অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণার শেষ সময় শুক্রবার। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ এবং বাছাইপর্বে অংশ নিতে যাওয়া ১৬ দেশের বেশিরভাগ এর মধ্যে চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে। দল ঘোষণার জন্য বেঁধে দেওয়া সময়ের একদিন বাকি থাকতে ১৫ জনের বিশ্বকাপ দল দিয়েছে আফগানিস্তান।
এশিয়া কাপে ক্রিকেট অনুরাগীদের তাক লাগিয়ে সুপার ফোরে খেলেছে আফগানিস্তান। প্রথম পর্বে আসরের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নেয় তারা। শেষ চারে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং ভারতের কাছে টানা ৩ ম্যাচ হেরে বিদায় নিলেও কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তাদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছে আফগানরা।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে আফগানিস্তান বরাবরই সমীহ জাগানো দল। নিজেদের দিনে যে কোনো পরাশক্তিকে মাটিতে নামিয়ে আনার সামর্থ্য রয়েছে আফগানদের। জাজাই-জাদরানদের বিস্ফোরক ব্যাটিং, রশিদ-মুজিবদের স্পিন ঘূর্ণি, আর ফারুকির পেস জাদুতে প্রতিপক্ষকে নাকাল করতে সক্ষম তারা।
বড় কোনো চমক ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে আফগানিস্তান। এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপেও আফগানদের নেতৃত্ব দেবেন দলটির বর্ষীয়ান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। নতুন মুখ হিসেবে প্রথমবার আফগান দলে ডাক পেয়েছেন ২০ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সালিম।
এদিকে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চমকে ঠাঁসা বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সফলতম দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি আন্দ্রে রাসেল-সুনীল নারাইনদের। ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা পোলার্ডকেও দলে রাখেনি উইন্ডিজ।
এভিন লুইসের ফিটনেস নিয়ে খোদ নির্বাচকদের প্রশ্ন থাকার পরও বিশ্বকাপের বিমানে চড়ছেন তিনি। ২০১৬ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জনসন চার্লসকেও বিশ্বকাপের দলভুক্ত করেছে উইন্ডিজ। দলে নতুন মুখ হিসেবে রয়েছেন পেসার রেমন রেইফার এবং লেগ স্পিনার ইয়ানিক কারিয়াহ।
দেশের হয়ে ওয়ানডে এবং টেস্ট অভিষেক হয়ে গেলেও এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার রেইফার। ক্যারিয়ারে মাত্র ৪ টি-টোয়েন্টি খেলা কারিয়াহও এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে এখন পর্যন্ত শুধু ৩টি ওয়ানডে খেলেছেন এই স্পিনার।
আফগানিস্তান বিশ্বকাপ দল
মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), নাজিবুল্লাহ জাদরান (সহ-অধিনায়ক), ফরিদ আহমেদ, কায়েস আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, উসমান গণি, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, রশিদ খান, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, দারউইশ রসুলি, মোহাম্মদ সালিম, নাভিন-উল-হক, মুজিব-উর-রহমান, ইব্রাহিম জাদরান, হজরতউল্লাহ জাজাই
রিজার্ভ: আফসার জাজাই, শরাফুদ্দিন আশরাফ, রহমত শাহ, গুলবাদিন নাইব
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ দল
নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), রোভম্যান পাওয়েল (সহ-অধিনায়ক), ইয়ানিক কারিয়াহ, জনসন চার্লস, শেলডন কটরেল, শিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, ব্রেন্ডন কিং, এভিন লুইস, কাইল মায়ার্স, ওবেদ ম্যাককয়, রেমন রেইফার, ওডিন স্মিথ
গতকাল শেষ হওয়া নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
সেরা একাদশে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন আকতারকে রাখা হয়েছে। দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবেও আছেন বাংলাদেশের রাবেয়া খান। একাদশের অধিনায়ক পাকিস্তানের ফাতিমা সানা।
টুর্নামেন্টের সেরা একাদশে সর্বোচ্চ চার জন পাকিস্তানের, তিন জন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ও দুই জন করে বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ডের ক্রিকেটার আছেন।
একাদশের দুই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হিলি ম্যাথুস ও পাকিস্তানের মুনিবা আলি। ম্যাথুস ২৪০ রান ও আসরের সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়েছেন। ২২৩ রান করেছেন মুনিবা।
ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে রাখা হয়েছে শারমিনকে। তিন হাফ-সেঞ্চুরিতে আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৬ রান করেছেন তিনি।
চার নম্বরে রাখা হয়েছে আসরের সর্বোচ্চ ২৯৩ রান করা স্কটল্যান্ডের ক্যাথরিন ব্রাইসকে। পাশাপাশি বল হাতে ৬ উইকেটও নেন তিনি।
একাদশে উইকেটরক্ষক হিসেবে আছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার। দু’টি হাফ-সেঞ্চুরি ও এক সেঞ্চুরিতে ২৪১ রান করেছেন তিনি। উইকেটের পেছনে ২টি ক্যাচ ও ৩টি স্টাম্পিংও করেছেন নিগার।
ব্যাট হাতে ১০৭ রান ও পেস বোলিংয়ে ১২ উইকেট নিয়ে একাদশের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে পাকিস্তানের সানাকে।
এরপর আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চিনেল হেনরি ও আলিয়া অ্যালাইন। হেনরি ১৭১ রান ও ৪ উইকেট নেন। অ্যালাইন ১২ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ৬৩ রান করেন।
একাদশে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন স্কটল্যান্ডের ক্যাথরিন ফ্রেজার। ৭৭ রান করার পাশাপাশি ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
একাদশে শেষ দুই খেলোয়াড় হলেন- পাকিস্তানের দুই বাঁ-হাতি স্পিনার নাস্রা সান্ধু ও সাদিয়া ইকবাল। নাস্রা ১০ উইকেট ও সাদিয়া ৯ উইকেট নেন।
৬ উইকেট নিয়ে দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে আছেন লেগ স্পিনার রাবেয়া।
বাছাইপর্বের বাঁধা পেরিয়ে এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।
নারী বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের একাদশ : হিলি ম্যাথুজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), মুনিবা আলি (পাকিস্তান), শারমিন আকতার (বাংলাদেশ), ক্যাথরিন ব্রাইস (স্কটল্যান্ড), নিগার সুলতানা (বাংলাদেশ, উইকেটরক্ষক), ফাতিমা সানা (পাকিস্তান, অধিনায়ক), চিনেল হেনরি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), আলিয়া অ্যালাইন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), ক্যাথরিন ফ্রেজার (স্কটল্যান্ড), নাস্রা সান্ধু (পাকিস্তান), সাদিয়া ইকবাল (পাকিস্তান)।
দ্বাদশ ক্রিকেটার : রাবেয়া খান (বাংলাদেশ)।
দিনের শুরুতেই বিষণ্নতার ছোঁয়া, এরপর কয়েক ঘণ্টার হৃদয় নিংড়ানো দোয়া, আশা, উৎকণ্ঠা আর হার্ট বন্ধ করা উত্তেজনা; গতকাল বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের অবস্থাটা অনেকটা এরকমই ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে হতাশ করেছিল জ্যোতিরা। তাই বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ভর করছিল থাইল্যান্ডের হাতে। ব্যাটিংয়ে তারা আশা দেখালেও ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউসের টর্নেডোতে বাড়ে উৎকণ্ঠা। শেষ দুই বলের হার্ট বন্ধ করা উত্তেজনা শেষে ভারতের টিকিট ‘কনফার্ম’ হয়েছে বাংলাদেশ নারী দলের।
সবগুলো ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পাকিস্তান। আর ৩টি করে জয়ে সমান ৬ পয়েন্ট করে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে রান রেট (০.৬৩৯) ব্যবধানে এগিয়ে দুই নম্বরে বাংলাদেশ। আর তিন নম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ (০.৬২৬)।
জটিল অঙ্কের সমাধান মেলাতে পারেনি উইন্ডিজ নারীরা। তাই জিতেও ভাগ্য সহায় হয়নি তাদের। রান রেটের মারপ্যাঁচে ক্যারিবিয়ানদের খেলা হচ্ছে না ভারতে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপে। বাচাইপর্ব থেকে আগেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল পাকিস্তান। এখন তাদের সঙ্গী হলো বাংলাদেশ।
শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে সহজ সমীকরণ ছিল- ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবা পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই কোনো হিসাব-নিকাশ ছাড়াই বিশ্বকাপ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। কিন্তু দুই ম্যাচেই হেরে বসে টাইগ্রেসরা। যার সর্বশেষটা গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে। এরপর থাইল্যান্ডের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না বাংলাদেশের।
তবে প্রকৃতির এক নিদারুণ সুবিধা পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস ভাগ্য চলে যায় তাদের হাতে। টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে নেট রান রেট মেলানোর সুযোগ নিতে তাই দুবার ভাবেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। থাইল্যান্ড ১৬৬ রানে অলআউট হতেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা জেনে যান কী করলে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে যাবেন তারা। কাজটা কঠিনই ছিল। ১৬৭ রানের লক্ষ্য ছুঁতে হতো ১০ ওভারে। স্কোর সমান হয়ে যাওয়ার পর ছক্কা মারলে ১১ ওভারে জিতলেই চলত। ক্যারিবীয়রা সেই কাজ প্রায় করেই ফেলেছিলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশি সমর্থকদের রীতিমতো হার্টবিট বন্ধ করে দিয়েছিলেন ক্যারিয়ান অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস। উইকেটে রীতিমতো সাইক্লোন বয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। ক্রিকেট বলকে যেন ফুটবল দেখছিলেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা। যদি আর একটা ওভার তিনি টিকতে পারতেন তাহলেই স্বপ্ন ভঙ্গ হতো বাংলাদেশের। ম্যাথিউস মেয়েদের ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে দেন কি না, এ নিয়ে যখন গবেষণা শুরু হলো, তখনই ছন্দপতন। ২৯ বলে ৭০ রান করে ম্যাথিউস যখন ফিরলেন, তখন ৩ ওভারে হিসাব মেলাতে ৬২ রান দরকার ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
সেই হিসাব মেলানোর দিকেই এগোতে গিয়ে ১৭ বলে ৫ ছক্কায় ৪৮ রান করে ফিরেন শিনেল হেনরি। এরপর শেষ দুই বলের অঙ্কে ভুল করে বসেন স্টেফানি টেইলর। ২ বলে প্রয়োজন ছিল ১০ রান। এর জন্য প্রথমে চার মেরে স্কোর নিতে হতো সমতায়। পরের বলে ছক্কা মেরে জিততে হতো ম্যাচ। কিন্তু ছক্কায় শেষ করে দিলেন ম্যাচ! বাংলাদেশ হাসলো সুখের হাসি।
এ বছরের অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা- এই ছয় দল সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকিট কেটেছে। বাছাই পর্ব থেকে নতুন করে যুক্ত হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তান বিশ্বকাপ নিশ্চিত করায় বেধেছে আরেক ঝামেলা। চুক্তি অনুযায়ী ভারতে খেলতে যাবে না তারা। সেক্ষেত্রে নারী বিশ্বকাপ হবে হাইব্রিড মডেলে। পাকিস্তানের ম্যাচগুলো হবে অন্য কোনো দেশে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যেমনটা হয়েছিল ভারতের ম্যাচগুলো।
এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় হার দেখে বাংলাদেশ নারী দল। লাহোরে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতার কবলে পড়ে ১৭৮ রান তোলে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন রিতু মনি। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিমা খাতুন।
জবাব দিতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৯.৪ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। মুনিবা আলির ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রান। এটাই ইনিংসের সর্বোচ্চ রান। আর ৫২ রানে অপরাজিত আলিয়া রিয়াজ।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, আগামী মাসে ডিএনসিসি’র প্রতিটি ওয়ার্ডে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য পুরস্কার হিসেবে এক লাখ টাকা প্রাইজমানি দেওয়া হবে। এই টুর্নামেন্টে ডিএনসিসি’র ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫৪ লাখ টাকা প্রাইজমানি দেওয়া হবে।
আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে ডিএনসিসি এবং বনানী স্পোর্টস এরেনা কর্তৃক আয়োজিত ‘ক্রিকেট কার্নিভাল-২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডিএনসিসি প্রশাসক এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি (বিসিবি) ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক, হাবিবুল বাশার সুমন, জাবেদ ওমর বেলিম ও শাহরিয়ার নাফীস।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ফুটবলের পর আমরা ওয়ার্ড ভিত্তিক ক্রিকেট খেলার আয়োজন করবো। প্রতি বছর ৪টা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হবে।’
ডিএনসিসি প্রশাসক নারীদের জন্যও আলাদা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে জানিয়ে বলেন, নারীদের জন্য এই শহরে পাবলিক স্পেসের অনেক সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এসব আয়োজনের মাধ্যমে বিনোদন ও যুব উন্নয়নের পাশাপাশি কালচারাল ফ্যাসিজমের যে ভয় আছে সেটিকে মোকাবিলা করা হবে। কালচারাল ফ্যাসিজম কিন্তু খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিএনসিসি’র আওতাধীন মাঠগুলো কোনো ক্লাবের আন্ডারে থাকবে না। ক্লাবের আওতাধীন থাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পাবলিক স্পেসে মানুষের আসা-যাওয়া, শিশুদের খেলাধুলা এগুলো অধিকার। সাধারণ মানুষের অধিকার বঞ্চিত করে কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য মাঠ বরাদ্দ থাকলে সামাজিক বৈষম্য হয়, অবিচার হয়। তাই এটি আর করতে দেয়া হবে না।
ডিএনসিসি প্রশাসক তার দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাসের কথা উল্লেখ করে বলেন, গত দুই মাসে আমরা কয়েকটি মাঠ উদ্ধার করেছি। গত সপ্তাহে মিরপুর প্যারিস রোড মাঠের অবৈধ মেলা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে মিরপুর বাউনিয়ায় ১২ বিঘা একটি মাঠ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে বড়দের জন্য একটি অলিম্পিক সাইজের ফুটবল মাঠের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও আলাদা খেলার মাঠ থাকবে।
পরে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ শিশু-কিশোরদের উৎসাহিত করতে নিজে ব্যাটিং করে ‘ক্রিকেট কার্নিভাল-২০২৫’ এর শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় বিপরীতে বোলিং করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক। এরপর ডিএনসিসি প্রশাসক অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে ছবি আঁকা হয়েছে সেগুলোর প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
বিশ্ব ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসির ঘরেই যেন গড়ে উঠছে ভবিষ্যতের তিন তারকা। থিয়াগো, মাতেও আর সিরো—তিন পুত্রই এখন নিয়মিত ফুটবলের সঙ্গে জড়িত। অনুশীলন থেকে শুরু করে মাঠের খেলার পর বল নিয়ে ছোটাছুটি, সবখানেই দেখা মিলছে ফুটবল নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস। আর এ নিয়েই মুখ খুলেছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
‘সিম্পলি ফুটবল’ নামের একটি অনুষ্ঠানে ছেলেদের ফুটবল নিয়ে কথা বলেন মেসি। বলেন, ‘ওরা সারাদিনই বল নিয়েই থাকে। ওদের সঙ্গে সময় কাটানো আমি খুব উপভোগ করি। প্রতিদিন ওরা অনুশীলন করে, ম্যাচ খেলে, পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করে। এটা দারুণ এক অভিজ্ঞতা।’
মেসির তিন ছেলে একেবারে ভিন্ন ধাঁচের ফুটবলার। মেসির মতে, বড় ছেলে থিয়াগো (১২) অনেক বেশি গোছানো, ভেবেচিন্তে খেলে, মাঝমাঠের খেলোয়াড় হওয়ার উপযুক্ত। ‘ও খুব চিন্তাশীল, খেলার মাঝে অনেক পরিকল্পনা করে। একজন আদর্শ মিডফিল্ডার টাইপ।’
মাঝের ছেলে মাতেও (৯) সম্পর্কে মেসির মূল্যায়ন, ‘সে একজন ফরোয়ার্ড, সবসময় গোল করতে চায়। গোলের কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসে। বুদ্ধিমান খেলোয়াড় বলা যায়।’
ছোট ছেলে অর্থাৎ সাত বছর বয়সী চিরোকে নিয়ে মেসির মন্তব্যটা এমন, ‘চিরো আরও বিস্ফোরক। সে চ্যালেঞ্জ জানাতে পছন্দ করে এবং একজন ওয়ান অন খেলোয়াড়। সে নিজের খেলা তৈরিতে বেশি আগ্রহী।’
তবে তিন ছেলের মধ্যে কাকে সেরা বলা যায়—সে প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি মেসি। হেসে বলেন, ‘আমি যদি একজনের নাম বলি, তাহলে বাকিরা এসে বলবে তুমি তার নাম কেন বললে! তাই এই প্রশ্নের উত্তর নিজের কাছেই রাখি।’
ফুটবলে ছেলেদের আগ্রহ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা সবাইকে নিয়ে কথা বলে। এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস, হলান্ড, লেভান্ডোভস্কি, এমনকি লামিন ইয়ামালও বাদ যায় না। তারা সব দেখে, সব জানে। যদিও তাদের মতো হতে চায় না, তবে জানাশোনা অনেক।’
জাতীয় দলের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধ্যায় শেষ। সবশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেছিলেন কেবল একটি ম্যাচ, সেখানেও তিনি বলার মতো কিছু করতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে চোটের কারণে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশে ছিলেন না তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেটাই লাল-সবুজের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহর শেষ।
এরপর দেশে ফিরে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে শুরু থেকেই ছিলেন না তিনি, ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি বেশ কয়েকটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে খেলেছেন ৫ ম্যাচ তবে বলার মতো কিছুই করতে পারেননি।
গতকাল সুপার লিগের প্রথম ম্যাচেও ব্যাট হাতে হয়েছেন ব্যর্থ, করেছেন মোটে ১২ রান। দেশের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার মোহামেডানের হয়ে খেলছেন চলমান ডিপিএলে। সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচে (১০, ৭, ১৬, ১৭, ১২) সেখানে তিনি করেছেন মোটে ৬২ রান। সর্বোচ্চ রান করেছেন এর মধ্যে ১৭, স্ট্রাইকরেট ৬৬.৬৭।
মাহমুদউল্লাহর সাম্প্রতিক এমন পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিবির এক নির্বাচক দৈনিক বাংলাকে বলছিলেন, ‘এটা নিয়ে হয়তো কোচদের সঙ্গে কথা বলছে রিয়াদ, অনেক দিন ধরে সে খেলছে। কোথায় ভুল হচ্ছে বা কি হচ্ছে সে সব কিছুই বুঝার কথা। কারও না কারও সঙ্গে নিশ্চয়ই কথা বলছে সে।’
‘যেকোনো বড় খেলোয়াড়ের কাছ থেকে কিন্তু চাওয়া-পাওয়াটা একটু বেশিই থাকে। ওর একটা বিষয় আছে যে, এখন হয়তো রান পাচ্ছে না, কিন্তু এমন দুই ম্যাচে রান পেয়ে যাবে। যেটা দলের জন্য ভালো হবে, তখন যেটা পুরো সিজনের ব্যর্থতা ঢেকে দিতে পারে। মানুষটা একটা আশা নিয়ে বাঁচে।’
টানা তিন ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ খেলার সহজ সমীকরণ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতলেই কোনো হিসেব-নিকেশ ছাড়াই প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। কিন্তু ধুঁকতে থাকা সেই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই ধরাশায়ী হলো টাইগ্রেসরা। টানা তিন জয়ের পরে হার দেখল জ্যোতি বাহিনী। এতে অপেক্ষা বাড়ল বিশ্বকাপে খেলার।
লাহোরে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন শারমিন আক্তার। জবাবে খেলতে নেমে ৪৬ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
অল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা প্রত্যাশামত হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এদিন ইনিংস ওপেন করেন কিয়ানা জোসেফ ও জায়দা জেমস। জায়দা ৯ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ২৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। তাকে বোল্ড করেন জান্নাতুল ফেরদৌস।
আরেক ওপেনার কিয়ানা দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দলকে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ক্যারিবিয়ানদের শক্ত ভিত গড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে ৩১ রানে রাবেয়ার বলে থেমেছেন তিনি।
২৪ রান করা শেইমেন ক্যাম্পবেলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন ফাহিমা খাতুন। এরপর চতুর্থ উইকেটে দুজনে মিলে ৬৬ রান যোগ করেন। ম্যাথিউসকে (৪৫ বলে ৩৩) ফিরিয়ে অবশেষে সেই জুটি ভেঙেছেন মারুফা আক্তার। এক ওভার পরই টেইলরকে (৫১ বলে ৩৬) ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মারুফা।
কিন্তু এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আবারো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ক্যারিবিয়ানরা। বিশেষ করে ছিহনেল হেনরি। তার ৪৮ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এ ছাড়া ১০ বলে ১১ রান করে শেষদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন আলিয়া আলিন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি পেয়ে ওপেনিংয়ে নেমে তেমন কিছু করতে পারেননি সোবহানা মোস্তারি (৬)। পরে অবশ্য চাপ বাড়তে দেননি শারমিন আক্তার ও ফারজানা হক। চার ম্যাচে তৃতীয়বার শতরানের জুটি গড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ১১৮ রানের সেই জুটি ভাঙেন আলিয়া আলিন। প্রথমে ফেরান ফারজানাকে (৭৮ বলে ৪২) এরপর শারমিনকেও (৭৯ বলে ৬৭) ফিরিয়েছেন তিনিই।
গত নভেম্বরে জাতীয় দলে ফেরার পর নিজেকে নতুন ভাবে চেনাচ্ছেন শারমনি। নতুন এই অধ্যায়ে দশ ম্যাচে এটি তার পঞ্চম ফিফটি। সব মিলিয়ে ৬০.৩৩ গড়ে তার সংগ্রহ ৫৪৩ রান। বিশ্ব ক্রিকেটেই এই সময়ে শারমিনের চেয়ে বেশি ওয়ানডে রান নেই আর কারও। জুটি ভাঙার পর আর কেউ হাল ধরতে পারেননি। তবে শেষ দিকে কার্যকর দুটি ইনিংস খেলেন নাহিদা আক্তার (২৫) ও রাবেয়া খান (২৩)।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ফুটবলে এক বিপ্লব ঘটে গেছে। এর পেছনের কারণ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরী। হামজার আগমনেই বদলে গেছে দেশের ফুটবল। আসতে শুরু করেছে আরও অনেক বংশোদ্ভূত ফুটবলাররা। ফুটবলের সেই জোয়ার এবার অন্য ফেডারেশনগুলোতেও লাগাতে চায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সে জন্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাথলেটদের বাংলাদেশের হয়ে খেলানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে ফেডারেশনগুলোকে।
গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, এনডিসি সকল ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা প্রধান নির্বাহীকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন।
বিশ্বের নানা প্রান্তে বাংলাদেশের মানুষের বসবাস। তারা বা তাদের বংশধরদের অনেকে বিদেশের মাটিতে ক্রীড়াঙ্গনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভালো মানের এবং বাংলাদেশের পক্ষে দীর্ঘদিন খেলতে পারেন এমন বংশোদ্ভূতদের সম্পৃক্ত করতে পারলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফলতার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এ জন্য চিঠিতে ‘স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কৃতি খেলোয়াড়গণকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করার সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ সংক্রান্ত’ শিরোনাম করেছে।
হামজা চৌধুরী বাংলাদেশ দলে আসার পরই ফুটবলের আবহ বদলে গেছে। দলীয় শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বত্রই এখন ফুটবল নিয়ে আলোচনা। সামিত সোমও যোগ হলে বাংলাদেশ দলের মান আরও অনেক বাড়বে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়া বাংলাদেশ দলে প্রথম খেলেন। জামালকে অনুসরণ করে ফুটবল দলে তারিক কাজী, রাহবার ও কাজেম শাহ খেলেছেন।
ফুটবলের মতো অন্য খেলাগুলোতেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ক্রীড়াবিদ অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হলে পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন, বাবা-মায়ের কাগজপত্র হালনাগাদসহ আরও অনেক বিষয়াদির আনুষ্ঠানিকতা থাকে।
এই সংক্রান্ত বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি কোনো ফেডারেশন/ক্রীড়া সংস্থা এই সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করলে অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও পাশে থাকবে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান প্রবাসী জিমন্যাস্ট জ্যাক আশিকুল ইসলামের অনুকূলে বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সম্পৃক্ত রয়েছে।
ফুটবলের বাইরে অ্যাথলেটিক্স, বক্সিং, জিমন্যাস্টিক্স ও সাঁতারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ক্রীড়াবিদরা অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইংল্যান্ড প্রবাসী ইমরানুর রহমান এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্সে স্বর্ণ জিতেছেন। ২০১২ সালে আমেরিকান প্রবাসী সাইক সিজার লন্ডন অলিম্পিকে খেলেছিলেন। নিউজিল্যান্ড প্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদির ২০২২ সালে তুরস্কে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছিলেন। ২০২৩ হাংজু এশিয়ান গেমসে আমেরিকান প্রবাসী জিনাত অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে লন্ডন প্রবাসী জুনাইনা আহমেদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরেই ভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন। দুই দলই খেলছে বাছাই পর্ব। সেই স্বপ্ন ভঙ্গের প্রতিশোধ নেওয়ারও সুযোগ এসেছে এবার বাংলাদেশের সামনে। বাছাইয়ে আজ মুখোমুখি হবে দুই দল। লাহোরে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে ম্যাচ। এটি বাংলাদেশের চতুর্থ ম্যাচ।
পাকিস্তানে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে রীতিমতো উড়ছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে জয় ছিনিয়ে আনছে জ্যোতি বাহিনী। টানা তিন ম্যাচে জিতে বিশ্বকাপে খেলার পথ বেশ মসৃণ করে রেখেছে বাংলার বাঘিনীরা। জ্যোতির দলের সমীকরণও অনেকটা সহজ। থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট ও ১.৪৯৪ রেটিং নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের টেবিলের শীর্ষে। বিশ্বকাপের টিকিট কাটতে বাংলাদেশের প্রয়োজন কেবল একটি জয়।
সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার টিকিট নিশ্চিত করেছে ৬ দল। ৮ দলের বিশ্বকাপে বাকি আছে দুটি টিকিট। ৬ দলের বিশ্বকাপ বাছাই থেকে টেবিলের শীর্ষ দুই দল সে দুটি টিকিট পাবে। বাছাইয়ে প্রত্যেক দলই খেলবে পাঁচটি করে ম্যাচ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তিনটি করে ম্যাচ খেলে এখনো অপরাজিত। দুই দলেরই সমান ৬ পয়েন্ট। স্কটল্যান্ডের ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট, সমান ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের ২ পয়েন্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট, থাইল্যান্ড ৩ ম্যাচ খেলে কোনো পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি। পাকিস্তান ছাড়া বাকি চারটি দল নিজেদের সব ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জন করতে পারবে না।
বাংলাদেশের বাকি দুটি ম্যাচ উইন্ডিজ ও স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে। একটি জিতলেই কোনো হিসেব ছাড়া বিশ্বকাপে। যদি ম্যাচ দুটো হেরেও যায়, বিশ্বকাপে খেলার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে এসব হিসাব-নিকাশে একদমই যেতে নারাজ জ্যোতি। আগের তিন ম্যাচের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও দাপুটে ক্রিকেট খেলতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমরা দল হিসেবে যেটা ভালো করেছি, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। এটা অবশ্যই একটা বড় ম্যাচ হতে চলেছে, আর গত কয়েকটা ম্যাচে যেভাবে খেলেছি, আমরা চাই সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে তিনটি ম্যাচে হার ও একটি ম্যাচে জিতেছে। তবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী দলের তকমা নিয়ে এসেও ছন্দহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে হেইলি ম্যাথিউসের দল। তাদের বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
স্বস্তিদায়ক বোলিং আক্রমণের সঙ্গে বাংলাদেশের সব সময়ের বড় অস্বস্তি ব্যাটিং। জ্যোতি বললেন ব্যাটিংয়ে উন্নতির কারণেই ভালো করছেন তারা, ‘গত কয়েক বছর ধরে ব্যাটিং ছিল আমাদের দৃশ্যমান সমস্যা। আমাদের বোলাররা ভালো করলেও ব্যাটিং অনেক সময়েই সাড়া দিতে পারেনি। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে আমাদের ব্যাটাররা দারুণভাবে খেলছে। বিশেষ করে টপ-অর্ডার থেকে নিয়মিত রান আসছে। এটাই ছিল একমাত্র বিভাগ, যেখানে আমাদের উন্নতির দরকার ছিল, এখন সেগুলোর ফল আমরা পাচ্ছি।’
ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘নাইটহুড’ পাচ্ছেন ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা টেস্ট বোলার জেমস অ্যান্ডারসন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের বিদায়ী সম্মাননা তালিকায় একমাত্র ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই বিরল সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ এমনটাই জানিয়েছে।
গত গ্রীষ্মে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান ৪২ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন। ২০০৩ থেকে ২০২৪—দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে তিনি খেলেছেন ১৮৮টি টেস্ট, যেখানে উইকেট নিয়েছেন ৭০৪টি। এটি কোনো ফাস্ট বোলারের জন্য বিশ্বরেকর্ড। এ ছাড়া খেলেছেন ১৯৪টি ওয়ানডে ও ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
অ্যান্ডারসনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ২০০২ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক দিয়ে। পরের বছরই নামেন টেস্ট অঙ্গনে।
গত জুলাইয়ে লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলার পর অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ড দলের ফাস্ট বোলিং মেন্টর হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে এখনও খেলে যাওয়ার ইচ্ছে অ্যান্ডারসনের। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যদি ফিটনেস ঠিক থাকে, তাহলে আরও দুই থেকে তিন বছর খেলার পরিকল্পনা রয়েছে তার। তবে ইনজুরির কারণে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুতে মাঠে নামা হয়নি তার।
২০০০ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন অ্যান্ডারসন, এরপর ২০০২ সালে লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেক। সেই শুরু থেকে আজকের দিন পর্যন্ত দীর্ঘ পথচলায় তিনি হয়ে উঠেছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাম। এবার তার নামের সামনে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি গৌরবময় উপাধি— স্যার জেমস অ্যান্ডারসন।
বলের দখলে আধিপত্য বিস্তার করলেও ধারহীন আক্রমণেরে কারণে ম্যাচজুড়ে ভুগতে হলো বার্সেলোনাকে। তবে ভাগ্যের ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষের দেওয়া আত্মঘাতী গোল ও তাদের বেশ কয়েকটি আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়ায় তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মাদ্রিদের বুতার্কে স্টেডিয়ামে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে লা লিগার ৩১তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
এতে করে ২২ জয় ও চার ড্রয়ে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
লিগে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে লেগানেসের বিপক্ষে একই ব্যবধানে হারে বার্সেলোনা। ফিরতি লেগে এসে তার প্রতিশোধ নিল তারা।
অবশ্য ঠিক প্রতিশোধ বলা চলে না। কারণ মাঠে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরালেও তেমনভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণ শানিয়েছিল লেগানেস, তা থেকে গোলও আদায় করতে পারত দলটি। মাঝে একবার বল জালেও জড়িয়েছিল তারা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। শেষের দিকে সময়ক্ষেপণ করে ওই এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ার জন্য শিষ্যদের ইঙ্গিত করতে দেখা যায় ফ্লিককে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই।
হারলেও ম্যাচ শেষে তাই কিছুটা তৃপ্তি ঝরেছে লেগানেস কোচ বোর্হা হিমেনেসের কণ্ঠেও, ‘আজ আমরা বার্সেলোনার মতো একটি দলকে সময় নষ্ট করতে এবং শেষের বাঁশি চাইতে বাধ্য করেছি।’
এই জয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করে লিগ শিরোপা জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল কাতালান জায়ান্টরা।
তবে পূর্ণ তিন পয়েন্ট অর্জনের রাতের স্বস্তিতে নেই দলটি। চোট পেয়ে প্রথমার্ধে বিরতির আগে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সার তরুণ ফুলব্যাক আলেহান্দ্রো বালদেকে।
ম্যাচ শেষে কাতালুনিয়া রেডিওর ক্রীড়া সাংবাদিক হাভি মিগেল জানিয়েছেন, হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছেন বালদে। ফলে অন্তত তিন সপ্তাহের জন্য ছিটকে যেতে পারেন তিনি।
তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই তার কত দিনের জন্য মাঠের বাইরে থাকা লাগবে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ বিষয়ে মিগেল জানান, রবিবার বালদের শারীরিক পরীক্ষা হবে। তারপর ক্লাবের পক্ষ থেকে তার চোটের হালনাগাদ তথ্য জানানো হবে।
এছাড়া, স্পোর্তের কাতালুনিয়াভিত্তিক সাংবাদিক টনি হুয়ানমার্তিও বালদের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এই ধরনের চোট থেকে সেরে উঠতে অন্তত দুই সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হয়।
এদিকে এই ম্যাচে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সার অপর দুই ডিফেন্ডার রোনালদ আরাউহো ও এরিক গার্সিয়াকেও। তবে তাদের বিষয়গুলো গুরুতর নয় বলে জানান মিগেল।
আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ফিরতি লেগের ম্যাচে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে বার্সেলোনা। প্রথম লেগে ৪-০ গোলে জিতে এগিয়ে রয়েছে দলটি। এরপর আগামী ১৯ ও ২২ এপ্রিল লা লিগায় যথাক্রমে সেল্তা ভিগো ও মায়োর্কার বিপক্ষে মাঠে নামবেন ফ্লিকের শিষ্যরা। তারপর ২৬ এপ্রিল কোপা দেল রের ফাইনাল খেলতে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবেন তারা।
ডর্টমুন্ড ম্যাচ থেকেই আরাউহো ও গার্সিয়াকে পেলেও উল্লিখিত ম্যাচগুলোতে বালদেকে হারানোর জোর সম্ভাবনা রয়েছে বার্সেলোনার।
দুর্দান্ত গতি, ড্রিবলিং ও দারুণ সব ক্রস দিয়ে বার্সেলোনার একাদশে ইতোমধ্যে নিজের অবস্থান পাকা করে নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী এই লেফট উইংব্যাক। সতীর্থদের সঙ্গে অসাধারণ বোঝাপড়াও তৈরি হয়েছে তার।
এদিকে মৌসুমের শেষভাগে এসে একটু একটু করে কোয়াড্রাপল (সম্ভাব্য চারটি শিরোপার সবগুলো) জয়ের দিকে এগোচ্ছে কাতালান দলটি। ইতোমধ্যে স্প্যানিশ সুপার কাপ পকেটে পুরেছে তারা। উঠেছে কোপা দেল রের ফাইনালে। লা লিগায়ও পাচ্ছে শিরোপা জয়ের সুবাস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠা তাদের জন্য কেবল সময়ের ব্যাপার। এমন সময়ে বালদের এই চোট নিঃসন্দেহে কোচ ফ্লিকের কপালে ফেলেছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
তেমন বিশ্রাম ছাড়াই টানা ম্যাচ খেলে যাওয়া বার্সেলোনা শিবিরে বালদের না থাকা সত্যিকার অর্থেই দুশ্চিন্তার বিষয়। বিকল্প খেলোয়াড় জেরার্দ মার্তিন মাঝেমধ্যে খেলে থাকলেও সতীর্থের মতো অতটা পটু নন তিনি। ফলে পরিবর্তিত এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিয়ে লক্ষ্য পূরণ করেন হান্সি ফ্লিক, তা-ই এখন দেখার বিষয়।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন সামিত সোম। অবশেষে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) জানিয়ে দিলেন তিনি লাল-সবুজের জার্সিতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান।
সূত্র জানিয়েছে, সামিত হ্যাঁ বলায় রোববার থেকে তার পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করবে বাফুফে। এ বিষয়ে গতকাল বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম বলেছেন, ‘সামিত আমাদের জানিয়েছে সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চায়। এখন পাসপোর্ট করতে কোন প্রক্রিয়ায় এগুতে হবে, কতদিন লাগবে এসব জানতে চেয়েছে সে।’
এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ জুন। সেই ম্যাচের আগেই সামিতের পাসপোর্ট ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চায় বাফুফে।
২৭ বছর বয়সি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সামিতের জন্ম কানাডায়। মা-বাবা দুজনই বাংলাদেশি। ফলে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে খুব বেশি সমস্যা হবে না মনে করছে বাফুফে। তবে সামিত কানাডার জাতীয় দলের হয়ে খেলায় ফিফার অনুমতির ব্যাপারও আছে।
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সামিতকে অভিষেক করানোর কথা ভাবছে ফুটবল ফেডারেশন। এ বিষয়ে সামিতও আগ্রহী জানিয়ে ফাহাদ করিম বলেন, ‘সামিত বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচগুলোর বিষয়ে আমাদের থেকে জানতে চেয়েছে।
কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব কালাভরি এফসির মিডফিল্ডার সামিত। ২০১৬ সালে কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। ২০২০ সালে কানাডার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন দুটি ম্যাচ।
প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া জামালের। এরপর জাতীয় দলে আসেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক কাজী।
সর্বশেষ গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরী, যা অতীতের সব উচ্ছ্বাসই ছাপিয়ে গেছে।
একসময় দুই ছিল প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। ৭০ দশকের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে ৮০-৯০ দশক ও বর্তমান শতাব্দীর প্রথম দিকেও ঢাকাই ক্রিকেটে আবাহনী আর মোহামেডানই ছিল শেষ কথা। সাথে ভিক্টোরিয়া, আজাদ বয়েজ, বিমান, কলাবাগান, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, জিএমসিসি আর রূপালী ব্যাংকও ছিল। তবে বেশিরভাগ সময় শিরোপা লড়াইটা মোটামুটি আবাহনী আর মোহামেডানের মধ্যেই কেন্দ্রীভূত থাকতো।
ঢাকা লিগ, দামাল স্মৃতি, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস ও স্বাধীনতা দিবস ক্রিকেটের বেশিরভাগ ট্রফি উঠেছে আকাশি হলুদ ও সাদাকালো শিবিরেই।
মাঝে কিছুদিন চুপসে ছিল দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তবে গত বছর থেকে আবারও যেন প্রাণ পেয়েছে। গতবার আবাহনী ও মোহামেডান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানে। আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর মোহামেডানকে রানার্সআপ হয়েই তুষ্ট থাকতে হয়।
এবারও দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আছে খুব কাছাকাছি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, প্রথম পর্বে শীর্ষস্থানের লড়াইয়ে এখন টিকেই আছে আবাহনী আর মোহামেডান।
এই দুই দলের কে ওপরে থাকবে-আবাহনী নাকি মোহামেডান? নাকি পয়েন্ট সংগ্রহে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সমান্তরালে থেকেই শুরু করবে সুপার লিগ?
এ প্রশ্ন সামনে রেখেই আজ মুখোমুখি হচ্ছে আবাহনী-মোহামেডান। শনিবার সকাল ৯টায় শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।
দুই দলেরই প্রথম রাউন্ডে এটা শেষ ম্যাচ। আগের ১০ খেলায় ৯টিতে জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে সবার ওপরে আবাহনী। আর সমান ম্যাচে ২ পরাজয় ও ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট পাওয়া মোহামেডান আছে দ্বিতীয় স্থানে।
নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, পারভেজ হোসেন ইমনের দল আবাহনী জিতলে অবস্থান হবে আরও মজবুত। তখন নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে আরও ২ পয়েন্ট মানে মোট ৪ পয়েন্ট এগিয়ে যাবে আকাশি-হলুদরা।
অন্যদিকে রনি তালুকদার, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু হায়দার রনি, এবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলামে গড়া মোহামেডান জিতে গেলে পয়েন্টে আবাহনীকে ছুঁয়ে ফেলবে।
নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবালের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর দল দল পরিচালনায় আসা তাওহিদ হৃদয়ের নেতৃত্বে কাগজে-কলমের এক নম্বর দল মোহামেডান শেষ ম্যাচে এসে আবাহনীর সমান (১১ খেলায় ১৮ করে) পয়েন্ট পাবে কিনা, সেটাই দেখার।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) গতকাল ছিল বেশ আলোচনা-সমালোচনার দিন। পারিশ্রমিক না পেয়ে অনুশীলন বর্জন করেছিলেন পারটেক্স ক্রিকেট ক্লাবের ক্রিকেটাররা। আজ ম্যাচ বয়কটেরও হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন সাব্বির আহমেদরা। বিসিবির কাছে দিয়েছেন চিঠিও। তবে এর চেয়ে বড় ঘটনা ঘটে এ দিনই। পারটেক্সের কোচ আনারুল মোস্তাকিম নিজ দলের ক্রিকেটারের বিরুদ্ধেই ফিক্সিংয়ের অভিযোগ এনেছেন। যদিও দলটির কর্তা সাজ্জাদ হোসেন এমন দাবি উপেক্ষা করেছেন। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
পারটেক্সের ক্রিকেটারদের ফিক্সিংয়ের ঘটনা দলের মালিক অস্বীকার করলেও গতকাল অন্য আরেকটি ম্যাচে দেখা গেছে এমনই একটি ঘটনা। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব বনাম শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার খেলায় একটি আউটের ধরন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পারিশ্রমিক বিতর্ক নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পারটেক্সের একজন ক্রিকেটার জানান, ‘লিগ প্রায় শেষ দিকে চলে এসেছে, কিন্তু এখনো আমরা পুরো পারিশ্রমিক হাতে পাইনি। এ কারণেই আজ অনুশীলনে যাইনি, শুধু জিম করেছি।’
তবে পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক হয়েছে বলেও জানান তিনি। তার ভাষায়, ‘সবার কিছু টাকা আগেই দেওয়া হয়েছিল। বাকি অংশ নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে আজকের ঘটনার পর বিষয়টি মিটে গেছে।’
পারিশ্রমিক বিতর্কের মাঝেই পারটেক্সের কোচ আনোয়ারুল মোস্তাকিম জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কিছু কিছু খেলোয়াড় নেতিবাচক ক্রিকেট খেলছেন, যা সন্দেহজনক। সংবাদমাধ্যমকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অফিশিয়ালরা নির্দেশনা দিয়েছে একরকম। তারা (ক্রিকেটাররা) খেলছে আরেক রকম। ওরা গিয়ে নেগেটিভ ক্রিকেট খেলেছে।’
ক্রিকেটারদের নিয়ে ফিক্সিংয়ের সন্দেহ করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পারটেক্সের কোচ আনোয়ারুল বলেন, ‘এটা শুধু (সন্দেহ) আমার না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে, এটা সন্দেহজনক, তোমাদের দলের খেলোয়াড়েরা এমন করছে কেন! এ রকম তো খেলার কথা না। যেখানে ২২০ রান তাড়া করছি, ২০ ওভারে ৩৭ রান। এটা তো সন্দেহজনক খেলা।’
তবে আনোয়ারুল প্রমাণ ছাড়া কথা বলতে অনিচ্ছুক। তিনি বলেন, ‘আমি তো প্রমাণ ছাড়া কোনো কথা বলতে পারছি না। আমাকে অনেক খেলোয়াড় ফোন করছে, আপনার এই খেলোয়াড় ফিক্সিং করছে। এই খেলোয়াড় এটা করছে, ওটা করছে। আমার তো এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা নেই, ফিক্সিংটা করে কীভাবে। কিন্তু এ রকম নেগেটিভ খেলা কেন!’
তবে ফিক্সিংয়ের বিষয়টিকে অস্বীকার করে দলটির মালিক সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘এটা রাগের মাথায় বলছে হয়তো। এটা ইমম্যাচিউর কথাবার্তা। আমি দেখিনি, তবে এটা আবেগে বলছে হয়তো। এ ধরনের কথা (বলার) প্রশ্নই আসে না।’
মিরপুরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪১ ওভারে ১৭৮ রান তুলতেই অলআউট হয় গুলশান। লক্ষ্য তাড়ায় শাইনপুকুর গন্তব্যের প্রায় দ্বারপ্রান্তে ছিল। শেষ উইকেটে তাদের জয় পেতে প্রয়োজন ছিল ৭ রান। ঠিক তখনই অদ্ভুতভাবে আউট হয়ে আলোচনার কেন্দ্রে দলটির টেলএন্ডার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির।
৪৪তম ওভারের ঘটনা, ওভারের প্রথম বলটি স্পিন-অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম ওয়াইড লাইনেরও বেশ বাইরে ফেলেছিলেন। স্বাভাবিকভাবে ওয়াইডের সংকেত দেন আম্পায়ারও। কিন্তু স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার সাব্বির এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বসেন। তবে আউট থেকে বাঁচতে ব্যাটটি পপিং ক্রিজে ঢুকিয়েও রহস্যজনকভাবে বাইরে এনে রাখেন তিনি। উইকেটকিপার প্রথমে ভারসাম্য হারিয়ে স্টাম্প ভাঙতে পারেননি, পরে সাব্বিরের ব্যাট বাইরে দেখে দ্বিতীয় সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনি। সামাজিক মাধ্যমে সেই আউটের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ‘ম্যাচ পাতানো’ কিংবা ‘ফিক্সিং’য়ের মতো সন্দেহপ্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।