রমণে আসে ইকুয়েডর। বেশ কয়েকবার আলবিসেলেস্তেদের অর্ধে ভয় ধরিয়ে দেয় তারা। ১৫তম মিনিটে দুর্দান্ত এক সুযোগ পেয়েছিল তারা।

কিন্তু জেরেমি সারমিয়েন্তোর বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। তখনই বল পেয়ে কেন্ডি পায়েসের নেওয়া শট চলে যায় উপর দিয়ে। স্রোতের বিপরীতে গোল করে ফেলে আর্জেন্টিনা।

লিওনেল মেসির কর্নার থেকে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের হেড খুঁজে পায় লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে। তিনিও বল জালে জড়ান হেডে। এই এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গোছানো হয় আর্জেন্টিনা। কিন্তু এর মধ্যেও বারবারই আক্রমণে উঠে আসছিল ইকুয়েডর। তবে গোলের আশা ছাড়েনি ইকুয়েডর। ৬০ মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ পেয়েও যায় তারা।

বক্সের ভেতর অ্যালান ফ্রাঙ্কোর গোলমুখে নেওয়া শট রদ্রিগো দি পলের হাতে লাগে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ইনার ভেলেন্সিয়া মার্তিনেসকে ভুল দিকে ঠেলে দেন ঠিকই। কিন্তু বল লেগে যায় পোস্টে। হতাশ হতে হয় ইকুয়েডরকে।

তারা অবশ্য কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় শেষ পর্যন্ত। তবে সেটি আসে ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে। ৯১তম মিনিটে জশ ইয়েভোয়াহের শট হেড দিয়ে জালে জড়ান কেভিন রদ্রিগেজ। সমতা নিয়ে শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। কোপা আমেরিকায় ৯০ মিনিটের পরই হয় পেনাল্টি।

আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন লিওনেল মেসি। কিন্তু তার শট লাগে গোলবারে। হতাশ আলবিসেলেস্তেদের জন্য আরও একবার নায়ক হন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। আনহেল মিনার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।

পরের শটে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেস। এরপর অ্যালান মিন্ডার শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান মার্তিনেস। টানা দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন তিনি। বাকি শটগুলোতে সবাই গোল করলেও স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তেরা।


কোয়ার্টারে কঠিন প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ম্যাচের আগে থেকেই চলছিল নানা গুঞ্জন; অপরাজেয় কলম্বিয়াকে কি থামাতে পারবে ব্রাজিল? তবে এ ম্যাচে কেমন করে ব্রাজিল সেটাই দেখার বিষয় ছিল। শুরুটা যেভাবে করল ব্রাজিল সেটা আর ধরে রাখতে পারলো না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে গেল সেলেসাওদের পারফরম্যান্স। ফলে শুরুতেই এগিয়ে গেলেও কলম্বিয়ার অজেয় যাত্রা থামাতে পারল না ব্রাজিল। তিন ম‍্যাচে দ্বিতীয় ড্রয়ে তবুও নিশ্চিত করল কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা।

ক্যালিফোর্নিয়ার লেভি’স স্টেডিয়ামে গতকাল কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। এতে দুই ড্র আর এক জয়ে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলো ব্রাজিল। সেখানে তাদের জন‍্য অপেক্ষায় দারুণ ছন্দে থাকা উরুগুয়ে। আর দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ‍্যাম্পিয়ন কলম্বিয়া। শেষ আটের লড়াইয়ে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে তারা। টানা ২৬ ম‍্যাচ ধরে অপরাজিত দলটি খেলবে পানামার বিপক্ষে। অসংখ‍্য ফাউলে শুরু হওয়া ম‍্যাচে সপ্তম মিনিটে একটি ‘বড় ধাক্কা’ খায় ব্রাজিল। হামেস রদ্রিগেসকে অহেতুক ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। গ্রুপ পর্বে দুইবার হলুদকার্ড দেখার কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারবেন না ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড।

সেই ফাউলে পাওয়া ফ্রি কিকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন রদ্রিগেস। তার তীব্র গতির শট বেরিয়ে যায় ক্রসবার ছুঁয়ে! দশম মিনিটে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন ব্রুনো গিমারাইস। ঠেকানোর চেষ্টায় তালগোল পাকিয়ে ফেলেন কলম্বিয়া গোলরক্ষক কামিলো ভার্গাস। ভাগ‍্য ভালো তার বল জালে যায়নি, বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে।

দুই মিনিট পর রাফিনিয়ার চমৎকার ফ্রি কিকে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বাম দিকের পোস্ট ঘেঁষে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। লাফিয়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও গতির জন‍্য জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি ভার্গাস। ১৯তম মিনিটে রদ্রিগেসের ফ্রি কিকে নিখুঁত হেডে জালে বল পাঠান দাভিনসন সানচেস। তবে অফসাইডের জন‍্য মেলেনি গোল। কিন্তু প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল হজম করেই বসে কোপার ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা। কলম্বিয়ার জন কর্ডোবার অ্যাসিস্টে গোল করেন ড্যানিয়েল মুনোজ। ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্রাজিল। চেষ্টা করেন আক্রমণে গুছিয়ে উঠার। কিন্তু কোনো সুফলই পাচ্ছিল না তারা। উল্টো তালগোল পাকিয়ে ফেলছিল ডিফেন্সে। ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে শেষবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল ব্রাজিলের। বক্সের বাইরে থেকে নেয়া আন্দ্রেস পেরেইরার জোরালো শট লাফিয়ে উঠে কোনোমতে বাঁচান কলম্বিয়ার গোলরক্ষক। ১-১ সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।


১৬ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়ে শেষ আটে তুরস্ক 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

গ্রুপ পর্বে বড় চমক দেখিয়েছিল অস্ট্রিয়া। ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসকে চমকে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে পাঁ রেখেছিল তারা। কিন্তু অস্ট্রিয়ার সেই যাত্রা এবার থামিয়ে দিল তুরস্ক। তাদের হারিয়েই ১৬ বছর পরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠল তুরস্ক। ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে অস্ট্রিয়া। সেই ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করল তারা। দ্বিতীয়ার্ধে ধার বাড়াল আরও। তার মাঝেই দ্বিতীয় গোল হজম করে বসল গ্রুপ পর্বে চমক জাগানো দলটি। পরে ব্যবধান কমিয়ে, চাপ ধরে রাখলেও শেষ রক্ষা হলো না তাদের।

লাইপজিগে গতকাল রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে তুর্কিরা। ২০০৮ সালের পর ইউরোয় শেষ ষোলোর বাধা পার হলো তারা। তুরস্কের দুটি গোলই করেছেন মেরিহ দেমিরাল। ম্যাচের অর্ধ মিনিট পার না হতেই কর্নার পায় তুরস্ক। সেখান থেকে আর্দা গুলারের শট থেকে পাওয়া বল; দুর্দান্ত শটে গোল করেন তুরস্কের মেরিহ ডেমিরাল। এতে ৫৭ সেকেন্ডে এগিয়ে যায় তুর্কিরা।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে কোনো নকআউট ম্যাচে দ্রুততম গোলের রেকর্ড এটি। আর সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের দ্বিতীয়। এর আগে চলতি আসরেই ইতালির বিপক্ষে ২৩ সেকেন্ডে গোল করে ইউরোর ইতিহাসে দ্রুততম গোলের রেকর্ড করেছিলেন আলবেনিয়ার নেদিম বাজরামানি। পুরো ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থাকা অস্ট্রিয়া দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করে। প্রথম অর্ধে গোলের উদ্দেশ্যে ছয়টি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে না পারা দলটি দ্বিতীয়ার্ধে আরও ১৫টি শট নেয়, লক্ষ্যে থাকে পাঁচটি। কিন্তু সমতাসূচক গোলের অপেক্ষা তাদের আর শেষ হয়নি। যেখানে তুরস্কের পাঁচ শটের তিনটি থাকে লক্ষ্যে, যার দুটিই সফল। ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তুরস্ক। রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ মিডফিল্ডার গুলারের কর্নারে থেকে হেডে দ্বিতীয় গোলটি করেন দেমিরাল।

৭ মিনিট পরেই ফরোয়ার্ড মিখায়েলের পা থেকে একমাত্র শান্তনার গোলটি পায় অস্ট্রিয়া। এরপর আক্রমণের ধার বাড়ায় তারা। চার মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল অস্ট্রিয়া; কিন্তু বমগার্টনারের হেড দুর্দান্ত ক্ষীপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক ম্যার্ট গিনক। একটু পরই বাজে শেষের বাঁশি। হতাশায় নুয়ে পড়ে অস্ট্রিয়ার খেলোয়াড়রা। শুরু হয় তুর্কিদের উদযাপন। বার্লিনে আগামী শনিবার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে তুরস্ক।

বিষয়:

পাকিস্তান দলে অপারেশন চালানোর ইঙ্গিত রিজওয়ানের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বছরখানেক সময় ধরেই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে পাকিস্তান। কোনো পরিকল্পনাতেই কিছু হচ্ছে না। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সুবিধা করতে পারেনি ‘ম্যান ইন গ্রিন’রা। একই ধারা ছিল সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাবর আজমের দল। এরপর চরম সমলোচনার মুখে পড়েছে বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো পাকিস্তান দল। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমর্থক; সবাই কাঠগড়ায় তুলছেন ক্রিকেটারদের এমন পারফরম্যান্সকে।

বিশ্বকাপে এমন ভরাডুবির জন্য নিজেদের জ্বলে উঠতে না পারাকেই দায়ী করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর সমালোচনা হওয়াটা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন পাকিস্তানের সহঅধিনায়ক। বাকি ক্রিকেটারদেরকেও এ সমালোচনা ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বোর্ডের পক্ষ থেকে যেকোনো সিদ্ধান্ত সহজভাবে মেনে নিতে দলকে পরামর্শ দেন রিজওয়ান। রিজওয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন, দলে যে অপারেশন চলতে পারে সেদিকেও।

মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘সত্যি বলতে দল যে সমালোচনার মুখে পড়েছে তা যুক্তিসঙ্গত বলে আমি মনে করছি। আমাদের এটা প্রাপ্য, কারণ আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স করতে পারিনি। আর যে ক্রিকেটাররা সমালোচনা নিতে পারে না সে কখনো সাফল্য অর্জন করতে পারে না। আমরা আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে খুব হতাশ। যখন একটা দল হারে তখন কেউ বলতে পারে না যে, বোলিং কিংবা ব্যাটিং ভালো হয়েছে, তখন দুটোতেই সমস্যা ছিল বুঝতে হবে।’

বিশ্বকাপ চলাকালীন দলে বড় পরিবর্তন আসার গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। দলের প্রয়োজনে বোর্ড যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেও গণমাধ্যমে জানান তিনি।

পাকিস্তানের সহঅধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘এটা একটা সাধারণ জিনিস, যখন কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয় তখন আমরা তার অপারেশন করি! এখানে বিষয়টা এমনই- দলের প্রয়োজনে করতে হবে। আমাদের সভাপতি এসব ভালো জানেন। আশা করছি উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তবে সব ব্যর্থতা পেছনে ফেলে আপাতত বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ব্যস্ত হতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। চলতি জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলবে। এ ছাড়া ক্যারিবীয় লিগ শুরু হবে আগস্টে।

এসব টুর্নামেন্টে অংশ নিতে সবমিলিয়ে পাকিস্তানের ১২ ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দিয়েছে পিসিবি। আগামী ২৯ আগস্ট শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। সেখানে খেলবেন ফখর জামান, মোহাম্মদ আমিরের মতো ক্রিকেটাররা। এ ছাড়া তাদের এনওসি দেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার জন্যও। যেখানে আগে থেকেই খেলছেন হাসান আলি ও শান মাসুদ।

এদিকে, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে অংশ নিতে এরই মধ্যে পিসিবির অনুমতি পেয়েছেন মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ হাসনাইন, সালমান আলি আগা ও শাদাব। আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে এলপিএল।


মেসিকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে ইনজুরিটা যেনো পেয়ে বসেছে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসিকে। গত বছর থেকে পায়ের হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরিতে প্রায় সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে দেখা যায় এ ফুটবল জাদুকরকে। ইনজুরির সেই ধারা এখনো চলমান। যে কারণে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামা হয়নি মেসির। দলের সেরা তারকার ইনজুরিতে বেশ দুশ্চিন্তাই পোহাতে হচ্ছে আলবিসেলেস্তেদের কোচ লিওনেল স্কালোনিকে।

তবে খুশির খবর হলো অনুশীলনে ফিরেছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালেও তিনি খেলতে পারবেন কিনা সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে দলের প্রধান তারকাকে পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন আলবিসেলেস্তে কোচ লিওনেল স্কালোনি। একইসঙ্গে মেসি পুরো ম্যাচে খেলতে না পারলে, তিনি বিকল্প ভাবনাও ঠিক করে রেখেছেন। গ্রুপপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে চিলির বিপক্ষে খেলার সময় চোট পান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে ঊরুর মাংসপেশির সেই চোট বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ভোগাচ্ছিল মেসিকে। নতুন করে সেই অস্বস্তি ফিরে আসায় শেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে তিনি আর্জেন্টিনার একাদশে ছিলেন না।

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, মেসি এখন আগের চেয়ে ভালো বোধ করছেন। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) গত রাতে নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, লিওনেল স্কালোনি মাঠে এসেছেন ও শিষ্যদের অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করছেন। মেসিসহ রদ্রিগো ডি পল, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এমিলিয়ানো মার্তিনেজরা অনুশীলন করেছেন। যেখানে মেসিকে দেখে সাবলীল মনে হয়েছে। অনুশীলনে দেখা গেছে, অল্প গতিতে দৌড়াচ্ছেন এবং বলে লাথি মারছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফুটবলার। সবমিলিয়ে মেসিকে পাওয়ার ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন স্কালোনি। এজন্য বিকল্প হিসেবে তিনি আনহেল ডি মারিয়াকে ভেবে রেখেছেন। টিওয়াইসি বলছে, যদি শুরুর একাদশে মেসিকে রাখার সুযোগ না হয়, তবে প্রয়োজনে তাকে বেঞ্চ থেকে মাঠে নামাবেন। আর মেসি বেঞ্চে থাকলে দলের অধিনায়কত্ব করবেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টিনা দলের কোচিং স্টাফরা নাকি মেসি ও মারিয়াকে একসঙ্গে খেলাতে চান না। তারা এই দুজনকে একে অন্যের বিকল্প হিসেবে খেলাতে চান। এমন ভাবনা সামনে রেখে অনুশীলনে চার মিডফিল্ডারের সঙ্গে ডি মারিয়াকে রেখে পরীক্ষাও চালানো হয়েছে। যদিও ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে এই ফরমেশনেই খেলানো হবে কি না সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না, তবে বিকল্প যাতে ঠিক থাকে সেটাই ভাবনা কোচের।

বিষয়:

সেরাদের সেরা যারা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

২০ দলের ২৯ দিনের লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটল দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারতের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে। আর উত্তেজনাকর মারকাটারি এ সংস্করণের পর্দা নামল ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে। তাই সবশেষে এখন খুঁজে নেওয়া যায় উজ্জ্বল নক্ষত্রদের; যারা মাতিয়ে রেখেছিল ২৯ দিনের এই আয়োজনকে। কারা নাম লেখালেন সেরাদের তালিকায়।

টুর্নামেন্টের সেরা দল ভারত; এটা নিয়ে আর নতুন করে পরিচিত করানোর কিছু নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত সাফল্যে কারা এগিয়ে থাকল? এ প্রশ্নের উত্তর মেলানো যাক এবার। শুরুটা করা যাক টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়কে দিয়েই।

টুর্নামেন্টের সেরা সেই ক্রিকেটারের নামটি জাসপ্রিত বুমরাহ। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ভারতীয় বোলিং লাইনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যখনই আক্রমণে ডাক পড়েছে, দুই হাত উজাড় করে দিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ফাইনালের শেষ দিকের দুই ওভারে মাত্র ৬ রান দেওয়া ছাড়াও ম্যাচে ২টি উইকেটসহ ৮ ম্যাচে তার শিকার ১৫ উইকেট।

এবারের আসরে প্রতিটি উইকেটের জন্য তার খরচ মাত্র ৮.২৬ রান। এক বিশ্বকাপে অন্তত ১০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে সেরা গড় এটি। ২৯.৪ ওভার বোলিং করে ওভারপ্রতি তিনি দেন স্রেফ ৪.১৭ রান। বিশ্বকাপের এক আসরে অন্তত ২০ ওভার করা বোলারদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের কীর্তি।

ফাইনালসহ আসরজুড়ে নজরকাড়া বোলিংয়ে টুর্নামেন্টসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও জেতেন বুমরাহ। ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়টি যে বিরাট কোহলি এটা ইতোমধ্যেই দৃষ্টিগোচর হয়েছে সবারই। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া কোহলি এ দিন জ্বলে উঠলেন অন্ধকারে মশাল হয়ে। আগের ৭ ম্যাচে ৭৫ রান করা কোহলি ফাইনাল ম্যাচেই খেললেন ৭৬ রানের ইনিংস। যেটা ভারতের বিশ্বকাপে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাই ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও উঠেছে তার হাতেই।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটারটির নাম রহমানুল্লাহ গুরবাজ। আফগানিস্তান সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও তাকে টপকে যেতে পারেনি কোনো ব্যাটার। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তিনি ছিলেন আফগানদের ব্যাটিং লাইনের কাণ্ডারি। ৮ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৮১ রান। যার মধ্যে চারটিতে খেলেছেন চল্লিশছোঁয়া ইনিংস।

এ তালিকার অবশ্য সেরা পাঁচ হিসাব করলে বাকি চারটি নাম আসে যথাক্রমে- রোহিত শার্মা (৮ ইনিংসে ২৫৭ রান), ট্রাভিস হেড (৭ ইনিংসে ২৫৫ রান), কুইন্টন ডি কক (৯ ইনিংসে ২৪৩ রান), ইব্রাহিম জাদরান (৮ ইনিংসে ২৩১ রান)।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় অবশ্য একজনকে রাখার সুযোগ নেই। ১৯ উইকেট শিকার করে যৌথভাবে এ তালিকায় আছেন আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি আর ভারতীয় পেসার আর্শদীপ সিং।

সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেওয়া ফারুকি ৮ ইনিংস থেকেই নিয়েছেন ১৭ উইকেট। এ জন্য তিনি ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ৬.৩১। আর প্রতি উইকেটের জন্য খরচ করেছেন মাত্র ৯.৪১ রান। অন্যদিকে আর্শদীপের ১৭ উইকেট শিকার করতে লেগেছে ৯টি ইনিংস।

বিষয়:

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রাজসিংহাসন দুই বছরের জন্য ভারতের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

নাটকীয়তার এতটুকু কমতিও ছিল না এ ম্যাচে। একটা ফাইনালে যা হওয়ার দরকার তার সবই হলো। লড়াইয়ের উষ্ণতা, ম্যাচের ভাগ্য বদলের নাটকীয়তা, ব্যাট-বলের লড়াই, স্কিলের ব্যবহার, স্নায়ুযুদ্ধ; সবকিছু শেষে শিরোপা উদ্‌যাপনটা করেছে ভারতই। শেষ ম্যাচের, শেষ শিরোপাটা উঁচিয়ে ধরেছেন রোহিত-কোহলি-জাদেজারা। উন্মাদ উদ্‌যাপনে মেতেছে টিম ইন্ডিয়া। ভারতজুড়ে কোটি দর্শক পুড়ছে ক্রিকেটজ্বরে।

এ উদ্‌যাপনকে ব্যাখ্যা করার শব্দ নেই। মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে রোহিতের নিজের সঙ্গেই নিজের কথা বলা, বিরাট কোহলির স্কোরবোর্ডের সঙ্গে সেলফি নেওয়া, হার্দিক পান্ডিয়ার মাটিতে বসে পড়ে কান্নাভেজা চোখ। আবেগের কত রকম যে প্রকাশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতিগুলোই হয়তো এমন! দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার ফল যে এটা।

অন্যদিকে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সাতবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ হয়নি একবারও। নামের পাশে তাই যোগ হয়েছিল ‘চোকার্স’ শব্দটি। অষ্টম সেমিফাইনালে এসে সেটা ঘুচিয়েছিল প্রোটিয়ারা। নিশ্চিত করেছিল ফাইনালে খেলা। কিন্তু সেই মঞ্চে এসে আবারও প্রমাণ করল এখনো ‘চোকার্স’ শব্দটিকে মুছে ফেলতে পারেনি তারা। ফাইনালে সহজ সমীকরণের ম্যাচও হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে এইডেন মার্করাম, ডি ককদের।

বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে শনিবার প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১৭৬ রান তোলে ভারত। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। বুমরাহ-হার্দিকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে ৭ রানের হারে শেষ হয় প্রোটিয়াদের স্বপ্ন। অন্যদিকে ১৭ বছরের আক্ষেপ শেষে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে ভারত।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই কিছুটা বিপদে পড়েছিল ভারত। প্রথম দুই ওভারেই দুই উইকেট হারায় তারা। এক ওভারেই রোহিত (৯) পান্থকে (০) ফেরায় কেশব মাহারাজ। পাওয়ার-প্লেতেই বিদায় নেন সুরিয়া কুমারও (৩)। দলের এমন অবস্থায় দেয়াল হয়ে দাঁড়ান পুরো টুর্নামেন্টে ব্যর্থ বিরাট কোহলি। তিনি যে এ দিনের জন্যই তুলে রেখেছিলেন ব্যাটটা। পুরো টুর্নামেন্টে ৭৫ রান করা কোহলি খেললেন ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিলেন অক্ষর প্যাটেল (৪৭) আর শিবাম দুবে (২৭)। দুজনই খেললেন দুটি কার্যকরী ইনিংস। এতে ২০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর দাঁড়াল ১৭৬ রানের। যেটা লড়াই করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে একই বিপদে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেন্ড্রিক্স (৪) আর তৃতীয় ওভারে ফিরে যান এইডেন মার্করাম (৪)। শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন দুই ব্যাটার ট্রিস্তান স্টাবস আর কুইন্টন ডি কক। পাওয়ার প্লের আগের ওভার থেকেই প্রবলভাবে ম্যাচে ফেরার তাগাদা দেন তারা। দুজন মিলে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। অক্ষর প্যাটেলের বলে স্টাবস (৩১) ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তবুও ম্যাচে টিকে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর উইকেটে এসে টর্নেডো চালাতে শুরু করেন হেনরি ক্লাসেন। তার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে আর্শদীপের বলে কাটা পড়েন ডি কক (৩৯)।

ডি ককের বিদায়ের রাগটা ক্লাসেন ঝাড়েন দুই স্পিনার কুলদপ যাদব আর অক্ষর প্যাটেলের ওিপর। প্রতি ওভারেই তাদের চার-ছক্কায় বাউন্ডারি ছাড়া করে সহজ সমীকরণে নিয়ে আসেন ম্যাচ। ২৩ বলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেন অর্ধশতক। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন জয়ের সুবাস পাচ্ছে তীব্রভাবেই। ক্লাসেন আর ডেভিড মিলার তখন ক্রিজে। বাইরে এতগুলো উইকেট। এই ম্যাচ তো কার্যত শেষ! কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচ তো শেষের আগে শেষ নয়!

১৬ ওভার শেষে হাঁটুর চোট পেয়ে মাঠেই চিকিৎসা নিলেন রিশাভ পান্ত। একটু থমকে থাকল খেলা। ক্লাসেনের মনোযোগেও হয়তো চিড় ধরল। খেলা শুরু হতেই প্রথম ডেলিভারিতে অনেক বাইরের বল তাড়া করে আউট ক্লাসেন (২৭ বলে ৫২)।

পরের ওভারে বুমরাহ এসে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করলেন। ওভারে রান দিলেন স্রেফ দুটি। ম্যাচ একটু একটু করে দূরে সরতে থাকল দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৯তম ওভারে আর্শদীপ দিলেন কেবল চার রান।

শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়াল ১৬ রানের। পান্ডিয়ার প্রথম বলটি উড়িয়ে মারলেন মিলার। চাপের মধ্যে সীমানায় অসাধারণ ক্যাচ নিলেন সুরিয়াকুমার। এরপর ভারতের জয় কেবল আনুষ্ঠানিকতা।

গৌরবময় ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন কোহলি। ম্যাচসেরা হয়ে তিনি এই সংস্করণ থেকে বিদায়ের ঘোষণাও দিলেন হাসিমুখে।

আর রোহিত শর্মা? ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী, কয়েক মাস আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের পরাজিত নায়ক, এবার আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়কত্ব থেকেও সরানো হয়েছে যাকে, তিনিই এখন টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক।

গত এক বছরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে যাওয়া দল, অনেক বছর ধরে একটি আইসিসি ট্রফির তেষ্টায় ছটফট করতে থাকা ভারত, অবশেষে পেল একটি বৈশ্বিক শিরোপার স্বপ্নময় পরশ।

বিষয়:

১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান, ভারতে এলো বিশ্বকাপ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

১৩ বছর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নুয়ান কুলাসেকেরার বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সে ছক্কাই তাদের এনে দেয় বিশ্বকাপ। একটা বিশ্বকাপের জন্য এরপর থেকে হন্যে হয়ে ঘুরেছে টিম ইন্ডিয়া। সাতমাস আগেই নিজেদের মাটিতে হেরেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল।

তবে এবার সে আক্ষেপ মিটল নিজ দেশ থেকে বহুদূরের মাটিতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোজের কড়া রোদের নিচে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ১৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যান ইন ব্লুরা। সেটা দিয়েই শিরোপার পথে নেমেছিল ধোনির ভারত। লম্বা অপেক্ষা শেষে আবারও সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই শিরোপাখরা ঘুচালো দলটা।

বার্বাডোজে উৎসবের মঞ্চ আগেই সাজিয়ে রেখেছিল ভারত। ১৭৬ রানের শক্ত সংগ্রহ তারা দাঁড় করায় ফাইনালের মঞ্চে। বল হাতে শুরুটাও ছিল চ্যাম্পিয়নদের মতোই। মাঝে কুইন্টন ডি কক আর হেনরিখ ক্লাসেন দাঁড়ালেন দেয়াল হয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার জয়টাও ছিল সময়ের ব্যাপার।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে যে লেগে আছে চোকার্স তকমা। ২৪ বলে ২৬ রানের সমীকরণটাই আর মেলানো হয়নি তাদের। আর্শদ্বীপ সিং আর জাসপ্রিত বুমরাহ একের পর এক ডট ডেলিভারিতে চাপ বাড়িয়েছেন। সঙ্গী ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্নায়ুচাপের লড়াইয়ে জয় হলো ভারতেরই।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়ার ওই ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি লাইনে মিলারকে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরালেন সুর্যকুমার যাদব। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ শেষ হয়ে গেল সেখানেই। শেষ ওভারে এলো ৮ রান। ব্যর্থ হলো হেনরিখ ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত সেই ইনিংস। ৭ রানের জয়ে বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন ভারত।


ধ্রুপদী ক্রিকেট খেলা অনেক দল ভালো করতে পারেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরীক্ষিত দল তারা। শুধু কথায় নয়, নিজেদের সেই শক্তির জানানও দিয়েছে দলগুলো। উল্লেখিত দলগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ড বাদে প্রত্যেকেই বিশ্ব মঞ্চে উঁচিয়ে ধরেছে শিরোপা। নামের পাশে একাধিক শিরোপাও আছে কোনো কোনো দলের। কিন্তু ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে শেষ হওয়া বিশ্বকাপের এবারের আসরে নিজেদের সেই রূপটা তারা দেখাতে পারেনি। উল্টো বাজে পারফরম্যান্সে জন্ম দিয়েছে সমালোচনার।

টি-টোয়েন্টি মহাযজ্ঞের এবারের আসরের সেমিফাইনাল নিয়ে যতজন ভবিষ্যৎদ্বাণী করেছিলেন প্রায় সবার দলেই নাম ছিল ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের। কিন্তু ইংল্যান্ড বাদে কেউই সেটা পূরণ করতে পারেনি। সেমিফাইনালে গেলেও সেখানে লড়াইটা করতে পারেনি জস বাটলাররা।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথমবার আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলতে আসা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হেরে যায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের সঙ্গে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যায় বাবর আজমের দল। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে একরকম বাদই পড়ে যায় তারা। শেষ ম্যাচে কানাডাকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখলেও যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় বিদায় নিশ্চিত হয় তাদের।

বিশ্বকাপের আগে সম্ভাব্য সবকিছুই করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেসবের কেনো সুফলই দেখা গেল না ম্যাচে। মাত্র ক’দিন আগেও টি-টোয়েন্টির শীর্ষে থাকা দলটি নিজেদের সেই চেনা ক্রিকেটটা খেলতেই পারল না।

এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দেওয়া দলটির নাম নিউজিল্যান্ড। সময়ের সেরা দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে তারাও বাদ পড়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই। আফগানদের বিপক্ষে বড় এরপর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেও সেই ধারা অব্যাহত রাখায় শুরুতেই শেষ হয় কেন উইলিয়ামসনদের বিশ্বকাপ।

এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম দুই শক্তিশালী দল ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক হওয়ায় ক্যারিবীয়দের শিরোপা জয়ের সম্ভনা ছিল প্রবল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা ছিল নিজেদের সেরা ছন্দে। দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল দুই দলই। গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা। অপরাজিত থেকেই জায়গা করে নিয়েছিল সুপার এইটে। কিন্তু সেমিফাইনালের লড়াইয়ে নেমে তারা গ্রুপ পর্বের সেই ফর্মকে বেমালুম ভুলে যায়।

সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে পরাজিত করে, শুরু করে। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচেই তারা হেরে যায়। শেষ দুই ম্যাচেই অচেনা অস্ট্রেলিয়ার দেখা মেলে। তারা পারফর্ম করতেই ভুলে যায়। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষের ওই হার তাদের বিশ্বকাপ যাত্রাই থামিয়ে দেয়।

অন্যদিকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি। উল্টো প্রতিপক্ষের ফাঁদেই ফেঁসে গেছে তারা। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি তারা। পরের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে হারালেও শেষ ম্যাচে হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সমাপ্তি ঘটে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিংটা ছন্নছাড়া ছিল ক্যারিবীয়দের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছিল উল্টোটা; নিজেদের শক্তির জায়গা ব্যাটিংটাই করতে পারেনি তারা।

অন্যদিকে গ্রুপ পর্বেই বিদায়ের শঙ্কা জাগালেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেখানে ভারতের সঙ্গে লড়াইটাও করতে পারল না তারা। প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করে ইংলিশরা। পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলে বিদায়ের শঙ্কা জাগে। তবে ওমান আর নামিবিয়াকে হারিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় তারা। সেখানে এক ম্যাচ হারলেও সবার আগেই জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ন্যূনতম লড়াইটা করতে পারেনি জস বাটলাররা।

নিজেদের সেই ট্র্যাডিশনাল ক্রিকেটটাই বিশ্বমঞ্চে খেলতে পারেনি এই দলগুলো। ফলাফল হিসেবে আগেই বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে আসর থেকে।


রেকর্ডের ভান্ডার অনেক বেশি প্রসারিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

২০ দলের ২৯ দিনের লড়াই শেষ হলো ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার লড়াই দিয়ে। ক্রিকেটের বাজার বাড়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে এবার বিশ্বকাপের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ক্রিকেট অবকাঠামো এখনো সম্পূর্ণ না হওয়া দেশটি তড়িঘড়ি করে বেছে নিয়েছিল ভিন্ন উপায়। অন্যদেশ থেকে বানিয়ে এনেছিল উইকেট। কিন্তু সেই উইকেট নিয়ে এরপর যেটা হয়েছে সেটা এর আগের আটটি আসরের কোনোটিতেই হয়নি। উইকেট নিয়ে এবারের আসরেই সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে। সেসব একপাশে সরিয়ে রাখলে রেকর্ড বইটিও কম সমৃদ্ধ হয়নি!

শুরুটা বোলারদের দিয়েই করা যাক। বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্বে টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। এতে অনন্য এক কীর্তি গড়েছেন তিনি; নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। টানা দুই ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক নেই আর কারও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই এমন কীর্তি সর্বশেষ হয়েছিল ২৫ বছর আগে। তখন তো টি-টোয়েন্টি ছিলই না। এমন কীর্তি গড়া হয়নি ওয়ানডেতেও। পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। অসি পেসার কামিন্স প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরপর আফগানিস্তান ম্যাচে করেন দ্বিতীয়টি।

একটি হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংলিশ পেসার ক্রিস জর্ডানও। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট নিয়েছেন ক্রিস জর্ডান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আট আসরে হ্যাটট্রিক হয়েছে মোটে ৬টি। আর ২০২৪ আসরে সেমিফাইনালের আগেই হ্যাটট্রিক হয়েছে তিনটি। জর্ডানের রেকর্ড আছে আরেকটি; টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ওভারে চার উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় বোলার তিনি। প্রথম বোলার আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্ফার, ২০২১ আসরে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।

বাংলাদেশি পেসার তানজিম হাসান সাকিবও গড়েন একটি রেকর্ড। নেপালের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ড গড়েন তিনি। বাংলাদেশি এই পেসার চার ওভারে সাত রান দিয়ে চার উইকেট পান। সেসব ছাপিয়ে মুখ্য হয়ে ওঠে সর্বোচ্চ ডটবলের রেকর্ড। সেই ইনিংসে সাকিব ডট দেন ২১টি, বিশ্বকাপে যা ছিল সর্বোচ্চ।

এক দিন পরই অবশ্য সাকিবের সেই রেকর্ডটি ভাঙেন লুকি ফার্গুসন। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে চার ওভার বল করে সবকটিই মেডেন নেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে কোনো বোলার ইনিংসের ২৪ বলের ২৪টিই ডট নিতে পারেননি। আর এই মেডেন ওভারগুলোতে ফার্গুসন তুলে নেন তিন তিনটি উইকেট।

আফগান বোলার ফজল হক ফারুকি গড়লেন আরেকটি রেকর্ড। প্রথমবার সেমিফাইনাল খেলা এই পেসার এবারের আসরে শিকার করেন ১৭টি উইকেট। এটাই তাকে নিয়ে যায় রেকর্ডের পাতায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল শ্রীলংকার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার। ২০২১ আসরে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

তবে ব্যাটারদের ব্যাটেও রানের কমতি তেমন একটা ছিল না। ক্যারিবীয় অঞ্চলে ব্যাটাররা চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি দেখিয়েছে। সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ফিরে এসেছেন ক্যারিবীয় তারকা নিকোলাস পুরান। ৯৮ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন তিনি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটার অ্যারন জোন্স পড়েছিলেন মধুর সমস্যায়, সেটা না হলে হয়তো তিনি সেঞ্চুরিটা করেই ফেলতেন। তার সেঞ্চুরি করার আগেই দল জিতে গিয়েছিল। ৯৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

সুপার এইটের ম্যাচে রোহিত শর্মা সেঞ্চুরির আশা দেখালেও পূরণ করতে পারেননি তিনিও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি কাটা পড়েছিলেন ৯২ রানে।


ট্রফি তুমি কার ভারত না দক্ষিণ আফ্রিকার

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

২৯ দিনের জমজমাট ক্রিকেট মহারণ এবার শেষ হওয়ার পালা। সব প্রশ্ন আর সব সমীকরণের সমাপ্তিও ঘটবে। মিলে যাবে কোনো একটা দলের সব চাওয়া-পাওয়া। মাঠের একপাশে যখন আনন্দের মহোৎসবে উদ্বেলিত হবে একদল, ঠিক সেই সময়েই আরেক পাশে একরাশ বিষাদে পুড়বে আরেক দল। বিশ্বজয়ের আনন্দ আর হারানোর বেদনা দিয়েই শেষ হবে দিনটি। তার আগে অবশ্য মাঠের ক্রিকেটে হবে ব্লকবাস্টার লড়াই। দুই অপরাজেয়-অপ্রতিরোধ্য শক্তির লড়াই। যেই লড়াইয়ের উষ্ণতা ছুঁয়ে যাবে গ্যালারিতে থাকা হাজারো দর্শক থেকে শুরু করে টেলিভিশন সেটের সামনে থাকা কোটি দর্শককে। ২২ গজে হবে শ্বাসরুদ্ধকর থ্রিলিং ফাইট। ক্রিকেটের ছোট সংস্করণের মহাযজ্ঞের ফাইনাল লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হবে ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকা। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে দুই মহাদেশের লড়াই। বাংলাদেশ বেতারট্র খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

বিশ্বকাপের দুই হট ফেভারিট ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকা। আসরের অপরাজিত দুই দলও তারাই। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে সুপার এইট, সেমিফাইনাল; কেউ থামাতে পারেনি তাদের জয়রথ। নিজেদের সব প্রতিপক্ষদের হারের গ্লানি দিয়ে ফাইনালে তারা। তাই এটা বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়, ফাইনালে লড়াইটা হবে সমানে সমান।

মুখোমুখি পরিসংখ্যান অবশ্য এগিয়ে রাখছে ভারতকেই। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২৬ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৪টি ম্যাচে আর দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ১১ ম্যাচে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। বিশ্বকাপের মুখোমুখি পরিসংখ্যানও কথা বলছে ভারতের পক্ষেই। ছয়বারের দেখায় ভারতের জয় চারটিতে। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় দুই ম্যাচে। তবে শেষ স্মৃতিটা সুখকর দক্ষিণ আফ্রিকার; বিশ্বকাপের গত আসরে ভারতকে হারিয়েছিল তারা।

ক্রিকেটে পরিসংখ্যানের চেয়ে সাম্প্রতিক ফর্মটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিচারে এগিয়ে কারা? এমন প্রশ্নের সোজাসুজি উত্তর মেলানো বেশ কঠিন। তবে এবারের বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান বলছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটি স্পিনারদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এবং সেটার ফায়দা লুটতে সিদ্ধহস্ত ভারতীয় স্পিনাররা। সেমিফাইনালেও যেটার দেখা মিলেছে।

কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল, রবীন্দ্র জাদেজারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে যেকোনো ‍মুহূর্তে। তাদের সেই সক্ষমতা তারা ইতোমধ্যেই দেখিয়েছে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ডেথ বোলারও ভারতীয় জাসপ্রিত বুমরাহ। ভ্যারিয়েশন দিয়ে ব্যাটারদের বোকা বানাতে বেশ পটু হার্দিক পান্ডিয়া। সবমিলিয়ে ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে বিশ্বসেরা বলাই যায়।

এ ক্ষেত্রে খুব বেশি পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। প্রোটিয়া দুই স্পিনার তাবরাইজ শামস, কেশব মাহারাজরাও সময়ের অন্যতম সেরা স্পিনার। অধিনায়ক মার্করামও হাতটা ঘুরাতে পারেন বেশ। কাদিসো রাবাদা, আনরিখ নরকিয়া, মার্কো জানসেনরা পেস আক্রমণে ভয়ংকর। মজার বিষয় হলো দুই দলেরই ফাইনালের সমীকরণ মেলানোর পেছনে বড় ভূমিকা ছিল বোলারদের। তবে কিছুটা হয়তো এগিয়ে থাকবে ভারতই।

ব্যাটিংয়ে সলিড দক্ষিণ আফ্রিকা। কুইন্টন ডি কক, রিজা হেন্ড্রিক্স, এইডেন মার্করাম, হেনরি ক্লাসেন, ট্রিস্তান স্টাবস, ডেভিড মিলাররা আছেন সময়ের সেরা ছন্দে। প্রত্যেক পারফর্ম করেছেন এবারের আসরে। নিজেদের দিনে দলকে টেনে তুলেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা চিন্তার ভাঁজ ভারতের কপালে। পুরো আসরজুড়েই রান খরায় ভুগছে দলের সেরা খেলোয়াড় বিরাট কোহলি। সেই পথেই আছেন আরেক ওপেনার ঋষভ পান্তও। অলরাউন্ডার শিবাম দুবেও শেষ কয়েকটি ম্যাচে ছন্দ হারিয়েছেন। যেটা কিছুট হলেও এগিয়ে রাখবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

অবশ্য বাকিরা আছেন বেশ ভালো ছন্দে। রোহিত শর্মা ফিরেছেন আপন ছন্দে। শেষ দুই ম্যাচেই তিনি ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছেন। সুরিয়া কুমার, হার্দিক পান্ডিয়ারাও রোহিতের ধারা অব্যাহত রাখছেন।

সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ভারতের পরিসংখ্যান ভালো নয়। ঘরের মাঠে সবগুলো ম্যাচ জিতে ফাইনালে ভারত হেরে যায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে। এবার অবশ্য তেমন কিছু ঘটতে দিতে চায় না ভারত। অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের খুব শান্ত থাকতে হবে। কারণ, মাথা ঠাণ্ডা থাকলে ও চাপ না নিলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ফাইনালে জিততে হলে ভালো ক্রিকেট খেলা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। আমরা এবার আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছি। ফাইনালে একই পরিকল্পনায় খেলতে চাই।’

ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট সাতবার সেমিফাইনাল খেললেও ফাইনালে যেতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। অষ্টম সেমিফাইনালে এসে সেই ধারা কাটিয়ে এবার ফাইনালে উঠেছে তারা। ফাইনাল নিয়ে দলের অধিনায়ক আইডেন মার্করাম বলেন, ‘ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়া বিশাল অর্জন। আমরা যখন বিশ্বকাপের জন্য আসি, শুধু ফাইনালে খেলতে আসিনি। আমরা অন্য সব দলের মতো ফাইনাল জিততে এসেছি।’

বিশ্বকাপের ফাইনালে যেতে না পারলেও মিনি বিশ্বকাপে ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে সব ছাড়িয়ে ফাইনালেও বগড়া দিতে পারে বৃষ্টি। অ্যাকু ওয়েদার অনুযায়ী, শনিবার খেলার সময় আকাশ মেঘলা থাকবে। ম্যাচের দিন বজ্রবিদ্যুৎসহ ৪৭ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বার্বাডোজে খেলা শুরু স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। সেই সময় পূর্ব দিক থেকে ৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে হাওয়া বইবে। তিন মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। আর্দ্রতা থাকবে ৭৮ শতাংশ। তাপমাত্রা থাকবে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


পাত্তাই পেল না ভারতের কাছে ইংল্যান্ড

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল; সেটাকেই ব্যবহার করল ভারত। ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের ওপর রানের পাহাড়ের চাপ দিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সুরিয়া কুমার, হার্দিক পান্ডিয়ারা। বোলিংয়ে ইংলিশদের স্বপ্নে কাঁচি চালালেন দুই স্পিনার অক্ষর প্যাটেল আর কুলদীপ জাদব। ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার উইকেট পড়তে না পারলেও ভারতীয় স্পিনাররা উইকেটের সবটুকু ফায়দা নিয়েছে। দুইজন মিলে শিকার করেছে ছয় উইকেট। তাতে লড়াইহীন এক হার দিয়েই আসর থেকে বিদায় নিয়েছে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে এক দশক পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে ভারত। শিরোপা জয় থেকে তারা আর মাত্র এক ধাপ দূরে।

দুই বছর আগে বিশ্বকাপের অষ্টম আসরে ভারতকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। সে ম্যাচে ভারতকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছিল বাটলাররা। ভারতের করা ১৬৮ রান ইংল্যান্ড পেরিয়েছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে মাত্র ১৬ ওভারেই। আর গতকাল ইংল্যান্ডকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। প্রতিশোধ নিয়ে দুই বছর আগের সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল রোহিত শর্মারা।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বৃষ্টির লুকোচুরি খেলার মাঝেই রানের পাহাড় গড়ে তোলে ভারত। রোহিত শর্মার হাফসেঞ্চুরি, ‍সুরিয়া কুমারের পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই ইনিংস, হার্দিক পান্ডিয়া আর রবীন্দ্র জাদেজার ছোট্ট ক্যামিওতে ১৭১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় ভারত। সেটাকেই পাহাড় মনে হয় ইংল্যান্ডের কাছে। চাপা পড়ে পৃষ্ঠ হন বাটলার, বেয়ারস্টোরা। তাদের ব্যর্থতায় ১৬ ওভারে ১০৩ রানেই থামে ইংলিশদের ইনিংস। ৬৮ রানের বড় জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত।

১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মন্দ করেনি ইংল্যান্ড। হাত খুলে খেলতে থাকেন অধিনায়ক বাটলার। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারলেন না তিনি। তাকে ফিরিয়ে আধিপত্যের শুরুটা করলেন ভারতীয় স্পিনাররা। ইংল্যান্ডের টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ইংলিশদের কোমর ভেঙে দিলেন অক্ষর প্যাটেল। তার সঙ্গে যোগ দিল জাসপ্রিত বুমরাহ। পাওয়ার-প্লে শেষে যোগ দিলেন কুলদীপ জাদবও। এই ত্রয়ীর আক্রমণে আর দিশা খুঁজে পেল না ইংলিশরা।

বাটলারের পরে ফিল সল্ট, মঈন আলি, স্যাম কারান ও জনি বেয়ারস্টো দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। তাদের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাতে দলীয় অর্ধশতকের আগেই ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এরপর হ্যারি ব্রুক ও লিয়াম লিভিংস্টোন জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে ২৫ রান করে ব্রুক ফিরলে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় ইংলিশরা। একমাত্র ভরসা হয়ে থাকা লিভিংস্টোন রান আউটে কাটা পড়লে আর ফেরা হয়নি ইংলিশদের।

শেষদিকে জোফরা আর্চারের ১৫ বলে ২১ রানের ইনিংস কেবলই হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১০৩ রানে অলআউট হয়েছে তারা। তাতে ৬৮ রানের জয় পেয়েছে ভারত।

ভারতীয় দুই স্পিনার অক্ষর প্যাটেল ও কুলদীপ জাদবের শিকার ৩টি করে উইকেট। দুটি উইকেট শিকার করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। বাকি দুই উইকেট কাটা পড়েছে রানআউটে। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন অক্ষর।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিরাট কোহলিকে হারায় ভারত। তিনে নেমে কোহলির পথে হেঁটেছেন ঋষভ পান্তও। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও ভারতকে বিপদে পড়তে দেননি রোহিত। সূর্যকুমারকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন তিনি। ৩৬ বলে টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পান রোহিত (৫৭)। অর্ধশতক করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ফিফটি করার সুযোগ ছিল সূর্যকুমারের (৪৭) সামনেও। কিন্তু অর্ধশতক করতে পারেননি তিনি।

এরপর ভারতকে বড় ধাক্কাটা দেন ক্রিস জর্ডান। পরপর দুই বলে হার্দিক পান্ডিয়া ও শিবাম দুবেকে প্যাভিলিয়নে ফেরান ইংলিশ এ পেসার। শেষদিকে ৯ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা।

ইংল্যান্ডের হয়ে ৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন ক্রিস জর্ডান।


আফগানিস্তানের যেভাবে উত্থান সেভাবে পতন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বিশ্বকাপে আনপ্রেডিক্টেবল সৌন্দর্য দেখা বেশ আনন্দের। বিশ্ব আসরে তেমনই ব্যতিক্রম কিছু ঘটনার জন্ম দেয় দলগুলো; নিজেদেরকে নতুনভাবে পরিচিত করে তোলে বিশ্ব দরবারে। ক্রিকেটের ছোট সংস্করণের এবারের মহাযজ্ঞে সেই দলটির নাম আফগানিস্তান। আসরের শুরু থেকেই রূপকথার গল্প লিখতে শুরু করে আফগানরা। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের নতুন শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে। কিন্তু যেভাবে তাদের উত্থান, পতনটাও যেন সেভাবেই ঘটল।

এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সাফল্যের পেছনে ছিল চারটি রহস্য। সেগুলোতে ভর করেই তারা প্রথমবার সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে সেমিফাইনালের মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণটাও করেছে সেই একই কারণে। ফলে শেষ হয়েছে তাদের এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা।

এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তান সেমিফাইনালসহ মোট ৮টি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে জয়ের গল্প লিখেছে ৫টিতে আর হারের ব্যর্থ অধ্যায় ৩টি ম্যাচে। আর এই ম্যাচগুলোতে চোখ বুলালেই মিলবে আফগানিস্তানের সাফল্য এবং ব্যর্থতার রহস্য।

আফগানদের সাফল্যের প্রথম রহস্য ছিল তাদের টপঅর্ডার ব্যাটারদের দুর্দান্ত ফর্ম। আরেকটু স্পষ্ট করলে দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান। আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনের স্তম্ভও তারাই। এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ৮ ইনিংসে ১২৪ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ২৮১ রান। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান সমান ইনিংস থেকে ১০৭ স্ট্রাইকরেটে ২৩১ রান করে আছেন তিন নম্বরে।

আফগানিস্তান যে পাঁচটি ম্যাচে জয় পেয়েছে সবগুলোতেই রান পেয়েছে এই দুই ব্যাটার। কিন্তু যে তিনটি ম্যাচ হেরেছে সেই ম্যাচগুলোতে তাদের ব্যাট থেকেও রান আসেনি। তারা আউট হওয়ার পরে বাকি ব্যাটাররাও দায়িত্বটা নিতে পারেনি। ফলে হারের গ্লানি পেয়েছে আফগানিস্তান।

দ্বিতীয় রহস্য তাদের বোলিং আক্রমণ। এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণ ছিল আফগানিস্তানের। আফগানদের স্পিনের রাজা বলা হলেও এবারের বিশ্বকাপে তারা রাজত্ব করেছে পেস বোলিং দিয়ে। আর সেটার নেতৃত্ব দিয়েছেন ফজলজক ফারুকি। বিশ্বকাপের সেরা পাঁচ উইকেট শিকার বোলারের মধ্যে তিনজনই আফগানিস্তানের। ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সবার শীর্ষে ফজলহক ফারুকি। ১৪ উইকেট নিয়ে তিন নম্বরে রশিদ খান আর ১৩ উইকেট নিয়ে পাঁচ নম্বরে নাভিন-উল-হক।

দুই ওপেনার যখন ন্যূনতম একটা ফাইটিং স্কোর এনে দিয়েছে তখন সেটাকে বেশ ভালোভাবেই ডিফেন্ড করেছে বোলাররা। প্রতিপক্ষের ওপর আগ্রাসী বোলিংয়ে জয়ের উপলক্ষ এনে দিয়েছে।

তৃতীয় রহস্য ছিল কন্ডিশন। আফগানিস্তান তাদের সবগুলো ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। যেখানে কন্ডিশন বরাবরই স্পিনারদের জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। আর আফগান বোলাররা সেটাকে কাজে লাগিয়েছে বেশ ভালোভাবেই। রশিদ খান, নুর আহমেদ, মোহাম্মদ নবিরা উইকেটের পুরো ফায়দা নিয়েছে। যেটা বড় ভূমিকা রেখেছে তাদের জয়ের পেছনে।

শুরুতে যেটা বলেছিলাম, ‘যেভাবে উত্থান, সেভাবেই পতন’। সেমিফাইনাল দেখলেই সেটা স্পষ্ট হবে। দুই আফগান ওপেনার ফিরে গেছে পাওয়ার-প্লের মধ্যেই এবং অন্যান্য ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও দায়িত্ব নিতে পারেননি বাকি ব্যাটাররা। ফলে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে আফগানিস্তান। যেটা শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫৬ রানেই থামিয়েছে তাদের ইনিংসকে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে আসলে এই রান দিয়ে ফাইট করা সম্ভব নয় এবং হয়েছেও সেটাই; হেসেখেলেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।


banner close