শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
অ্যামচেম ভোজসভা

‘ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে’

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২ জুলাই, ২০২৪ ২১:৩৬

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিসমূহকে পোশাক, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, ওষুধ ও ব্যাংকিং খাত বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে (ফিনটেক) বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এর মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এবারের ভোজসভার আলোচনার বিষয় ছিল ‘ড্রাইভিং ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরি করতে চাই। মার্কিন কোম্পানি মাস্টারকার্ড এবং ভিসাকার্ড বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। আরও যেসব মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে, তারাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে।’

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মাসিয়াল কাউন্সিলার (ফরেন কর্মাসিয়াল সার্ভিন) জন ফে।

আর্থিক খাতে অনলাইন সেবা প্রদান প্রসঙ্গে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, অনলাইন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বেসরকারিখাত অনেক ভাল করছে। এর পাশাপাশি বিকাশ ও নগদ এর মত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এর কারণে গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় এসেছে।

ওয়াসিকা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও ই-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং এক্সেস টু ফিনান্সিয়াল সার্ভিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একইসাথে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত এটি। অনলাইন লেনদেনকে উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে এক ব্যবসায়ীর প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকের সুদহার বাজারভিত্তিক করা হচ্ছে এবং মুদ্রা বিনিময় হার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এর ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করেছি। জুন মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে।’ তিনি বলেন, সুদহার যখন নয়-ছয় ছিল সে সময় আমরা খেলাপি হওয়ার মত অনেক ঘটনা দেখেছি। ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন সরবরাহে বাজারভিত্তিক সুদহার কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দেওয়ার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন চালু করতে সরকার সর্বাত্বক কাজ করে চলেছে।

মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূরাজনৈতিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে আমরা সময় পার করছি। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে নিত্যপয়োজনীয় পণ্য নিয়মিত আমদানি করতে হচ্ছে। তবে সরকার দেশের সকল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সমাধানে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানের ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশে যথেষ্ট সফল উদ্যোগ। এবারের বাজেটে স্টার্টআপ উৎসাসিহ করতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

অনুষ্ঠানে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণে দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে। তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে লজিস্টিকস সেবাসহ অন্যান্য পরিসেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থপনায় পুরোপুরি অটোমেশন চালুর আহবান জানান তিনি।


প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৭ প্রস্তাব দেওয়া হবে

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। পুরোনো ছবি
আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৪ ২২:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে মহেশখালী থেকে একটি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাতটি প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা করেছি, মহেশখালী থেকে একটি এলএনজি পাইপ লাইন নির্মাণের প্রস্তাব থাকবে আমাদের। এখন দৈনিক ৩৫০০ এমএমসিএফ গ্যাসের চাহিদা থাকলেও আগামী ৫ বছরের মধ্যে তা ৬০০০ এমএমসিএফডি হয়ে যাবে। সে কারণে আমদানি ও দেশীয় যোগান থেকে এটা মেটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

২০২৭ সালের মধ্যে দেশে কোনো গ্যাস সংকট থাকবে না– এমন আশার কথা শুনিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে আমরা ১৪৬টি কূপ খনন করব। সেজন্য অনশোর বিডিংয়ের একটি পিএসসি প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমরা আরও কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। এর অংশ হিসেবে আমরা চীনকে গ্যাস পাইপ লাইনের প্রস্তাব দিচ্ছি।’

আগামী ৮ জুলাই চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। আর এ মাসেই নেপালের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করা হবে বলে জানান নসরুল হামিদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন অর্থবছরের বাজেটে জ্বালানি খাতে এক হাজার ৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের নিজস্ব অর্থ থেকে গ্যাস ও তেল কেনা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগে ২৯ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এসব বরাদ্দ থেকে উত্তরবঙ্গের সৈয়দপুর পাওয়ার প্লান্টসহ আরও কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির হিস্যা বাড়ানোর পক্ষে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটা ১০ শতাংশ করা আমাদের মূল টার্গেট। (মোট উৎপাদন) ২৬ হাজার ধরলে (রিনিউয়েবল) ২৬০০ মেগাওয়াট লাগবে। এখন ৪০০ মেগাওয়াটের মত হচ্ছে। আড়াই হাজার মেগাওয়াটের এলওয়াই দিয়েছি।’


পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান আজ

থাকবেন প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি
আপডেটেড ৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান হবে আজ শুক্রবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই অর্জনের সাফল্য উদ্‌যাপন করবেন।

এ উপলক্ষে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে যে কার্যক্রমগুলো নেওয়া হবে তার ব্যয়গুলো সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করা হবে। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই ব্যয় করার অনুমোদন দিয়েছে।

গত বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে নতুন অর্থবছরের প্রথম অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে নতুন অর্থবছরে প্রথম ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। এই সমাপ্তি উপলক্ষে মাওয়া প্রান্তে (যেখানে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী আয়োজন হয়েছিল) সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে নেওয়া কার্যক্রমগুলো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ সময় কম থাকায় কাজটি ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে করা সম্ভব হবে না।

নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দেশের দীর্ঘতম সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর দুদিন পর সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। গত দুই বছরে পদ্মা সেতু দিয়ে ১ কোটি ২৭ লাখ যানবাহন চলাচল করেছে। ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে যান চলাচল করেছে প্রায় ১৯ হাজার। প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

বিষয়:

দুই দিনের সফরে আজ টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুই দিনের সফরে আজ শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে বিকেলে সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক কর্মসূচি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আজ বিকেল তিনটায় গণভবন থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করবেন তিনি। বিকেল ৪টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন। এরপর বিকেল ৫টায় সেখান থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেবেন তিনি।

পরদিন শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধুর বাল্যকালের বিদ্যাপীঠ টুঙ্গিপাড়া গিমাডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ শীর্ষক অ্যালবামের মোড়ক উম্মোচন করবেন তিনি। দুপুর ১২টায় নবনির্মিত টুঙ্গিপাড়া মাল্টিপারপাস পৌর সুপার মার্কেট পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা। বিকেল সাড়ে তিনটায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন তিনি। দুই দিনের সফর শেষে শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


এনবিআরের মতিউর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের জমি-ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ

বেনজীর ও স্ত্রী-মেয়ের নামে থাকা সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের জিম্মায়
ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাগলকাণ্ডের জন্য আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের চারটি ফ্ল্যাট ও ১ হাজার ১৩৬ শতাংশ স্থাবর সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এই নির্দেশ দেন।

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও ধানমন্ডিতে থাকা চারটি ফ্লাট ও বরিশালের মুলাদী এবং নরসিংদীর রায়পুরায় এসব স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।

মতিউরের পরিবারের সদস্যরা হলেন—তার স্ত্রী ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী, ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব, মেয়ে ফারজানা রহমান ইপশিতা এবং অপর স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিউলী।

মতিউর ও তার পরিবারের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থাবর সম্পত্তিগুলো ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম দুদকের পক্ষে আবেদনটি করেন। তিনি জানান, আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন এবং সংশ্লিষ্টদের স্থাবর সম্পদগুলো ক্রোকের নির্দেশনা দিয়েছেন।

এর আগে গত ২৪ জুন মতিউর, তার স্ত্রী লাকী ও ছেলে তৌফিকুর রহমানের ওপর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেন একই আদালত। আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবেদনে দুদক বলেছে এনবিআরের শুল্ক, আবগারি ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে যা আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

এরই মধ্যে দুদক এসব সম্পদের খোঁজ পেয়েছে। তাদের আরও সম্পদ থাকতে পারে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তারা যেন তাদের সম্পত্তি হস্তান্তর করতে না পারেন, সেজন্য আদালতের আদেশ প্রয়োজন।

এর আগে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দুদক। মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে এক লাখ টাকা বুকিং দেওয়া, ৭০ লাখ টাকার গরু কেনা ও বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন এনবিআরের এই সদস্য।

তবে ইফাত তার ছেলে এই বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। পরে স্বজনদের বরাতে জানা যায় ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলীর দ্বিতীয় সন্তান। দ্বিতীয় স্ত্রী ও ইফাত এরই মধ্যে দেশ ছেড়েছেন। মতিউর রহমানও দেশ ছেড়েছেন বলে আলোচনা রয়েছে।

এদিকে বান্দরবানে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা সম্পত্তি গতকাল জেলা প্রশাসকের জিম্মায় নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব সম্পত্তি জিম্মায় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। প্রশাসনের একটি কমিটির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি তত্ত্বাবধান করা হবে।

আজ বেলা ১১টায় বান্দরবান-চট্টগ্রামের সড়কের সুয়ালক মৌজায় বেনজীর আহমেদের বাগানবাড়ি এলাকায় যান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন প্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সেখানে বাগানবাড়ি, মৎস্য পুকুর ও গবাদিপশুর খামার ঘুরে দেখেন। এ সময় বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নিয়োজিত ব্যবস্থাপক মংওয়াইসিং মারমা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ব্যবস্থাপক মংওয়াইসিং মারমার উপস্থিতিতে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা ও তাদের মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের ২৫ একর জমির ওপর থাকা বাগানবাড়ি, পুকুর, গবাদিপশুর খামারসহ সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জিম্মায় নেন। বাগানবাড়ি প্রাঙ্গণে জিম্মায় নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে।

স্থাপিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের পারমিশন পিটিশন মামলার আদেশে ৩১৪ নম্বর সুয়ালক মৌজার ৭২০ নম্বর হোল্ডিংয়ের ২৫ একর স্থাবর এবং উপরিস্থিত অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক (জব্দ) ও অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়েছে। আদালতের পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত উক্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়, হস্তান্তর ও বিনিময় করা যাবে না।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আদালত জেলা প্রশাসককে জিম্মাদার (রিসিভার) নিয়োগ করেছেন। সেই মোতাবেক সাবেক আইজিপির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জিম্মায় নেওয়া হয়েছে। সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) নিয়োগ করে সম্পত্তির সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করবেন।

বিষয়:

১৪ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ল ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বাকিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত।

ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম এ আউয়াল (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

এ মামলায় গত ১ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এস এম আরিফুজ্জামান।

মামলার নথি অনুসারে, আইএফইডি কর্মকর্তারা ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের অফিস পরিদর্শন করে শ্রম আইনের বেশকিছু লঙ্ঘন খুঁজে পান।

সেই বছরের ১৯ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ৬৭ কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি।

এ ছাড়া কর্মচারীদের পার্টিসিপেশন ও কল্যাণ তহবিল এখনো গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির যে লভ্যাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিল তার পাঁচ শতাংশও পরিশোধ করা হয়নি।


ডেঙ্গুর বিষয়ে সতর্ক আছি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আমাদের যেসব পরিসংখ্যান দিয়েছেন, সেসব বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।’

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সারা দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধবিষয়ক জাতীয় কমিটির চলতি বছরের দ্বিতীয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের চেয়ে বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কম। তাই সিটি করপোরেশনসহ সেবা সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে সন্তুষ্ট না হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষজ্ঞদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবাই সচেতন আছে। সবাই সচেতন আছে বলেই এখন পর্যন্ত এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব সিটি করপোরেশন ও উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদসহ সবাই যার যার অবস্থান থেকে যা করণীয় তা করবেন।’

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সচেতনতা বৃ‌দ্ধি কর‌তে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। প‌রিত্যক্ত মালামাল কিনতে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের কাজ চল‌ছে। পরীক্ষার দিন ছাড়া বিদ্যালয়গু‌লোতে অ‌ভিযান চলবে।


বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি পুনর্বিবেচনা করা হবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনোভাবেই বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশের বিষয়টিকে বাণিজ্যিকভাবে দেখা উচিত নয়। এ বিষয়ে আবার বিবেচনা করা হবে। গত ২১ এপ্রিল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন অধিশাখা-১ থেকে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ওয়ারীর বলধা গার্ডেনের প্রবেশ ফি বাড়ানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৪ জুলাই থেকে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে ওই প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১২ বছরের বেশি বয়সিদের বোটানিক্যাল ও বলধা গার্ডেনে প্রবেশে ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। ১২ বছরের কম বয়সীদের গুণতে হবে ৫০ টাকা। এ ছাড়া, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সফরে আসা প্রতি ১০০ শিক্ষার্থীকে একহাজার টাকা ফি দিতে হবে। এর বেশি শিক্ষার্থী হলে দেড় হাজার টাকা দিতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এই দুই উদ্যানে প্রবেশে বিদেশি পর্যটকদের এক হাজার টাকা বা এর সমমূল্যের ইউএস ডলার দিতে হবে। তা ছাড়া নিয়মিত যারা এই দুটি উদ্যানে হাঁটতে যান তাদেরকে বার্ষিক একটি প্রবেশ কার্ড করতে হবে। এই কার্ডের জন্য তাদের ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।


মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৭ হাজার কর্মীর টাকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

আজ বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালয়েশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১০০টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠায়। তাদের কারও ১০ জন, কারও ৫০ জন, কারও ৫০০ জন, কারও ৪০০ জন কর্মী যেতে পারেনি। আমরা এগুলো নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সঙ্গে বসেছি, তাদের মতামত জানতে যে তারা টাকা নিলো কিন্তু পাঠাতে পারলো না। এই টাকার কী হবে তাদের কাছে জানতে চেয়েছি গতকাল বুধবার। তারা সবাই সম্মত হয়েছে যে প্রমাণ সাপেক্ষে যার কাছ থেকে যত টাকা নেওয়া হয়েছে সেটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে। এই একটি ধাপে আমরা মোটামুটি এগিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা চেষ্টা করছি গরিব মানুষের টাকাটা ফেরত দেওয়ার। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। এই সময়ের মধ্যে যে টাকা দিতে পারবে না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এর পরে গিয়ে অন্য ব্যবস্থা। প্রথমে টাকা উদ্ধার হোক!’

শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, টাকা ফেরত পাওয়ার পর আগামীতে যখন মালয়েশিয়া কর্মী নেবে তখন অগ্রাধিকার তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই মাসের শেষে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে, সেখানে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর রাস্তা আবার উন্মুক্ত হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ দিনের মধ্যে দেখি কী পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়, যারা দিতে ব্যর্থ হবে কিংবা অনীহা প্রকাশ করবে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছি সেটিও আপনারা জেনে যাবেন।’

তদন্ত কমিটির অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়ার যারা নিয়োগকর্তা তারাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিমান্ড দিতে দেরি করেছে। অনেকে আবার ভিসা পেয়েছে দেরিতে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কর্মীর টাকা ফেরত দেওয়া এবং তাদের আবার মালয়েশিয়া হোক কিংবা অন্য দেশে হোক তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।’ এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।


ভোমরা বন্দর আগামী দিনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোমরা বন্দরের সেবা কার্যক্রম পেপারলেস করার লক্ষ্যে বেনাপোল ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পর তৃতীয় বন্দর হিসেবে ভোমরা স্থলবন্দরে অটোমেশন চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রায় ১২ শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থলবন্দরটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। আগামী দিনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে ভোমরা বন্দর। এক কথায় এটি ‘হিরো’ পোর্ট হয়ে যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দরের ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের ই- পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের (জিএটিএফ) অর্থায়নে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে সম্পাদিত ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম প্রতিবেশী দেশের সাথে পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম সচল রাখার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সকল স্থলবন্দরে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নতুন কোনো কিছুতে ধীরে ধীরে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাই। ব্যবসাবান্ধব ও ব্যবসাকে আরও স্মুথ করার জন্য ভোমরা বন্দরে ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন করা হলো। স্থলবন্দরগুলোতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সন্ত্রাসীগোষ্ঠী যদি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ না নিতো, তাহলে চ্যালেঞ্জগুলো থাকত না। আমরা স্থলবন্দরগুলোর আপডেট করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় সর্বক্ষেত্রে সড়ক, রেল, আকাশ, নৌপথে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মংলা পোর্টকে লাভজনক করা হয়েছে। নতুন বন্দর পায়রা বন্দর করা হয়েছে। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর করা হচ্ছে। এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থায় ‘সি’ ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে ফেলেছেন। বাংলাদেশকে কেউ পিছিয়ে দিতে পারবে না। স্থলবন্দর বা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে পিছিয়ে থাকবে না।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (জিএটিএফ) ডিরেক্টর ফিলিপ আইলার, সুইসকন্টাক্টের ডিরেক্টর (গ্লোবাল প্রোগ্রামস) বেনজামিন ল্যাং, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী ও এইচ আর মাকসুদ খান প্রমুখ।


প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিতদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান গণপূর্তমন্ত্রীর

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিতদের দেশপ্রেম, সময়ানুবর্তিতা, জনগণ ও আইনের প্রতি আনুগত্য এবং সরকারের নীতি-দর্শনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

বুধবার রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১৩১, ১৩২, ১৩৩ এবং ১৩৪তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের তৃতীয় মেস রজনী, ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘যে আবেগ ও অনুভূতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মিশে আছে তা আমাদের অনুধাবন করতে হবে। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ৩০ লাখ শহীদ জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং ২ লাখ মা-বোন সম্ভম হারিয়েছেন, সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করতে হবে। সময়ের কাজ সময়ে সম্পন্ন করতে হবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অহেতুক বিলম্ব করা যাবে না এবং জনগণের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক সরকারের কিছু নীতি-দর্শন থাকে। সেই নীতি- দর্শনের প্রতি কর্মকর্তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন থাকতে হবে। সরকারের সব কর্মসূচি যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন সমাজ, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, অসম্প্রদায়িক সমাজ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা ও কুসংস্কার এর অবসান ঘটিয়ে আমাদেরকে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।’

প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেওয়া বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি- জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, রূপকল্প ২০৪১ ও ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সেবা প্রদানের জন্য এই নিবিড় প্রশিক্ষণ আপনাদের আরও যোগ্য, দক্ষ, আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত, সাহসী, গতিশীল এবং দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত নাগরিকবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক স্মার্ট জনপ্রশাসন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে আসন্ন চ্যালেঞ্জসমূহ স্মার্টলি মোকাবিলা করবে।’

বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ও সরকারের সচিব ড. মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোর্স ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যবৃন্দ, একাডেমিক কাউন্সিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং চলমান প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।


এমপি আনার হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন ৮ আগস্ট

৩ আসামির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৪ ১৯:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৮ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন তদন্ত সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৮ আগস্ট নতুন এদিন ধার্য করেন।

এদিকে, আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে দেয়া জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তারা হলেন-ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, শিমুল ভুইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ ও তানভীর ভুইঁয়া।

তিন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনে বলেছেন, তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় ছিল না।

বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালতে আসামিদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের ওপর শুনানি হয়। এ সময় আসামিদের আদালতে উপস্থিত করা হয়।

আসামিপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজীসহ কয়েকজন আইনজীবী শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনগুলো নথিভুক্ত রাখার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, তাদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। স্বীকারোক্তি দিতে তাদের বাধ্য করা হয়। তাদের ইচ্ছের বাইরে ওই স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

এছাড়া আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করার কারণে তারা অসুস্থ মর্মে চিকিৎসার আবেদন করা হয়। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসার নির্দেশ দেন।

আবেদনের ওপর শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী গণমাধ্যমকে বলেন, আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দেননি। এই কারণে তারা জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।

এর আগে গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার এজাহারে মুমতারিন ফেরদৌস উল্লেখ করেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। গত ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেবো।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি, অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাবাকে অপহরণ করেছে।

প্রসঙ্গত, এই মামলায় গ্রেপ্তার সাত আসামির মধ্যে ৬ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন, শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভুঁইয়া, শিলাস্তি রহমান, কাজী কামাল আহমেদ বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী সাজী। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। অপরদিকে এ মামলায় দায় স্বীকার করেনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। পরে রিমান্ড শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিষয়:

রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মিয়ানমারের আবাসিক রাষ্ট্রদূত কাও সো মো বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মিয়ানমারের আবাসিক রাষ্ট্রদূত কাও সো মো রাষ্ট্রপতির কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করার সময় তার মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারকে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বিদ্যমান রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। আশা করি, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এসব জনগণ যাতে নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে মিয়ানমার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয় বাংলাদেশ। নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় মিয়ানমারের সঙ্গে ভালো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখাকে অগ্রাধিকার দেয়।’

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, তার দায়িত্ব পালনকালে দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে। উভয় দেশেরই অন্বেষণের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক রয়েছে এবং উভয় দেশেরই এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।’

বাংলাদেশ আগামী সেপ্টেম্বরে বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিমসটেকে শক্তিশালী করতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। বাংলাদেশ আসিয়ানের ডায়লগ পার্টনার হতে চায়।

এই ব্যাপারে তিনি মিয়ানমারের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ঢাকায় তার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেছেন। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুতদের কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে তার দেশ কাজ করছে বলেও জানানা।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা তিনি তার সরকারকে জানাবেন এবং সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি অশ্বারোহী দল অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রদূতকে ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করা হয়।


তিন-চার দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে: নসরুল হামিদ

১৫ জুলাইয়ের পর গ্যাসের সংকট থাকছে না
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৪ ২১:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন এবং আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘বাজেট পরবর্তী’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে বড় বন্যা হলে আমাদের কী প্রস্তুতি থাকা দরকার, আমরা সেটা নিয়ে ভাবছি। ভবিষ্যতে এই ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার কাজ চলছে। বাংলাদেশ ৭০০-এর মতো নদীর দেশ। এখানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরবচ্ছিন্ন রাখা কঠিন কাজ। আমরা চেষ্টা করছি, এখন পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আগামী ১৫-১৬ জুলাইয়ের দিকে গ্যাস নিরবচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এদিকে আদানিও বিদ্যুৎ দেওয়া শুরু করেছে।

গ্যাসের স্বল্প চাপ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঝড়ের কারণে আমাদের একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী ১৪ থেকে ১৫ জুলাই টার্মিনালটি পুনরায় গ্যাস সরবরাহ করলে গ্যাসের সমস্যার সমাধান হবে।

ঝড় ও বন্যার কারণে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার বিপুল পরিমাণ ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ৩০ হাজার পোল বিনষ্ট হয়েছে। সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে সব কটি সাবস্টেশন পানির নিচে চলে গেছে। আমরা এসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা সাজানোর চেষ্টা করছি। যাতে গ্রাহককে ঝড় ও বন্যার মধ্যেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ ঘাটতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় উৎপাদন শুরু করেছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সরবরাহ আরও বাড়বে। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম নিয়েও সুখবর দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘বিতরণ কোম্পানি লোকসান করলেও গ্রাহক পর্যায়ের বিদ্যুতের দাম আপাতত বাড়ছে না। এবার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

আইএমএফের শর্তের কথা জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আইএমএফ বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির শর্ত দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুইবার দাম বাড়ানো হয়েছে। এটি একটি নিয়মিত সমন্বয়। সরকার চাইলে আমরা দাম বৃদ্ধি করি। আমাদের আবার যখন দাম বৃদ্ধির কথা বলা হবে, তখন আমরা দাম বৃদ্ধি করব। আপাতত গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না।’

আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে যাচ্ছেন। এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির কোন কোন সমঝোতা স্মারক সই হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা মহেশখালী থেকে সমান্তরালভাবে আটটি পাইপলাইন গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছি। বিষয়টি চীন সফরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালনব্যবস্থা ও বিতরণব্যবস্থার কিছু প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে যেসব বিষয়ে অনুদান পাবে, সেগুলোর চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হবে।’ টাকার অঙ্কে এই বিনিয়োগ এক বিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যেই আমরা গ্যাস-সংকট দূর করতে পারব বলে আশা করছি। এ জন্য আরও দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। এর বাইরে স্থলভাগে ও অগভীর সমুদ্রে নতুন করে কূপ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


banner close