উন্নয়ন বাজেটের টাকায় যেসব প্রকল্প করছে সরকার তা আরও জনকল্যাণে করার তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, যেসব প্রকল্প ঘিরে বেশি জনসম্পৃক্ততা থাকবে সেসব প্রকল্প আগে বাস্তবায়ন করা হবে। রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল ভ্রমণে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মেট্রোরেল তৈরি করেছি জনগণের জন্য। এটা দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করবে। এটা লাভজনক করা উদ্দেশ্য নয়, তবে যে খরচ তা যেন উঠানো যায় সেটাই চাইছি।’
মন্ত্রী এ সময় অন্যান্য প্রকল্পও সময়মতো বাস্তবায়নের তাগিদ দেন। বলেন, ‘জনকল্যাণের জন্য সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ-ডিজেএফবির সদস্য সাংবাদিকদের নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণে যান মন্ত্রী। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।’
মেট্রোরেল এমআরটি-৬ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন সিদ্দিক এ সময় আশাবাদ জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেনের যাবতীয় কাজ শেষ হবে। প্রত্যাশা জানান, অক্টোবরের মধ্যেই সাধারণ মানুষের জন্য মতিঝিল পর্যন্ত অংশ খুলে দেয়া হবে। তবে শুরুতে সবগুলো স্টেশনে ট্রেন থামবে না বলেও জানান মেট্রোরেল প্রকল্পের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এর আগেও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট্ররা জানিয়েছেন অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। কাগজে কলমে এর বাস্তবায়ন এখন ৯৭ শতাংশ বলেও জানান শীর্ষ কর্তারা।
এম এন সিদ্দিক আরও জানান, রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে আরেক মহাপ্রকল্প এমআরটি লাইন-১ এর কাজের অগ্রগতিও প্রায় ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রকল্পটি হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে কমলাপুর গিয়ে শেষ হবে। যার বেশির ভাগ অংশ হবে পাতাল রেল।
এ সময় মেট্রোরেলের বাড়তি ভাড়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পামন্ত্রী বলেন, ভাড়া কমানোর জন্য তাদের চেষ্টা রয়েছে। উল্লেখ্য করেন, সাধারণ মানুষের জন্য সহজ হবে সেটা প্রধানমন্ত্রীও চায়।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীসহ সারা দেশে উৎসবের আমেজে উদযাপিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের সকল শ্রেণী পেশার-মানুষ একাকার হয়ে বরণ করে নিচ্ছে ১৪৩২ বাংলা বছরকে।
‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সুর এবং বাঙালির লোক গান, প্রদর্শনী, শোভাযাত্রা, আল্পনা, নানা বর্ণের ফেষ্টুনে রঙিন হয়ে উঠেছে রাজপথ। নারী পুরুষ, শিশু কিশোর রং বেরঙের পোশাকে সজ্জিত হয়ে মেতে উঠেছে বর্ষবরণের আনন্দে। রমনার বটমূল থেকে শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাইকোর্ট- প্রেসক্লাব, রাজপথ অলিগলি সবখানে ভোর থেকে উৎসবমুখর মানুষের পদচারণা।
দিনটিকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, তিন পার্বত্য জেলা এবং অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল রাজধানীতে শোভাযাত্রা বের করে। পহেলা বৈশাখকে স্বাগত জানাতে ভোরে রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক), বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোকশিল্প ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে।
এবারের বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের সকল নাগরিক, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের কাছে অন্যরকম এক উৎসবের আবহ তৈরি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই প্রথমবারের মত দেশের সকল নাগরিক, সকল সম্প্রদায় ও নৃ-গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে আজ উদযাপন করছে সর্বজনীন উৎসব ‘পহেলা বৈশাখ’ ।
এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ সেজেছে নতুন সাজে। বাঙালি জাতির শাশ্বত ঐতিহ্যের প্রতীক এ দিনটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলা বছরের প্রথম দিনটিকে উৎসবমুখর করে তুলতে বের হয় শোভাযাত্রা। বসেছে বৈশাখী মেলা। মেলাগুলোতে মেলে স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী, খেলনা এবং বিভিন্ন লোকজ খাদ্যদ্রব্য যেমন: চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা, বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি প্রভৃতির বৈচিত্র্যময় সমারোহ। গ্রামে, নগরে বন্দরে বাঙালির আনন্দঘন লোকায়ত সংস্কৃতি মেলায় বসেছে নাগরদোলা, পুতুলনাচ, যাত্রা, লোকজ গানের আসর। এই বিনোদন বাঙালি সমাজের হাজার বছরের শাশ্বত রূপ।
দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মহানগর ও পৌরসভা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজস্ব কর্মসূচি পালন করছে। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দেশের সব জেলা উপজেলায় উদযাপিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ির জাতিগত গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো একই সাথে পালন করেছে বৈসাবি উৎসব। ঢাকায় জনসাধারণের জন্য সকল জাদুঘর এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য এদিন কোনো টিকিট লাগবে না।
সংবাদপত্রগুলোতে পহেলা বৈশাখের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ফিচার প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসহ অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক অধ্যাপক ড. আহমদ শামসুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে ইন্তেকাল করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। তিনি দুই পুত্র, এক কন্যা, ১৪ জন নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র অধ্যাপক ড. ইউসুফ ইসলাম সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, একমাত্র কন্যা ড. জেবা ইসলাম ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের একজন অধ্যাপক এবং কনিষ্ঠ পুত্র ইঞ্জিনিয়ার খালিদ ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত।
অধ্যাপক ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ বছরেরও অধিক সময় বোটানি (উদ্ভিদবিজ্ঞান) পড়িয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গবেষণা জীবনে তিনি প্রথমবারের মতো দুটি বাণিজ্যিক পাট জাতের মধ্যে সফল সংকরায়ণ সম্পন্ন করেন। এছাড়াও, তিনি পাটের টিস্যু কালচার ও মাইক্রোপ্রপাগেশন কৌশল সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশীয় অর্কিড ও আলু থেকে ভাইরাসমুক্ত গাছ উৎপাদনের লক্ষ্যে সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশন, মেরিস্টেম কালচার ও মাইক্রোপ্রপাগেশনসহ নানা টিস্যু কালচার কৌশল তিনি উন্নয়ন ও প্রয়োগ করেন।
তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- প্রেসিডেন্ট’স গোল্ড মেডেল ইন অ্যাগ্রিকালচার (১৯৮৪), একুশে পদক (শিক্ষা, ১৯৮৬), বিএএস গোল্ড মেডেল ইন বায়োলজি (১৯৮৭), বাংলাদেশ বোটানি অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণপদক (১৯৯৭), জিএনওবিবি প্রদত্ত লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (২০১৭)।
কুরআনের শিক্ষাকে কোমলমতি শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি ১৯৮০ সালে 'কুরআনিক স্কুল সোসাইটি' প্রতিষ্ঠা করেন।
তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- স্মৃতির পটে জীবন ছবি, রাইমস অব দ্য হার্ট, বংশগতিবিদ্যার মূলকথা ও জিন প্রকৌশল। বাংলাদেশের শিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ঢাকাসহ দেশের ১৪ জেলায় রাত ১টার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। একইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
আজ সোমবার রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সকালের সূর্য উঠার পর পরই রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। গানে গানে বাংলা ১৪৩২ সনকে বরণ করে নেয়া হয়।
ভোর সোয়া ছয়টার দিকে শিল্পী সুপ্রিয়া দাশের কণ্ঠে ভৈরবী রাগালাপের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর আগেই অনেক মানুষ সেখানে এসে ভিড় করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অনুষ্ঠানস্থলে ভিড় বাড়তে থাকে। এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে ছায়ানট একটি বার্তা দিতে চায়—আশা, সহনশীলতা আর পুনর্জাগরণের।
অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের। তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। নারীদের বেশিরভাগেরই পরনে শাড়ী। পুরুষদের পরনে বাহারি পাঞ্জাবি। পোশাক রঙবেরঙের হলেও লাল সাদার আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মতো।
গান আর আবৃত্তিতে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নববর্ষকে। সব দর্শনার্থী মন্ত্রমুগ্ধের মতো এ আয়োজন উপভোগ করেন। বর্ষবরণের এমন সুরের মূর্ছনায় অজান্তেই ঠোঁট মিলিয়েছেন তারা। অনেকে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখেছেন। একেকটি পরিবেশনা শেষ হতেই চলছিল তুমুল করতালি। নতুন বছর যেন ভালো কাটে এমনটি প্রত্যাশা তাদের।
অনুষ্ঠানস্থলে কথা হয় প্রবাসী ফাতেমা খানের সাথে। তিনি বলেন, আমি লন্ডনে থাকি। দীর্ঘদিন পর দেশে এসেছি। দেশে এসে গ্রামে গেলেও রমনা বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন দেখতে রাতেই ঢাকা এসেছি। এখানে এসে ভালো লাগছে।
ছায়ানটের এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
এ সময় ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামে অনন্য মাত্রা যুক্ত করেছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই অসাম্প্রদায়িক উৎসব, নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার আয়োজন। আমরা এক আলোকিত দেশ ও সমাজের স্বপ্ন দেখি, যে দেশের মানুষ সর্বজনের শান্তি-স্বস্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধর্ম-জাতি-বিত্তের বিভাজন ভাঙবে, গড়বে উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ।
তিনি আরও বলেন, নববর্ষের উষালগ্নে, আজ চোখ ফেলি হিসেব-নিকেশের হালখাতায়। একদিকে মুক্তির জন-আকাঙ্ক্ষা অর্জনের প্রত্যাশা, অন্যদিকে পীড়াদায়ক বিদ্বেষ-বিভক্তি, নারী-শিশুর অমানবিক মর্যাদাহানি ও অপরিণামদর্শী অসহিষ্ণুতা। সকল অতৃপ্তি প্রতিবিধানের দায় রাষ্ট্রের, তবে সমাজকেও সে দায় নিতে হয় বৈকি। সকলে ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে, মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই।
গাজায় গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনে, গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই।’
এ সময়ে তিনি ইসরাইলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ জানান।
বাংলা বর্ষবরণের এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
ছায়ানট বাংলা বর্ষবরণের এই আয়োজন ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার এই বটমূলেই করে আসছে ।
হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার র্যালি শেষ হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শুরু হয়ে ১০টা ৩০ মিনিটে চারুকলা অনুষদের সামনেই এসে সমাপ্ত হয়।
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, কৃষক ও রিকশাচালক প্রতিনিধি, নারী ফুটবলার এবং ২৮টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা বর্ণিল মুখোশ, রঙিন পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এতে ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রতীকী মোটিফ যেমন- তরমুজের ফালি ব্যবহৃত হয়।
দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৬,৩৮৬ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন বা ২৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৬,৩৮৬ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২১,১১৪ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রোববার দুপুরে আরিফ হোসেন খান জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণপ্রাপ্তির অন্যতম শর্ত ছিল, নেট রিজার্ভ জুনের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় থাকতে হবে। দেশের রিজার্ভ এখন সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি আইএমএফের শর্ত জুনের মধ্যে পূরণ করতে সক্ষম হবে।
দাতা সংস্থা আইএমএফের ঋণ প্রাপ্তির শর্ত পূরণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলার পিছিয়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী জুনে নিট রিজার্ভ-এনআইর থাকতে হবে ১৭ বিলিয়নের কিছুটা বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন।
আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে এপ্রিলের ৬ তারিখ পর্যন্ত দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫৬২৫ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৬২ কোটি ৫৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০৪৬০ দশমিক ৫২ মিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৬ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।
আর গত মার্চ মাসের ২৭ তারিখ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, সেদিন পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৫৪৪০ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০২৯৬ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন বা ২ হাজার ২৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আগামীকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ সালের প্রথম দিন।
আজ রোববার এক বার্তায় এ শুভেচ্ছা জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা তার বার্তায় জাতিকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শুভ নববর্ষ ১৪৩২। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে, আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। এটি বাঙালির ঐক্য এবং মহাপুনর্মিলনের দিন।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি নববর্ষকে নবচেতনা এবং নতুন অঙ্গীকারের সঙ্গে গ্রহণ করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই দিনে মানুষ বিগত বছরের দুঃখ, বোঝা এবং হতাশাকে দূরে সরিয়ে রেখে সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব, আনন্দ এবং ভালোবাসার চেতনায় একত্রিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন শুরু হয়েছিল। কৃষিকাজ সহজতর করার জন্য তিনিই বাংলা বছরকে ‘ফসলি বছর’ হিসেবে গণনা শুরু করেছিলেন। একটি ঐতিহ্য যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত বাঙালির জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্যের চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সময়, আসুন আমরা অতীতের দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্যকে পেছনে ফেলে নতুন আশা ও উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে যাই। ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সকল প্রকার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথ খুলে দিয়েছে। এটি আমাদেরকে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুখী, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং প্রাণবন্ত একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।
গতকাল রোববার প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন।
এতে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।’
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে ‘পহেলা বৈশাখ’ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন।
তিনি বলেন,আবহমান কাল ধরে নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব-অঙ্গীকারে।
তিনি আরও বলেন, সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে এদিনে বাঙালি রচনা করে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, আনন্দ ও ভালোবাসার মেলবন্ধন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুঘল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সকল উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতির আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ এক উজ্জ্বল উপাদান। পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উপলক্ষে তার ভেরিফাইড ফেসবুকে আজ রোববার এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতিসত্তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নববর্ষ উদযাপন। বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশিদের হৃদয়ে তার প্রকাশ অনন্য ভিন্নরূপ। আমি এই উৎসবমুখর দিনে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশির জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।’
তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল ধরে নানা রূপ ও বৈচিত্র্য নিয়ে জাতির জীবনে বার বার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। নববর্ষের উৎসবের সঙ্গে যেন ভরে ওঠা প্রকৃতি ও প্রাণের যোগ আবহমানকাল ধরে বিদ্যমান। আমাদের হৃদয়ে সঞ্চারিত হয় স্বজাতির অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সুদূর অতীতকাল ধরে নির্মীয়মাণ বিশালত্ব এক শক্ত ভিত্তি লাভ করে। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্বের বাণী একত্রিত হয়ে গঠন করে এক সুগ্রন্থিত জাতি।’
তিনি বলেন, ‘জাতির আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ এক উজ্জ্বল উপাদান। প্রতি বছর নববর্ষ পেছনের আলোকের দীপ্তিতে উৎকর্ষ ও অগ্রগতির পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়। এখন আমাদের প্রাণবন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের উদার দৃষ্টিভঙ্গির যে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রবণতা রয়েছে তার ভিত্তিতে বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চিরস্থায়ী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।’
বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান বলেন, ‘১৪৩১ সাল নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনার সাক্ষী। আমরা ১৪৩২ সালের প্রভাতে দাঁড়িয়ে আছি। শান্তির জন্য শুধু অপেক্ষা করলে হবে না, সমাধান হতে হবে নিঃস্বার্থ। তাহলেই রক্তপাত থামবে, শান্তি ধরা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা সন-তারিখ আমাদের প্রাত্যহিক জীবন, দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। তাই এটি জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিদগ্ধজনের মানসিক আশ্রয় ও মননের পরিচর্যার উৎসস্থল। সুপ্রাচীনকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির নিবিড় বন্ধন ভেঙে ফেলার জন্য বিদেশি আধিপত্যবাদী প্রভুরা সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের এ সম্পর্কেও সচেতন ও সদা জাগ্রত থাকতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘নববর্ষের প্রথম দিনে আমি সবার কল্যাণ ও শান্তি কামনা করছি। বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে মুছে যাক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। চারিদিকে প্রবাহিত হোক শান্তির সুবাতাস, সুশীলা নদী, সমস্ত জগৎ হোক অমৃতময়।’
১৪৩২ বাংলা সনের নতুন প্রভাতের প্রথম আলোতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তারেক রহমান।
নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেন বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।
আজ ১৩ এপ্রিল থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন শিল্পের পাশাপাশি এখন যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন, সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে।
বিইআরসি জানিয়েছে, যারা এরই মধ্যে গ্যাস সংযোগ পেয়েছেন, তারা আগের নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবেন। তবে যারা নতুন সংযোগ পেয়েছেন, সেই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্যাসের দর প্রতি ঘনমিটারে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে বিদ্যমান গ্রাহকদের দর (শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ দশমিক ৭৫ টাকা) অপরিবর্তিত রেখে নতুন ও প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে পেট্রোবাংলা। প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবের ওপরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি গণশুনানি হয়। সেখানে পেট্রোবাংলার দাবি ছিল, দাম না বাড়ালে বছরে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে পেট্রোবাংলার ওই দাবির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা প্রতিবাদ জানান।
দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজ একই সময় আদায় করতে অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সই করা এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জুমার দিন সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন।’
মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এ-ই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম; যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯) জুমা পারস্পরিক দেখা সাক্ষাত ও সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিনকে বিশেষ মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার কারণ হলো এ দিনে বিশেষ সময়ে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন মসজিদে বিভিন্ন সময়ে জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। কোনো মসজিদে দুপুর ১টায়, কোনো মসজিদে দেড়টায়, আবার কোনো মসজিদে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু করতে দেখা যায়।
সময়ের তারতম্যের কারণে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিশেষ করে পথচারীরা (সফররত মুসল্লি) বিভ্রান্ত ও সমস্যার সম্মুখীন হন। এ সমস্যা দূরীকরণে সারাদেশে সব মসজিদে মুসল্লিদের সুবিধার্থে একই সময় দুপুর ১.৩০ টায় জুমার নামাজ আদায় করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমতাবস্থায়, তার বিভাগ/জেলায় অবস্থিত সব মসজিদে একই সময়ে অর্থাৎ দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নানা মত, ধর্ম ও রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এদেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী সবমিলিয়ে এদেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ।
আজ রোববার ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’- এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
পহেলা বৈশাখকে সম্প্রীতির প্রতীক উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীকাল পহেলা বৈশাখ, আমাদের সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকাল পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবেন। সর্বজনীন এ উৎসবে অংশ নেবেন।’
তিনি বলেন, ঢাকার এই আন্তজার্তিক বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যতম নিদর্শন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণকর কর্মসূচি পালন করে আসছে এ বৌদ্ধ বিহার। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের ‘সম্প্রীতি ভবন’ বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
শিক্ষা বিস্তারে বৌদ্ধ বিহারগুলোর অবদানের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অতি প্রাচীন সময় থেকেই এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল এখানকার বৌদ্ধ বিহারগুলো। এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ও সভ্যতার নির্দশন। পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এ বিহারগুলোতে আসতেন। মহামানব বুদ্ধের শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু ধর্মীয় আচার ও শিক্ষা নয়, সমাজে জনকল্যাণকর কর্মসূচিরও কেন্দ্র ছিল এদেশের বৌদ্ধ বিহারগুলো।
মহামানব গৌতম বুদ্ধ বিশ্বমানবতার কল্যাণে সম্প্রীতি ও সাম্যের বাণী প্রচার করে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহামানব বুদ্ধ বলেছেন, শান্তি, সুখ থেকে আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না; এমনকি ক্ষুদ্র জীবকেও। এদেশের বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর একজন বিশ্ববরেণ্য জ্ঞানী। মহামানব বুদ্ধের বাণী তিনি বহন করে নিয়েছিলেন সেই মহাচীনের তিব্বতে। চীনে এখনো তাঁকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের নির্দশন, স্থাপনা, ঐতিহ্য ও পণ্ডিতগণ মানব সভ্যতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের স্থাপনা ও সামগ্রিক পরিবেশের ভূয়সী প্রশংসা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘যেটুকু আজ এখানে দেখলাম, তা হৃদয়গ্রাহী ও আবেগ আপ্লুত করে। কাজেই এটা কেবল বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থান হলে, তা হবে খণ্ডিত একটা বিষয়। বরং হতে হবে দেশের সব জনগোষ্ঠির ইতিহাসের অংশ, এখানে যেন এই প্রজন্মের সব ছেলেমেয়েরা আসে, সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি ভবন স্থাপনকে মহান কৃতিত্বের কাজ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, তাঁরা মহান কৃতিত্বের কাজ করছেন। এটি সম্মানেরও ব্যাপার।’
তিনি সম্প্রীতি ভবন স্থাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা এমন কৃতিত্বের সঙ্গে স্থাপনের কাজ শেষ করবেন, যাতে যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারেন। পরবর্তী প্রজন্ম যেন আপনাদের নির্মাণ শৈলীর প্রশংসা করে।’
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন আয়েজিত ‘সম্প্রীতি ভবন’ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম খালিদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল করিম বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ ছাড়াও শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ ৫০ জনের (চার্জশিটভুক্ত সকল আসামি) বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় এবং শেখ রেহানা,তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পৃথক এক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অভিযোগে শেখ রেহানার বিরুদ্ধে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ শেখ রেহানা,শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এ মামলায় শেখ রেহানা, শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ছাড়াও অপর আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ,সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারি পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ,তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অভিযোগে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্ত প্রাপ্তে আরো দুই আসামিসহ আজমিনা সিদ্দিক-শেখ হাসিনা-টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ।
আজমিনা সিদ্দিক-শেখ হাসিনা-টিউলিপ রিজওয়ানা ছাড়াও এ মামলার অপর আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ,সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.),সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারি পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ- পরিচালক নায়েব আলী শরীফ,তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্ত প্রাপ্তে আরো দুই আসামিসহ রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক-শেখ হাসিনা-টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক-শেখ হাসিনা-টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ছাড়াও এ মামলার অপর আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ,সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.),সহকারি পরিচালক ফারিয়া সুলতানা,সহকারি পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ- পরিচালক নায়েব আলী শরীফ,পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন,শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা সিদ্দিক, তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক রাজউকের প্রকল্পসমূহে প্লট বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত ফরমে কোনো আবেদন করেননি। টিউলিপ সিদ্দিক বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে তার খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী আসামি শেখ হাসিনার ওপর চাপ প্রয়োগ ও প্রভাব বিস্তার করেন।