শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১৩ বৈশাখ ১৪৩২

মিয়ানমারে রাজনৈতিক পরিবর্তন না হলেও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে

শনিবার বিকেলে দোহায় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
৫ মার্চ, ২০২৩ ১৬:০১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ মার্চ, ২০২৩ ১১:২২

মিয়ানমারে বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে, এই অবস্থার পরিবর্তন না হলেও রোহিঙ্গাদের শিগগিরই দেশটিতে ফিরে যেতে হবে। দোহায় এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয়েই এই অভিমত দিয়েছেন।

শনিবার বিকেলে কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) দুই নেতার এ বৈঠক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) যোগ দিতে কাতারের রাজধানী দোহা সফর করছেন।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিকরা যেন তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সে জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।

ভাসানচরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের বিষয়ে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিবকে আরও রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিফিংয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই একমত হয়েছেন যে, সেখানে রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো পরিবর্তন আসুক বা না আসুক রোহিঙ্গাদের শিগগিরই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধ যত দ্রুত শেষ হবে ততই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

প্রধানমন্ত্রী অভিমত দেন, যুদ্ধ থেকে লাভবান দেশগুলোর দুর্ভোগ কমাতে অন্য (ক্ষতিগ্রস্ত) দেশগুলোকে সহায়তা করা উচিত।

বৈঠকে আন্তোনিও গুতেরেস উন্নয়ন, কূটনীতি এবং কোভিড মহামারি মোকাবিলায় অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি বলেন, অর্জিত সাফল্যগুলো খুবই উৎসাহজনক।

শনিবার বিকেলে দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা করোসি। ছবি: ফোকাস বাংলা

জাতিসংঘ মহাসচিব উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের জন্য তারা গর্বিত যিনি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করেছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

সাউথ-সাউথ দেশগুলোকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনের প্রস্তাব
এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা করোসির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বৈঠকে সাউথ-সাউথ দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেন, যাতে উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী সেভাবে সাহায্য না করায় জনগণের কল্যাণে সম্ভাবনা ও করণীয় খুঁজে পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে তিনি এক দিনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে সাবা করোসি পরবর্তী সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে এই উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে অভিমত দেন। তিনি জানান, তারা আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক সমাবেশের কাজের জন্য নিযুক্ত থাকবেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি। তিনি এটিকে ‘একটি অলৌকিক ঘটনা’ বলেও উল্লেখ করেন।

দুই নেতা পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন।


পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহরাজ পাঁচ দিনের রিমান্ডে

পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি মেহরাজ ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ আদেশ দেন।

এদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামির জামিন নাকচ করে রিমান্ড দেন।

এর আগে গত বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা থেকে মেহরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলায় চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে ও দুজন দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসিকে কেন্দ্র করে প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পারভেজের বাগবিতণ্ডা হয়। ঘটনাটি পরে মীমাংসা করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় পারভেজকে ঘিরে ধরে ৩০ থেকে ৪০ জন। এ সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন রোববার এক সাংবাদিক সম্মেলনে পারভেজকে নিজেদের কর্মী দাবি করে এ হত্যাকাণ্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানীর কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ করে ছাত্রদল।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রদলের এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এই ঘটনায় তাদের নেতারা জড়িত নন, ছাত্রদল মিথ্যাচার করছে।


আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন মিথ্যা : আইন মন্ত্রণালয়

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামক অনলাইন পোর্টালে "জম্মু-কাশ্মীরে হামলার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার সঙ্গে শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা অপারেটিভের সাক্ষাৎ" শিরোনামে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মিথ্যা, মানহানিকর ও অদায়িত্বপূর্ণ।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে জানান, গত ২৪ এপ্রিল নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামক অনলাইন পোর্টালে "জম্মু-কাশ্মীরে হামলার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার সঙ্গে শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা অপারেটিভের সাক্ষাৎ" শিরোনামে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও অদায়িত্বপূর্ণ অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে। যা মিথ্যা, সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে সাম্প্রতিক জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগ্রামে হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই তৈয়বা এর একজন শীর্ষস্থানীয় সদস্যের সাথে আইন উপদেষ্টার সাক্ষাৎ হয়েছে। যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত।

মিথ্যা দাবি ও ভুল তথ্য সংশোধনে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'হেফাজতে-ইসলাম নেতাদের ভুলভাবে চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আইনের মধ্যে কাজ করা ইসলামিক স্কলার ও সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে উল্লিখিত ব্যক্তিরা হেফাজতে ইসলামের নেতা, যারা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে হেফাজতে ইসলামের হাজারো সদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়। নতুন সরকারের ন্যায়বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে, আইন উপদেষ্টা ড. নজরুল তার দাপ্তরিক দায়িত্বে হেফাজতের একটি প্রতিনিধিদলের সাথে তাদের ন্যায্য দাবি উপস্থাপনের জন্য বৈঠক করেন। এই বৈঠকটি নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার উল্লিখিত তারিখের কমপক্ষে তিন দিন আগে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে শুধুমাত্র আইনি বিষয়াবলি আলোচিত হয়। প্রতিনিধিদল আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে কিছু মামলার তালিকা জমা দেন এবং উপদেষ্টার সাথে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ছবি তোলার অনুরোধ করেন, যা এই ধরনের বৈঠকের রীতি।'

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'হেফাজতে ইসলামের নেতারা বাংলাদেশের ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা কমিশন (কনসেনসাস বিল্ডিং কমিশন) কর্তৃক শুরু করা রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি, পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সাথে এই গ্রুপের বৈঠকসমূহ তাদের বর্তমান রাজনৈতিক ভূমিকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সংশ্লিষ্টতাকে প্রতিফলিত করে।'

হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি
বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, 'মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো স্বাধীন সংস্থাগুলো পূর্ববর্তী শাসনামলে হেফাজত সদস্যসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের নথি প্রকাশ করেছে এবং এর নিন্দা জানিয়েছে। এসব প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে আনা মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষিত তুলে ধরা হয়েছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা হয়েছে।'

সোশ্যাল মিডিয়া কার্যক্রম সম্পর্কে ভুল উপস্থাপনা বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, 'প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, আইন উপদেষ্টা ফেসবুকে ভারতীয় নেতাদের পেহেলগ্রাম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত করার উদ্দেশ্যে একটি উত্তেজনাপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করেছেন। বাস্তবে, উক্ত পোস্টটি একজন ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে লেখা হয়েছিল। উপদেষ্টা হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি ক্যাপশনসহ এটি শেয়ার করেছিলেন। ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে তিনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পোস্টটি মুছে ফেলেন। '

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আইন উপদেষ্টা পেহেলগ্রামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও হামলার দ্রুত বিচার কামনা করেন। নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার এই অসতর্ক ও অপ্রমাণিত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতিমালা ও সত্যনিষ্ঠতা থেকে বিপজ্জনক বিচ্যুতি। আমরা সকল মিডিয়াকে দায়িত্বশীল প্রতিবেদন ও প্রকাশনার আগে সত্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানাই।'


জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জামায়াত

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জামায়াতে ইসলামীর ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:৫৫
unb

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জামায়াতের প্রতিনিধি দল আলোচনায় যোগ দেয়।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা শুরু হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত রাষ্ট্রীয় সংস্কার উদ্যোগের বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরির জন্য চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ঐক্যমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করে।

কমিশন এরই মধ্যে বিএনপি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে।

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উপর একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় অবস্থান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে এটি পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মূল সুপারিশগুলো প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক, জনপ্রশাসন, নির্বাচনী, বিচার বিভাগীয় এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারগুলো। মূল সুপারিশগুলোর ওপর মতামত চেয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে এর স্প্রেডশিট পাঠানো হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ৩৪টি দল তাদের মতামত জানিয়েছে।

কমিশন মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার প্রথম দফার আলোচনা সম্পন্ন করবে। একই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু

করার কথা এবং জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।


রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার রোমে অবস্থিত (বাংলাদেশ দূতাবাস) বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় তিনি সেখানে রাখা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস বর্তমানে ইতালিতে অবস্থান করছেন।

আজ শনিবার ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।


ঈদ বোনাস বাড়ল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীরা আগামী ঈদুল আজহা থেকে ৫০ শতাংশ বোনাস পাবেন বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। গতকাল শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা জানান, ‘বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ হারে ঈদ বোনাস পেয়ে থাকেন।এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদুল আজহার বোনাস ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’

জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি’র সভায় আলোচনা হয়। তখন এই বোনাস বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, নতুন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সরকারের বাড়তি ব্যয় হবে ২২৯ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ জন।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের যে অংশ সরকার দিয়ে থাকে সেটিই এমপিও। এই স্কিমের আওতায় সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মূল বেতনের ১০০ শতাংশ এবং বেশ কয়েকটি মাসিক ভাতা দেয়। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফলও এমপিওর আওতাভুক্ত বলে বিবেচিত হয়।

গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এমপিওভুক্ত এ শিক্ষক-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় চাকরি জাতীয়করণসহ বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। ১৫ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

তবে এ জন্য নতুন করে ২২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ না দিয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দের অর্থ থেকে ২২৯ কোটি টাকা সংকুলানের নির্দেশনা দেয় অর্থ বিভাগ।

এ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ থেকে অব্যয়িত ২২৯ কোটি সংস্থান করে উৎসব ভাতা হিসেবে দিতে চূড়ান্তভাবে অর্থ বিভাগের সম্মতি চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে গত ২১ এপ্রিল অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারকে চিঠি দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

চিঠিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আগামী ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫০ শতাংশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অর্থ সচিবকে অনুরোধ করেছেন সিদ্দিক জোবায়ের।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অনুকূলে নতুন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে নতুন করে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার কোনো পরিকল্পনা না থাকায় এ টাকা অব্যয়িত থেকে যাবে, যা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়তি বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যয় করা যাবে।

এছাড়া এমপিওভুক্ত অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ সরকারিকরণ হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এখন রাজস্ব খাত থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। ফলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেখানে ১৭৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এ অর্থ আগামী ঈদুল আজহায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বোনাস দ্বিগুণ করার ক্ষেত্রে ব্যয় করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।


পোপকে শ্রদ্ধা জানাতে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে আজ শুক্রবার ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় যান। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে প্রয়াত পোপের মরদেহ এখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাজের দারুণ ভক্ত ছিলেন এবং তাঁর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করতেন।

বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য অধ্যাপক ইউনূসের কর্মযজ্ঞ এবং তাঁর ‘তিন শূন্য’ দৃষ্টিভঙ্গি
—যেখানে কোনো বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং কার্বন নিঃসরণ থাকবে না, এর প্রশংসা করতেন।

রোমের ভ্যাটিকানে তিনি ২০০৬ সালের শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘তিন শূন্য উদ্যোগ’ও চালু করেছিলেন।


প্রধান উপদেষ্টা রোমে পৌঁছেছেন

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে পৌঁছেছেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে পৌঁছেছেন।

আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামীকাল শনিবার ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

অধ্যাপক ইউনূস আজ দোহা থেকে সরাসরি রোমে যান। তিনি চারদিনের সরকারি সফরে কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছিলেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ছিল। বন্ধুর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তিনি পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছেন।

পোপ ফ্রান্সিস গত সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি ১২ বছর রোমান ক্যাথলিক গির্জার সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব পালন করেন।


রেললাইনের পাশ থেকে তরুণের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে রেললাইনের পাশ থেকে মোহাম্মদ রফিক (২০) নামের এক তরুণের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর (৯৯৯) থেকে ফোন পেয়ে রফিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, রফিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তিনি চিহ্নিত ছিনতাইকারী ছিলেন।


বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।


পুলিশ জানায়, নিহত রফিকের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের অফিস তারাটি এলাকায়। রফিক কারওয়ান বাজার এলাকায় ছিনতাই করতেন। চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে। চুরি ও ছিনতাইয়ের টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে সহযোগীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে।

গতকাল শুক্রবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে কারওয়ান বাজার রেললাইনের পূর্ব পাশ থেকে রফিকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সারা শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রফিকের সহযোগীরা কারওয়ান বাজারে একটি রেস্তোরাঁর সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। খবর পেয়ে রফিকের নানী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। পরে তার মরদেহটি কারওয়ান বাজারে রেললাইনের পাশে রাখা হয়। ঘটনাটি তেজগাঁও থানা এলাকায় হওয়ায় এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


বাবার ঠিকাদারির লাইসেন্স ছিল নিশ্চিত করলেন উপদেষ্টা আসিফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে বিষয়টি ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের পর্যায়ে যেতে পারে আশঙ্কায় ওই লাইসেন্স বাতিল করিয়ে পোস্টে ‘বাবার ভুলের জন্য’ ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি জানিয়ে গত বুধবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দেন এক গণমাধ্যমকর্মী। এর আগে ওই সাংবাদিক বিষয়টির সত্যাসত্য জানতে চেয়েছিলেন আসিফ মাহমুদের কাছে। আসিফ মাহমুদ খোঁজ করে তাকে জানান, তাঁর বাবার লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়টি সঠিক। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হতে থাকে।

এরপর গতকাল আসিফ মাহমুদ বিষয়টি নিয়ে নিজেই পোস্ট দিয়ে তার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চান।

আসিফ মাহমুদের দেওয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘প্রথমেই আমার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। গত বুধবার রাত ৯টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার এর কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন। বিষয়টি উক্ত সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। তিনি পোস্ট করলেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে; তাই ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম।

আমার বাবা একজন স্কুল-শিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোনো লাইসেন্স করতেই পারে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ (গতকাল) বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।

বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেননি, সে জন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।

উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।


সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে উদ্যোগী হতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রয়োজনে দেশে শক্তিশালী উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সবাই কার্যকর অবদান রাখবেন-এ প্রত্যাশা করি।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছরের প্রতিপাদ্য- 'আইপি এন্ড মিউজিক : ফিল দ্য বিট অব আইপি' যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংগীত এক সর্বজনীন ভাষা, যা হৃদয়ের গভীরে প্রতিধ্বনিত হয় এবং আমাদের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় শিল্পধারাকে প্রতিফলিত করে। লোকগান থেকে শুরু করে আধুনিক গানের মূর্ছনায় আমাদের শিল্পীরা প্রতিনিয়ত বিশ্বকে মুগ্ধ করে চলেছেন।

তিনি বলেন, সংগীত শিল্পের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তুলতে মেধাসম্পদ আইন ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। এতে শিল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।'


পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা, জীবনমান ও পরিবেশের উন্নয়নই মূল লক্ষ্য: পার্বত্য উপদেষ্টা

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার মূল এজেন্ডা তিনটি। গুণগত শিক্ষা, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। এ লক্ষ্যেই আমরা এখন কাজ করছি।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উপদেষ্টার ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আমি ওই অঞ্চলের প্রতিটি কর্নারে গিয়েছি। মানুষের অবস্থা জানতে চেয়েছি। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর অবস্থা জানার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেকের প্রয়োজনীয়তাগুলো জানতে চেয়েছি। আমার মনে হয়েছে ওই অঞ্চলের লিডারদের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটিতে কোথায় কী প্রয়োজন এসব কিছু একজন লিডার এর জানা প্রয়োজন। জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কিছু যোগ্য লিডার আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার অনেক টাকা পয়সা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছি না। সরকারি অফিসগুলো সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছে না। সরকারের অনেক টাকা ওই অঞ্চলে গেছে কিন্তু উন্নয়নটা সেভাবে হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলোর জন্য গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব সময় চিন্তা ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা। আমাদের প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। কেননা সব সময় তো আর আমাদের কোটা থাকবে না। এই প্রতিযোগিতায় আসতে হলে আমাদের কিছু ভালো স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমার চিন্তা হলো— স্যাটেলাইট এডুকেশন। এটা করতে হলে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল তৈরি করতে হবে। ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা শেষে বাচ্চারা উপজেলার হোস্টেলে এসে পড়ালেখা করবে ক্লাস এইট পর্যন্ত। এরপর ইন্টামেডিয়েট (উচ্চ মাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়বে জেলার হোস্টেলে থেকে। এ জন্য আমাদের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কিছু ভালো স্কুল করতে হবে। তারা যদি এসব স্কুলগুলোতে থেকে পড়ালেখা করতে পারে তবে তারা যেকোনো পর্যায়ে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হবে। আমি যখন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম সেসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ৪০টি হোস্টেল তৈরির কথা বলেছিলাম। এগুলো হবে কিনা জানি না।

তিনি আরও বলেন, গুণগত শিক্ষা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার আরও দুটি এজেন্ডা আছে। ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। আমাদের টি-আর সব নারীদের দিচ্ছি। আমার চিন্তা হলো-নারীদের ক্ষমতায়ন করা গেলে পরিবারের সক্ষমতা বাড়বে। পরিবারের সক্ষমতা বাড়লে তাদের সন্তানদের পড়ালেখা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীর ক্যাপাসিটি এক না। এদের প্রত্যেককেই ছোট-বড় সহযোগিতার মাধ্যমে উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমার তৃতীয় এজেন্ডা পাহাড়ের পরিবেশের উন্নয়ন। পাহাড়ে যত্রতত্র বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। আমি এটার পক্ষে না। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, পাহাড়ের বড় নদীগুলোতে পানির পরিমাণ কমে গেছে। আমাদের বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এ জন্য পানি সংরক্ষণ করে রাখে এমন গাছ লাগাতে হবে। তবেই আমাদের বন আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে পর্যটন আকর্ষণীয় করা ও নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার অনেক কিছু আছে কিন্তু সিকিউরিটির অভাব আছে। এগুলো একদিনে হবে না। প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হলে পার্বত্য এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, দিনদিন আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের বাহিনীগুলোও অনেক অবদান রাখছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে এখনো আমাদের কিছু অসুবিধা রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমার চিন্তা হলো- চাঁদাবাজি করা লোকদের যদি আমরা চাকরি ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে পারি তবে আশা করা যায় ওই অসুবিধাটা কমে যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের জন্য সকল দরজা খুলে রাখছে। কিন্তু মূল সমস্যা হলো- আমাদের লোকেরা জানে না কোথায় কোন সুবিধা নিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো করেছে কৃষি বিভাগ। দেখা গেছে, গাছ লাগিয়েছে পানিও দিচ্ছে কিন্তু গাছে ফল দিচ্ছে না। এটা তো একটা সমস্যা। এর সমাধান কিন্তু কৃষি অফিসে গেলেই পাওয়া যাবে। কিন্তু তারা এটা জানেই না। এজন্য পাহাড়িদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমার লোকেরা নিজেরাই জানে না কোথায় কী চাইতে হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, এছাড়া ওই অঞ্চলে অনেক হস্তশিল্প আছে। যেটা তারা কাপড় হিসেবে বিক্রি করে একশো টাকায়। কিন্তু ওইটা ড্রেস হিসেবে বিক্রি করলে হবে সাত শত টাকা। এ জিনিসটাই আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমার একটি প্রজেক্ট চলছে। সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৬০-৭০ জন মহিলা কাজ করছেন। তাদের মাধ্যমে কাপড় উৎপাদন করে তা বাজারজাত কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা আমরা করছি।


সরকার শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের কারখানাগুলোতে স্বচ্ছন্দে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার দোহায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘অনেকে বলেছেন, গ্যাসের অভাবে তারা কারখানা স্থাপন করতে পারছেন না। তাই, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চাই যাতে পর্যাপ্ত গ্যাস (বিদেশ থেকে) আনা যায়।’

তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দোহা সফরের সময় কাতার এনার্জির সাথে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

শফিকুল বলেছেন, বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিগগির স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালটি স্থাপন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার দোহা সফর সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এই সফর অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসূ হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘আমি বলব এটি সবচেয়ে সফল এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় সফরগুলোর মধ্যে একটি।’

শফিকুল আলম আশা প্রকাশ করেছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবেন।

দেশের অর্থনীতির উত্থান-পতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময় ৩শ’ ২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা কমিয়ে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে এসেছে।

প্রেস সচিব বলেছেন, অবশিষ্ট ঋণ কয়েক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। তিনি আরো বলেছেন, ‘এটি বিশ্বের বাইরে ইতিবাচক সংকেতের অনুভূতি যে আমরা ব্যবসার জন্য প্রস্তুত।’

চার দিনের সফর শেষে প্রফেসর ইউনূস আজ শুক্রবার পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগদানের জন্য দোহা থেকে ইতালির রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা রয়েছে।


কুয়েট ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগ অনশন ভাঙল শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খুলনা ব্যুরো

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকারের হস্তক্ষেপে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রোভিসি অধ্যাপক এস কে শরীফুল আলম অবশেষে পদত্যাগ করেছেন। গত বুধবার রাতে বিশেষ নির্দেশনা পেয়ে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দীর্ঘ ৬৫ দিনের আন্দোলন আর ৫৮ ঘণ্টার অনশনে ক্ষুধায় যখন শরীর ঝিমিয়ে আসছিল, তখনই সংবাদ এসেছিল শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাই গত বুধবার রাতের সেই সংবদে কুয়েটজুড়ে উঠেছিল আনন্দের বন্যা।

অনশনে থাকা শিক্ষার্থী সিভিল বিভাগের রাহাতুল ইসলাম বলেন, রাত সোয়া একটার দিকে ক্যাম্পাসে এসে তানজিম স্যার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি পত্র আমাদের পড়ে শোনান। তাতে জানতে পারি ক্যাম্পাসের স্বৈরাচারী ভিসিকে সরকারের পক্ষ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে। তখন থেকে ক্যাম্পাসে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা আমাদের পাশে ছিল বলে আমাদের এই বিজয় এসেছে। প্রত্যেকের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের যেকোনো ক্যাম্পাসে যদি কোনো ভিসি স্বৈরাচারী কার্যক্রম শুরু করেন তবে আমরা আবারও গর্জে উঠব।

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে নানা কারণে আলোচিত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করেছিলেন।

এর আগে বুধবার সকালে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। সে সময়ে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করানোর জন্য অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে তাদের হলের পানি, ইন্টারনেট বন্ধের কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। একই সঙ্গে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ব্যাপারে অভিযোগ তোলেন।

উপদেষ্টা সেই সময়ে শিক্ষার্থীদের বলেন, আমার সঙ্গে দুইজন ইউজিসির সদস্য এসেছেন। তারা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে কুয়েট প্রশাসনকে অবহিত করবেন। তোমাদের এই যাবতীয় অসুবিধা দ্রুত সমাধান করা হবে।

তখন শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দুই মাস ধরে আন্দোলন করে আসছি। তবে আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে আর সময় দিতে চাই না। আপনারা আপনাদের কাজ করতে থাকেন। আমরা লাশ হয়ে গেলেও ভিসির পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙব না।

সে দিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে তাদের সঙ্গে কোনো সভা করেননি। এরপর ইউজিসির সদস্যদের সাথে কুয়েট প্রশাসনের সভা হয়। পরে সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি সিন্ডিকেটে বসিয়ে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসের হল খুলে দেওয়া হয়।

এরপর সরকার ও ইউজিসির নির্দেশে ভিসি ও প্রোভিসি পদত্যাগে বাধ্য হন।

এদিকে, ভিসি-প্রোভিসিকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তকে ন্যায়বিচারের পরাজয় বলে মন্তব্য করেছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। গতকাল দুপুরে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া ভিসি ও প্রো-ভিসির অব্যাহতির সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচারের পরাজয়। আমরা চেয়েছিলাম একটা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন করে আসছিল, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির করালগ্রাসে বন্দি। এ কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে শিক্ষকবৃন্দের কোনো চেষ্টাই সফল হয়নি। শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়সহ তার প্রেরিত প্রতিনিধিদলও এ ক্ষেত্রে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। ফলে সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে মূলত ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে।

ড. মো. ফারুক হোসেন আরও বলেন, গৌরবান্বিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দীর্ঘ আট মাস পরেও যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এহেন কার্যক্রম চলতে থাকে, তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়; সমগ্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলতে পারে। যা নিয়ে শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা সব সময় সচেষ্ট থাকবে।

এ সময়ে তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় যারা দোষ করেছে, এই ঘটনার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপসারণ দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অপরাধ যেটা সেটা অপরাধই, সেটা আমাদের ছাত্রদেরও দাবি শিক্ষকবৃন্দেরও দাবি। আমাদের পরিষ্কার অবস্থান এই বিচার নিশ্চিত করেই ক্লাসে ফিরতে হবে। তা না হলে শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত হবে না।

এদিকে, গতকাল উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি সম্বলিত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।


banner close