জাতীয় সংসদের ২৫তম ও ২০২৩ সালের পঞ্চম অধিবেশনের শুরুতে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের কার্যপ্রণালীবিধির ১২ (১) বিধি অনুযায়ী সভাপতিমণ্ডলীর নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন, মো. আব্দুস শহীদ, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, তানভীর শাকিল জয়, কাজী ফিরোজ রশীদ ও বেগম নার্গিস রহমান।
সংসদে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশনে সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্যরা নামের অগ্রবর্তিতা অনুযায়ী সভাপতিত্ব করবেন।
আজ বিকেল ৪টা ৬ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অধিবেশন শুরু হয়েছে। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অধিবেশন শুরু হয়।
সাভারের আশুলিয়ায় শারমিন শিলা ওরফে ‘ক্রিম আপা’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে ঢাকার সাভার থেকে আশুলিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
সন্তানদের দিয়ে টিকটক বানিয়ে ফেসবুকে দেওয়ার অভিযোগে বুধবার (৯ এপ্রিল) তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
জানা যায়, টাকা আয়ের জন্য কখনো মাথার চুল ন্যাড়া করে আবার কখনো ভারী কানের দুল লাগিয়ে টিকটক বানিয়ে সেই ভিডিও ফেসবুকে দেন শারমীন শিলা। এছাড়াও গায়ের রং ফরসা করার ক্রিম বিক্রি করায় ফেসবুকে ‘ক্রিম আপা’ বা ‘কিরিম আপা’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরো ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মতৎপরতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, আরও বাড়বে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যেন রোধ হয় সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। যারা পরিস্থিতির অবনতি করতে চায়, আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও উন্নতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরও অন্তত ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্র প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে অস্ত্র উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। অস্ত্র বাইরে থাকলে কিছুটা হুমকি থাকবেই।
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্রিমিনালদের হ্যান্ডওভারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। এই চুক্তির আন্ডারে হয়তো তাকে আনার চেষ্টা করা হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধের কোনো শঙ্কা নেই।
ইন্টারপোলে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আপডেট নিয়ে তিনি বলেন, ইন্টারপোলের আপডেটটা আগে যা আছে ওই অবস্থায় আছে।
ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যারা লুটপাট করেছে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদেরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা কার আত্মীয় কার স্বজন এসব কোনকিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে না। যে অন্যায় করেছে তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
মব জাস্টিসের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা অনেক কমে এসেছে। সবার প্রতি একটাই অনুরোধ করেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। আর আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চাইলেই পুলিশ অ্যাকশন নেবে। পুলিশ কোনো মব জাস্টিস ভয় পায় না।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনতাই সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা ছিনতাই করে নিচ্ছে, তাদের কিন্তু আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এগুলোর ক্ষেত্রে আপনারা সত্যি ঘটনা যেটা, সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। অনেক সময় পুলিশের অ্যাকশন নিতে দেরি হয়। এতে আমাদের অনেক সংকট রয়ে গেছে। এদের গাড়ির কিন্তু অনেক সংকট। অনেক গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে, পুড়ে গেছে। অনেক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো তো সব আমরা করে দিতে পারিনি। তবে সবকিছুই আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলেও আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
পুলিশের নানান সংকট উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনারা জানেন, পুলিশের থেকে আমাদের আশা অনেক। কিন্তু তাদের থাকা-খাওয়ার অনেক সমস্য আছে। এই যে ধরেন তারা একটা ভাড়াটিয়া বাড়িতে থাকে। এগুলোর উন্নতি করা দরকার। আপনারা এগুলো বলবেন, এদের থাকা ও খাওয়ার উন্নতি করা দরকার। ওদের থেকে পেতে হলে, দিতে হবে কিছু।
থানা পরিদর্শনকালে লালগালিচা বিছানো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি এই প্রটোকল করতে করতে সময় শেষ, মেইন কাজ করতে পার না। ১০০ বার একটা কথা বললে তোমরা শুনো না। কেন রাখছো, উঠাও উঠাও। না করি তোমরা শুনো না। এ সময় তিনি লালগালিচায় না উঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমেকে লালগালিচা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
থানা পরিদর্শনের পর উপদেষ্টা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাওরে ধানকাটা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় কৃষি বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি এবার সুনামগঞ্জে ভালো ফসল হয়েছে। তবে বেশ কিছু জমি পতিত রয়েছে। আমরা এই পতিত জমি ব্যবহারে এই অঞ্চলে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা উন নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, ওসি আকরাম আলী প্রমুখ।
বিএনপির আয়োজিত র্যালিতে অংশ নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দাবি করেন, ‘ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় যেমন জিয়াউর রহমান ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতেন। ইসরায়েল এমন অপকর্ম চালানোর সাহস পেত না।’
গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যায় নিজেদের রাজত্ব বাঁচানোর জন্য মুসলিম বিশ্বের মোড়লরা নেতৃত্ব দিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, তাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ নেমে পড়বে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিএনপির আয়োজিত র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই অত্যাচার চলবে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের ধ্বংস করে দেবে ইসরাইল। শুধু ইসরায়েলে নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্রেও মুসলমানদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমার রাষ্ট্র তার প্রতিবাদ করে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। ফিলিস্তিন সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনও আলাপ পাইনি। অনেক সুশীল রয়েছে, তাদের সাড়া মিলছে না।’
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ইস্যুতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে তিনি এই শুল্কারোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখতে অনুরোধ জানান। সেই অনুরোধে সাড়া দেওয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ড. ইউনূস।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চীন ছাড়া অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার কিছুক্ষণ পরই নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এক পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ মি. প্রেসিডেন্ট। আপনার প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির সমর্থনে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।’
গতরাতে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘পাল্টা শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়ে পাল্টা শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং এটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন বিশ্ববাজারের প্রতি শ্রদ্ধার যে ঘাটতি দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করছি। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, ‘আশা করি নিকট ভবিষ্যতে চীন ও অন্যান্য দেশ উপলব্ধি করতে পারবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার দিন আর থাকবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআরসহ আমাদের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি ও অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে সমঝোতা আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।’
মানিকগঞ্জের তরুণ জুলহাস মোল্লার তৈরি করা বিমানে নতুন ইঞ্জিন লাগানো এবং প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আর্থিক সহায়তা দিলেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জুলহাস মোল্লা’র হাতে এই আর্থিক সহায়তা তুলে দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি আফরোজা খানম রিতা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি’র পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিন নসু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ (এ্যাব)’র সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সালাহউদ্দিন আহমেদ রায়হান, সদস্য মুস্তাকিম বিল্লাহ ও শাকিল আহমেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জীবনে নিজে কখনো বিমানে না চড়লেও জুলহাস মোল্লা পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হয়ে ‘আলট্রা লাইট (আরসি)’ মডেলের একটি বিমান তৈরি করে সম্প্রতি দেশে-বিদেশে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়া অসাধারণ এই উদ্ভাবনী কাজে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাতে গত ৫ মার্চ জুলহাস মোল্লাকে প্রথমবার আর্থিক সহায়তা পাঠান তারেক রহমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ) যোগদানের জন্য তুরস্কের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
এডিএফ- ২০২৫ আগামী ১১-১৩ এপ্রিল আন্টালিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। ফোরামের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ফোরামের আয়োজন করবে।
এই বছরের প্রতিপাদ্য ‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’ ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বিভাজনের মধ্যে স্থিতিশীল শক্তি হিসেবে নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কূটনীতির জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিফলিত করে।
এডিএফ- বিশ্বব্যাপী নেতা, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞ এবং মিডিয়া ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের একত্রিত করবে। যাতে তারা কূটনীতি কীভাবে পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এবং একটি বিভক্ত বিশ্বের মধ্য দিয়ে আমাদের কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তা খুঁজে বের করতে পারে। যাতে সম্মিলিত পদক্ষেপের জন্য একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধি, পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজার জনেরও বেশি অতিথির অংশগ্রহণের আশা করা হচ্ছে।
এই ফোরামের লক্ষ্য ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত পরিবেশে কূটনীতির ভূমিকা এবং মূল নীতিগুলিকে পুনর্নির্ধারণ করার জন্য সংলাপকে অনুপ্রাণিত করা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার ১৪ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার পলাতক আসামী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারদের সাথে মতবিনিময় শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদেও বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান। এসময় তিনি বলেন, এই ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে আইজিপি বরাবর আমরা চিঠি দিয়েছি।
জুলাই আগষ্ট গণহত্যার ঘটনায় পলাতক আসামি সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ যে ১০ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেতে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসান মাহমুদ, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নসরুল হামিদ বিপু, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আ ক ম মোজাম্মেল হক, তারিক আহমেদ সিদ্দিকী।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেন।
জানা গেছে, পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
শেখ হাসিনা-পুতুল ছাড়াও পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য ১৬ আসামি হলেন—জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
দুদকের আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
আগামী ৪ মে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনি পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনসম্মত পারিশ্রমিক না হওয়া সত্ত্বেও, আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেন।
নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের বিচার দৃশ্যমান হওয়া, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত রাখাসহ একাধিক বিষয়ে একমত হয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে দুই দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে এসব বিষয়ে মতৈক্য হয়।
সভায় মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলামের প্রতিনিধিদল ও আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। সভার একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে উভয় দলের নেতারা গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা, নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের বিচারের পদক্ষেপ দৃশ্যমান করা এবং আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার দাবির বিষয়ে একমত হন।
মতবিনিময়কালে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সময়ে হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য দলগুলোর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিথ্যা হয়রানিমূলক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার ও নিষ্পত্তি বিষয়ে একমত পোষণ করেন দুই পক্ষের নেতারা। এ ছাড়া সমসাময়িক রাজনৈতিক ও চলমান সংস্কার বিষয়েও আলোচনা করেন তারা।
বৈঠকে এনসিপির সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবে বহুত্ববাদ নিয়ে আপত্তি জানায় হেফাজতে ইসলাম। বহুত্ববাদকে অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ কথা বলে আখ্যায়িত করেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তারা সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা ফিরিয়ে আনার মতামত দেন। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়েছে এনসিপি। এর আগে সংবিধান সংস্কার কমিশনে দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবে সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের প্রস্তাব দিয়েছিল এনসিপি।
এ বিষয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী বলেন, নির্বাচন নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। তবে নির্বাচনের আগে যেন বিচার-সংস্কারের যেন একটি রোডম্যাপ পাওয়া যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এবং হেফাজতে ইসলামের নানা পর্যায়ের নেতাদের ওপর দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হেফাজতের পক্ষ থেকে সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জানানো হয়েছে। সংবিধানে বহুত্ববাদ শব্দটা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। এনসিপি এটি পুনর্বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।
মতবিনিময়ে হেফাজতের নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক ও মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের মধ্যে সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহদী, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী ও মোহাম্মদ সানাউল্লাহ খান বৈঠকে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগ শাসিত সরকার পতনের আগেই অনেক মন্ত্রী-এমপি, বড় বড় রাজনীতিবিদরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটছেন। বেশিরভাগই পালিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের অবস্থান নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হলে তিনি নেতৃত্ব দেবেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন চলছে। এর মধ্যেই শেখ তাপসকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ।
গত ৭ এপ্রিল কানাডার নাগরিক টিভির বার্তা প্রধান নাজমুস সাকিবের এক প্রতিবেদনে সম্প্রচার করা হয় সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের একটি কল রেকর্ড। সেখানে হারুনকে বলতে শোনা যায়, সিঙ্গাপুরে আছেন শেখ তাপস। তবে হারুন নিজে কোথায় অবস্থান করছেন সে তথ্য ওই প্রতিবেদন থেকে জানা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, গত বছর ৩ আগস্ট ঢাকা ছাড়েন শেখ তাপস। সেদিন তাকে বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলে তিনি তার পরিবারকে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দেন। এরপর রাতের ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর চলে যান শেখ তাপস। হারুন জানিয়েছেন, শেখ তাপস এখনো ভিসা ছাড়াই সিঙ্গাপুরে থাকছেন। দেশটি তাকে আতিথেয়তা দিয়েছে নাকি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে তারও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি ওই প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা শেখ তাপসের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ নানা ঘটনায় বিতর্কিত তিনি। দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলাও চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি তাপস। সরকার তাকে খুঁজছে।
তার বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন পিলখানা হত্যাযজ্ঞে নিহত মেজর শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদ। তিনি দাবি করেছেন, ১৫ বছর আগে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাবেক শেখ ফজলে নূর তাপসসহ অনেকে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। যদিও এ বিষয়ে মামলা বিচারাধীন এবং শেখ তাপসকে ওই মামলায় এখনো আসামি করা হয়নি।
এর আগে, ২০২৩ সালে একশ কোটি টাকার মানহানির ক্ষতিপূরণ চেয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন ব্যারিস্টার তাপস। সে বছর ১৩ মে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক রম্য রচনায় মানহানি করা হয়েছে দাবি করে একশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র। ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ তিনজনের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘একশ কোটি টাকা দামের মেয়র’ বলে সম্বোধন করা হতো তাকে।
২০২৩ সালের শুরুর দিকে সড়কের গাছ কেটে নেতিবাচক আলোচনায় আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। রাজধানীর সাত মসজিদ সড়কে গভীর রাতে গাছ কেটে ফেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গাছ কাটা বন্ধ করতে মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে গেলে শেখ তাপসের নির্দেশে পরিবেশবিদ, বর্তমান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নগর ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তখন এ নিয়ে নানা মহলের সমালোচনা, বিক্ষোভ সমাবেশের পর গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়।
পরের বছর ২০২১ সালে জানুয়ারিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র থাকার যোগ্য নয় বলে দাবি করেন সংস্থাটির সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছেন।’
এ ছাড়া একজন প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ২০২৩ সালে মে মাসে তার এই বক্তব্য আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সূত্র: ইত্তেফাক
বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করায় বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে চারটি বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক ফেরত পাঠিয়েছে ভারত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পণ্যবাহী ওই ট্রাকগুলো বেনাপোল থেকে ঢাকায় ফিরে আসে বলে জানা গেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। এতে বুধবার থেকে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সময় ও খরচ সাশ্রয়ী বাণিজ্য করার প্রচলিত এই পথ বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল বন্দর থেকে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের ৪ টি ট্রাক ফিরে এসেছে।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করতে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমসে। এই চিঠির আলোকেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার পণ্য বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন জানান, ‘ভারত সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করবে। আমরা আশা রাখছি ভারত সরকার তাদের এই সিদ্ধান্ত পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখবেন।’
বেনাপোলের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বেনাপোল থেকে চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত গেছে। এতে রপ্তানি বাণিজ্য বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর রাশেদুল সজিব নাজির জানান, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস থার্ডকান্ট্রির পণ্যে কার্পাস ইস্যু করেনি। এতে সেসব পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে ঢুকতে পারছে না। তবে ভারতের অভ্যন্তরে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আসা অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য টানা চার বছর ধরে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। এর ফলে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য নেপাল ও ভুটানে যেতে পারবে না। গত মঙ্গলবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করে। ফলে ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর এবং বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে না বাংলাদেশ।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জোর দিয়ে বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের পরেও নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে প্রভাব পড়বে না। যদিও তার ব্যাখ্যায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণটি জানা গেলেও ভারতের এই সিদ্ধান্তের পরেও তাদের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে কিভাবে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাবে বাংলাদেশ তা স্পষ্ট করা হয়নি।
গত মঙ্গলবার ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে আদেশটি জারি করে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস।
পিটিআইয়ের বরাতে গতকাল দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন ও বিবিসি বাংলা তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় বর্তমানে বাংলাদেশের পণ্যবোঝাই যেসব ট্রাক ভারতের মাটিতে অবস্থান করছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলোকে তাদের ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছে ভারত সরকার।
শেখ হাসিনার শাসনামলে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগের আওতায় ২০২০ সালের জুনে জারি করা এক আদেশে বাংলাদেশকে ওই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিয়েছিল ভারত। তখন থেকে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি করে আসছিল বাংলাদেশ।
৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’
এর আগে, ভারতের রপ্তানিকারকরা বিশেষ করে পোশাক খাতের প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সিদ্ধান্তটি ঘোষণার পর ভারতীয় রপ্তানি সংস্থাগুলোর ফেডারেশনের (FIEO) মহাপরিচালক অজয় সাহাই গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এখন আমাদের কার্গোর জন্য বেশি এয়ার ক্যাপাসিটি পাওয়া যাবে। পূর্বে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার কারণে রপ্তানিকারকরা স্থানের অভাবের কথা জানিয়েছিলেন।’
নেপাল-ভুটানে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি করতে পারবে: রণধীর জয়সওয়াল
তবে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করলেও এ সিদ্ধান্ত ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল বা ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
গতকাল বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। বাংলাদেশে প্রদত্ত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে আমাদের (ভারতের) বিমানবন্দর এবং বন্দরগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে উল্লেখযোগ্য যানজট তৈরি হয়েছিল। লজিস্টিক বিলম্ব এবং উচ্চ ব্যয় আমাদের নিজস্ব রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করছিল এবং আটকে যাচ্ছিল। তাই ৮ এপ্রিল থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি জানান, স্পষ্ট করে বলতে গেলে এই পদক্ষেপগুলো ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল বা ভুটানে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলবে না।
এর আগে সিবিআইসির সার্কুলারটির তথ্য জানিয়ে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে ভারত হয়ে তৃতীয় কোনো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিবিআইসির এই সিদ্ধান্তের ফলে টেক্সটাইল, ফুটওয়্যার, জেমস ও জুয়েলারিসহ ভারতীয় রপ্তানি খাত সুবিধা পাবে।
এসব খাতে, বিশেষ করে পোশাক খাতে বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। এজন্য সে দেশের রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিওটিও) আওতায় নয়াদিল্লির প্রতিশ্রুতির বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। ডব্লিওটিওর বিধান অনুসারে, সদস্য দেশগুলোকে পরস্পরকে স্থলবেষ্টিত দেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ দিতে হয়।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন একটি সময় এই ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করা হলো- যার কিছুদিন আগে চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো তথা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বেইজিংয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের সেভেন সিস্টার্স ‘ল্যান্ডলকড’ বা স্থলবেষ্টিত একটি অঞ্চল এবং ওই অঞ্চলে ‘সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক’ বাংলাদেশ– চীন যেটাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের কথা ভাবতে পারে।’ তার এমন বক্তব্যের পর ভারতে বেশ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
পরে ২ এপ্রিল ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান এক সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, ‘কানেক্টিভিটি এই অঞ্চলে যে বিপুল সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিতে পারে, সেই পটভূমি থেকেই প্রধান উপদেষ্টা কথাগুলো বলেছেন এবং তার উদ্দেশ্যও ছিল সম্পূর্ণ সৎ।’
এরপর গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটিই ছিল দুই সরকার প্রধানের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
ওই বৈঠকে দুই দেশ ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে পরস্পরকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেও এর মাত্র ৫ দিনের মাথায় ভারতের পক্ষ থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।
ঢাকার বায়ূর মানে কিছুটা স্বস্থি ফিরে এসেছে। টানা ২ থেকে তিনদিন যাবৎ তিলত্তমা শহরটির বাতাস মধ্যম পর্যায় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, বাতাসের মান ৭১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৪২তম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা।
একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তাকে ‘মধ্যম’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একই সময় ১৮৯ স্কোর নিয়ে প্রথম স্থানে আছে ভারতের দিল্লি এবং ১৭৮ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর। পাশাপাশি ১৭১ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।