শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের ফাঁদ

মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে চলে যৌন ব্যবসা

৭ বছরে আয় শত কোটি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৬ জুন, ২০২৪ ২২:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২৪ ২২:১৭

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলে কৌশলে তোলা হয় নগ্ন ছবি। শুধু তাই নয়, ফাঁদে পড়া তরুণীদের ভিডিও কলে নগ্ন হওয়া এবং যৌন বিষয়ে বাধ্য করা হতো। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে পরে অনলাইনে চালানো হতো যৌন ব্যবসাও।

এমনি একটি চক্রকে শনাক্ত করে এর প্রধানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫), তার প্রধান সহযোগী ও খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ এবং ভুক্তভোগীদের ফাঁদে ফেলে আয় করা টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহম্মদ আলী মিয়া।

জানা গেছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শত শত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করত এবং ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। এমনকি ভুক্তভোগীদের ভিডিও টেলিগ্রাম গ্রুপে শেয়ার করা হতো। এভাবে দেশি-বিদেশি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকেও নেওয়া হতো টাকা। এভাবে চক্রটি গত সাত বছরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা।

মোহম্মদ আলী মিয়া বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সি তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল‍্যাকমেইল করত এবং জোরপূর্বক তাদের যৌনকর্মে নামতে বাধ্য করত। অনুসন্ধানে এমন ভয়ংকর চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। এই চক্রটি মূলত উঠতি বয়সি তরুণীসহ পারিবারিক ভাঙনের শিকার তরুণী ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিত। প্রাথমিকভাবে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদামতো টাকা ও প্রয়োজন মিটাতো তারা। পরে ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত চক্রটি।

এই চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান এবং তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিলেন। তারা দুজনেই মেডিকেল শিক্ষার্থী। তারা চিকিৎসাবিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সি তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি এবং টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে নানা অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত। গত সাত বছরে তারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়িও। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে।

ফাঁদে ফেলার কৌশল

প্রতারণার ফাঁদ ও নগ্ন ভিডিও তৈরি কৌশল সম্পর্কে সিআইডি প্রধান বলেন, শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, মডেল তৈরি ও ট্যালেন্ট হান্ট শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করত চক্রটি। যারা সাড়া দিতেন তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলত তারা। তারপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে আপত্তিকর ছবি তুলত। সেসব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নগ্ন হয়ে ভিডিও কল বা সরাসরি অসামাজিক কাজে বাধ্য করত তারা।

তিনি বলেন, চক্রটির নিয়ন্ত্রণে ১০টি টেলিগ্রাম গ্রুপের সন্ধান মিলেছে। এসব টেলিগ্রাম গ্রুপে দেশি-বিদেশি গ্রাহকের সংখ্যা তিন লাখের বেশি। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে গ্রাহকরা ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকত। চক্রটি ভিডিও কলের সবকিছু গোপনে ধারণ করে রাখত। এরপর যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হতো। এভাবেই চক্রটির হাতে আধুনিক যৌন দাসীতে পরিণত হয় শত শত তরুণী।

সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশ-বিদেশে চক্রটির রয়েছে শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করে এমএফএস বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। এ ছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করার সব কলা-কৌশলও এই চক্রের জানা। তারা বেনামি কয়েকশ মোবাইল সিম ব্যবহার করছিল। যেগুলোর কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। এ ক্ষেত্রে নিম্নআয়ের মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিত। পরে সামান্য অর্থ দিয়ে তাদের নামে তোলা হতো সিম কার্ড। কন্টেন্ট আদান-প্রদান ও সাবস্ক্রিপশনের জন্য ছিল টেলিগ্রাম প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন পেইড ক্লাউড সার্ভিস। অল্প বয়সি ভয়ানক চতুর এই দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর কাছে টিকটক, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রিটিসহ এখনো জিম্মি কয়েক হাজার নারী।

অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ নগ্ন ছবি ও ২০ হাজার অ্যাডাল্ট ভিডিওর সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।


এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু কাল: বন্ধ থাকবে কোচিং সেন্টার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল ৩০ জুন রোববার শুরু হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকল মুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা গ্রহনের লক্ষ্যে আজ শনিবার (২৯ জুন) থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

এবার ৯ টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি/আলিম/এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি(ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ জন এবং ছাত্রী সংখা ৭ লাখ ৫০৯ জন।এবার মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৭২৫ টি ও মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৪৬৩ টি।নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে, মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখা ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮০ জন এবং ছাত্রী সংখা ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৬০১ জন। মোট কেন্দ্র ১ হাজার ৫৬৬ টি এবং মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৪ হাজার ৮৭০টি।আলিম পরীক্ষায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৮ হাজার ৭৬ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার ৫৯২ জন এবং ছাত্রী সংখা ৪০ হাজার ৪৮৪ জন। মোট কেন্দ্র ৪৫২ টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৬৮৫ টি।এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) এইচএসসি (ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষা (কারিগরি) বোর্ডে চলতি বছরে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৬৫ হাজার ৪২৪ জন। মোট কেন্দ্র ৭০৭ টি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১ হাজার ৯০৮ টি। গতবছরের তুলনায় ২০২৪ সালে চলতি বছরে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৯১ হাজার ৪৪৮ জন। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২৯৪ টি, মোট কেন্দ্র বেড়েছে ৬৭ টি।

এদিকে, পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব নির্দেশনায় বলা হয়, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোন পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম,রোল নম্বর,প্রবেশের সময়,বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিষ্টারে লিখে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে এসএমএস এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্ন পত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না; শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (তবে ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন)। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (যেমন-পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক (ইনভিজিলেটর),মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম,বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম,নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ছাড়া অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।

অন্যদিকে, বিশেষ সক্ষম (ডিফারেন্টলি অ্যাবল) পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়।

বিশেষ ব্যবস্থায় উল্লেখ করা হয়েছে,দৃষ্টি প্রতিবন্ধী,সেরিব্রালপালসি জনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট বাড়ানো হয়েছে। প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউনসিন্ড্রম,সেরিব্রালপালসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বাড়ানোসহ শিক্ষক,অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহযোগিতা

দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিনে জানা যায়,সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা আগামীকাল হতে শুরু হয়ে ১১ আগস্ট শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ২১ আগস্ট শেষ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা একইদিন শুরু হয়ে ১১ আগস্ট শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ২১ আগস্ট শেষ হবে। কারিগরি বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা আগামীকাল শুরু হয়ে ১৮ জুলাই শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৯ জুলাই হতে শুরু হয়ে ৪ আগস্ট শেষ হবে।

বিদেশে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা মোট ২৮১ টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে জেদ্দায় ৪৭টি,রিয়াদে ৪৩টি,ত্রিপলীতে ২টি,দোহায় ৬৩টি,আবুধাবীতে ৪৪টি,দুবাইয়ে ২২টি,বাহরাইনে ৩৪টি,সাহাম ওমানে ২৬টি।

এইচএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা (নিয়মিত, অনিয়মিত, মানোন্নয়ন) ২০২৪ সালের পূনর্বিনাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণনম্বর ও পূর্ণসময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এইচএসসি পরীক্ষা একমাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে একটি ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়লে এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুন এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ধরনের অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

এতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যে বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়েছে তা সঠিক নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর তারিখ সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হয়েছে, যা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শাখার ইস্যুকৃত নয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সময়সূচি অনুসারে যথাসময়ে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।


লিবিয়ায় মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ২

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

লিবিয়ায় মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তার দুজন মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়কারী সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য।

গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের মূল হোতা বাদশা মিয়া (৪২) এবং তার সহযোগী ও চাচাতো বোন আরজু বেগম (৩১)। সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম টিএইচবি শাখার একটি দল গত ২৬ জুন কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার আবিদ স্টোর নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের টার্গেট করে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায়। পরে লিবিয়ায় অবস্থানরত গ্রেপ্তার আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের মাধ্যমে আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অন্য একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করে।

পরবর্তীতে চক্রটি ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ প্রদানের পর, ভিকটিমদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় অনেকের সাগরে মৃত্যু হয়েছে, কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।

গত ২০ মে মাগুরায় হওয়া একটি মামলার তদন্ত করার সময় জানা যায়, গেল বছরের ১৮ ডিসেম্বর মো. নাছির হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। লিবিয়ায় প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। গত চার মাস আগে নাছিরকে লিবিয়ার মানব পাচারকারী চক্র আটক করে। পরে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।

তদন্তে আরও জানা যায়, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি চলতি হিসাব (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট) খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। এই অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণের ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা উত্তোলন করা হয়।

বাদশা মিয়া ও আরজু বেগমকে আদালতে হাজির করা হলে, তারা আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।


বাজারের উত্তাপে মানুষ অস্থির

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলুসহ অধিকাংশ সবজির দাম। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও ভোক্তাদের এসব পণ্য কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। তবে বিক্রেতাদেরও রয়েছে নানা অজুহাত।

কয়েক দিন পরপর কোনো না কোনো পণ্যের দরে উত্থানের প্রবণতায় পেঁয়াজ ও আলু এই মুহূর্তে প্রধান আলোচনার বিষয়। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। ঈদের আগে যা ছিল ৫৫ টাকা। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা জসীম মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, বাজারে আলুর কোনো সংকটই নেই। আড়ত থেকে খুচরা দোকান, সব খানেই সরবরাহ রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু অহেতুক দাম গুনতে হচ্ছে বেশি।

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারের উত্তাপে আমরা অস্বস্তির মধ্যে আছি। আয় বাড়েনি কিন্তু সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের মতো নিম্নবিত্তদের জন্য বাজার করে চলা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের কষ্ট কেউ বুঝবে না, ভাই।’

এদিকে বোরো ধানের বাম্পার ফলন সত্ত্বেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ধানের দাম বেশি ও ঈদুল আজহায় মিল বন্ধ- এই দুই অজুহাতে চালের দাম বস্তায় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে দাম বেড়ে যাওয়ার তথ্য মিলেছে।

খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি মানের বিআর-২৮ ও ২৯ চাল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা ৫৪ টাকা এবং মোটা হাইব্রিড ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদুল আজহার আগে এসব চালের দাম কেজিতে মানভেদে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে ৫৯ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭৪ টাকায়। আর দেশি বাসমতি চালের কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা।

মাঝারি মানের প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা, বিআর-২৯ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৪৯ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড মোটা চালের কেজিতে ৪৬ টাকা। ঈদের আগে এসব চালের কেজি এক থেকে দুই টাকা কম ছিল।

আর ডিমের দাম এখনো চড়া। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়।

গত বছর এই সময়ে আলুর দর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হয়ে যাওয়ার পর আমদানির অনুমতি নিয়ে বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা হয়েছে, কী কী করা যায়, তা নিয়ে নানামুখী উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল।

সেই আলুর খুচরা দর এখন ৫৮ থেকে ৬০, কোথাও কোথাও ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, কিন্তু এ নিয়ে কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না।

গত বছর এমন সময় দেশি পেঁয়াজের দর ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজের দর ছিল ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। সেই পেঁয়াজ ঈদের আগেই উঠে গিয়েছিল ৯০ টাকা। ঈদের পর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই সেখান থেকে বাড়ল আরও ১০ টাকা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়া রেললাইন-সংলগ্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন, ঈদে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছিল। ছুটি ও বৃষ্টির কারণে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দাম নতুন করে বেড়েছে।

মহাখালী কাঁচাবাজারে চিচিঙ্গা ৪০, পটোল ও করলা ৫০ থেকে ৬০, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৬০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ৯০, বরবটি ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

লাউ আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এই বাজারে। কাঁচা মরিচের দাম দেখা গেছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। এ ছাড়া টমেটো ২০০ টাকা, দেশি শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।

বিষয়:

ঢাকার বস্তিবাসীদের জন্য নির্মিত হবে আধুনিক ফ্ল্যাট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, রাজধানীর বস্তিবাসীদের জন্য উন্নত জীবন ও মানসম্মত আবাসনের লক্ষ্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, স্বল্প ভাড়ায় এসব ফ্ল্যাটে থাকার সুযোগ পাবেন তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা রয়েছে।

আজ শুক্রবার মহাখালীর টিএন্ডটি কলোনির মাঠে কড়াইল বস্তিবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবিরুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং কড়াইল বস্তিতে বসবাসরত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সবার জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বস্তিবাসীদের উন্নত জীবন ও মানসম্মত আবাসনের লক্ষ্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। স্বল্প ভাড়ায় এসব ফ্ল্যাটে তারা বসবাসের সুযোগ পাবেন।

রাজধানীর মিরপুরে এরই মধ্যে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত ৫৩৩টি ভাড়া ভিত্তিক ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানকার বস্তিবাসীরা স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে সেখানে বসবাস করছেন। টঙ্গীর দত্তপাড়া ও মহাখালীর কড়াইল বস্তিতেও একই ধরনের ফ্ল্যাট নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, বস্তিতে বসবাসকারীরা যথাযথ ভাড়া পরিশোধ করে থাকেন। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বাবদ তাদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়। অথচ বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তারা পায় না। পর্যাপ্ত অর্থ খরচের পরও তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করে। এসব ফ্ল্যাট নির্মিত হলে স্বল্প ভাড়ায় তারা আধুনিক জীবনযাপনের সুযোগ পাবেন। অবস্থানরত কোনো বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ না করে তাদের বিদ্যমান স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।


শিশুদের মনে ও মননে হাজারো স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতে হবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

শিশুদের মনে ও মননে হাজারো স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতে হবে। শিশুরা স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর ও জাতির আলোকবর্তিকা বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী।

আজ শুক্রবার ঢাকায় নিউ বেইলি রোডে গাইড অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ে হলদে পাখি ‘নীল কমল অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

শিশুদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত করতে গার্ল গাইডসের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দেশপ্রেম, কর্তব্যপরায়ণতা ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত করতে হবে।

জাতীয় পর্যায়ে হলদে পাখিদের (১০ বছরের বালিকা) মাঝে ‘নীল কমল অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ করা হয়। তিনি পদকপ্রাপ্ত ৩১ জন হলদে পাখির হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। পরে তিনি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।

গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার কাজী জেবুন্নেছা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের উপদেষ্টা ও সাবেক সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।


তরুণদেরকে দেশ ও বিশ্বমানবতার সেবায় ব্রতী হতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

উচ্চশিক্ষা লাভ করে শুধু নিজের জন্য নয়, দেশ, সমাজ ও বিশ্বমানবতার সেবার ব্রত নিয়ে আত্মনিয়োগ করতে তরুণ গ্র‍্যাজুয়েটদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ শুক্রবার দুপুরে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ৩৬তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

হাছান মাহমুদ বলেন, সময়ের বিবর্তনে মানুষ আজ ক্রমেই স্বার্থপর হয়ে উঠছে। অন্যের কথা আর ভাবতে চায় না। এ অবক্ষয় থেকে সমাজকে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষিত তরুণ সমাজকে অগ্রণী হতে হবে।

মুসলিম দেশগুলো আরও ঐক্যবদ্ধ থাকলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন রোধ করা যেত উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চলমান সংঘাত বন্ধে ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব গড়তে বিশ্ব জনমত তৈরিতে শিক্ষিত তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. হাছান বলেন, জীবন এক যুদ্ধক্ষেত্র এবং স্বপ্ন আর প্রচেষ্টা এই যুদ্ধজয়ের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। ভারতের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট এ পি জে আব্দুল কালামের উক্তি স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে স্বপ্ন মানুষকে ঘুমুতে দেয় না, সেই স্বপ্ন আর স্বপ্নজয়ের প্রচেষ্টা একাকার হলে বিপুল বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় শক্তির উদ্ভব হয়। আর এই শক্তি অপ্রতিরোধ্য।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন-ওআইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আইইউটি আজ দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় এক অনন্য বিদ্যাপীঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সামনের দিনগুলোতেও আইইউটি ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে তার অবস্থান অক্ষুণ্ণ রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

আইইউটি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওআইসির সহকারী মহাসচিব ড. আহমদ কাওয়েসা সেনজেনডো বিশেষ অতিথি হিসেবে সমাবর্তনে বক্তব্য দেন।


স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট আ.লীগ গড়তে চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ জুন, ২০২৪ ২০:০৫
বাসস

স্মার্ট ওয়ার্ল্ডের সামনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমরা স্মার্ট আওয়ামী লীগ গড়তে চাই। সেজন্য নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

আজ শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ইতিহাসের গতিধারায় বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করে'।

আওয়ামী লীগের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দক্ষিণ এশিয়ায় সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জনের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে আওয়ামী লীগের গৌরবময় ভূমিকা রয়েছে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত জানান, আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন প্রজন্ম কেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবে সে বিষয়ে তিনি একটি ছোট লেখা লিখেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করা, লালন করা এবং জনগণের মধ্য থেকে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে উঠা আর কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে মূলধারায় নেই।’

‘কিছু দল আছে যারা ক্যান্টনমেন্টে বিভিন্ন সামরিক শাসকের পকেট থেকে জন্ম নিয়েছে অথবা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দল। আরও কিছু দল আছে যারা খুবই দুর্বল এবং কিছু দাবি দাওয়া করা ছাড়া তাদের আর কোন সক্ষমতা নাই’- যোগ করে বললেন প্রতিমন্ত্রী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তীতে সংগ্রাম ও আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়ও দলটির অবদান রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির যাত্রায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আরাফাত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ৭৫ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় আওয়ামী লীগের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও ব্যর্থতার চেয়ে দেশের জন্য অনেক বেশি গৌরবময় ভূমিকা, অর্জন ও অবদান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিক দরকার। এটি করার জন্য, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাই, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাদের অভিন্ন মূলমন্ত্রের আওতায় আনতে কাজ করছি।’

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, সহ-সভাপতি কাজী শওকত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য ও শাকুর হোসেন শাকু, দপ্তর সম্পাদক আরমান হোসেন অপু, উপ-দপ্তর সম্পাদক নাহিদুল আলম নাদিম, উপ-প্রচার সম্পাদক শরীফ হাসান প্রমুখ।


গভর্নরের সুদূরপ্রসারী চিন্তার প্রতিফলন

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
আপডেটেড ২৮ জুন, ২০২৪ ২১:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘চলতি অর্থবছরেই আমরা রিবাউন্স করব অর্থাৎ ঘুরে দাঁড়াব।’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে গভর্নর আরও বলেছিলেন, জুনের মধ্যেই রিজার্ভ বাড়বে এবং এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সে হিসাবে জুন মাসেই আশানুরূপ রিজার্ভ বৃদ্ধি হওয়ায় বাস্তবেই তার সেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষেত্রে আবার সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল এবং সামগ্রিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় চলমান রয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং অন্যান্য ঋণদাতারা ৯০ কোটি ডলার প্রদান করায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। রিজার্ভ নিয়ে অবশ্য এর আগেই সুখবর দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্তায় বলা হয়, শুক্রবার চূড়ান্ত হিসাব শেষে দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এক বার্তায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ায় গ্রস রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। তবে রেমিট্যান্স মিলিয়ে বৃহস্পতিবার দিন শেষে চূড়ান্ত হিসাবে তা বেড়ে হয় ২৭.১৫ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার আইএমএফের পাশাপাশি আইডিবি (ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক), আইবিআরডি (ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ও দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণের ৯০ কোটি ডলার যখন বাংলাদেশ পায়, তখন সময়ের পার্থক্যের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের লেনদেন চলছিল। সেই কারণে ওই দিনের চূড়ান্ত স্থিতি জানা গেল পরদিন শুক্রবার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ যেমন এসেছে, তেমনি আরও কয়েকটি উৎস থেকে ডলার যোগ হয়েছে।’

উল্লেখ্য, আইএমএফের ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সংশ্লিষ্টরা জানায়, আর্থিক খাতে নানাবিধ সংস্কার এবং ব্যাংক খাতে মুদ্রানীতিসহ গভর্নরের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপে সন্তুষ্ট আইএমএফ। তার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় চলমান থাকায় বিশ্ব অর্থনৈতিক সংস্থাটির দেওয়া শর্ত পূরণ অনেকটা সহজ হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দ্রুতই কমতে শুরু করে রিজার্ভ। এ পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ঋণের আবেদন করে। কয়েক দফা আলোচনা শেষে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে ওয়াশিংটনভিত্তিক আর্থিক সংস্থাটি। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ জানায়, শর্তপূরণ সাপেক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের এ অর্থ দেওয়া হবে।

শুরু থেকেই আইএমএফের পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার জোর চেষ্টা অব্যাহত রাখেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তার দেওয়া মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার ব্যাপারে জোর প্রচেষ্টা ছিল, ইতোপূর্বে যা নিয়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি। একই সঙ্গে ডলার সংকট কমাতে বিলাসী পণ্য আমদানিতে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেন তিনি। যার প্রভাবে চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমদানি কমে আসে। ফলে ডলার মার্কেটে স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা দূর করতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন গভর্নর। ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট দূর করতে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। যার ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।

২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল-গ্যাসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও আকাশচুম্বী হয়ে যায়, বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার মান কমে যায়, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে শুরু করে, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট শুরু হয়, সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি আয় কিছুটা কমে যায়, রেমিট্যান্স কমতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়। যেমন, বিলাসী পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা, রপ্তানি বাড়ানোর জন্য প্রণোদনামূলক মজবুত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন, আবার রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।

আইএমএফের সঙ্গে ঋণ চুক্তি অনুমোদনের পর গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ। আর গত ১২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশ পায় ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। এখন তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ফলে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। ঋণের বাকি প্রায় ২৩৯ কোটি ডলার আরও চার কিস্তিতে পাওয়া যাবে।

এর আগে গত ৮ মে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করার বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল ঢাকায় সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। গত সোমবার বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির আওতায় তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন দেয় আইএমএফ।

ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থের ব্যবহার এবং শর্ত পূরণে অগ্রগতি দেখতে রিভিউ মিশন গত ২৪ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে। ঋণের শর্ত হিসেবে বেশ কিছু আর্থিক ও নীতি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

এগুলোর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংক ঋণের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রিজার্ভের নিট হিসাব আইএমএফ স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী প্রকাশ, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নের মতো বিষয় রয়েছে।


জাতিসংঘ পুলিশের কার্যক্রমে ফলপ্রসূ অবদান রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতিসংঘ পুলিশের কার্যক্রমে ফলপ্রসূ অবদান রাখার বিষয়ে বাংলাদেশের অঙ্গীকার ও প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘ পুলিশপ্রধানদের চতুর্থ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিনব কৌশল ও সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্র’ শীর্ষক সম্মেলনের প্রধান সেশনে প্রথম বক্তা হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রাসঙ্গিক ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বিশেষায়িত পুলিশিংয়ের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রম চলমান দেশসমূহের আইন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধির উপর জোর দিতে হবে।’

তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের শেষে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের শান্তিরক্ষায় নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার প্রদানের আহবান জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মহিলা পুলিশ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের এ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দেন।

সম্মেলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলে সানিয়াং, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জ্যঁ পিয়েরে লাখোয়া, এবং আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর অপারেশনাল সাপোর্ট অতুল খারের সঙ্গে পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরেন।

এ সময় উভয় আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেলই শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের পেশাদারিত্ব ও অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ থেকে আরও শান্তিরক্ষী প্রেরণের অনুরোধ জানান।


টানা ৮ দিন দেশে অতিভারি বর্ষণের শঙ্কা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় টানা আট দিন অতিভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শুক্রবার দুপুরে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মাল্লিক গণমাধ্যমকে একথা জানান।

তিনি বলেন, দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আজ থেকে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত অতিবৃষ্টিপাত হতে পারে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে ভারিবৃষ্টি হলেও বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় গরমের তীব্রতা একই রকম থাকবে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, অতিভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবন জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসেরও আশঙ্কা রয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৭ দশকি ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৫১, নেত্রকোনায় ৫০ ও সিলেটে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- দেশের আট বিভাগেই অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। এতে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াম কমে আসবে। এছাড়া রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।


হঠাৎ অসুস্থ ডেপুটি স্পিকার, হেলিকপ্টারে আনা হলো ঢাকায়

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। জরুরি চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টারযোগে রাজধানী ঢাকাতে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বেড়া আব্দুল খালেক স্টেডিয়াম থেকে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়।এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে বেড়া বিপিন বিহারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

উদ্বোধন শেষে নিজ বাড়ি সংলগ্ন নৌকা চত্ত্বরে বৃক্ষরোপণের জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ তিনি অসুস্থবোধ করেন‌ এবং হেলে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কিছুটা সুস্থতাবোধ করায় তাকে নিজ বাসায় নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নেয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‌‌‌‘দুপুরে একটি অনুষ্ঠান শেষে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন কিন্তু উনার হার্টের অবস্থা ততটা ভাল নয় এজন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হলো।’


এবার এনবিআরের প্রথম সচিবের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছাগলকাণ্ডের ঘটনার মধ্যেই নতুন করে এনবিআরের আরেক কর্মকর্তার দুর্নীতির বিষয় উঠে এসেছে। এবার এনবিআরের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

জব্দের আদেশ হওয়া সম্পদের মধ্যে আছে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের ঢাকার একটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠার দুটি প্লট। এ ছাড়া তার ও তার স্ত্রীসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্রও অবরুদ্ধ করেছেন আদালত।

দুদকের সরকারি কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে বলেন, এনবিআরের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। প্রাথমিকভাবে দুদকের অনুসন্ধান দল ঢাকায় তার ফ্ল্যাট, দুটি প্লট ও সঞ্চয়পত্রসহ ১৬ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পেয়েছে। এসব সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার জন্য আজ দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন করেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের জন্য নিজের নামসহ তার আত্মীয়স্বজনের নামে ৭০০টির বেশি হিসাব খোলেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধলব্ধ আয়ের উৎস গোপন করা।

দুদকের পক্ষ থেকে আবু মাহমুদ ফয়সালের সম্পদের বিস্তারিত বিবরণ আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।


ট্রেনে ভারত হয়ে নেপাল-ভুটানে যাওয়ার পথ খুলছে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ-ভারত রেল ট্রানজিট চুক্তির মধ্য দিয়ে ট্রান্স এশিয়ান নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে দেশের রেলওয়ে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করে ভারত নিজেদের ভূখণ্ডে যেতে পারবে। তেমনি বাংলাদেশিরাও ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যেতে পারবে নেপাল-ভুটানে।

প্রস্তাবিত চুক্তিতে ১২টি রুটের কথা বলা হয়েছে, যেসব রুট ব্যবহার করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ‘সেভেন সিস্টার্স’-খ্যাত সাত রাজ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল-ভুটানে যেতে পারা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।

গত বুধবার ধোঁয়াশা দূর করেছেন রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবির ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।

গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারা জানিয়েছেন, নতুন সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্যে উন্মুক্ত হচ্ছে ভারতীয় রেলপথ দিয়ে নেপাল-ভুটান প্রবেশের দ্বার।

নেপাল ও ভুটান যথাক্রমে ১৯৭৬ ও ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি করেছিল। কিন্তু ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে না পারায় সেটি খুব একটা কার্যকর হয়নি। এখন ভারতের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কারণে নতুন করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পূর্বে হওয়া চুক্তি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে।

ভারত-বাংলাদেশ রেল করিডোর নিয়ে নতুন চুক্তি

চলতি মাসের ২২ জুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৩টি ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার এক নম্বর রয়েছে রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুকরণ, ভারতীয় রেল করিডোর নিয়ে নয়া চুক্তি।

এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৭৭ বছর পর রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে পুনরায় ট্রেন সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। যেটি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী চতুর্থ আন্তদেশীয় ট্রেন।

এ ছাড়া এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের কলকাতা থেকে ‘সেভেন সিস্টার্স’-খ্যাত সাত রাজ্যের ১২টি রুটে পণ্য ও যাত্রী চলাচলের সুবিধা।

এ বিষয়ে ভারতীয় রেলওয়ের বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত নিউজ করেছে ভারতীয় প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পরিকল্পনার আওতায় মোট এক হাজার ২৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের ১৪টি সেকশন থাকবে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতরে থাকবে ৮৬১ কিলোমিটার। আর নেপালে ২০২ কিলোমিটার ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকবে ২১২ কিলোমিটার পথ।

পত্রিকাটি বলছে, বাংলাদেশ সরকার দেশের ভেতরে ভারতকে রেলপথ স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নয়াদিল্লির পরিকল্পনা সহজ হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে মোট ৮৬১ কিলোমিটার, নেপালে ২০২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার এবং উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জরিপ চালানো হবে।

ভারতের সঙ্গে এই চুক্তির ফলে ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ রেলওয়ে নেপালেও পণ্য ও যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

প্রস্তাব অনুসারে, ভারত ও নেপালের মধ্যে রেল সংযোগের জন্য অনুমোদিত রুট বিরাটনগর-নিউ মাল জং সেকশনে ১৯০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে। আর গালগালিয়া-ভদ্রপুর-কাজলী বাজার সেকশনে সাড়ে ১২ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে।

এদিকে, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত এই চুক্তির বিরোধিতা করছে দেশের বিরোধী দলগুলো। বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, এই অসম চুক্তিতে ভারত পক্ষই কেবল লাভবান হয়েছে, বাংলাদেশ কিছু পায়নি। আর প্রধানমন্ত্রী যাকে ট্রানজিট বলছেন তা আসলে করিডোর। দেশের অভ্যন্তর দিয়ে অপর কোনো দেশকে করিডোর দেওয়া হলে এর ফল দীর্ঘ মেয়াদে খারাপ হতে পারে।


banner close