বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৮ জুন, ২০২৪ ১৮:০৯

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিমকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

গতকাল সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ শুভেচ্ছা জানান।

সবাইকে ঈদ মোবারক জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঈদুল আজহা শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষায় উজ্জীবিত হই সবাই। নিজেদের আনন্দ যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সমানভাবে ভাগ করি সমাজের পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, এটাই ইসলামের শিক্ষা।’


মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়ল

মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী মুখ্য সচিব পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। আগামী ৫ জুলাই অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছর মেয়াদে এ পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে তার আগের চুক্তির ধারাবাহিকতায় ও অনুরূপ শর্তে আগামী ৫ জুলাই ২০২৪ অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।’

এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে বলেও জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।


মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে চলে যৌন ব্যবসা

৭ বছরে আয় শত কোটি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৪ ২২:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলে কৌশলে তোলা হয় নগ্ন ছবি। শুধু তাই নয়, ফাঁদে পড়া তরুণীদের ভিডিও কলে নগ্ন হওয়া এবং যৌন বিষয়ে বাধ্য করা হতো। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে পরে অনলাইনে চালানো হতো যৌন ব্যবসাও।

এমনি একটি চক্রকে শনাক্ত করে এর প্রধানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫), তার প্রধান সহযোগী ও খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ এবং ভুক্তভোগীদের ফাঁদে ফেলে আয় করা টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহম্মদ আলী মিয়া।

জানা গেছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শত শত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করত এবং ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। এমনকি ভুক্তভোগীদের ভিডিও টেলিগ্রাম গ্রুপে শেয়ার করা হতো। এভাবে দেশি-বিদেশি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকেও নেওয়া হতো টাকা। এভাবে চক্রটি গত সাত বছরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা।

মোহম্মদ আলী মিয়া বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সি তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল‍্যাকমেইল করত এবং জোরপূর্বক তাদের যৌনকর্মে নামতে বাধ্য করত। অনুসন্ধানে এমন ভয়ংকর চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। এই চক্রটি মূলত উঠতি বয়সি তরুণীসহ পারিবারিক ভাঙনের শিকার তরুণী ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিত। প্রাথমিকভাবে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদামতো টাকা ও প্রয়োজন মিটাতো তারা। পরে ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত চক্রটি।

এই চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান এবং তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিলেন। তারা দুজনেই মেডিকেল শিক্ষার্থী। তারা চিকিৎসাবিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সি তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি এবং টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে নানা অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত। গত সাত বছরে তারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়িও। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে।

ফাঁদে ফেলার কৌশল

প্রতারণার ফাঁদ ও নগ্ন ভিডিও তৈরি কৌশল সম্পর্কে সিআইডি প্রধান বলেন, শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, মডেল তৈরি ও ট্যালেন্ট হান্ট শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করত চক্রটি। যারা সাড়া দিতেন তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলত তারা। তারপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে আপত্তিকর ছবি তুলত। সেসব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নগ্ন হয়ে ভিডিও কল বা সরাসরি অসামাজিক কাজে বাধ্য করত তারা।

তিনি বলেন, চক্রটির নিয়ন্ত্রণে ১০টি টেলিগ্রাম গ্রুপের সন্ধান মিলেছে। এসব টেলিগ্রাম গ্রুপে দেশি-বিদেশি গ্রাহকের সংখ্যা তিন লাখের বেশি। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে গ্রাহকরা ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকত। চক্রটি ভিডিও কলের সবকিছু গোপনে ধারণ করে রাখত। এরপর যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হতো। এভাবেই চক্রটির হাতে আধুনিক যৌন দাসীতে পরিণত হয় শত শত তরুণী।

সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশ-বিদেশে চক্রটির রয়েছে শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করে এমএফএস বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। এ ছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করার সব কলা-কৌশলও এই চক্রের জানা। তারা বেনামি কয়েকশ মোবাইল সিম ব্যবহার করছিল। যেগুলোর কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। এ ক্ষেত্রে নিম্নআয়ের মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিত। পরে সামান্য অর্থ দিয়ে তাদের নামে তোলা হতো সিম কার্ড। কন্টেন্ট আদান-প্রদান ও সাবস্ক্রিপশনের জন্য ছিল টেলিগ্রাম প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন পেইড ক্লাউড সার্ভিস। অল্প বয়সি ভয়ানক চতুর এই দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর কাছে টিকটক, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রিটিসহ এখনো জিম্মি কয়েক হাজার নারী।

অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ নগ্ন ছবি ও ২০ হাজার অ্যাডাল্ট ভিডিওর সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।


ঢাকা থেকে সরাসরি বেইজিং ফ্লাইট চলাচল শুরু ১০ জুলাই

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৭ জুন, ২০২৪ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ থেকে চীনের বেইজিং রুটে প্রথমবারের মতো ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে চীনের প্রধান ও পতাকা বহনকারী বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার চায়না। আগামী ১০ জুলাই এই রুটে তারা প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বাংলাদেশ থেকে মূলত ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীরাই নিয়মিত চীনে যাতায়াত করেন।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে এই রুটে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার, বুধবার ও শুক্রবার একটি করে মোট তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ার চায়না। সেপ্টেম্বর থেকে সাপ্তাহিক ফ্লাইট সংখ্যা চারে (প্রতি বৃহস্পতিবার) উন্নীত করা হবে।

বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ মডেলের এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ফ্লাইটের খাবারের জন্য ইতোমধ্যে বিমান ফ্লাইট কেটারিং সেন্টারকে (বিএফসিসি) ফ্লাইটে খাবার সরবরাহের বিষয়টি অবগত করেছে এয়ার চায়না।

এয়ার চায়নার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এয়ারলাইন্সটিতে বোয়িং-৭৩৭, ৭৪৭, ৭৭৭, ৭৮৭, এয়ারবাস- এ৩১৯, এ৩২০, এ৩২১, এ৩৩০, এ৩৫০ এবং চীনের কোমাক বিমান প্রতিষ্ঠানের একটি এআরজে-২১ মডেলসহ মোট ৪০৬টি প্লেন রয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। পাশাপাশি চীনের চায়না ইস্টার্ন ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশিদের চীনে নিয়ে যাচ্ছে।

বেবিচক সূত্রে আরও জানা গেছে, এয়ার চায়নার পাশাপাশি বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স। কিছুদিনের মধ্যে তারাও ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে।


ঈদযাত্রায় ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৮

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এবারের ঈদুল আজহায় সড়ক, রেল ও নৌপথে ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন মারা গেছেন। এতে শুধু সড়কেই প্রাণ গেছে ৪৫৮ জনের। এমন তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ বুধবার পুরানা পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সড়কে সবচেয়ে বেশি ৩০৯টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৫৮ জনের, আহত হয়েছেন ১৮৪০ জন। আর রেলে ২২ দুর্ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪ জন আহত হয়েছেন। এদিকে, নৌপথে ৬ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০ জন আর আহত ৬ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন।

এবার ঈদে দুর্ঘটনায় মৃতের হার গতবারের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেশি বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। পরিবহন খাতে উদাসিনতার কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে বলেও দাবি করেন তিনি। পরে দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ৮ দফা সুপারিশও তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এ সময় বলা হয়, ২০২৩ সালের ঈদুল আজহার যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ, প্রাণহানি ৫৩ দশমিক ১৭ শতাংশ, আহত ২৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে।

এ ছাড়া দুর্ঘটনার শীর্ষে ছিল মোটরসাইকেল। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ১৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত এবং আহত হয়েছে ৫৯৯ জন । যা মোট দুর্ঘটনার ৪২ দশমিক ৭১ শতাংশ, মোট নিহতের ২৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও মোট আহতের ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় ৫১ জন চালক, ১১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৮ জন পথচারী, ৬১ জন নারী, ২৪ জন শিশু, ১৪ জন শিক্ষার্থী, একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, তিনজন শিক্ষক, দুজন মুক্তিযোদ্ধা ও তিনজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার পরিচয় মিলেছে।

মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, দেশে ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ৭ থেকে ৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার তৎপরতা ছিল লক্ষণীয়। তবুও ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ব্যাপকহারে বাড়ার কারণে, এসব যানবাহন হঠাৎ করে জাতীয় মহাসড়কে উঠে যাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়া সড়কে চাঁদাবাজি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহনসহ নানা কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়েছে। একই সঙ্গে সড়কে ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে নিম্ন আয়ের লোকজন ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও খোলা ট্রাকে যাতায়াতে বাধ্য হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

দেশে প্রায় ৯ হাজার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে জানিয়ে এসব হাসপাতালে ঈদের আগে-পরে ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত কতজন রোগী ভর্তি হয়েছে সেই তথ্য জানাতে বিআরটিএর কাছে দাবিও জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সংগঠনের সহসভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, বিশিষ্ট সমাজকর্মী মোহাম্মদ মহসিন প্রমুখ।


শেখ হাসিনার উদ্যোগে প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৪ ২১:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এমপি বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে শেখ হাসিনার যুগান্তকারী উন্নয়নের কারণে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশের প্রায় ১৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’

গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের উপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ে মহল বিশেষ নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। ‌ অথচ সারা বিশ্বে প্রশংসিত শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রথম স্তম্ভ হিসেবে কাজ করেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে তার যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধু কন্যা জানতেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ১% জিডিপি প্রবৃদ্ধির জন্য প্রায় ২% জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি প্রয়োজন। সেই কঠিন কাজটিই শেখ হাসিনা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর কারণে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২১ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। মাল্টিলেটারেল এজেন্সিগুলো এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, বাংলাদেশের মতো অর্থনীতিতে দিনে গড়ে ১২-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকলে ন্যূনতম ৪% জিডিপি লস হয়। বিএনপি-জামাত সরকার এবং পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় প্রতিদিন গড়ে ১৪-১৫ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকতো। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে শেখ হাসিনার সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে এই লোডশেডিং থেকে জাতি মুক্তি পায়। সেই হিসেবে ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে জিডিপির বার্ষিক ন্যূনতম ৪% লস ধরলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকা।’


পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পদের তদন্ত চলছে: আইজিপি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করার কোনো সুযোগ নেই, পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। যাদের অবৈধ সম্পদ থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আজ বুধবার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত হলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সাংবাদিকদের বৈঠক হয়েছে, আশা করি বিষয়টি আলোচনার মধ্য দিয়েই নিরসন হবে।’

পরিমণিকাণ্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইজিপি বলেন, ‘যেকোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, অভিযোগটি প্রমাণ হওয়ার কারণেই সাকলাইনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। পুলিশের ইউনিট প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছিটিয়ে থাকে। পুলিশের থানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনো তালা লাগানো থাকে না। সব সময় থানার দরজা খোলা থাকে, মানুষ সেখানে আসে। মানুষের সমস্যা শোনার জন্য আমরা প্রস্তত থাকি।’

‘সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত আছি। বিল্ডিং এবং জনবল বাড়বে এটা আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়, জনসেবার মধ্য দিয়েই ঋণ পরিশোধ করতে চাই’- বললেন আইজিপি।

এর আগে তিনি চারতলা অস্ত্রাগার ভবন, ছয়তলা মাল্টিপারপাস ভবন ও বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ ছাড়া বড় বয়রা পুলিশ ফাঁড়ি ও মাল্টিপারপাস শেড উদ্বোধন করেন। পরে তিনি পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।

এ সময় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: প্রধান বিচারপতি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আইনের শাসন পাওয়া প্রত্যেক জনগণের অধিকার। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বগুড়া জেলা আদালত চত্বরে আজ বুধবার দুপুরে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে আগত বিচারপ্রার্থীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একটি অনন্য ও দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী উদ্যোগ ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণ। সারা বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় এই ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারই একটি অংশ বগুড়ার এই ন্যায়কুঞ্জ। বগুড়ায় বিচারপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা অনেক। এ জন্য এক হাজার বর্গফুটের ন্যায়কুঞ্জে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি শৌচাগার, একটি স্টোর, একটি দুগ্ধদান কেন্দ্র আছে। যেসব বিচারপ্রার্থী মানুষ এই বগুড়া জজশিপে আসেন তারা যেন আরামে বসতে পারেন, সে কারণেই এই ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজ্জামেল হক চৌধুরী, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিজ্ঞ বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ সদস্য (জেলা জজ) শরনিম আকতার প্রমুখ।


জিয়া খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতেন: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

গ্রেনেড হামলা, মানিলন্ডারিংসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে (তারেক জিয়া) প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করতে সকল প্রকার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি জানান, পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, খুনি জিয়া রক্তাক্ত হাতে খাবার খেতেন এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতেন।

আজ বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মো. আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, খুনি ফারুক-রশিদরা আগে নিজ থেকেই জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে, যেটা জিয়া জানতেন। অথচ জাতির পিতাই মেজর জিয়াকে ১৯৭২ সালে কর্নেল এবং ১৯৭৩ সালে ব্রিগেডিয়ার এবং একই বছরে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির চেয়ারে নিজেকে আজীবন আসীন করে রাখার বাসনা নিয়ে আইয়ুব খানের অনুকরণে সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেন। তিনি যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, তেমনি অবৈধভাবেই বিএনপি সৃষ্টি করেন।

তিনি আরও জানান, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের হাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন।

ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জানান, খুনি জিয়া তো রক্তাক্ত হাতেই খাবার খেতে বসতেন এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মী নিহত হয়। জিয়া ইনডেমনিটি জারি করে জাতির পিতার খুনিদের রক্ষা করে। তাদেরকে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করে। ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর দালাল আইন বাতিল করে সাজাপ্রাপ্ত ১১ হাজার রাজাকার ও আলবদরকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেয়। যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে এনে এবং স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজ ও আলীমকে মন্ত্রী বানায়। স্বাধীনতাবিরোধীদের ছেড়ে দিয়ে তাদের পুনর্বাসন ও মন্ত্রী বানানোর মধ্য দিয়ে জিয়া প্রমাণ করে, সে পরাজিত শক্তির দালাল। জিয়ার সাড়ে ৫ বছরের শাসনামলে ২১টি ক্যু ও পাল্টা-ক্যু হয়। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল তাহেরকে সে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগই স্বৈরাচারের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে। ১৯৯১ সালে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া সরকার গঠন করে। যে তার স্বামীকে অনুসরণ করে যুদ্ধাপরাধী নিজামী ও মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে উপহার দেয় লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা জাতীয় পতাকা। বঙ্গবন্ধুর খুনী রশীদ ও হুদাকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে এমপি বানিয়ে খালেদা জিয়া প্রমাণ করেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তার আত্মার আত্মীয়তা। তিনি আরও জানান, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট দুঃসহ অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। যা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে প্রতিহিংসার জঘন্য কালো অধ্যায় হিসেবে মানুষ মনে রাখবে। ২০০১ সালে কারচুপির নির্বাচনে জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড এবং দুই বছরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দমননীতির ফলে দেশের অবস্থা চরম বিপর্যন্ত ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ছিল। বিএনপি জঙ্গিবাদে মদদ দিয়ে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, বাংলা ভাই ইত্যাদি সৃষ্টি করে দেশব্যাপী সন্ত্রাসী তাণ্ডবলীলা চালায়। আমাকে হত্যার উদ্দেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে। এতে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করে এবং পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। অনেককেই পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। শুধু আমার ওপরেই ১৯ বার হত্যাচেষ্টায় হামলা করেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী এসএএমএস কিবরিয়া এবং সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার ও মমতাজউদ্দিনসহ ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।

একই প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা জানান, একমাত্র আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করেছে। আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করি, দেশের উন্নয়ন করি। জাতির পিতার নীতি অনুসরণ করে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন আমাদের মূল লক্ষ্য। মানুষের জীবনের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাব।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন উত্থাপিত অপর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে। যুক্তরাজ্য থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু আইনগত জটিলতা আছে। ওইসব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়ায় নিরসন করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্যে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একই সঙ্গে চলছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করছে। দ্রুতই ফলাফল পাওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামিদের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ জন পলাতক আসামি লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আব্দুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, মেজর (অব.) নূর চৌধুরী, রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান ও লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামি মাওলানা মো. তাজউদ্দিন, হারিছ চৌধুরী ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবুর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা আছে। পলাতক আসামিরা যে দেশে অবস্থান করছে, সে দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রী ও সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ে সার্বক্ষণিক কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশগুলোর সঙ্গে সরকারের যেকোনো পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে দেওয়ার ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যে সকল পলাতক খুনিদের অবস্থান সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, তাদের অবস্থান খুঁজে বের করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা জানান, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও জানান, বাহিনীগুলোর গঠন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। বর্তমানে তার বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলছে।


আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি মোস্তাফিজ ও ফয়সাল গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৪ ২০:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের কলকাতায় নৃশংসভাবে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলার অন্যতম দুই পলাতক আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী সাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দিরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের গ্রেপ্তারে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক টিম দুপুর থেকে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালায় বলে জানা গেছে।

ডিবি জানায়, নাম-পরিচয় গোপন করে খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে লুকিয়ে ছিলেন গ্রেপ্তার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। তারা পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে তারা ২৩ দিন ওই কালীমন্দিরে ছিলেন।

গ্রেপ্তারের পর খাগড়াছড়ি থেকে দুই আসামিকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। রাজধানীর পূর্বাচলে হেলিকপ্টারে নেমে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার খবর পাওয়া যায়, খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ে লুকিয়ে রয়েছেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম আগেই পাহাড়ে গিয়ে অভিযান শুরু করে। পরে আজ আমরা গিয়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালাই।

হারুন অর রশীদ বলেন, অজ্ঞান করার জন্য সংসদ সদস্য আনারের নাকে ক্লোরোফরম দেন ফয়সাল। আর মোস্তাফিজ আনারকে উলঙ্গ করে চেয়ারে বেঁধে রাখেন। শিমুল ভূঁইয়ার মূল দুই সহযোগী ছিলেন আজ গ্রেপ্তার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, খাগড়াছড়ির পাতাল কালী মন্দির এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। নাম-পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে সেই কালী মন্দিরেই থাকতেন দুজন। তারা ২৩ দিন ওই কালী মন্দিরে ছিলেন। আনারকে হত্যার পর ১৯ মে ফয়সাল ও মোস্তাফিজ দেশে ফেরেন।

১৯ মে রাতে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে কথা বলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। এরপর শাহীন তাদের মাত্র ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপর তারা দুর্গম পাহাড়ের ওই কালী মন্দিরে চলে যান। তাদের দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য-উপাত্ত বের করা হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।

হারুন বলেন, কলকাতার যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়, সেই কিলিং মিশনে ছিলেন সাতজন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিমুল ভূঁইয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা এখন আমাদের মূল কাজ। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় আনব। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল মিলিয়ে মোট নয়জন গ্রেপ্তার হলেন হত্যার ঘটনায়।

পরে গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে রাজধানীর ‍মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ডিবি সূত্র বলছে, সন্দেহভাজন আসামিদের মধ্যে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল এমপি আনার খুন হওয়ার আগে গত ২ মে কলকাতায় যান। তারা দেশে ফিরে আসেন ১৯ মে। এই দুজনকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল ডিবি। দুজনের বাড়ি খুলনার ফুলতলায়। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে চিহ্নিত শিমুল ভূঁইয়ার বাড়িও একই এলাকায় এবং দুজনের ঘনিষ্ট। ফয়সাল ও মোস্তাফিজের কাছে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

গ্যাস বাবুর মোবাইল উদ্ধারে ঝিনাইদহের পুকুরে অভিযান

এদিকে, এমপি আনার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে নিয়ে তার ফেলে দেওয়া মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধারে ঝিনাইদহে চালানো অভিযান শেষ হয়েছে। তবে গ্যাস বাবুর ফেলে দেয়া কোনো ফোন এখনো পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আযমের নেতৃত্বে বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলেদের পুকুরে নামিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ হলেও প্রাথমিকভাবে কোনো আলামত উদ্ধার হয়নি বলে জানা গেছে।

এরইমধ্যে দুপুর ১২ টার দিকে উদ্ধার অভিযান পরিদর্শনে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে ঝিনাইদহে আসেন ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।

অভিযান শেষে ডিবি প্রধান বলেন, এ হত্যায় মোট ৭ জন অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৫ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তারা নদী, সাগরে বা মাটির নিচে যেখানেই থাকুক না কেন আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না এবং অভিযুক্ত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গ্যাস বাবুকে নিয়ে তার ফেলে দেওয়া মোবাইল ফোন তিনটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ সময় এমপি আনার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির সহকারী কমিশনার (ডিবি) মাহফুজুর রহমান, ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম উল আহসানসহ পুলিশ কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।

একদিন আগে গত মঙ্গলবার ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, বাবু আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে মোবাইল ফোনগুলো জলাশয়ে ফেলে দেয়ার কথা বেরিয়ে আসে। বাবুর জবানবন্দি অনুযায়ী, এক নেতার নির্দেশে তিনি ফোনগুলো আশপাশের কোনো নালা বা পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পানি থেকে আলামত উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও জেলেদের কাজে লাগানো হবে। স্থানীয় পুলিশ জলাশয়গুলো নজরদারিতে রেখেছে, যাতে কেউ ফোন সরিয়ে ফেলতে না পারে।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে বাবু দাবি করেন, মোবাইল ফোনগুলো হারিয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনায় জিডি (সাধারণ ডায়রি) করেছেন। পরে নতুন তথ্য উঠে আসে, ফেলে দেয়া ওই ফোনগুলো দিয়েই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে বহুবার কথা বলেছেন বাবু। অসংখ্য মেসেজ ও তথ্য আদান-প্রদান করেছেন। তাই সেগুলোতে ডিজিটাল তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, তদন্ত চলমান থাকায় এখনই কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা বলা যাচ্ছে না। তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না। আবার কোনো দোষী ব্যক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। ভারতের কাছেও শাহীন মোস্ট ওয়ান্টেড। তাই ভারত চেষ্টা করবে শাহীনকে ফিরিয়ে আনার জন্য।

এর আগে গত ৬ জুন রাতে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে গ্যাস বাবুকে আটক করে ডিবির একটি দল। বাবু ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। আনার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শিমুল ভূঁইয়ার নিকটাত্মীয় এই বাবু।

প্রসঙ্গত, এমপি আনার চিকিৎসা জন্য গত ১২ মে দুপুরে দর্শনা-গেদে সীমান্ত হয়ে ভারতের কলকাতায় যান। প্রথম দু’দিন যোগাযোগ থাকলেও ১৪ মে থেকে পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজ পাচ্ছিলেন না। পরে আনোয়ারুলের পরিবার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। পরে ভারতের দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় বাংলাদেশ উপ- হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর থেকে ওই সংসদ সদস্যের খোঁজে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। সংস্থাটি জানায়, দিল্লি ও কলকাতা হাইকমিশনের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পরই তার খোঁজে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। পরে গত ২২ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনসের বিইউ ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়:

কুয়েতে জনশক্তি রপ্তানিতে রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আজ বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন কুয়েতে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন করে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

কুয়েতে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন আজ বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, নতুন রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির দিকনির্দেশনা কামনা করেন। এ সময় কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন করে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।


জবাবদিহি নিশ্চিতে জনআস্থা তৈরি করবে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ জুন) সকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরীন।

অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের ক্ষেত্রে জনগণের আস্থা তৈরি করবে। সুশাসনের ক্ষেত্রেও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অবদান রাখবে। এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এক ধরনের প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকার প্রকাশ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দালিলিক প্রমাণ থাকছে। এ বিষয়গুলো আরও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বিষয়গুলো তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রচার করে আমরা বাইরে নিয়ে আসতে চাই। সুশাসনের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপগুলো আরও বেশি জনসাধারণকে জানানো দরকার। তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা আস্থা তৈরি হবে যে সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ প্রক্রিয়াগুলো শুরু করেছে।’

সভাপতির বক্তব্যে তথ্য সচিব বলেন, ‘জনগণের কাছে সরকারের একটা প্রতিশ্রুতি আছে, সেটি হলো নির্বাচনি ইশতেহার। আগামী পাঁচ বছর দপ্তর-সংস্থা যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি করবে, সেটিতে নিশ্চয়ই এ ইশতেহার মূল্যায়ন করা হবে। এ ছাড়া এসডিজি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রতিফলন বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে থাকবে। সরকারি কর্মসূচিগুলো বাইরে ফোকাস করা, জানান দেওয়া, মানুষের সচেতনতা তৈরি করা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বড় দায়িত্ব। বার্ষিক কর্মসম্পাদনের মাধ্যমে এ দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে হবে।’

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা প্রধানরা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এবং আওতাধীন ১৩টি দপ্তর-সংস্থার পক্ষে সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা প্রধানরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।


জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মারা যাবেন। কাজেই তিনি যেন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে না হয়ে পড়েন সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ বুধবার এসএসএফের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে আয়োজিত দরবারে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কিন্তু আমাকে আর গুলি-বোমা লাগবে না, এমনিতেই শেষ হয়ে যাব। কাজেই এরাই আমার প্রাণ শক্তি। এটুকু মনে রাখতে হবে। একটি বিষয় আমি নিশ্চই বলবো, আমরা রাজনীতি করি। আমার আর কোনো শক্তি নেই। শক্তি একমাত্র জনগণ। সেই জনগণের শক্তি নিয়েই আমি চলি।’

তিনি বলেন, ‘কাজেই জনবিচ্ছিন্ন যাতে না হয়ে যাই, আমি জানি এটা কঠিন দায়িত্ব। তারপরেও এই দিকেও নজর রাখতে হবে যে এই মানুষগুলোর জন্যইতো রাজনীতি করি। মানুষদের নিয়েই তো পথ চলা। আর যাদেরকে নিয়েই দেশের মানুষের কাজ করি তাদের থেকে যেন কোনোমতে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যাই।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কিন্তু আমাকে আর গুলি বোমা লাগবে না এমনিতেই শেষ হয়ে যাব। কাজেই এরাই আমার প্রাণ শক্তি। এটুকু মনে রাখতে হবে।’ এটা সবসময়ই এসএসএফের সদস্যদের তিনি বলেন এবং মাঝে মধ্যে রাগও করেন। কাজেই এই বিষয়গুলো একটু সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখা দরকার। কারণ, তিনি যখন সরকারে ছিলেন না এই দেশের মানুষ এবং দলীয় লোক তারাই তার পাশে ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি এই সময় এক দরিদ্র রিকশাওয়ালা উপার্জনের সামান্য জমানো অর্থে তাদের দু’বোনের ঢাকায় যেহেতু কোনো বাড়ি নেই এবং ধানমন্ডির বাড়িটিও তারা দান করেছেন সেজন্য তার নামে একটি জমি কেনার এবং তার কাছে হস্তান্তর করতে চাওয়ার একটি ঘটনার উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকবার তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে শোনে নাই। সেই রিকশাওয়ালা মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সেই দলিলটা তার কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে তিনি নিজে সেখানে গিয়ে তাদের বাড়ি তৈরি করে তার স্ত্রীর হাতে দলিল দিয়ে বলেন, ‘এটা মনে করবেন আমারই বাড়ি, এখন আপনারা থাকবেন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর খালেদা জিয়ার জন্য দুইটি বাড়ি, গাড়ি, ক্যাশ টাকা অনেক কিছু রেখে যান।’

জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘এই সাধারণ মানুষগুলোর জন্যই আমার রাজনীতি, এদের ভাগ্যের পরিবর্তন ও জীবনমান উন্নত করাই আমার লক্ষ্য। তাই এইসব মানুষগুলোর কাছ থেকে আমি বিচ্ছিন্ন হতে পারি না। কারণ, এরাই আমার চলার সব শক্তি জোগায়। এটা সকলকে মনে রাখার জন্য আমি অনুরোধ করছি।’

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

বাঙালি জাতি যাতে বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসএসেএফের প্রতিটি সদস্য সার্বক্ষণিক সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রশংসনীয় কর্মদক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে এবং বাংলাদেশে আগত বিদেশিরাও তাদের নিরাপত্তা প্রদানের প্রশংসা করেছেন।

সরকার প্রধান তার সরকারের বেকারত্বের হার ৩ ভাগে নামিয়ে আনা, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জে হাতের নাগালে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়া, সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ ও হতদরিদ্রদের সাহায্য প্রদান, গৃহহীণ-ভূমিহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর-বাড়ি প্রদানসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে হত দারিদ্রের হার ২৫ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ৫ দশমিক ৬ ভাগে এবং দারিদ্রের হার ৪১ ভাগের বেশি থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে আনার সাফল্য তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্রের হার ভবিষ্যতে আরও কমিয়ে আনার এবং অতিদারিদ্র একেবারে শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা না এলে তার সরকারের প্রচেষ্টায় দারিদ্রের হার আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।’

তার সরকারের আমলে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার উল্লেখ করে তিনি বলেন, যতক্ষণ আমার নিশ্বাস আছে আমার এটাই চেষ্টা যে বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে যেন আরও উন্নত সমৃদ্ধ করে যেতে পারি। বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে আমাদেরকেও সেভাবেই চলতে হবে।

গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে বার বার বেঁচে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছেন তাদের জীবনও ঝুঁকিতে পড়ছে। আল্লাহ আমাকে হয়তো একটা কাজ দিয়ে পাঠিয়েছেন ততক্ষণ আমি বেঁচে থাকবো। কিন্তু আমার সঙ্গে যারা কাজ করে এবং যারা আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাদের জন্য আমি চিন্তায় থাকি। কারণ, যতবার আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে প্রতিবারই আমার কিছু না কিছু নেতা-কর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তারা ‘মানববর্ম’ রচনা করে আমাকে গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা করেছেন। কাজেই এসএসএফ যেহেতু আমার সবচেয়ে কাছে থাকে, আমি সবসময় তাদেরকে নিয়ে আমি চিন্তিত।

কাজেই তিনি যখন নামাজ পড়েন তখন পরিবারের সদস্য, দেশবাসী এবং তার আশপাশে যারা থাকেন এবং নিরাপত্তায় এসএসএফসহ যারা নিয়োজিত থাকেন তাদের জন্যও দোয়া করেন বলেও জানান। তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবার জন্য ‘২০২১ থেকে ২০৪১’ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই ব-দ্বীপকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করতে ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিবর্তন হয়েছে সেই পরিবর্তনের ধারা বজায় রেখেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

এসএসএফের জন্য যা যা করণীয় তার সরকার করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’৯৬ সালে সরকারে আসার পরই তিনি তাদের তেজগাঁওয়ে শ্যুটিং প্র্যাকটিসের জায়গা করে দেন। এখন আধুনিক ও উন্নতমানের সুটিং রেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তাদের অফিসার্স মেস থেকে শুরু করে সবকিছুই কিন্তু ধীরে ধীরে তার হাতে গড়া। লোকবলও তিনিই বৃদ্ধি করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়ি থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জামাদি যা যা দরকার সবই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শুধু এসএসএফ নয় সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নেই তার সরকার কাজ করেছে। এমনকি শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় যা যা দরকার তার ব্যবস্থা ও করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি এসএসএফের সবাইকে বলবো যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রদানে সবসময় পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি প্রত্যেকেই দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলি নিয়েই নিজেদেরকে তৈরি করে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, যেটা তারা করে যাচ্ছেন তারপরও তিনি সবসময় এই কথাগুলো তাদের মাথায় রাখার আহ্বান জানান। কারণ, নিজের ভেতর যদি দৃঢ়তা না থাকে, সততা না থাকে এবং নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের সেই কর্তব্যনিষ্ঠা না থাকে তাহলে সফলতা পাওয়া যায় না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এসএসএফ এমন একটি সংগঠন যেখানে আমাদের সব বাহিনীরই প্রতিনিধি রয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে শুরু করে নৌবিমান ও সেনাসহ সব বাহিনীর সমন্বয়ে এই বাহিনী গঠিত। একই সঙ্গে কাজ করার এটাও একটা অভিজ্ঞতা। যে অভিজ্ঞতা আমি মনে করি আগামী দিনেও আমাদের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযানের সাফল্য সেটাও ধরে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। নতুন যারা কাজ করতে আসেন তাদের মধ্যে এই অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত হয় এবং আমি দেখেছি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে প্রত্যেকেই স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী এসএসএফের সকল সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া আশীর্বাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও পেশাগত মান বিচারে এই বাহিনী হয়ে উঠুক একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী।


গঙ্গা-তিস্তা নিয়ে ভারত সরকারকে প্রশ্ন করার পরামর্শ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৪ ১৮:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

গঙ্গা ও তিস্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আপত্তির বিষয়টি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’ আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে সেটি ভারত সরকারকে করলে ভালো হয়। তারাই এর সঠিক উত্তর দিতে পারবে।’

আজ বুধবার (২৬ জুন) ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডের সঙ্গে সাক্ষাতের পর গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এ পরামর্শ দেন তিনি।

মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গা ও তিস্তার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিমতের কথা বলেছেন। রাজ্য সরকারের কারণে বাংলাদেশ এর আগেও তিস্তার পানি পায়নি। এবারও বাধা হয়ে সামনে আসছে রাজ্য সরকার। এমন পরিস্থিতিতে কোনো আশা দেখেন কি না?

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিষয় তাদের আভ্যন্তরীণ। আমাদের সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা স্মারক করে বা চুক্তি করে। ঐকমত্য হয়, দ্বিমত হয়। সেটা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি মনে করি, এ প্রশ্নটা ভারত সরকারকে করলে ভালো হয়। তারাই এটার সঠিক উত্তর দিতে পারবে। কারণ, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’

গঙ্গা চুক্তি নবায়ন নিয়ে তিনি বলেন, গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চুক্তি না হলেও এটি অটোমেটিক চলবে। চুক্তিতে সেভাবে বলা আছে, আগে চুক্তিটি সেভাবে করা আছে। তবে আমরা নবায়ন নিয়ে আলোচনা করছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত একটি কারিগরি দল বাংলাদেশে যাবে। কবে নাগাদ কারিগরি দল আসতে পারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘টেকনিক্যাল কমিটি আসতে তো একটু সময় লাগবে। মাত্র আমরা ঘুরে এলাম। টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করতে হবে।’

ভারতের সঙ্গে পুনরায় বন্ধ রেল যোগাযোগ চালুর বিষয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে তার জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ তো আছে। ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ। তারপর উত্তরবঙ্গ-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ। ১৯৬৫ সালের আগে অনেক বেশি রেল যোগাযোগ ছিল এবং ৬৫ সালে যুদ্ধের পর এ রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে চালু করার কাজ করছি।

তিনি বলেন, শুধু ভারতের সঙ্গে হচ্ছে তা নয়, আমরা নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও রেলে এবং গাড়িতে করে যেতে পারি সে নিয়েও আলোচনা করছি। আমরা আঞ্চলিকভাবে যেন যোগাযোগ বাড়াতে পারি, সে নিয়ে আলোচনা করছি।

আজ ভোরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নুরুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনার কাছে খবরটি শুনলাম। আমাকে এটা যাচাই করতে হবে। তবে একটুকু বলতে পারি আমরা এবারও আলোচনা করেছি (দিল্লি সফরে) যাতে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নেমে আসে। সীমান্ত হত্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আশা করি আস্তে আস্তে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে এবং এক সময় শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলটির অন্য নেতারা চুক্তি আর এমওইউর মধ্যে কোনো পার্থক্য বোঝেন না বলে অভিযোগ করেন ড. হাছান।

তিনি বলেন, যারা চুক্তি আর সমঝোতার বিষয়টি বোঝে না তাদের বিষয়ে কি জবাব দেব, সেটি আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি, সমঝোতা হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সঠিকভাবে রাখতে পারেনি। বিএনপি কারণে-অকারণে সরকারের বিরোধিতা করে। যে সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে, সেগুলোর সবগুলো বাংলাদেশের স্বার্থে হয়েছে।


banner close