বছর তিনেক ধরেই কোর্টে প্রতিপক্ষের চেয়েও চোটের সঙ্গেই বেশি লড়াই চলছিল তার। সর্বশেষবার তাকে কোর্টে দেখাই গেছে গত বছরের জুলাইয়ে, ২০২১ উইম্বলডনে। না খেলতে খেলতে এমনই অবস্থা হয়েছে যে, ২০২১ উইম্বলডনের ঠিক এক বছর পর গত ১১ জুলাই ছেলেদের এককে এটিপি র্যাঙ্কিংয়ের বাইরেই চলে গিয়েছিলেন – তার ক্যারিয়ারে প্রথমবার!
শেষবারও।
আর যে র্যাঙ্কিংয়ের লড়াইয়েই থাকছেন না রজার ফেদেরার!
চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে ক্লান্ত ৪১ বছর বয়সী ফেদেরার আজ আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছেন, পেশাদার টেনিস আর নয়। আগামী সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় লেভার কাপই তাঁর সর্বশেষ এটিপি টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ২০টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী সুইস কিংবদন্তি।
বিদায়ের ঘোষণায় গত তিন বছরে চোটের সঙ্গে অবিরাম লড়াইকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন ফেদেরার, ‘অনেকেই জানেন, গত তিন বছরে চোট আর সার্জারিই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার জন্য। পুরো ফিট হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক টুর্নামেন্টে ফিরতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছি। কিন্তু নিজের শরীরের ক্ষমতা-দুর্বলতার কথাও তো জানি, শরীরটা আমাকে গত কিছুদিনে পরিষ্কার বার্তা দিয়ে আসছিল।’
কোর্টে প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে লড়াইয়ে উদ্যম নিয়ে ফিরে আসা যায়, কিন্তু ৪১ বছর বয়সী শরীর বেঁকে বসলে আর সে লড়াইয়ে জেতা যায় কীভাবে! লড়াইয়ে ক্ষান্তি দিয়ে ফেদেরার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঘরে ফেরার বেলা এল!
‘আমার বয়স ৪১, গত ২৪ বছরেরও বেশি সময়ে ১৫০০-রও বেশি ম্যাচ খেলেছি। যতটা স্বপ্নেও ভাবিনি, তার চেয়েও বেশি স্নেহ টেনিস আমার জন্য রেখেছে সব সময়। এখন আমার মেনে নেওয়ার সময় এসেছে যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে এসেছে’ – ফেদেরারের বিদায় ঘোষণা।
২০টি গ্র্যান্ড স্লাম, টানা সবচেয়ে দীর্ঘ সময় র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা...সব অর্জন সঙ্গী করেই সগর্ব বিদায় তার। এ তো রেকর্ডের বইয়ের পাতার খবর, দর্শকমনের খবর কে বলবে! ধ্রুপদী টেনিসে মন রাঙিয়ে যে শিরোপামঞ্চেও আলো ছড়ানো যায় – ফেদেরারের মতো করে সেটি আর কে দেখাতে পেরেছেন!
এই তো আর একটি সপ্তাহ, লেভার কাপ শেষে সেসব শুধুই হয়ে থাকবে স্মৃতি।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের মৌসুম এখনো চলমান। নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই কোন লিগের চ্যাম্পিয়ন কারা হচ্ছে। ব্যতিক্রম শুধু লিগ ওয়ান। ইতোমধ্যেই ফরাসি এই লিগের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে। ৬ ম্যাচ হাতে রেখেই অপরাজিত হিসেবে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার আগে শিরোপা নিশ্চিত করেছে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি)।
ঘরের মাঠে শিরোপা নিশ্চিত করতে অঁজির বিপক্ষে হার এড়ানোই যথেষ্ট ছিল পিএসজির জন্য। শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা দলটি যেন কাজ সারতে চাইল গোল উৎসব দিয়ে। আক্রমণের বন্যায় অনেক সুযোগ তৈরি করলেও তত গোল পেল না লুইস এনরিকের দল। তবে জয় দিয়েই তারা ধরে রাখল লিগ আর শিরোপা।
ঘরের মাঠে অঁজির বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন দিজিরে দুয়ে। পয়েন্ট টেবিলে দলকে নিয়ে গেছেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৮ দলের টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে শিরোপা ধরে রাখল পিএসজি। ২৮ ম্যাচে ২৩ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭৪। এক ম্যাচ কম খেলে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে মোনাকো।
ফ্রান্সের শীর্ষ লিগে টানা চতুর্থ ও সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ শিরোপা জিতল পিএসজি। দশটির বেশি শিরোপা নেই আর কারও। এক যুগের বেশি সময় ধরে লি আঁয় দাপট দেখাচ্ছে প্যারিসের দলটি। সবশেষ ১৩ আসরের ১১টিতেই শিরোপা জিতেছে তারা।
