আজ রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণের সময়ে ঢাকা-৯ আসনের প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। শীতের সকালে শুরুতে ভোট দিতে লোকজন কম এলেও ৯টার পর থেকে ভোটারদের বেশ উপস্থিতি দেখা গেছে। এই আসনের বাসাবো, সবুজবাগ, মান্ডা, মুগদা ও মানিকনগরের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিচ্ছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও ভোটাররা বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পুরুষের পাশাপাশি মহিলা ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এবারের ভোটারদের মধ্যে একটা বড় অংশ হচ্ছে জীবনের প্রথমবারের ভোটার। প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পেরে এই ভোটারদের মধ্যে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। বাসাবো এলাকা থেকে শহীদ জিয়া বাসাবো উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসেছেন রহমান মুক্তাদির। প্রথমবার ভোট দিতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে তাকে।
এদিকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী খিলগাঁও গার্লস স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
পরে সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আসনের কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা আশা করবো, ‘এই ধারা অব্যাহত থাকবে। যারা ভোট দিতে এসেছেন তারা সুষ্ঠুভাবেই এখানে ভোট দিতে পেরেছেন।’জয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘জয়-পরাজয় নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করতে চাই না। এটা নির্ভর করবে ফলাফলের ওপর। তবে আমরা আশাবাদী। কারণ গত পাঁচ বছরে আমরা যেসব কাজ করেছি, মানুষ তার মূল্যায়ন করবে।’
এই আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী ছাড়াও আরও যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন- জাকের পার্টির মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ, জাসদের নিলাঞ্জনা রিফাত, বিএনএমের মোহাম্মদ শফিউল্লাহ চৌধুরী, গণফ্রন্টের তাহমিনা আক্তার, জাতীয় পার্টির কাজী আবুল খায়ের, ইসলামী ঐক্যজোটের লোকমান শেখ ও এনপিপির মোহাম্মদ কফিল।
ঢাকা- ৯ আসনের ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৪৯,৯৫৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২২৮,৩৬৪ জন, নারী ভোটার ২২১,৫৮৭ জন এবং হিজড়া ভোটার ৫ জন।
দেশের চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সব পর্যায়ে পূর্বপ্রস্তুতি ও সচেতনতা তৈরির জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার ফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে পর পর দুইটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প দুইটির মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭ দশমিক ৭ ও ৬ দশমিক ৪। ফলে দেশ দুটি বেশ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশেও একই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা অঞ্চল উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এ অবস্থায় ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সব পর্যায়ে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বেশকিছু ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ অনুযায়ী ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ করা; ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনগুলোর সংস্কার ও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা; সব বহুতল ও বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা এবং ইউটিলিটি সার্ভিসগুলো যেমন- গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইনের সঠিকতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া ভূমিকম্প চলাকালীন সময়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি পর্যায়ে বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত মহড়া অনুশীলন ও প্রচারের ব্যবস্থা করা এবং জরুরি টেলিফোন নম্বর যেমন ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ, হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি নাম্বারসমূহ ব্যক্তিগত পর্যায়ের পাশাপাশি সব ভবন বা স্থাপনায় সংরক্ষণ করা এবং তা দৃশ্যমান স্থানে লিখে রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
অধিদপ্তর দুর্যোগকালীন সময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ভলান্টিয়ার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য সরঞ্জামাদি যেমন- টর্চলাইট, রেডিও (অতিরিক্ত ব্যাটারিসহ), বাঁশি, হ্যামার, হেলমেট/কুশন, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী, ফার্স্ট এইড বক্স, শিশু যত্নের সামগ্রী ইত্যাদি বাসা-বাড়িতে নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা যাতে ভূমিকম্প পরবর্তীতে আটকা পরলে তা ব্যবহার করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা যায়।
সব পর্যায়ে তদারকি সংস্থার কার্যক্রমে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে।
এ ছাড়া যে কোনো তথ্যের জরুরি প্রয়োজনে মেবাইল নম্বর- ০১৭২২৮৫৬৮৬৭ ও হটলাইন নম্বর ১০২-তে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সাধারণ জনগণ এবার স্বস্তিতে ও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া ঢাকায় কোনো ষড়যন্ত্রের হুমকি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, সরকারের বিভিন্ন জনমুখী উদ্যোগ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে জনগণ এবার স্বস্তিতে ঈদযাত্রা করতে পারছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে ও ভালোভাবে ঈদযাত্রা করতে পারেন এবং ঈদ শেষে নিরাপদে ঢাকায় ফিরে আসতে পারে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজধানীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সবাই ছুটি ভোগ করছেন। কিন্তু পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কিন্তু ছুটিতে যাচ্ছে না।’
‘রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেন সুসংহত থাকে- সে লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য তারা ধন্যবাদ প্রাপ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানীতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
ফাঁকা ঢাকায় কোনো ষড়যন্ত্রের হুমকি আছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘মহান আল্লাহর রহমতে এ ধরনের কোনো ষড়যন্ত্রের হুমকি নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো ষড়যন্ত্রের হুমকি থাকে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো। জনগণ সাথে থাকলে ও মোকাবিলা করলে কেউ কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।’
পরিদর্শনকালে রাজধানীর বাস টার্মিনাল, প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্ট যানজটমুক্ত রাখতে ট্রাফিক বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। তাছাড়া তিনি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাসভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
ঈদুল ফিতরের দিন দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় খুব সামান্য বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা উল্লেখ করার মতো না।
আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক ইউএনবিকে এমন তথ্য দিয়েছেন।
এ বছর বাংলাদেশে রোজা শুরু হয়েছে ২ মার্চ। সে হিসাবে আগামীকাল রোববার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে রোজা হবে ২৯টি, আর ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে সোমবার। সোমবার চাঁদ দেখা গেলে ৩০ রোজাই পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
ঈদের দিনে বৃষ্টি হবে কিনা; জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় খুব সামান্য বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’
‘সেটা খুবই সামান্য। আর দেশের অন্যান্য বিভাগে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে মনে রাখবেন, অনেক সময় স্থানীয়ভাবে বজ্রমেঘ তৈরি হয়। তবে এ নিয়ে আগে কিছু বলা যায় না। বজ্রমেঘ তৈরি হয়ে স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত তৈরি হতে পারে,’ বলেন এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি বলেন, ‘এ জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের দৈনিক পূর্বাভাস দেখতে হবে। চাঁদ না দেখা বলা যাচ্ছে না, ঈদ সোম, নাকি মঙ্গলবার হবে। সে কারণে সবাইকে দৈনিক পূর্বাভাসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তাতে বৃষ্টিপাতের খুব একটা সম্ভাবনা নেই।’
তার ভাষ্য, ‘ঈদের দিন আশি শতাংশই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সম্ভাবনা আছে।’
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সোমবারের (৩১ মার্চ) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এদিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এরপর বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনে চারদিনের আনুষ্ঠানিক সফর শেষে দেশের উদ্দেশে বেইজিং ত্যাগ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এয়ার চায়নার একটি বাণিজ্যিক বিমান আজ শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৫৭ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চিফ প্রোটোকল অফিসার হং লেই বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।
বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৭ মার্চ চীনের হাইনান প্রদেশে আয়োজিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দেন । সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
তিনি টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ ২.০ উৎপাদন ও বাজার সুযোগ এবং সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা এবং তিন শূন্যের বিশ্ব - এসব বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তিনটি গোলটেবিল বৈঠকেও যোগ দেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২৯ মার্চ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিশ্বকে বদলে দিতে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ শনিবার বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণে এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু মাত্র শেখার জায়গা নয়, এটি স্বপ্ন দেখারও জায়গা।’
স্বপ্ন দেখতে পারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তা ঘটবেই। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে তা কখনও ঘটবে না।’
শিক্ষার্থীদের অতীতের দিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে, কেউ না কেউ আগে তা কল্পনা করেছিল।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,‘কল্পনা যে কোনো কিছু থেকে বেশি শক্তিশালী।’
তিনি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে অদ্ভুত এবং অকল্পনীয় বিষয়ে স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করেন, যদিও অনেক সময় এটি অসম্ভব মনে হতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘কিন্তু, মানবসভ্যতার যাত্রা হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা। সেটাই আমাদের কাজ। আর আমরাই তা করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিলের সভাপতি হে গুয়াংচাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট গং চিহুয়াং অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার সকালে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন।
বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এ উপলক্ষে সেখানে বক্তৃতা করেন। চার দিনের চীন সফর শেষে আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের চেয়ারম্যান হে গুয়াংচাইসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে ৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বিতরণ করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে ৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ৭৪৫ টি শহীদ পরিবারের মাঝে এবং ৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা ৫ হাজার ৫৯৬ জন আহত ব্যক্তির মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিনিয়ত অনেক ব্যক্তি আন্দোলনে যোদ্ধা না হয়ে বা আন্দোলনে কোনো সম্পৃক্ততা ছিলনা এমন ব্যক্তিও এমআইএস ভেরিফাইড ও নকল কাগজপত্র করে নিয়ে ফাউন্ডেশনে অনুদানের জন্য আবেদন করছে। এসব প্রতারণা এড়াতে ও কাগজপত্রের অপর্যাপ্ততার কারণে অনুদান দিতে সময় লেগে যাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে ফাউন্ডেশন প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনদের অবগত করছে এবং এ বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা অবলম্বনে তাগিদ দিচ্ছে।
বাকি শহীদ পরিবারগুলোর নমিনি সংক্রান্ত জটিলতা বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে অনুদান দেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার শহীদ ‘আকাশ বেপারী’ এর মতো অনেকের কাগজপত্রের অপর্যাপ্ততার জন্য অনুদান দেওয়া সম্ভব হয়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের বেসরকারি ভাবে চাকরি দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যোগ্যতা অনুযায়ী দেশীয় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিতে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধাদের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানান, ফাউন্ডেশন সরকারের কাছ থেকে ১০০ কোটি ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে ১০ কোটিসহ মোট ১১০ কোটি টাকা পেয়েছে। যার মধ্য থেকে ইতোমধ্যে ৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বিতরণ হয়ে গেছে। ফাউন্ডেশনের পরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য এপ্রিল থেকে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা/ব্যাংক/কোম্পানিদের ডোনেশন দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা নগরীর নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-কে বাড়তি বেগ পেতে হয়। তাই বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবার পুলিশকে সহায়তা করতে প্রথমবারের মতো বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীকে ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনীটি।
এবার ‘অক্সিলারি ফোর্সে’ ৪২৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে ইতোমধ্যে ৪২৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, বিপণিবিতান ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে কাজও শুরু করেছেন। নগরীর নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যদের তারা সহযোগিতা করবেন।
তবে কারা ‘অক্সিলারি ফোর্স’ নিয়োগ পেয়েছেন তাদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেছিলেন, ধানমন্ডিতে এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা প্রতিরোধে এগিয়ে আসা পাঁচ নির্মাণশ্রমিককে ‘অক্সিলারি ফোর্সে’ নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, তাদেরকে আমরা ‘অক্সিলারি ফোর্সে’ যুক্ত করে নেব।
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল সোনার দাম। নতুন করে প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনার (২২ ক্যারেট) দাম ১ হাজার ৭৭৩ টাকা বেড়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা হয়েছে। আজ শনিবার থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।
শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ মূল্য বৃদ্ধির তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।
নতুন মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৫৮৬ টাকা।
শত শত বিস্তৃত নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীন থেকে পঞ্চাশ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার বেইজিংয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রী লি গোইয়িং-এর সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস চীনের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে বলেন, চীন পানি সমস্যার সমাধানে বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে।
চীনা মন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের যে সমস্যা রয়েছে, আমাদেরও সেই একই সমস্যা। তাই, যদি আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেন, তাহলে আমরা খুশি হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ অঞ্চল। আমাদের দেশ শত শত নদীর পানি দিয়ে ঘেরা। পানি আমাদের জীবন দেয়, তবে কখনো কখনো এটি শত্রুতে পরিণত হয়। এখন জনসংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, নদী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কোনভাবে যেন আমাদের পরিবেশের ক্ষতি না হয়।’
চীনকে পানি ব্যবস্থাপনার মাস্টার হিসেবে অভিহিত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে এবং তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পানি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাছ থেকে শেখার জন্য এখানে এসেছি। কীভাবে আমরা পানি সম্পদকে জনগণের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারি।’
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উন্নয়নের চাহিদার ফলে নদীর তীরবর্তী ভূমিগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, একই চাহিদা ভারতের উজান অঞ্চলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া পলি জমার কারণে নদীগুলোর মাঝখানে নতুন ভূমি তৈরি হচ্ছে, যা কখনো কখনো নদীগুলোর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এবং তাদের মৃত্যু ঘটায়।
চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রী স্বীকার করেন যে চীন ও বাংলাদেশ পানি ব্যবস্থাপনায় একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তিনি বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বাংলাদেশের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, চীনও একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ জনগণ বন্যাপ্রবণ এলাকায় বসবাস করে, যা দেশটির জন্য পানি ব্যবস্থাপনাকে জটিল করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট শি চীনের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছেন, যা দেশটি পানি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে ব্যবহার করছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়নে আমরা আপনাদের সহায়তা চাই।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সমস্যা শুধু একটি নির্দিষ্ট নদীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পুরো ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বিশেষভাবে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও ঢাকার চারপাশের দূষিত পানি পরিষ্কারের বিষয়ে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বর্তমানে চীনে চার দিনের সফরে রয়েছেন। সেখানে তিনি চীনা নেতৃবৃন্দ ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বাসস
অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন বিএনপি'র চেয়ারপারর্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা ঢাকায় এবং নিজ নিজ এলাকায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় ঈদ করবেন। ঈদের দিন প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে মহাসচিব শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। এর আগে ঈদের দিন সকালে তিনি দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি'র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়েরুল কবির খান বার্তা সংস্থা বাসস'কে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঈদ উদযাপনকালে লন্ডনে থাকবেন। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। অন্য নেতারা সবাই ঢাকায়ই থাকবেন।
এছাড়া, অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে যান। সেখানে বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধু, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও তিন নাতনির সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন তিনি।
এর আগে, ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তখন তিনি তিন মাস তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করেন। এরপর দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করা হয়নি তার।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারি মাসে লন্ডনে আসেন বেগম খালেদা জিয়া। ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাসায় ফেরার পর গত দুই মাসে খালেদা জিয়াকে আর হাসপাতালে নিতে হয়নি। কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হলে দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বাসায় গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বেগম খালেদা জিয়া দ্য ক্লিনিকের অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের অধীনে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের সদস্যরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আরো বলেন, তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের পরামর্শে ঈদের পর তিনি এপ্রিলের যেকোনো দিন দেশে ফিরতে পারেন। তবে পুরো বিষয়টি মেডিকেল টিমের অনুমতির ওপর নির্ভর করছে। তারেক রহমানও শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে উদ্দেশ্যমূলক মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ সময় কারাবন্দী করে রাখে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়ার আবেদন অগ্রাহ্য করে চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম হয়। আইনি লড়াইয়ে তিনি সব মামলা মোকাবিলা করছেন। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতও তার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দায়ের করা মামলাগুলোকে হয়রানিমূলক বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘ঐতিহাসিক’ চীন সফরের সময় চীন সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশ ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে।
ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশের বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে, যা প্রধান উপদেষ্টা বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানোর পর এসেছে।
চীন আরও মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান, চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে আরও ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ প্রদানের পরিকল্পনা করেছে। বাকি অর্থ অনুদান ও অন্যান্য ঋণ সহায়তা হিসেবে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর’।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, এই সফর বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময়, অধ্যাপক ইউনূস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বাংলাদেশে চীনা বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের জন্য ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়ার অনুরোধ জানান।
প্রেসিডেন্ট শি নিশ্চিত করেন যে, চীনা কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন কেন্দ্র বৈচিত্র্যময় করতে চাইলে বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য তিনি উৎসাহিত করবেন, জানান আশিক চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘এই সফর অনেক চীনা কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে রাজি করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি কেবল সময়ের ব্যাপার’।
আজ শুক্রবার অধ্যাপক ইউনূস এবং আশিক চৌধুরী বেইজিংয়ে বিশ্বের কিছু বৃহৎ চীনা কোম্পানিসহ ১০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে বাংলাদেশে উৎপাদন খাতে বিশেষ করে উন্নত টেক্সটাইল, ওষুধশিল্প, হালকা প্রকৌশল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়। তারা তিনটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বক্তব্য রাখেন।
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি’।
যৌথ বিাহিনীর অভিযানে গত ৭ দিনে ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২০ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, একাধিক মামলার আসামি, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামি এবং মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ১০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪৩টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশী ও বিদেশী অস্ত্র, পাসপোর্ট, চোরাই মোবাইল ফোন, ট্যাব, সিমকার্ড, স্বর্ণালংকার, ট্রলার, মোটরসাইকেল, ট্রাক, ড্রেজার, ভেকু, এক্সক্যাভেটর, ডাম্পার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিট অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
এসব যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, একাধিক মামলার আসামি, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামি এবং মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য গ্রেপ্তারদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়াও, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে নির্বিঘ্নে সড়কে যান চলাচল নিশ্চিত করণ ও টিকিট কালোবাজারি রোধকল্পে সেনাবাহিনী বিশেষ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোন সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানিয়েছে আইএসপিআর।