দেশের অর্থনীতি ও বিনিয়োগের অনিশ্চয়তা কাটাতে দ্রুত সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সরকার বেশি দিন থাকতে পারে না। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা দরকার। নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার কোনো কারণ নেই। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা না থাকলে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা।
বুধবার রাজধানী ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫, সংকটময় সময় প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ সময় অন্যদের মধ্যে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা ফেলো মুনতাসির কামাল, সৈয়দ ইউসুফ সাদাতসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছে। আমরা চাই, সরকার ঘোষিত রোডম্যাপের মধ্যেই নির্বাচন হোক। যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখন পর্যন্ত অর্থনীতিতে তেমন কোনো চাঞ্চল্য দেখছি না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অনেক খাতভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছে। অর্থনীতিকেন্দ্রিক কিছু সংস্কার আমরা লক্ষ্য করছি। তবে এখন পর্যন্ত জনগণের জীবনে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের অঙ্গনে স্বস্তি আনার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।’
চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো ত্রিমুখী অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব বলে মনে করেন ফাহমিদা খাতুন। বলেন, ‘প্রথমেই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা উচিত, যাতে তারা অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারে কিছুটা অবকাশ পায়। দ্বিতীয়ত, বছরের পর বছর ধরে পুঞ্জীভূত চ্যালেঞ্জগুলো একত্রে মোকাবেলা করা। তৃতীয়ত, সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ এবং তা টেকসই করা অর্থাৎ সংস্কার কর্মসূচিকে চলমান রাখা।’
ক্ষমতার পালাবদল হলেও অর্থনৈতিক গতিধারার উন্নতি নেই জানিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছর একই সময় তা ছিল ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এতে দেখা যাচ্ছে, রাজস্ব আহরণে উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। রাজস্ব আহরণের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে ৪৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন।’
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকার এমন সময়ে ভ্যাট বাড়াচ্ছে, যে সময়ে সাধারণ মানুষ মূল্যস্ফীতির জাঁতাকলে পিষ্ট। মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি দ্বিগুণ। অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে সুযোগ এসেছিল, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো। কিন্তু সরকার সে পথে হাঁটেনি। তারা পরোক্ষ করের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে।’
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, জনগণ যে কর দেয়, সরকার পুরোপুরি পায় না। সরকারের সুযোগ ছিল এসব জায়গায় হাত দেওয়ার, কিন্তু দেয়নি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেনি ভ্যাট বাড়াতে। তারা বলেছে যেকোনো উপায়ে রাজস্ব বাড়াতে। কিন্তু সরকার প্রত্যক্ষ কর না বাড়িয়ে পরোক্ষ কর বাড়াচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি বাস্তবায়ন, মূল্যস্ফীতি কর্মসংস্থান, বেসরকারি বিনিয়োগে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি নেই। অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে সফলতা এখনো দেখা যায়নি। এ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জনসম্মুখে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি প্রকাশ করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব চুক্তি উন্মুক্ত করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ের ২৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি চেয়ে সম্প্রতি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেছিল সিপিডি। তবে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে এই যুক্তি তুলে ধরে ২৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য অন্তর্বর্তী সরকার দেয়নি।
জুলাই আন্দোলনের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়নি জানিয়ে সিপিডি বলছে, আন্দোলনে মূল কারণ ছিল কর্মসংস্থানের অভাব। বিগত সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি বেকারত্ব পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছিল। সমাজে বৈষম্য বেড়েছিল। গত ছয় মাসে অর্থনীতিতে তেমন চাঞ্চল্য ফেরেনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারেনি।
অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে পর্যালোচনা করে সিপিডি বলছে, বিদেশি ঋণের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অভ্যন্তরীণ উৎসে নির্ভরতা বাড়ছে, যা আগামীতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু আইন সংস্কারের দরকার রয়েছে বলে মনে করে সিপিডি। তারা আরও বলছে, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ক্ষেত্রে ইতিবাচক গতি রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে আমাদের পোশাক রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে বলে অর্থনীতি একেবারে ডুবে যায়নি। শেষ কয়েক বছরে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমজীবী মানুষ বিদেশ গিয়েছে কাজের সন্ধানে। এই ৪০ লাখ শ্রমজীবী মানুষের একটা বড় অংশ থাকে মধ্যপ্রাচ্যে। তবে রেমিট্যান্সে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না।
বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে সারা দেশে আহত ও গুম-খুনের শিকার দুই হাজারেরও বেশি পরিবারকে ‘ঈদ উপহার’ দিয়েছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশে এই ‘ঈদ উপহার’ দেয়া হয়। বিগত ১০ বছর ধরে প্রতি রমজান মাসে এই ‘ঈদ উপহার’ দিয়ে আসছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনটি।
এছাড়া এবারের রমজানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের মাঝেও ‘ঈদ উপহার’ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র পক্ষ থেকে। এবারের ঈদে সর্বোচ্চ সংখ্যক দুই হাজারের বেশি পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এ ‘ঈদ উপহার’ পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে এবং বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ সারাদেশে এ ‘ঈদ উপহার’ দানে কাজে সহায়তা করেছেন। তারা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন মানবিক কাজগুলো বিগত সময়েও করেছেন, আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত রাখবেন ইনশাআল্লাহ।
পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল সোমবার সারা দেশে উদযাপিত হবে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। একমাস সিয়াম সাধনার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের দিন জামায়েতের সহিত নামাজ আদায় করবেন।
এবারও রাজধানীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান জামাতে অংশ নেবেন- রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম হিসেবে এ জামাতে দায়িত্ব পালন করবেন। ক্বারী হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
প্রধান ঈদ জামাতের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠ। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বা অন্য কোনও কারণে জাতীয় ইদগাহ মাঠে জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এবারও মসজিদটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, এর এক ঘণ্টা পর পর তিনটি জামাত এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত
প্রথম জামাত : সকাল ৭টায়
সকাল ৭টায় প্রথম ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।
দ্বিতীয় জামাত : সকাল ৮টায়
সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমাম থাকবেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির থাকবেন প্রধান খাদেম মো. নাসিরউল্লাহ।
তৃতীয় জামাত : সকাল ৯টায়
সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস ড. মাওলানা মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. আব্দুল হাদী।
চতুর্থ জামাত : সকাল ১০টায়
সকাল ১০টায় চতুর্থ জামাতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. আলাউদ্দীন।
পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত : সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে
বেলা পৌনে ১১টায় পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. রুহুল আমিন।
ঢাকায় আরও যেসব স্থানে ঈদের জামাত
এবার ঢাকার ১ হাজার ৪৩৫টি মসজিদ ও ১৮৯টি ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার বাসিন্দাদের ঈদের জামাতের জন্য এবার প্রস্তুত করা হয়েছে আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠ। সেখানে ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতিব হাফেজ মাওলানা নাজীর মাহমুদ এবং দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র মোয়াজ্জিন এম এ জলিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টায় জমিয়তে আহলে হাদিসের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন বংশাল বড় জামে মসজিদের খতিব এবং বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের সেক্রেটারি জেনারেল শাইখ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী।
এছাড়া সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদ ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল লন মসজিদ এবং ঢাবির আবাসিক এলাকার বায়তুন নূর জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদ জামাত হবে।
সকাল সোয়া ৭টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে খেলার মাঠের পরিবর্তে নামাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে প্রথম জামাত বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত বকসি বাজার বায়তুস সালাম মসজিদে সকাল ৮টায় এবং আজাদ আবাসিক এলাকা মসজিদে সকাল ৮টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদ জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। এছাড়া মগবাজারের বিটিসিএল (সাবেক টিঅ্যান্ডটি) কলোনির জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এ জামাত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এছাড়া গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে সকাল সাড়ে ৬টা, সাড়ে ৭টা ও ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। লালবাগ শাহী মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় ঈদের দুটি জামাত হবে। পুরান ঢাকার তারা মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ও ৯টায় হবে ঈদের জামাত। সোবহানবাগ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় হবে ঈদ জামাত।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছয়টি জামাত হবে। মারকাজুল ফিকরিল ইসলামি (বড় মসজিদ) মসজিদে সকাল ৭টায়, সকাল সোয়া ৭টায় সি ব্লকের উম্মে কুলসুম জামে মসজিদে, সাড়ে ৭টায় এফ ব্লক জামে মসজিদে, ৮টায় জি ব্লকের বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে ঈদ জামাত হবে। কে ব্লকের মদিনাতুল উলুম মসজিদে সকাল সোয়া ৮টায় এবং এন ব্লকের ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত হবে।
এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টা ও সাড়ে ৯টায়, ধানমন্ডি ইদগাহ জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, মিরপুর দারুস সালাম এলাকার মীর বাড়ি আদি (মাদবর বাড়ি) জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ও সকাল ৯টায়, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের হারুন মোল্লাহ্ ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায়, মতিঝিলের আরামবাগের দেওয়ানবাগ শরিফে সকাল ৮টা ও সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
দারুস সালামের মাতবর বাড়ি জামে মসজিদে, সকাল সাড়ে ৭টায় ও সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদ জামাত হবে। এলিফ্যান্ট রোডের তাকওয়া মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, বায়তুল আমান জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, ইদগাহ মাঠে সকাল ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার তার প্রেস উইং কর্তৃক শেয়ার করা এক ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সকলকে আনন্দময় ঈদ মোবারক জানাচ্ছি। আশা করি ঈদের সময়, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের বাড়িতে যেতে পারবেন এবং আপনাদের পরিবারের সাথে আনন্দের সাথে ঈদ উদযাপন করবেন।’
তিনি দেশের জনগণকে তাদের আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করার, দরিদ্র পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার এবং তাদের ভবিষ্যৎ কীভাবে উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনার সন্তানদের আত্মীয়স্বজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন- এটাই আমার ইচ্ছা।’ এছাড়াও, তিনি ঈদের নামাজের সময় যেকোনো মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, পরাজিত শক্তির সকল উস্কানির মুখে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় থাকার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস প্রার্থনা করেন যে, ‘সকলের জীবন অর্থপূর্ণ ও আনন্দে ভরে উঠবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে সাহায্য করবেন।’
দেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসর চাঁদ দেখা গেছে। এতে আগামীকাল সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে। রবিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
এ বছর বাংলাদেশে রোজা শুরু হয়েছে ২ মার্চ। সে হিসাবে রবিবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা দেওয়ায় রোজা হয়েছে ২৯টি। এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়ালের প্রথম দিন ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করেন মুসলমানরা। তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
এবারের ঈদে ঢাকায় কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বছর ঢাকা মহানগরীতে ১১১টি ঈদগাহে ও ১৫৭৭টি মসজিদসহ মোট ১৭৩৯টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও ঢাকার অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠেয় ঈদ জামাতের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সমন্বিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস হয়ে থাকে। ২৯ রমজান শেষে যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়। আর চাঁদ দেখা না গেলে ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয় ৩০ রমজান শেষে।
এরআগে শনিবার (২৯ মার্চ) সৌদি আরবসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। যে কারণে রবিবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ঈদ উদ্যাপিত হয়েছে।
কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার খবর বলছে, বর্তমানে বিশ্বে ১৯০ কোটি মুসলমান রয়েছেন, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলমান বাস করেন ইন্দোনেশিয়ায়, প্রায় ২৪ কোটি। এছাড়া পাকিস্তানে ২২ কোটি, ভারতে ২১ কোটি, বাংলাদেশে ১৫ কোটি ও নাইজিরিয়ায় ১১ কোটি মুসলমান রয়েছেন।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ঐতিহ্যগতভাবে শাওয়ালের প্রথম তিনদিন ঈদ উদ্যাপিত হয়। কোনো কোনো দেশে তা আরও বেশি দিন হয়ে থাকে। এটা দেশগুলোর নিজস্ব সংস্কৃতির ওপর বেশি নির্ভর করছে।
ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে ঈদ উদ্যাপন শুরু হয়। তার আগে সংক্ষিপ্ত খুতবা পরিবেশন করা হয়। ঈদের দিনগুলোতে মুসলমানরা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যান। তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করা হয়। ইবাদত, খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ-উৎসব—সবই থাকে ঈদ উদ্যাপনে।
এবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেবেন।
এছাড়া, ঈদের দিন বিকাল ৪টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশে কবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে, তা জানা যাবে আজ রোববার সন্ধ্যায়।
পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা এবং ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠক থেকেই ঈদ কবে হবে, তা জানা যাবে।
যদি আজ চাঁদ দেখা যায়, তাহলে আগামীকাল সোমবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে।
অবশ্য রেওয়াজ অনুযায়ী, সৌদি আরবে যেদিন ঈদ উদ্যাপিত হয়, তার পরদিন বাংলাদেশে ঈদ উদ্যাপিত হয়। সৌদি আরবে আজ ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হচ্ছে। সেই হিসাবে আগামীকাল বাংলাদেশে ঈদ উদ্যাপিত হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
যদিও পুরো বিষয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য দেশবাসীকে আজ সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
পবিত্র ঈদের তারিখ নির্ধারণের পাশাপাশি হিজরি মাস গণনা করার জন্যও চাঁদ দেখা হয়, যা জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়। কিছু নিয়ম মেনে এই চাঁদ দেখা হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ বলেন, বর্তমানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ২০ সদস্যের। এ কমিটির সভাপতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। সহসভাপতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব। আর সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক। অন্যরা সবাই সদস্য।
জানা গেছে, এই কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ওয়াক্ফ প্রশাসক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকার সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ, চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ), ঢাকার কুড়িলের শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের অধ্যক্ষ মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, যাত্রাবাড়ীর জামেয়া মাহমুদিয়ার প্রধান মুফতি রেজাউল কারীম আবরার, চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির দাওয়া অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফারুক, পটুয়াখালীর দশমিনার আদমপুরা ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু সালেহ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার উপাধ্যক্ষ আবদুল গাফফার।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে, পবিত্র রমজান, পবিত্র ঈদুল ফিতর, পবিত্র ঈদুল আজহা, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-সহ অন্য যেসব ইসলামিক উৎসব-অনুষ্ঠানের সঠিক তারিখ নির্ধারণ করার জন্য চাঁদ দেখার প্রয়োজন হয়, সেসব উৎসব-অনুষ্ঠানের পূর্ববর্তী চান্দ্র মাসের ২৯ তারিখে এই কমিটির সভা আহ্বান করা হয়।
একই বিষয়ে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি আছে। একই দিনে জেলা কমিটি তাদের জেলায় চাঁদ দেখা গেল কি না, সে তথ্য জাতীয় কমিটির কাছে পাঠায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, একটি অ্যাপে জেলা কমিটি তথ্য পাঠাবে। জাতীয় কমিটিতে সেগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
থিওডোলাইট মেশিনের মাধ্যমেও চাঁদ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ছাদে থিওডোলাইট মেশিন স্থাপন করেন। সব তথ্য পর্যালোচনা করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি একটি কার্যপত্র তৈরি করে তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে, যাতে পবিত্র ঈদের তারিখের ঘোষণাও থাকে।
আর যখন এই ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচারিত হতে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় আজ পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে।
ঈদে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস-কে অবহিত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করে সেনাবাহিনী প্রধান আসন্ন ঈদে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা; লঞ্চ টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডসমূহে নিরাপদ সেবা নিশ্চিতকরণসহ সকল সড়কে নিরবিচ্ছিন্ন যান চলাচল; শিল্পাঞ্চলের মালিকদের সাথে শ্রমিকদের বোঝাপড়ার ব্যবস্থাকরণ এবং সেনাবাহিনীর চলমান বিবিধ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
এছাড়া, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সম্মানে দেশের সকল সেনানিবাসে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন এবং আহত যোদ্ধা ও শহীদ যোদ্ধাগণের পরিবারবর্গকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রিম ঈদ শুভেচ্ছা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশের আকাশে আজ রোববার পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে ৩০ রোজা পূর্ণ করে ঈদ উদযাপিত হবে আগামী মঙ্গলবার। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।
গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় ঈদগাহের হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক শাহজাহান মিয়া।
ডিএসসিসির প্রশাসক বলেন, এবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস নেই। এরপরও কোনো কারণে আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহের পরিবর্তে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এবার জাতীয় ঈদগাহে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটির এই প্রশাসক। তিনি বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
মুসল্লিদের জন্য অজু করার জায়গা, শৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে (বাণিজ্য মেলার পুরনো মাঠ) আগারগাঁওয়ে সকাল সাড়ে ৮টায়।
ঈদযাত্রা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আমি অনেক খুশি। এবার ঈদযাত্রাটা ভালো হচ্ছে। আর কালোবাজারির বিষয়ে আমাদের ছিল জিরো টলারেন্স।’
আজ রোববার ঈদযাত্রা উপলক্ষে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনে আসেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি স্টেশন ঘুরে দেখেছি, ট্রেনগুলো যে সময়ে ছাড়ার কথা, ঠিক সময়েই ছেড়েছে। কোনো ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে না। এখানে কোনো কালোবাজারি হচ্ছে না। টিকিট পেতেও কারও কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এখানে ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং দেওয়া হয়। এবারও তা–ই দেওয়া হয়েছে। এ জন্য অনেক সময় মনে হয় স্ট্যান্ডিং প্যাসেঞ্জার কেন? ঈদের সময় সবাইকে নেওয়ার জন্য স্ট্যান্ডিং পেসেঞ্জার নেওয়া হচ্ছে।’
ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকে শেষ মুহূর্তে ছাদে উঠে যায়। তখন তাকে টেনে নামাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য অনেকে ছাদে যাচ্ছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা অনেক খুশি। তারা কমফোর্টেবল ভাবে যাত্রা করতে পারছে। অনেকের দাদা-দাদি, নানা-নানির সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছে।’
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি স্টেশন ঘুরে দেখেছি, ট্রেনগুলো যে সময়ে ছাড়ার কথা, ঠিক সময়েই ছেড়েছে। কোনো ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে না। এখানে কোনো কালোবাজারি হচ্ছে না। টিকিট পেতেও কারও কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এখানে ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং দেওয়া হয়। এবারও তা–ই দেওয়া হয়েছে। এ জন্য অনেক সময় মনে হয় স্ট্যান্ডিং প্যাসেঞ্জার কেন? ঈদের সময় সবাইকে নেওয়ার জন্য স্ট্যান্ডিং পেসেঞ্জার নেওয়া হচ্ছে।’
ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকে শেষ মুহূর্তে ছাদে উঠে যায়। তখন তাকে টেনে নামাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য অনেকে ছাদে যাচ্ছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা অনেক খুশি। তারা কমফোর্টেবল ভাবে যাত্রা করতে পারছে। অনেকের দাদা-দাদি, নানা-নানির সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছে।’
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (৩০ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল (১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেবেন।
এছাড়া, ঈদের দিন বিকাল ৪টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলেও জানান তিনি।
জনসাধারণের জান-মালসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এ প্রেক্ষিতে ৯ পদাতিক ডিভিশন ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে নিরাপত্তা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে, বিভিন্ন সময়ে শিল্পাঞ্চলের কারখানার মালিকদের সাথে শ্রমিকদের বোঝাপড়ার ব্যবস্থা করছে এবং লঞ্চ টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, ও বাস স্ট্যান্ডসমূহে নিরাপদ সেবা নিশ্চিত করছে।
সেই সাথে ঢাকা থেকে বহির্গামী ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েসহ সকল সড়কে নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করে সকলের জন্য একটি আনন্দঘন ঈদ উপহার দিতে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে একযোগে কাজ করছে।
জুলাই কন্যারা ২০২৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মর্যাদাপূর্ণ ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী’ পুরস্কার অর্জন করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জুলাই কন্যাদের সাহসিকতার প্রতীক অভিহিত করে আজ তাদেরকে অভিনন্দনবার্তা পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি জুলাই কন্যাদের উদ্দেশে বলেন, "তোমাদের সবাইকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই স্বীকৃতি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে তোমাদের অসাধারণ সাহসিকতা, নেতৃত্ব এবং অটল অঙ্গীকারের শক্তিশালী প্রমাণ; সেই সংকটময় সময়ে তোমাদের কৃতি সত্যিকার সাহসিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে"।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা কেবল প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওনি, একইসঙ্গে অস্থির একটি সময়ে জাতিকেও আশা দিয়েছ।অভিনন্দন বার্তায় উল্লেখ করা হয়, পুরস্কারে যেমনটি বলা হয়েছে, অটল সংকল্পের সঙ্গে তোমরা সহিংস দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয়েছ, নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণের মুখে তোমরা পুরুষ সহ-সংগ্রামীদের সামনে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছ। ইন্টারনেট যখন বন্ধ ছিল তখনো মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছ।
অভিনন্দন বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "তোমাদের শক্তি, দৃঢ়তা এবং দৃঢ় সংকল্প বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী অগণিত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। তোমাদের নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা আমাদের সকলের কাছে স্মরণ করিয়ে দেয় যে ন্যায়বিচারের সাধনা কখনই সহজ নয়, তবে তা সর্বদা সার্থক। তোমরা বিশ্বকে দেখিয়েছ যে প্রকৃত নেতৃত্ব এবং ত্যাগ কেমন হয় এবং তোমাদের সাহসের মাধ্যমে তোমরা বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল এবং আরও ন্যায়সংগত ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করেছ'।
জুলাই কন্যাদের জন্য দেশবাসী গর্বিত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা ভীষণভাবে গর্বিত এবং এটি তোমাদের প্রাপ্য এক স্বীকৃতি যা তোমাদের অটল স্পৃহাকে প্রতিফলিত করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তোমাদের সাথে আছে এবং একসাথে আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার আদর্শের দিকে কাজ চালিয়ে যাব, যা তোমরা এত সাহসের সাথে রক্ষা করেছ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে তোমাদের সম্মুখসারিতে এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকায় পাওয়ার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। তোমরা সমগ্র বাংলাদেশকে গর্বিত করেছ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আরও একবার এই অসাধারণ অর্জনের জন্য অভিনন্দন'।
চীনে চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে ‘মাইলফলক’ ও ‘অত্যন্ত সফল’ আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আজ শনিবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে, এদিন বিকালে দেশের উদ্দেশে চীন ছাড়েন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। এ সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চিফ প্রটোকল অফিসার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী হং লেই বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে বিদায় দেন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
এর আগে, চার দিনের সফরে ২৬ মার্চ চীন পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) মহাসচিবের আমন্ত্রণে ২৬ ও ২৭ মার্চ দেশটির হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিত বিএফএ বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ যোগ দেন তিনি। সম্মেলনের সাইডলাইনে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের স্টেট কাউন্সিলের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াং।
তারপর চীন সরকারের আমন্ত্রণে ২৭ থেকে ২৯ মার্চ বেইজিং সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মধ্যে গতকাল (শুক্রবার) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস। সেখানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের।
বৈঠককালে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে মতবিনিময় করে উভয় পক্ষ। আলোচনাগুলোতে দুপক্ষ ব্যাপকভাবে ঐকমত্যেও পৌঁছায়।
আজ (শনিবার) সকালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশে বক্তৃতা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের চেয়ারম্যান হে গুয়াংচাইসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, পরিষদ চেয়ারম্যান ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একটি ছোট্ট দল তাকে স্বাগত জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশের চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সব পর্যায়ে পূর্বপ্রস্তুতি ও সচেতনতা তৈরির জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার ফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে পর পর দুইটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প দুইটির মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭ দশমিক ৭ ও ৬ দশমিক ৪। ফলে দেশ দুটি বেশ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশেও একই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা অঞ্চল উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এ অবস্থায় ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সব পর্যায়ে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বেশকিছু ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ অনুযায়ী ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ করা; ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনগুলোর সংস্কার ও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা; সব বহুতল ও বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা এবং ইউটিলিটি সার্ভিসগুলো যেমন- গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইনের সঠিকতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া ভূমিকম্প চলাকালীন সময়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি পর্যায়ে বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত মহড়া অনুশীলন ও প্রচারের ব্যবস্থা করা এবং জরুরি টেলিফোন নম্বর যেমন ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ, হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি নাম্বারসমূহ ব্যক্তিগত পর্যায়ের পাশাপাশি সব ভবন বা স্থাপনায় সংরক্ষণ করা এবং তা দৃশ্যমান স্থানে লিখে রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
অধিদপ্তর দুর্যোগকালীন সময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ভলান্টিয়ার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য সরঞ্জামাদি যেমন- টর্চলাইট, রেডিও (অতিরিক্ত ব্যাটারিসহ), বাঁশি, হ্যামার, হেলমেট/কুশন, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী, ফার্স্ট এইড বক্স, শিশু যত্নের সামগ্রী ইত্যাদি বাসা-বাড়িতে নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা যাতে ভূমিকম্প পরবর্তীতে আটকা পরলে তা ব্যবহার করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা যায়।
সব পর্যায়ে তদারকি সংস্থার কার্যক্রমে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে।
এ ছাড়া যে কোনো তথ্যের জরুরি প্রয়োজনে মেবাইল নম্বর- ০১৭২২৮৫৬৮৬৭ ও হটলাইন নম্বর ১০২-তে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।