বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

ভারতকে ২৬৬ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ

৮০ রানের ইনিংস খেলার পথে সাকিব আল হাসানের একটি শট। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২০:১৭

অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়ের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পর টেল-এন্ডারদের দৃঢ়তায় এশিয়া কাপ সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান করেছে বাংলাদেশ। মিডল অর্ডারে সাকিব ৮০ ও হৃদয় ৫৪ রান করেন। ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে নাসুম আহমেদ ৪৪, মাহেদি হাসান অপরাজিত ২৯ ও অভিষিক্ত তানজিম হাসান অপরাজিত ১৪ রান করেন। এখন ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করছে ভারত।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুক্রবার নিয়মরক্ষার ম্যাচে টসে ভারতের বিপক্ষে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে সাজানো একাদশে দলের হয়ে ইনিংস শুরু করেন টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে অভিষেক হওয়া তানজিদ হাসান ও লিটন দাস।

প্রথম দুই ওভারে তিনটি চার মেরে ইনিংসের যাত্রা করেন তানজিদ। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে পেসার মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হন ওপেনিংয়ে ফেরা লিটন। ২ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

পরের ওভারের প্রথম বলে শারদুলের বলে ইনসাইড এজ বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অভিষেক ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের মালিক তানজিদ। ১২ বলে ১৩ রান করেন তিনি।

তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি এনামুল হক। শারদুলের বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ১১ রানে ৪ রান করা এনামুল হক বিজয় ক্যাচ দিলে দলীয় ২৮ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পাঁচ নম্বরে নামেন আগের তিন ম্যাচে ওপেনার হিসেবে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ। শারদুলের করা দশম ওভারে দু’বার জীবন পান তিনি। জীবন পেয়েও প্যাটেলের শিকার হয়ে ২৮ বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

দলীয় ৫৯ রানে মিরাজের বিদায়ের পর বড় জুটির চেষ্টা করেন অধিনায়ক সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়। উইকেটে সেট হতে সাবধানে খেলতে থাকেন তারা। ২৪তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ স্পর্শ করে । ২৬তম ওভারে প্যাটেলের চতুর্থ ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে ৫৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬৫ বল খেলা সাকিব।

হাফ-সেঞ্চুরির পরও বেশ ভালোই খেলছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু ৩৪তম ওভারে শারদুলের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৫ বলে ৮০ রান করা সাকিব। পঞ্চম উইকেটে হৃদয়ের সঙ্গে ১১৫ বলে ১০১ রানের জুটি গড়েন ২৮ রানে উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে জীবন পাওয়া সাকিব।

সাকিব ফেরার পরের ওভারে জাদেজার বলে লেগ বিফোর আউট হন সাত নম্বরে নামা শামীম হোসেন (১)। এতে দলীয় ১৬১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

সপ্তম উইকেটে নাসুমের সাথে ৩২ রানের জুটি গড়ার পথে ওয়ানডেতে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। অর্ধশতকের পর সামির বলে পুল করে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮১ বলে ৫৪ রান করা হৃদয়।

হৃদয় ফেরার পর বাংলাদেশকে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে গেছেন তিন টেল এন্ডার নাসুম, মাহেদি ও তানজিম। অষ্টম উইকেটে মাহেদি-নাসুম ৩৬ বলে ৪৫ এবং নবম উইকেটে ১৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৭ রান তুলেন মাহেদি-তানজিম। এতে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

৬টি চার ও ১টি ছক্কায় নাসুম ৪৫ বলে ৪৪, ৩টি চারে ২৩ বলে মাহেদি অপরাজিত ২৯ এবং ১টি করে চার-ছক্কায় ৮ বলে অপরাজিত ১৪ রান করেন তানজিম। ভারতের শারদুল ৩টি ও সামি ২টি উইকেট নেন।


সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বন্ধ্যাত্ব কাটানোর খেলা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের প্রথম সেমিফাইনালে কাল সকালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। অন্যদিকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে সাতবার সেমিফাইনালে খেললেও ফাইনালের মঞ্চে নামার সুযোগ হয়নি প্রোটিয়াদের। ফাইনালে খেলতে না পারার বন্ধ্যত্ব এবার ঘোচাতে মরিয়া অষ্টমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা। কাল সকাল সাড়ে ৬টায় ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

দাপুটে জয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখানোর স্বপ্নের কথা জানালেন অধিনায়ক মার্করাম, ‘সেমিফাইনালে উঠতে পেরে দারুণ তৃপ্তি লাগছে। সেমিতে দাপটের সাথে জিততে চাই। আগের সাত ম্যাচে অনেক ভুল করেছি আমরা। আশা করি, সেমিতে পুরোনো ভুলগুলো হবে না। তবে এটি সত্যি, আমরা এখন পর্যন্ত দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। বোলিং ইউনিট দুর্দান্ত করেছে। পাশাপাশি ব্যাটিং ইউনিট সময়মত নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়েছে। আশা করি, সেমিতে আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব।’

অন্যদিকে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল স্বপ্নের মতো লাগছে আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের, ‘বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা, দল হিসেবে এটি আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো। আমরা যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর বিশ্বাসটা চলে আসে। এটি অবিশ্বাস্য। অনুভূতি বোঝানোর মতো ভাষা নেই আমার। এত বড় অর্জনে দেশের সবাই নিশ্চিতভাবেই আমাদের নিয়ে অনেক খুশি।’

এ ম্যাচে মুখোমুখি পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে প্রোটিয়াদেরই। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে দুইবার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা আর আফগানিস্তান। বিশ্বকাপের মঞ্চে হওয়া দুই দেখাতেই জয় প্রোটিয়াদের। ২০১০ সালে ৫৯ রানে এবং ২০১৬ সালে ৩৭ রানে জয় পেয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এটিও মনে রাখতে হবে, সেই আফগানিস্তান আর বর্তমান আফগানিস্তানের মধ্যে তফাতটা অনেক বেশি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলমান আসরের অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বে ৪ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের প্রথম চ্যালেঞ্জে প্রতিপক্ষ ছিল- বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। অপরাজিত থাকার সেই ধারা ধরে রাখে সুপার এইট পর্বেও। প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে হারানোর পরে বিধ্বস্ত করে ইংল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। গ্রুপ পর্বের ৪ ও সুপার এইটের ৩ ম্যাচসহ টানা ৭ ম্যাচে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা।

অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে দারুণ শুরু করেছিল আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বড় চমক দেয় তারা। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় রশিধ খানের দল। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ধাক্কা খেলেও শেষ দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আসে তারা।

এ মুহুর্তে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ কয়েক ম্যাচে রেজা হেন্ডরিক্স, কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, এইডেন মার্করামরা তাদের ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছে। বিধ্বংসী এ ব্যাটাররা একজনই বের করে নিতে পারেন ম্যাচ। বোলিংয়ে কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নরকিয়া, কেশাব মাহারাজরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

বিপরীতে যদিও ব্যাটার-বোলার দুই বিভাগরই আসরের সেরা ক্রিকেটার আফগানিস্তানের। কিন্তু বোলিংটাই মুল শক্তির জায়গা আফগানদের। ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনার ব্যর্থ হলে বাকিদের দায়িত্ব নেওয়ার সক্ষমতা নিয় প্রশ্ন আছে। তিনটি ম্যাচে সেই প্রশ্ন তৈরি করেছে তারাই। রশিদ খান, নুর আহমেদ, গুলবাদিন নাইব, নাভিন-উল-হক, ফজলহক ফারুকিরা এই মুহুর্তে দারুণ ছন্দে রয়েছে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিন সহায়ক উইকেটে চ্যালেঞ্জ জানাবে প্রোটিয়া ব্যাটারদের।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমে বার বার তীরে এসে তরি ডুবায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচবার এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুইবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় প্রোটিয়াদের গায়ে ‘চোকার্স’শব্দটি স্থায়ীভাবে লেপ্টে গেছে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেকে বিদায় নিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ‘চোকার্স’ শব্দকে মুছে ফেলতে চায় তারা।


ফাটাফাটি লড়াই হবে ভারত-ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৪ ২২:৩০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ২০২২ সালে পাকিস্তানকে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছিল তারা। তৃতীয় শিরোপার লক্ষ্যে চলমান আসরের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ১০ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ভারত। এবারের টুর্নামেন্টর অপরাজেয় রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে ইংলিশদের লড়াইটা হবে গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় কাল রাত সাড়ে ৮টায় দেখা যাবে দুই দলের আধিপত্যের লড়াই। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

বিশ্বকাপের এবারের আসরে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে ভারত। গ্রুপ পর্ব, সুপার এইট মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত রোহিত-কোহলিরা। তাদের থামাতে পারেনি পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়াও। তাদের হারিয়েই সেমিফাইনালে ভারত। অন্যদিকে নানান সমীকরণ মিলিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। শঙ্কা জেগেছিল তাদের বিদায়েরই। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে জস বাটলারের দল।

২০১০, ২০১৬ ও ২০২২ সালের পর চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ইংল্যান্ডের সামনে। তাই সেমিফাইনালে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না ইংলিশরা। দলের অধিনায়ক জশ বাটলার বলেন, ‘আমাদের সামনে চতুর্থ ফাইনাল খেলার সুযোগ। ফাইনালে খেলার সুযোগ যে কেউ লুফে নেবে। আমরাও এর ব্যতিক্রম নয়। ফাইনালে খেলতে দলের সবাই মুখিয়ে আছে। আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল খেলা।’

অন্যদিকে তৃতীয় ফাইনাল খেলার সুযোগ থাকছে ভারতের সামনে। ২০১৪ সালের পরে আর ফাইনালে খেলা হয়নি ভারতের। দীর্ঘদিন পরে পাওয়া সেই সুযোগ হারাতে চায় না ভারত। দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘দীর্ঘ দিন পর ফাইনালে খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের সামনে। এই সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নই আমরা। ফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়ে সেমির লড়াইয়ে নামবে দল।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে প্রথমবার মতো শিরোপা ঘরে তোলে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে শিরোপা হারালেও ২০২২ সালে আবার সেটা উদ্ধার করে পাকিস্তানকে হারিয়ে। অন্যদিকে ২০০৭ সালে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে শিরোপা হারায় শ্রীলঙ্কার কাছে। এরপর কখনো ফাইনালে খেলার সুযোগ হয়নি ভারতের।

সবশেষ আসরে সেমিফাইনালে উঠেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দল ভারত। সে ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। অ্যাডিলেডের সেই ম্যাচে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই স্মৃতিই ইংল্যান্ডকে শক্তি জোগাচ্ছে।

তবে ভারত-ইংল্যান্ডের লড়াই ছাপিয়ে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে গায়ানায় ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে ৮৮ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কোনো রিজার্ভ ডে রাখেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে ওই ম্যাচের জন্য অতিরিক্ত ৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট রেখেছে আইসিসি। তাই কোনোভাবেই পরের দিন ম্যাচ আয়োজনের কোনো সুযোগ নেই।

বৃষ্টির কারণে ম্যাচ আয়োজন সম্ভব না হলে কপাল পুড়বে ইংল্যান্ডের। আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী গ্রুপ পর্বে পয়েন্ট ব্যবধানে ভারত এগিয়ে থাকায় সরাসির ফাইনালে চলে যাবে ভারত।

সেমিফাইনালে দুই দলের লড়াইটা হবে তুমুল উত্তেজনার। দুই দলেরই আধিপত্যের লড়াই চলবে এ দিন। ভারতের লক্ষ্য থাকবে গত আসরের সেমিফানালে হারের প্রতিশোধ নেওয়া।


নতুন অধ্যায় রচনা করার লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আফগানিস্তান। সেই ইতিহাস ভেঙে এবার নতুন ইতিহাস লেখার অপেক্ষায় রশিদ খানরা। একটা জয় পেলেই বিশ্বমঞ্চের ফাইনালে চলে যাবে তারা। তবে তার আগে আফগানদের দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। প্রথম সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। যারা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে সাতবার সেমিফাইনালে খেলেছে কিন্তু কোনোবারই উতরাতে পারেনি সেই বাধা। তাই দুই দলের সামনেই লক্ষ্য ফাইনাল নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর সাড়ে ৬টায় ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের প্রথম সেমিফাইনালে হতে যাচ্ছে একটি রেকর্ডও। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠবে নতুন কোনো দেশ; যারা এখনো বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেনি। সাতবার সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালে খেলতে না পারার বন্ধ্যত্ব এবার ঘোচাতে মরিয়া অষ্টমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যদিকে প্রথমবার সেমিফাইনালে ওঠা আফগানিস্তানও ফাইনাল ব্যতীত অন্য কিছুতে চোখ দিতে নারাজ।

তবে মুখোমুখি পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে প্রোটিয়াদেরই। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে দুইবার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা আর আফগানিস্তান। বিশ্বকাপের মঞ্চে হওয়া দুই দেখাতেই জয় প্রোটিয়াদের। ২০১০ সালে ৫৯ রানে এবং ২০১৬ সালে ৩৭ রানে জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এটিও মনে রাখতে হবে, সেই আফগানিস্তান আর বর্তমান আফগানিস্তানের মধ্যে তফাৎটা অনেক বেশি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলমান আসরের অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বে ৪ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের প্রথম চ্যালেঞ্জে প্রতিপক্ষ ছিল- বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। অপরাজিত থাকার সেই ধারা ধরে রাখে সুপার এইট পর্বেও। প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে হারানোর পরে বিধ্বস্ত করে ইংল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। গ্রুপ পর্বের ৪ ও সুপার এইটের ৩ ম্যাচসহ টানা ৭ ম্যাচে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা।

অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে দারুণ শুরু করেছিল আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বড় চমক দেয় তারা। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় রশিধ খানের দল। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ধাক্কা খেলেও শেষ দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আসে তারা।

এ মুহূর্তে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ কয়েক ম্যাচে রেজা হেন্ডরিক্স, কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, এইডেন মার্করামরা তাদের ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছে। বিধ্বংসী এ ব্যাটাররা একজনই বের করে নিতে পারেন ম্যাচ। বোলিংয়ে কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নরকিয়া, কেশাব মাহারাজরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

বিপরীতে যদিও ব্যাটার-বোলার দুই বিভাগরই আসরের সেরা ক্রিকেটার আফগানিস্তানের। কিন্তু বোলিংটাই মুল শক্তির জায়গা আফগানদের। ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনার ব্যর্থ হলে বাকিদের দায়িত্ব নেওয়ার সক্ষমতা নিয় প্রশ্ন আছে। তিনটি ম্যাচে সেই প্রশ্ন তৈরি করেছে তারাই। রশিদ খান, নুর আহমেদ, গুলবাদিন নাইব, নাভিন-উল-হক, ফজলহক ফারুকিরা এই মুহূর্তে দারুণ ছন্দে রয়েছে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিন সহায়ক উইকেটে চ্যালেঞ্জ জানাবে প্রোটিয়া ব্যাটারদের।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমে বার বার তীরে এসে তরি ডুবায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচবার এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুইবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় প্রোটিয়াদের গায়ে ‘চোকার্স’ শব্দটি স্থায়ীভাবে লেপ্টে গেছে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেকে বিদায় নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ‘চোকার্স’ শব্দকে মুছে ফেলতে চায় তারা।


বহু আকাঙ্ক্ষিত সেমিফাইনালে আফগানিস্তান, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে বিদায় বাংলাদেশ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

চলমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মহাযজ্ঞের আনপ্রেডিক্টেবল সৌন্দর্য আফগানিস্তান। লড়াকু এ দলটি যেটা করল সেটা কজনই আর ভেবেছিল! পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তারা লিখে চলেছে একের পর এক রূপকথার উপাখ্যান। সেটাই তাদের নিয়ে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত লড়াকু জাতি আফগানরা; ক্রিকেট মাঠেও তাদের সেই ক্ষুরধার লড়াকু মনোভাবের কাছেই পরাস্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর শেষটা বাংলাদেশ। আর তাতেই লেখা হয়ে গেল নতুন ইতিহাস। প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল রশিদ-নবিরা।

মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল কিন্তু আফগানরা কীভাবে ব্যবহার করে সেটাই দেখার অপেক্ষা ছিল। তবে ব্যাটিং ইনিংসটা ভালো হলো না আফগানিস্তানের। বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে গুটিয়ে গেল ১১৫ রানেই। এখানেই শেষটা লিখতে নারাজ রশিদ খানের দল। হারতে চায় না হারার আগে; অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করা তো তাদের রক্তেই মিশে আছে। এ দিনও করলেন সেটাই। শান্ত থেকে নিজেদের কাজ করে যেতে লাগলেন। শেষ বেলায় সাফল্যও পেয়ে গেলেন। বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে জায়গা করে নিলেন সেমিফাইনালে।

ইতিহাস গড়ার সুযোগটা বাংলাদেশের সামনেও তৈরি হয়েছিল। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হারে সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা জেগে ওঠে বাংলাদেশের। আফগানদের বিপক্ষে সেই আশাকে আরও জাগিয়ে তুললেন বোলাররা। কিন্তু ব্যাটারদের ধারাবাহিক খামখেয়ালিতে হেলায় হারাল সুযোগ। সেমিফাইনালের আশা ধূলিসাৎ করে উল্টো হারের লজ্জায় পড়ল।

বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে যেতে হলে ১২.১ ওভারে করতে হতো ১১৬ রান। আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা মামুলি ব্যাপার নয়। হালের নেপাল, সিঙ্গাপুর, ওমানের মতো দলও এখন ১০ রানরেটে রান তোলে। কিন্তু স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচের জন্ম দিয়ে শান্তরা সেমিফাইনালে যেতে তো পারলেনই না, উল্টো আফগানিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচটা হারলেন সম্ভাবনা জাগিয়ে! রান তুলতে গিয়ে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে একটা সময় সেমিফাইনালের সমীকরণটাই ভুলে যান বাংলাদেশের ব্যাটাররা। শেষে তো জেতার সমীকরণও শান্তর দল মেলাতে পারেনি। এমন হারের পর ব্যাটারদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।

সেন্ট কিটসের কন্ডিশন যে মোস্তাফিজদের জন্য পয়মন্ত হবে সেটা অনুমেয়ই ছিল। ম্যাচেও সেটাই দেখা গেল; উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে চেপে ধরলেন আফগান ব্যাটারদের। শুরুর দিকে উইকেটের দেখা না পেলেও চেপে ধরেছিল রানের গতি। ১১তম ওভারে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তানজিম সাকিব বাদে মোটামুটি সবাই দুর্দান্ত বল করেছেন। জবাবে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ছাড়া আফগান ব্যাটারদের কেউই আসলে সেভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি।

গতকালও বোলারদের ধারাবাহিকতায় অল্প রানে আফগানদের বেঁধে রেখেছিলেন মোস্তাফিজ-সাকিবরা। সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণটা কঠিন হলেও একেবারে অসম্ভব ছিল না। ৭২ বলে বাংলাদেশের করতে হতো ১১৬ রান। এ ধরনের চেজে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কম থাকলেও আধুনিক ক্রিকেটে দলগুলো অহরহ এমন রান তাড়া করছে।

ব্যাটিংয়ে শুরুটা বাংলাদেশ ভালোভাবেই করেছিল। কিন্তু সেটা আর ধরে রাখতে পারল কোথায়? লিটন দাস এক প্রান্তে চেষ্টা করে গেলেও বাকিরা যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের সেমিফাইনালের আশা। ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ মেলাতে পারেনি ১২৪ বলে ১১৪ রানের সমীকরণও।

এ দিনও শূন্য রানের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন তানজিদ তামিম (০)। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত (৫), সাকিব আল হাসান (০), সৌম্য সরকারও (১০) ফিরে যান দ্রুতই। তৌহিদ হৃদয় প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফিরেছেন ১৪ রানেই। ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ (৬), রিশাদ হোসাইনরা (০)। তাতেই লেখা হয়ে যায় বাংলাদেশের হার। আর আফগানদের ইতিহাস। ১৯তম ওভারে পরপর দুই বলে তাসকিন আর মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে জয়ের স্ট্যাম্পে সিল মারেন নাভিন-উল-হক। মেতে ওঠেন বুনো উল্লাসে। স্বপ্ন পূরণের আনন্দে ভিজে ওঠে চোখ।

এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেও জয় নিয়ে ফিরতে পারেননি লিটন কুমার দাস। সমান চারটি করে উইকেট শিকার করেন রশিদ খান আর নাভিন-উল-হক।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১১ ওভার পর্যন্ত কোনো উইকেট না হারিয়ে খেলতে থাকেন দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান। ১১তম ওভারে জাদরানকে (১৮) ফিরিয়ে তাদের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসাইন। ১৭তম ওভারে গুরবাজকে ফেরালে প্রতিরোধ ভাঙে আফগানদের। তবে শেষদিকে রশিদ খান তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে রানটা একটু বাড়িয়ে নেন। সেটা ২০ ওভার শেষে ঠেকে ১১৫ রানে।

৪ ওভার বল করে রিশাদ শিকার করেন ৩ উইকেট। বাকিরাও ছিলেন বেশ কিপ্টে। ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু তানজিম সাকিব। ৪ ওভারে তিনি খরচ করেছেন ৩৬ রান।


মা হারালেন পাইলট

মা নার্গিস আরা বেগমের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ জুন, ২০২৪ ১৫:১৬
ক্রীড়া প্রতিবেদক

মা হারিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তার মা নার্গিস আরা বেগম (৭২) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস লিখে বিষয়টি নিজেই জানিয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। তার মা বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে তিনি নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় থাকতেন।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, নার্গিস আরা বেগমের উচ্চ রক্তচাপ ছিল। শরীরে লবণের সংকট ছিল। এ ছাড়া তিনি হৃদ্‌রোগ, কিডনি, ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছিলেন। এসব জটিলতা নিয়ে গতকাল সোমবার তাকে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে খালেদ মাসুদ পাইলট তার মায়ের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া চেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বাদ এশা নগরীর টিকাপাড়া কবরস্থানে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

পাইলটের মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি মরহুমার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। পাশাপাশি তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।


বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিতে আফগানিস্তান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের পর বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে যেতে হলে আফগানিস্তানের দেওয়া ১১৬ রানের লক্ষ্য ১২.১ ওভারের মধ্যে তাড়া করতে হতো। তা আর হলো না, ম্যাচটাই হারলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

৮ রানের এই জয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো আফগানিস্তান। তাতে সুপার এইট থেকে বিদায় নিলো বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া।

আজ মঙ্গলবার কিংস্টনে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ম্যাচের মাঝে বৃষ্টি হানা দিলে ডিএলএসে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪ রানে। জবাবে খেলতে নেমে ১৭ ওভার ৫ বলে ১০৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই নাভিন উল হককে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন লিটন দাস। তবে পরের ওভারেই ফজল হক ফারুকিকে উইকেট দিয়েছেন তানজিদ তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথে করেছিলেন ফারুকি। সেখানে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তানজিদ তামিম। ৩ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। উইকেটে এসেই বড় শট খেলার চেষ্টা করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নাভিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫ বলে ৫ রান।

পরের বলেই সাকিব আল হাসানকেও ফিরিয়েছেন নাভিন। চারে নেমে গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। একাদশে ফেরা সৌম্য ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১০ বল খেলে করেছেন ১০ রান।

তাওহিদ হৃদয় উইকেটে এসে শুরু থেকেই বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন। তবে এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রশিদের শিকার হওয়ার আগে ৯ বলে করেছেন ১৪ রান।

মাহমুদউল্লাহ যখন উইকেটে আসেন তখনও বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ বাস্তব ছিল। ১৯ বলে যখন ৪৩ রান দরকার তখন দশম ওভারে ৫ বল ডট খেলেন মাহমুদউল্লাহ। সে ওভার থেকে আসে মাত্র ৪ রান। এতেই সেমির স্বপ্ন ম্লান হয় টাইগারদের। পরের ওভারে রশিদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ৯ বল খেলে ৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। পরের বলেই রিশাদ হোসেনকেও ফেরান রশিদ।

সেমির সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচ থেকেও ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এক প্রান্তে লিটন দাস দাঁড়িয়ে থাকলেও আরেক প্রান্তে ছিল ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। তাতে কোনোরকমে একশ পেরিয়ে অলআউট হয় টাইগাররা। লিটন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫৪ রান করে।

এর আগে বোলিংয়ে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে দুই পেসার তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদ শুরুতে ভালো সুইং পেয়েছেন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে রানের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। তবে আফগানিস্তান কোনো উইকেট হারায়নি। দেখে-শুনে খেলার চেষ্টা করেছেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান।

ইনিংসের নবম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে আসেন রিশাদ হোসেন। আর নিজেদের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি। ইব্রাহিমকে ফিরিয়ে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন এই লেগ স্পিনার। ১৮ রান করে ইব্রাহিম ফেরায় ভাঙে ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আজমতউল্লাহ ওমরজাই। মুস্তাফিজের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়ার আগে ১২ বলে ১০ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

ধীরগতির ব্যাটিং করা গুরবাজ শেষ পর্যন্ত সাজ ঘরে ফেরেন রানের গতি বাড়াতে গিয়ে। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে রিশাদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৫ বলে ৪৩ রান। একই ওভারের চতুর্থ বলে গুলবাদিন নাইবকেও ফিরিয়েছেন রিশাদ।

এরপর মোহাম্মদ নবি-করিম জানাতরা চেষ্টা করেও রানের গতি বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে শেষ দিকে উইকেটে এসে ১০ বলে অপরাজিত ১৯ রানের ইনিংস খেলে আফগানদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন রশিদ খান। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। যদিও ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ।


ক্যারিবীয়দের দুরমুশ ব্যাটিং সাম্রাজ্য শাসন করে দ. আফ্রিকা সেমিফাইনালে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় শক্তির জায়গা ব্যাটিং। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে দক্ষ হলেও বিশ্বকাপের এবারের আসরের বেশির ভাগ ম্যাচেই তারা বাজিমাত করেছে বোলিং দিয়ে। এ ম্যাচে তাই ক্যারিবীয় অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ব্যাটিং বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার সংহারপূর্ণ বোলিংয়ের লড়াই হবে; এমনটাই অনুমেয় ছিল। ২২ গজেও সেটাই দেখা গেল। তবে সেই লড়াইয়ে জয়ী হলো প্রোটিয়া বোলাররাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সাম্রাজ্য শাসন করে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল চোকার্স-খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইংল্যান্ড রাতেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করায় এ ম্যাচটা দুই দলের জন্যই পরিণত হয়েছিল ডু অর ডাই। যারা জিতবে তারাই জায়গা করে নেবে সেমিফাইনালে। ঘরের মাঠে নিজ দেশকে শুভ কামনা জানাতে তাই গ্যালারি পূর্ণ করেছিল ক্যারিবীয় সমর্থকরা। শেষদিকের উত্তেজনায় উৎসবে মেতেছিল তারা। কিন্তু মার্কো ইয়ানসেনের এক ছক্কাতেই মিলিয়ে যায় সেই উৎসব। নীরবতা নেমে আসে স্যার ভিডিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। বৃষ্টি আইনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে চলে গেল এইডেন মার্করামরা।

বিশ্বকাপের এবারের আসরে গ্রুপ পর্বে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তবে সুপার এইটে এসে পুরোটাই বদলে গেছে তারা। নিজেদের ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। অন্যদিকে বিপরীত চিত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে। গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত খেলে ক্যারিবীয়রা ছন্দ হারিয়েছে সুপার এইটে এসে। প্রথম ম্যাচেই ইংলিশদের কাছে হেরে যায় তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালের আশা জাগালেও; দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে সেটা ফিকে হয়ে গেল।

ক্যারিবীয়রাও পুড়েছে পুরোনো অভিশাপেই। এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু কোনো দেশই স্বাগতিক হিসেবে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেনি। একই পরিণতি হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের।

স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ানদের ১৩৫ রানে আটকে রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের রান তাড়ায় দুই ওভারের পর বৃষ্টি নেমে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। পরে বৃষ্টি আইনে নতুন লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ১৭ ওভারে ১২৩। নানা নাটকীয়তা পেরিয়ে সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা ৩ উইকেট ৫ বল বাকি থাকতেই।

এ ম্যাচে স্কোয়াড সাজাতে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। উইকেট ও কন্ডিশনকে মাথায় রেখে একাদশে ফেরায় লেগস্পিনার তাবরিশ শামসিকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা ভেঙে দেন তিনিই। ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে আশা হয়ে থাকা দুই ক্যারিবীয় ব্যাটার কেইল মায়ার্স আর রোস্টন চেইজকে ফিরিয়ে তিনি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। তিন উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনিই। অন্য দুই স্পিনার কেশব মহারাজ ও মার্করামও ছিলেন দুর্দান্ত।

দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ার শুরুটা ছিল নাটকীয়। ইনিংসের প্রথম চার বলেই আকিল হোসেনকে তিন দফায় বাউন্ডারিতে পাঠান কুইন্টন ডি কক। পরের ওভারেই জোড়া ধাক্কায় প্রোটিয়াদের নাড়িয়ে দেন আন্দ্রে রাসেল। ফিরে যান দুই ওপেনার রিজা হেনড্রিকস (০) আর কুইন্টন ডি কক (১২)।

এরপরই বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। বিরতির পর মার্করাম ও ট্রিস্টান স্টাবস শুরু করেন ইতিবাচকভাবে। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে রান আসে ৪১। কিন্তু আলজারি জোসেফ বল হাতে নিয়েই থামান মার্করামকে (১৫ বলে ১৮)। এরপর হেনরি ক্লাসেন চড়াও হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১০ বলে ২২ করে ফিরে যান তিনি।

তবে রোস্টন চেইস আক্রমণে এসে আবার জমিয়ে দেন খেলা। ধুঁকতে থাকা ডেভিড মিলারকে (১৩ বলে ৪) বোল্ড করেন তিনি। পরে তিনি ফিরিয়ে দেন দারুণ খেলতে থাকা স্টাবসকেও (২৭ বলে ২৯)।

একটু পরে যখন কেশব মহারাজকেও বিদায় করেন চেইস, উল্লাসে তখন ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। কিন্তু ওই ওভারেই শেষ বলে দুর্দান্ত শটে চার মেরে সমীকরণ সহজ করে দেন কাগিসো রাবাদা। এরপর শেষ ওভারের প্রথম বলে ইয়ানসেনের ওই ছক্কায় ম্যাচ শেষ।

ম্যাচের প্রথম ভাগে টস জিতে বোলিং নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে সফলও হয়েছে তারা। প্রোটিয়া বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ। লড়াই করেছে কেবল প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা কেইল মায়ার্স আর অলরাউন্ডার রোস্টন চেইজ। ৩৪ বলে ৩৫ রান করেন মায়ার্স। আর ৪২ বল থেকে ৫২ রান করে চেইজ। এটাই সর্বোচ্চ আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তাদের ছাড়া দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পেরেছে আর দুইজন ব্যাটার। আন্দ্রে রাসেল (১৫) আর আলজারি জোসেফ (১১)। ২০ ওভার শেষ ৮ উইকেট ১৩৫ রান সংগ্রহ করে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ।

দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে উঠল ১০ বছর পর। এই গ্রুপ থেকে আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ঠিক হওয়ার পালা অন্য গ্রুপ থেকে।


ধুন্ধুমার বোলিং এই বিশ্বকাপের আকর্ষণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

আইসিসি স্বীকৃত ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট প্রিয় দর্শকদের বিনোদনের মাধ্যমও এই সংস্করণই। সাদা বলের এই ফরম্যাটের আকর্ষণ বাড়ায় ব্যাটে-বলের ধুন্ধুমার লড়াই। বিশেষ করে চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে দলগুলোর বড় ইনিংস খেলা। চলছে সেটারই মহাযজ্ঞ। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ আর মার্কিন মুল্লুকে বসেছে এবারের বিশ্বমঞ্চ। সেটা প্রায় শেষের দিকেও। কিন্তু দর্শক চাহিদার কতটুকু মেটাতে পেরেছে এবারের বিশ্বকাপ- সেই প্রশ্ন করা অমূলক নয়। ব্যাটারদের চার-ছক্কা ছাড়িয়ে এবারের বিশ্বকাপের আকর্ষণ হয়ে উঠেছে বোলাররা। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই রাজত্ব করছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ফিরেও খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি সেই ধারায়।

বিগত আসরগুলোকে ছাড়িয়ে সবদিক থেকে এবার সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড হয়েছে। সবচেয়ে আলোচনায় ছিল গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো। চলমান আসরে গ্রুপ পর্বে ম্যাচ হয়েছে ৩৭টি, এর মধ্যে ১৩টি যুক্তরাষ্ট্রে আর ২৪টি হয়েছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। রানও তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বীপ দেশগুলোতে। তবে গ্রুপ পর্ব এক নজরে দেখলে বোঝা যাবে যে, এখানে কতটা রাজত্ব ছিল বোলারদের। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে রাজত্ব করেছেন পেসাররা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্পিনারদের অধিপত্য। তাদের সামনে ব্যাটাররা ছিলেন জড়সড়, বড্ড নড়বড়ে!

চলতি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের রানরেট ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বনিম্ন। ৩৭ ম্যাচে রান হয়েছে ৬.৭১ গড়ে। এর আগে সর্বনিম্ন ৭.৪৩ রানরেট দেখা গিয়েছিল ২০২১ আসরে, সেটিও এবারের চেয়ে ওপরে। এ ছাড়া এবার উইকেট পড়েছে প্রতি ১৭.৮০ রানে একটি করে, এটি এই সংস্করণের বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানে উইকেট পড়ার রেকর্ড। অথচ ২০১০ ও ২০২২ আসর ছিল এদিক থেকে সর্বনিম্ন (২১.৪২)।

এবারের বিশ্বকাপ হচ্ছে দুই অঞ্চলে; উইকেটের চরিত্রও দেখা গেছে দুই রকমই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে প্রথমবার সহযোগী আয়োজক হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে অল্প সময়ের মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছিল ক্রিকেটীয় অবকাঠামো। পিচগুলো বানিয়ে আনা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে। নিউইয়র্ক, ডালাস ও ফ্লোরিডার পিচের সেই ১৩ ম্যাচে পেসাররা ১৭.৫০ গড়ে রান দিয়ে ১২৫ উইকেট এবং স্পিনাররা ২১.৬ গড়ে ৩৪ উইকেট শিকার করেন। সেখানে পেসারদের দাপটই ছিল বেশি।

অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয়টি ভেন্যু ছিল স্পিনারবান্ধব। সেখানে হওয়া ২৪ ম্যাচে ঘূর্ণি বোলাররা ১৯.৪৬ গড়ে ১১৬টি উইকেট নেন। এর মধ্যে ছিল একজন বোলারের পাঁচ উইকেট শিকারসহ ছয়বার চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি।

চলতি আসরে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার একটি বাজে রেকর্ডও হয়েছে। এবার দলীয় ১০০ রানের আশপাশে অলআউট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১২ বার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে এর ধারেকাছে নেই কোনো আসর। এর আগে সর্বোচ্চ ৮ বার করে ১০০ রানের আশপাশে অলআউট হওয়ার নজির দেখা গিয়েছিল ২০১৪ ও ২০২১ বিশ্বকাপে। এ ছাড়া এবার সর্বোচ্চ তিনবার ৫০ রানের নিচে অলআউটও হয়েছে দুই দেশ।

বোলারদের এমন দাপটের বিশ্বকাপেও কয়েকটি ম্যাচে দর্শকদের আকাঙ্ক্ষিত চার-ছক্কার ফুলঝুরি ফোটাতে দেখা গেছে ব্যাটারদের। নিকোলাস পুরান, জস বাটলার, অ্যারন জোন্স, কুইন্টন ডি ককরা কয়েকটি ম্যাচে হাত খুলে খেলেছে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল দুই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর ট্রাভিস হেড। গ্রুপ পর্বের রানের সেই শূন্যতা কাটিয়ে সুপার এইট পর্বে কিছুটা রানের দেখা মিলেছে।


সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে আফগানিস্তান-বাংলাদেশ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইট নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই যেন পথ হারিয়ে ফেলেছে টাইগাররা। সুপার এইটের প্রথম দুই ম্যাচেই জুটেছে হার। তাতে সেমিফাইনালের আশা এখন ফিকে হয়ে গেছে নাজমুল শান্তর দলের। তবে খাতা-কলমের হিসাব-নিকাশে নিভু নিভু করে জ্বলছে এখনো সেমিফাইনালের আশার প্রদীপ। সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতেই শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর সাড়ে ৬টায়। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

এবারের বিশ্বকাপের বড় চমকজাগানিয়া দল আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সেটার শুরু করেছিল রশিদ খানের দল। এরপর সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে লিখেছে আরেকটি রূপকথার উপাখ্যান। দলগত পারফরম্যান্সে বেশ ভালো অবস্থানেই আছে আফগানরা।

অন্যদিকে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াই করেও হেরেছিল টাইগাররা। তবে পরের দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করেছিল। তবে দলগত পারফরম্যান্সে টাইগারদের পাস মার্ক পাওয়া নিয়েই চলবে টানাটানি, যা প্রকাশ পেয়েছে সুপার এইটে এসে। দুই ম্যাচেই হেরেছে তারা।

পুরো টুর্নামেন্টেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে ব্যাটিং ব্যর্থতা। ছিল না ধারাবাহিকতার লেশমাত্র। বিশেষ টপঅর্ডার যেন রান করতেই ভুলে গেছে। লিটন, তানজিদ, শান্ত, সাকিবরা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। সেই প্রেশার নিতে গিয়ে ডুবেছে মিডল অর্ডারও। তবে কিছুটা আশার খবর হলো নাজমুল শান্ত রানে ফিরেছে। তবে তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে এখনো প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

আফগান ব্যাটিং লাইনের অবস্থাও অনেকটা বাংলাদেশের মতোই। টাইগারদের ব্যর্থ টপ অর্ডার আর আফগানদের ব্যর্থ মিডল অর্ডার। ওপেনিংয়ে রহমানুল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান রান পেলেও বাকিরা দলের হাল ধরতে পারেনি। আফগানিস্তান যে দুটি ম্যাচে হেরেছে সেখানে টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর আর দায়িত্ব নিতে পারেনি মিডল অর্ডার।

তাই এ ম্যাচে বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে আফগান দুই ওপেনারকে দ্রুত ফেরানো। তাহলে হয়তো অল্প রানেই আটকে রাখা যাবে তাদের।

এ ম্যাচে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছে একটি পরিসংখ্যান; আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে কখনও জিততে পারেনি আফগানিস্তান। ৫০ ওভার বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনোটিতেই নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র একবার দেখা হয়েছে দুই দলের। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে মাত্র ৭২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেটের জয় পেয়েছিল টাইগাররা। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। এর মধ্যে বাংলাদেশের জয় ৫টিতে ও আফগানদের ৬টিতে।

বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছে ম্যাচের ভেন্যুও। সেন্ট ভিনসেন্টের এই ভেন্যু বাংলাদেশের পয়মন্ত। কারণ এই ভেন্যুর উইকেট মন্থর গতির, যা টাইগারদের ঘরের মাঠের মতো। তাই ফেভারিট বাংলাদেশই। সাধারণত ঘরের মাঠে এ ধরনের উইকেটে সারা বছরই খেলে থাকে টাইগাররা। এ জন্য এমন উইকেটের কারণে বেশি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কাছে টানা দুই হারের কারণে বিশ্বকাপের সেমিতে ওঠার পথ কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশের। তারপরও অনেক যদি ও কিন্তুর ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল। প্রথমত ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তাহলেই সেমিফাইনালের সুযোগ তৈরি হবে টাইগারদের। কিন্তু আজ সোমবার রাতে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া জিতলে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলতে নামার আগেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে টাইগারদের।

বিষয়:

অস্ট্রেলিয়া-ভারতের খেলায় তীক্ষ্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার উষ্ণ স্পন্দন দেখা যাবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম দুই পরাশক্তি ভারত আর অস্ট্রেলিয়া। সাফল্যের বিচারে অবশ্য এগিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়াই। তবে সেসব বাদ দিলে মাঠের খেলায় দুই দলের লড়াইটাই থাকে নজরকাড়া। সেটা ছাড়িয়ে যেতে পারে যেকোনো থ্রিলার মুভিকেও। ২২ গজের ঝাঁজালো লড়াইয়ের উত্তেজনা ছুঁয়ে যায় গ্যালারি। তীব্র লড়াইয়ের উষ্ণ স্পন্দনটাই থাকে পুরো সময়জুড়ে। দুই দলের ক্রিকেট মহারণে দেখা মেলে গ্যালারিতে হলুদ-নীলের আবরণ। এমন একটা লড়াই আবারও দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের লড়াইয়ে আজ মাঠে নামছে ভারত আর অস্ট্রেলিয়া। সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

বিশ্বকাপে দুই দলই আছে সেরা ছন্দে। এখন পর্যন্ত আসরের একমাত্র অপরাজিত দল ভারত। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে সুপার এইটের দুই ম্যাচ; কোনো হার নেই রোহিত শর্মাদের। একই ধারায় আছে অস্ট্রেলিয়াও। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত ছিল মিচেল মার্শের দল। সুপার এইটের যাত্রাও শুরু করেছিল জয় দিয়ে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে আসরের একমাত্র হারটি এসেছে আফগানদের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে সেটা ভুলে গিয়ে আত্মবিশ্বাসী লড়াকু অস্ট্রেলিয়াকেই দেখা যাবে।

মাঠের খেলায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া কেউ কাউকে নাহি ছাড়ি; সমানে সমান। দুই দলের শক্তিমত্তাই বেশ শক্তিশালী। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রিশাব পান্থ, সুরিয়া কুমার, শিভাম ডুবে, হার্দিক পান্ডিয়ারা আছে সেরা ছন্দে। কোনো কারণে টপঅর্ডার ব্যর্থ হলেও দায়িত্ব নিতে জানে মিডল অর্ডার। দলের হাল ধরেন হার্দিক, সুরিয়া কুমাররা।

ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিচ, টিম ডেভিড, ম্যাথিউ ওয়েডদেরও ফেলে দেওয়ার সুযোগ নেই। আর ভারতের বিপক্ষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বরাবরই মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটা যেন সেদিনই খেলেন ম্যাক্সওয়েল। তবে অস্ট্রেলিয়ার কিছুটা চিন্তার কারণ দুই ওপেনার ব্যর্থ হলে বাকিদের সেভাবে হাল ধরতে না পারা।

বোলিংয়ে অবশ্য কিছুটা এগিয়ে রাখতে হবে অস্ট্রেলিয়াকেই। মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, মিচেল মার্শরা অভিজ্ঞতায় ঢের এগিয়ে আর্শদ্বীপ শিং, মোহাম্মদ সিরাজদের চেয়ে। ব্যতিক্রম শুধু জাসপ্রিত বুমরাহ; তবে তিনিও পিছিয়ে অ্যাডাম জাম্পার চেয়ে। গতি কিংবা ভ্যারিয়েশনেও দক্ষ অজি বোলাররা। এ ম্যাচে বেশ ভালো পরীক্ষাই নেবে ভারতের ব্যাটারদের।

শেষ ম্যাচে আফগানদের কাছে হারলেও অস্ট্রেলিয়ার বড় আত্মবিশ্বাসের জায়গা শেষ দুটি আইসিসি টুর্নামেন্ট। ভারতের ঘরের মাটিতেই তাদের হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছেই।

তবে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি পরিসংখ্যান কথা বলছে ভারতের পক্ষেই। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ৩১ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে ভারতের জয় ১৯টিতে আর অস্ট্রেলিয়ার ১১টিতে। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয়ের দিক দিয়েও এগিয়ে ভারত। পাঁচবারের মোকাবিলায় ৩ বার জিতেছে টিম ইন্ডিয়া।

এবারের আসরে সুপার এইটে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত। কিন্তু তারপরও এখনো সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি রোহিত-কোহলিদের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিতলেই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হবে ভারতের। অবশ্য হেরে গেলেও সেমির সুযোগ থাকবে ভারতের সামনে। সে ক্ষেত্রে কষতে হবে হিসাব-নিকাশ।

বাংলাদেশের কাছে আফগানিস্তান হারলে অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে সেমিতে খেলবে ভারত। আর যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তান জিতে যায়, তখন রান রেট বিবেচনা করতে হবে। বর্তমানে ২.৪২৫ রান রেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ভারত। ০.২২৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া। -০.৬৫০ রান রেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আফগানিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে না হারলেও সেমিতে চলে যাবে ভারত।

তবে রান রেটের সমীকরণ নিয়ে না ভেবে ভারতের বিপক্ষে যেকোনো মূল্যে জয় চায় অস্ট্রেলিয়া। অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে যাওয়াটা হতাশার। তবে যোগ্য দল হিসেবে জিতেছে আফগানরা। এখন আমরা পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। ভারতের বিপক্ষে জিতে সেমিফাইনালে খেলতে চাই।’

প্রথম দুই ম্যাচ জিতেও সেমিফাইনাল নিশ্চিত না হওয়ায় চিন্তা আছে ভারতেরও। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামবে টিম ইন্ডিয়া বলে জানান মিডল অর্ডার ব্যাটার শিবম দুবে, ‘আমরা গ্রুপ পর্ব ও সুপাই এইটে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালের খেলা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’

বিষয়:

ক্যারিবীয়দের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ব্যাটিং আর দ.আফ্রিকার সংহারপূর্ণ বোলিংয়ের লড়াই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ক্রিকেটের মারকাটারি সংস্করণ টি-টোয়েন্টি। ব্যাটে-বলের ধুন্ধুমার লড়াইয়ের এবারের বিশ্ব আসরের এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে; স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের মূলমন্ত্র অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ব্যাটিং। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার টানা জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে তাদের সংহারপূর্ণ বোলিং। হারতে হারতেও বোলারদের নৈপুণ্যে ম্যাচ জিতেছে প্রোটিয়ারা। তাই সুপার এইটে এ দুই দলের একটা ধুন্ধুমার লড়াই দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। অ্যান্টিগুয়ার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় সেই লড়াই দেখা যাবে। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসির সম্প্রচার করবে।

এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম শক্তিশালী দুই দল দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত টানা ৬ ম্যাচে অপরাজিত প্রোটিয়ারা। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের সবগুলোই জয়ের পর সুপার এইটের দুই ম্যাচও জয় দিয়ে রাঙিয়েছে তারা। তাই বেশ আত্মবিশ্বাসী এইডেন মার্করামের দল। সবগুলোতে না জিতলেও বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে ক্যারিবীয়ানরাও। হেরেছে শুধু সুপার এইটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ধাক্কা সামলে পরের ম্যাচেই আবার যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিয়েছে। ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস।

দুই দলের লড়াইটা যে সমানে সমান হবে সেটার জানান দিচ্ছে মুখোমুখি পরিসংখ্যান। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২২ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলই সমান ১১টি করে ম্যাচ জিতেছে। তবে বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। চারবারের দেখায় তিনবার জিতেছে তারা। প্রথমবার জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৭, ২০০৯ ও ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে জয় পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

তবে সবশেষ দেখার স্মৃতি পোড়াবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বিশ্বকাপের এক সপ্তাহ আগে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বলছে শক্তির বিচারে দুই দলই সমানে সমান, কেউ কাউকে নাহি ছাড়ে। শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, জনসন চার্লস, রোভম্যান পাওয়েল, শেরফান রাদারফোর্ড ও আন্দ্রে রাসেলদের নিয়ে গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন যেকোনো দলের জন্যই আতঙ্কের। তবে পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই রেজা হেন্ডরিক্স, কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, এইডেন মার্করামদের নিয়ে গড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে থাকবে তাদের অলরাউন্ডার শক্তির জন্য। আন্দ্রে রাসেল, রোভম্যান পাওয়েল, রোস্টন চেজরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তবে বোলিংয়ে এগিয়ে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নরকিয়া, কেশাব মাহারাজরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

দুই দলেরই লড়াইটা এখন সেমিফাইনাল খেলার। সে লক্ষ্যে অবশ্য স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাই। সুপার এইটে ২ ম্যাচ খেলে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রকে ১৮ রানে ও ইংল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়েছে তারা। অন্যদিকে দুই ম্যাচ খেলে একটি জয় ক্যারিবীয়দের। টেবিলের শীর্ষে থাকলেও এখনও সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি প্রোটিয়াদের। সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতলে বা গ্রুপের অন্য ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইংল্যান্ড হারলেই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হবে দক্ষিণ আফ্রিকার।

তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলেও প্রোটিয়াদের সুযোগ আছে সেমিফাইনাল খেলার। ইংল্যান্ড যদি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারে তাহলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই সেমি খেলবে তারা। আর যদি জেতে তাহলে হিসাব কষতে হবে রান রেটের। রান রেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে প্রোটিয়ারা। বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান রেট ১.৮১৪, দক্ষিণ আফ্রিকার ০.৬২৫ এবং ইংল্যান্ডের ০.৪১২। তবে রান রেটের হিসাব না কষে টানা সপ্তম জয়ের স্বাদ নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে চায় প্রোটিয়ারা।

দলের অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বলেন, ‘টানা ছয় ম্যাচ জিতে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। আমাদের লক্ষ্য জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা।’

গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইংল্যান্ড হারলে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু নিজ নিজ ম্যাচে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি জিতে যায়, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে রান রেট বিবেচনা করতে হবে অন্য দুই দলকে।

রান রেট নিয়ে চিন্তা না করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়কে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমনটাই জানিয়েছেন ক্যারিবীয় ওপেনার শাই হোপ, ‘আমাদের রান রেট ভালো আছে। এ জন্য আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে না জিতলে এই রান রেট কাজে আসবে না, যদি অন্য ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিতে যায়। এ জন্য আমাদের প্রধান কাজ হলো- জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া। এই কাজটি আমাদের আগে করতে হবে।’


ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ঝঙ্কারের সামনে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবারের বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজকও তারা। তবে সেসব ছাড়িয়ে দুই দলের লড়াইটা এখন সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার। সুপার এইটে ইতোমধ্যেই দুটি করে ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড আর যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের শেষ ম্যাচে বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে বাংলাদেশ সময় আগামীকাল রাত সাড়ে ৮টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। বাংলাদেশ বেতার খেলার সরাসরি ধারাবিবরণী সম্প্রচার করবে।

টি-টোয়েন্টিতে এবারই প্রথম নিজেদের বিপক্ষে খেলতে নামবে ইংল্যান্ড আর যুক্তরাষ্ট্র। তাই মুখোমুখি পরিসংখ্যানে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই কাউকেই। তবে শক্তির বিচার, ক্রিকেটারদের প্রোফাইল-পরিসংখ্যান-অভিজ্ঞতা কিংবা সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স; সবদিক থেকেই এগিয়ে থাকবে ইংলিশরা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। বড় ম্যাচের চাপ নেওয়ার অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ তারা।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন বর্তমানে বেশ ছন্দে আছে। দায়িত্ব নিয়ে খেলার সামর্থ্যও আছে তাদের। টপঅর্ডারে ফিল সল্ট, জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টোরা নিজেদের দিনে বিশ্বসেরা। মিডল অর্ডারে মঈন আলি কিছুটা ভুগলেও হ্যারি ব্রোক, লিয়াম লিভিস্টোনরা আছে দারুণ ছন্দে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল তারা।

বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের এখন বড় ভরসার নাম লেগস্পিনার আদিল রশিদ। এবারের বিশ্বকাপে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিপক্ষের রান আটকে চাপ তৈরি করে উইকেট আদায়ের কাজটা তিনি বেশ ভালো করতে পারেন। রিচ টপলি, জোফরা আর্চার, স্যাম কারেনরা বিশ্ব সমাদৃত বোলার। সুতরাং এখানেও ইংলিশদের আধিপত্য বেশ।

সুপার এইটের দুই ম্যাচেই তাণ্ডব চালিয়েছে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। প্রথম ম্যাচে টপঅর্ডার আর দ্বিতীয় ম্যাচে মিডল অর্ডাররা। তৃতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকেও মুখোমুখি হতে হবে এমন কিছুর। সেখানে খুব একটা সুবিধা করার কথা নয় যুক্তরাষ্ট্রের।

সুপার এইটে এখন পর্যন্ত ২টি করে ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে এক ম্যাচ জিতেছে ইংলিশরা। প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেও দ্বিতীয় ম্যাচে ধরাশায়ী হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। অন্যদিকে দুই ম্যাচের দুটিতেই পরাজিত হওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপপর্বে চমক দেখালেও, সুপার এইটে নিজেদের সেরাটা দিতে পারছে না তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৮ রানে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। তবে শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র।

সুপার এইটের দুই ম্যাচের একটিতে হেরে যাওয়ায় সেমির দৌড়ে ভালোভাবে টিকে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই ইংল্যান্ডের। শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড জিতলে ও অন্য ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারলে সেমির টিকিট পাবে ইংলিশরাই।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে গেলেও সেমির সুযোগ থাকবে ইংল্যান্ডের। সেক্ষেত্রে যেতে হবে জটিল সমীকরণে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তখন রান রেটে এগিয়ে থাকলে সেমিতে খেলার সুযোগ থাকছে ইংল্যান্ডের। বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান রেট ১.৮১৪, ইংল্যান্ডের ০.৪১২ ও যুক্তরাষ্টের -২.৯০৮।

আবার যদি গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় পায়, তখন দক্ষিণ আফ্রিকাসহ এই তিন দলের রান রেট বিবেচনা করা হবে। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্টের সঙ্গে ০.৬২৫ রান রেট প্রোটিয়াদের। তাই শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে কেউ হারলেই সেমির টিকিট পেয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না ইংল্যান্ড। ওপেনার ফিল সল্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই আমাদের। এ ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে দল। যাতে রান রেটও বাড়িয়ে নেওয়া যায়। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার পরিকল্পনা আমাদের।’

সেমিফাইনালের আশা ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্রও, জয়ের জন্যই মাঠে নামবে তারা। দলের ওপেনার আন্দ্রিস গাউস বলেন, ‘শেষ ম্যাচে জিতলেও সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা থাকবে আমাদের। যদি রান রেট ভালো থাকে। কিন্তু আগে জিততে হবে। আমাদের জন্য কাজটি অনেক কঠিন। তার পরও অন্যান্য ম্যাচের মতো আমরা এবারও জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’


ভারতের আত্মবিশ্বাসের অনুরণন ভাঙতে হবে বাংলাদেশকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ইতিহাস বলে ২২ গজে যতবারই মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ আর ভারত, ততবারই ছড়িয়েছে উত্তেজনার পারদ। মাঠের খেলায় রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে প্রতিবেশী দুই দেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় অনেকটা রাইভাল দলে পরিণত হয়েছে এখন বাংলাদেশ-ভারত। মাঠের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গ্যালারি থেকে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে। দুই দলের সমর্থকরা মেতে উঠেছে উন্মাদনায়। এমন আরেকটি দিন কাল। বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ আর ভারত। অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে।

উত্তেজনা ছাড়িয়ে এ ম্যাচে বাংলাদেশের বড় লক্ষ্য থাকবে সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখা। ভারতের বিপক্ষে হোঁচট খেলেই বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে যাবে টাইগারদের। তাই এ ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্যই থাকবে জয় এবং জয়। তবে সেটি যে সহজ হবে না, সেটার জানান দেয় দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স।

দীর্ঘদিন ধরেই ব্যর্থতার চাদরে মোড়ানো টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও চলমান ছিল ব্যর্থতার সেই ধারা। ফলে হার দিয়েই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের সুপার এইট পর্ব। বিপরীতে দারুণ ছন্দে আছে ভারত। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের সবগুলোই জিতেছিল তারা। সেই ধারা ধরে রেখেছে সুপার এইটেও; প্রথম ম্যাচে আফগানদের হারিয়েছে বেশ বড় ব্যবধানেই। তাতে বেশ আত্মবিশ্বাসীই ভারত শিবির।

মুখোমুখি পরিসংখ্যানও এগিয়ে রাখছে ভারতকেই। ক্রিকেটের এ সংক্ষিপ্ত সংস্করণে একে অপরের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চারবার দেখা হয়েছে দুই দলের। সব ম্যাচই জিতেছে টিম ইন্ডিয়া।

এ ম্যাচে দুই দলের জন্যই বড় একটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে ক্লান্তি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেলার ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় পরে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। টাইগারদের চেয়ে একটু বেশি সময় পেয়েছে ভারত। কিন্তু এক জায়গায় পিছিয়ে তারা। ভ্রমণের ক্লান্তি পোহাতে হবে ভারতকে। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে বার্বাডোজ থেকে অ্যান্টিগায় আসতে হবে তাদের। কিন্তু ভেন্যু পরিবর্তন বা ভ্রমণ করতে হবে না টাইগারদের।

একে তো ফর্মহীনতায় ভুগছে বাংলাদেশ; তার ওপর ভারতের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ইতোমধ্যেই ডেথ ওভার কিংবা ইনিংসের শুরুর দিকে ভয়ংকর রূপ দেখাচ্ছে জাসপ্রিত বুমরাহ। স্লোয়ারে ব্যাটারদের নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে হার্দিক পান্ডিয়া। নতুন বলে সুইংয়ের পসরা সাজিয়ে বসাচ্ছেন আর্শদ্বীপ সিং। স্পিনেও ভয়ংকর ভারত।

ব্যাটিংয়েও দুর্দান্ত ছন্দে টিম ইন্ডিয়া। সুরিয়া কুমার, রিশাব পান্থ, হার্দিক পান্ডিয়ারা দায়িত্ব নিচ্ছেন। সেটাকে ভিন্ন মাত্রা দিচ্ছে রোহিত, কোহলিদের অভিজ্ঞতা। সবমিলিয়ে দারুণ ছন্দে টিম ইন্ডিয়া।

টপ অর্ডার ব্যাটাররা ফর্মে ফেরার পথে থাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার ভালো সুযোগ এখনো আছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

ভারতের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে বোলারদের। সেই সঙ্গে জ্বলে উঠতে হবে ব্যাটারদেরও। বিশেষ করে পাওয়ার-প্লেকে কাজে লাগাতে হবে ভালোভাবে।


banner close