শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ গোলাম মোস্তফা ঘটনাটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
তুরস্কে ভূমিকম্প পরবর্তী মানবিক সহায়তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি হিসেবে উদ্ধারকাজ পরিচালনাকারী বাংলাদেশি দলকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক দিয়েছে দেশটি।
বুধবার আঃন্তবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি দলকে বিশেষ এ সম্মাননা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বাংলাদেশের পক্ষে এই সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল এবং উদ্ধারকারী দলের নেতা লে. কর্নেল মো. রুহুল আমিন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে সহায়তা চেয়ে তুরস্ক বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের তত্ত্বাবধানে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে ৬০ সদস্যের একটি বিশেষ উদ্ধারকারী দল তুরস্কে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
উদ্ধারকাজের অংশ হিসেবে দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গাজিয়ানতেপ প্রদেশের আদিয়ামান এবং হাতাই এ উদ্ধার অভিযান ও চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়। বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দলটি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ১২০ কার্টন খাবার এবং ৭২টি তাবু বিতরণ করে। এছাড়া মেডিকেল টিমটি ১০৪ জনকে চিকিৎসা সেবা দেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৩২ কার্টন ওষুধ বিতরণসহ ভূমিকম্পের ফলে আঘাতপ্রাপ্ত ও মানসিক ট্রমাগ্রস্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবাও দেয়া হয়। এমন বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের কারণেই বাংলাদেশকে এই বিশেষ স্বীকৃতি দিল তুরস্ক।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, রেলওয়ের হাসপাতালগুলোতে রেলকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন থাকা চিকিৎসকদের এখানে পদায়ন করা হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে।
রেলওয়ের হাসপাতালগুলো নিয়ে নতুন এই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন বিভিন্ন বিভাগ বা দপ্তরে আলাদা আলাদা করে কাজ করা যাবে না। সবাই সরকারের হয়ে কাজ করবেন, জনগণের জন্য কাজ করবেন। আর নতুন ধরনের কোনো স্থাপনা এই মুহূর্তে করা হবে না।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম নগরের সিআরবিতে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
হাসপাতাল পরিচালনা ও সেবার মান বাড়াতে চারটি নির্দেশনা দিয়ে রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিকিৎসক এই হাসপাতালে সংযুক্তি দিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও খাবার সরবরাহ করবে। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামকে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
এর আগে উপদেষ্টা চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও স্থাপনা ঘুরে দেখেন। এরপর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক, রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করেন। এই সময় কর্মকর্তারা রোগী ভর্তি না হওয়া ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ হাসপাতাল পরিচালনায় বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। তাঁরা উপদেষ্টাকে জানান, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। আবার রোগী ভর্তি হলেও কিছু বিধির কারণে সব রোগীকে খাবার সরবরাহ করা যায় না।
পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘হাসপাতালটি ঘুরে দেখলাম। এ ধরনের হাসপাতাল দেশের আরও বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপে শয্যা খালি থাকে না। কিন্তু এখানে (রেলওয়ে হাসপাতাল) শয্যাগুলো খালি পড়ে আছে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে। এর আওতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসক, খাবার, যন্ত্রপাতি ও ওষুধ দেবে।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ের অধীন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পাকশী, লালমনিরহাট ও সৈয়দপুরে রেলওয়ে হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে ২৭০টি শয্যা রয়েছে। তবে হাসপাতালগুলো প্রায় সময় রোগী শূন্য থাকে।
এদিকে আজ সকাল আটটায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলওয়ে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন মেরামত কারখানা, ডিজেল ওয়ার্কশপ কারখানা, রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ইউরোপিয়ান ক্লাব ও রেলওয়ে জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এ সময় এসব স্থাপনার পরিবেশ ও মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত কারখানাকে ওয়ার্কশপে উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলছে। তখন বাইরে থেকে ইঞ্জিন ও কোচের যন্ত্রপাতি এনে এখানে সংযোজন করা যাবে। এতে সময় ও অর্থ-দুটিই সাশ্রয় হবে। বর্তমানে এসব ইঞ্জিন ও কোচ আনতে হলে দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দিতে হয়। এরপর তারা তৈরি করে এখানে পাঠায়। এতে প্রচুর সময় লাগে।
রেলওয়ের স্থাপনা ও হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে দুপুরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপদেষ্টা।
জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্য লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
আজ শুক্রবার তুরস্কে ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ এর ফাঁকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খানের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এই আশ্বাস দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে দুই উপদেষ্টা সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসি’র অবস্থানের জন্য সংস্থাটির প্রশংসা করেন।
দুই উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার ও সংকটের চূড়ান্ত সমাধানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও আইসিসি’র মধ্যে সব ধরনের সম্পৃক্ততার দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন আইসিসি’র প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোম সংবিধি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।
বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে দৃশ্যমান সহযোগিতা অন্বেষণে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
উভয় পক্ষই আগামী দিনে বিদ্যমান সম্পৃক্ততার মাত্রা আরো বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ তুরস্কের আনাতোলিয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ শুরু হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ফোরামের আয়োজন করেছে।
বিশ্ব নেতা, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছে এডিএফ। এই ফোরামের মাধ্যমে কীভাবে কূটনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায় এবং একটি বিভক্ত বিশ্বে সম্মিলিত পদক্ষেপের একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়, তা অনুসন্ধান করা হবে।
২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধি, পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজার জনেরও বেশি অতিথি ফোরামে অংশগ্রহণ করেছেন।
৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ পুলিশের পোশাক ও লোগো পরিবর্তনের প্রস্তাব ওঠেছিল। পুলিশের বর্তমান মনোগ্রাম বা লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নতুন লোগো চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এতে স্থান পেয়েছে দেশের জাতীয় ফুল শাপলা, ধান ও গমের শীষ এবং পাটপাতা। পাটপাতার ওপরে উজ্জ্বলভাবে লেখা রয়েছে— ‘পুলিশ’।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (লজিস্টিকস) নাছিমা আক্তারের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, শিগগিরই মন্ত্রণালয় নতুন লোগোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান মনোগ্রাম বা লোগো পরিবর্তনের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নতুন লোগো চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও পেয়েছে। এখন শুধু প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষা।
প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই নতুন লোগো পুলিশ বাহিনীর সব জেলা ও ইউনিটে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এর অংশ হিসেবে ইউনিফর্ম, পতাকা, সাইনবোর্ডসহ সব ধরনের সংশ্লিষ্ট সামগ্রীতে নতুন লোগোর ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুব শিগগিরই একযোগে সারা দেশে পুলিশের সব ইউনিটে নতুন মনোগ্রামের ব্যবহার শুরু হবে বলে জানা গেছে।
চৈত্র মাস শেষের দিকে। প্রকৃতিতে প্রচণ্ড দাবদাহ। সচরাচর এই সময়ে এমন গরমই থাকে। তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টির উপস্থিতে এই তাপমাত্রা কিছুটা কমে থাকে। এ বছর প্রকৃতিতে কম বৃষ্টিপাতই হয়েছে বলা যায়। কিছুদিন আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখীর সঙ্গে হয়েছে বৃষ্টিপাত। আর গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া-কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। এতে করে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা কিছুটা কমার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে মাঝারি থেকে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয়ের আওতায় প্রবেশ করেছে দেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি। এর ফলে দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকায় আগামী কিছুদিন বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)।
বিডব্লিউওটি জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় ক্রান্তীয় বৃষ্টিবলয় এটি। যা গতকাল এবং আজ চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে বেশি সক্রিয় হতে পারে এবং ১৪ এপ্রিল থেকে দেশের অনেক এলাকায় সক্রিয় হতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকবে সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে। মাঝারি ধরনের সক্রিয় থাকবে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে এবং কম সক্রিয় থাকবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশে।
সংস্থাটি জানায়, এই বৃষ্টিবলয় গতকাল ১০ এপ্রিল থেকে আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সক্রিয় থাকবে। এই ১৩ দিনের বৃষ্টিবলয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত হতে পারে। বৃষ্টিবলয়টি আজ উত্তরবঙ্গ, রংপুর বিভাগ ও কক্সবাজার হয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারে এবং ২২ এপ্রিল সিলেট হয়ে দেশত্যাগ করতে পারে। বৃষ্টিবলয় চলাকালে দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় পানি সেচের চাহিদা পূরণ হতে পারে। এ ছাড়া বৃষ্টিবলয় চলাকালে দেশের আকাশ অধিকাংশ এলাকায় আংশিক মেঘলা থাকতে পারে এবং অধিক সক্রিয় এলাকায় মেঘলা থাকতে পারে। এই সময়ে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে আকস্মিকভাবে ও স্বল্প স্থায়ীভাবে। হঠাৎ উত্তর-পশ্চিমে কালো মেঘ প্রচণ্ড দমকা হাওয়া, তারপর বজ্রসহ বৃষ্টি। এরপর আবহাওয়া পরিষ্কার হতে পারে।
বিডব্লিউওটি জানায়, এই সময়ে বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ চলতে পারে। বৃষ্টিবলয়ের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।
সংস্থাটি আরও জানায়, বৃষ্টিবলয়ের এই সময়ে ঢাকায় ৫০ থেকে ৭০ মিলিমিটার, খুলনা বিভাগে ২০ থেকে ৩০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগে ২০ থেকে ৩৫ মিলিমিটার, সিলেটে ৯০ থেকে ১৩০ মিলিমিটার, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫০ থেকে ৭০ মিলিমিটার, রাজশাহী বিভাগে ৩০ থেকে ৪৫ মিলিমিটার, রংপুরে ৬০ থেকে ৯০ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর যে দাবি উঠেছে, তা পরিবর্তন করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি বা পিএসসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানায় পিএসসি। তবে আগামী ২৭ জুন অনুষ্ঠেয় ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগস্টের প্রথম দিকে এই পরীক্ষা হতে পারে।
পেছাবে না ৪৬ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা:
জানা গেছে, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার আন্দোলন করেছেন কিছু চাকরি প্রার্থী পরীক্ষার্থী। লিখিত পরীক্ষা পেছানো না হলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করার ঘোষণাও দেন তারা। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি গতকাল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পিএসসি ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবির পক্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছে। কমিশনকে বর্তমানে ৪৪, ৪৫, ৪৬ ও ৪৭তম বিসিএসসহ নন-ক্যাডারের বিভিন্ন নিয়োগ সংক্রান্ত জট নিরসনকল্পে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হচ্ছে। পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারি কর্ম কমিশন প্রার্থীদের সার্বিক প্রস্তুতির পাশাপাশি তাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার ইতি টানার বিষয়গুলো সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিসিএস পরীক্ষাসহ অন্যান্য বড় বড় পরীক্ষা (নন-ক্যাডার, সিনিয়র স্কেল, বিভাগীয় পরীক্ষা) প্রস্তুতিতে প্রশ্নপত্র ছাপানো, উত্তরপত্র ছাপানো এবং বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ বিপিএসসির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। যেহেতু বিপিএসসির নিজস্ব অবকাঠামো নেই, তাই এসব কাজ নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অধিকন্তু পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের প্রাধিকারভুক্ত শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এসএসসি/এইচএসসির মতো পরীক্ষা, ছুটি ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করত বিপিএসসির প্রস্তাবিত পরীক্ষাগুলোর জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে থাকে। যেহেতু পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য একই সঙ্গে অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয়, তাই বিষয়টি জটিল। সার্বিক বিবেচনায় বিপিএসসি মনে করে বিসিএস ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭সহ বিভিন্ন নন-ক্যাডার ও অন্যান্য পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনকল্পে আগামী ৮ মে বিসিএস ৪৬তম লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তা পরিবর্তন করা বাস্তবসম্মত নয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৪৪তম মৌখিক পরীক্ষা ও ৪৬তম লিখিত পরীক্ষা একই দিনে নির্ধারিত হলে সে ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকমিশনকে অবগত করা হলে মৌখিক পরীক্ষার বিকল্প তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।’
সার্বিক বিষয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রার্থীসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছে পিএসসি।
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত
৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগস্টের প্রথম দিকে এই পরীক্ষা হতে পারে। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৭ জুন এই পরীক্ষার হওয়ার কথা ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর পিএসসির উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
২০২৪ সালে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল । এই বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডার পদে ৩,৪৮৭ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ২০১ জন নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ চাকরিপ্রার্থী।
বর্তমানে চারটি বিসিএস পরীক্ষার জট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো বিসিএস প্রক্রিয়া চলছে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে। এই চারটির মধ্যে ৪৪তম, ৪৫তম এবং ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়েছে ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা করছে বিদ্যমান বিসিএস পরীক্ষাগুলোর জট দ্রুত শেষ করে পরবর্তীতে প্রতিটি বিসিএস এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার। পাশাপাশি বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারের কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, তাতে সুপারিশ করা হয়েছে— দেড় বছরের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার। এর মধ্যে প্রথম এক বছরে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে এবং পরবর্তী ছয় মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ শেষ করতে হবে।
অবশ্য এই নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২১ সালে পিএসসি এক বছরে বিসিএস শেষ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিল, কিন্তু তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। বরং পূর্বের পরীক্ষাগুলোর জট এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশের অনেক নদী এখন ভয়াবহ পরিবেশগত সংকটের মুখে। সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশের ৮১টি নদী শুষ্ক মৌসুমে প্রায় পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।
‘বাংলাদেশের শুকিয়ে যাওয়া নদী’ শিরোনামে একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)। সংস্থাটি দেশের পরিবেশ ও নদী নিয়ে গবেষণা করে আসছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, একসময় যেসব নদী কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় অর্থনীতির প্রাণ ছিল, বর্তমানে সেগুলোর অনেকটাই শুকিয়ে গেছে বা তাদের তলদেশে প্রচণ্ড পলি জমে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
এই গবেষণা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে খুলনা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া অঞ্চল। এসব জায়গায় দূষণ, পলি জমা এবং দ্রুত নগরায়নের কারণে প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।
‘এই অবনতি কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং মানুষের জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। নদীগুলোর গুরুত্ব শুধু পরিবেশগত নয়, মানবিক জীবনধারার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত,’ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
আরডিআরসি জানিয়েছে, খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি নদী শুকিয়ে গেছে, যার সংখ্যা ২৫। এরপর রাজশাহীতে ২০টি, রংপুরে ১৫টি, চট্টগ্রামে ৬টি, ময়মনসিংহে ৫টি, ঢাকায় ৪টি এবং বরিশাল ও সিলেটে ৩টি করে নদী এই সংকটে পড়েছে।
শুকিয়ে যাওয়া ৮১টি নদীর তালিকায় রয়েছে: আলয়, আত্রাই, বাঘবতী, বাঙালী, বড়াল, বেতনা, ভৈরব, ভদ্রাবতী, ভোলা, ভুল্লী, বিলাস, বুড়িখোরা, চন্দনা, চন্দ্রাবতী, চিকনাই, চিত্রা, চুনা, ধলাই, ধলেশ্বরী, ধরলা, ঢেপা, দুধকুমার, ফটকি, গলঘেসিয়া, গাংনাই, ঘাঘট, গোমতী, গনেশ্বরী, গড়াই ও গুমানী।
এ ছাড়াও আছে হানু, হরিহর, হিশনা, হোজা, হুরা সাগর, ইছামতী, যমুনার কিছু শাখা, কাহুয়া, কাকসিয়ালি, কালিগঙ্গা, কালপানি, করতোয়া, কাটাখালী, খাকদোন, খোলপেটুয়া, কোহেলিয়া, কপোতাক্ষ, কুলিক, কুমার, কুশিয়ারা, মহানন্দা, মানস, মাথাভাঙ্গা, মহিষাবান, মরিচাপ, ময়ূর, মুহুরী ও মুরাদিয়া।
তালিকার বাকি নদীগুলো হলো, নবগঙ্গা, নাগর, নারদ, নরসুন্দা, পদ্মার কিছু শাখা, পাগলা, পুনর্ভবা, সন্ধ্যা, সেলোনিয়া, সাগরখালী, শালিখা, শিব, শোলমারি, শুক, সোমেশ্বরী, সোনাই, সুখদহ, সুরমা, টাঙ্গন, তিস্তা, তিতাস, তুলসীগঙ্গা ও লেঙ্গা।
গবেষণায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-মেঘনা (বিজিএম) অববাহিকার ওপরও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উজানে বাঁধ নির্মাণ ও পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ফলে এসব নদীতে প্রাকৃতিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে এসব নদীর ওপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষের জীবনধারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
‘জলস্তর অপ্রত্যাশিতভাবে ওঠানামা করছে, ফলে নদীনির্ভর মানুষগুলোর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। শুধু মানুষই নয়—বন্যপ্রাণী, জলজ বাসস্থান, পুরো প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে,’ বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ অবস্থায় নদী দূষণ কমানো, ভাঙন রোধ এবং পানির প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের ওপর জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আরডিআরসি।
তবে গবেষণায় এটিও স্পষ্ট করা হয়েছে যে, শুধু জাতীয় পর্যায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।
‘অনেক নদীই আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবাহিত। তাই বাংলাদেশের উচিত উজানের দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করা। একমাত্র যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা নিশ্চিত করতে পারি- নদীগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকে থাকবে,’ বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে প্রায় ২৪,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী, খাল ও স্রোতধারা রয়েছে। বর্ষাকালে এর মধ্যে প্রায় ৬,০০০ কিলোমিটার নৌচলাচলের উপযোগী থাকে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে এই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৩,৮০০ কিলোমিটারে।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ গোলাম মোস্তফা ঘটনাটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে,রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪। এর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে। উৎপত্তিস্থলে ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের 'মঙ্গল শোভাযাত্রা'র নাম পরিবর্তন করে এই আয়োজনের আগের নাম অর্থাৎ 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' রাখা হয়েছে। সেই হিসেবে এবারের বর্ষবরণ এই নামে উদযাপন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বলছে, নতুন নাম নয় বরং আগের নামটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এই পুনরুদ্ধার করা নাম প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ।
তারা বলছেন, এই আয়োজনকে 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' হিসেবেই আখ্যায়িত করা হবে।
ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের দপ্তর সম্পাদক মাঈন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
এই অংশের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাগীব নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি।
বাংলা নববর্ষ বরণের শোভাযাত্রার নাম পুনরুদ্ধারের বিষয়টি 'ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক মবের' নিকট অন্তবর্তীকালীন সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ বলে মনে করে ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্ষবরণ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তিত নামকে প্রত্যাখ্যান করে 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' হিসেবেই সর্বত্র আখ্যায়িত করা হবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক মবের অনুগত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত প্রতিহত করা হবে।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের বিশাল কর্মযজ্ঞ শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রয়াসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় শিক্ষকদের মধ্যে।
সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের নূন্যতম সুযোগ রাখা হয়নি দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, মোটিফ তৈরি বিষয়ক নানাবিধ বিতর্কিত সিদ্ধান্ত তারা শিক্ষার্থীদের মতের বিপরীতে গিয়ে গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে গণরোষের মুখে পরিবর্তন করতে বাধ্য হন।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার পক্ষে তরমুজের ফালি নির্মাণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, কতৃপক্ষ সেটিতে প্রাথমিকভাবে অস্বীকৃতি জানান এবং গোয়েন্দা সংস্কার অনুমোদন না থাকাকে কারণ হিসেবে উপস্থাপন করেন।
যদিও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের আনন্দ শোভাযাত্রায় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের লড়াই ও সংগ্রামের সাথে সংহতি জানিয়ে তাদের প্রতীক হিসেবে তরমুজের মোটিফ রাখা হয়েছে।
এই শোভাযাত্রা আয়োজনে শুরু থেকেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার নগ্ন হস্তক্ষেপ প্রত্যক্ষ করে আসছে দাবি করে ছাত্র ইউনিয়ন বলছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের মূল অংশীজন চারুকলার বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা মিলেই অর্থ-উত্তোলনসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন, কোনো মন্ত্রণালয়ের সাথে এর কোনো অতীত সংযোগ নেই।
এরশাদ স্বৈরাচারের অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের হাতিয়ার এই মঙ্গল শোভাযাত্রা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলেও সরকারের প্রচণ্ড হস্তক্ষেপের শিকার হয় এই শোভাযাত্রা।
তারা বলছেন, পতিত শক্তির সেই অপতৎপরতা কাঁধে নিয়ে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসনকে।
শিক্ষার্থীদের কর্তৃত্ব কেড়ে নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার উপর প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দাবি করে এটিকে গণবিরোধী পরিকল্পনা আখ্যা দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
এই পরিকল্পনা রুখে দিতে ছাত্র ইউনিয়ন ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলা নববর্ষের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম চঞ্চল।
সংবাদ সম্মেলনে আজহারুল ইসলাম বলেন, এবারের বৈশাখ হবে সকলের। আমাদের ভূখন্ডে বসবাসরত সকল জাতি গোষ্ঠী বৈশাখ বরণে অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে। পাহাড় থেকে সমতল সবাই একসাথে বর্ষবরণ উদযাপন করবে।
তিনি বলেন, এবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে একপেশি সংস্কৃতি আয়োজনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আমরা বাংলাদেশের উদার, শুদ্ধচর্চার সংস্কৃতির দিকে অগ্রসর হতে পারব বলে আমরা আশা করছি।
চারুকলা অনুষদের ডিন বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাপক এই আয়োজনের লক্ষ্যে মঙ্গল শুভযাত্রার নামকরণ করা হয়েছে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা।
তিনি বলেন, এর ছায়া তলে দেশের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটবে। প্রতিফলিত হবে সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং ফুটে উঠবে শুভযাত্রার প্রকৃত আনন্দ।
মঙ্গল শুভযাত্রা নাম কেন পরিবর্তন করা হয়েছে প্রশ্নে চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৯ সালে যখন এই বর্ষবরণ কর্মসূচি শুরু হয় তখন এটির নাম ছিল আনন্দ শুভাযাত্রা। পরবর্তীতে এটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে পরিবর্তিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে যে আয়োজনটি হয়েছিল সেটির স্বতঃস্ফূর্ততা কীরকম ছিল এটি বিশ্লেষণের বিষয়। পরবর্তীতে মঙ্গল শুভযাত্রা নামকরণ হওয়ার পরে কী ঘটেছে সেটিও আমাদের সবার জানা। সেজন্য এটিকে আমরা পরিবর্তন বলছি না, আমরা বলছি আগের নামটি আমরা পুনরুদ্ধার করেছি।
এই পুনরুদ্ধারে কোন চাপ অনুভব করেছেন কিনা প্রশ্নে চারুকলার ডিন আজহারুল বলেন, প্রতিবছর এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক হয়। মঙ্গলের ব্যানারে বিতর্ক কম ছিল না। বাংলাদেশের প্রতিটি শ্রেণীর পেশার মানুষ কোন ব্যানারের নিচে দাঁড়াবে, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা প্রাণে প্রাণে বর্ষকে বরণ করব সেটিই মূল বিবেচ্য বিষয়।
তিনি বলেন, মঙ্গল শব্দে শব্দগত কোন ত্রুটি আমি দেখছি না। ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা এই মঙ্গল নামটিকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বা চর্চায় নিয়ে এসেছে এটি নিয়ে যথেষ্টরকম ব্যাড ফিলিংস কাজ করছে সোসাইটিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের মানুষের মধ্যে। তাই আমরা আগের নামটিতে ফিরে যেতে চাই, যেখানে সকল মানুষের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতঃস্ফূর্ততা ছিলো।
নাম পুনরুদ্ধারের বিষয়ে শুভযাত্রা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যপক কাউসার হাসান টগর বলেন, ১৯৮৯ সালে এটি আনন্দ শোভাযাত্রা ছিলো। আমরা এটিতে অংশগ্রহণ করেছি। এখানে ছিলো সব মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ১৯৯৬ সালে হঠাৎ এটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়ে যায়।
তিনি বলেন, 'মঙ্গল' নিয়ে আমাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু 'আনন্দ' তে কী সমস্যা ছিলো? আনন্দ নাম দিয়ে আমরা যে শোভাযাত্রা শুরু করেছিলাম সেটিতে কী অসুবিধা ছিলো?
তিনি বলেন, মঙ্গল এ কোন সমস্যা না। কিন্তু আমরা ব্যাখ্যা চাই আনন্দের সমস্যা কোথায় ছিলো? 'আনন্দ' এ যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমরা মঙ্গল-ই মেনে নিবো। কিন্তু আনন্দ কেন বাদ দেওয়া হলো সেটির ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।
তাই আমরা অরিজিনাল জায়গায় ফিরে যেতে চাই। আনন্দ শোভাযাত্রাই করতে চাই, যোগ করেন কাউসার হাসান টগর।
গেল চার মাসে সারা দেশে দূষণবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এতে ২৪ কোটি টাকা জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি ৬৪৮টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, গত ২ জানুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত এই অভিযানে যানবাহন, অবৈধ ইটভাটা, স্টিল মিল, শব্দদূষণ, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য, সীসা কারখানা, জলাশয় ভরাট, টায়ার পোড়ানো এবং খোলা নির্মাণ সামগ্রীর বিরুদ্ধে ৭৭৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
‘এই অভিযানে ১৬৬৩টি মামলার মাধ্যমে মোট ২৪ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একইসাথে ৪৩৮টি অবৈধ ইটভাটার চিমনি ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সময়ে ২১০টি ইটভাটা বন্ধের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১২৪টি ভাটায় কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়েছে এবং ৭টি ইটভাটার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও, একজনকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ ট্রাক সীসা গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগরের গুলশান, মাতুয়াইল, আমিনবাজার, মোহাম্মদপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বায়ুদূষণ করার দায়ে ৬টি মোবাইল কোর্ট অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে ৫টি মামলায় ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একই দিনে আমিনবাজারে অবৈধ সীসা ব্যাটারি গলানোর একটি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কারখানাটি উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া গাজীপুরে জলাধার ভরাটের অভিযোগে একজনকে সতর্ক করা হয়েছে এবং ৫ দিনের মধ্যে পুকুর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ ও দিনাজপুরে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে ৮টি মামলায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযানে একটি ইটভাটার চিমনী ও কাঁচা ইট ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ৬টি ইটভাটার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সাভারের আশুলিয়ায় শারমিন শিলা ওরফে ‘ক্রিম আপা’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে ঢাকার সাভার থেকে আশুলিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
সন্তানদের দিয়ে টিকটক বানিয়ে ফেসবুকে দেওয়ার অভিযোগে বুধবার (৯ এপ্রিল) তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
জানা যায়, টাকা আয়ের জন্য কখনো মাথার চুল ন্যাড়া করে আবার কখনো ভারী কানের দুল লাগিয়ে টিকটক বানিয়ে সেই ভিডিও ফেসবুকে দেন শারমীন শিলা। এছাড়াও গায়ের রং ফরসা করার ক্রিম বিক্রি করায় ফেসবুকে ‘ক্রিম আপা’ বা ‘কিরিম আপা’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরো ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মতৎপরতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, আরও বাড়বে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যেন রোধ হয় সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। যারা পরিস্থিতির অবনতি করতে চায়, আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও উন্নতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরও অন্তত ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্র প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে অস্ত্র উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। অস্ত্র বাইরে থাকলে কিছুটা হুমকি থাকবেই।
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্রিমিনালদের হ্যান্ডওভারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। এই চুক্তির আন্ডারে হয়তো তাকে আনার চেষ্টা করা হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধের কোনো শঙ্কা নেই।
ইন্টারপোলে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আপডেট নিয়ে তিনি বলেন, ইন্টারপোলের আপডেটটা আগে যা আছে ওই অবস্থায় আছে।
ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যারা লুটপাট করেছে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদেরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা কার আত্মীয় কার স্বজন এসব কোনকিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে না। যে অন্যায় করেছে তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
মব জাস্টিসের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা অনেক কমে এসেছে। সবার প্রতি একটাই অনুরোধ করেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। আর আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চাইলেই পুলিশ অ্যাকশন নেবে। পুলিশ কোনো মব জাস্টিস ভয় পায় না।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনতাই সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা ছিনতাই করে নিচ্ছে, তাদের কিন্তু আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এগুলোর ক্ষেত্রে আপনারা সত্যি ঘটনা যেটা, সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। অনেক সময় পুলিশের অ্যাকশন নিতে দেরি হয়। এতে আমাদের অনেক সংকট রয়ে গেছে। এদের গাড়ির কিন্তু অনেক সংকট। অনেক গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে, পুড়ে গেছে। অনেক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো তো সব আমরা করে দিতে পারিনি। তবে সবকিছুই আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলেও আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
পুলিশের নানান সংকট উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনারা জানেন, পুলিশের থেকে আমাদের আশা অনেক। কিন্তু তাদের থাকা-খাওয়ার অনেক সমস্য আছে। এই যে ধরেন তারা একটা ভাড়াটিয়া বাড়িতে থাকে। এগুলোর উন্নতি করা দরকার। আপনারা এগুলো বলবেন, এদের থাকা ও খাওয়ার উন্নতি করা দরকার। ওদের থেকে পেতে হলে, দিতে হবে কিছু।
থানা পরিদর্শনকালে লালগালিচা বিছানো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি এই প্রটোকল করতে করতে সময় শেষ, মেইন কাজ করতে পার না। ১০০ বার একটা কথা বললে তোমরা শুনো না। কেন রাখছো, উঠাও উঠাও। না করি তোমরা শুনো না। এ সময় তিনি লালগালিচায় না উঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমেকে লালগালিচা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
থানা পরিদর্শনের পর উপদেষ্টা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাওরে ধানকাটা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় কৃষি বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি এবার সুনামগঞ্জে ভালো ফসল হয়েছে। তবে বেশ কিছু জমি পতিত রয়েছে। আমরা এই পতিত জমি ব্যবহারে এই অঞ্চলে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা উন নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, ওসি আকরাম আলী প্রমুখ।
বিএনপির আয়োজিত র্যালিতে অংশ নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দাবি করেন, ‘ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় যেমন জিয়াউর রহমান ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতেন। ইসরায়েল এমন অপকর্ম চালানোর সাহস পেত না।’
গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যায় নিজেদের রাজত্ব বাঁচানোর জন্য মুসলিম বিশ্বের মোড়লরা নেতৃত্ব দিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, তাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ নেমে পড়বে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিএনপির আয়োজিত র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই অত্যাচার চলবে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের ধ্বংস করে দেবে ইসরাইল। শুধু ইসরায়েলে নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্রেও মুসলমানদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমার রাষ্ট্র তার প্রতিবাদ করে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। ফিলিস্তিন সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনও আলাপ পাইনি। অনেক সুশীল রয়েছে, তাদের সাড়া মিলছে না।’
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ।