মরক্কোর অ্যাটলাস লায়োনেসেস দলের ডিফেন্ডার নউহাইলা বেনজিনা। প্রথমবারের মতো নারী ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছেন ২৫ বছর বয়সি এই খেলোয়ার। বিশ্বকাপের মঞ্চে সুযোগ পেয়েই গড়লেন ইতিহাস।
চলতি নারী বিশ্বকাপ ফুটবলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে রোববার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে আফ্রিকান মুসলিম দেশ মরক্কো। ম্যাচের শুরুর একাদশেই রাখা হয় ডিফেন্ডার নউহাইলা বেনজিনাকে। যিনি মাঠে নামেন মাথায় হিজাব বেধে এবং পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরে। শুধু বিশ্বকাপই নয়, নারী ফুটবলের সিনিয়রদের কোনো বৈশ্বিক কিংবা মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে এই প্রথম কোনো মুসলিম ফুটবলার মাথায় হিজাব পরে মাঠে নামার ইতিহাস গড়লেন।
একসময় নারী ফুটবলে কোনো ফুটবলার মাথায় হিজাব বেঁধে খেলতে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ফিফা। তাদের যুক্তি ছিল, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া। তবে ২০১৪ সালেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল ফিফা। অ্যাক্টিভিস্ট, অ্যাথলেট, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং ফুটবল কর্মকর্তাদের আইনি লড়াইয়ের পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। ২০১৪ সালে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রায় ৯ বছর পর এই প্রথম কোনো মুসলিম নারী ফুটবলার মাথায় হিজাব বেঁধে এবং পুরো শরীর পোশাকে ঢেকে ফুটবল খেলতে নামলেন।
মুসলিম উইমেন ইন স্পোর্টস নেটওয়ার্কের কো-ফাউন্ডার আসমাহ হেলাল বলেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে আরও অনেক অনেক মুসলিম নারী এবং বালিকারা বেনজিনাকে দেখে উৎসাহী হবে। শুধু একজন খেলোয়াড় হিসেবে উৎসাহী হবে তা নয়, বরং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী থেকে শুরু করে কোচ এবং অন্য খেলাগুলোয়ও এভাবে মেয়েদের আগমন ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।’
বেনজিনা মরক্কোর নারী ফুটবল লিগে নিয়মিত খেলে থাকেন। তিনি খেলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফোর্সেস আর্মড রয়্যাল ক্লাবের হয়ে। মরক্কোর শীর্ষ নারী ফুটবল লিগে তার ক্লাব বর্তমানে টানা অষ্টমবার চ্যাম্পিয়ন।
চলতি নারী বিশ্বকাপে মেলবোর্নে জার্মানির সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলে হেরে গিয়েছিল মরক্কো। ওই ম্যাচে খেলেননি বেনজিনা। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে অ্যাডিলেডে প্রথম একাদশেই খেলার সুযোগ পান তিনি। এই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মরক্কান মেয়েরা।
এই ম্যাচে ডিফেন্সিভ লাইনে খুব দারুণ ভূমিকা রাখেন বেনজিনা। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কাউন্টার অ্যাটাক ঠেকাতে গিয়ে ম্যাচের শেষের দিকে একটি হলুদ কার্ডও দেখতে হয়েছে তাকে।
প্রথম আরব এবং উত্তর আফ্রিকান দেশ হিসেবে নারী বিশ্বকাপে খেলছে মরক্কো। মরক্কো অধিনায়ক গিজলানে চেবাক বলেন, ‘আমরা গর্বিত প্রথম আরব দেশ, যারা নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছি।’
অনেকদিন ধরেই হাসছিল না মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। চলতি ডিপিএলে মোহামেডানের জার্সিতেও কাটছিল না সুন্দর সময়। অবশেষে হাসলো অভিজ্ঞ এই তারকার ব্যাট। দায়িত্ব নিয়ে হাল ধরলেন দলের। মুশফিকের রানে ফেরার দিনে বৃথা গেছে অমিত হাসানের সেঞ্চুরি। মোহামেডানের জয়ের দিনে বড় জয় পেয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী। গুলশান হারিয়েছে শাইনপুকুরকে।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৭ রানের পুঁজি দাঁড় করায় মোহামেডান। জবাব দিতে নেমে ৪৭.২ ওভারে ২১৩ রান তুলতে পেরেছে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ৭৪ রানের বড় জয় পেয়েছে সাদা-কালোরা। চার নম্বর মাঠে আবাহনীর ২৯০ রানের জবাবে প্রাইম ব্যাংক গুটিয়ে গেছে মোটে ১৫৭ রানেই। আবাহনীর জয় ১৩৩ রানের। মিরপুরে গুলশানের দেওয়া ১৭৮ রানের লক্ষ্যও ছুঁতে পারেনি শাইনপুকুর। গুটিয়ে গেছে ১৭৩ রানেই।
১০ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে গুলশানের সুপার লিগ খেলার ভালো সম্ভাবনা আছে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটিতে প্রাইম ব্যাংকের সাথে জিততে পারলে কারও দিকে না তাকিয়ে সরাসরি সুপার লিগে চলে যেতে পারবে গুলশান। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে আবাহনী। আর ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে মোহামেডান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় মোহামেডান। তবে সেই চাপ সামলে বড় লক্ষ্যই দাঁড় করায় দলটি। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান মুশফিকুর রহিমের। ৫৭ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় ৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন তিনি। এছাড়াও মহিদুল ইসলাম অঙ্কান ৮৩ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৬৪, ওপেনার রনি তালুকদার ৪৬, অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয় ৪২ রান করেছেন।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের দেওয়া ২৮৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় অগ্রণী ব্যাংক। এক অমিত হাসান ছাড়া দলের কেউই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। একপ্রান্ত আগলে রেখে অমিত দারুণ ইনিংস খেলে পান সেঞ্চুরিও। নবম ব্যাটার হিসেবে তিনি সাজঘরে ফেরার আগে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন। ১২৩ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় অমিত নিজের ইনিংসটি সাজান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে মার্শাল আইয়ুবের ব্যাট থেকে।
মোহামেডানের হয়ে ২২ রানে মিরাজ তিনটি এবং ৩৪ রানে ইবাদত আরও তিনটি উইকেট শিকার করেন। দুই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম নেন দুটি করে উইকেট। অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে ৪৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন আরিফ আহমেদ।
বিকেএসপিতে টস জিতে শান্ত ও পারভেজের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে আবাহনীর বোলাদের তোপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। ওপেনার নাঈম শেখ (৭৩) ও মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম হোসেন (৪০) ছাড়া আর কেউই বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি। এর বাইরে দুজন কেবল দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পেরেছেন।
আবাহনীর এই জয়ে বড় অবদান মোসাদ্দেকের, ব্যাট হাতে ৩৭ রানের পর বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে প্রাইম ব্যাংককে হারানোর মূল নায়ক তিনিই। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে হাফ সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত ও পারভেজ হোসেন ইমন পার্শ্বনায়ক হয়ে উঠেছেন।
মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৬ রানের ওপেনিং জুটি পায় গুলশান। অধিনায়ক আজিজুল তামিম ১৬ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। এরপর শাইনপকুরের বোলারদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে তারা। গুলশানের মিডল অর্ডার ব্যাটার সাকিব শাহরিয়ারের দায়িত্বশীল ইনিংসে ৪১ ওভারে ১৭৮ রান করতে পারে ঢাকা লিগে প্রথমবার খেলতে নামা দলটি। শাহরিয়ার সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। ওপেনার জাওয়াদ আবরার খেলেন ৩৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংস।
জবাবে শাইনপুকুর জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে মইনুল ইসলাম তন্ময় ও নিয়ন জামান ৪০ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৪৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনেই মোড়ক লাগে শাইনপুকুরের। স্কোরবোর্ডে কোনও রান না উঠিয়ে দ্রুত তিন ব্যাটার সাজঘরে ফেরেন। এই বিপর্যয় অবশ্য কাটিয়ে উঠেছিল শাইনপুকুর। রায়হান রাফসান ও শাহরিয়ার সাকিব চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু গুলশানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৩ ওভারে ১৭৩ রান তুলে অলআউট হয় তারা। সর্বোচ্চ ৪০ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে।
গুলশানের বোলারদের মধ্যে আজিজুল হাকিম তামিম নেন তিনটি উইকেট। তিনটি উইকেট শিকার করেন নিহাদুজ্জামান। শাইনপুকুরের নিয়ন জামান সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। রাহিম আহমেদ নেন দুটি উইকেট।
চলতি মাসে ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। আসন্ন সিরিজটি সামনে রেখে গতকাল প্রথম টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দলে নেই তাসকিন আহমেদ। চোটের কারণে খেলতে পারছেন না অভিজ্ঞ এই পেসার। টেস্ট দলে প্রথমবার জায়গা করে নিয়েছেন আরেক পেসার তানজিম হাসান।
চোটের কারণে সবশেষ সিরিজে না থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন অধিনায়ক হয়েই। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সেই সিরিজের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ এবার থাকছেন সহ-অধিনায়ক হিসেবে। ক্যারিবিয়ায় ওই সিরিজে চোটের কারণে যেতে না পারা মুশফিকুর রহিমও ছিলেন দলে। অন্য দুই সংস্করণকে বিদায় জানানো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এখন শুধু টেস্ট ক্রিকেটেই খেলবেন বাংলাদেশ দলে।
এ ছাড়া দলে ফিরেছেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও অফ স্পিনার নাঈম হাসান। পাকিস্তান সুপার লিগে খেলতে ছুটি পাওয়া লিটন কুমার দাসের না থাকা নিশ্চিত ছিল আগে থেকেই। মঙ্গলবারই দেশ ছেড়েছেন তিনি। কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে জাকের আলি ছাড়াও স্কোয়াডে আছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। মুশফিক টেস্টে কিপিং করছেন না অনেক দিন ধরেই।
সবশেষ সিরিজের দল থেকে বাদ পড়ার তালিকায় আছেন হাসান মুরাদ, শরিফুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন। ক্যারিবিয়ান সফরের দলে ডাক পেলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়েই জায়গা হারালেন বাঁহাতি স্পিনার মুরাদ।
পায়ের পুরোনো চোটের সঙ্গে লড়ছেন তাসকিন। বিবৃতিতে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি বলেছেন, ‘আপাতত বাম পায়ের একিলিস টেন্ডন টিস্যুর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন তাসকিন। এই সিরিজ তিনি খেলতে পারবেন না।’
প্রথমবার ডাক পাওয়া তানজিম এর মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৬ ম্যাচে তার শিকার ২৫ উইকেট। গত জাতীয় ক্রিকেট লিগে এক ম্যাচ খেলে কাঁধের চোটে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি।
পেস বিভাগে তানজিম ছাড়াও থাকছেন নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও খালেদ। প্রথম টেস্টের পর পিএসএল খেলতে চলে যাবেন নাহিদ।
বিসিবির ভিডিওবার্তায় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে চোটের কারণে বাইরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা ইবাদত হোসেন চৌধুরিকে বিবেচনায় রেখেছেন তারা। আপাতত ফিজিও ও ট্রেনারের পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি। সবুজ সংকেত পেলেই দলে ফেরানো হবে তাকে।
দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে আগামী ১৫ এপ্রিল ঢাকায় পা রাখবে জিম্বাবুয়ে দল। এরপর ২০ এপ্রিল প্রথম টেস্টে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে লড়বে দুই দল। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ দল
ব্যাটার: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিক।
অলরাউন্ডার: মেহেদী হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক)।
বোলার: তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব।
‘শো ইসরায়েল দ্য রেড কার্ড’ যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, ‘ইসরায়েলকে লাল কার্ড দেখাও।’ সেল্টিক বনাম বায়ার্ন মিউনিখের ম্যাচে দেখা গেছে এমনই দৃশ্য। নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছেন সমর্থকরা। পাশে দাঁড়িয়েছেন বিপর্যস্ত মানবতার।
ফিলিস্তিনে ইহুবাদী ইসরায়েলের সন্ত্রাসী হামলায় বিপর্যস্ত মানবিকতা। বোমার স্প্লিন্টারে উড়ছে মানুষের মৃতদেহের খণ্ড খণ্ড অংশ। ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র এই ভূখণ্ড। হাসপাতাল, ধর্মীয় উপাসনালয় এমনকি আশ্রয় কেন্দ্রও বাদ যাচ্ছে না ইসরায়েলের কাপুরুষোচিত হামলা থেকে। সবশেষ ১৮ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক।
দখলদার সন্ত্রাসী ইসরায়েলের বর্বোরোচিত হামলার প্রতিবাদ করে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অন্যান্য পেশার মানুষের সঙ্গে প্রতিবাদে মুখর ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরাও। ইউরোপ থেকে বাংলাদেশ; প্রতিবাদ করছেন ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা। নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা। সেই কাতারে শামিল হয়েছেন মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, জামাল ভূঁইয়া, তাসকিন, শরিফুলরা। বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের প্রতিবাদী স্ট্যাটাসগুলোকে এক জায়গায় করেছেন দৈনিক বাংলার ক্রীড়া প্রতিবেদক নাজমুল সাগর।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ফেরিফায়েড পেজে ফিলিস্তিনের পতাকার ছবি পোস্ট করে মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, পুরো পৃথিবীর নির্যাতিতদের সাহায্য করো। হে আল্লাহ, তাদের জন্য রক্ষক, সাহায্যকারী, সহায়তাকারী এবং শক্তিদানকারী হয়ে ওঠো।’
গ্রাফিকাল ছবি পোস্ট করে মাহমুদউল্লাহ আল্লাহর একাধিক গুণবাচক নাম সামনে এনে প্রার্থনা করেছেন ফিলিস্তিনের জন্য। তাদের রক্ষা এবং বিজয় অর্জনের দোয়ার বাণী ফুটে উঠেছে তার লেখায়। পরবর্তীতে এক ভিডিও বার্তায় আগামী ১২ এপ্রিল ‘মার্চ ফর গাজা’র ডাক দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘তোমরা প্রতিদিন আমাদের হৃদয়ে ও মনে আছো। ভালো দিনের জন্য প্রার্থনা করছি।’
পেসার নাহিদ রানা একাধিক ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘এই নিষ্ঠুরতার ভার আমাদের সবার উপর। একদিন আমাদের সবাইকে ইতিহাসের কক্ষে দাঁড়াতে হবে।’ ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে নুরুল হাসান সোহানের মন্তব্য, ‘ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হচ্ছে, আমাদের সবার স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ।’
শেষ জামানার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হবে ফিলিস্তিন। আজকের এই দুর্দিন বিজয়ের প্রথম ধাপ হিসেবে উল্লেখ করে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম লিখেছেন, ‘তিনিই আদি, অন্ত, ব্যক্ত ও গুপ্ত এবং তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। বিশ্বাসীরা কখনও আশা ছাড়ে না। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক, এই জালিমদের বিচারও এক দিন তিনি ঠিকই করবেন। কোরআনের ওয়াদা কখনও মিথ্যা হতে পারে না। পৃথিবী যতদিন টিকে থাকবে গাজা, ফিলিস্তিন ততদিন টিকে থাকবে এবং শেষ জামানার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হবে এই পবিত্র ভূমি। হয়তো আজকের এই দুর্দিন আমাদের বিজয়ের প্রথম ধাপ।’
পেসার তাসকিন নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘একজন মানুষ ও মুসলমান হিসেবে আমি ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি। শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতার জয় হোক- এই প্রার্থনা।’
পবিত্র কোরআনের সূরা মায়িদার আয়াত উদ্ধৃত করে পেসার শরিফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘যে ব্যক্তি একটি নির্দোষ মানুষকে হত্যা করে, সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করলো। ফিলিস্তিনে প্রতিদিন নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরছে। ওরা আমাদের ভাই, ওরা আমাদের আত্মীয়। দোয়া করুন, গর্জে উঠুন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে থাকুন।’
ইনজুরি থেকে ফিরে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে মেসি উজ্জ্বল হলেও ইন্টার মিয়ামি নিমজ্জিত অন্ধকারে। জয় খুঁজে পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটি। গতকাল আরও একবার পয়েন্ট হারিয়েছে মেসি-সুয়ারেজরা। ৪০ মিনিটের মধ্যে দুই দফায় বল জালে পাঠিয়েও গোলের দেখা পায়নি মিয়ামি। উল্টো গোল হজম করে পিছিয়ে পরে তারা। মেসির গোলে সমতায় ফিরলেও ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মিয়ামিকে।
গতকাল ভোরে মেজর লিগ সকারের ম্যাচে টরন্টো এফসির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ইন্টার মিয়ামি। এই ড্রয়ে শীর্ষস্থান থেকে এক ধাপ নেমে গেছে মায়ামি, ম্যাচ যদিও একটি কম খেলেছে তারা। তবে এই ফলাফল তাদের জন্যই বেশি হতাশার। ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সে এখন দুই নম্বরে মেসিরা। ৭ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কলম্বাস ক্রু। ৭ ম্যাচে কোনো জয় নেই টরন্টোর। ৩ পয়েন্ট নিয়ে তলানি থেকে দুইয়ে আছে তারা।
ফলাফলের বাইরে অবশ্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল মিয়ামির হাতেই। ম্যাচের ৬৭ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের পায়ে। গোলের জন্য ২৩টি শট নেয় মেসিরা, এর ৯টি ছিল লক্ষ্যে।
২৯তম মিনিটে প্রথমবার জাল খুঁজে পায় মিয়ামি। বক্সের বাইরে থেকে তেলাস্কোর সেগোভিয়ার মাপা গড়ানো শট আশ্রয় নেয় জালে। কিন্তু সুয়ারেস অফ সাইডে থাকায় গোল পায়নি মায়ামি।
মিনিট দশেক পর দারুণভাবে শরীর ঘুরিয়ে সঙ্গে থাকা ডিফেন্ডারকে ছিটকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন মেসি। কিন্তু ভিএআর পরীক্ষায় দেখা যায়, আক্রমণের শুরুতে ফাউল করেছিলেন মেসিই। ৪৪তম মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক অল্পের জন্য ওপর দিয়ে চলে যায়।
৪৫ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে টরন্টোকে এগিয়ে নেন বের্নারদেস্কি। ইনসিনিয়ের পাস বক্সের ভেতর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মায়ামির দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে কাটিয়ে আলতো টোকায় গোল করেন ইতালিয়ান উইঙ্গার। এবারের লিগে সাত ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয়বার আগে গোল করতে পারল টরন্টো।
মিয়ামি ম্যাচে ফিরতে সময় নেননি খুব একটা। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বক্সের ঠিক মাথায় সেগোভিয়ার পাস ডান পায়ে ঠেকিয়ে বাঁ পায়ের ভলিতে মেসি সমতায় ফেরান দলকে। বলের নাগাল পাননি টরন্টোর গোলকিপার।
লিগের চলতি মৌসুমে মেসির তৃতীয় গোল এটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল হলো ছয়টি। মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর তার মোট গোল হলো ৪০টি। গোলের রেকর্ড তিনি গড়েছেন আগেই। এখন শুধু নিজের অর্জনই সমৃদ্ধ করছেন আরও।
বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর গোল আদায় করতে পারেনি কোনো দলই।
এ ম্যাচ দিয়ে অনেক দিন পর প্রথম পছন্দের পুরো দলকে একসঙ্গে শুরুর একাদশে নামাতে পেরেছিলেন কোচ হ্যাভিয়ের মাসচেরানো। গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডার ফেরেন চোট কাটিয়ে। সঙ্গে মেসি, জর্দি আলবা, সের্হিও বুসকেতস, লুইস সুয়ারেসরা সবাই ছিলেন। ঘরের মাঠে এমন দল নিয়েও তারা জিততে পারেনি পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা টরেন্টার সঙ্গে।
চলতি বছরের শুরু থেকেই অস্থির দেশের ফুটবলাঙ্গন। নারী দলের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারকে বয়কট করেন ১৮ নারী ফুটবলার। তার অধীনে কোনো অনুশীল না করে অবসরের হুমকিও দেন তারা। সংবাদ সম্মেলন ডেকে বাটলার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন সাবিনা-মনিকারা। পরে বাফুফে সভাপতিকে চিঠি দেন তারা। বাফুফে থেকে চেষ্টা করেও আসেনি দৃশ্যত কোনো সমাধান।
সেসময় কোচ পিটার বাটলার বৈঠকের জন্য ডাকলেও তাতে সাড়া দেননি বিদ্রোহী ফুটবলাররা। অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পর গতকাল আলোচনার টেবিলে বসেছিলেন পিটার বাটলার ও সেই বিদ্রোহী ফুটবলাররা। যদিও ব্রিদাহীদের নেতৃত্ব দেওয়া সাবিনা খাতুনসহ ছিলেন না চার সিনিয়র ফুটবলার।
নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য রবিবার থেকে ক্যাম্প শুরু করেছে বাফুফে। ছুটি শেষে সেদিনই ইংল্যান্ড থেকে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন কোচ বাটলার৷ গতকাল সকালে জিম সেশন থাকলেও বাটলারকে বয়কট করা ফুটবলাররা যোগ দেননি সেখানে। আলোচনার টেবিলে বসতে চেয়েছিলেন দুই পক্ষই।
এরপর প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সংকটের নানা বিষয়ে আলোচনা করেছে দুই পক্ষ। আলোচনায় অংশ নেওয়া একাধিক ফুটবলার জানিয়েছেন, বাটলার বেশ কয়েকবার কয়েকজন খেলোয়াড়কে অভিযুক্ত করেছেন। আবার কখনো আন্দোলনের সমালোচনাও করেছেন। এসব বিষয়ে ফুটবলারদের উত্থাপিত প্রশ্ন খণ্ডন করে নিজের যুক্তিও দিয়েছেন বাটলার। ফুটবলারদের বিগত বিষয়াবলী ভুলে যাওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি নিজেও এ বিষয়টি ভুলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা নারী ফুটবলাররা এখন অনেকটাই নমনীয়। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি এই ইংলিশ কোচের অধীনে ফেরার ব্যাপারে। যদিও কয়েকজন অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, তারা বাটলারের অধীনে অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন।
নমনীয় হয়েছেন কোচ পিটার বাটলারও। বিদ্রোহ চলাকালীন বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় কয়েকজন ফুটবলারের নাম উচ্চারণ তিনি বলেছিলেন, তারা ফিরলে তিনি আর অনুশীলন করাবেন না তিনি। তবে জানা গেছে, মত পরিবর্তন করেছেন তিনি। তারা ফিরতে চাইলে অনুশীলন করাবেন বাটলার।
গতকাল আর কোনো জিম সেশন ছিল না। আজকের জিম বা মাঠের অনুশীলনে সবাই থাকেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। নাকি বাংলার চিরকালীন প্রবাদ ‘ভাঙা গ্লাস কখনো জোড়া লাগে না’, এই প্রবাদের মতোই খেলোয়াড়-কোচ দুই পক্ষের দূরত্ব থেকে যায় থেকে যায় সেটার প্রকৃত উত্তর সময়ের হাতেই।
উল্লেখ্য, সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ক্যাম্পের প্রথম দিন টিম মিটিংয়ে যাননি ১৮ নারী ফুটবলার। এরপর কোচের প্রতি অভিযোগ এনে বাফুফে সভাপতিকে চিঠির পাশাপাশি মিডিয়ার সামনে বক্তব্য রাখেন ফুটবলাররা। দুই মাসের বেশি সময় অচলাবস্থার পর গতকালই প্রথম দুই পক্ষ সামনাসামনি হয়েছে।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের মৌসুম এখনো চলমান। নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই কোন লিগের চ্যাম্পিয়ন কারা হচ্ছে। ব্যতিক্রম শুধু লিগ ওয়ান। ইতোমধ্যেই ফরাসি এই লিগের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে। ৬ ম্যাচ হাতে রেখেই অপরাজিত হিসেবে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার আগে শিরোপা নিশ্চিত করেছে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি)।
ঘরের মাঠে শিরোপা নিশ্চিত করতে অঁজির বিপক্ষে হার এড়ানোই যথেষ্ট ছিল পিএসজির জন্য। শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা দলটি যেন কাজ সারতে চাইল গোল উৎসব দিয়ে। আক্রমণের বন্যায় অনেক সুযোগ তৈরি করলেও তত গোল পেল না লুইস এনরিকের দল। তবে জয় দিয়েই তারা ধরে রাখল লিগ আর শিরোপা।
ঘরের মাঠে অঁজির বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন দিজিরে দুয়ে। পয়েন্ট টেবিলে দলকে নিয়ে গেছেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৮ দলের টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে শিরোপা ধরে রাখল পিএসজি। ২৮ ম্যাচে ২৩ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭৪। এক ম্যাচ কম খেলে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে মোনাকো।
ফ্রান্সের শীর্ষ লিগে টানা চতুর্থ ও সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ শিরোপা জিতল পিএসজি। দশটির বেশি শিরোপা নেই আর কারও। এক যুগের বেশি সময় ধরে লি আঁয় দাপট দেখাচ্ছে প্যারিসের দলটি। সবশেষ ১৩ আসরের ১১টিতেই শিরোপা জিতেছে তারা।
প্রায় ৮৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১১টি শট নেয় এনরিকের দল। কেবল একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৩৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ভিতিনিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন অঁজি গোলরক্ষক ইয়াহিয়া ফোফানা।
বিরতির পরপরই এগিয়ে যায় পিএসজি। খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দুয়ে। এগিয়ে যাওয়ার পর সফরকারীদের আরও চেপে ধরে পিএসজি। ছন্দে থাকা উসমান দেম্বেল মাঠে নামার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়ে। কিন্তু ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা।
চলতি মৌসুমে আরও দুটি শিরোপা জয়ের হাতছানি পিএসজির সামনে। ফরাসি কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের আরেকটি চেষ্টায় কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছে গেছে দলটি। সেমি-ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষে ইংল্যান্ডের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা। আগামী বুধবার প্রথম লেগ হবে প্যারিসে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন আরো বছর পাঁচেক আগেই। খেলছেন শুধুই আইপিএল। কিন্তু বয়সটা এরই মধ্যে তেতাল্লিশ পেরিয়ে চুয়াল্লিশ ছুঁইছুঁই। তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা সম্ভবত, কবে অবসর নেবেন! সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করছে আইপিএলের চলতি আসরে ধোনির পারফরম্যান্স। চেন্নাইয়ের জার্সিতে এখনো পর্যন্ত নিজের ছায়া হয়ে আছেন তিনি। কেউ কেউ এমনও বলছেন, আরও আগেই ক্রিকেট ছাড়া উচিত ছিল ধোনির।
এর মধ্যেই শনিবার প্রথমবার আইপিএলে ধোনির খেলা দেখতে এসেছিলেন তার বাবা পান সিং এবং মা দেবকী। তার আগে ধোনির স্ত্রী সাক্ষী ধোনি এবং মেয়ে জিভার কথোপকথনের মধ্যে ‘শেষ ম্যাচ’ শব্দ দুটি ভাইরাল হয়। তা থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ মনে করেন দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই অবসর ঘোষণা করবেন মাহি। এবার ধোনি নিজেই তা নিয়ে মুখ খুললেন।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন ধোনি। জানিয়েছেন আইপিএল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নিতে চান না। ভারতের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘এখনই অবসর নিয়ে ভাবছি না। এখনও আইপিএল খেলছি। বিষয়টা সাধারণ ভাবেই দেখছি। শুধু আইপিএলেই ক্রিকেট খেলি। এখন আমার বয়স ৪৩। ২০২৫ সালের আইপিএল শেষ হওয়ার সময় আমার বয়স হবে ৪৪। তারপর ১০ মাস সময় পাব ভাবার। আরও খেলব না ছেড়ে দেব, তখন ভাবব। আসলে সিদ্ধান্তটা আমি নেব না। আমার শরীর নেবে। সব মিলিয়ে বছরখানেক আছে হাতে। দেখা যাক।’
ধোনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, শরীর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধকল নিতে পারলে আইপিএলে খেলা চালিয়ে যাবেন। নাহলে অবসরের কথা ভাববেন। আপাতত এবারের আইপিএল উপভোগ করতে চাইছেন। ধোনি বলেন, ‘এখন আইপিএল উপভোগ করতে চাইছি। ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় যেমন উপভোগ করতাম, এখনো তেমনই করছি। তখন একটা কলোনিতে থাকতাম আমরা। রোজ বিকেল ৪টার সময় খেলতে যেতাম। প্রায় দিনই ক্রিকেট খেলতাম। আবহাওয়া ঠিক না থাকলে ফুটবল খেলতাম। আমি ওই রকম সরলভাবে খেলতে চাই। যদিও কথাটা বলা যত সহজ, কাজে করা তত সহজ নয়।’
কিছু দিন আগেও একবার ধোনি বলেছিলেন, আর যে ক’বছর ক্রিকেট খেলবেন, শিশুর মতো উপভোগ করতে চান। ২০১৯ সালের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি ধোনি। এখন আর ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেন না। শুধু আইপিএলেই দেখা যায়, ৪৩ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে।
সময়ের হিসেবে প্রায় এক বছর আট মাস। ম্যাচের হিসাবে সাতটি লড়াই। এত দীর্ঘ সময় রিয়াদ ডার্বিতে জয়ের স্বাদ পাচ্ছিল না আল-নাসর। সৌদি আরবের ফুটবলের আকর্ষণীয় লড়াইয়ে অবশেষে আল-হিলালকে হারাতে পারল তারা। সেই খরা কাটল দলের সবচেয়ে বড় তারকার সৌজন্যেই। জোড়া গোল করে জয়ের নায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
গতকাল সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে আল-হিলালের মাঠে ৩-১ গোলের দারুণ এক জয় পেয়েছে আল-নাসর। আলি আল হাসান দল এগিয়ে নেওয়ার পরে জোড়া গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
এই জয়ের পরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরেই আছে আল-নাসর। ২৬ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট তাদের। তাদের চেয়ে তিন পয়েন্ট বেশি নিয়ে দুইয়ে আল-হিলাল। আর ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কারিম বেনজেমার আল-ইত্তিহাদ।
দুই দলের আগের সাতটি লড়াইয়ে আল-হিলালের জয় ছিল চারটি, ড্র হয়েছিল তিনটি ম্যাচ। অবশেষে প্রথম ডার্বি জয়ের দেখা পেল আল নাসর।
প্রথমার্ধে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে উঠলেও গোল হচ্ছিল না। ৪৫ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যায় আল-নাসর। মিডফিল্ডার আলি আল হাসানের অসাধারণ কার্ল করা শট গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনোর হাত ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়।
তবে বিরতি থেকে ফিরেই আবারও জাল খুঁজে নেয় আল নাসর। ম্যাচের ৪৭তম ব্যবধান ২-০ করেন সিআরসেভেন। বক্সের ভেতর সাদিও মানের পাস থেকে চকিতে বাঁ পায়ের শটে দারুণ ফিনিশিংয়ে জালের দেখা পান তিনি।
প্রতি আক্রমণে এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে আল-হিলাল। ৬২তম মিনিটে একটি গোল ফিরিয়ে দেয় তারা। কিন্তু ৮৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আল-নাসরের জয় নিশ্চিত করেন রোনালদো।
এই দুই গোলে সৌদি প্রো লিগে পর্তুগিজ মহাতারকার গোল হলো ৭০টি। হাজার গোলের লক্ষণ পূরণের দিকেও তিনি এগিয়ে গেলেন দুই ধাপ। তার ক্যারিয়ার গোল সংখ্যা এখন ৯৩১টি।
ম্যাচ শেষে অবশ্য ৪০ বছর বয়সি তারকা বলছেন, তার কাছে দলের জয়ই সবকিছুর ওপরে। রোনালদো বলেন, ‘এই জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল দলীয় প্রচেষ্টার। আমার গোল করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়।’
ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবেন না বলেও জানিয়েছেন রোনালদো। সিআরসেভেন বলেন, ‘সৌদি প্রো লিগে ও (এএফসি) চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলকে সহায়তা করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমি, ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবি না।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে কোনোমতে ওয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বেঁচে ছিল পাকিস্তান। ওয়ানডে সিরিজেও একই অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিল বাবর-রিজওয়ানরা। কিন্তু এবার আর কোনো রক্ষা হয়নি তাদের। পুরো সফরজুড়েই চরম ব্যর্থতার খেসারত দিলো ম্যান ইন গ্রিনরা। বৃষ্টি বাধার শেষ ওয়ানডেতে বেন সিয়ার্সের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হয়েছে রিজওয়ানরা। এতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা দিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
গতকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বৃষ্টির কারণে সিরিজের শেষ ম্যাচের টস হয় এক ঘণ্টা বিশ মিনিট দেরিতে। তাতে ম্যাচের পরিধি নেমে আসে ৪২ ওভারে। টস হেরে নিউজিল্যান্ড শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেটে সংগ্রহ করে ২৬৪ রান। জবাব দিতে নেমে ২২১ রানেই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো একই দৃশ্য মঞ্চস্থ হয়েছে। পুরো সফরেই কিউই বোলিংয়ের বাউন্স আর মুভমেন্টে খেই হারায় সফরকারীদের ব্যাটিং। এ দিনও পাকিস্তানের ব্যাটারদের বেপরোয়া শট দলকে বিপদে ফেলে। বেন সিয়ার্স ৩৪ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার ৪টিই পড়েছে শর্ট পিচ ডেলিভারিতে। সিরিজ সেরাও তিনি। সফরকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার করা মোহাম্মদ রিজওয়ানের (৩৭) উইকেটটিও নিয়েছেন তিনি।
এদিন পাকিস্তানের ইনিংসের টপ স্কোরার ছিলেন বাবর আজম। ৫৮ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক শ্লথ গতির ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে করেছেন ৩৩ রান। পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটাও ভালো ছিল না। কিউই ফিল্ডারের থ্রো ওপেনার ইমাম উল হকের চোয়ালে আঘাত করলে এক রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়ে যান তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডকে শুরুতে পথ দেখায় রাইস মারিউর ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। দলের ১৩ রানে আরেক ওপেনার নিক কেলি (৩) বিদায় নিলে সেই ধাক্কা সামাল দেন মারিউ। মাত্র দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে ৬১ বলে উপহার দেন ৫৮ রানের দায়িত্বশীল একটি ইনিংস। তার মধ্যে ছয় ছিল ২টি, চার ৪টি। মিডল অর্ডারে কিউইদের বেশ কয়েকজন দারুণ শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ডেথে শুধু অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েলই ঝোড়ো গতিতে খেলে স্কোর বাড়াতে অবদান রেখেছেন। ৪০ বলে উপহার দেন ৫৯ রানের দারুণ একটি ইনিংস। তাতে ছিল ৬টি ছয় এবং ১টি চার। ম্যাচসেরাও তাই ব্রেসওয়েল।
পাকিস্তানের হয়ে ৬২ রানে ৪টি উইকেট নেন আকিফ জাভেদ। ৫৪ রানে দুটি নেন নাসিম শাহ। একটি করে নিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও সুফিয়ান মুকিম।
শঙ্কা কাটিয়ে বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ তামিম ইকবাল। তবে হৃদযন্ত্রের বর্তমান অবস্থা ও শারীরিক অন্যান্য দিক আরও ভালোভাবে পর্যালোচনার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তামিম ইকবাল। শুরুতে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকলেও পরিবারের সিদ্ধান্তে গন্তব্য বদলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে। এরই মধ্যে ভিসা ও বিমানের টিকিট চূড়ান্ত করা হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের একজন অভিজ্ঞ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করবেন তামিম। সেখানে পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি পুরো শরীরের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাবেন তিনি।
বর্তমানে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ফিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) অংশ নিয়েছেন। যদিও এই মুহূর্তে ঈদের ছুটিতে আছেন তারা। সেই বিশ্রামের সময় ফুরিয়ে আসছে। কারণ কিছুদিন পরই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা আছে বাংলাদেশ দলের। এপ্রিলেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাররা দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে।
সে উপলক্ষে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ক্যাম্প। ক্যাম্প হবে সিলেটের মাটিতে। যেখানে থাকবেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে থাকা ক্রিকেটাররা। যদিও এখনও আসন্ন সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেনি বিসিবি। ডিপিএলে ১০ এপ্রিল ম্যাচ খেলেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সিলেটের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
দুই টেস্ট খেলতে আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে পা রাখবে জিম্বাবুয়ে। এরপর ২০ এপ্রিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর থেকেই লিওনের মেসির সঙ্গে জুড়ে গেছে একটি নাম—ইয়াসিন চুকো। মেসির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই মাঠে ঢুকে পড়া ভক্তদের থামিয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন দৃঢ় শারীরিক গঠনের এই দেহরক্ষী। তবে সেসব দৃশ্য এখন থেকে আর দেখা যাবে না।
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় খেলা চলাকালে ইয়াসিনের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে লিগ কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে তিনি শুধু মাঠের বাইরে থেকেই মেসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, খেলা চলাকালে খেলোয়াড়, কোচ ও রেফারিই কেবল মাঠে প্রবেশ করতে পারেন। তাছাড়া চুকোর হুটহাট মাঠে ঢুকে পড়ার বিষয়টি বিব্রতকর বলেও জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ চুকো। অনলাইনে ভিডিও বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হাউস অফ হাইলাইটসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব ঘটনায় তিনি নিজে ‘সমস্যা নন’ বলে জানিয়েছেন।
তার কথায়, ‘ইউরোপে আমি সাত বছর কাজ করেছি। লিগ ১ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ইউরোপে ওই ৭ বছরে মাত্র ৬ জন মাঠে প্রবেশ করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে সেখানে গত ২০ মাসে ইতোমধ্যে ১৬ মাঠে ঢুকেছে। এটি একটি বড় সমস্যা।’
‘সমস্যা আসলে এখানকার, আমি নই। আমাকে মেসিকে সাহায্য করতে দিন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এমএলএস ও কনকাকাফ (ফুটবল) আমি ভালোবাসি, তবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সহযোগিতা করতে পছন্দ করি। আমি হয়তো অনেকের চেয়ে ভালো নই, কিন্তু ইউরোপ থেকে আমার ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আমি মেনে নিয়েছি, কিন্তু একসঙ্গে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাকে সরিয়ে স্বয়ং এমএলএস কর্তৃপক্ষ মাঠে মেসির নিরাপত্তার ভার নিয়েছে।
মেসির সঙ্গে কাটানো গত কয়েক মাসের ব্যবধানে নিজেকে শুধু মহাতারকার দেহরক্ষী নন, বরং তার চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে করেন চুকো।
‘নিজেকে (মেসির) পরিবারের একজন বলে মনে হয় আমার। শুধু শারীরিকভাবেই তাকে রক্ষা করা আমার কাজ নয়, মানসিকভাবেও। সে (মেসি) আমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে এবং আমার ওপর নির্ভরও করে। নিজের সমস্ত মনোযোগ আমি তার ওপর রাখার চেষ্টা করি।’
২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর চুকোকে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন লিওনেল মেসি। তারপর থেকে ফুটবলের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে আঁঠার মতো লেগে আছেন তিনি। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো যখন একাকি সময় কাটান, তখনও কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ‘নেভি সিলের’ সাবেক সদস্য দাবি করা এই নিরাপত্তাকর্মীকে।
তায়কোয়ান্দো, বক্সিং ও মিক্সড মার্শাল আর্টে পারদর্শী ইয়াসিন শুধু মেসির নিরাপত্তাই নিশ্চিত করেন না, তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে থাকেন। তার অধীনে ৫০ জনের একটি নিরাপত্তা দল কাজ করে, যারা মাঠে ও মাঠের বাইরে মেসি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত।
মাঠ ও মাঠের বাইরে লম্বা সময় একসঙ্গে কাটিয়েছেন তারা। বার্সেলোনা ছেড়ে একসঙ্গে জুটি বেঁধেছেন ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে গিয়েও। তাই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বও লম্বা সময়ের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের হয়ে মুখোমুখি হলেও বন্ধুত্বে চির ধরেনি। শুধু যে বন্ধু হিসেবে তারা একে অপরকে সঙ্গ দিয়েছেন তা নয়, বরং নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও একে অপরকে সহায়তা করেছেন।
ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের এখনো জেতা হয়নি বিশ্বকাপ ট্রফি। কিন্তু আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি নিজ ক্যারিয়ারে জিতেছেন প্রায় সব ট্রফিই। তবে মেসির এই সাফল্যের পেছনে অবদান আছে নেইমারের। সম্প্রতি ‘পডপাহ’ নামে এক পডকাস্টে এমনটাই জানিয়েছেন নেইমার।
ওই পডকাস্টে নেইমার বলেছেন, মেসিকে বিশেষ একটি জায়গায় দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করেছেন তিনি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বলেন, পেনাল্টি কিক নেওয়ার ব্যাপারে তার কাছ থেকে শিখেছিলেন মেসি।
পেনাল্টি নিতে বরাবরই দুর্দান্ত নেইমার জুনিয়র। শুধু কার্যকারিতার দিক থেকেই নয়, স্টাইলের দিক থেকেও বাকিদের চেয়ে বেশ এগিয়ে আছেন সান্তোস তারকা। ট্রান্সফরমার্কেটের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ১০৬টা পেনাল্টি নিয়ে ৮৮টিতে গোল করেছেন নেইমার, মিস করেছে ১৮টি। অন্যদিকে মেসি ১৪২টি পেনাল্টি নিয়ে ১১১টি গোল করলেও মিস করেছেন ৩১টি। যার অনেকগুলোই ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে। ২০১৬ কোপা আমেরিকা ফাইনালেই যেমন টাইব্রেকার শট মিস করেছিলেন মেসি।
নিজের পেনাল্টি নেওয়ার দক্ষতা বাড়াতে একসময় নেইমারের কাছ থেকে পরামর্শও নিয়েছিলেন মেসি। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকার অনুরোধ নিয়ে নেইমার বলেছেন, ‘আমি মেসিকে পেনাল্টি নেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছি। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তুমি কীভাবে এমন পেনাল্টি নাও?’
মেসির কাছ থেকে সাহায্যের অনুরোধ শুনে বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। সে সময় কী মনে হয়েছিল তা ব্যাখ্যা করে নেইমার বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল (মেসির অনুরোধ শোনার পর) তুমি কি পাগল? তুমি মেসি! যদি আমি সেটা করতে পারি, তবে তুমিও করতে পারবে।’
এরপরও অবশ্য মেসিকে সময় নিয়ে নিজের কৌশল ঠিকই শিখিয়ে দিয়েছিলেন নেইমার। যা পরে অনুশীলনের সময় চর্চাও করেছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। নেইমারের দেওয়া এ তথ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে, সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হয়েও মেসি শেখার জন্য কতটা ক্ষুধার্ত ছিলেন। নিজের উন্নতির জন্য কতটা উন্মুখ ছিলেন।
ক্যারিয়ারজুড়ে বিভিন্ন সময় পেনাল্টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল মেসিকে। চাপের মুখে বিশ্বকাপ বা চ্যাম্পিয়নস লিগে পেনাল্টি নিয়ে যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনি বিভিন্ন সময় মিস করে সমালোচিতও হয়েছিলেন। তবে ক্যারিয়ারের পরের দিকে স্পট কিকে বেশ উন্নতি দেখান মেসি। হয়তো নেইমারের পরামর্শই বদলে দিয়েছিল তাকে।