প্রায় ৮৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১১টি শট নেয় এনরিকের দল। কেবল একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৩৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ভিতিনিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন অঁজি গোলরক্ষক ইয়াহিয়া ফোফানা।
বিরতির পরপরই এগিয়ে যায় পিএসজি। খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দুয়ে। এগিয়ে যাওয়ার পর সফরকারীদের আরও চেপে ধরে পিএসজি। ছন্দে থাকা উসমান দেম্বেল মাঠে নামার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়ে। কিন্তু ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা।
চলতি মৌসুমে আরও দুটি শিরোপা জয়ের হাতছানি পিএসজির সামনে। ফরাসি কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের আরেকটি চেষ্টায় কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছে গেছে দলটি। সেমি-ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষে ইংল্যান্ডের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা। আগামী বুধবার প্রথম লেগ হবে প্যারিসে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন আরো বছর পাঁচেক আগেই। খেলছেন শুধুই আইপিএল। কিন্তু বয়সটা এরই মধ্যে তেতাল্লিশ পেরিয়ে চুয়াল্লিশ ছুঁইছুঁই। তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা সম্ভবত, কবে অবসর নেবেন! সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করছে আইপিএলের চলতি আসরে ধোনির পারফরম্যান্স। চেন্নাইয়ের জার্সিতে এখনো পর্যন্ত নিজের ছায়া হয়ে আছেন তিনি। কেউ কেউ এমনও বলছেন, আরও আগেই ক্রিকেট ছাড়া উচিত ছিল ধোনির।
এর মধ্যেই শনিবার প্রথমবার আইপিএলে ধোনির খেলা দেখতে এসেছিলেন তার বাবা পান সিং এবং মা দেবকী। তার আগে ধোনির স্ত্রী সাক্ষী ধোনি এবং মেয়ে জিভার কথোপকথনের মধ্যে ‘শেষ ম্যাচ’ শব্দ দুটি ভাইরাল হয়। তা থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ মনে করেন দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই অবসর ঘোষণা করবেন মাহি। এবার ধোনি নিজেই তা নিয়ে মুখ খুললেন।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন ধোনি। জানিয়েছেন আইপিএল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নিতে চান না। ভারতের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘এখনই অবসর নিয়ে ভাবছি না। এখনও আইপিএল খেলছি। বিষয়টা সাধারণ ভাবেই দেখছি। শুধু আইপিএলেই ক্রিকেট খেলি। এখন আমার বয়স ৪৩। ২০২৫ সালের আইপিএল শেষ হওয়ার সময় আমার বয়স হবে ৪৪। তারপর ১০ মাস সময় পাব ভাবার। আরও খেলব না ছেড়ে দেব, তখন ভাবব। আসলে সিদ্ধান্তটা আমি নেব না। আমার শরীর নেবে। সব মিলিয়ে বছরখানেক আছে হাতে। দেখা যাক।’
ধোনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, শরীর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধকল নিতে পারলে আইপিএলে খেলা চালিয়ে যাবেন। নাহলে অবসরের কথা ভাববেন। আপাতত এবারের আইপিএল উপভোগ করতে চাইছেন। ধোনি বলেন, ‘এখন আইপিএল উপভোগ করতে চাইছি। ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় যেমন উপভোগ করতাম, এখনো তেমনই করছি। তখন একটা কলোনিতে থাকতাম আমরা। রোজ বিকেল ৪টার সময় খেলতে যেতাম। প্রায় দিনই ক্রিকেট খেলতাম। আবহাওয়া ঠিক না থাকলে ফুটবল খেলতাম। আমি ওই রকম সরলভাবে খেলতে চাই। যদিও কথাটা বলা যত সহজ, কাজে করা তত সহজ নয়।’
কিছু দিন আগেও একবার ধোনি বলেছিলেন, আর যে ক’বছর ক্রিকেট খেলবেন, শিশুর মতো উপভোগ করতে চান। ২০১৯ সালের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি ধোনি। এখন আর ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেন না। শুধু আইপিএলেই দেখা যায়, ৪৩ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে।
সময়ের হিসেবে প্রায় এক বছর আট মাস। ম্যাচের হিসাবে সাতটি লড়াই। এত দীর্ঘ সময় রিয়াদ ডার্বিতে জয়ের স্বাদ পাচ্ছিল না আল-নাসর। সৌদি আরবের ফুটবলের আকর্ষণীয় লড়াইয়ে অবশেষে আল-হিলালকে হারাতে পারল তারা। সেই খরা কাটল দলের সবচেয়ে বড় তারকার সৌজন্যেই। জোড়া গোল করে জয়ের নায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
গতকাল সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে আল-হিলালের মাঠে ৩-১ গোলের দারুণ এক জয় পেয়েছে আল-নাসর। আলি আল হাসান দল এগিয়ে নেওয়ার পরে জোড়া গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
এই জয়ের পরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরেই আছে আল-নাসর। ২৬ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট তাদের। তাদের চেয়ে তিন পয়েন্ট বেশি নিয়ে দুইয়ে আল-হিলাল। আর ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কারিম বেনজেমার আল-ইত্তিহাদ।
দুই দলের আগের সাতটি লড়াইয়ে আল-হিলালের জয় ছিল চারটি, ড্র হয়েছিল তিনটি ম্যাচ। অবশেষে প্রথম ডার্বি জয়ের দেখা পেল আল নাসর।
প্রথমার্ধে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে উঠলেও গোল হচ্ছিল না। ৪৫ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যায় আল-নাসর। মিডফিল্ডার আলি আল হাসানের অসাধারণ কার্ল করা শট গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনোর হাত ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়।
তবে বিরতি থেকে ফিরেই আবারও জাল খুঁজে নেয় আল নাসর। ম্যাচের ৪৭তম ব্যবধান ২-০ করেন সিআরসেভেন। বক্সের ভেতর সাদিও মানের পাস থেকে চকিতে বাঁ পায়ের শটে দারুণ ফিনিশিংয়ে জালের দেখা পান তিনি।
প্রতি আক্রমণে এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে আল-হিলাল। ৬২তম মিনিটে একটি গোল ফিরিয়ে দেয় তারা। কিন্তু ৮৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আল-নাসরের জয় নিশ্চিত করেন রোনালদো।
এই দুই গোলে সৌদি প্রো লিগে পর্তুগিজ মহাতারকার গোল হলো ৭০টি। হাজার গোলের লক্ষণ পূরণের দিকেও তিনি এগিয়ে গেলেন দুই ধাপ। তার ক্যারিয়ার গোল সংখ্যা এখন ৯৩১টি।
ম্যাচ শেষে অবশ্য ৪০ বছর বয়সি তারকা বলছেন, তার কাছে দলের জয়ই সবকিছুর ওপরে। রোনালদো বলেন, ‘এই জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল দলীয় প্রচেষ্টার। আমার গোল করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়।’
ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবেন না বলেও জানিয়েছেন রোনালদো। সিআরসেভেন বলেন, ‘সৌদি প্রো লিগে ও (এএফসি) চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলকে সহায়তা করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমি, ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবি না।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে কোনোমতে ওয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বেঁচে ছিল পাকিস্তান। ওয়ানডে সিরিজেও একই অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিল বাবর-রিজওয়ানরা। কিন্তু এবার আর কোনো রক্ষা হয়নি তাদের। পুরো সফরজুড়েই চরম ব্যর্থতার খেসারত দিলো ম্যান ইন গ্রিনরা। বৃষ্টি বাধার শেষ ওয়ানডেতে বেন সিয়ার্সের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হয়েছে রিজওয়ানরা। এতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা দিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
গতকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বৃষ্টির কারণে সিরিজের শেষ ম্যাচের টস হয় এক ঘণ্টা বিশ মিনিট দেরিতে। তাতে ম্যাচের পরিধি নেমে আসে ৪২ ওভারে। টস হেরে নিউজিল্যান্ড শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেটে সংগ্রহ করে ২৬৪ রান। জবাব দিতে নেমে ২২১ রানেই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো একই দৃশ্য মঞ্চস্থ হয়েছে। পুরো সফরেই কিউই বোলিংয়ের বাউন্স আর মুভমেন্টে খেই হারায় সফরকারীদের ব্যাটিং। এ দিনও পাকিস্তানের ব্যাটারদের বেপরোয়া শট দলকে বিপদে ফেলে। বেন সিয়ার্স ৩৪ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার ৪টিই পড়েছে শর্ট পিচ ডেলিভারিতে। সিরিজ সেরাও তিনি। সফরকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার করা মোহাম্মদ রিজওয়ানের (৩৭) উইকেটটিও নিয়েছেন তিনি।
এদিন পাকিস্তানের ইনিংসের টপ স্কোরার ছিলেন বাবর আজম। ৫৮ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক শ্লথ গতির ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে করেছেন ৩৩ রান। পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটাও ভালো ছিল না। কিউই ফিল্ডারের থ্রো ওপেনার ইমাম উল হকের চোয়ালে আঘাত করলে এক রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়ে যান তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডকে শুরুতে পথ দেখায় রাইস মারিউর ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। দলের ১৩ রানে আরেক ওপেনার নিক কেলি (৩) বিদায় নিলে সেই ধাক্কা সামাল দেন মারিউ। মাত্র দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে ৬১ বলে উপহার দেন ৫৮ রানের দায়িত্বশীল একটি ইনিংস। তার মধ্যে ছয় ছিল ২টি, চার ৪টি। মিডল অর্ডারে কিউইদের বেশ কয়েকজন দারুণ শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ডেথে শুধু অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েলই ঝোড়ো গতিতে খেলে স্কোর বাড়াতে অবদান রেখেছেন। ৪০ বলে উপহার দেন ৫৯ রানের দারুণ একটি ইনিংস। তাতে ছিল ৬টি ছয় এবং ১টি চার। ম্যাচসেরাও তাই ব্রেসওয়েল।
পাকিস্তানের হয়ে ৬২ রানে ৪টি উইকেট নেন আকিফ জাভেদ। ৫৪ রানে দুটি নেন নাসিম শাহ। একটি করে নিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও সুফিয়ান মুকিম।
শঙ্কা কাটিয়ে বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ তামিম ইকবাল। তবে হৃদযন্ত্রের বর্তমান অবস্থা ও শারীরিক অন্যান্য দিক আরও ভালোভাবে পর্যালোচনার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তামিম ইকবাল। শুরুতে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকলেও পরিবারের সিদ্ধান্তে গন্তব্য বদলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে। এরই মধ্যে ভিসা ও বিমানের টিকিট চূড়ান্ত করা হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের একজন অভিজ্ঞ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করবেন তামিম। সেখানে পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি পুরো শরীরের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাবেন তিনি।
বর্তমানে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ফিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) অংশ নিয়েছেন। যদিও এই মুহূর্তে ঈদের ছুটিতে আছেন তারা। সেই বিশ্রামের সময় ফুরিয়ে আসছে। কারণ কিছুদিন পরই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা আছে বাংলাদেশ দলের। এপ্রিলেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাররা দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে।
সে উপলক্ষে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ক্যাম্প। ক্যাম্প হবে সিলেটের মাটিতে। যেখানে থাকবেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে থাকা ক্রিকেটাররা। যদিও এখনও আসন্ন সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেনি বিসিবি। ডিপিএলে ১০ এপ্রিল ম্যাচ খেলেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সিলেটের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
দুই টেস্ট খেলতে আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে পা রাখবে জিম্বাবুয়ে। এরপর ২০ এপ্রিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর থেকেই লিওনের মেসির সঙ্গে জুড়ে গেছে একটি নাম—ইয়াসিন চুকো। মেসির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই মাঠে ঢুকে পড়া ভক্তদের থামিয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন দৃঢ় শারীরিক গঠনের এই দেহরক্ষী। তবে সেসব দৃশ্য এখন থেকে আর দেখা যাবে না।
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় খেলা চলাকালে ইয়াসিনের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে লিগ কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে তিনি শুধু মাঠের বাইরে থেকেই মেসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, খেলা চলাকালে খেলোয়াড়, কোচ ও রেফারিই কেবল মাঠে প্রবেশ করতে পারেন। তাছাড়া চুকোর হুটহাট মাঠে ঢুকে পড়ার বিষয়টি বিব্রতকর বলেও জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ চুকো। অনলাইনে ভিডিও বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হাউস অফ হাইলাইটসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব ঘটনায় তিনি নিজে ‘সমস্যা নন’ বলে জানিয়েছেন।
তার কথায়, ‘ইউরোপে আমি সাত বছর কাজ করেছি। লিগ ১ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ইউরোপে ওই ৭ বছরে মাত্র ৬ জন মাঠে প্রবেশ করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে সেখানে গত ২০ মাসে ইতোমধ্যে ১৬ মাঠে ঢুকেছে। এটি একটি বড় সমস্যা।’
‘সমস্যা আসলে এখানকার, আমি নই। আমাকে মেসিকে সাহায্য করতে দিন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এমএলএস ও কনকাকাফ (ফুটবল) আমি ভালোবাসি, তবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সহযোগিতা করতে পছন্দ করি। আমি হয়তো অনেকের চেয়ে ভালো নই, কিন্তু ইউরোপ থেকে আমার ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আমি মেনে নিয়েছি, কিন্তু একসঙ্গে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাকে সরিয়ে স্বয়ং এমএলএস কর্তৃপক্ষ মাঠে মেসির নিরাপত্তার ভার নিয়েছে।
মেসির সঙ্গে কাটানো গত কয়েক মাসের ব্যবধানে নিজেকে শুধু মহাতারকার দেহরক্ষী নন, বরং তার চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে করেন চুকো।
‘নিজেকে (মেসির) পরিবারের একজন বলে মনে হয় আমার। শুধু শারীরিকভাবেই তাকে রক্ষা করা আমার কাজ নয়, মানসিকভাবেও। সে (মেসি) আমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে এবং আমার ওপর নির্ভরও করে। নিজের সমস্ত মনোযোগ আমি তার ওপর রাখার চেষ্টা করি।’
২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর চুকোকে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন লিওনেল মেসি। তারপর থেকে ফুটবলের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে আঁঠার মতো লেগে আছেন তিনি। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো যখন একাকি সময় কাটান, তখনও কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ‘নেভি সিলের’ সাবেক সদস্য দাবি করা এই নিরাপত্তাকর্মীকে।
তায়কোয়ান্দো, বক্সিং ও মিক্সড মার্শাল আর্টে পারদর্শী ইয়াসিন শুধু মেসির নিরাপত্তাই নিশ্চিত করেন না, তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে থাকেন। তার অধীনে ৫০ জনের একটি নিরাপত্তা দল কাজ করে, যারা মাঠে ও মাঠের বাইরে মেসি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত।
মাঠ ও মাঠের বাইরে লম্বা সময় একসঙ্গে কাটিয়েছেন তারা। বার্সেলোনা ছেড়ে একসঙ্গে জুটি বেঁধেছেন ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে গিয়েও। তাই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বও লম্বা সময়ের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের হয়ে মুখোমুখি হলেও বন্ধুত্বে চির ধরেনি। শুধু যে বন্ধু হিসেবে তারা একে অপরকে সঙ্গ দিয়েছেন তা নয়, বরং নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও একে অপরকে সহায়তা করেছেন।
ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের এখনো জেতা হয়নি বিশ্বকাপ ট্রফি। কিন্তু আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি নিজ ক্যারিয়ারে জিতেছেন প্রায় সব ট্রফিই। তবে মেসির এই সাফল্যের পেছনে অবদান আছে নেইমারের। সম্প্রতি ‘পডপাহ’ নামে এক পডকাস্টে এমনটাই জানিয়েছেন নেইমার।
ওই পডকাস্টে নেইমার বলেছেন, মেসিকে বিশেষ একটি জায়গায় দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করেছেন তিনি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বলেন, পেনাল্টি কিক নেওয়ার ব্যাপারে তার কাছ থেকে শিখেছিলেন মেসি।
পেনাল্টি নিতে বরাবরই দুর্দান্ত নেইমার জুনিয়র। শুধু কার্যকারিতার দিক থেকেই নয়, স্টাইলের দিক থেকেও বাকিদের চেয়ে বেশ এগিয়ে আছেন সান্তোস তারকা। ট্রান্সফরমার্কেটের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ১০৬টা পেনাল্টি নিয়ে ৮৮টিতে গোল করেছেন নেইমার, মিস করেছে ১৮টি। অন্যদিকে মেসি ১৪২টি পেনাল্টি নিয়ে ১১১টি গোল করলেও মিস করেছেন ৩১টি। যার অনেকগুলোই ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে। ২০১৬ কোপা আমেরিকা ফাইনালেই যেমন টাইব্রেকার শট মিস করেছিলেন মেসি।
নিজের পেনাল্টি নেওয়ার দক্ষতা বাড়াতে একসময় নেইমারের কাছ থেকে পরামর্শও নিয়েছিলেন মেসি। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকার অনুরোধ নিয়ে নেইমার বলেছেন, ‘আমি মেসিকে পেনাল্টি নেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছি। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তুমি কীভাবে এমন পেনাল্টি নাও?’
মেসির কাছ থেকে সাহায্যের অনুরোধ শুনে বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। সে সময় কী মনে হয়েছিল তা ব্যাখ্যা করে নেইমার বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল (মেসির অনুরোধ শোনার পর) তুমি কি পাগল? তুমি মেসি! যদি আমি সেটা করতে পারি, তবে তুমিও করতে পারবে।’
এরপরও অবশ্য মেসিকে সময় নিয়ে নিজের কৌশল ঠিকই শিখিয়ে দিয়েছিলেন নেইমার। যা পরে অনুশীলনের সময় চর্চাও করেছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। নেইমারের দেওয়া এ তথ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে, সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হয়েও মেসি শেখার জন্য কতটা ক্ষুধার্ত ছিলেন। নিজের উন্নতির জন্য কতটা উন্মুখ ছিলেন।
ক্যারিয়ারজুড়ে বিভিন্ন সময় পেনাল্টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল মেসিকে। চাপের মুখে বিশ্বকাপ বা চ্যাম্পিয়নস লিগে পেনাল্টি নিয়ে যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনি বিভিন্ন সময় মিস করে সমালোচিতও হয়েছিলেন। তবে ক্যারিয়ারের পরের দিকে স্পট কিকে বেশ উন্নতি দেখান মেসি। হয়তো নেইমারের পরামর্শই বদলে দিয়েছিল তাকে।
গত মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের মিশন। দম নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না নারী দলও। আগামী ২৩ জুন থেকে ৫ জুলাই মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে নারীদের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ।
গতকাল মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে এএফসির সদর দপ্তরে নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ কঠিন গ্রুপে পড়েছে। অনেকটা অগ্নিপরীক্ষাই দিতে হবে বাংলাদেশ নারী দলকে। ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান।
বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা মিয়ানমার দলের ফিফা র্যাঙ্কিং ৫৫। এরপর আছে বাহরাইন। তাদের অবস্থান ৯২তম। অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বল একটি প্রতিপক্ষও রয়েছে গ্রুপে। দলটি তুর্কমেনিস্তান। তাদের ফিফা র্যাঙ্কিং ১৪১। আর বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং ১৩৩।
এশিয়ার ৩৪টি দেশ নিয়ে হবে এই প্রতিযোগিতা। যেখানে আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে দেশগুলো। ছয় গ্রুপে আছে ৪টি করে দল। বাকি দুই গ্রুপে আছে ৫টি করে দল। আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল আগামী বছর ১-২৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। মূলপর্ব অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন চীন ও আরও দুই শীর্ষ দেশ কোরিয়া এবং জাপান সরাসরি মূল পর্বে খেলবে।
২০২৩ সালে অলিম্পিক বাছাই খেলতে সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে আর্থিক কারণ দেখিয়ে মিয়ানমারে না পাঠানোয় নেতিবাচক সমালোচনার মধ্যে পড়েছিল বাফুফে। এবার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের খেলা সেই মিয়ানমারেই পড়েছে।
এশিয়ান কাপ বাছাই সামনে রেখে এরই মধ্যে ৫৫ জন নারী ফুটবলারকে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে। ঈদের পর আগামী ৬ এপ্রিল শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। যেখানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে সাবিনাসহ বিদ্রোহী ফুটবলারদেরও। যদিও কোচ পিটার বাটলার বিষয়টি কীভাবে নেবেন তা সময় বলে দেবে।
সাভারের কেপিজে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তামিম ইকবাল এখন আছেন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে। হার্ট অ্যাটাকের ধকল কাটিয়ে একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদের আগেই বাসায় ফিরতে পারবেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
আজ এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস ডিরেক্টর আরিফ মাহমুদ জানান, তামিম এখন অনেকটাই সুস্থ। তিনি বলেছেন, ‘তামিম ভালো আছেন, স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন। আজ তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হবে। সেখানেই এক-দু’দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আশা করা যাচ্ছে ঈদের আগেই তিনি বাসায় ফিরতে পারবেন।’
ওই সংবাদ সম্মেলনে ডাক্তাররা তামিমের একটি ব্যক্তিগত খবরও জানিয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘তার রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোয় ঝুঁকি থাকবে। তামিম ধূমপায়ী। তাকে ধূমপান ছাড়তে হবে। ধূমপান হঠাৎ করে ছাড়তে পারবে না। সে বলছিল ভেপের কথা। আমি বলেছি, ভেপও নিতে পারবে না। ভেপে ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। তারপর সে বুঝল। তামিম সিগারেট খেতে চাচ্ছে। আমরা সিগারেট খাওয়ার অনুমতি দিচ্ছি না।’
এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর শাহাবুদ্দিন তালুকদারের চিকিৎসায় আছেন তামিম। এর বাইরে ৫ সদস্যর এক মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। তারা তামিমকে খুঁটিয়ে দেখছেন। তার নিজের এবং পরিবারের ইতিহাসও জানছেন।
তবে ৩৬ বয়সি তামিম মানতে পারছেন না, তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি মানসিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তাই একজন মনোবিদের সঙ্গে কাজ করবেন সামনের দিনগুলোতে।
তামিম ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন কি? যদি পারেন, তাহলে কত দিন পর? এ প্রশ্নের জবাবে এভারকেয়ারের মেডিকেল ডিরেক্টর আরিফ রহমান এবং প্রফেসর শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানান, ৩ থেকে ৪ মাস পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে।
শঙ্কা কেটেছে, তবে তামিমের পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরতে এখনো সময় লাগবে। তার চাচা আকরাম বলেছেন তামিমকে দেশের বাইরে নেওয়ার চিন্তা আছে তাদের, ‘আগামী দু-তিন দিন যদি অবস্থা স্থিতিশীল থাকে, তাহলে তাকে বাসায় নেওয়া হবে। পাশাপাশি পরবর্তী পর্যায়ে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার পরিকল্পনাও আছে।’
বেশ কিছুদিন ধরেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে ব্রাজিল ফুটবল। বলা হচ্ছে, নিজদের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে সেলেসাওরা। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে পরাজয়ের গ্লানির মধ্যেই ডুবে আছে রদ্রিগো-ভিনিসিয়াসরা। সর্বশেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়াটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কর্মকর্তারা। এ ক্ষেত্রে তারা দায়টা চাপাতে চাচ্ছে বেশি কোচ দরিভাল জুনিয়রের ওপরই।
যদিও আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর সমস্ত দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন দরিভাল। এখন তিনি পড়ে গেছেন চাকরি হারানোর শঙ্কায়। কারণ, ব্রাজিলের কোচ দরিভালের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াবে, সেটা নির্ধারণে বৈঠক ডেকেছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। আজ সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বুধবার আর্জেন্টিনার কাছে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের সভাপতি এডনাল্ডো রদ্রিগেজ। তার এই প্রতিক্রিয়ার কারণেই মনে করা হচ্ছে, হয়তো দরিভালের ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো হতে যাচ্ছে না।
যদিও একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের পর কোচ দরিভাল জুনিয়র এবং সিবিএফের মধ্যে এটা একটা রুটিন মিটিং হতে যাচ্ছে। তবুও, ধারণা করা হচ্ছে, কোচিং স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি নিয়ে আসবেন এডনাল্ডো রদ্রিগেজ।
ইসপিএন দরিভালের একটি সূত্র মারফত জানিয়েছেন, তাকে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি বা এ সম্পর্কে তিনি এখনও কিছুই জানেন না।
তবে, ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনে এরই মধ্যে দরিভালের পরিবর্তে কে কোচ হবে, সে সম্পর্কে আলোচনা শুরু হয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তিকে আবারও প্রস্তাব দেয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রথম থেকেই ইতালিয়ান এই কোচকে পেতে চেয়েছিলো ব্রাজিল। সে সঙ্গে ফ্লামেঙ্গোর ফিলিপ লুইস, সৌদি ক্লাব আল হিলালের হোর্হে হেসুসকেও সম্ভাব্য কোচের তালিকায় রাখা হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ফার্নান্দো দিনিজের পরিবর্তে ব্রাজিল কোচের দায়িত্ব নেন দরিভাল জুনিয়র। সাও পাওলো ছেড়ে এসে ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নেয়ার পর কোনোভাবেই ব্রাজিলকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারেননি তিনি।
চলতি বছরে নতুন আঙিকে মাঠে গড়াবে ‘ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ’। আগামী জুন-জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসবে ক্লাব বিশ্বকাপের ২১তম আসর। এবারের আসরে বিশ্বের ৬টি ফেডারেশনের মোট ৩২টি ক্লাব অংশ নেবে। দল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার বেড়েছে প্রাইজমানির পরিমাণও। ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের আকাশচুম্বি প্রাইজমানি ঘোষণা করা হয়েছে এবারের আসরে।
ফিফা থেকে আগেই মোট প্রাইজমানি ঘোষণা করা হলেও সুনির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি চ্যাম্পিয়ন দলের প্রাইজমানির পরিমাণ। অবশেষে টুর্নামেন্টের সেরা দলের প্রাইজমানিও জানিয়ে দিয়েছে ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হতে যাওয়া এ বিশ্বকাপে বিজয়ী দল সর্বোচ্চ ১২৫ মিলিয়ন ডলারের অর্থ পুরস্কার পাবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ হাজার ৫২২ কোটি টাকা প্রায়।
এক বিবৃতিতে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফিফা এই টুর্নামেন্ট থেকে কোনো অর্থ জমা করবে না। সমস্ত রাজস্ব ক্লাব ফুটবলের জন্য বিতরণ করা হবে। একই সঙ্গে ফিফার সংরক্ষিত তহবিলেও হাত দেওয়া হবে না, যা ২১১টি ফিফা সদস্য সংস্থার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ফুটবল উন্নয়নের জন্য নির্ধারিত ছিল।’
১ বিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক ৩২টি ক্লাবের মধ্যে ভাগ করা হবে, যেখানে প্রতিটি ক্লাবের পরিমাণ নির্ধারিত হবে তাদের ক্রীড়া ও বাণিজ্যিক মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে। এর ফলে ম্যানচেস্টার সিটি ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো বড় ক্লাবগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি অর্থ পাবে। ফিফা ইউরোপীয় ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যৌথভাবে এটি নির্ধারণ করেছে।
৪৭৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে পারফরম্যান্স-ভিত্তিক পুরস্কার হিসেবে। যার ফলে সর্বাধিক জয়ী দল সাতটি সম্ভাব্য ম্যাচ জিতে সর্বোচ্চ ১২৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ পেতে পারে।
এদিকে বিভিন্ন খেলোয়াড় ও কোচ নতুনভাবে পুনর্গঠিত ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ এটি ফুটবলারদের বিশ্রামের সময় কমিয়ে দেবে। উদ্বেগ জানানোর ফুটবলারদের মধ্যে ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেনও রয়েছেন।
এ বিষয়ে হ্যারি কেন বলেন, ‘অবশ্যই, এটি আরেকটি গ্রীষ্ম, যেখানে আপনি প্রকৃতপক্ষে বিশ্রাম নিতে পারবেন না। আমরা এতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। আমাদের আসলে এ বিষয়ে কিছু করার নেই।’
তবে বায়ার্ন মিউনিখের এই স্ট্রাইকার টুর্নামেন্ট নিয়ে উচ্চাশাও প্রকাশ করেছেন। ফিফা.কম-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য এটি জয় করা। আমরা নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল, তাই আমরা যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিই, সেটি জয়ের উদ্দেশ্যেই খেলি।’
ক্লাব বিশ্বকাপে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি), কনফেডারেশন অব আফ্রিকা ফুটবল (সিএএফ) ও উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ফেডারেশন (কনকাকাফ) থেকে ৪টি করে মোট ১২টি ক্লাব অংশ নেবে।
এছাড়া দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল (কনমেবল) থেকে ৬টি, অস্ট্রেলিয়া ফুটবল ফেডারেশন (ওএসসি) থেকে ১টি, ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (উয়েফা) থেকে সর্বোচ্চ ১২টি ও হোস্ট হিসেবে খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মিয়ামি।
খেলার মাঠে হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের জ্ঞান ফিরেছে।
তিনি চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে সোমবার (২৪ মার্চ) ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের এক কর্মকর্তা।
কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. রাজিব হাসান বলেন, ‘তামিমের হার্টে সুচারুভাবে রিং পড়ানো হয়েছে এবং ব্লকগুলো সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা হয়েছে।’
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তার অবস্থা এখনো জটিল রয়েছে, তাকে এখনো পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আরও কিছুটা সময় লাগবে।’
ডা. রাজিব বলেন, ‘তিনি আমাদের এখানে খুবই জটিল অবস্থায় এসেছেন। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে তার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। আমরা তার এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও রিং বসিয়েছি।’
কার্ডিওলজির ডা. মনিরুজ্জামান মারুফের নেতৃত্বে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে সোমবার(২৪ মার্চ) সকালে সাভারের বাংলাদেশে ক্রীড়া শিক্ষা প্রশিক্ষণ (বিকেএসপি) মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ(ডিপিএল) ম্যাচ খেলার সময় হঠাৎ তামিম ইকবালের হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচে শাইনপুকুড় ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে তামিমের নেতৃত্বে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলতে নামে। মাঠে টস হয়ে যাওয়ার পর তামিম বুকে ব্যথা অনুভব করেন।
পরে তাকে প্রাথমিকভাবে মাঠেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিকটবর্তী কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে।
বর্তমানে তামিম হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।
তামির স্ত্রী আয়েশা সিদ্দীকি ও তার ভাই নাফিস ইকবাল তার সঙ্গে রয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন।