বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
২৬ চৈত্র ১৪৩১

৬ মাসে ১১৯ সাংবাদিককে নির্যাতন-হয়রানি: আসক

প্রতীকী ছবি
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৩ জুলাই, ২০২৩ ২২:০৯

চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে দেশে অন্তত ১১৯ জন সাংবাদিককে নির্যাতন ও হয়রানি করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন, এই ৬ মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সোমবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। গত ৬ মাসে ঢাকায় সর্বাধিক ২৯ জন এবং চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় ৮ জন করে সাংবাদিককে হয়রানি-নির্যাতন করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়কালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক। এ ছাড়া, বেআইনি আটকের অভিযোগ ও রহস্যজনক নিখোঁজ, সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন, সীমান্তে হত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে আসক জানায়, গত ৬ মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২৪টি মামলায় মোট আসামি ৬০। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৬ জন।

এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ৪ জন এবং গুলিতে ২ জনসহ মোট ৬ জন মারা গেছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে আসক জানিয়েছে।

এর মধ্যে র‌্যাবের হেফাজতে নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনাকে বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

এ ছাড়া একই সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ১৭৯টি। এতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৪২২ জন।

এর মধ্যে নরসিংদীতে ৩ জন নিহত, ঢাকায় ৭টি ঘটনায় ১৯২ জন আহত ও বরিশালে ১০টি ঘটনায় ১৩৯ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৬ মাসে অন্তত ১১ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।

একই সময়ে ৫টি ঘটনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৩টি বাড়িঘরসহ ১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় ১ জন নিহত ও অন্তত ৬২ জন আহত হয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় ১০৩টি বাড়ি ও ৩৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

গত ৬ মাসে যৌন হয়রানিকেন্দ্রিক সহিংসতা হয়েছে ১৫৪ জন নারী-পুরুষের ওপর, এর মধ্যে ৭৯ জন নারী ও ৭৫ জন পুরুষ। যৌন হয়রানির কারণে ১০ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২০ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন নারী। এ ছাড়া, ৬৬ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।

পারিবারিক নির্যাতন করা হয়েছে ২৫৩ জন নারীর ওপর। এর মধ্যে ১৫৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫৯ জন নারী। এ ছাড়া, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে ৩৮ জন নারীর ওপর। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতন করা হয়েছে ৭৪ জন নারীকে। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৩৪ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের পর আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। এ সময়কালে মোট ১৩ জন গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭ জন মারা গেছেন।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ধর্ষণের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের প্রায় সবকটি জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায় ২৭। এর পরই রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ২২, চট্টগ্রামে ১৬ এবং বগুড়ায় ১৫।

দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ৬ মাসে মোট ৮০৪ শিশুকে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে, এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ১০৯ শিশুকে। ১ ছেলে শিশুকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ৪৫ শিশু, বিভিন্ন সময়ে মোট ৮৭ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ৬ মাসে গণপিটুনিতে নিহত হন মোট ২৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, খুলনা বিভাগে ১ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন নিহত হয়েছেন।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সঙ্গে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।

দেশের ১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসক সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।


আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে এক যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ বছর ১৯ লাখ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

এরই মধ্যে সুষ্ঠু, সুন্দর ও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। প্রশ্নপত্র ফাঁস, গুজব, নকল বা অসদুপায় অবলম্বনের সাথে জড়িতদের ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেছে কমিটি।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের রুটিন অনুযায়ী ১০ এপ্রিল শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। এবারও বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হবে বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের ও সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র দিয়ে। নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ থেকে ২২ মে পর্যন্ত।

এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী রয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৭ লাখ এক হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ২৯১টি, প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৪টি।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এরমধ্যে ছাত্র এক লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ জন ছাত্রী। এই বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৭২৫টি। প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৩টি।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সর্বমোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৯২৮ জন।


কিহাক সাং পেলেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সম্মান সূচক নাগরিকত্ব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক আয়ে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেডে) পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে দেওয়া হয়েছে সম্মান সূচক নাগরিকত্ব।

চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী দিনে আজ বুধবার তার হাতে এই স্বীকৃতি তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর মাধ্যমে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি পেলেন এই দেশের নাগরিক না হয়েও ‘সম্মানিত নাগরিক’ মর্যাদা।

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সিহাক সাংয়ের হাতে নাগরিকত্বের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে কিহাক সাং তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।’

কিহাক সাং বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

কিহাক সাংসহ মোট পাঁচজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

উদ্ভাবনে-ফ্যাব্রিক লাগবে লিমিটেড, বিদেশী বিনিয়োগে-বিকাশ, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এবং ওয়ালটনকে এক্সেলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।

যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, ইন্ডিটেক্সের সিইও অস্কার গার্সিয়া মাসেইরাস এবং অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বিনিয়োগ বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

কিহাক সাং বাংলাদেশের শিল্পের সঙ্গে যে তার যাত্রা শুরু করেছিলেন, এখন তা এক শিল্প সামাজ্যে রূপ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রধম বিদেশি বিনিয়োগকারী।

ইয়াংওয়ান ১৯৮০ সালের মে মাসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল রপ্তানি খাতে প্রথম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এই শিল্পে নারী কর্মসংস্থানের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত।


বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বিশ্বকে বদলে দিতে বাংলাদেশে ব্যবসা নিয়ে আসার জন্য বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৯ এপ্রিল) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন-২০২৫ এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি একথা বলেন।
এ সম্মেলনের সার্বিক আয়োজন করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বকে বদলে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রেজি আইডিয়ার দেশ... বাংলাদেশ তা সম্ভব করেও তুলছে।’
বক্তব্য দেওয়ার সময় অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এক সময় আমরা একটি ফসল উৎপাদন করতাম। আমাদের নাগরিকরা কৃষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এখানে অন্য কোনো পেশা ছিল না। তিন-চতুর্থাংশ কৃষক ছিলেন ভূমিহীন কৃষক। তাদের কোনো ভূমি ছিল না।’
‘তারা ছোট একটি ভূমি লিজ নিয়ে, একটি ফসল উৎপাদন করতেন জীবিকা নির্বাহের জন্য। এখানকার মানুষকে কঠিন জীবন যাপন করতে হতো। কিন্তু আজ আমরা সব বড় বড় শিল্পগুলো নিয়ে কথা বলছি। বিভিন্ন দেশ থেকে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি আরও শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করতে। আমরা বড় বড় মার্কেট সম্পর্কে কথা বলছি। মেধাবী তরুণদের নিয়ে কথা বলছি,’ বলেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘এটিই বাংলাদেশ। অল্পসময়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আমরা এখানে এসেছি।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিহাক বাংলাদেশকে ভালোবাসেন, তিনি বাংলাদেশের জন্য কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রকৃতি ভালোবাসেন। এখন থেকে তিনি বাংলাদেশেরও বাসিন্দা।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন, তারা বাংলাদেশের নায়ক। তাদের সবার জন্য করতালি।’
স্পেন থেকে অস্কার গার্সিয়া, যুক্তরাজ্য থেকে রোজি উইন্টারটন এবং বাংলাদেশ থেকে নাসিম মঞ্জুর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশে ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
৭ এপ্রিল শুরু হওয়া চার দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে দেশের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগের সুযোগ এবং অর্থনৈতিক সংস্কার তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা, জুলাই বিপ্লবের পর সংঘটিত অর্থনৈতিক সংস্কারকে তুলে ধরা এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরির লক্ষ্যে এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিনিয়োগকারী, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং নীতিনির্ধারকরা।


পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপনে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপনে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা-সংক্রান্ত সভাশেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এ সময় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ব্যাপকভাবে বাংলা নববর্ষ পালন হবে। এ বিষয়টি সামনে রেখে এবার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য যা করা প্রয়োজন সেসব করা হচ্ছে।

নববর্ষ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি আছে কি না, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, কোনো ধরনের সিকিউরিটি থ্রেট (নিরাপত্তা হুমকি) নেই।

অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ মাসে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা যতটুকু সন্তুষ্ট আমিও ততটুকু সন্তুষ্ট।

বাটাসহ বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির শোরুমে ভাঙচুর করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব দোকানের সামনে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় পাশে বসা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রার নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে কি না, এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নেবে। সেখান থেকেই ১০ তারিখে সিদ্ধান্ত হবে। তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে আজকে আলোচনা হয়নি। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটা আয়োজন করে সেহেতু তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

এবারের উৎসবে প্রচুর জনসমাগম হবে। বিভিন্ন জায়গায় মেলাও হচ্ছে। বাঙালি ছাড়াও ২৬টি জাতিগোষ্ঠী এতে অংশগ্রহণ করবে বলেও জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা।


মিয়ানমার শিগগিরই সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার নাম যাচাই-বাছাই শুরু করবে: ড. খলিলুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার নাম যাচাই-বাছাই শুরু করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

ড. খলিলুর রহমান জানান, তিনি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রত্যর্পণ উপযুক্ত আড়াই লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে চিহ্নিত করেছে।

৭০ হাজার রোহিঙ্গার নাম ও ছবির বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৬টি ব্যাচে মোট ৮ লাখ রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তারা বাকি সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা যতদ্রুত সম্ভব যাচাই-বাছাই শেষ করবে।

বিমসটেক সম্মেলনের অর্জন সম্পর্কে ড. খলিলুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী দুই বছরের জন্য বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আঞ্চলিক জোটের (বিমসটেক) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি এই সংস্থাকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, ‘বিমসটেকের সদর দপ্তর বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত, আমরা আশাবাদী যে সব দেশ মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব।’

বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি উল্লেখ করেন তিনি বলেন, তবে ঢাকা এ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেবে।

সম্মেলনের সময় সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে সামুদ্রিক পরিবহন, বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে এবং সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।’

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলন সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয়।


ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪৯

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় অন্তত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এ নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এই সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী সবাইকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বিবৃতিতে বলেন, সোমবার বেশ কয়েকটি শহরে গাজায় সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় সংঘটিত সহিংস ও বেআইনি ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা জননিরাপত্তা এবং আইনের শাসনের অবমাননা। এখন পর্যন্ত, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে এবং এই নিন্দনীয় কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আরও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দৃঢ় প্রয়াসে পুলিশ গত রাতে অপরাধীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য বিক্ষোভের সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। এই সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী সবাইকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

তদন্তে সহায়তা করতে পারে এমন তথ্য থাকা যে কাউকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, যারা আমাদের সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায় তাদের জবাবদিহি করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, সরকার কোনো আইনসম্মত প্রতিবাদে বাধা দেয় না। তবে প্রতিবাদের নামে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।

শফিকুল আলম আরও জানান, এ ঘটনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, যখন আমরা বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে একটি সামিট আয়োজন করেছি, তখন দেশের অভ্যন্তরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের, আবার কিছু বিদেশি বিনিয়োগকারীর, যারা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রেখে এখানে বিনিয়োগ করেছিলেন। এসব প্রতিষ্ঠান আমাদের যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। যারা এই বর্বর ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে, তারা প্রকৃতপক্ষে কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার শত্রু।

এদিকে গতকাল সকালে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমকে জানান, গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে এবং পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।


মঙ্গল শোভাযাত্রার নামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ঢাবি: ফারুকী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আসন্ন পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠেয় চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হবে কিনা সে বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আগামী ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সভা হবে, সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্তের কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানাবে। তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে আজ কোনো আলোচনা হয়নি। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটা আয়োজন করে সেহেতু তারাই এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি আরও বলেন, চৈত্র-সংক্রান্তি ও নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা এবং সারা দেশজুড়ে বাঙালি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর কী কী অনুষ্ঠান হচ্ছে এর হাইলাইটগুলো নিয়ে আগামীকাল একটা সংবাদ সম্মেলন হবে। সেখানে আমরা লিখিত আকারে বিস্তারিত দিয়ে দেব কোথায়, কখন কী হবে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা কী নাম দিয়ে পালন করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করছে। তারাই আলোচনা করে নাম ঠিক করে আপনাদের জানাবেন। নাম পরিবর্তন হবে কী হবে না সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানাবে। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোভাযাত্রাটা করে। তাই তারাই নির্ধারণ করবেন।

সাংবাদিকরা তাকে আগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এর আগে বলেছেন যে এ বছর শোভাযাত্রা আরও বেশি ইনক্লুসিভ হবে, সেটা কীভাবে করবেন বা কী কী থাকছে?’ এর উত্তরে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকারী নাটক ও ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নির্দেশক কিছুটা নাটকীয়তা রেখে বলেন, এবারের শোভাযাত্রায় বাঙালিসহ অন্যান্য ২৬টি জাতিগোষ্ঠী অংশ নেবে। এটা সরকারি উদ্যোগে হবে। এখনই বান্দরবানে নৃ-গোষ্ঠীর আয়োজনে মেলা চলছে। চৈত্র সংক্রান্তিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী উৎসব করতে পারে। এর বাইরে কী কী থাকবে সেটা জানতে হলে অনুষ্ঠানে এসে দেখতে হবে। এখন বলে দিলে তো আর আগ্রহ থাকবে না।

শোভাযাত্রার নাম ইউনেসকো থেকে স্বীকৃত, সেটার নাম পরিবর্তনের বিষয়টা একা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে ছেড়ে দিচ্ছেন এখানে সরকারের কোনো ভূমিকা থাকবে কিনা জানতে চাইলে ফারুকী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে, তারা নেতৃত্বে থাকে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার সারা দেশ নিয়ে ভাবে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে। সরকার সবকিছু নিয়ে ভাবে। সরকার নিশ্চয়ই ভাববে।


হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে, কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১৩:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন, তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি উত্থাপন করেছি, তবে কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’

প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি চীনে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর শেষ করে পরবর্তীতে থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন এবং সেখানে তিনি শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চীন ও থাইল্যান্ড উভয় সফরই বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ করেছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অগ্রগতিতে উভয় পক্ষের প্রচেষ্টা প্রয়োজন। হোসেন বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।’

ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি সাংবাদিকদের বলেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে- এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে প্রধানমন্ত্রী মোদি সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে উপদেষ্টা হোসেন স্বীকার করেন, উভয় পক্ষই এই মনোভাব পোষণ করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দিক থেকেও একই ধরনের বক্তব্য আসছে।’

আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক’ বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বন্ধুরা সব সময় নির্বাচনের বিষয়টি উত্থাপন করে।

তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আলোচনায় বিষয়টি আসে, তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন, এমনকি গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যবিহীন দেশগুলোও প্রায়শই আমাদের নির্বাচন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে।’

ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে উপদেষ্টা বলেন, ভারত ভিসা দেবে কি দেবে না সেটা সম্পূর্ণ তাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে ভারতের ভিসা ইস্যু সাময়িকভাবে স্থগিত করেছি।’

তিনি বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোনো শূন্যতা তৈরি করে না। তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনো দেশ ভিসা স্থগিত করে, তখন মানুষ অন্যত্র বিকল্প অনুসন্ধানের প্রবণতা দেখায়।’

চীনকে সম্পৃক্ত করে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে হোসেন বলেন, ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই বাংলাদেশ সহযোগিতার জন্য উন্মুক্ত।

তিনি বলেন, সরকার উদার অবস্থান নিয়েছে। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত এবং মূল্যায়ন করব কোথায় বাংলাদেশের স্বার্থ সবচেয়ে ভালোভাবে পূরণ করা হচ্ছে।

তিস্তা প্রকল্পে চীনের একটি কোম্পানির সম্পৃক্ততাকে বাংলাদেশ সরকার স্বাগত জানানোর পর অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অগ্রগতিতে সময় লাগে। আমরা রাতারাতি এমন কোনো সমাধান আশা করছি না, যা তিস্তা সমস্যার দ্রুত সমাধান করবে।’

তিনি বলেন, ভারত বা চীন উভয় দেশের সঙ্গেই সহযোগিতা সম্ভব। কোনো বাধা নেই।

চীন সফর সম্পর্কে হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যখন শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ থাকে, তখন এটি অন্যান্য স্তরে সম্পর্কের অগ্রগতিকে সহজতর করে।’

তিনি বলেন, সফরকালে বেশ কয়েকটি দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টা ও চীনা প্রেসিডেন্ট পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমি বিশ্বাস করি এই সফর যৌক্তিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার নিশ্চিত করেছে যে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এক লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমার নাগরিক প্রত্যাবাসনের যোগ্য। তবে রাখাইন রাজ্যে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তাৎক্ষণিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

ইতালীয় ভিসা প্রাপ্তিতে বিলম্ব সম্পর্কে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিক্ষোভের বিষয়ে মন্তব্য করে হোসেন বলেন, রোমের সঙ্গে ঢাকা ধারাবাহিকভাবে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ভিসা আবেদনের সঙ্গে জমা পড়া কাগজপত্রের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিপুল সংখ্যক ভুয়া নথির হদিশ মিলেছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতালীয় কর্তৃপক্ষ বর্তমানে জমা দেওয়া নথিগুলোর সত্যতা যাচাই করছে এবং ফলস্বরূপ, এমনকি বৈধ কাগজপত্রের সঙ্গে আবেদনকারীরাও বিলম্ব এবং জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন।


বিশ্বের ক্ষমতাধর ৫০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    * সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বের শক্তিশালী ৫০ দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইউএস নিউজের করা তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের শক্তিশালী দেশের তালিকায় ৪৭তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে আয়ারল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় দেশকেও।

তালিকায় শীর্ষ পাঁচে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। ইউএস নিউজ জানিয়েছে, পত্রিকাটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থাকা এবং নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হওয়া ও অর্থনীতিতে জোরালো ভূমিকা রাখার বিষয় বিবেচনা করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

১২তম স্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে মোট ৮৯টি দেশ নিয়ে করা এ তালিকায় পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ভুটান ও মালদ্বীপের নাম পাওয়া যায়নি।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন রয়েছে তালিকার ১৪তম স্থানে। আর ইসরাইলের নাম রয়েছে ১০ম স্থানে।

এ ছাড়াও শীর্ষ ৫০টি দেশের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব ৯ম, ইরান ১৬তম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ১১তম, তুরস্ক ১৭তম, কাতার ১৯তম, কুয়েত ২৫তম, মিশর ৩২তম এবং জর্ডান ৫০তম অবস্থানে রয়েছে।

এদিকে এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া ৪৩তম ও বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মুসলমানের দেশ ইন্দোনেশিয়া ৩৫তম অবস্থানে রয়েছে।

পত্রিকাটি জানিয়েছে, বিশ্বে এমন কিছু দেশ রয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে আসে, বৈশ্বিক নীতিনির্ধারকদের আলোচনায় স্থান পায় এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ধারা নির্ধারণ করে। এ দেশগুলোর পররাষ্ট্রনীতি, সামরিক বাজেট এবং কূটনৈতিক অঙ্গীকারের ওপর নজর রাখে গোটা বিশ্ব। এদের প্রতিশ্রুতি আন্তর্জাতিক মহলে কখনো আস্থা, কখনো ভয়ের জন্ম দেয়। মূলত এই দেশগুলোই বিশ্বমঞ্চে নিজেদের শক্তি ও প্রভাব বলয়ে রেখেছে।

পাওয়ার সাবর‌্যাংকিং অনুযায়ী, একটি দেশের ‘ক্ষমতা’ নির্ধারণে ৬টি বৈশিষ্ট্য সমানভাবে বিবেচনা করা হয়, এগুলো হলো- বিশ্ব নেতৃত্বে ভূমিকা, অর্থনৈতিক প্রভাব, শক্তিশালী রপ্তানি খাত, রাজনৈতিক প্রভাব, আন্তর্জাতিক জোট ও মিত্রতা এবং শক্তিশালী সামরিক বাহিনী।

এই সূচকের তথ্য অনুযায়ী, যেসব দেশ এই বৈশিষ্ট্যগুলোতে এগিয়ে রয়েছে, তারাই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


বিনিয়োগের এত অনুকূল পরিবেশ আগে ছিল না: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিবেদক

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এত অনুকূল পরিবেশ এর আগে কখনো ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত আট মাসে, আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা সহজ করার লক্ষ্য নিয়েছি। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এমন অনুকূল পরিবেশ এর আগে দেশে কখনো ছিল না।’ তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত বিনিয়োগের পরিবেশ, বাণিজ্য এবং শ্রম-সম্পর্কিত সংস্কার বাংলাদেশে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে এবং দেশে আরও চীনা ও দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরিত করতে সহায়তা করবে।

ড. ইউনূস আরও জানান, বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রতি মাসের ১০ তারিখে কোরিয়ান ও চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মাসিক প্রাতঃরাশ বৈঠকের আয়োজন করবেন। সভাগুলি বিডা দ্বারা হোস্ট করার সময়, প্রধান উপদেষ্টা বিনিয়োগকারীদের দ্বারা উত্থাপিত বিস্তৃত সমস্যাগুলো শোনার জন্য তাদের মধ্যে কয়েকটিতে যোগ দেবেন।

প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে এবং সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য একটি ডেডিকেটেড হটলাইন এবং কল সেন্টার পরিষেবা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। তিনি আরও বলেন ‘যেকোনো বিনিয়োগকারী এই নম্বরে কল করে তাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারেন এবং আমরা সেই অনুযায়ী সাড়া দেব।’

অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল, মোবাইল টেলিযোগাযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিকস এবং আইটি পরিষেবার মতো সেক্টরে বড় বৈশ্বিক কোম্পানিগুলির প্রতিনিধিত্বকারী অন্তত ৩০ জন বিশিষ্ট চীনা বিনিয়োগকারী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কোম্পানি মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।

প্রফেসর ইউনূস বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে তার সাম্প্রতিক শীর্ষ বৈঠকের বিশদ তুলে ধরে বলেন, তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য শীর্ষ চীনা কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য তার প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। ‘আমি তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চীনা কোম্পানির কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে নিবেদিত চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মংলায় পরিকল্পিত চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল উভয়েই বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যেখানে চীন একটি সমুদ্রবন্দর আধুনিকীকরণ করতে প্রস্তুত। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি কোম্পানি বাংলাদেশকে তাদের দক্ষিণ এশীয় উৎপাদন ও অপারেশন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দিয়েছে উল্লেখ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমাদের এখানে একটি তৈরি বাজার রয়েছে এবং এছাড়াও, আপনি নেপাল এবং ভুটানের মতো ল্যান্ডলকড দেশগুলিকে পূরণ করতে পারেন। কিছু বৃহত্তর চীনা কোম্পানি বৈদ্যুতিক যান (ঊঠ) ট্রানজিশন, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস যেমন উইন্ড টারবাইন এবং অফশোর ফটোভোলটাইক সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে প্রস্তুত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত রয়েছে।

ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংয়ের নেতৃত্বে কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তারা এমন ঘোষণা দেন।

প্রতিনিধিদলে এলজির কর্মকর্তাসহ কোরিয়ার টেক্সটাইল, ফ্যাশন, স্পিনিং, লজিস্টিকস, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের বৃহৎ বেশ কয়েকটি কোম্পানির প্রতিনিধিরা ছিলেন।

প্রতিনিধিদলটি সোমবার চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শন করেন। ইয়াংওয়ান করপোরেশন পরিচালিত এই শিল্পপার্কে অনেক বিনিয়োগকারী তাৎক্ষণিকভাবে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের জন্য শ্রম, শিল্প, জ্বালানি ও বিনিয়োগ নীতিতে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘এমন সময়ে আপনারা বাংলাদেশে এসেছেন যখন আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করছি। এই নতুন বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ এখন সহজ ও ঝামেলামুক্ত।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনাদের জন্য বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করা আমাদের দায়িত্ব। আমি জানি গত ১৬ বছরে আপনাদের অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়েছে, আমরা সেই সময়ের ক্ষতিপূরণ দিতে চাই।’

১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে আসা কিহাক সাং প্রধান উপদেষ্টার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং দেশের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও সরকারের ইতিবাচক নীতির প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দেন যাতে তারা বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আপনাদের ব্যবসার গন্তব্য এবং অনুপ্রেরণার উৎস বানান। আপনারা কোটি কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রাখেন।’

কিহাক সাং ঘোষণা দেন, ইয়াংওয়ান করপোরেশন চট্টগ্রামে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি টেক্সটাইল ও ফ্যাশন কলেজ স্থাপন করবে, যা বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষ টেক্সটাইল হাবে পরিণত করতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে।

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেরিত সাম্প্রতিক চিঠিরও প্রশংসা করেন, যা নতুন মার্কিন প্রশাসনের নীতির কারণে উদ্ভূত উদ্বেগ নিরসনে সহায়ক হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চিঠিটি অত্যন্ত সুচিন্তিত ছিল’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের পরামর্শও দেন।

বাংলাদেশের সাপ্লাই চেইন কাঠামো অনন্য উল্লেখ করে কোরিয়ান ফ্যাশন ও রিটেইল খাতের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ থেকে পোশাক কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল খাতও দ্রুত বিকাশমান এবং বিশ্ব বাণিজ্য কাঠামোতে দেশটি শীর্ষ ওষুধ রপ্তানিকারক হতে পারে। একজন বিনিয়োগকারী দেশে একটি এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট) কারখানা স্থাপনের আগ্রহ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস প্রতিনিধিদলের একজন শীর্ষ কোরীয় সার্জনকে চট্টগ্রামে একটি হাসপাতাল স্থাপনের প্রস্তাব দেন।

বৈঠকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।


হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ৪ দিনের রিমান্ডে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালত তার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে আনা হলেও দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয়। এ সময় তাকে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে তুরিন আফরোজ নিজেই আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পক্ষে কথা বলতেন তুরিন আফরোজ। সুপ্রিম কোর্টের যে কয়েকজন আইনজীবী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সহযোগিতা করেছেন, তাদের অন্যতম তুরিন আফরোজ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন হাসিনা।
এর আগে, গত সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরার পশ্চিম থানা এলাকার বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আ. জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৩০ নম্বর আসামি তুরিন আফরোজ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে গঠন করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেয় প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রাখেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।


রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদ

পুলিশ কনস্টেবল মো. রিয়াদ হোসেন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। লাঠিপেটা না করে বরং লাঠিপেটার ভান করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দেখা যায় সেই কনস্টেবলকে।

পুলিশ সদস্যের কাজের ধরন দেখে তার প্রশংসা করে ভিডিওটি শেয়ার করেন নেটিজেনরা। সেই পুলিশ কনস্টেবলের নাম মো. রিয়াদ হোসেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত।

এবার পুলিশে ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম’ পদক পাচ্ছেন পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদ হোসেন। আন্দোলন দমনে বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশল প্রয়োগ করায় রিয়াদকে এই পদক দেওয়া হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশে গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌফিক আহমেদ এতে সই করেন, যা গত রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে নাগরিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিনব বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশলের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্য রিয়াদ হোসেনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা)’ প্রদান করা হলো। প্রজ্ঞাপনের তারিখ থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।

অতীতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক-বিপিএম এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম পদক পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ সদস্যদের পরিয়ে দেওয়া হতো। রিয়াদের বেলায় এবার তা ভিন্নভাবে দেওয়া হচ্ছে।


বিজিবির অভিযানে ১৫২ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মার্চ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৫২ কোটি ৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৭ কেজি ৯৫৮ গ্রাম স্বর্ণ, ৭৮০ গ্রাম রুপা, ২৫ হাজার ১৭৩টি শাড়ী, ১০ হাজার ৭০১টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ২২ হাজার ২৮০টি তৈরী পোশাক, ৩৩ হাজার ৮৮৯ মিটার থান কাপড়, ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৭টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ১ হাজার ৭৬২টি ইমিটেশন গহনা, ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ১৯৬টি আতশবাজি, ৬ হাজার ৯২৯ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ২৩৬ কেজি চা পাতা, ২৫ হাজার ৬৫৬ কেজি সুপারি, ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৪ কেজি চিনি, ১০ হাজার ৬৯০ কেজি সার, ৯৭ লিটার অকটেন, ২৫ হাজার ৯০০ কেজি কয়লা, ২১২ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৫২২টি মোবাইল, ৭৪৯টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৮৬ হাজার ৭৮১টি চশমা, ১২ হাজার ৭৩১ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৩ হাজার ৬৪১ কেজি ভোজ্য তেল, ৯৫১ কেজি পিঁয়াজ ও রসুন, ১৭ হাজার ২৩৫ কেজি জিরা, ৬ হাজার ৩২৫ কেজি কিসমিস, ১ লাখ ৩ হাজার ৯৫৩ পিস চকোলেট, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১০টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৭টি পিকআপ, ২টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৪টি ট্রলি, ১৭টি নৌকা, ২০টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬২টি মোটরসাইকেল এবং ৩৫টি বাইসাইকেল।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৩টি ওয়ান শুটারগান, ৪৬ রাউন্ড গুলি, ৩৩ হাজার ১০০ রাউন্ড সীসার গুলি।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণে মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৭ লাখ ৪৭ হাজার ১৬১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম হেরোইন, ৪ কেজি ১০৫ গ্রাম কোকেন, ১৬ হাজার ২৪২ বোতল ফেনসিডিল, ৯ হাজার ৩৭৭ বোতল বিদেশী মদ, ৪৪ লিটার বাংলা মদ, ১ হাজার ২৩৫ বোতল/ ক্যান বিয়ার, ২ হাজার ৬১১ কেজি গাঁজা, ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৩৯ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৪টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫ হাজার ৩৪০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫৫ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট, ১২ বোতল এলএসডি এবং ৮৪ হাজার ২০০ এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট।
অপারদিকে, সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩৪ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৩৭ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ৬৪৭ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।


banner close