রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

হাইকোর্টে প্রথমবার সালাউদ্দিন, বললেন ‘দুঃখজনক’

আদালতে দায়ের করা রিট শুনানিতে বুধবার হাইকোর্টে হাজির হন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৪ জুন, ২০২৩ ১৮:১১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২৩ ১৮:০৮

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এই প্রথম হাইকোর্টে হাজির হলেন। আদালতে উপস্থিত সাংবাদিকরা তার হাজিরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভেরি স্যাড (খুব দুঃখজনক)।’ নিজের দায়ের করা রিট শুনানির সময় বুধবার হাইকোর্টে হাজির হন তিনি।

শুনানি শেষে কোর্ট থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকেরা তাকে প্রশ্ন করেন। তবে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, ভেরি স্যাড। আমার পক্ষে যা বলার সব আমার আইনজীবী বলবেন। এ সময় সাংবাদিকেরা জানতে চান, তিনি প্রথম হাইকোর্টে আসলেন কিনা, উত্তরে তিনি ‘হ্যাঁ’ জবাব দেন।

এর আগে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও মো.বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতি-অর্থ পাচারের অভিযোগ বিষয়ে দুদকে চলা অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ধরনের মতামত প্রকাশ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

শুনানির শুরুতে সালাউদ্দিন আদালতে প্রবেশ করলে আদালত তাকে বসতে বলেন। পরে তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি, মোমতাজ উদ্দিন ফকির। সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন। অন্যদিকে ছিলেন, অনিক আর হক আর সায়েদুল হক সুমন।

মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করায় একাত্তর টেলিভিশনসহ ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গত সোমবার রিট দায়ের করেন। রিটে প্রচারিত পাবলিক ডোমেইনে থাকা ভুয়া ও মানহানিকর তথ্য অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

একইসঙ্গে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং পলিসি ২০১৪ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিতে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সেই মর্মে রুল জারির জন্য আবেদনে বলা হয়।

এই রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় পাবলিক ডোমেইনে থাকা কাজী সালাউদ্দিনেকে নিয়ে করা ‘মানহানিকর ও ভুয়া’ তথ্য অপসারণ করতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি আদালত। তবে ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতি-অর্থ পাচারের অভিযোগ বিষয়ে দুদকে চলা অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ধরনের মতামত প্রকাশ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।


সংস্কারের যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না: জি এম কাদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিবেদক

বর্তমান সরকারের দ্বারা সংস্কারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। তিনি বলেন, সংস্কারের যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। এই সংস্কার-পরবর্তী সংসদে পাস করতে হবে। সংস্কারের নাম করে নির্বাচন পেছানোর জন্য বাহানা করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির বর্ধিতসভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে একই সময়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আরেকটি বর্ধিতসভা করে রাজধানীর সেগুনবাগিচার জেকে টাওয়ারে। এতে সভাপতিত্ব করেন পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ। এই অংশটির কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিক, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন জেলার নেতারা সভায় বক্তব্য দেন।

জি এম কাদের বর্ধিতসভায় আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাস করতে হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনো দিনই কার্যকর হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কত বড় গর্তে পড়বে, তা তারা বুঝতে পারছে না। সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে। আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই, ডিসেম্বরের কথা বলা হয়েছে, হতে পারে, আগে হলেও আপত্তি নেই। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেশের সমস্যা সমাধানের প্রধান ধাপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করে ফেলা দরকার। কেননা, এই সরকার ৬ মাস পরে আর দেশ চালাতে পারবে না। কারণ তাদের হাতে পয়সা থাকবে না।

তিনি বলেন, দেশে যেসব বিচার চলছে তাতে কেউ বাধা দিচ্ছে না, বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থরাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না।

জি এম কাদের বলেন, ‘এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয় কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি।’

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদের নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী ও সুবিধাভোগী। কিন্তু আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।’

জি এম কাদের বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে তার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আন্তরিক সে বিষয়টির নিশ্চয়তা দিতে হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে কি না! বর্তমান সরকার তার দলকে নিয়ে কী ভূমিকা নেবে, তা পরিষ্কার করা দরকার। একতরফা নির্বাচন সমস্যা সমাধান আনবে না। একতরফা নির্বাচন হলে আগের মতোই সমস্যা থেকে যাবে।

দেশের প্রতিটি বিভাগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বর্ধিতসভার প্রথম দিন গতকাল শনিবার রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক হয়। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আজ রোববার বর্ধিতসভায় অংশ নেবেন ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ বিভাগের নেতারা। জাতীয় পার্টির সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। এরপর নির্বাচন কমিশনে একাধিক দফায় আবেদন করে সময় বাড়িয়েছে দলটি। এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর বর্ধিতসভার আয়োজন করা হয়।

সভায় সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, শেরিফা কাদের প্রমুখ।


আ.লীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময়ে ঝটিকা মিছিল করেছে। এই বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়টি সামনে আসছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে দুজনকে ধরেছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ও ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো রকম নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যদি এগুলো ভালোভাবে কন্ট্রোল করতে না পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও উন্নত করা যায়।

থানা পরিদর্শনের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ সদস্যদের থাকার জায়গা, খাওয়ার জায়গাগুলো কেমন এগুলো দেখার জন্যই মূলত আমরা পরিদর্শন করছি। তাদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে হলে তাদের থাকা এবং খাওয়ার জায়গার দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, নিচের সারির পুলিশ সদস্যদের সুবিধার জন্য একই বিভাগে পোস্টিংয়ের বিষয়ে চিন্তা করছে সরকার। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে আরও উন্নত হয় সেক্ষেত্রে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সদস্যদের বদলি করার পরও তারা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করছে না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের বদলি হওয়ার পরেও তারা কর্মস্থলে যোগদান করছে না, এমন প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা একটা তালিকা দিন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আপনারা জানেন, ঢাকায় প্রায় সবাই নতুন।’


বিএনপির ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবির সঙ্গে একমত এলডিপি ও ১২ দলীয় জোট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিবেদক

দাবিকৃত সময়ে নির্বাচন আদায় করতে ১২ দলীয় জোট এবং এলডিপির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। শরিকরা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বিএনপির দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন।

গতকাল শনিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথমে ১২ দলীয় জোট এবং পরে এলডিপির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের অপসারণ ও তাদের দ্রুত বিচারের বিষয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় ও আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে একমত হয়েছে বিএনপি।’

বৈঠকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান ১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার।

এ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ১২ দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে উপস্থিত বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন একরাম প্রমুখ।

সন্ধ্যা ৭টায় একই স্থানে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম খান। বৈঠকে এলডিপির নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অর্ন্তর্বতী সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে একমত হলেও এই মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো কর্মসূচি কিংবা বড় আন্দোলনে যেতে চাচ্ছে না বিএনপি। বরং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবে তারা। বিএনপি চায় না এই সরকার ব্যর্থ হোক- এ বিষয়গুলোই ১২ দলীয় জোট এবং এলডিপির সঙ্গে শেয়ার করেছেন নজরুল ইসলাম খান। জবাবে এলডিপি এবং ১২ দলীয় জোটের নেতারা বিএনপির সব সিদ্ধান্তের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানান।

তবে, ১২ দলীয় জোট ও এলডিপির শীর্ষ নেতারা নিজেদের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নিলে দেশের চলমান পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে ও অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। তাই চাপ তৈরি করে সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহদাত হোসেন সেলিম জানান, ‘যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে একটা কনভেনশন করার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় এখনো স্বৈরাচারের যেসব দোসর বসে আছে তাদের অপসারণ এবং পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের নানামুখী অপতৎপরতা মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি যেটা বলেছে, সেটা হলো এ বছরের ডিসেম্বর মাসটা হচ্ছে কাট অফ টাইম। এ বাইরে কোনো অবস্থাতেই যাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আমরা সবাই একমত হয়েছি। সরকার যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না দেয়, তাহলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে ক্ষমতায় বসাতে গণঅভ্যুত্থান হয়নি: নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়; এটা ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করা যায় এরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।’

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। যে দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তির জায়গাটা হচ্ছে এই দেশের তরুণরা। সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে আমাদের যে বক্তব্য ছিল - আমরা ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন সময় জনগণ রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন করেছে। আমরা ৯০ গণঅভ্যুত্থানের কথা বইয়ে পড়েছি; কিন্তু যে আকাঙ্ক্ষায় জনগণের রাস্তায় নেমে আসা সে আকাঙ্ক্ষাগুলো বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার ফলেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের শাসন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তাই আমরা চাই, এবারের জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়। জনগণের ভেতরে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এটা জাতির প্রতি আমাদের সবারই অঙ্গীকার।

সংস্কার বলতে এনসিপি মৌলিক সংস্কারের কথা বলছে জানিয়ে নাহিদ আরও বলেন, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্রকাঠামো গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে। কারণ, আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ ঘটেছিল। আমাদের সংবিধানে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক একটি কাঠামোর বীজ বুনেছিল। ফলে সেই রাষ্ট্রকাঠামোকে অক্ষুণ্ন রেখে যে-ই ক্ষমতায় যাক তার ভেতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকবে। সেই জায়গায় রাষ্ট্রের সংস্কার, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে এনসিপি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

এনসিপির ভাবনার কথা উল্লেখ করে দলটির আহ্বায়ক বলেন, এবার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের জাতির সামনে, জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন, জুলাই সনদ প্রয়োজন। জাতির সামনে আমাদের সবাই সেই অঙ্গীকার রাখতে হবে যেন আরেকটি স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা, আরেকটি ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আসার সব রাস্তা আমরা বন্ধ করে সামনের দিকে এগোবো। একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান, রাষ্ট্রকাঠামো তৈরিতে আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করব।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির পক্ষ থেকে থেকে অংশ নেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।


ট্রাম্প-শি-মোদি এসে কিছু করে দিয়ে যাবে না: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ আমাদেরকেই নির্মাণ করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমেরিকা থেকে এসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীন থেকে এসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে দিয়ে যাবে না। যা করার আমাদেরই করতে হবে। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে মনের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, হতেও হবে। যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল সেভাবেই এক হয়ে কাজ করতে হবে।’

গতকাল শনিবার রাজধানীতে ‘বাংলাদেশের ক্ষমতায়ন: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দেশের পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ ভালো হবে, খুব ভালো হবে।

তিনি বলেন, সবাই এখন ভিন্ন দিকে নজর দিচ্ছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ট্যারিফ দিয়েছে তা দেশের জন্য একটু বিপদে পড়ার মতোই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বাড়তি শুল্ক দ্রুত সমাধান করতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় মির্জা ফখরুল দেশের কৃষি খাতে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। মাঠেঘাটে যারা কাজ করছেন, তাদের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি চেষ্টা করছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি ড. ইউনূস সফল হবেন। আসুন আমরা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি।


ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তনের সব রাস্তা বন্ধে এনসিপি অঙ্গীকারাবদ্ধ: নাহিদ

জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন। জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। দেশে যেন কোনোভাবেই আর ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেন আর ফিরে না আসে, তার সব রাস্তা বন্ধ করতে এনসিপি অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদের নেতৃত্বে এনসিপির আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নেন।

এ সময় নাহিদ বলেন, ‘সংস্কার বলতে আমরা মৌলিক সংস্কারকে বুঝি, যেটি রাষ্ট্র কাঠামোর একটি আমূল ও গুণগত পরিবর্তন আনবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দলীয়করণ দেখেছি আমরা। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাষ্ট্রকাঠামোর বীজ বপন হয়েছিল আমাদের সংবিধানে।’

এ কারণে আগের রাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ন রেখে যে দলই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে, তাদের মধ্যেও ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকবে বলে মন্তব্য করেন এই এনসিপি নেতা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কেবল ব্যক্তির পরিবর্তন কিংবা একটি দলকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানো জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য ছিল না। বরং রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন করে, রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক এবং গুণগত সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে—এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল আামদের।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের কথা বইয়ে পড়েছি, কিন্তু যে আকাঙ্ক্ষায় জনগণ রাস্তায় নেমে আসে, সে আকাঙ্ক্ষাগুলো বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার ফলেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের শাসন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তাই আমরা চাই, এবারের জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়।’

‘জনগণের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এটা জাতির প্রতি আমাদের সবারই অঙ্গীকার। আরেকটি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেন বাংলাদেশে না আসে, তার সব রাস্তা বন্ধ করেই সামনে এগোতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর জন্য যার যার জায়গা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে।’

এ সময় রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থাকে জাতীয় নাগরিক পার্টি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান নাহিদ।

এর আগে, গত ২৪ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো ১৬৬টি সুপারিশে ওপর মতামত দেয় এনসিপি। যার মধ্যে ১১৩টিতে দলটি একমত হয়েছে বলে জানান এই নেতা। বাকি ২৯টিতে আংশিক দ্বিমত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ইতোমধ্যে ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।


ঢাবিকে শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করারও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা হবে।’

শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয় সংক্রান্ত সেমিনার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে। পাটের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। টেকসই ব্যবস্থার জন্য জেডিপিসি, এসএমইএফ, জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’

‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই—এই ধারণা ঠিক নয়। সরকারের সব উদ্যোগ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে,’ বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অ

নুষ্ঠানে বক্তব্য দেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি; ঢাকা নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ; ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকি উজ জামান; ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ; বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।

সময় পরিবেশ উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।


নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিল নিয়ে ডিএমপির বার্তা, গ্রেপ্তার ৬

আপডেটেড ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১৯:০৪
ইউএনবি

রাজধানীতে পরিচালিত পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এসব সংগঠনের সাম্প্রতিক ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ ও তাদের সমভাবাপন্ন বিভিন্ন সংগঠন ঝটিকা মিছিল করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারা পুলিশের গতিবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে দুয়েক মিনিট মিছিল করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এসব মিছিলের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।

তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। পৃথক অভিযানে রাজধানীতে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ছয় সদস্য হলেন- পল্লবী থানা ছাত্রলীগের ৫ নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নাইম, যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রিপন হোসেন ফাহিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. সোহেল, বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল রানা, বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়ামিন ও বাড্ডা ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার খান।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পল্লবী থানার বাউনিয়া এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম নাইমকে গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগ।

অন্যদিকে, মহানগর গোয়েন্দা সাইবার বিভাগের বিভাগের একটি দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. রিপন হোসেন ফাহিমকে গ্রেফতার করে। ডিবি-ওয়ারী বিভাগ কদমতলী থানাধীন মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে শেখ মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে।

এরপর শনিবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ডিবি সাইবারের একটি টিম রাজধানীর বাড্ডা থানার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে মো. সোহেল রানা ও মোহাম্মদ ইয়ামিনকে এবং শাহ আলি এলাকা হতে অপর একটি টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে আবুল বাশার খানকে গ্রেফতার করে।

ডিএমপি জানায়, এসব সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় সাধারণ জনগণকে এসব সংগঠনের বিচ্ছিন্ন অপতৎপরতা সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছে মহানগর পুলিশ।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল)-কে আশ্বস্ত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এএনএফআরইএল এর একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এই নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা এবং দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক মাইলফলক।’

এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, বাংলাদেশ নির্বাচন ও গণতন্ত্র কর্মসূচির পরামর্শক মে বুটয়, প্রচারাভিযান ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম কর্মকর্তা থারিন্ডু অ্যাবেইরাথনা, প্রোগ্রাম অফিসার আয়ান রহমান খান এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমেই।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এ কথা জানান।

এএনএফআরইএল হলো নাগরিক সমাজের একটি আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক যা এশিয়ায় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নয়নে নিবেদিত, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং নাগরিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বৈঠকে, এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষ করে নাগরিক সমাজের-নেতৃত্বাধীন স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কাঠামো পুনর্গঠনের অঙ্গীকার তুলে ধরেন।

প্রতিনিধিদলটি অংশীজন ম্যাপিং এবং চাহিদা নিরূপণের মাধ্যমে নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনী স্বচ্ছতা বৃদ্ধির সুযোগ চিহ্নিত করার বিষয়েও আলোচনা করে।

এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।


আ. লীগের মিছিল বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের মিছিলের বিষয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে তিনি বলেন, দুজনকে এ্ররই মধ্যে আটক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে মিছিল না করতে পারে সেজন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

পুলিশ সদস্যরা বদলির পরও পূর্বের জায়গায় থাকছেন এমন এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বদলির পরও আগের জায়গায় রয়েছেন এমন নির্দিষ্ট (স্পেসেফিক) তথ্য পেলে তাদের বিষয়ে ব্যস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বদলির ক্ষেত্রে সাধারণ পুলিশ সদস্যদের একই বিভাগে রাখা যায় কিনা সেটি ভাবছি। পরিবার থেকে দূরে থাকলে তাদের ছুটির সংখ্যা কমে যায়। তারা মাত্র ২০ দিন ছুটি পায়। অন্যান্য ছুটি পায় ২০ দিন, যা অনেকক্ষেত্রে আমরা দিতেও পারি না। এজন্য আমরা চেষ্টা করব নিচের পর্যায়ে একই বিভাগে দেওয়ার জন্য।

পুলিশ সদস্যদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা দেখা ও উন্নত করার জন্য থানা পরিদর্শন করছেন বলে জানান উপদেষ্টা।


প্রধান উপদেষ্টার কাছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা আজ বিকেলে 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন আজ বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন আজ বিকেল সাড়ে চারটায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।’

সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বরে নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন পারভীন হককে প্রধান করে ১০ সদস্যের নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে।

কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।

কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সরকার ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিকদের অধিকার এবং নারী বিষয়ক আরও চারটি নতুন সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়।


ধানে আর্সেনিকের ঝুঁকি বাড়ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কৃষিপ্রধান দেশগুলোর ধানে আর্সেনিকের উপস্থিতির আশঙ্কা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি ধানে আর্সেনিকের পরিমাণে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে। এই গবেষণা অনুসারে, দীর্ঘমেয়াদে অজৈব আর্সেনিকের সংস্পর্শে ফুসফুস, মূত্রাশয় ও ত্বকের ক্যানসার হতে পারে। এ ছাড়া হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

আর্সেনিক যখন অক্সিজেন বা সালফারের মতো অ-কার্বন উপাদানগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়, তখন অজৈব আর্সেনিক যৌগ তৈরি হয়। এটি সামুদ্রিক খাবারে পাওয়া জৈব আর্সেনিক যৌগের চেয়ে অনেক বেশি বিষাক্ত। নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মেইলম্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ ও চায়নিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের এই গবেষণা দেখিয়েছে, তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে ধানে অজৈব আর্সেনিকের ঘনত্ব বাড়ে।

গবেষকদের মতে, চাল বিশ্বের অনেক অঞ্চলের প্রধান খাদ্য। এই পরিবর্তন ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়ার জনগণের ক্যানসার, হৃদরোগ ও আর্সেনিক সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকোপ যথেষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে।

মেইলম্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান গবেষক লুইস জিস্কা বলেন, দক্ষিণ চীন এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো অঞ্চলের চাল এরই মধ্যে আর্সেনিক ও ক্যানসারের ঝুঁকির একটি বড় উৎস। তিনি বলেন, উচ্চ আর্সেনিকের মাত্রা সম্ভবত মাটিতে রাসায়নিক উপাদানের জলবায়ু-সম্পর্কিত পরিবর্তনের কারণে ঘটে। এতে ধানের দানায় আর্সেনিক সহজে শোষিত হয়।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, বর্তমান নীতি অপরিবর্তিত থাকলে ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি বাড়বে। এটি প্যারিস চুক্তিতে উল্লিখিত ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এই সীমা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো প্রশমিত করতে সহায়তা করবে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ড ৪২০ পার্টস পার মিলিয়নে (পিপিএম) পৌঁছেছে। এটি প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে দেড়গুণ বেশি এবং গত ৮ লাখ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গবেষকরা তাদের গবেষণায় ১০ বছর ধরে মাঠে ২৮টি ধানের জাতের ওপর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের প্রভাব পরিমাপ করেছেন। তারা ‘ফ্রি-এয়ার কার্বন ডাইঅক্সাইড এনরিচমেন্ট’ নামক একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, যেখানে নির্দিষ্ট এলাকায় কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বাড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়া উন্নত মডেলিং কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।

এই গবেষণা বিজ্ঞানীদের সাতটি এশীয় দেশ- বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের ধানে অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা ও ক্যানসারের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি অনুমান করতে সাহায্য করেছে।

জিস্কা বলেন, ‘আমরা দেখেছি, তাপমাত্রা ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের যুগপৎ বৃদ্ধি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে জন্মানো একাধিক ধানের প্রজাতিতে অজৈব আর্সেনিককে সমন্বিতভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই বৃদ্ধি চাল গ্রহণকারী জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যগত পরিণতি পরিবর্তন করবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এখন পর্যন্ত ধানে আর্সেনিক জমার ওপর কার্বন ডাইঅক্সাইড ও তাপমাত্রা বাড়ার সম্মিলিত প্রভাব বিস্তারিতভাবে অধ্যয়ন করা হয়নি।

গবেষকরা ভবিষ্যতে আর্সেনিকের সংস্পর্শ কমাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন। জিস্কা বলেন, এর মধ্যে আর্সেনিকের শোষণ কমানোর জন্য উদ্ভিদ প্রজনন, ধানখেতে মাটির উন্নত ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াকরণের উন্নত পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত।

আফ্রিকা রিসার্চ সেন্টারের সহযোগী গবেষক জিওফ্রে ওনাগা বলেছেন, চাল ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে আর্সেনিকের সংযোগ বিশ্বাসযোগ্য। তিনি উল্লেখ করেন, রান্নার সময় চালে আর্সেনিকের মাত্রা কমাতে একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি বলেন, গবেষণা দেখিয়েছে, রান্নার জন্য ব্যবহৃত চালের দানার অনুপাত, ধোয়ার জন্য ব্যবহৃত পানির পরিমাণ, রান্নার পাত্রের ধরন ও রান্নার প্রক্রিয়ার দৈর্ঘ্য রান্না করা চালে আর্সেনিকের মাত্রা কমাতে পারে।

ওনাগা বলেন, ধান চাষের সময় সিলিকন, ফসফরাস ও লোহার মতো খনিজ পুষ্টি উপাদান যোগ করলে ফসলে আর্সেনিকের শোষণ কমিয়ে ধানের দানায় আর্সেনিকের জমা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যেতে পারে। তিনি বলেন, ফসফরাস ও সিলিকন আর্সেনিকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তাদের পরিপূরক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। ফলস্বরূপ এই খনিজ পুষ্টির বাহ্যিক প্রয়োগ মাটি থেকে আর্সেনিক শোষণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান বিজ্ঞানী জওহর আলী বলেন, গবেষকরা উন্নত আর্সেনিক সহনশীল ধানের জাত তৈরি করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে উন্নত ও উচ্চফলনশীল প্রজাতি রয়েছে, যা ধানের দানায় আর্সেনিক কমিয়েছে। তবে নতুন আর্সেনিকমুক্ত ধানের জাত তৈরি ও মূলধারায় আনতে তহবিলের প্রয়োজন।’

সূত্র: আজকের পত্রিকা


হাইকোর্টের ৪৮টি বেঞ্চে কাল থেকে বিচারকাজ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঈদুল ফিতরের ছুটি, সরকারি ও অবকাশকালীন ছুটি শেষে কাল রোববার ২০ এপ্রিল থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ৪৮টি বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

এর মধ্যে রয়েছে ৩০টি দ্বৈত বেঞ্চ এবং ১৮টি একক হাইকোর্ট বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি নির্দেশিত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ২০২৫ সালের ৯৪ নং বেঞ্চ গঠন বিধিতে বলা হয়েছে, ২০ এপ্রিল রোববার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট হতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য নিম্নে উল্লেখিত বেঞ্চসমূহ গঠন করা হইল।

দুজন করে বিচারপতির সমন্বয়ে যে ৩০টি (ডিভিশন) দ্বৈত বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে সেগুলো হলো: বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. মনসুর আলমের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি জে. বি. এম. হাসান ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদী'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি মোঃ তৌফিক ইনামের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এ, কে, এম, জহিরুল হকের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি এ, এস, এম, আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজা'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীম ও বিচারপতি কে, এম, ইমরুল কায়েশের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি কে, এম, হাফিজুল আলম ও বিচারপতি মো. আব্দুল মান্নানের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা'র ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের ডিভিশন বেঞ্চ।

১৮টি একক হাইকোর্ট বেঞ্চে যারা বিচারকাজ পরিচালনা করবেন তারা হলেন: বিচারপতি আবদুর রব, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস, বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান, বিচারপতি ফরিদ আহমেদ, বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের, বিচারপতি মাহমুদুল হক, বিচারপতি জাফর আহমেদ, বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি মো. সেলিম, বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিচারপতি মো. খায়রুল আলম, বিচারপতি আহমেদ সোহেল, বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদার, বিচারপতি মোঃ আতাবুল্লাহ, বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি এ, কে, এম রবিউল হাসান।

এসব বেঞ্চ সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার দিয়ে গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। গত ২০ মার্চ থেকে ছুটি ও অবকাশের কারণে সুপ্রিম কোর্টে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে, এ সময়ে জরুরি মামলা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পত্তি হয় অবকাশকালীন বেঞ্চ ও আপিল বিভাগে চেম্বার কোর্টে।


banner close