সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১

সাঈদীর গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার

মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৫ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:২৬
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:২১

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শাহবাগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। তাই রাজধানীতে আর সাঈদীর গায়েবি জানাজার অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাঈদীর মৃত্যু এবং পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বিএসএমএমইউ হাসপাতালে মারা যান। তার মরদেহ নিয়ে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে। এ সময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পুলিশের ওপর আক্রমণ ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।’

তিনি বলেন, ‘সাঈদী মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। তারা কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) ছাড়া মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায়। সে অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিলে জামায়াতের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শাহবাগ ও বিএসএমএমইউতে একত্রিত হয়ে জানাজা পড়ার পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পরের দিন শোক দিবসের বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের রাতে জানাজা পড়ার অনুমতি দেয়া হয়। রাত দুইটার দিকে তারা জানাজার পরিবর্তে দীর্ঘক্ষণ মোনাজাত করে এবং পরে গায়েবানা জানাজা পড়ে নেয়ার কথা জানায়। মোনাজাত শেষে মরদেহ যখন পিরোজপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের করা হয়, তখন হাজার হাজার নেতা-কর্মী লাশবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে। তারা কোনোমতেই এই লাশ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবে না। তারা তখন লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে, গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। তাদের হামলায় ডিসি রমনা, ডিসি প্রটেকশন ও পুলিশের সিনিয়র অফিসারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ হামলায় পুলিশের পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।’

এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোমবার রাতের হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বুধবার তাদের গায়েবি জানাজার অনুমতি দেয়া হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ অসীম ধৈর্য সহকারে কোনো শক্তি প্রয়োগ না করে তাদের এই তাণ্ডব সহ্য করে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। ফজরের নামাজের পর তাদের আবারও জানাজার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু ফজরের নামাজের পর তারা বিএসএমএমইউ প্রাঙ্গণ দখল করে নেয় এবং মরদেহ পিরোজপুরে নিতে বাধা দেয়। তারা ফেসবুকে জামায়াত-শিবির ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যত সমর্থক আছে, সবাইকে শাহবাগে একত্রিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। তখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে বিএসএমএমইউ ক্যাম্পাস মুক্ত করে মরদেহ পিরোজপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি ছিল, তাদের সার্বিক বিষয়ে চিন্তা করে পুলিশ প্রথম থেকে হাসপাতালে শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত ছিল। কিন্তু তাদের তাণ্ডবের এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে পুলিশ সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে।’

বিষয়:

মাতৃ-শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব স্তরের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার নারী ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে একটি সুরক্ষিত ও আলোচিত জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বে দাঁড় করাতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

আজ সোমবার বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত’।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানোর লক্ষ্যে অধিকতর কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। এ জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব পর্যায় থেকে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’-এর মাধ্যমে অর্জিত সাফল্যকে টেকসই করতে বিশ্বনেতারা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য যেসব টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন, তার অন্যতম হলো সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য রক্ষার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশু-স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য খাতে নানাবিধ সাফল্য অর্জন করেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

বাণীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৭ এপ্রিল বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং যথাযথ ও সময়োচিত হয়েছে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা।


ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

অতিদ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একদল শিক্ষার্থী।

গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা তার নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহম্মদ স্মারকলিপিটি প্রদান করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, অভ্যুত্থানের প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও আমাদের প্রাণের দাবী ডাকসু নির্বাচনের কোন রূপরেখা আমরা আজও পাইনি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে একধরনের ভয়াবহ গড়িমসি আমরা লক্ষ্য করছি।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা গত আগস্টে শুনেছিলাম ৩/৪ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা হবে অথচ ৮ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এখনো ডাকসু নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপই আমরা পাইনি। যেখানে রাবি এবং জাবিতে ইতোমধ্যেই তাদের ছাত্রসংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে।

ডাকসুর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশের এই স্বাধীনতাকে চিরস্থায়ী করতে, পতিত স্বৈরাচারের উত্থান রুখে দিতে এবং নব্য স্বৈরাচার প্রতিরোধ করতে, দেশের মানুষের গণ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, স্থায়ীভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সম্মত ক্যাম্পাস বিনির্মাণ করতে, লেজুরবৃত্তিক ভয়াবহ দলীয় ছাত্র রাজনীতির কড়াল গ্রাস থেকে ক্যাম্পাস নিরাপদ রাখতে ও সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করতে ডাকসুর বিকল্প নেই।

ডাকসু নির্বাচন দিতে গড়িমসি করলে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কখনো স্মারকলিপি, কখনো বিক্ষোভ মিছিল কিংবা কখনো প্রশাসনের সাথে সাক্ষাৎ করে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি করেছিলাম।

‘প্রশাসনের নিকট আমাদের আশা, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে কালবিলম্ব না করে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং ডাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি অব্যাহত রাখে তাহলে আমরা ডাকসুর দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো বলেও উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে।


মানবপাচার রোধে শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মানবপাচার রোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাসহ শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রস্তুত করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মানবপাচারে বন্ধ করতে বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সুরমা হলে মানবপাচার সংক্রান্ত বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা জানান, মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি করার জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পাচারের বিপদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের সচেতন করার করার জন্য বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে বলে তথ্য দেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মানবপাচার মোকাবেলায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের দক্ষতার সাথে শনাক্তকরণ ও তাদের চাহিদা মূল্যায়ন করে যথাযথ সেবা দেওয়ার জন্য একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। অনলাইনে তৈরি এই প্ল্যাটফর্মে সেবাদাতাদের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের সংযুক্ত করা হবে। পাশাপাশি মানবপাচার সংশ্লিষ্ট বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিমসটেক জোটের সদস্য দেশগুলোসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করার জন্য পারস্পরিক আইনি সহায়তা ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। এ সময় মানব পাচার বন্ধ করতে বিমসটেকের অন্যান্য দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা অবগত হয়ে দেশের পাচারবিরোধী কৌশল আরও শক্তিশালী করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘পাচার রোধে সরকারের পদক্ষেপগুলো এড়িয়ে চলতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল গ্রহণ করে পাচারকারীরা। তারা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সংকট ও দারিদ্র্যকে কাজে লাগায়। এ কাজে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে তাদের গোপন কার্যকলাপ এগিয়ে নেয়ার জন্য অভিবাসন রুটগুলোকে কাজে লাগাতে থাকে।’

এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সম্মিলিত ও কৌশলগত কর্মপদ্ধতি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ও সেবাসমূহ বিনিময়ের মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিমসটেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সম্মিলিত প্রয়াস আমাদের পাচারবিরোধী কৌশলকে আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম করবে।’ এ সময় আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশকে বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সভায় বিমসটেকভুক্ত সাত সদস্য দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান) মানব পাচার সংক্রান্ত সাব-গ্রপের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।


আইনি প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    * ‘টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলেই পদত্যাগে বাধ্য হন’ * ৭২২ কোটি টাকার লেনদেন, স্ত্রীসহ হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা * সংস্থাটির অনুসন্ধানে রয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ইন্টারপোলসহ অন্য যেসব প্রক্রিয়া আছে, তা অনুসরণ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও দেশটির দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে টিউলিপকে দালিলিকভাবে দায়েরকৃত মামলা আদালতে উপস্থিত হয়ে মোকাবিলা করারও পরামর্শ দিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান।

এদিন ৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ ৭২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলার কথা জানিয়েছে দুদক।

অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে সংস্থাটি অনুসন্ধান করছে বলেও জানান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সাকিব আল হাসান ভবিষ্যতে দুর্নীতি মামলার আসামি হতে পারেন বলেও জানান তিনি।

দুদকের মামলার আসামি শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত আনার বিষয়ে দুদক কোনো উদ্যোগ বা ব্যবস্থা নিয়েছে কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, ‘দুদক হচ্ছে প্রসিকিউটর। অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু আমরা করি না। এটা আদালতের কাজ। দ্রুত সময়ে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট আপনারা পাবেন। আসামি অ্যাবসকন্ডিং (পলাতক) হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সে আসামিকে ফেরত আনার জন্য প্রক্রিয়া আছে। ইন্টারপোলসহ অন্য যেসব প্রক্রিয়া আছে, আমরা সেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। আন্তর্জাতিক প্রসিউকিউটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ আছে। আমরা সেভাবে আগাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা দুর্নীতিগ্রস্ত একজন সাধারণ জনগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি যিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন, তার জন্য আমার যে প্রক্রিয়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পলাতক শেখ হাসিনার জন্যও একই প্রক্রিয়া। কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ প্রধানমন্ত্রী নন, সে ক্ষেত্রে আমাদের কার্যক্রমের কোনো হেরফের নেই।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আরও যেসব আসামি চলে গেছেন, আপনারা দুদকের সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করুন। সব আসামিকে ধরে রাখার সেই ক্ষমতা দুদকের হাতে নেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি যখনই আমাদের হাতে সংবাদ আসছে, তখন আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য এজেন্সি আছে, তারা যেন ওই আসামিকে কিংবা অভিযুক্তকে দেশ থেকে বের হতে না দেন, সে চেষ্টা করছি।’

