বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
আয়বহির্ভূত সম্পদ

সওজের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১ জুলাই, ২০২৪ ২১:৩০

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ সোমবার দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা ১-এ মামলাটি দায়ের করেন। সড়কের অবসরপ্রাপ্ত এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে এক কোটি আট লাখ ৯০ হাজার ৭২৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদের সম্পদ বিবরণীর আদেশ জারির পর তিনি ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তার সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তিনি জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি আট লাখ ৯০ হাজার ৭২৮ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

মামলা দায়েরের পর তদন্তকালে সড়কের সাবেক এই প্রকৌশলীর ছেলে আসিফ মাহমুদ ওরফে আসিফ হাসানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল কনসেপ্টে তার কোনো আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটাও তদন্ত করা হবে। তখন অন্য কারও কিংবা অন্য কোনো সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে সেটাও অভিযোগপত্রে নথিভুক্ত করা হবে।

বিষয়:

বিশ্বায়নের যুগে আমরা দরজা বন্ধ করে রাখতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

নেপাল, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ নিয়ে আঞ্চলিক ট্রানজিট সুবিধা হচ্ছে
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৪ ২২:১০
বিশেষ প্রতিনিধি

ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটের সুবিধার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বায়নের যুগে আমরা নিজেদের দরজা বন্ধ করে রাখতে পারি না। আজকে পৃথিবীটা গ্লোবাল ভিলেজ, একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। বুধবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তিনি আরও বলেন, আমাদের ট্রান্স-এশিয়া হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়া রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। আজকে ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিলাম কেন? এটা নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া। আমাদের ট্রানজিট তো আছেই। ত্রিপুরা থেকে বাস চলে আসে ঢাকায়, ঢাকা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত তো যাচ্ছে। এতে ক্ষতিটা কি হচ্ছে। বরং আমরা রাস্তার ভাড়া পাচ্ছি। সুবিধা পাচ্ছে দেশের মানুষ। অনেকে অর্থ উপার্জনও করছে।

টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ- এই চারটি দেশ নিয়ে প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট করেছি ভারতে। এটাতো কোনো একটা দেশ না, আঞ্চলিক ট্রানজিট সুবিধা এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, নেপাল থেকে আমরা জলবিদ্যুৎ কেনা শুরু করতে যাচ্ছি, সেখানে গ্রিড লাইন করা, আমরা সেই চুক্তি করেছি, সেটা আমরা শুরু করছি, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর যেসব রেলপথ-নৌপথ যোগাযোগ বন্ধ ছিল, সেগুলো আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুটান থেকে একটি রাস্তা যাচ্ছে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত। অথচ সেই রাস্তাটা যাচ্ছে বাংলাদেশকে বাইপাস করে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে যে সড়ক হচ্ছে তা থেকে বিচ্ছিন্ন, কেন আমরা বিচ্ছিন্ন থাকব। ভারত চাচ্ছিল ভুটান থেকে এই সড়কটা বাংলাদেশ হয়ে, ভারত হয়ে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ সব কিছু কত সুবিধা হতো। সেটাও খালেদা জিয়া নাকচ করে দিয়েছিল। আমি প্রথমবার সরকারে এসে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা যুক্ত হতে পারিনি।

ভারত থেকে পাইপ লাইনে তেল নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা আসামের রুমালিগড় থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে এসেছি। পার্বতীপুর ডিপোতে সেই তেল আসছে। ক্ষতিটা কি হয়েছে। বরং আমরাই কিন্তু সস্তায় কিনতে পারছি। আমাদের দেশের জন্য, ওই অঞ্চলের মানুষের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারি। উত্তরাঞ্চলে কোনো শিল্পায়ন হয়নি, এখন শিল্পায়নে আমরা যেতে পারি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও আমরা নির্মাণ করেছি। আমরা নিজেদের দরজা তো বন্ধ করে রাখতে পারি না। এটাই তো কথা।

খালেদা জিয়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনার সুযোগ নষ্ট করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কি সমস্যা দেশের জন্য করেছে দেখেন- মিয়ানমারে সেখানে গ্যাস ফিল্ডের গ্যাস, ভারত, চীন, জাপান সবাই চাচ্ছে। এই গ্যাস বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতে নিয়ে যাবে, এই নিয়ে যাওয়ার সময় এই গ্যাস থেকে আমরা একটা ভাগ নেব। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামসহ ওই এলাকায় আমাদের গ্যাসের কোনো অভাবই হতো না। খালেদা জিয়া সেটা নিতে দেয়নি। কেন দেয়নি? তিনি আরও বলেন, আজকে সেই গ্যাস নিচ্ছে চীন। আর কোনো দেশতো নিতে পারছে না। আমরা সরকারে আসার পর কথা বলেছিলাম মিয়ানমারের সঙ্গে, আনতে পারি কি না। কিন্তু সেটা সম্ভব না। তারা এটা অলরেডি দিয়ে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করছি। সামাজিক নিরাপত্তা, আবাসন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। গ্রাম ও শহরে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনসহ গ্রাম ও শহরে নতুন ১ লাখ গৃহনির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকায় বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করে বিনা মূল্যে ঘর প্রদান এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে আশ্রিতদের জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও জীবন যাপনের মান বৃদ্ধি পেয়েছে। স্যানিটেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে।

সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া গৃহহীদের অনুভূতির ভিডিও চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অসহায় মানুষের কথাগুলো যখন শুনি, তখন খুবই ভালো লাগে। তখন মনে হয় আমার বাবা এমন দেশই চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, আশ্রয়ণের পুনর্বাসিতদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পুনর্বাসিতদের আয়, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, খাদ্য বাবদ ব্যয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা ও সামাজিক অবস্থানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২২ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্রাপ্তির পর পুনর্বাসিত পরিবারের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। ঘর প্রাপ্তির পূর্বে উপকারভোগীরা ২০১৭ সালে ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করত, যা ২০২২ সালে ঘর প্রাপ্তির পর ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের খাদ্য বাবদ ব্যয় পূর্বের থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঋণ প্রদানসহ তাদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে এসব মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে চলেছে। তাদের সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পেয়েছে।


বাংলাদেশের নিজস্ব জিপিটি প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইনে’র যাত্রা শুরু

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আজ ঢাকায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে এআই ভিত্তিক জিপিটি প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এআইভিত্তিক জিপিটি (জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমারস) প্ল্যাটফর্ম জি-ব্রেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি কনস্টিটিউশন (সংবিধান) জিপিটি, বাজেট জিপিটি এবং স্টার্টআপ জিপিটি এই তিনটি মডেলের সমন্বয়ে কাজ করবে।

উদ্বোধন হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বাংলাদেশের নিজস্ব জিপিটি (জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমারস) প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন’। এর পূর্ণ রূপ ‘গভর্নমেন্ট ব্রেইন’। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও সহজলভ্য হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান, বাজেট এবং স্টার্ট-আপ এই তিনটি জিপিটি নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জি-ব্রেইন’ (www.gbrainbd.ai) প্ল্যাটফর্মটি। এ ছাড়া ভবিষ্যতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ ও এডিপি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জিপিটিও যুক্ত হবে এই প্ল্যাটফর্মটিতে।

বুধবার রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে জি-ব্রেইন প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও ওরিয়ন ইনফরমেটিক্সের সহায়তায় জি-ব্রেইন প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত। সেই ডেটা ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা জেনারেটিভ এ আই সাম্প্রতিক সময়ে সারাবিশ্বে প্রযুক্তির প্রভাব ও প্রসারের চিত্র বদলে দিয়েছে। বর্তমানে যে দেশ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছে যত সমৃদ্ধ ডেটা ও প্রযুক্তি আছে, সেই প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা দেশ তত বেশি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ আই, ডেটা অ্যানালিটিকস, মেশিন লার্নিংয়ের প্রভাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াব বলেছেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মারাত্মক ঝুঁকি হচ্ছে, ব্যাপক পরিবর্তন খুব দ্রুত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আসলেই ভয়ংকর দৈত্যে পরিণত হচ্ছে। বিষয়টা যদি আমরা পারমাণবিক শক্তির সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে দেখা যাবে পারমাণবিক শক্তি বিদ্যুৎ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। আবার এটা দিয়ে পৃথিবী ধ্বংসও করা সম্ভব। একদিক থেকে পারমাণবিক অস্ত্রের চেয়েও এ আই ভয়ংকর হতে পারে। কারণ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে মানুষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ আই এত শক্তিশালী হয়ে উঠছে যে, এটা নিজেরাই অনেক কিছু করে ফেলতে পারছে।’

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই ব্যাপক পরিবর্তনের সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান, দেশ বা জাতি যদি খাপ খাইয়ে নিতে না পারে, তাহলে তারা এই যাত্রা বা সিস্টেম থেকে ছিটকে পড়বে উল্লেখ করে পলক আরও বলেন, আমাদের সাইবার সিকিউরিটি, মেশিন লার্নিং, মাইক্রো ছিপ ডিজাইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর দক্ষতা ও সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। অন্যথায় শ্রমনির্ভর অর্থনীতির ওপর বেশিদিন টিকে থাকতে পারব না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই বৈশ্বিক অগ্রযাত্রায় আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না; আমরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের সক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জকে জয় করতে চাই। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের গড়ে তুলতে হবে এআই, ডেটা অ্যানালিটিকস ও মেশিন লার্নিংয়ের মতো প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ সমৃদ্ধ স্মার্ট ও মেধাবী প্রজন্ম, আর সেই স্মার্ট প্রজন্মই গড়ে তুলবে আমাদের আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ।

পলক বলেন, আমরা সম্প্রতি ওরাকলের ক্লাউড ব্যবহার করে বাংলাদেশের নিজস্ব ডেটা সেন্টার স্থাপন করেছি, যেখানে আমাদের দেশের ও নাগরিকের সব ডেটা নিরাপদে সংরক্ষিত থাকবে। আমরা আজ এ আই নির্ভর জিপিটি প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন’ উদ্বোধন করলাম। ভবিষ্যতে এটা মাইগ্রেট করে আমাদের ন্যাশনাল ডেটা সেন্টারে হোস্ট করা হবে এবং নিয়মিত আপডেট ও ব্যবহারবান্ধব করা হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমরা পাবলিক-প্রাইভেট-একাডেমিয়া পার্টনারশিপের ভিত্তিতে এই কাজটা করেছি। এআইয়ের পজিটিভ কেইসের ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটিয়ে সরকারের সব লক্ষ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ও স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে আমরা অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ ও এডিপি নিয়ে আরও জিপিটি তৈরি করে জি-ব্রেইনকে সমৃদ্ধ করব। সময়ের প্রয়োজন বিবেচনা করে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি নিম্ন মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত এআই-কে একটি বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। পাশাপাশি এআইয়ের ঝুঁকি মোকাবিলায় আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ আই আইনও প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহার। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা দেশ তাদের ন্যাশনাল এআই সিস্টেম বানাচ্ছে। এখন যদি আমরা এটা না করি, তাহলে ১০০ বছর পরে অন্যেরটা ব্যবহার করতে হবে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্থপতি ইকবাল হাবিব, আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় ওপেন এআই তাদের সর্বোত্তম হাতিয়ার চ্যাটজিপিটি দিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।

স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জি-ব্রেইন তৈরির উদ্যোগ নেয়। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থী, গবেষক, নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য এ আই সংবলিত এই জিপিটি মডেলটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মনে করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, জি-ব্রেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান, বাজেট নির্ধারণ ও স্টার্টআপ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ও সহজলভ্য তথ্যের অধ্যয়ন সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে অগ্রযাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এই উদ্যোগ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নাগরিকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াবে।

জিপিটি এর পূর্ণ রূপ হলো জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমারস। এখানে জেনারেটিভ বলতে এমন একটি মডেলকে বোঝায়, যা টেক্সট বা লেখা তৈরি করতে পারে এবং প্রি-ট্রেইনডের অর্থ হলো, এই মডেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তথ্য বা ডেটা আগে থেকেই সংরক্ষণ করা আছে। ট্রান্সফরমার হলো, এই এ আই মডেলের আর্কিটেকচার বা গঠন।

এআইভিত্তিক জিপিটি প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইনের’ প্রথম মডেল সংবিধান জিপিটি। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। আর এই স্মার্ট নাগরিক হওয়ার একটি পূর্বশর্ত সংবিধান সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন। সেই জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম হতে যাচ্ছে এই সংবিধান জিপিটি বা কনস্টিটিউশন জিপিটি।

জি-ব্রেইন কনস্টিটিউশন জিপিটি একটি উন্নত এ আই মডেল যা বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এই টুলটির মাধ্যমে খুব সহজেই ও অল্প সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা, নাগরিক কিংবা আইনজীবীরা বাংলাদেশের সংবিধান ও এর সংশোধনী সম্পর্কে জানতে কিংবা গবেষণা করতে পারবেন। আইনজীবীদের জন্য এটি আইনি গবেষণা ও মামলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

জি-ব্রেইনের দ্বিতীয় মডেল জিপিটি। এই মডেল জাতীয় বাজেটের জটিল বিষয়গুলো সহজে বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালা ও কৌশল সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট জিপিটি মডেলটি নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী, যারা বাজেট বরাদ্দ, অর্থনৈতিক নীতিমালা এবং অর্থনৈতিক কৌশল সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। এটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বাজেটের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

জি-ব্রেইনের তৃতীয় মডেল স্টার্টআপ জিপিটি। এটি এমন একটি টুল যা নিত্যনতুন স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে তহবিল, যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে। স্টার্টআপ জিপিটি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অমূল্য সব তথ্য সরবরাহ করবে। এর মাধ্যমে অনায়াসে কোথায় কোথায় তহবিল আছে, কারা কারা এর যোগ্য হবেন, কী কী ডকুমেন্টস লাগবে এ ধরনের সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এক নিমেষেই জানা যাবে।


৬০৯ কোটি টাকায় আরও একটি কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন ২০১০-এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৬০৯ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৮৯৭ টাকা। ২০২৪ সালের ২১তম এলএনজি আমদানি ক্রয়ের প্রস্তাব এটি।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় ‘মাস্টার সেল অ্যান্ড পারসেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য হতে কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনাইটেড স্টেটসের মেসার্স এক্সিলেরেট এনার্জি এলপি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৬০৯ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৮৯৭ টাকা (ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ)। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়বে ১৩ দশমিক ৫৫৮০ মার্কিন ডলার। পূর্বে ছিল ১২ দশমিক ৯৬৯৭ মার্কিন ডলার।

এর আগে গত ৪ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুর মেসার্স গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো (২০২৪ সালের ২১তম) এলএনজি কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬০১ কোটি ৬৪ লাখ ০৫ হাজার ১৮৭ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি দাম পড়বে ১২ দশমিক ৯৬৯৭ মার্কিন ডলার, যা আগে ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ১০ দশমিক ৩০০০ মার্কিন ডলার।


হাইড্রোজেন ও অ্যামেনিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, হাইড্রোজেন ও অ্যামেনিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, পেট্রোবাংলার অধীনে রূপান্তরিত গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডে (আরপিজিসিএল) জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন উৎপাদনে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতির ওপর উন্নত বিশ্বের চলমান অধিকতর গবেষণাগুলোর ফলাফল এবং গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল গ্রহণযোগ্য তথ্যাদি প্রাপ্তির পর একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। আশা করা যায়, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার ব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে অধস্তন আদালতে এক হাজার ৪২৯ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

একই দলের সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী মোট মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী, এ পাঁচটি বিভাগ এখন সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত। অর্থাৎ এসব জেলা, উপজেলা ও বিভাগে কোনো ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ নেই। তিনি বলেন, ব্যারাক হাউসের মাধ্যমে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি। ব্যারাক হাউস ছাড়াও আমরা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩টি পরিবারকে নিজ জমিতে বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ করে দিই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর হস্তান্তর করেছি। মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে জমির মালিকানাসহ ঘর করে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে ৬ হাজার ৯৪৫ একর খাসজমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।

আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের সংসদ নেতা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরের ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা থেকে ৯ দশমিক ১২ গুণ বাড়িয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১১৯টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: বাসস
আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৪ ২০:৩৪
বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে গণভবনে সবার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাতের রূপান্তরের ওপর একটি উপস্থাপনা অবলোকন করেন।

এ সময় তিনি গত দেড় দশকে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নেওয়া পদক্ষেপের বর্ণনা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম সাখাওয়াত মুন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

উপস্থাপনা প্রত্যক্ষ করার পর প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

তিনি দেশের স্বাস্থ্য খাতের আরও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে সতর্কতা বজায় রাখার পাশাপাশি প্রকৃত প্রয়োজনের ভিত্তিতে সরকারি হাসপাতালের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা সরঞ্জামের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

দেশের স্বাধীনতার পর সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান এবং স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।


‘প্রত্যয়’ স্কিম: কাল শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বসবেন ওবায়দুল কাদের

আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৪ ১৫:২০
ঢাবি প্রতিনিধি

প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ আরও দুই দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এজন্য তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষক নেতাদের ডেকেছেন।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাদেরকে ফোন দিয়েছেন, আমাদের আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছেন আর বলেছেন আমাদের সঙ্গে তিনি বসবেন। এরপর তিনি আমাদেরকে যেতে বললেন সেখানে। এই মিটিংটা হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যায়। কিন্তু উনার সেসময় সাভারে মিটিং থাকার কারণে আগামীকাল সকালেই মিটিংয়ের সময় তিনি নির্ধারণ করেছেন।

অধ্যাপক নিজামুল বলেন, গতকাল মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। তিনি আমাদের বলেছেন, আমরা আপনাদের এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। কিছু বিষয়ে আপনার সঙ্গে সরাসরি কথা বলবো। আমি আপনাদের ডাকবো।

কালকের সভাতে শিক্ষামন্ত্রীও উপস্থিত থাকবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আমরা জানি না। এটি ইনডিভিজুয়ালও হতে পারে, আবার কালেক্টিভও হতে পারে।

এদিকে আজ বুধবার তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এর অংশ হিসেবে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকের ভেতরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

শিক্ষককদের আন্দোলন নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, তিনি কোন ধরনের রিভিউ, তথ্য ও উপাত্ত যাচাই না করে শুধুমাত্র কর্মকর্তারা তাকে যে লিখিত প্রেসরিলিজ দিয়েছেন তিনি সেটার উপর নির্ভরশীল হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সে কারণে তিনি গণমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। সবচেয়ে দুঃখজনক, তিনি একবারও বললেন না, ঠিক আছে, আমরা বসি, আলোচনা করি, দেখি না কি হয়।

জিনাত হুদা বলেন, ধরেন আমাদের দাবি ভুল। আমরা ভুল আন্দোলন করছি। তাহলে আপনারা সেটি আমাদের দেখিয়ে দেন না। আমাদের সঙ্গে বসেন। সেই সৎ সাহস কেন নেই অর্থমন্ত্রীর।

অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, আমি অর্থমন্ত্রীকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি আমাদের সঙ্গে বসুন। আমাদের তথ্য উপাত্ত যাচাই করুন। গাণিতিকভাবে হিসাব নিকাশ প্রণয়ন করুন। দেখুন, এই আন্দোলন কতোটা যৌক্তিক, কতোটা মানবিক, কতোটা বৈষম্যবিরোধী এবং কতোটা বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত আমাদের যে স্বায়ত্তশাসন সেটির সঙ্গে সংঘর্ষিক।

প্রত্যয় স্কিম' সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ ফেডারেশেনর আরও দুই দাবি হলো, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদালয় শিক্ষকদের অহর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন।

এদিকে প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদও।

প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর বক্তব্যের বিষয়ে ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আব্দুল মোতালেব বলেন, এমন কোনো শক্তি নেই যে আমাদের এই আন্দোলন থামাতে পারে। অর্থমন্ত্রী আপনাকে অনুরোধ করবো, আপনি প্রত্যয় স্কিম নামে যে একটা ভুয়া স্কিম আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন সেটি প্রত্যাখ্যান করুন। তা না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে আপনার অবস্থানচ্যুতি ঘটতে পারে।


দেশে গ্রস রিজার্ভ এখন ২৬.৮৮ বিলিয়ন ডলার

জুন শেষে ছিল ২৬.৮২ বিলিয়ন ডলার
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ কার্যদিবস ৩০ জুন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৬৮২ কোটি মার্কিন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, এ রিজার্ভের পরিমাণ ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। এ ছাড়া নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ বেড়ে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ২৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৬৮৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ মুখপাত্র।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মূলত তিন ধরনের হিসাব করা হয়- গ্রস রিজার্ভ, বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এবং নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ। তবে এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংক নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের হিসাবটি প্রকাশ না করে শুধু আইএমএফকে সরবরাহ করত। এ নিট রিজার্ভই মূলত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ।

এ বিষয়ে মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফের ঋণ সহায়তাসহ দাতা সংস্থার অর্থ পাওয়ার পর দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ বেড়েছে। গত ৩০ জুন শেষে দেশের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ বেড়ে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৬৭৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।’

অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। যেকোনো দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের রিজার্ভ থাকলে সেটিকে ভালো হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে দেশের আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রতি মাসে ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারের নিট রিজার্ভ দিয়ে দেশের প্রায় তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার) ছাড় হওয়ার পাশাপাশি আরও কয়েকটি দাতা সংস্থার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে দীর্ঘদিন কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ যুক্ত হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজ অনুমোদনের পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করল।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির দ্বিতীয় মূল্যায়নের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন মাসের শেষে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত এপ্রিলে ১২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। আইএমএফসহ কয়েকটি দাতা সংস্থার ঋণে ভর করে এ রির্জাভ আবারও নতুন মাত্রা খুঁজে পেল।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ ছাড়ের কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন এবং আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১১ কো‌টি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।

এদিকে চতুর্থ কিস্তির জন্য বাংলাদেশকে এ বছরের জুন শেষে নিট রিজার্ভ ২ হাজার ১০ কোটি ডলার রাখতে বলা হয়েছিল আইএমএফের পক্ষ থেকে। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে তা কমিয়ে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার (১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন) করা হয়। এখন বাংলাদেশের প্রকৃত রিজার্ভ যেহেতু ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, সেহেতু ঋণের ৪র্থ কিস্তি পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশিকর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।


‘আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার’ পাচ্ছেন আনোয়ারা সৈয়দ হক

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

‘আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার’ পেতে যাচ্ছেন কবি, কথাসাহিত্যিক ও শিশুসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।

পুরস্কারের মূল্যমান হিসেবে তিনি ১ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র পাবেন। আনন ফাউন্ডেশনের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর তাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন ফারুক নওয়াজ, মাহমুদউল্লাহ, আখতার হুসেন, সেলিনা হোসেন, লুৎফর রহমান রিটন, আলী ইমাম, সুজন বড়ুয়া ও কাইজার চৌধুরী।

আনোয়ারা সৈয়দ হক ১৯৪০ সালের ৫ নভেম্বর যশোরের চুড়িপট্টিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গোলাম রফিউদ্দিন চৌধুরী ও মা আছিয়া খাতুন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি এমবিবিএস পাস করেন এবং ১৯৮২ সালে লন্ডন থেকে মনোবিজ্ঞানে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৮ সালে অবসর নেন। ১৯৬৫ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

শিশুসাহিত্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো- ছানার নানাবাড়ি, বাবার সঙ্গে ছানা, ছানা এবং মুক্তিযুদ্ধ, পথের মানুষ ছানা, একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা দাদাভাই, মন্টির বাবা, তোমাদের জন্য এগারোটি, উল্টো পায়ের ভূত প্রভৃতি।

তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক ২০১৯, উপন্যাসে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১০, কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, চাঁদের হাট পুরস্কার, ইউরো শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, অনন্যা শীর্ষদশ পুরস্কার, এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হ‍ুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, উপন্যাস শাখায় পাঞ্জেরী ছোটকাকু আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি।


‘ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে’

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিসমূহকে পোশাক, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, ওষুধ ও ব্যাংকিং খাত বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে (ফিনটেক) বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এর মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এবারের ভোজসভার আলোচনার বিষয় ছিল ‘ড্রাইভিং ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরি করতে চাই। মার্কিন কোম্পানি মাস্টারকার্ড এবং ভিসাকার্ড বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। আরও যেসব মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে, তারাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে।’

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মাসিয়াল কাউন্সিলার (ফরেন কর্মাসিয়াল সার্ভিন) জন ফে।

আর্থিক খাতে অনলাইন সেবা প্রদান প্রসঙ্গে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, অনলাইন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বেসরকারিখাত অনেক ভাল করছে। এর পাশাপাশি বিকাশ ও নগদ এর মত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এর কারণে গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় এসেছে।

ওয়াসিকা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও ই-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং এক্সেস টু ফিনান্সিয়াল সার্ভিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একইসাথে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত এটি। অনলাইন লেনদেনকে উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে এক ব্যবসায়ীর প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকের সুদহার বাজারভিত্তিক করা হচ্ছে এবং মুদ্রা বিনিময় হার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এর ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করেছি। জুন মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে।’ তিনি বলেন, সুদহার যখন নয়-ছয় ছিল সে সময় আমরা খেলাপি হওয়ার মত অনেক ঘটনা দেখেছি। ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন সরবরাহে বাজারভিত্তিক সুদহার কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দেওয়ার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন চালু করতে সরকার সর্বাত্বক কাজ করে চলেছে।

মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূরাজনৈতিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে আমরা সময় পার করছি। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে নিত্যপয়োজনীয় পণ্য নিয়মিত আমদানি করতে হচ্ছে। তবে সরকার দেশের সকল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সমাধানে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানের ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশে যথেষ্ট সফল উদ্যোগ। এবারের বাজেটে স্টার্টআপ উৎসাসিহ করতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

অনুষ্ঠানে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণে দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে। তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে লজিস্টিকস সেবাসহ অন্যান্য পরিসেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থপনায় পুরোপুরি অটোমেশন চালুর আহবান জানান তিনি।


পর্যটন খাতে ২ কোটি ১৯ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, পর্যটন খাতে পরিকল্পিত উন্নয়নে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। এতে সমগ্র বাংলাদেশকে ৮টি অঞ্চল ও ৫৩টি ক্লাস্টারে ভাগ করে ১ হাজার ৪৯৮টি পর্যটন সম্পদ চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যটন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০৪১ সালের মধ্যে এই খাতে ২ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, ২০৪১ সালে দেশে ৫৫ লাখ ৭০ হাজার বিদেশি পর্যটক আগমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি দলের আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের অন্য এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে ফারুক খান জানান, বাংলাদেশের জিডিপিতে পর্যটনশিল্পের অবদান প্রায় ৪ শতাংশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রায় ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ হার ক্রমাগত বাড়ছে।

তিনি আরও জানান, সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পর্যটন খাত। সেই সময়েও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ও আনুতোষিক পরিশোধ করেছে। লাভের ধারা অব্যাহত রেখেছে। সংস্থাটি নিজস্ব আয়ে পরিচালিত সরকারের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, দেশের মধ্যে নতুন নতুন পর্যটন আকর্ষণীয় স্পট চিহ্নিতকরণ ও এর উন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, সিলেট, কক্সবাজার, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ সারা দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মাধ্যমে মোট ৫৩টি পর্যটন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান (হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ, এমিউজম্যান্ট পার্ক, বার, পিকনিক স্পট ও ডিউটি ফ্রিশপ) স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করছে, যা দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

ঘরে বসেই মানুষ ২৮ দিনেই জমির নামজারি করতে পারছেন: ভূমিমন্ত্রী

ই-মিউটেশনের মাধ্যমে নাগরিকরা পূর্বের ৫৭ দিনের পরিবর্তে বর্তমানে ২৮ দিনে ঘরে বসেই নামজারি করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগারের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে ভূমিমন্ত্রী জানান, ভূমিসেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ভূমি মন্ত্রণালয় স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনার আওতায় ই-মিউটেশন এবং অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেম চালু করেছে। ই-মিউটেশনের মাধ্যমে নাগরিকরা পূর্বের ৫৭ দিনের পরিবর্তে বর্তমানে ২৮ দিনে ঘরে বসেই নামজারি করতে পারছে। একই সঙ্গে ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেমের মাধ্যমে নাগরিক ঘরে বসে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে জমির খাজনা-ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক সায়েমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, এই মুহূর্তে ভূমি উন্নয়ন কর বৃদ্ধি করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে এলাকাভিত্তিক নামজারি ফি বৃদ্ধি করা যায় কি না, এ বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ

এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের কোহেলী কুদ্দুসের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি খাতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭১ মেট্রিক টন ডাল উৎপাদন হয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটা ৫ জুন বৃদ্ধি পেয়ে ১০ লাখ ৮ হাজার ৪৭ মেট্রিক টনে উত্তীর্ণ হয়েছে।


বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজ মঙ্গলবার সংসদে বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাদি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। উক্ত কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকা হারে প্রদান করা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কার্যক্রম সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আওতাভুক্ত। উক্ত কমিটিতে ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

এম আব্দুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সবশেষ গেজেট অনুযায়ী দেশে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা ৫৬০ জন। তালিকা তৈরির কার্যক্রম চলমান, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত চারটি ধাপে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে ১৯১ জন, ২০২২ সালে ১৪৩ জন, ফেব্রুয়ারি ২০২৪ প্রকাশ করা হয় ১০৮ জন ও সবশেষ চতুর্থ পর্বে চলতি বছরের এপ্রিলে ১১৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়।

একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে একটি জাতীয় কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাতীয় কমিটির সদস্যরা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তথ্য সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই ও গেজেট প্রকাশ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এর মধ্যে তালিকার বাইরে থাকা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চিহ্নিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তখন প্রকাশ করা হবে।


রোহিঙ্গাদের জন্য দেড় মিলিয়ন ইউরো অনুদান ফ্রান্সের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ১.৫ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অনুদান দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য জানিয়ে ফ্রান্স সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

ইউএনএইচসিআর বলছে, ফ্রান্সের এই সহায়তায় শরণার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রত্যয় বজায় রাখা যাবে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রান্নার জন্য লাকড়ির বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে, যার মাধ্যমে বন উজাড় ও কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ প্রতিরোধ করে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভি বলেন, ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চলমান মানবিক কর্মকাণ্ডের এক অবিচল সমর্থক। এই উদার অনুদান রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক সাহায্য ও সুরক্ষা সহায়তা নিশ্চিত করবে। এটি কক্সবাজারের পরিবেশের সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও শরণার্থী পরিস্থিতিতে থাকা স্থানীয় জনগণকেও সহায়তা করবে।

ফ্রান্সের এই নতুন অনুদানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের পর ইউএনএইচসিআর আশা করে মানবিক কর্মকাণ্ডের তহবিলের ঘাটতি মেটাতে অন্যান্য দাতারাও আবারও এগিয়ে আসবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই বলেন, প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ফ্রান্স অভিবাদন জানায়। আমরা শরণার্থীদের আরও ভালো সুযোগ তৈরির জন্য কাজ করে যাব; আর আশা করব তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য। আমাদের অগ্রাধিকারগুলো হচ্ছে ক্যাম্পের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা ও জোরপূর্বক বার্মায় ফেরত পাঠানোর ঘটনা নিয়ে কাজ করা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবিকার সুযোগ তৈরি করা।

২০২৪ সালে মানবিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় বাংলাদেশিসহ প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মানুষের প্রয়োজন মেটাতে ৮৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কিছু বেশি অর্থের আবেদন জানিয়েছিল। এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে চলমান যৌথ মানবিক কর্মকাণ্ডের ৩০ শতাংশেরও কম অর্থায়ন সম্ভব হয়েছে। ফ্রান্সের যৌথ আয়োজনে গত বছরের বিশ্ব শরণার্থী ফোরামে শরণার্থীদের আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির জন্য যেসব পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নেও বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ কমাতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিষয়:

নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের নারী জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার

আপডেটেড ২ জুলাই, ২০২৪ ২০:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় এক নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের জঙ্গি দমনে বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
গ্রেপ্তার হওয়া নারীর নাম পারভীন আক্তার (২৪)। গত রোববার (৩০ জুন) গোয়েন্দা তথ্যে কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউপির ইসলামাবাদ পূর্ব হামজার ডেল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উগ্রবাদী কর্মকান্ডে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা করা হয়। আজ মঙ্গলবার এটিইউ- এর পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম ও সচেতনতা শাখা) মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ৯ জুন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের একটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ পায় পুলিশ। নেত্রকোনা মডেল থানার ৭ নম্বর কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামে একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মৎস্য খামার পরিচালনার অন্তরালে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি পরিচালনা করছিল সংগঠনটি। একই দিন এন্টি টেররিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিমসহ নেত্রকোণা জেলা পুলিশ যৌথভাবে খামারবাড়িটিতে অভিযান চালায়। অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগজিন ও তাজা গুলি, দূরুবীন, কম্পাস, ওয়াকিটকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, এসএসডি, মোবাইল ফোন, পিকআপ গাড়িসহ ৮৬ (ছিয়াশি) ধরণের উগ্রবাদী প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ১০ জুন নেত্রকোনা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়।
প্রায় ৩ বছর আগে এ মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. হামিম হোসেন (৩২) ওরফে ফাহিম ওরফে আনোয়ার আহমেদ ওরফে শাহজালাল ওরফে আরিফ ২ দশমিক ৫ একর জায়গায় অবস্থিত একটি খামার বাড়ি ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন। মো. হামিম হোসেন এবং তার স্ত্রী এজাহারনামীয় ৪ নম্বর আসামি উম্মে হাফসা (২৫) গ্রেপ্তার আসামি পারভীন আক্তার ও তার স্বামী রশিদ আহম্মদ (সাংগঠনিক নাম তানভীর) মৎস্য খামারের দোতলা পাকা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করতেন।
গ্রেপ্তার হওয়া পারভীন আক্তারসহ তার অন্যান্য সহযোগিরা মৎস্য চাষের আড়ালে খামার বাড়িটিকে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা নিজস্ব যানবাহন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
তিনি আরও জানান, এ লক্ষ্যে তারা খামার বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম স্থাপন করেন এবং বিপুল পরিমান অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখেন। গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার তার অন্যান্য সহযোগিদের নিয়ে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত সমর্থকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতে আসা সদস্যদের বসবাসের সুযোগ তৈরি করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রান্নাবান্না করাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতেন।
এর আগে গত ৫ জুন মো. হামিম হোসেন অস্ত্রগুলিসহ নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পারভীন আক্তার আত্মগোপনে চলে যান।


banner close