সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

বিরাট-রাহুলের ব্যাটিং নৈপুণ্যে বড় জয় ভারতের

বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল ১৯৬ রানের জুটি গড়ে ভারতকে জয়ের পথ দেখান। ছবি: সংগৃহীত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৮ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:৫৯

চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে আয়োজক ভারত। রোববার পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে তারা। শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল।

চেন্নাইয়ে রোববার ভারতের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে মাত্র ১৯৯ রানে সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪১.২ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে রোহিত শর্মার দল।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। মাত্র ২ রানেই ৩ উইকেট হারায় তারা। প্রথম ওভারেই ওপেনার ঈশান কিষাণকে সাজঘরে ফেরান মিচেল স্টার্ক। রানের খাতা খুলতেই পারেননি এই ওপেনার। পরের ওভারে আরও দুই উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। শূন্য রানে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও টপ অর্ডার ব্যাটার শ্রেয়াস আইয়ারকে ফেরান জস হ্যাজলউড।

এই ধাক্কা সামল দেন ওয়ানডাউনে নামা বিরাট কোহলি ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার লোকেশ রাহুল। তারা দুজন মিলে গড়েন ১৯৬ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ৮৫ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে হ্যাজলউডের বলে সাজঘরে ফেরেন কোহলি। তবে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রাহুল। ১১৫ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। আর হার্দিক পান্ডিয়া অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১১ রানে।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হোঁচট খায় অজিরাও। কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ওপেনার মিচেল মার্শ। এই ধাক্কা সামাল দেন আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তিনে নামা স্টিভেন স্মিথ। দুজনে যোগ করেন ৬৯ রান। ফিফটির খুব কাছে গিয়েও ফিফটিটা না করেই সাজঘরে ফিরতে হয় ওয়ার্নারকে। দলীয় ৭৪ রানের মাথায় ৫২ বলে ৪১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি স্মিথ। ফিফটির খুব কাছে গিয়ে আউট হন ৭১ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে।

স্মিথের আউটের পর দাঁড়াতে পারেননি আর কোন অজি ব্যাটার। ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারান তারা। ভালো শুরু পাওয়া মারনাস লাবুশেনের ইনিংস থামে অল্পতেই। ৪১ বলে ২৭ রান করেন তিনি। লাবুশেন ফেরার একই ওভারে অ্যালেক্স ক্যারিকেও শূন্য রানে ফেরান জাদেজা।

মারমুখী ব্যাটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। দলের ১৪০ রানের মাথায় ২৫ বলে ১৫ রান করে আউট হন তিনি। পরের ওভারেই আউট হন ক্যামেরন গ্রিন। ২০ বল খেলে ৮ রান করেন তিনি। এরপর ধুঁকতে ধুঁকতে এগিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।

শেষ দিকে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ২৪ বলে ১৫ রানে ও মিচেল স্টার্ক ৩৫ বলে ২৮ রানে আউট হলে ৪৯.৩ ওভারের ১৯৯ রান তুলে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন রবীন্দ্র জাদেজা। ২ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব এবং জাসপ্রীত বুমরাহ। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট তোলেন মোহাম্মদ সিরাজ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং হার্দিক পান্ডিয়া।


জার্মানদের ধ্বংস্তূপরে মধ্যে ফেলে দিয়ে স্পেন সেমিতে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

লামিনে ইয়ামালের দারুণ ক্রস থেকে স্পেনকে লিড এনে দিল ওলমো। সেই খুশিতে বোধহয় কিছুটা আত্মহারা হয়ে ম্যাচে নিজেদের খুঁজে ফিরতে থাকল। বিপরীতে দারুণ সব আক্রমণ সাজিয়েও গোলের দেখা পাচ্ছিল না জার্মানি। শেষ মুহূর্তে গোল করে ম্যাচ জমিয়ে তুলল জার্মানি। কিন্তু তাদের কপাল পুড়ল সেই শেষ সময়ে গিয়েই। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের শেষ মুহূর্তে গোল করে স্বাগতিক গ্যালারিকে স্তব্ধ করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে স্পেন।

স্টুটগার্টে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে স্পেন। দানি ওলমো স্প্যানিশদের এগিয়ে নেওয়ার পর ম্যাচের সমতা ফেরায় ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে স্পেনের হয়ে গোল করেন মেরিনো।

জার্মান তারকা টনি ক্রুস আগেই জানিয়েছিল এবারের ইউরোই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। আর এ ম্যাচ শুরুর আগে স্পেনের খেলোয়াররা বলেছিল তাহলে এটাই হবে টনি ক্রুসের শেষ ম্যাচ। সে কথা রেখেছেন স্প্যানিশ তরুণরা। ঘরের মাটিতে জার্মানদের হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে গেল তারা।

পুরো ম্যাচে ৪৮ শতাংশ সময় পজেশন রেখে গোলের জন্য মোট ১৮টি শট নেয় স্পেন, যার ৬টি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমার্ধে গোলের জন্য মাত্র তিনটি শট নেওয়া জার্মানি বাকি সময়ে শট নেয় আরও ২০টি, লক্ষ্যে থাকে সব মিলিয়ে ৫টি।

আগের কয়েক ম্যাচের ধারাবাহিকতায় জার্মানির বিপক্ষেও শুরুতে ছড়ি ঘোরায় স্পেন। তবে ছেড়ে কথা বলেনি জার্মানিও। এরপর চড়াও হয়েছে তারাও। কিন্তু গোল ছিল সোনার হরিণের মতো।

এর মাঝেই অবশ্য অষ্টম মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় স্পেন। জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের ট্যাকলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মিডফিল্ডার পেদ্রি। তার বদলি নামেন দানি ওলমো। ইউরোর ইতিহাসে দ্রুততম বদলির ঘটনা এটিই।

এরপর ৫১তম মিনিটে অবশেষে ম্যাচের ডেড ভাঙে। বক্সে ঢুকে দারুণ পাস দেন ইয়ামাল, ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন দানি ওলমো। আসরে তার দ্বিতীয় গোল এটি। ইউরোর ইতিহাসে প্রথম টিনএজার হিসেবে এক আসরে তিনটি অ্যাসিস্ট করলেন ১৬ বছর বয়সি ইয়ামাল।

এরপর মুহুর্মুহু আক্রমণে সাজিয়েও গোলের দেখা পাচ্ছিল না জার্মানরা। নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে সমতার স্বস্তি ফেরে স্বাগতিক শিবিরে। ফ্লোরিয়ান ভিরৎজের শট পোস্টে লেগে জালে জড়ায়।

ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়াবে বলে মনে হচ্ছিল যখন, ঠিক তখনই জার্মানির জালে বল পাঠান মেরিনো। ওলমোর ক্রসে বক্সে ফাঁকায় হেডে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। একটু পরই বাজে শেষ বাঁশি। উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে স্পেন। জার্মান শিবিরে তখন শুধুই একরাশ হতাশা। ঘরের মাঠের আসরে শেষ আট থেকে বিদায় নেওয়ার বিষাদ সঙ্গী হলো তাদের।


এমবাপ্পেরা সেমিফাইনালে, হতাশা-নিরাশা গ্রাস করল রোনালদোদের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, একই পথে হাঁটলেন কিলিয়ান এমবাপ্পেও। দলের নায়ক হতে পারলেন না কেউই। উল্টো বড় মঞ্চের বাড়তি উত্তেজনা, সঙ্গে নিজেদের সেরারূপে মেলে ধরার চাপ- সবকিছুর প্রভাবই পড়ল তাদের ওপর। নির্ধারিত সময়ে দুই দলের খেলাই পারফরম্যান্সই থাকল কাছাকাছি। সেটা দর্শক হয়তো দর্শকদের আহামরি বিনোদন দিতে পারল না।

৯০ মিনিটে গোলের মুখ চিনাতে পারল না পর্তুগাল কিংবা ফ্রান্স কেউই। তাই খেলা গড়াল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও হলো না সমাধান; ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হলো টাইব্রেকারে। সেখানে এদিন আর নায়ক হতে পারলেন না দিয়োগো কস্তা। বিপরীতে পোস্টে মেরে বসলেন তার সতীর্থ জোয়াও ফেলিক্স। ওই ব্যবধান ধরে রেখে, পাঁচ শটের পাঁচটিই জালে জড়িয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠল ফ্রান্স।

হামবুর্গে গতকাল রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য সমতায় শেষ হয়। পরে টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ফরাসিরা।

প্রথম ঘণ্টার সাদামাটা ফুটবলের পর, অল্প সময়ের জন্য হলেও খেলায় প্রাণ ফেরে। ভালো কয়েকটি সুযোগও পায় দুই দল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও নির্ধারক হয়ে উঠতে পারেনি কেউই। শেষে গিয়ে পর্তুগালের জন্য কান্না হয়ে আসে টাইব্রেকারে ফেলিক্সের ওই মিস শট।

এরই সঙ্গে শেষ হয়ে গেল ইউরোয় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর যাত্রা। এবারের আসর দিয়ে ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতাটিতে নিজের পথচলা শেষের কথা আগেই জানান ৩৯ বছর বয়সি পর্তুগিজ মহাতারকা।

অন্যদিকে ফ্রান্স গড়েছে অন্য একটি নজির। সেটাকে ভাগ্যের জোড় কিংবা লজ্জারও বলা যায়। ইউরোর এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ওপেন প্লে থেকে কোনো গোল করতে পারেনি ফ্রান্স। দুটি ম্যাচ তারা জিতেছে প্রতিপক্ষের নিজেদের গোলে, একটি পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে। আর গতকাল জিতল টাইব্রেকারে।

প্রথমার্ধে দুই দলের পারফরম্যান্সই ছিল ধারহীন। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকলেও, বিরতির আগে একবারের জন্যও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারেনি পর্তুগাল। ডি-বক্সের বাইরেই তাদের অপরিকল্পিত আক্রমণগুলো ভেস্তে যাচ্ছিল। আর ফরাসিদের তিন শটের মধ্যে এরনঁদেজের ওই একটিই শুধু ছিল লক্ষ্যে।

ম্যাচে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলেছে দ্বিতীয়ার্ধে। যদিও কোনোটাই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে সেভাবে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে ডেডলক ভাঙার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন রোনালদো। ডান দিক থেকে সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় উড়িয়ে মারেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড গোলদাতা।

সবশেষে টাইব্রেকারে ভাগ্য সহায় ফ্রান্সের, কপাল পুড়েছে পর্তুগালের। ২০১৬ আসরের ফাইনালে রোনালদো-পেপেদের কাছে হেরেই শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছিল ফরাসিদের।

বিষয়:

মেসির চোখে মার্টিনেজ বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

লিওনেল মেসিকে শুধু এমিলিয়ানো মার্টিনেজের সতীর্থ বললে কম বলা হয়। মেসিকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন মার্টিনেজ। আর সেই ভালোবাসার কথা বলেছেন বহুবার। মেসিও সতীর্থের অকুণ্ঠ ভালোবাসার জবাবে সমর্থন এবং ভালোবাসাই জানিয়েছেন। এবার সেই মেসির মুখ থেকে বের হলো মার্টিনেজের জন্য সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত কথাটি। গোলকিপার হিসেবে মার্টিনেজ নিজেকে যে উচ্চতায় দেখতে চান, মেসি তাঁকে সেখানেই বসিয়েছেন। বলেছেন, বিশ্বের সেরা গোলকিপার!

সেই ২০২১ সাল থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে গোলবারের নিচে ভরসার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছেন মার্টিনেজ। সে বছর আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকার শিরোপা। ২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস আর ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে অতিমানবীয় এমি আর্জেন্টিনাকে এনে দেন বিশ্বকাপের শিরোপাটাও।

চিত্রটা বদল হলো না ২০২৪ সালে এসেও। কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে লিওনেল মেসির পেনাল্টি মিস। আরও একবার পরাজয়ের শঙ্কা। কিন্তু সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় আলবিসেলেস্তেরা। নেপথ্যের নায়ক সেই এমিলিয়ানো। ইকুয়েডরের দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে আবার প্রমাণ করলেন পেনাল্টিতে নিজের মুন্সিয়ানা।

ম্যাচ শেষে তাই মার্টিনেজকে প্রশংসায় ভাসাতে ভুল করেননি মেসি। নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে করা এক পোস্টে মার্টিনেজকে দিয়েছেন বিশ্বের সেরা গোলকিপারের স্বীকৃতি, ‘আরও একটি ধাপ...কঠিন এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আমরা অনেক ভুগেছি। আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি, সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের দলে আছে বিশ্বের সেরা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। এগিয়ে যাও আর্জেন্টিনা।’

ইনস্টাগ্রামে এই পোস্টের আগে টেক্সাসে ইকুয়েডরকে হারানোর পর সংবাদমাধ্যমেও মার্টিনেজের প্রশংসা করেন মেসি, ‘আমি জানতাম, এ ধরনের সময়ে দিবু দাঁড়িয়ে যাবে। এ ধরনের মুহূর্তই ওর পছন্দ, যেটা তাকে বড় করে তুলেছে। ও গোলবারের নিচে থাকলে অন্য রকম হয়ে ওঠে।’

কোচ লিওনেল স্কালোনিও ম্যাচের পর মেতেছিলেন মার্টিনেজের বন্দনায়, ‘আমি গোলকিপিং কোচ নই। কিন্তু যখন তারা গোল সেইভ করে তারা বিপক্ষ দলের ওপর আধিপত্য দেখায়, খেলা থেকে ছিটকে দেয়। আর সে (এমি মার্টিনেজ) গোল বাঁচায়। এমনভাবে গোল ঠেকায়, যেন সে মাঠকেই আওয়াজ করতে বাধ্য করে। এটা ভালো দিক, সে আর্জেন্টাইন।’

শুধু কোয়ার্টার ফাইনালই নয়, গ্রুপ পর্বে চিলির বিপক্ষে ম্যাচেও দারুণ দুটি সেভ করেছিলেন মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনা দলে ২০২১ সালে অভিষেকের পর থেকেই টাইব্রেকারে অজেয় এই গোলকিপার। জাতীয় দলের হয়ে চারটি টাইব্রেকার শুটআউটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন সবই।


আবারও ব্যর্থতার বৃত্তেই সাকিব

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছে না অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। ব্যাটে-বলে কোনো বিভাগেই নিজের সেই পুরোনো ছাপটা রাখতে পারছেন না তিনি। দীর্ঘ সময় ধরেই রান নেই সাকিবের ব্যাটে। বল হাতেও পারছে না সুবিধা করতে; দুয়েকটি উইকেট ধরা দিলেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই থাকছেন বেশ খরুচে।

সর্বশেষ বিশ্বকাপেও নিজের নামের প্রতি সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। দলের চাহিদা পূরণে মোটা দাগে ব্যর্থ ছিলেন এক সময়ের বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এমন বাজে পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছিল র‌্যাঙ্কিংয়েও। নাম্বার ওয়ান থেকে এক যুগের সর্বনিম্ন র‌্যাঙ্কিংয়ের লজ্জায় পড়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় বেশ সমালোচনাও শুনতে হয়েছে তাকে।

বিশ্বকাপের ব্যর্থতার সেই ধারা সাকিব অব্যাহত রাখলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি)। অভিষেক ম্যাচ রাঙাতে পারেননি বাঁ-হাতি এ অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে কোনো বিভাগেই খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ব্যাট হাতে দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফেরার পর বল হাতেও ছিলেন বেশ খরুচে। যে কারণে বোলিংয়ে আস্থার প্রতীক হতে পারেননি অধিনায়ক সুনিল নারিনের। সাকিব সুবিধা করতে না পারলেও জয় পেয়েছে তার দল লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে এবারই প্রথমবার সুযোগ পেয়েছেন সাকিব। তার পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকানাধীন দল লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স দলে ভিড়িয়েছে তাকে।

গতকাল ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টেক্সাস সুপার কিংসের বিপক্ষে সাকিবকে একাদশে রেখেই স্কোয়াড সাজায় দলটি। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রানের পুঁজি দাঁড় করায় সাকিবরা। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি টেক্সাস। নাইট রাইডার্স জয় পেয়েছে ১২ রানে।

এদিন ব্যাট হাতে খুব বেশি রান পাননি সাকিব, বল হাতেও ছিলেন খরুচে। তবে ঝুলিতে পুড়েছেন একটি উইকেট। ফলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে অভিষেক রাঙাতে পারেননি তিনি।

চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি সাকিব; ফিরেছেন ১৩ বল থেকে ১৮ রান করে। বোলিংয়েও খরুচে ছিলেন তিনি। ৩ ওভারে সাকিব খরচ করেন ৩২ রান। যে কারণে সাকিবকে দিয়ে আর পুরো ৪ ওভার বল করাননি দলের অধিনায়ক সুনিল নারাইন। যদিও অ্যারন হার্ডির উইকেট পেয়েছেন তিনি।


ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমিফানাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। হিউস্টনে আজ শুক্রবার সকালে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হয় মেসির দল। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হয়।

শুরু থেকেই বেশ অগোছালো ফুটবল খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আক্রমণে আসে ইকুয়েডর। বেশ কয়েকবার আলবিসেলেস্তেদের অর্ধে ভয় ধরিয়ে দেয় তারা। ১৫তম মিনিটে দুর্দান্ত এক সুযোগ পেয়েছিল তারা।

কিন্তু জেরেমি সারমিয়েন্তোর বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। তখনই বল পেয়ে কেন্ডি পায়েসের নেওয়া শট চলে যায় উপর দিয়ে। স্রোতের বিপরীতে গোল করে ফেলে আর্জেন্টিনা।

লিওনেল মেসির কর্নার থেকে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের হেড খুঁজে পায় লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে। তিনিও বল জালে জড়ান হেডে। এই এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গোছানো হয় আর্জেন্টিনা। কিন্তু এর মধ্যেও বারবারই আক্রমণে উঠে আসছিল ইকুয়েডর। তবে গোলের আশা ছাড়েনি ইকুয়েডর। ৬০ মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ পেয়েও যায় তারা।

বক্সের ভেতর অ্যালান ফ্রাঙ্কোর গোলমুখে নেওয়া শট রদ্রিগো দি পলের হাতে লাগে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ইনার ভেলেন্সিয়া মার্তিনেসকে ভুল দিকে ঠেলে দেন ঠিকই। কিন্তু বল লেগে যায় পোস্টে। হতাশ হতে হয় ইকুয়েডরকে।

তারা অবশ্য কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় শেষ পর্যন্ত। তবে সেটি আসে ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে। ৯১তম মিনিটে জশ ইয়েভোয়াহের শট হেড দিয়ে জালে জড়ান কেভিন রদ্রিগেজ। সমতা নিয়ে শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। কোপা আমেরিকায় ৯০ মিনিটের পরই হয় পেনাল্টি।

আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন লিওনেল মেসি। কিন্তু তার শট লাগে গোলবারে। হতাশ আলবিসেলেস্তেদের জন্য আরও একবার নায়ক হন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। আনহেল মিনার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।

পরের শটে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেস। এরপর অ্যালান মিন্ডার শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান মার্তিনেস। টানা দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন তিনি। বাকি শটগুলোতে সবাই গোল করলেও স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তেরা।


কোয়ার্টারে কঠিন প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ম্যাচের আগে থেকেই চলছিল নানা গুঞ্জন; অপরাজেয় কলম্বিয়াকে কি থামাতে পারবে ব্রাজিল? তবে এ ম্যাচে কেমন করে ব্রাজিল সেটাই দেখার বিষয় ছিল। শুরুটা যেভাবে করল ব্রাজিল সেটা আর ধরে রাখতে পারলো না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে গেল সেলেসাওদের পারফরম্যান্স। ফলে শুরুতেই এগিয়ে গেলেও কলম্বিয়ার অজেয় যাত্রা থামাতে পারল না ব্রাজিল। তিন ম‍্যাচে দ্বিতীয় ড্রয়ে তবুও নিশ্চিত করল কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা।

ক্যালিফোর্নিয়ার লেভি’স স্টেডিয়ামে গতকাল কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। এতে দুই ড্র আর এক জয়ে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলো ব্রাজিল। সেখানে তাদের জন‍্য অপেক্ষায় দারুণ ছন্দে থাকা উরুগুয়ে। আর দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ‍্যাম্পিয়ন কলম্বিয়া। শেষ আটের লড়াইয়ে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে তারা। টানা ২৬ ম‍্যাচ ধরে অপরাজিত দলটি খেলবে পানামার বিপক্ষে। অসংখ‍্য ফাউলে শুরু হওয়া ম‍্যাচে সপ্তম মিনিটে একটি ‘বড় ধাক্কা’ খায় ব্রাজিল। হামেস রদ্রিগেসকে অহেতুক ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। গ্রুপ পর্বে দুইবার হলুদকার্ড দেখার কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারবেন না ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড।

সেই ফাউলে পাওয়া ফ্রি কিকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন রদ্রিগেস। তার তীব্র গতির শট বেরিয়ে যায় ক্রসবার ছুঁয়ে! দশম মিনিটে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন ব্রুনো গিমারাইস। ঠেকানোর চেষ্টায় তালগোল পাকিয়ে ফেলেন কলম্বিয়া গোলরক্ষক কামিলো ভার্গাস। ভাগ‍্য ভালো তার বল জালে যায়নি, বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে।

দুই মিনিট পর রাফিনিয়ার চমৎকার ফ্রি কিকে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বাম দিকের পোস্ট ঘেঁষে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। লাফিয়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও গতির জন‍্য জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি ভার্গাস। ১৯তম মিনিটে রদ্রিগেসের ফ্রি কিকে নিখুঁত হেডে জালে বল পাঠান দাভিনসন সানচেস। তবে অফসাইডের জন‍্য মেলেনি গোল। কিন্তু প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল হজম করেই বসে কোপার ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা। কলম্বিয়ার জন কর্ডোবার অ্যাসিস্টে গোল করেন ড্যানিয়েল মুনোজ। ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্রাজিল। চেষ্টা করেন আক্রমণে গুছিয়ে উঠার। কিন্তু কোনো সুফলই পাচ্ছিল না তারা। উল্টো তালগোল পাকিয়ে ফেলছিল ডিফেন্সে। ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে শেষবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল ব্রাজিলের। বক্সের বাইরে থেকে নেয়া আন্দ্রেস পেরেইরার জোরালো শট লাফিয়ে উঠে কোনোমতে বাঁচান কলম্বিয়ার গোলরক্ষক। ১-১ সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।


১৬ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়ে শেষ আটে তুরস্ক 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

গ্রুপ পর্বে বড় চমক দেখিয়েছিল অস্ট্রিয়া। ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসকে চমকে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে পাঁ রেখেছিল তারা। কিন্তু অস্ট্রিয়ার সেই যাত্রা এবার থামিয়ে দিল তুরস্ক। তাদের হারিয়েই ১৬ বছর পরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠল তুরস্ক। ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে অস্ট্রিয়া। সেই ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করল তারা। দ্বিতীয়ার্ধে ধার বাড়াল আরও। তার মাঝেই দ্বিতীয় গোল হজম করে বসল গ্রুপ পর্বে চমক জাগানো দলটি। পরে ব্যবধান কমিয়ে, চাপ ধরে রাখলেও শেষ রক্ষা হলো না তাদের।

লাইপজিগে গতকাল রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে তুর্কিরা। ২০০৮ সালের পর ইউরোয় শেষ ষোলোর বাধা পার হলো তারা। তুরস্কের দুটি গোলই করেছেন মেরিহ দেমিরাল। ম্যাচের অর্ধ মিনিট পার না হতেই কর্নার পায় তুরস্ক। সেখান থেকে আর্দা গুলারের শট থেকে পাওয়া বল; দুর্দান্ত শটে গোল করেন তুরস্কের মেরিহ ডেমিরাল। এতে ৫৭ সেকেন্ডে এগিয়ে যায় তুর্কিরা।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে কোনো নকআউট ম্যাচে দ্রুততম গোলের রেকর্ড এটি। আর সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের দ্বিতীয়। এর আগে চলতি আসরেই ইতালির বিপক্ষে ২৩ সেকেন্ডে গোল করে ইউরোর ইতিহাসে দ্রুততম গোলের রেকর্ড করেছিলেন আলবেনিয়ার নেদিম বাজরামানি। পুরো ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থাকা অস্ট্রিয়া দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করে। প্রথম অর্ধে গোলের উদ্দেশ্যে ছয়টি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে না পারা দলটি দ্বিতীয়ার্ধে আরও ১৫টি শট নেয়, লক্ষ্যে থাকে পাঁচটি। কিন্তু সমতাসূচক গোলের অপেক্ষা তাদের আর শেষ হয়নি। যেখানে তুরস্কের পাঁচ শটের তিনটি থাকে লক্ষ্যে, যার দুটিই সফল। ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তুরস্ক। রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ মিডফিল্ডার গুলারের কর্নারে থেকে হেডে দ্বিতীয় গোলটি করেন দেমিরাল।

৭ মিনিট পরেই ফরোয়ার্ড মিখায়েলের পা থেকে একমাত্র শান্তনার গোলটি পায় অস্ট্রিয়া। এরপর আক্রমণের ধার বাড়ায় তারা। চার মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল অস্ট্রিয়া; কিন্তু বমগার্টনারের হেড দুর্দান্ত ক্ষীপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক ম্যার্ট গিনক। একটু পরই বাজে শেষের বাঁশি। হতাশায় নুয়ে পড়ে অস্ট্রিয়ার খেলোয়াড়রা। শুরু হয় তুর্কিদের উদযাপন। বার্লিনে আগামী শনিবার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে তুরস্ক।

বিষয়:

পাকিস্তান দলে অপারেশন চালানোর ইঙ্গিত রিজওয়ানের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বছরখানেক সময় ধরেই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে পাকিস্তান। কোনো পরিকল্পনাতেই কিছু হচ্ছে না। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সুবিধা করতে পারেনি ‘ম্যান ইন গ্রিন’রা। একই ধারা ছিল সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাবর আজমের দল। এরপর চরম সমলোচনার মুখে পড়েছে বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো পাকিস্তান দল। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমর্থক; সবাই কাঠগড়ায় তুলছেন ক্রিকেটারদের এমন পারফরম্যান্সকে।

বিশ্বকাপে এমন ভরাডুবির জন্য নিজেদের জ্বলে উঠতে না পারাকেই দায়ী করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর সমালোচনা হওয়াটা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন পাকিস্তানের সহঅধিনায়ক। বাকি ক্রিকেটারদেরকেও এ সমালোচনা ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বোর্ডের পক্ষ থেকে যেকোনো সিদ্ধান্ত সহজভাবে মেনে নিতে দলকে পরামর্শ দেন রিজওয়ান। রিজওয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন, দলে যে অপারেশন চলতে পারে সেদিকেও।

মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘সত্যি বলতে দল যে সমালোচনার মুখে পড়েছে তা যুক্তিসঙ্গত বলে আমি মনে করছি। আমাদের এটা প্রাপ্য, কারণ আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স করতে পারিনি। আর যে ক্রিকেটাররা সমালোচনা নিতে পারে না সে কখনো সাফল্য অর্জন করতে পারে না। আমরা আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে খুব হতাশ। যখন একটা দল হারে তখন কেউ বলতে পারে না যে, বোলিং কিংবা ব্যাটিং ভালো হয়েছে, তখন দুটোতেই সমস্যা ছিল বুঝতে হবে।’

বিশ্বকাপ চলাকালীন দলে বড় পরিবর্তন আসার গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। দলের প্রয়োজনে বোর্ড যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেও গণমাধ্যমে জানান তিনি।

পাকিস্তানের সহঅধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘এটা একটা সাধারণ জিনিস, যখন কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয় তখন আমরা তার অপারেশন করি! এখানে বিষয়টা এমনই- দলের প্রয়োজনে করতে হবে। আমাদের সভাপতি এসব ভালো জানেন। আশা করছি উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তবে সব ব্যর্থতা পেছনে ফেলে আপাতত বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ব্যস্ত হতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। চলতি জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলবে। এ ছাড়া ক্যারিবীয় লিগ শুরু হবে আগস্টে।

এসব টুর্নামেন্টে অংশ নিতে সবমিলিয়ে পাকিস্তানের ১২ ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দিয়েছে পিসিবি। আগামী ২৯ আগস্ট শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। সেখানে খেলবেন ফখর জামান, মোহাম্মদ আমিরের মতো ক্রিকেটাররা। এ ছাড়া তাদের এনওসি দেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার জন্যও। যেখানে আগে থেকেই খেলছেন হাসান আলি ও শান মাসুদ।

এদিকে, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে অংশ নিতে এরই মধ্যে পিসিবির অনুমতি পেয়েছেন মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ হাসনাইন, সালমান আলি আগা ও শাদাব। আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে এলপিএল।


মেসিকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে ইনজুরিটা যেনো পেয়ে বসেছে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসিকে। গত বছর থেকে পায়ের হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরিতে প্রায় সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে দেখা যায় এ ফুটবল জাদুকরকে। ইনজুরির সেই ধারা এখনো চলমান। যে কারণে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামা হয়নি মেসির। দলের সেরা তারকার ইনজুরিতে বেশ দুশ্চিন্তাই পোহাতে হচ্ছে আলবিসেলেস্তেদের কোচ লিওনেল স্কালোনিকে।

তবে খুশির খবর হলো অনুশীলনে ফিরেছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালেও তিনি খেলতে পারবেন কিনা সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে দলের প্রধান তারকাকে পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন আলবিসেলেস্তে কোচ লিওনেল স্কালোনি। একইসঙ্গে মেসি পুরো ম্যাচে খেলতে না পারলে, তিনি বিকল্প ভাবনাও ঠিক করে রেখেছেন। গ্রুপপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে চিলির বিপক্ষে খেলার সময় চোট পান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে ঊরুর মাংসপেশির সেই চোট বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ভোগাচ্ছিল মেসিকে। নতুন করে সেই অস্বস্তি ফিরে আসায় শেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে তিনি আর্জেন্টিনার একাদশে ছিলেন না।

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, মেসি এখন আগের চেয়ে ভালো বোধ করছেন। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) গত রাতে নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, লিওনেল স্কালোনি মাঠে এসেছেন ও শিষ্যদের অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করছেন। মেসিসহ রদ্রিগো ডি পল, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এমিলিয়ানো মার্তিনেজরা অনুশীলন করেছেন। যেখানে মেসিকে দেখে সাবলীল মনে হয়েছে। অনুশীলনে দেখা গেছে, অল্প গতিতে দৌড়াচ্ছেন এবং বলে লাথি মারছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফুটবলার। সবমিলিয়ে মেসিকে পাওয়ার ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন স্কালোনি। এজন্য বিকল্প হিসেবে তিনি আনহেল ডি মারিয়াকে ভেবে রেখেছেন। টিওয়াইসি বলছে, যদি শুরুর একাদশে মেসিকে রাখার সুযোগ না হয়, তবে প্রয়োজনে তাকে বেঞ্চ থেকে মাঠে নামাবেন। আর মেসি বেঞ্চে থাকলে দলের অধিনায়কত্ব করবেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টিনা দলের কোচিং স্টাফরা নাকি মেসি ও মারিয়াকে একসঙ্গে খেলাতে চান না। তারা এই দুজনকে একে অন্যের বিকল্প হিসেবে খেলাতে চান। এমন ভাবনা সামনে রেখে অনুশীলনে চার মিডফিল্ডারের সঙ্গে ডি মারিয়াকে রেখে পরীক্ষাও চালানো হয়েছে। যদিও ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে এই ফরমেশনেই খেলানো হবে কি না সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না, তবে বিকল্প যাতে ঠিক থাকে সেটাই ভাবনা কোচের।

বিষয়:

সেরাদের সেরা যারা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

২০ দলের ২৯ দিনের লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটল দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারতের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে। আর উত্তেজনাকর মারকাটারি এ সংস্করণের পর্দা নামল ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে। তাই সবশেষে এখন খুঁজে নেওয়া যায় উজ্জ্বল নক্ষত্রদের; যারা মাতিয়ে রেখেছিল ২৯ দিনের এই আয়োজনকে। কারা নাম লেখালেন সেরাদের তালিকায়।

টুর্নামেন্টের সেরা দল ভারত; এটা নিয়ে আর নতুন করে পরিচিত করানোর কিছু নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত সাফল্যে কারা এগিয়ে থাকল? এ প্রশ্নের উত্তর মেলানো যাক এবার। শুরুটা করা যাক টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়কে দিয়েই।

টুর্নামেন্টের সেরা সেই ক্রিকেটারের নামটি জাসপ্রিত বুমরাহ। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ভারতীয় বোলিং লাইনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যখনই আক্রমণে ডাক পড়েছে, দুই হাত উজাড় করে দিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ফাইনালের শেষ দিকের দুই ওভারে মাত্র ৬ রান দেওয়া ছাড়াও ম্যাচে ২টি উইকেটসহ ৮ ম্যাচে তার শিকার ১৫ উইকেট।

এবারের আসরে প্রতিটি উইকেটের জন্য তার খরচ মাত্র ৮.২৬ রান। এক বিশ্বকাপে অন্তত ১০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে সেরা গড় এটি। ২৯.৪ ওভার বোলিং করে ওভারপ্রতি তিনি দেন স্রেফ ৪.১৭ রান। বিশ্বকাপের এক আসরে অন্তত ২০ ওভার করা বোলারদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের কীর্তি।

ফাইনালসহ আসরজুড়ে নজরকাড়া বোলিংয়ে টুর্নামেন্টসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও জেতেন বুমরাহ। ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়টি যে বিরাট কোহলি এটা ইতোমধ্যেই দৃষ্টিগোচর হয়েছে সবারই। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া কোহলি এ দিন জ্বলে উঠলেন অন্ধকারে মশাল হয়ে। আগের ৭ ম্যাচে ৭৫ রান করা কোহলি ফাইনাল ম্যাচেই খেললেন ৭৬ রানের ইনিংস। যেটা ভারতের বিশ্বকাপে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাই ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও উঠেছে তার হাতেই।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটারটির নাম রহমানুল্লাহ গুরবাজ। আফগানিস্তান সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও তাকে টপকে যেতে পারেনি কোনো ব্যাটার। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তিনি ছিলেন আফগানদের ব্যাটিং লাইনের কাণ্ডারি। ৮ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৮১ রান। যার মধ্যে চারটিতে খেলেছেন চল্লিশছোঁয়া ইনিংস।

এ তালিকার অবশ্য সেরা পাঁচ হিসাব করলে বাকি চারটি নাম আসে যথাক্রমে- রোহিত শার্মা (৮ ইনিংসে ২৫৭ রান), ট্রাভিস হেড (৭ ইনিংসে ২৫৫ রান), কুইন্টন ডি কক (৯ ইনিংসে ২৪৩ রান), ইব্রাহিম জাদরান (৮ ইনিংসে ২৩১ রান)।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় অবশ্য একজনকে রাখার সুযোগ নেই। ১৯ উইকেট শিকার করে যৌথভাবে এ তালিকায় আছেন আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি আর ভারতীয় পেসার আর্শদীপ সিং।

সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেওয়া ফারুকি ৮ ইনিংস থেকেই নিয়েছেন ১৭ উইকেট। এ জন্য তিনি ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ৬.৩১। আর প্রতি উইকেটের জন্য খরচ করেছেন মাত্র ৯.৪১ রান। অন্যদিকে আর্শদীপের ১৭ উইকেট শিকার করতে লেগেছে ৯টি ইনিংস।

বিষয়:

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রাজসিংহাসন দুই বছরের জন্য ভারতের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

নাটকীয়তার এতটুকু কমতিও ছিল না এ ম্যাচে। একটা ফাইনালে যা হওয়ার দরকার তার সবই হলো। লড়াইয়ের উষ্ণতা, ম্যাচের ভাগ্য বদলের নাটকীয়তা, ব্যাট-বলের লড়াই, স্কিলের ব্যবহার, স্নায়ুযুদ্ধ; সবকিছু শেষে শিরোপা উদ্‌যাপনটা করেছে ভারতই। শেষ ম্যাচের, শেষ শিরোপাটা উঁচিয়ে ধরেছেন রোহিত-কোহলি-জাদেজারা। উন্মাদ উদ্‌যাপনে মেতেছে টিম ইন্ডিয়া। ভারতজুড়ে কোটি দর্শক পুড়ছে ক্রিকেটজ্বরে।

এ উদ্‌যাপনকে ব্যাখ্যা করার শব্দ নেই। মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে রোহিতের নিজের সঙ্গেই নিজের কথা বলা, বিরাট কোহলির স্কোরবোর্ডের সঙ্গে সেলফি নেওয়া, হার্দিক পান্ডিয়ার মাটিতে বসে পড়ে কান্নাভেজা চোখ। আবেগের কত রকম যে প্রকাশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতিগুলোই হয়তো এমন! দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার ফল যে এটা।

অন্যদিকে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সাতবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ হয়নি একবারও। নামের পাশে তাই যোগ হয়েছিল ‘চোকার্স’ শব্দটি। অষ্টম সেমিফাইনালে এসে সেটা ঘুচিয়েছিল প্রোটিয়ারা। নিশ্চিত করেছিল ফাইনালে খেলা। কিন্তু সেই মঞ্চে এসে আবারও প্রমাণ করল এখনো ‘চোকার্স’ শব্দটিকে মুছে ফেলতে পারেনি তারা। ফাইনালে সহজ সমীকরণের ম্যাচও হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে এইডেন মার্করাম, ডি ককদের।

বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে শনিবার প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১৭৬ রান তোলে ভারত। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। বুমরাহ-হার্দিকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে ৭ রানের হারে শেষ হয় প্রোটিয়াদের স্বপ্ন। অন্যদিকে ১৭ বছরের আক্ষেপ শেষে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে ভারত।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই কিছুটা বিপদে পড়েছিল ভারত। প্রথম দুই ওভারেই দুই উইকেট হারায় তারা। এক ওভারেই রোহিত (৯) পান্থকে (০) ফেরায় কেশব মাহারাজ। পাওয়ার-প্লেতেই বিদায় নেন সুরিয়া কুমারও (৩)। দলের এমন অবস্থায় দেয়াল হয়ে দাঁড়ান পুরো টুর্নামেন্টে ব্যর্থ বিরাট কোহলি। তিনি যে এ দিনের জন্যই তুলে রেখেছিলেন ব্যাটটা। পুরো টুর্নামেন্টে ৭৫ রান করা কোহলি খেললেন ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিলেন অক্ষর প্যাটেল (৪৭) আর শিবাম দুবে (২৭)। দুজনই খেললেন দুটি কার্যকরী ইনিংস। এতে ২০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর দাঁড়াল ১৭৬ রানের। যেটা লড়াই করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে একই বিপদে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেন্ড্রিক্স (৪) আর তৃতীয় ওভারে ফিরে যান এইডেন মার্করাম (৪)। শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন দুই ব্যাটার ট্রিস্তান স্টাবস আর কুইন্টন ডি কক। পাওয়ার প্লের আগের ওভার থেকেই প্রবলভাবে ম্যাচে ফেরার তাগাদা দেন তারা। দুজন মিলে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। অক্ষর প্যাটেলের বলে স্টাবস (৩১) ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তবুও ম্যাচে টিকে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর উইকেটে এসে টর্নেডো চালাতে শুরু করেন হেনরি ক্লাসেন। তার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে আর্শদীপের বলে কাটা পড়েন ডি কক (৩৯)।

ডি ককের বিদায়ের রাগটা ক্লাসেন ঝাড়েন দুই স্পিনার কুলদপ যাদব আর অক্ষর প্যাটেলের ওিপর। প্রতি ওভারেই তাদের চার-ছক্কায় বাউন্ডারি ছাড়া করে সহজ সমীকরণে নিয়ে আসেন ম্যাচ। ২৩ বলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেন অর্ধশতক। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন জয়ের সুবাস পাচ্ছে তীব্রভাবেই। ক্লাসেন আর ডেভিড মিলার তখন ক্রিজে। বাইরে এতগুলো উইকেট। এই ম্যাচ তো কার্যত শেষ! কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচ তো শেষের আগে শেষ নয়!

১৬ ওভার শেষে হাঁটুর চোট পেয়ে মাঠেই চিকিৎসা নিলেন রিশাভ পান্ত। একটু থমকে থাকল খেলা। ক্লাসেনের মনোযোগেও হয়তো চিড় ধরল। খেলা শুরু হতেই প্রথম ডেলিভারিতে অনেক বাইরের বল তাড়া করে আউট ক্লাসেন (২৭ বলে ৫২)।

পরের ওভারে বুমরাহ এসে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করলেন। ওভারে রান দিলেন স্রেফ দুটি। ম্যাচ একটু একটু করে দূরে সরতে থাকল দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৯তম ওভারে আর্শদীপ দিলেন কেবল চার রান।

শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়াল ১৬ রানের। পান্ডিয়ার প্রথম বলটি উড়িয়ে মারলেন মিলার। চাপের মধ্যে সীমানায় অসাধারণ ক্যাচ নিলেন সুরিয়াকুমার। এরপর ভারতের জয় কেবল আনুষ্ঠানিকতা।

গৌরবময় ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন কোহলি। ম্যাচসেরা হয়ে তিনি এই সংস্করণ থেকে বিদায়ের ঘোষণাও দিলেন হাসিমুখে।

আর রোহিত শর্মা? ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী, কয়েক মাস আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের পরাজিত নায়ক, এবার আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়কত্ব থেকেও সরানো হয়েছে যাকে, তিনিই এখন টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক।

গত এক বছরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে যাওয়া দল, অনেক বছর ধরে একটি আইসিসি ট্রফির তেষ্টায় ছটফট করতে থাকা ভারত, অবশেষে পেল একটি বৈশ্বিক শিরোপার স্বপ্নময় পরশ।

বিষয়:

১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান, ভারতে এলো বিশ্বকাপ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

১৩ বছর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নুয়ান কুলাসেকেরার বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সে ছক্কাই তাদের এনে দেয় বিশ্বকাপ। একটা বিশ্বকাপের জন্য এরপর থেকে হন্যে হয়ে ঘুরেছে টিম ইন্ডিয়া। সাতমাস আগেই নিজেদের মাটিতে হেরেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল।

তবে এবার সে আক্ষেপ মিটল নিজ দেশ থেকে বহুদূরের মাটিতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোজের কড়া রোদের নিচে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ১৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যান ইন ব্লুরা। সেটা দিয়েই শিরোপার পথে নেমেছিল ধোনির ভারত। লম্বা অপেক্ষা শেষে আবারও সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই শিরোপাখরা ঘুচালো দলটা।

বার্বাডোজে উৎসবের মঞ্চ আগেই সাজিয়ে রেখেছিল ভারত। ১৭৬ রানের শক্ত সংগ্রহ তারা দাঁড় করায় ফাইনালের মঞ্চে। বল হাতে শুরুটাও ছিল চ্যাম্পিয়নদের মতোই। মাঝে কুইন্টন ডি কক আর হেনরিখ ক্লাসেন দাঁড়ালেন দেয়াল হয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার জয়টাও ছিল সময়ের ব্যাপার।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে যে লেগে আছে চোকার্স তকমা। ২৪ বলে ২৬ রানের সমীকরণটাই আর মেলানো হয়নি তাদের। আর্শদ্বীপ সিং আর জাসপ্রিত বুমরাহ একের পর এক ডট ডেলিভারিতে চাপ বাড়িয়েছেন। সঙ্গী ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্নায়ুচাপের লড়াইয়ে জয় হলো ভারতেরই।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়ার ওই ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি লাইনে মিলারকে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরালেন সুর্যকুমার যাদব। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ শেষ হয়ে গেল সেখানেই। শেষ ওভারে এলো ৮ রান। ব্যর্থ হলো হেনরিখ ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত সেই ইনিংস। ৭ রানের জয়ে বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন ভারত।


ধ্রুপদী ক্রিকেট খেলা অনেক দল ভালো করতে পারেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরীক্ষিত দল তারা। শুধু কথায় নয়, নিজেদের সেই শক্তির জানানও দিয়েছে দলগুলো। উল্লেখিত দলগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ড বাদে প্রত্যেকেই বিশ্ব মঞ্চে উঁচিয়ে ধরেছে শিরোপা। নামের পাশে একাধিক শিরোপাও আছে কোনো কোনো দলের। কিন্তু ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে শেষ হওয়া বিশ্বকাপের এবারের আসরে নিজেদের সেই রূপটা তারা দেখাতে পারেনি। উল্টো বাজে পারফরম্যান্সে জন্ম দিয়েছে সমালোচনার।

টি-টোয়েন্টি মহাযজ্ঞের এবারের আসরের সেমিফাইনাল নিয়ে যতজন ভবিষ্যৎদ্বাণী করেছিলেন প্রায় সবার দলেই নাম ছিল ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের। কিন্তু ইংল্যান্ড বাদে কেউই সেটা পূরণ করতে পারেনি। সেমিফাইনালে গেলেও সেখানে লড়াইটা করতে পারেনি জস বাটলাররা।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথমবার আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলতে আসা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হেরে যায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের সঙ্গে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যায় বাবর আজমের দল। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে একরকম বাদই পড়ে যায় তারা। শেষ ম্যাচে কানাডাকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখলেও যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় বিদায় নিশ্চিত হয় তাদের।

বিশ্বকাপের আগে সম্ভাব্য সবকিছুই করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেসবের কেনো সুফলই দেখা গেল না ম্যাচে। মাত্র ক’দিন আগেও টি-টোয়েন্টির শীর্ষে থাকা দলটি নিজেদের সেই চেনা ক্রিকেটটা খেলতেই পারল না।

এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দেওয়া দলটির নাম নিউজিল্যান্ড। সময়ের সেরা দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে তারাও বাদ পড়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই। আফগানদের বিপক্ষে বড় এরপর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেও সেই ধারা অব্যাহত রাখায় শুরুতেই শেষ হয় কেন উইলিয়ামসনদের বিশ্বকাপ।

এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম দুই শক্তিশালী দল ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক হওয়ায় ক্যারিবীয়দের শিরোপা জয়ের সম্ভনা ছিল প্রবল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা ছিল নিজেদের সেরা ছন্দে। দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল দুই দলই। গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা। অপরাজিত থেকেই জায়গা করে নিয়েছিল সুপার এইটে। কিন্তু সেমিফাইনালের লড়াইয়ে নেমে তারা গ্রুপ পর্বের সেই ফর্মকে বেমালুম ভুলে যায়।

সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে পরাজিত করে, শুরু করে। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচেই তারা হেরে যায়। শেষ দুই ম্যাচেই অচেনা অস্ট্রেলিয়ার দেখা মেলে। তারা পারফর্ম করতেই ভুলে যায়। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষের ওই হার তাদের বিশ্বকাপ যাত্রাই থামিয়ে দেয়।

অন্যদিকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি। উল্টো প্রতিপক্ষের ফাঁদেই ফেঁসে গেছে তারা। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি তারা। পরের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে হারালেও শেষ ম্যাচে হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সমাপ্তি ঘটে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিংটা ছন্নছাড়া ছিল ক্যারিবীয়দের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছিল উল্টোটা; নিজেদের শক্তির জায়গা ব্যাটিংটাই করতে পারেনি তারা।

অন্যদিকে গ্রুপ পর্বেই বিদায়ের শঙ্কা জাগালেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেখানে ভারতের সঙ্গে লড়াইটাও করতে পারল না তারা। প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করে ইংলিশরা। পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলে বিদায়ের শঙ্কা জাগে। তবে ওমান আর নামিবিয়াকে হারিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় তারা। সেখানে এক ম্যাচ হারলেও সবার আগেই জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ন্যূনতম লড়াইটা করতে পারেনি জস বাটলাররা।

নিজেদের সেই ট্র্যাডিশনাল ক্রিকেটটাই বিশ্বমঞ্চে খেলতে পারেনি এই দলগুলো। ফলাফল হিসেবে আগেই বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে আসর থেকে।


banner close