দুদক গ্রেপ্তার অভিযান চালাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুদক কিন্তু পুলিশি প্রতিষ্ঠান না। দুদককে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হয়। আমরা সবাই মোটামুটি জানি, বড় বড় আসামিরা কে দেশে আছে, আর কে দেশে নেই। সে ক্ষেত্রে যারা দেশে নেই, তাদের একটা আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ফিরিয়ে আনতে হবে। যেটা একটা কঠিন প্রক্রিয়া। এটা আমাদের শিকার করতে হবে। আর যারা দেশে আছেন তাদের প্রতি আমরা কতটা সদয় আর কতটা নির্দয় বা কতটা অবজেকটিভ, সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন।’

দুদক আগের নিয়মেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন রুলিং পার্টি কারা। আমরা কাজ শুরু করি ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। এ পর্যন্ত দুদক থেকে ছাড়া পেয়েছে এমন একটা নামও বলতে পারবেন না। আদালত থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আদালত তো আমার বিষয় না। দুদক দল নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কোনো বিশেষ দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করিনি।’

এ সময় পাশে থাকা দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, ‘দুদক দুশমন দমন কমিশন নয়। দুদক দুর্নীতি দমন কমিশন। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমাদের কাজ দোষী চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিয়ে কোর্টের কাছে তথ্য-উপাত্তসহ তাদের সোপর্দ করা। এরপর কোর্ট বিচার করবেন।’

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত একটিমাত্র মামলাতে কিছু টাকা ফেরত এসেছে। সে টাকা আনতে যে ব্যয় হয়েছে, তা খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনাটা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি অন্তত কিছু অংশ হলেও যাতে ফেরত আনতে পারি।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় বহুমুখী আর্থিক ও প্রযুক্তিগত উদ্যোগ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সম্মান আমরা লাভ করেছি। সেখানে থাইল্যান্ডের জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে Bilateral Co-operation on Preventing and Fighting Corruption সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত নানা সহযোগিতা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উভয় দেশকে সক্ষম ও শক্তিশালী করে তুলবে।

তিনি বলেন, আমাকে থাইল্যান্ডের সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছেন- মোমেন কমিশনের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী? আমি বলেছি, দুদক এখনো সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান না হলেও আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। আমরা বিশ্বাস করি এ ধারাটি অব্যাহত থাকবে।

টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলেই পদত্যাগে বাধ্য হন

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও দেশটির দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলে এমন ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে টিউলিপকে দালিলিকভাবে দায়েরকৃত মামলা আদালতে উপস্থিত হয়ে মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ছোট সংবাদ কণিকার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মিস টিউলিপ সিদ্দিকের বিলেতি আইনজীবীর পাঠানো পত্রের জবাব আমরা প্রদান করিনি; স্কাই নিউজের সূত্র উল্লেখ করে অভিযুক্ত বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন তার সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি।

তিনি বলেন, অনুগ্রহ করে লক্ষ্য করুন দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারেননি বলেই ব্রিটেনের দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী মিস টিউলিপ সিদ্দিক সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। দুদক তার আইনজীবীকে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে মিস টিউলিপ সিদ্দিককে জানিয়ে দিয়েছে- সম্পূর্ণভাবে দালিলিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করেই আদালতে দুর্নীতির চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আদালতে হাজির হয়ে তারা যেন অভিযোগের মোকাবিলা করেন। এটি কম্পাউন্ডে বল কোনো মামলা নয় (গুরুতর আইনি বিষয় যা সহজেই আপসযোগ্য নয়), চিঠি লেখালেখি করে এ মামলার পরিণতি নির্ধারিত হবে না। আদালতেই তা নির্ধারিত হবে। আদালতে তার অনুপস্থিতি অপরাধমূলক পলায়ন বলে বিবেচিত হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারে সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এর মধ্যে শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে তিন মামলায় আসামি করা হয়েছে।

চার্জশিটে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের বিশেষ ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের রূপান্তরিত নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দের অভিযোগ আনা হয়।

৭২২ কোটি টাকার লেনদেন, স্ত্রীসহ হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা

ছয় কোটি ৬৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৭২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, মামলায় হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করার কথাও জানান দুদক চেয়ারম্যান।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক কমলেশ মণ্ডল বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।

অন্য মামলায় হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তার নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৫৬টি ব্যাংক হিসাবে ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকার সন্দেজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অস্বাভাবিক লেনদেনে অপসহায়তার অভিযোগে এ মামলায় হাছান মাহমুদকেও আসামি করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন- ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন- ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অনুসন্ধানে রয়েছেন সাকিব আল হাসানও

দুর্নীতির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি ভবিষ্যতে দুর্নীতি মামলার আসামি হতে পারেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি (অর্থ পাচারের অভিযোগ) আমাদের অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে। অনুসন্ধানের পরে বোঝা যাবে।

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ২০২২ সালে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর থেকে বাদ দেয় দুদক।

প্রসঙ্গত, জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের ২৮ আগস্ট দুদকে একটি আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিলহানুর রহমান নাওমী। আবেদনে সাকিবের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, নিষিদ্ধ জুয়ার ব্যবসা ও জুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্বর্ণ চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, প্রতারণার মাধ্যমে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ, ক্রিকেট খেলায় দুর্নীতি ও নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। আর গত বছরের ৮ নভেম্বর সাকিব আল হাসানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।


শুল্ক ইস্যুতে ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন করে আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক তিন মাস কার্যকর না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি দেবে সরকার। চিঠিতে ৩৭ শতাংশ শুল্কের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য অনুরোধ করা হবে। যে চিঠির একটি পাঠাবেন স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পর্যালোচনা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি দেওয়া হবে। একটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেবেন। অন্যটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইউএসটিআরকে দেওয়া হবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় চারজন উপদেষ্টা, চারজন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ, ১০ জন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে চারজন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম আরো বলেন, চিঠিতে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সহজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ও নেবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার কৌশলগুলো তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, চিঠিতে যাই থাকুক সেটা আমাদের বিজনেস-বান্ধব হবে। আমাদের বাংলাদেশের বিজনেসের স্বার্থটা দেখা হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে কম্পিটিটিভ যেসব কান্ট্রি আছে তাদের চেয়ে আমরা আরো বিজনেস-বান্ধব হব। যাতে করে ইউএসএ এবং আমাদের জন্য উইন-উইন সিচুয়েশন হয় এবং আমাদের জন্য মার্কেট এক্সেসটা যেন আরো বাড়ে।

শফিকুল আলম বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে আমাদের ব্যবসা আরও সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপ নিয়ে বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ চারটি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এক. যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে হবে। দুই. বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সক্ষমতা অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আরও বাড়ানো হবে, যাতে করে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ মনে করে বাংলাদেশের পণ্য অন্য দেশের তুলনায় ভালো। তিন. যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুধু পণ্য নয়, অন্য সেবাও আমদানি করা হবে। চার. যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর করা হবে। আর সেটি আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেন, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিসে কথা বলেছেন। সেখান থেকে যে সংকেত পাওয়া গেছে, তাতে বাংলাদেশের চিন্তাধারার সঙ্গে তাদের মিল রয়েছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে করণীয়গুলো চূড়ান্ত করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক যেন রক্ষা পায়, সেই চেষ্টা করা হবে জানিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকের মজুরি সর্বনিম্ন জায়গায় রয়েছে। এর চেয়ে কমানো যাবে না। শ্রমিকের দিক থেকে খরচ না কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হবে। একই সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর ও বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।’

ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কুকর আরোপের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে স্বস্তি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে, সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বাংলাদেশ আর কী কী জিনিস কিনতে পারে সেই বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য পোশাক খাতের বাইরে নতুন অনেক দুনিয়া আছে উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, সেসব খুঁজে বের করতে হবে।


আইনি প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে

‘টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলেই পদত্যাগে বাধ্য হন’ * ৭২২ কোটি টাকার লেনদেন, স্ত্রীসহ হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা * সংস্থাটির অনুসন্ধানে রয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ইন্টারপোলসহ অন্য যেসব প্রক্রিয়া আছে, তা অনুসরণ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও দেশটির দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে টিউলিপকে দালিলিকভাবে দায়েরকৃত মামলা আদালতে উপস্থিত হয়ে মোকাবিলা করারও পরামর্শ দিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান।

এদিন ৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ ৭২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলার কথা জানিয়েছে দুদক।

অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে সংস্থাটি অনুসন্ধান করছে বলেও জানান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সাকিব আল হাসান ভবিষ্যতে দুর্নীতি মামলার আসামি হতে পারেন বলেও জানান তিনি।

দুদকের মামলার আসামি শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত আনার বিষয়ে দুদক কোনো উদ্যোগ বা ব্যবস্থা নিয়েছে কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, ‘দুদক হচ্ছে প্রসিকিউটর। অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু আমরা করি না। এটা আদালতের কাজ। দ্রুত সময়ে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট আপনারা পাবেন। আসামি অ্যাবসকন্ডিং (পলাতক) হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সে আসামিকে ফেরত আনার জন্য প্রক্রিয়া আছে। ইন্টারপোলসহ অন্য যেসব প্রক্রিয়া আছে, আমরা সেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। আন্তর্জাতিক প্রসিউকিউটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ আছে। আমরা সেভাবে আগাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা দুর্নীতিগ্রস্ত একজন সাধারণ জনগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি যিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন, তার জন্য আমার যে প্রক্রিয়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পলাতক শেখ হাসিনার জন্যও একই প্রক্রিয়া। কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ প্রধানমন্ত্রী নন, সে ক্ষেত্রে আমাদের কার্যক্রমের কোনো হেরফের নেই।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আরও যেসব আসামি চলে গেছেন, আপনারা দুদকের সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করুন। সব আসামিকে ধরে রাখার সেই ক্ষমতা দুদকের হাতে নেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি যখনই আমাদের হাতে সংবাদ আসছে, তখন আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য এজেন্সি আছে, তারা যেন ওই আসামিকে কিংবা অভিযুক্তকে দেশ থেকে বের হতে না দেন, সে চেষ্টা করছি।’

দুদক গ্রেপ্তার অভিযান চালাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুদক কিন্তু পুলিশি প্রতিষ্ঠান না। দুদককে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হয়। আমরা সবাই মোটামুটি জানি, বড় বড় আসামিরা কে দেশে আছে, আর কে দেশে নেই। সে ক্ষেত্রে যারা দেশে নেই, তাদের একটা আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ফিরিয়ে আনতে হবে। যেটা একটা কঠিন প্রক্রিয়া। এটা আমাদের শিকার করতে হবে। আর যারা দেশে আছেন তাদের প্রতি আমরা কতটা সদয় আর কতটা নির্দয় বা কতটা অবজেকটিভ, সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন।’

দুদক আগের নিয়মেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন রুলিং পার্টি কারা। আমরা কাজ শুরু করি ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। এ পর্যন্ত দুদক থেকে ছাড়া পেয়েছে এমন একটা নামও বলতে পারবেন না। আদালত থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আদালত তো আমার বিষয় না। দুদক দল নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কোনো বিশেষ দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করিনি।’

এ সময় পাশে থাকা দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, ‘দুদক দুশমন দমন কমিশন নয়। দুদক দুর্নীতি দমন কমিশন। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমাদের কাজ দোষী চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিয়ে কোর্টের কাছে তথ্য-উপাত্তসহ তাদের সোপর্দ করা। এরপর কোর্ট বিচার করবেন।’

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত একটিমাত্র মামলাতে কিছু টাকা ফেরত এসেছে। সে টাকা আনতে যে ব্যয় হয়েছে, তা খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনাটা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি অন্তত কিছু অংশ হলেও যাতে ফেরত আনতে পারি।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় বহুমুখী আর্থিক ও প্রযুক্তিগত উদ্যোগ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সম্মান আমরা লাভ করেছি। সেখানে থাইল্যান্ডের জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে Bilateral Co-operation on Preventing and Fighting Corruption সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত নানা সহযোগিতা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উভয় দেশকে সক্ষম ও শক্তিশালী করে তুলবে।

তিনি বলেন, আমাকে থাইল্যান্ডের সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছেন- মোমেন কমিশনের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী? আমি বলেছি, দুদক এখনো সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান না হলেও আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। আমরা বিশ্বাস করি এ ধারাটি অব্যাহত থাকবে।

‘টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলেই পদত্যাগে বাধ্য হন’

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও দেশটির দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়নি বলে এমন ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে টিউলিপকে দালিলিকভাবে দায়েরকৃত মামলা আদালতে উপস্থিত হয়ে মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ছোট সংবাদ কণিকার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মিস টিউলিপ সিদ্দিকের বিলেতি আইনজীবীর পাঠানো পত্রের জবাব আমরা প্রদান করিনি; স্কাই নিউজের সূত্র উল্লেখ করে অভিযুক্ত বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন তার সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি।

তিনি বলেন, অনুগ্রহ করে লক্ষ্য করুন দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারেননি বলেই ব্রিটেনের দুর্নীতি নিবারণের মন্ত্রী মিস টিউলিপ সিদ্দিক সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রবল সমর্থন থাকা সত্ত্বেও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। দুদক তার আইনজীবীকে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে মিস টিউলিপ সিদ্দিককে জানিয়ে দিয়েছে- সম্পূর্ণভাবে দালিলিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করেই আদালতে দুর্নীতির চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আদালতে হাজির হয়ে তারা যেন অভিযোগের মোকাবিলা করেন। এটি কম্পাউন্ডে বল কোনো মামলা নয় (গুরুতর আইনি বিষয় যা সহজেই আপসযোগ্য নয়), চিঠি লেখালেখি করে এ মামলার পরিণতি নির্ধারিত হবে না। আদালতেই তা নির্ধারিত হবে। আদালতে তার অনুপস্থিতি অপরাধমূলক পলায়ন বলে বিবেচিত হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারে সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এর মধ্যে শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে তিন মামলায় আসামি করা হয়েছে।

চার্জশিটে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের বিশেষ ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের রূপান্তরিত নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দের অভিযোগ আনা হয়।

৭২২ কোটি টাকার লেনদেন, স্ত্রীসহ হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা

ছয় কোটি ৬৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৭২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, মামলায় হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করার কথাও জানান দুদক চেয়ারম্যান।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক কমলেশ মণ্ডল বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।

অন্য মামলায় হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তার নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৫৬টি ব্যাংক হিসাবে ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকার সন্দেজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অস্বাভাবিক লেনদেনে অপসহায়তার অভিযোগে এ মামলায় হাছান মাহমুদকেও আসামি করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন- ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন- ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অনুসন্ধানে রয়েছেন সাকিব আল হাসানও

দুর্নীতির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি ভবিষ্যতে দুর্নীতি মামলার আসামি হতে পারেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি (অর্থ পাচারের অভিযোগ) আমাদের অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে। অনুসন্ধানের পরে বোঝা যাবে।

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ২০২২ সালে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর থেকে বাদ দেয় দুদক।

প্রসঙ্গত, জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের ২৮ আগস্ট দুদকে একটি আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিলহানুর রহমান নাওমী। আবেদনে সাকিবের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, নিষিদ্ধ জুয়ার ব্যবসা ও জুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্বর্ণ চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, প্রতারণার মাধ্যমে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ, ক্রিকেট খেলায় দুর্নীতি ও নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। আর গত বছরের ৮ নভেম্বর সাকিব আল হাসানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।


ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

প্রতারণার মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত এ রায় দেন। দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাকিবুল ইসলাম বলেন, আসামিরা পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইভ্যালি বিভিন্ন মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করত। এতে আকৃষ্ট হয়ে মুজাহিদ হাসান ফাহিম নামে এক ব্যক্তি তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ বাইক অর্ডার করেন। যার মূল্য পরিশোধ করেন। তবে কর্তৃপক্ষ ৪৫ দিনের মধ্যে বাইকটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। পরে তিনি ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ পাঁচ লাখ টাকার চেক দেন।

তবে ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না থাকায় চেকটি নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ করেন।

আসামিদের কথা বিশ্বাস করে তিনি চেকটি ব্যাংকে জমা দেননি। পরবর্তীতে বাদী টাকা আদায়ের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। তবে তারা কোনো টাকা তাকে ফেরত দেননি। এর পর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েও কাজ হয়নি।

এ ঘটনায় মুজাহিদ হাসান ফাহিম ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে আদালতে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

গত ২৯ জানুয়ারি মোহাম্মদ রাসেল এবং শামীমা নাসরিনকে প্রতারণার মামলায় দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।


বাতায়নে তথ্য হালনাগাদ না করলে সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতি নয়

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সরকারি কর্মচারী বাতায়নে (জিইএমএস) পিডিএসের ব্যক্তিগত তথ্য সদ্য তোলা রঙিন ছবিসহ হালনাগাদ না করলে পদোন্নতির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম স্বাক্ষরিত অতি জরুরি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী বাতায়নে (জিইএমএস) পিডিএসের ব্যক্তিগত তথ্য হালনাগাদকরণের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব- ছয় (৬) মাসের মধ্যে তোলা রঙিন ছবি সংযোজনসহ সব ব্যক্তিগত তথ্য নিজ দায়িত্বে জরুরি ভিত্তিতে হালনাগাদ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যে সব কর্মকর্তা নতুন রঙিন ছবি সংযোজনসহ জিইএমএস-এ পিডিএস-এর তথ্য হালনাগাদ করতে ব্যর্থ হবেন, তাদের কেস পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবে না।’


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট আইএমএফ: সালেহউদ্দিন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আইএমএফ প্রতিনিধি দল মনে করছে যে, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে ও সঠিক পথেই এগোচ্ছে।

আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

আইএমএফ-এর মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে এবং তারা ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের আগে হালনাগাদ আর্থিক তথ্য পর্যালোচনার জন্য আলোচনা শুরু করেছেন।

প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- ঢাকায় আইএমএফ-এর আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সিওকহিউন ইউন।

ড. সালেহউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ শিগগিরই আইএমএফ-এর ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে পাবে। উল্লেখ্য, মোট ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে তিনটি কিস্তি ছাড় হয়েছে।

আইএমএফ দল কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার ও ব্যাংকিং খাতে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবেন।

পরিদর্শন শেষে ১৭ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে একটি চূড়ান্ত বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইএমএফ মিশন শেষ হবে।


পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকার মানুষের কল্যাণে ও পরিবেশ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের পরিবেশ রক্ষায় কর্মকর্তাদের ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। জনসেবার জন্য সৃজনশীলভাবে কাজ করতে হবে।

রোববার বাংলাদেশ সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, এরই ধারাবাহিকায় একটি অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। অভিযোগ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিয়মিত মনিটরিং ও তদারকি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ঈদের আনন্দ আমরা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ভাগ করেছি। এখন কাজে মন দেওয়ার সময়।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানসহ মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তরসমূহের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাদারিত্ব, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. খায়রুল হাসান ও অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানমসহ সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

পরে উপদেষ্টা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

তিনি এ সময় কয়রা, আশাশুনি, সুবর্ণচর ও পটিয়াসহ দেশের পানি দুষ্প্রাপ্য এলাকায় সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণে জলাশয় ও পুকুর খনন করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।

সভায় উপদেষ্টা বলেন, একটি অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। অভিযোগ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিয়মিত মনিটরিং ও তদারকি করতে হবে।

পরে উপদেষ্টা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।


খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই: খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেন, সরকারের কাছে যথেষ্ট খাদ‌্যশস‌্য মজুত র‌য়ে‌ছে। খাদ‌্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। গত বন‌্যায় আমন ধানের যে ক্ষ‌তি হয়েছে, সে ক্ষ‌তি পু‌ষিয়ে নিতে সরকার খাদ‌্যশস‌্য আমদা‌নি করছে। আর এবার হাওরসহ সারা দেশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হ‌বে। সব‌কিছু ঠিক থাকলে খা‌দ‌্য উদ্বৃত্ত হবে দেশ। আর কৃষক যেন ফসলের ন‌্যায‌্যমূল‌্য পায়, তা নি‌শ্চিত করতে নিরলস চেষ্টা চা‌লিয়ে যাচ্ছে সরকার।

গতকাল শ‌নিবার কিশোরগ‌ঞ্জের হাওর উপ‌জেলা অষ্টগ্রামে জিরাতি কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা ব‌লেন তিনি।

এ সময় তি‌নি আরও বলেন, কৃষক ও জিরা‌তিরা হলো দে‌শ উন্নয়নের প্রথম সা‌রির সৈ‌নিক। তারা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তারা যে ফসল ফলায়, তা দিয়ে আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ‌্য জোগান হয়। তি‌নি এ সময় হাওরের সেচ সমস‌্যা, মাছ ধরার অজুহাতে অ‌বৈধভাবে খাল‌বিল শু‌কিয়ে ফেলার প্রবণতা, সার বীজের প্রাপ‌্যতা নি‌শ্চিত করা, ফসল সংরক্ষণ ও এগু‌লোর ন‌্যায‌্যমূল‌্য নি‌শ্চিত করতে সরকার কাজ করছে বলেও উপ‌স্থিত সবাইকে আশ্বস্ত করেন।

খাল‌-বিল, নদ-নদী শু‌কিয়ে যাওয়া প্রস‌ঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, মেঘনাসহ বড়বড় নদী গু‌লোও আজ নাব‌্যতা সঙ্কটে ভুগছে। হাওরের খাল‌-বিলগু‌লো শু‌কিয়ে যাচ্ছে। খাল খন‌ন কর্মসূচির মাধ‌্যমে স্থানীয়ভাবে খাল খনন করা সম্ভব। আর বড় নদনদীগু‌লো খনন করতে সরকা‌র চেষ্টা চা‌লিয়ে যা‌চ্ছে। তি‌নি আরো বলেন, হাওর এলাকায় এখন কৃষকরা কেবল ধান নয়, ধানের পাশাপা‌শি ভুট্টা, সব‌জি, হাঁসমুর‌গি পালন, মাছচাষসহ নানা‌বিধ অর্থনৈ‌তিক কর্মকা‌ণ্ড জ‌ড়িত। কাজেই হাওর বি‌পুল সম্ভাবনাময় এক জনপদ। সরকার হাওরের যো‌গা‌যোগ ব‌্যবস্থাসহ আর্থসামা‌জিক উন্নয়নে ব‌্যাপকভাবে কাজ করছে।

এ সময় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জিরা‌তি শ্রমিকদের কা‌ছে তাদের সম‌স‌্যাগু‌লো জানতে চান। বেশ কয়েকজন দিনমজুর ও শ্রমিক তাদের সেচ সমস‌্যা, রাস্তাঘাটের সংকট, খাওয়ার পা‌নির অভাব নিয়ে কথা বলেন। তখন জেলা প্রশাসককে এগু‌লো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। সভা শেষে উপদেষ্টা হাওরের বি‌ভিন্ন বোরো খে‌ত ঘুরে দে‌খেন। জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলশাদ জাহানের সঞ্চালনায় কৃষক সমাবেশে অন‌্যা‌ন্যের ম‌ধ্যে পু‌লিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, অষ্টগ্রামের কৃ‌ষি কর্মকর্তা অভিজিত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই, আমরা সবাই বাংলাদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১৩:৪১
নারায়ণগঞ্জ ও বন্দর প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা এখানে সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবেই আমরা সবাই এখানে আছি। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবসময় আছে। বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই। আশপাশে দেখবেন কীভাবে কী ঘটছে। আমাদের দেশে সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন।

গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিট থেকে স্নান উৎসবের লগ্ন শুরু হয়। যা শনিবার ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে।

পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানকার নিরাপত্তায় যারা জড়িত আছে তাদের আপনারা ধন্যবাদ দেবেন। তারা কিন্তু এবার খুব ভালোভাবে কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার নদীর পানি সবচেয়ে ভালো ছিল। এবার পুণ্যার্থীদের সংখ্যাও অনেক বেশি। আপনার সবাই ধৈর্য ধরে পুণ্যস্নান শেষ করবেন।

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে, নিরাপদে বসবাস করছে উল্লেখ করে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে একটা শ্রেণি ফায়দা লোটার জন্য অনেক মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিথ্যা সংবাদকে সত্য সংবাদ দিয়ে কাউন্টার করতে হবে। আপনারা সত্য ও সঠিক সংবাদ প্রকাশ করুন। সঠিক সংবাদ প্রকাশ করলে কেউ যদি মিথ্যা সংবাদ করে তা স্বাভাবিকভাবে বাতিল হয়ে যাবে। অনেকে মিথ্যা সংবাদ দিয়ে বেশি পয়সা আয় করে। আমাদের দেশের মিডিয়ার সঙ্গে অনেক বিদেশি মিডিয়ার ভালো সম্পর্ক রয়েছে, তারাও অনেক সময় মিথ্যা সংবাদ দিতে চায়। কিন্তু আপনারা সত্যি সংবাদ দিয়ে মিথ্যাকে কাউন্টার করবেন। এতে করে তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।

সরকারের অবস্থান থেকে তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো ভুল থাকে সেটা আপনারা প্রকাশ করেন। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ দেবেন না। সত্যি সংবাদ দেবেন।’

লাঙ্গলবন্দ এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে এই স্থানকে কীভাবে পর্যটন কেন্দ্র করা যায় সে বিষয়ে আমরা দেখব। পর্যটনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি একটা পুণ্যভূমি। এই জায়গাটা ধর্মীয় জায়গা। এই জায়গাটা পর্যটন কেন্দ্র করতে গিয়ে যেন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য যেন নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মের বিষয়টা সবচেয়ে বড়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ আয়োজন ভবিষ্যতে আরও যেন ভালোভাবে হয় এ জন্য সবসময় আমাদের চেষ্টা থাকবে। সব সময়ই নদীর পানিও যেন ভালো থাকে সেজন্য আমরা কাজ করব। নদীর পানিটা ভালো রাখা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, স্নানোৎসব উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সংকর সাহা ও জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে আমরা: প্রধান বিচারপতি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।’

গতকাল শনিবার রংপুরের স্থানীয় এক হোটেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘জুডিশিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের দেওয়া এ-সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজকের সেমিনারে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরেন।’

দেশের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের তার ঘোষিত সংস্কার রোডম্যাপ টেকসই করার উপায় উদ্ভাবনের আহবান জানিয়ে সেমিনারে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচারিক সংস্কার শুধু বিভিন্ন খাতভিত্তিক সংস্কারের স্থায়িত্বের মূল চাবিকাঠিই নয়, বরং এটি এখন নিজেই ‘সংস্কার’ শব্দের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বিচার বিভাগ হল রাষ্ট্রের একমাত্র অঙ্গ, যা বহু দশক ধরে নিজের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই দাবির কেন্দ্রে রয়েছে নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি নিজেরাই নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। গত আট মাসে এই প্রচেষ্টা অভূতপূর্ব গতি অর্জন করেছে। এখন লক্ষ্য হল সেই উদ্দেশ্য পূরণ করা এবং তা যেন ভবিষ্যতেও টিকে থাকে তা নিশ্চিত করা। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আমরা কখনও ক্ষমতার পূর্ণ পৃথকীকরণের লক্ষ্যের এতটা কাছাকাছি আসিনি। যদি এই সুযোগ কোনোভাবে নষ্ট হয়, তবে তা বিচার বিভাগের মর্যাদা, অখণ্ডতা এবং প্রাসঙ্গিকতার জন্য চরম ক্ষতিকর হবে।’

বিচার বিভাগ সংস্কারকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করার জন্য প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দেশের সব পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘দায়িত্ব গ্রহণের’ আহবান জানান।

প্রধান বিচারপতি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতায় ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপকে যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।


banner close