ভারতের ঝাড়খাণ্ডে স্থাপিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে প্রথমবারের মতো সঞ্চালন লাইন দিয়ে ভারতীয় এই কোম্পানির বিদ্যুৎ প্রাথমিকভাবে দেশে এসেছে। আদানির এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত হয় আদানির বিদ্যুৎ। প্রাথমিকভাবে ২৫ মেগাওয়াট সরবরাহ করছে কোম্পানিটি।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশেল (পিজিসিবি) মুখপাত্র এ বি এম বদরুদ্দোজা সুমন দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশের গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ মেগাওয়াট আসছে। পর্যায়ক্রমে এর পরিমাণ বাড়বে।’
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী আদানির কেন্দ্র থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছিল।
আদানির বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া নিয়ে বির্তক চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। এর মধ্যেই আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর তোড়জোড় হয়। কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ২৬ মার্চ। তবে গত বুধবার রাতেই পরীক্ষামূলকভাবে কেন্দ্রটি চালু করা হয়। সে সময় ৭৪৬ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেছে।
গত মাসে দেয়া প্রতি টন কয়লার দাম ৪০০ ডলার অনুযায়ী আদানির এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ২৫ টাকার বেশি। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া রয়েছে ৫ টাকা ১১ পয়সা। বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে এতে বেশি কেন্দ্র ভাড়া দেয়া হয়নি। এ ছাড়া আদানিকে কয়লার সিস্টেম লসসহ বেশ কিছু সুবিধা দেয়া হয়েছে, যা আর কাউকে দেয়া হয়নি। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম, বিদ্যুতের সঞ্চালনসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১৩ মার্চ ভারতে যাবেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দুটি ইউনিটে মোট এক হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে ৭৫০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি চালু হলো। দ্বিতীয় ইউনিটেরও এ বছরেই উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
বাণিজ্যকভাবে চালু হওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা একনাগাড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখতে হবে। এরপরে ঠিক হবে কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা। সে অনুযায়ী কেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাবে।
পিজিসিবি সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য ভারত ও বাংলাদেশ প্রান্তে যে গ্রিড লাইন রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অংশের কাজ শেষ করেছে পিজিসিবি। সংস্থাটির তরফ থেকে পিডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইনটি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এ মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়ে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া আমলাতন্ত্রের করায়ত্ত করায়, সরকারি প্রভাবের বাইরে কমিশন গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ করায় গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ গেজেট আকারে ৯ নভেম্বর প্রকাশের পর টিআইবিসহ সব অংশীজন এতে কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও আশান্বিত হয়েছিল যে, আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মিদশা কাটিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জনপ্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গঠিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তবে ঠিক এক মাসের মধ্যে ৮ ডিসেম্বর যে বাছাই কমিটি এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের মূল ভিত্তি হতে পারত। সেই কমিটিকেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে।
‘বাছাই কমিটিতে এই পরিবর্তন বস্তুত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মানবাধিকার কমিশনসহ বাংলাদেশের অন্য সব কমিশনের অকার্যকরতার পেছনে যেভাবে সরকারি প্রভাব দীর্ঘকাল যাবত ভূমিকা রেখেছে, সেই একই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্রের একটি দৃষ্টান্তমাত্র, কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই সংশোধনের মাধ্যমে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ প্রতিষ্ঠার যে প্রশংসনীয় বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে তার এবং সার্বিকভাবে এ আইনের ভিত্তিতে গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকরতার সব সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করার জন্য শুধু বাছাই কমিটিতে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তিই যথেষ্ট।’
এছাড়া কমিশনের আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে গৃহীত পদক্ষেপ কমিশনকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে ‘অবহিত করা যাইবে’ প্রতিস্থাপন করার মতো আরও কিছু বিধান সংযোজন করার ফলে অধ্যাদেশটির মাধ্যমে প্রত্যাশিত সব ইতিবাচক সম্ভাবনা পদদলিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. জামান।
অনতিবিলম্বে আমলাতন্ত্রের অন্তর্ঘাতমূলক সংস্কারবিরোধী চক্রের কাছে আত্মসমর্পণের বিব্রতকর অবস্থান থেকে সরে এসে অধ্যাদেশটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া বিধান, বিশেষ করে বাছাই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করে নতুন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশটি ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
উল্লেখ্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠনের জন্য ৬২ নং অধ্যাদেশ, যা ৯ নভেম্বর ২০২৫ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়, তার অনুচ্ছেদ ৭-এ বর্ণিত বাছাই কমিটিতে আমলাতন্ত্রের কোনো প্রতিনিধি ছিল না, যা মানবাধিকার কমিশনের অকার্যকরতার দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সরকারসহ সব অংশীজনের স্বীকৃতির পরিচায়ক। অথচ, পরবর্তীতে ৮ ডিসেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধিত অধ্যাদেশ ৭৪-এ বাছাই কমিটিতে আমলাতান্ত্রিক আধিপত্য নিশ্চিতের উদ্দেশে এ অধ্যাদেশ প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অংশীজনকে অন্ধকারে রেখে এক তরফাভাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার সকল প্রচেষ্টা রুখে দিতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে।
গতকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি না হতে দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপি নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে দলগুলো সুদৃঢ় অবস্থান নেবে বলে জানান তারা।
এছাড়া, নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান কঠোরভাবে পরিচালনার ওপর জোর দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যে কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’
তিনি বলেন, শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে বলেও মনে করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।
গতকাল শনিবার বিকেলে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। গণতন্ত্র বারবার মৃত্যুকূপে পতিত হয়েছে। একদলীয় দুঃশাসনের বাতাবরণ তৈরি করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ প্রতিহত করা হয়েছে। অনেক রক্ত ঝরলেও মতপ্রকাশ, লেখা ও বলার স্বাধীনতা সংকটের দুর্বিপাক থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর মূলত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরেছিলেন। তাদের জীবন ও কর্ম আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা দেশকে মেধাশূন্য করার গভীর চক্রান্ত। কারণ স্বাধীনতার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করা। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা আজও পুরো জাতিকে বেদনাবিধূর করে। তবে তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ অর্থাৎ জ্ঞান-বিজ্ঞান, মুক্ত চিন্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির চেতনা উন্নত ও প্রগতিশীল দেশ গড়ার প্রত্যয় জাগিয়ে তোলে। একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ ছিল যাদের অভিষ্ট লক্ষ্য।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনে করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে।
তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
সেইসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে প্রাণ হারানো শিক্ষক, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মন্তুদ দিন। এ দিন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের উষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর দুঃসহ বেদনার দিন।
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এ দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ’ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ’ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে। স্বাধীনতার উষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।
হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এই বুদ্ধিজীবীরা মেধা, মনন ও লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। দেখিয়েছেন মুক্তির পথ। গোটা জাতিকে উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের।
১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত ১০ ডিসেম্বর ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়।
প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শোকের আবহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে থাকে। দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ওড়ে শোকের প্রতীক কালো পতাকা।
দেশব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, গান, আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সর্বস্তরের মানুষের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়াও সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা একটি গণতান্ত্রিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার দেওয়া ওই বাণীতে তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা। তারা নিজেদের মেধা, মনন, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। এমনকি যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
বাণীতে ড. ইউনূস ১৪ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক ও শিল্পীসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই নৃশংসতার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন হতে যাওয়া বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ জাতিতে পরিণত করা।
বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমৃত্যু লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার সমগ্র জাতিকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে কাজ শুরু করেছে, তার মাধ্যমেই শহীদদের স্বপ্ন সফল হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর অবস্থানের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি ঘোষণা করেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার এবং ‘ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্ট’দের দমনে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও নীতিগত পরিবর্তনের কথা জানান তিনি। এতদিন কেবল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের লাইসেন্স দেওয়া হলেও, এখন থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা আবেদন করলে তাদেরও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। উপদেষ্টা জানান, তাদের সুরক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন। ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তার বিদায়ী অভিভাষণ প্রদান করবেন। সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে বিকেল ৩টায় আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে তিনি দেশের সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের সামনে বক্তব্য রাখবেন।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাওয়ার আগে এই ভাষণে প্রধান বিচারপতি মূলত তার ঘোষিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার ও উন্নয়নের রোডম্যাপের অগ্রগতি নিয়ে আলোকপাত করবেন। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধসহ একটি ঐতিহাসিক রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন। গত দেড় বছরে সেই রোডম্যাপের আওতায় গৃহীত কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়গুলো তার বক্তব্যে উঠে আসবে।
এছাড়াও চলমান বিচার বিভাগীয় সংস্কার কার্যক্রম, বিশেষ করে প্রযুক্তিনির্ভর সেবা সম্প্রসারণ, আদালতের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, বিচারকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, বিচারপ্রার্থীদের সেবা সহজীকরণ এবং দীর্ঘদিনের মামলাজট নিরসনে তিনি বিচারকদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন বলে সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত একজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শনিবার রাজধানীর রাজারবাগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি জানান, শনাক্তকৃত ব্যক্তিকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঘটনার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে, তাই তদন্তের স্বার্থে এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে, ডিএমপির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তের সন্ধানদাতার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে এবং তাকে উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে।
মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হামলার প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছেন। ফুটেজে যাকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে, তিনি ঘটনার দিন সকাল থেকেই হাদির সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা ও নির্বাচন বানচালের যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলাটি পূর্ব-পরিকল্পিত এবং এর পেছনে বড় কোনো শক্তি কাজ করছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এবং প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রধান উপদেষ্টা এই হামলাকে ‘সিম্বলিক’ উল্লেখ করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করা এবং নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করা। তাই এসব অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যে দ্বিমত থাকলেও জাতি ও জুলাই অভ্যুত্থানের স্বার্থে সবাইকে এক থাকতে হবে। তিনি যেকোনো অপশক্তিকে বরদাস্ত না করার হুঁশিয়ারি দেন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সম্প্রতি দলগুলোর মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়ায় বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত না করে সবাইকে পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি ঠিক করার ওপর জোর দেন তিনি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, সুসংগঠিতভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের একাংশ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে ‘নরমালাইজ’ করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, নিজেদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই, বরং জুলাইয়ের চেতনাকে সবাই মিলে ধারণ করতে হবে। দলটির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সতর্ক করে বলেন, নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকলে কোনো নিরাপত্তাই কাজে আসবে না; রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো যেন আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে না দেয়।
বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মন্তব্য করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ হানাহানির সুযোগে আওয়ামী লীগ পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করছে। তাই শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টাও নির্বাচনকালীন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কাউকে শত্রু না ভাবার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। শনিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এরই অংশ হিসেবে তাদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযান নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদী অপশক্তি দমনে এবং অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও জোরদার করতে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু করার ঘোষণা দেন তিনি।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। শনিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা জানান, হামলাকারী আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া জোরেশোরে চলছে এবং জনগণের সহযোগিতায় খুব দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, সবার দোয়ায় তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার সবার মাঝে ফিরে আসতে পারেন।
আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এতদিন সাধারণত শুধু সরকারি কর্মচারীদেরই অস্ত্র বহন বা লাইসেন্স দেওয়া হতো। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা যদি নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্রের লাইসেন্স চান, তবে তাদের তা দেওয়া হবে। এছাড়া তাদের কোনো বৈধ অস্ত্র সরকারের কাছে জমা থাকলে তাও ফেরত দেওয়া হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তিনি জানান, তাদের সুরক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ‘ফ্যাসিস্ট’দের গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশ্বাস দেন।
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, এই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সহযোগিতা পেলে খুব দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ওই হামলাকারীর সন্ধান বা তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য জনসাধারণের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। এই ঘটনার পর থেকেই জড়িতদের গ্রেফতারে রাজধানীজুড়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে একজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে সর্বসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছে ডিএমপি। তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বা সন্ধান জানা থাকলে দ্রুত ডিসি মতিঝিল (০১৩২০০৪০০৮০), ওসি পল্টন (০১৩২০০৪০১৩২) অথবা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে যে, যিনি সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন তার নাম ও পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে এবং তাকে উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে।