রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের অবৈধ সম্পদ খুঁজতে মাঠে নেমেছে দুদক

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৯ জুলাই, ২০২৪ ১৫:০৯

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া পাঁচজনসহ জড়িতদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম এ অনুসন্ধান শুরু করেছে। গত ২৫ জুলাই কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সোমবার দুপুরে দুদকের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পিএসসি থেকে দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ, পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র প্রকাশ এবং বিতরণ করার অভিযোগে কর্ম কমিশনের ৫ জনসহ অন্যান্যকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন কর্মচারী বর্তমানে জেলে আছেন।’

এতে আরও বলা হয়, ‘তাছাড়া এসব কর্মচারীদের নিজ নামে ও তাদের পরিবারের সদস্যের নামে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রয়েছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন মর্মে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এভাবে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর তফসিলভুক্ত অপরাধ। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্তপূর্বক মামলা দায়ের করার জন্য সাক্ষ্য প্রমাণাদি সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এসব অভিযোগ তদন্ত করে কমিশনকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়।’

বিষয়:

হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি এখনও ‘ডিপ কোমা’য় রয়েছেন। তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তার পরিবার ও সংগঠন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে হাদির চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ এলায়েন্সের সদস্য সচিব ডা. আব্দুল আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাদির শারীরিক অবস্থা আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে, তবে তার শরীরে কিছু অভ্যন্তরীণ সাড়া (ইন্টারনাল রেসপন্স) পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসকরা তাকে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন, যা আগামীকাল সোমবার রাতে শেষ হবে। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময় পার না হওয়া পর্যন্ত তাকে এখনই আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

এদিকে, হাদির পরিবার ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা তাকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে তার শারীরিক সক্ষমতার ওপর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিদেশে স্থানান্তরের ধকল সয়ে নেওয়ার মতো শারীরিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলেই কেবল তাকে দেশের বাইরে পাঠানো সম্ভব হবে।


শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

তিনি রোববার সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ।

এ সময় ঘড়ির কাঁটায় সময় সকাল ৭টা ২২ মিনিট।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে প্রধান উপদেষ্টা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

পাশাপাশি তিনি আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ।

একাত্তরের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। স্বাধীনতার সূর্য ওঠার আগমুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা চালায়।

এর আগে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সকাল আনুমানিক ৭টা ০৪ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।


হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন মাসুদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাব জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) মাসুদ এবং তার মালিকানাধীন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেড’-এর সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে, হত্যাচেষ্টার ঘটনার চলমান তদন্তের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত সন্দেহভাজনের আর্থিক লেনদেনের তথ্য যাচাই এবং হামলার পেছনে অর্থের উৎস খুঁজে বের করতেই মাসুদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সব হিসাব সাময়িকভাবে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মাসুদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি বেসিসের সদস্য।

এদিকে গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাদির শারীরিক অবস্থা এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। হামলার ঘটনায় জড়িত অন্যদের শনাক্ত করতে এবং আর্থিক যোগসূত্র বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


শহীদ টিটোর আত্মত্যাগে হানাদারমুক্ত হয় সাভার, বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ১৪ ডিসেম্বর, সাভারবাসীর ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটোর বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে হানাদারমুক্ত হয়েছিল ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া জনপদ। বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্তে ১৬ বছর বয়সী এই বীর কিশোরের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল সাভারের মাটি, যার ফলে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে উত্তরবঙ্গ ও টাঙ্গাইল থেকে পালিয়ে আসা পাকিস্তানি সেনারা ১৪ ডিসেম্বর সকালে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় অবস্থান নিলে মুক্তিযোদ্ধারা শ্রীগঙ্গা কাঁঠালবাগানে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শুরু হয় তীব্র সম্মুখযুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকলে বিজয়ের উল্লাসে সহযোদ্ধাদের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যান অকুতোভয় কিশোর টিটো। ঠিক সেই মুহূর্তেই শত্রুর বুলেটে তিনি শহীদ হন। তার এই মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমেই নিশ্চিত হয় সাভারের স্বাধীনতা।

মানিকগঞ্জের উত্তর শেওতা গ্রামের সন্তান ও দশম শ্রেণির ছাত্র টিটো ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন ডেইরি গেট এলাকায় সমাহিত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে আজ তার সমাধিসৌধ ‘টিটোর স্বাধীনতা’য় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

উল্লেখ্য, ১৪ ডিসেম্বরের এই চূড়ান্ত লড়াই ছাড়াও সাভারের মধুরআঁটি ও বিরুলিয়ার রুস্তমপুরেও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাক বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুসহ অন্য কমান্ডাররা। ১৫ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর আক্রমণে শত্রুরা পুরোপুরি ঢাকার দিকে পালিয়ে গেলে সাভার সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ছাড়াও ‘সংশপ্তক’, ‘বিজয় যাত্রা’র মতো ভাস্কর্য এবং সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছে শহীদদের স্মরণে।


রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে নেমেছে সর্বস্তরের মানুষের ঢল। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ ফুল হাতে সমবেত হন। দিনের প্রথম প্রহর থেকেই বিভিন্ন দলের ব্যানারে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চেয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

বিএনপির বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল ও স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হল, ঢাকা কমার্স কলেজ এবং মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। শ্রদ্ধা জানাতে আসা শিক্ষার্থীরা ১৯৭১ সালের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন, পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতেই এই জঘন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল। শিক্ষার্থীরা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, জাতি কখনও এই ঘাতকদের ক্ষমা করবে না এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনন্তকাল ধরে মানুষের হৃদয়ে জাগরূক থাকবে।

এদিকে দিবসটি ঘিরে রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগতদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে এবং আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করে সবাইকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।


শহীদ মুনীর চৌধুরী: শত্রুর বিরুদ্ধে যার কলমই ছিল একমাত্র অস্ত্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসররা মেতে উঠেছিল এক ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞে, যার অন্যতম শিকার হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট নাট্যকার মুনীর চৌধুরী। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বাবার স্মৃতি আজও অমলিন তার ছোট ছেলে আসিফ মুনীর তন্ময়ের হৃদয়ে। প্রয়াত মা লিলি চৌধুরীর মুখে শোনা সেই বিভীষিকাময় দিনের গল্প আজও তাকে অশ্রুসজল করে তোলে।

বাংলা নাট্যজগতের আধুনিকতার পথিকৃৎ মুনীর চৌধুরীর প্রধান অস্ত্র ছিল তার কলম। লেখনী ও নাটকের মাধ্যমেই তিনি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। ছেলে তন্ময় জানান, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশ যখন স্বাধীনতার খুব কাছে, মুনীর চৌধুরী তখন বেশ আশাবাদী ছিলেন। বিবিসি শুনে স্ত্রীকে বলতেন, আর ভয় নেই, দেশ স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেদিন দুপুর ১২টার দিকে খাবারের প্রস্তুতির সময় আল-বদর বাহিনীর একদল সদস্য সেন্ট্রাল রোডের বাড়িতে হানা দেয়। বাঙালি যুবকদের সেই দল বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়, যা ছিল পরিবারের সঙ্গে তার শেষ দেখা।

মুনীর চৌধুরী ১৯২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং কর্মজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও বাংলা উভয় বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে ১৯৫২ সালে তাকে কারাগারে যেতে হয়। এর আগেও ১৯৪৮ সালে জিন্নাহর উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদ করায় এবং ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কারণে তিনি জেল খেটেছেন। রক্তাক্ত প্রান্তর, কবর-এর মতো কালজয়ী সাহিত্যকর্মের স্রষ্টা মুনীর চৌধুরী তার প্রতিবাদী সত্তার কারণেই ১৯৪৮ সাল থেকে পাকিস্তানি শাসকদের টার্গেটে পরিণত হন।

যুদ্ধের ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে ২৫ মার্চের কালরাত্রির পর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টার ছেড়ে বাবার সেন্ট্রাল রোডের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আসিফ মুনীর তন্ময় আক্ষেপ করে বলেন, সন্তান হিসেবে তারা বাবাকে হয়তো পুরোপুরি চিনতে পারেননি, কিন্তু হানাদাররা ঠিকই চিনেছিল যে মুনীর চৌধুরীর মতো বুদ্ধিজীবীরাই জাতির মেরুদণ্ড। তাই জাতিকে মেধাশূন্য করতেই বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্তে এই সূর্যসন্তানদের হত্যা করা হয়।


হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ ও মালিক গ্রেপ্তার, চালকের পরিচয় শনাক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার তদন্তে বড় অগ্রগতি হয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করার পাশাপাশি এর মালিক আব্দুল হান্নানকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এক খুদে বার্তায় পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, হাদির ওপর গুলির ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের বহনকারী মোটরসাইকেলের চালকের পরিচয়ও সামনে এসেছে। ডিজিটাল অনুসন্ধানমূলক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডিসেন্ট’ দাবি করেছে, ওই চালকের নাম আলমগীর হোসেন। ফেসবুকে তিনি ‘মোহাম্মদ আলমগীর শেখ’ নামে সক্রিয় এবং তার পোস্টে নিয়মিত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকার ‘সুনিবিড় হাউজিং’-এর লোকেশন ব্যবহার করতেন। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত ৫ ও ১২ ডিসেম্বর হাদির গণসংযোগের সময় তোলা ছবির সঙ্গে আলমগীরের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি বিশ্লেষণ করে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এমনকি গত ৫ ডিসেম্বর শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় হাদির নির্বাচনী প্রচারণায়ও আলমগীরের উপস্থিতি ছিল বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের দাবি করেছেন, হামলার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তার সহযোগী মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেন ইতোমধ্যে দেশত্যাগ করেছেন। তিনি জানান, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। বর্তমানে তারা ভারতে অবস্থান করছেন এবং সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব তাদের সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ আমলাতান্ত্রিক দখলদারিত্বে জিম্মি

টিআইবির উদ্বেগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এ মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়ে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া আমলাতন্ত্রের করায়ত্ত করায়, সরকারি প্রভাবের বাইরে কমিশন গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ করায় গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ গেজেট আকারে ৯ নভেম্বর প্রকাশের পর টিআইবিসহ সব অংশীজন এতে কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও আশান্বিত হয়েছিল যে, আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মিদশা কাটিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জনপ্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গঠিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তবে ঠিক এক মাসের মধ্যে ৮ ডিসেম্বর যে বাছাই কমিটি এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের মূল ভিত্তি হতে পারত। সেই কমিটিকেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে।
‘বাছাই কমিটিতে এই পরিবর্তন বস্তুত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মানবাধিকার কমিশনসহ বাংলাদেশের অন্য সব কমিশনের অকার্যকরতার পেছনে যেভাবে সরকারি প্রভাব দীর্ঘকাল যাবত ভূমিকা রেখেছে, সেই একই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্রের একটি দৃষ্টান্তমাত্র, কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই সংশোধনের মাধ্যমে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ প্রতিষ্ঠার যে প্রশংসনীয় বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে তার এবং সার্বিকভাবে এ আইনের ভিত্তিতে গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকরতার সব সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করার জন্য শুধু বাছাই কমিটিতে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তিই যথেষ্ট।’
এছাড়া কমিশনের আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে গৃহীত পদক্ষেপ কমিশনকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে ‘অবহিত করা যাইবে’ প্রতিস্থাপন করার মতো আরও কিছু বিধান সংযোজন করার ফলে অধ্যাদেশটির মাধ্যমে প্রত্যাশিত সব ইতিবাচক সম্ভাবনা পদদলিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. জামান।
অনতিবিলম্বে আমলাতন্ত্রের অন্তর্ঘাতমূলক সংস্কারবিরোধী চক্রের কাছে আত্মসমর্পণের বিব্রতকর অবস্থান থেকে সরে এসে অধ্যাদেশটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া বিধান, বিশেষ করে বাছাই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করে নতুন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশটি ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
উল্লেখ্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠনের জন্য ৬২ নং অধ্যাদেশ, যা ৯ নভেম্বর ২০২৫ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়, তার অনুচ্ছেদ ৭-এ বর্ণিত বাছাই কমিটিতে আমলাতন্ত্রের কোনো প্রতিনিধি ছিল না, যা মানবাধিকার কমিশনের অকার্যকরতার দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সরকারসহ সব অংশীজনের স্বীকৃতির পরিচায়ক। অথচ, পরবর্তীতে ৮ ডিসেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধিত অধ্যাদেশ ৭৪-এ বাছাই কমিটিতে আমলাতান্ত্রিক আধিপত্য নিশ্চিতের উদ্দেশে এ অধ্যাদেশ প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অংশীজনকে অন্ধকারে রেখে এক তরফাভাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলো

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: প্রেস উইং
আপডেটেড ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার সকল প্রচেষ্টা রুখে দিতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে।
গতকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি না হতে দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপি নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে দলগুলো সুদৃঢ় অবস্থান নেবে বলে জানান তারা।
এছাড়া, নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান কঠোরভাবে পরিচালনার ওপর জোর দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যে কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’
তিনি বলেন, শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’


স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি:তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে বলেও মনে করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।
গতকাল শনিবার বিকেলে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। গণতন্ত্র বারবার মৃত্যুকূপে পতিত হয়েছে। একদলীয় দুঃশাসনের বাতাবরণ তৈরি করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ প্রতিহত করা হয়েছে। অনেক রক্ত ঝরলেও মতপ্রকাশ, লেখা ও বলার স্বাধীনতা সংকটের দুর্বিপাক থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর মূলত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরেছিলেন। তাদের জীবন ও কর্ম আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা দেশকে মেধাশূন্য করার গভীর চক্রান্ত। কারণ স্বাধীনতার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করা। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা আজও পুরো জাতিকে বেদনাবিধূর করে। তবে তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ অর্থাৎ জ্ঞান-বিজ্ঞান, মুক্ত চিন্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির চেতনা উন্নত ও প্রগতিশীল দেশ গড়ার প্রত্যয় জাগিয়ে তোলে। একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ ছিল যাদের অভিষ্ট লক্ষ্য।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনে করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে।
তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
সেইসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে প্রাণ হারানো শিক্ষক, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান।


শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মন্তুদ দিন। এ দিন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের উষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর দুঃসহ বেদনার দিন।
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এ দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ’ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ’ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে। স্বাধীনতার উষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।
হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এই বুদ্ধিজীবীরা মেধা, মনন ও লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। দেখিয়েছেন মুক্তির পথ। গোটা জাতিকে উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের।
১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত ১০ ডিসেম্বর ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়।
প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শোকের আবহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে থাকে। দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ওড়ে শোকের প্রতীক কালো পতাকা।
দেশব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, গান, আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সর্বস্তরের মানুষের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়াও সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।


শহীদ বুদ্ধিজীবীরা গণতান্ত্রিক ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা একটি গণতান্ত্রিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার দেওয়া ওই বাণীতে তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা। তারা নিজেদের মেধা, মনন, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। এমনকি যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

বাণীতে ড. ইউনূস ১৪ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক ও শিল্পীসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই নৃশংসতার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন হতে যাওয়া বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ জাতিতে পরিণত করা।

বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমৃত্যু লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার সমগ্র জাতিকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে কাজ শুরু করেছে, তার মাধ্যমেই শহীদদের স্বপ্ন সফল হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


তারেক রহমানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর অবস্থানের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি ঘোষণা করেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার এবং ‘ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্ট’দের দমনে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও নীতিগত পরিবর্তনের কথা জানান তিনি। এতদিন কেবল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের লাইসেন্স দেওয়া হলেও, এখন থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা আবেদন করলে তাদেরও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। উপদেষ্টা জানান, তাদের সুরক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন। ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


banner close