নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন ১০০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা। আগামী ৩১ আগস্ট পুনরায় ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর দিন সামনে রেখে এই চিঠি লিখেছেন তারা।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের মতো ব্যক্তিত্ব। ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের একজন, রেজাল্টস অ্যান্ড সিভিক কারেজের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ডেলি-হ্যারিস এক বিজ্ঞপ্তিতে চিঠিটি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে গত রোববার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে চিঠি লেখেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তারও আগে গত মার্চে ৪০ জন বিশ্বনেতা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, যাতে প্রধানমন্ত্রীকে তার সবচেয়ে দক্ষ এবং প্রশংসিত নাগরিকদের একজনের বিরুদ্ধে বিবেকহীন প্রচার বন্ধ করতে বলা হয়।
নতুন চিঠির শুরুতে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ সম্বোধন করে লেখা হয়েছে, আমরা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, নির্বাচিত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতার পাশাপাশি বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে লিখছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে আপনাদের জাতি যেভাবে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, আমরা তার প্রশংসা করি।
কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি যে হুমকি দেখেছি, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া এবং নির্বাচনে প্রশাসন দেশের সব বড় দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগের দুটি জাতীয় নির্বাচনে বৈধতার অভাব ছিল।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রতি যে হুমকি আমাদের উদ্বিগ্ন করে, তা হলো নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা। আমরা উদ্বিগ্ন যে, সম্প্রতি তাকে টার্গেট করা হয়েছে। এটা ক্রমাগত বিচারিক হয়রানি বলেই আমাদের বিশ্বাস। এর আগে ৪০ জন বিশ্বনেতা তার নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আপনার কাছে যে আবেদন করেছিলেন এই চিঠিটি তার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলারই চেষ্টা।
আমরা বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আপনি অবিলম্বে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করুন।
তারপর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইন বিশেষজ্ঞদের ভূমিকা রাখার সুযোগসহ আপনার দেশের মধ্য থেকে নিরপেক্ষ বিচারকদের একটি প্যানেল দ্বারা অভিযোগের পর্যালোচনা করা হবে। আমরা নিশ্চিত যে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী এবং শ্রম আইনের মামলাগুলোর যেকোনো পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করলে তিনি খালাস পাবেন।
আপনি জানেন যে, ‘কীভাবে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ আন্তর্জাতিক অগ্রগতির জন্য একটি শক্তি হতে পারে’ এ নিয়ে প্রফেসর ইউনূসের কাজ আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণামূলক।
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশিরা কীভাবে বৈশ্বিক অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন তিনি তার একটি প্রধান উদাহরণ। আমরা আন্তরিকভাবে কামনা করি, তিনি যেন নিপীড়ন বা হয়রানিমুক্ত হয়ে তার উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
চিঠিটির শেষ দিকে বলা হয়েছে, ‘আশা করি, আপনি এই আইনি সমস্যাগুলোর সমাধান একটি সমীচীন, নিরপেক্ষ এবং ন্যায়সংগত পদ্ধতিতে নিশ্চিত করবেন। এর পাশাপাশি আসছে দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন এবং সব ধরনের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান (প্রদর্শন) নিশ্চিত করবেন। সামনের দিনগুলোতে কীভাবে এই বিষয়গুলোর সমাধান করা হয়, তা ঘনিষ্ঠভাবে নজরে রাখার জন্য আমরা বিশ্বের লাখ লাখ উদ্বিগ্ন নাগরিকের শিবিরে যোগ দেব।’
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটি কেবল একটি অবকাঠামো প্রকল্প নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত বিনিয়োগ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে জাইকা ও চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মাতারবাড়ি বন্দর চালু হলে বড় জাহাজের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে (প্রায় ১ লাখ ডিডব্লিউটি পর্যন্ত), বিদ্যমান বন্দরগুলোতে যানজট হ্রাস পাবে, সরবরাহ শৃঙ্খলা আরও গতিশীল হবে এবং কক্সবাজার-মহেশখালীর নতুন শিল্পাঞ্চলে সরাসরি প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হবে। এতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাবে পরিণত হবে।’
প্যাকেজ ১ কার্যক্রমের আওতায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টি-পারপাস বার্থ বা জেটি নির্মাণ (২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ), ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার বার্থ বা জেটি নির্মাণ (৩৫০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ), টার্মিনাল, ভবন, পেভমেন্ট, রিটেইনিং ওয়াল, সি ওয়াল, সীমানা প্রাচীর, ভূমি উন্নয়ন, ড্রেজিং, ল্যান্ড রিক্লেমিশন, জরুরি জেনারেটর, সৌর বিদ্যুৎ, টার্মিনাল ইউটিলিটি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক পূর্ত বা বৈদ্যুতিক কাজ নির্মাণ, সংগ্রহ, স্থাপন, টার্মিনাল এরিয়াতে কনটেইনার রাখার জন্য মোট ৫ হাজার ১০০টি গ্রাউন্ড স্লট থাকবে, মাতারবাড়ি বন্দরে ১৪ দশমিক ৫০ মিটার ড্রাফট এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ৮ হাজার ২০০ টিইইউস ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বড় কনটেইনারবাহী জাহাজ বার্থিং করা সম্ভব হবে এবং ২০২৯ সালের মধ্যে আনুমানিক শূন্য দশমিক ৬ থেকে ১ দশমিক ১ মিলিয়ন টিইইউস এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২ দশমিক ২ হতে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে বলে উপদেষ্টা মতামত ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, জাপান সরকারের এবং জাইকার সহযোগিতা মাতারবাড়ি প্রকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক হবে। জাইকার প্রযুক্তিগত দক্ষতা, অর্থায়ন ও সক্ষমতা উন্নয়নে অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান (ওএসপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি) এবং পেন্টা ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার টমোকাজু হেসেগাওয়া-এর মধ্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
এসময় নৌবাহিনী প্রধান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং জাইকা’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কয়েকদিন ধরে কমবেশি বৃষ্টিপাত এবং দিনের আকাশ বেশিরভাগ সময় মেঘাচ্ছন্ন থাকায় গ্রীষ্মের শুরুতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ছিল জনমনে। তবে বৃষ্টির প্রভাব সরে গিয়ে ফের আসছে গরম। এর মধ্যে আগামীকাল দেশের চার জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে আজ মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।
তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো, বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আগামীকাল সারা দেশে দিন ও রাতের তাপামাত্রা সামান্য বাড়ার আভাস দিয়ে রাষ্ট্রী সংস্থাটি বলছে, পরের ২৪ ঘণ্টায়ও এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরের দুদিন দিন-রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থেকে পঞ্চম দিন (শনিবার) থেকে সারা দেশে আবারও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে। এতে করে তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।
আজ (মঙ্গলবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী ও যশোরে। ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল এই দুই জেলায়। এছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় বান্দরবানে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত হয় সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৩১ মিনিটে।
রাজধানীসহ সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৬১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯০৬ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৭০৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এসব অভিযানে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ১টি দেশীয় পাইপগান, ১টি একনালা বন্দুক, ১ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও ২ রাউন্ড অকেজো কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত সোমবার ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ১ হাজার ৬৩১ জনকে। তার মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ১৩ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার আগে গত রোববার ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে ১ হাজার ৫৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩১ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এসময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২ হাজার ৩৪৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৬ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮ জন।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭৫ জন।
কাতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জন সেনাসদস্য নেবে।
আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এই সেনাসদস্য নেয়া শুরু হবে।
আজ মঙ্গলবার কাতারের দোহায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।
আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বর্তমানে দোহা সফরে রয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, কুয়েতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সেনাসদস্যরা কর্মরত রয়েছেন। একইভাবে কাতারও বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতভাবে সেনাসদস্য নিতে চায়। প্রতি তিন বছর পরপর ৭২৫ জন করে সেনাসদস্য নেয়া হবে, তবে আমরা এই সংখ্যাটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে। এটি এমন এক চুক্তি যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ একত্রে গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই এবং আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা অন্বেষণ করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক।’
প্রধান উপদেষ্টা আজ কাতারের দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এটি এমন এক সামাজিক চুক্তি যেখানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তবে এখন এমন নানা হুমকি রয়েছে যা আমাদের উন্নয়নকে বিপথে ঠেলে দিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সময় পার করছি যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে। নতুন নতুন নীতিমালা, প্রযুক্তি এবং শাসন পদ্ধতি আমাদের পৃথিবীকে দ্রুত রূপান্তরিত করছে, যা অতীতের অনেক অনুমানকে অচল করে দিচ্ছে।’
এমন প্রেক্ষাপটে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা সাহসী হই। একটি এমন পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র না হয় যে সে স্বপ্ন দেখতে না পারে, এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় না হয় যে তা অর্জন করা যায় না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয় যা আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাই। এটি এমন কিছু যা আমরা তৈরি করি। এবং আমাদের প্রত্যেকেরই এতে একটি করে ভূমিকা রয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের সক্ষমতাও ব্যাপক।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কাতার যেভাবে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে, তা দেখাচ্ছে কীভাবে একটি দেশ উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ মোকাবিলা করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর মূল বক্তব্যে সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে সময়োপযোগী ও চমৎকার এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
দোহায় আজ শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।
এই শীর্ষ সম্মেলন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও উদ্ভাবনী পন্থাগুলি আধুনিক টেকসই উন্নয়নে কীভাবে অবদান রাখতে পারে, তা অনুসন্ধান করা হয়—যা একটি আরও সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।
আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন–২০২৫’–এ যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন ।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি আজ সোমবার কাতারের স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ।
প্রধান উপদেষ্টাকে বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দোহায় ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এবারের আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।
চার দিনের এ সফরের সময় তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল–থানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫-এ যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দোহায় ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এবারের আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান।’
চার দিনের এ সফর চলাকালে তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চলতি বছরে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
আজ সোমবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতালসমূহ সুষ্ঠু ও যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
তিনি বলেন, দেশে চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। তবে আশা করি, বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০টি হাসপাতাল যৌথভাবে পরিচালনার জন্য রেলপথ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
অনুষ্ঠানে রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আজ সমঝোতা স্মারক সই হলেও হাসপাতালগুলো সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। বর্তমানে শুধুমাত্র রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই হাসপাতালগুলো থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজ আলোচনা করেছে খেলাফত মজলিস।
সকালে ঢাকার সংসদ ভবনস্থ এল.ডি হলে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন দলটির মহাসচিব জালাল আহমেদ এবং যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।
আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের অধিকার নিশ্চিত এবং দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা করা। আর যেন কোনো অবস্থাতেই ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে না আসে। পাশাপাশি জনগণ যেন অনুধাবন করতে পারে যে নাগরিক হিসেবে তার সকল অধিকার সুরক্ষিত আছে।
তিনি আরো বলেন, আর যেন কেউ গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়৷ মানুষ তার জীবনাচরণের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি না হয়৷ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আলোচনার ধারাবাহিকতায় আজ বিকেল তিনটায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক করবে জাতীয় গণফ্রন্ট।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হাসপাতালসমূহে এখন থেকে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পাশাপাশি দেশের সাধারণ জনগণও চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফাহিমুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: সাইদুর রহমান নিজ নিজ দপ্তরের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারকের শর্ত মোতাবেক, বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হাসপাতালসমূহ রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেলপোষ্য ও রেলওয়ের যাত্রীসাধারণের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের জন্য চিকিৎসা সুবিধা উন্মুক্তকরণ এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাথে যৌথভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে।
এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেলপোষ্য ও যাত্রী সাধারণের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল সুযোগ-সুবিধা পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত ইনভেন্টরি কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুসারে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ হাসপাতালের সকল অস্থাবর সম্পত্তি বুঝে নিবে এবং এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন ও বিয়োজনের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে।
রেলওয়ে হাসপাতালে বিদ্যমান জনবল কাঠামোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ না থাকায় উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকল্পে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংযুক্তিতে পদায়নে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় রেলওয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর সেবা প্রদান ফি বাবদ আদায়কৃত অর্থের ব্যবস্থাপনা সরকারি হাসপাতালসমূহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধি-বিধান অনুযায়ী হবে।
হাসপাতালসমূহের সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকবে। প্রতিটি হাসপাতালের জন্য পৃথক পৃথক স্থানীয় যৌথ ব্যবস্থাপনা কমিটিও থাকবে। এই ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি সরকার কর্তৃক আদেশের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার প্রথম মামলা হিসেবে রাজধানীর পুরান ঢাকার চানখারপুলের ঘটনায় তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় ডিএমপির সাবেক কমিশনারসহ আটজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ১৯৫ দিনের মধ্যে এই তদন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তশেষে ৯০ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এ মামলার আসামির হলেন— ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা জোনের সাবেক এডিসি শাহ আলম, মো. ইমরুল সাবেক এসি রমজান ডিএমপি, আরশাদ হোসেন সাবেক পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন শাহবাগ থানা, কনস্টেবল সুজন, কনস্টেবল ইমাদ হোসেন এবং কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চানখারপুলে গত ৫ আগস্ট ৬ জন নিহত হন। সেই গণহত্যার তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) তদন্ত সংস্থা আমাদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে জুলাই আগস্টের গণহত্যার প্রথম কোনো ঘটনার তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় ডিএমপির সাবেক কমিশনারসহ আটজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, যারা জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির অভিযোগে এবং যারা সরাসরি গুলি করেছেন বিভিন্ন ভিডিওয়ের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে এই আটজনের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পুলিশের আইজিপির সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে।
এ মামলার চারজন আসামি পলাতক রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪) নিজ ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখা।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবির, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখার সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীকে জীবন দিতে হলো, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও অগ্রহণযোগ্য। এই ঘটনায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করে।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানতে পেরেছি, নিহত পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে নাশতা করছিলেন। এ সময় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে সেখানে আসেন। ওই দুই ছাত্রীকে ঘিরে ঠাট্টা-তামাশা ও হাসাহাসি থেকে বিরোধের সূত্রপাত হয়। পরে শিক্ষকরা বিষয়টি মীমাংসা করলেও কিছু শিক্ষার্থী পারভেজকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করা হলে তার মৃত্যু হয়।’
নেতারা আরও বলেন, ‘ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দেশে আইন আছে। বিচারের মাধ্যমে ঘটনার সুরাহা করা যেত; কিন্তু আইন হাতে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা প্রত্যাশা করি, এই মর্মান্তিক ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় কেউ লিপ্ত হবেন না।’
নেতারা বলেন, ‘সমাজে ক্ষমতাকেন্দ্রিক ও অনৈতিক এক মূল্যবোধ গড়ে উঠছে, যেখানে পেশিশক্তির প্রদর্শন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নৈতিক অবক্ষয়কে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার এক বিপজ্জনক সংস্কৃতি বিস্তার লাভ করছে। এই হত্যাকাণ্ড সেই বিকৃত সংস্কৃতিরই এক নির্মম প্রতিফলন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা এবং আইনের শাসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর করতে হবে।’