সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
৮ বৈশাখ ১৪৩২

পিলখানায় বিদ্রোহে শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা

শনিবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাদের স্বজনরা, পরে তাদের জন্য মোনাজাতও করা হয়। ছবি : দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৪৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:৪৬

ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে জাতি। ওই ঘটনার ১৪তম বার্ষিকীতে শনিবার রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদ কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সর্বস্তরের জনতা।

সকাল ৯টায় সেনা কর্মকর্তাদের কবরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তাদের সামরিক সচিবরা। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ শ্রদ্ধা জানান শহীদদের কবরে। এরপর দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিরুল ইসলাম খান ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

এছাড়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দলের নেতারা শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তরে বিদ্রোহ ঘটানো হয়। ওই বিদ্রোহে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ এবং ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে বিশেষ আদালতে ১৫২ জনকে ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

পিলখানার এ নির্মম ঘটনার পর বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে সংস্থাটি পুনর্গঠন করে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-(বিজিবি)’ নামকরণ করা হয়।

সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড: ফখরুল
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহতদের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। নেতারা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এসময় মোনাজাত করেন।

পরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘২৫ ফেব্রুয়ারির বিডিআর বিদ্রোহ এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অত্যন্ত ভয়াবহ চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আমাদের যে সার্বভৌমত্ব, আমাদের যে স্বাধীনতা তা প্রচণ্ডভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। আমাদের যে মহান মুক্তিযুদ্ধ সে মুক্তিযুদ্ধেও এতজন সেনা কর্মকর্তাদের হারাইনি। এ ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আমাদের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া।’

২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার দিন সকাল থেকে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল, আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘এটা হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব-জ্ঞানহীন একটা কমেন্ট। যার সম্পর্কে বলা হচ্ছে তিনি (খালেদা জিয়া) এ দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি এদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তিনি এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এখনো অন্তরীণ হয়ে আছেন। তাদের সমস্যাটা হচ্ছে, তারা মূল সমস্যায় না গিয়ে সব সময় অন্য দিকে যেতে চান। কারণ এ ঘটনাগুলো তারা সেভাবে সমাধান করতে পারেননি।’

এ সময় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আজম, অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

সংস্কারের সব সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের পর নির্বাচনের দাবি

# সিইসির সঙ্গে এনসিপির বৈঠকে ৯ প্রস্তাব
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নির্বাচন কমিশনকে এখন রুটিন মাফিক কাজ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে এই দাবিসহ কমপক্ষে ৯টি দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠক শেষে দলটির মুখপাত্র ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা জানান। তাদের অপর দাবিগুলো হচ্ছে মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার সুযোগ বাতিল করে কেবল সশরীরে জমা দেওয়া, সব দলের নিবন্ধন নবায়ন, দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানো, নির্বাচনী সহিংসতা রোধে আচরণবিধি ও ব্যয়ের বিধিতে পরিবর্তন আনা, ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া বন্ধ করা, হলফনামায় ভুল তথ্য থাকলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও নির্বাচিত হলেও যেন তারা সংসদে থাকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই সংস্কার বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এতে উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন। দুই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে নির্বাচন কমিশন, আইন সংস্কার, নিবন্ধনের সময়সীমা ও নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দলটির প্রতিনিধিরা।

বৈঠক শেষে এনসিপির সার্বিক আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা অনেকগুলো কথা ইসি থেকে শুনতে পাই। যেগুলো আমাদের প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুনিনি। রোডম্যাপের কথা শুনিনি, এটা ইসি থেকে এসেছে। এজন্য আমরা বলব- কোনো জায়গায় কথা বলার জন্য ইসি নিজেদের জায়গায় সতর্ক থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন- সে বিষয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। কিন্তু রোডম্যাপ বা সরকার থেকে কোনো দিকনির্দেশনা আসার আগেই যখন তারা নিজেদের থেকে কথা বলে থাকেন সেজন্য আমরা সন্দেহ পোষণ করি।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, ১৭ এপ্রিলের চিঠিতে সংস্কারের বিষয়গুলো ফোকাস করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের মাধ্যমে যেন নতুন নির্বাচন আসে, ইসি যেন সেদিকে ধাবিত হয়- জনদাবির মুখে সেটা যেন হয় তা জানিয়েছি।’ বৈঠকে ভোটের সময়কাল নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা স্পেসিফিক (সুনির্দিষ্টভাবে) বলেছিলাম, সিইসি ও ইসি নিয়োগে ২০২২-এর আইন রয়েছে আমরা পূর্বে জানিয়েছিলাম, আইনটা অবৈধ। অন্যান্য দলও জানিয়েছে অবৈধ। সে আইনের অধীনেই হয়েছে বর্তমান (ইসি)। আমরা এ আইনের বিরোধিতা করি। কিন্তু এখন যারা আছেন, তাদের সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে নিতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট আসার পরে যদি উনারা থাকতে পারলে থাকবে; না থাকতে পারলে থাকবে না। এটা ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে। কার প্রতি কোনো অবজেকশন নেই, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী হোক। যারা কমিশনার রয়েছেন, সে বিষয়ে না, আমরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখি (ইসিকে)। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আকারে সরকার, ঐকমত্য কমিশন থেকে ডিসিশন আসে সে বিষয়ে ইসি পুনর্গঠন হলে আমরা দেখব। যদি না হয় তখন এ বিষয়ে কমেন্ট করব।’

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে এনসিপি। তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট যখন ফাইনাল হয়ে আসবে, তখন সরকার প্রতিটি সাংবিধানিক কমিশনে পাঠাবে। ওই সিদ্ধান্ত যেন বাস্তবায়ন হয়। আমরা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসেছিলাম, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়েও বলেছি। ফাইনাল হতে তা বাস্তবায়নের জন্য বলেছি।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ইসি নিত্যকাজের কাজগুলো করতে পারে। অভ্যন্তরীণ কাজগুলো করতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের ফুলফেইজের কাজে যাবে সে বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের যে ফাইনাল রিপোর্ট আসবে, তার মতো হওয়া উচিত বলে মনে করি। নতুনভাবে দেশে সুন্দর যাত্রা শুরু হবে। ডেমোক্রেটিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ইলেকশন রিফর্ম অতি জরুরি। বর্তমানে যে প্রক্রিয়া রয়েছে, ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্টটা আসার পরে, সিদ্ধান্তগুলো হওয়ার পরে সে অনুযায়ী ইসি পরিচালিত হয় তাহলে বাংলাদেশে সুন্দর নির্বাচন হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় অনেক সংস্কার জরুরি। অনেক বিষয়ে ইসি সম্মত হয়েছে, আইনগুলো ঐকমত্য কমিশনের হয়ে আসতে হবে।’

এই মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছিলাম, সংস্কারের প্রত্যেকটি রিপোর্টের পাতা বাই পাতা, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড, প্রয়োগের মধ্য দিয়ে আগামীতে একটি নির্বাচনে যেতে হবে।...সংস্কার সুপারিশের প্রতিটি লাইন এসেছে সেগুলো নিয়ম, নীতির মধ্য দিয়ে প্রায়োগিক আকারে বাংলাদেশকে সে দিকে যাত্রা শুরু করতে হবে। সিইসি একমত হয়েছেন। ঐকমত্য কমিশনের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে, না হলে আমরা আস্থা পোষণ করতে পারব না। নির্বাচন কমিশন ১৫ বছরে একটা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং হয়েছে অনেক। নতুন বাংলাদেশে এটা দেখতে চাই না।’

এছাড়াও বিগত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে এনসিপি। নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

এনসিপির এই নেতা জানান, ‘মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসি থেকে নির্বাচনের সার্টিফিকেশন দেওয়া, প্রার্থীদের হলফনামা তদন্ত করে তার সত্যতা নিরূপণ করা, নির্বাচনী সহিংসতা রোধে আচরণবিধি ও ব্যয়ের বিধিতে পরিবর্তন আনা, ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া বন্ধ করা, হলফনামায় ভুল তথ্য থাকলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও নির্বাচিত হলেও যেন তারা সংসদে থাকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য সময় বাড়ানো, রাজনৈতিক দলগুলো যেন অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা করে তা মনিটরিং করার কথা তারা তুলে ধরেছেন। এগুলো বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচনে যাওয়া ও ভোটাধিকার প্রয়োগ সম্ভব হবে না। এছাড়া একই নামে দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, অফিস নেই অথচ দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। তাই প্রত্যেকটা দলকে নতুন করে নবায়ন করা এবং সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করতে তাগিদ দিয়েছি।’


রাজধানীর ওয়ারীর বাসা থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ওয়ারী হিয়ার স্ট্রিট এলাকায় নিজ বাসা থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে জমজম টাওয়ার নামে একটি ভবনের পঞ্চম তলা একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন, মোহাম্মদ মুঈদ (৩৫) ও তার স্ত্রী আইরিন আক্তার (৩২)। পুলিশের ধারণা, স্বামীর মৃত্যুর পর আত্মহত্যা করেছেন তার স্ত্রী। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ওয়ারী এলাকার জমজম টাওয়ারের পাঁচতলায় ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি। এরমধ্যে স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাউছার আহমদ বলেন, মো. মুহিদ ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েক দিন আগে হয়তো তিনি মারা গিয়েছেন। কারণ, তার মরদেহ অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একই বিছানায় তার স্ত্রী রত্নার মরদেহ পড়েছিল। হয়তো স্বামীর মৃত্যুতে বিষণ্ন হয়ে মুহিদের স্ত্রী আইরিন আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

পাশেই একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল- ‘বিয়ের পর আমার বাবা মা ও স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকায় কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমাকে এবং আমার স্বামীকে বাড়িতে নেওয়ার দরকার নেই’।

বাসায় মালিক নুর হোসেন বলেন, এ দম্পতি পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে তার ফ্ল্যাটে ভাড়া ছিলেন। মুহিদ অসুস্থ শুনেছেন। তাই গত আগস্ট মাস থেকে ভাড়া দিতে পারছিলেন না। ফোনে গত বৃহস্পতিবার ভাড়া আনতে বলেছিলেন তারা। তবে ভাড়ার জন্য ফোন দিলেও তারা ধরেননি। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে দেখতে পান ফ্ল্যাটের মূল দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, মুঈদ কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আড়াইকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ মুসার ছেলে এবং স্ত্রী আইরিন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াজি বাড়ির জয়নাল আবেদীনের মেয়ে।

তারা আরও জানান, ‘দুজনের পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ ছিল না। কারণ, তাদের বিয়ে কেউ মেনে নেয়নি’।


গুমের শিকার প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে

* দাবি চিফ প্রসিকিউটরের
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    * গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো দিন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে উত্তরায় র‌্যাব-১ সদর দপ্তর, নগরীর আগারগাঁওয়ে র‌্যাব-২ ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি (সিপিসি) এবং ঢাকা সেনানিবাসের কচুক্ষেতে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বলপ্রয়োগ পূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম গত ১৫ বছরে গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দায়ের করা মামলার শুনানিতে অংশ নিয়ে গতকাল রোববার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৮০০-৯০০টি জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ২০০টি অভিযোগের তদন্ত প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমাদের আরও সময় প্রয়োজন।’

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আরও দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৪ জুন দিন ধার্য করেন।

গতকাল শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম জানান, ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার মাধ্যমে মামলাটি আমরা শুরু করেছিলাম। তার মধ্যে একজন গ্রেপ্তার আছেন। তিনি হচ্ছেন সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তদন্ত সংস্থার সদস্যরা চারটি ডিটেনশন সেন্টার ও গোপন কেন্দ্র খুঁজে বের করেছেন এবং সেখানে গুমের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, যারা এই কাজ পরিচালনা করতেন তাদের নাম ঠিকানা বের করা হয়েছে এবং কীভাবে এই লাশগুলো সরিয়ে ফেলা বা নষ্ট করা হতো সেটার ব্যাপারে তথ্য প্রমাণ অনেকাংশে জোগাড় হয়ে গেছে। বাদবাকি কিছু প্রমাণ জোগাড়ের কাজ এখনো চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে শত শত অভিযোগ আছে এবং কয়েকশ অভিযোগের মধ্যে থেকে বেশ কতগুলো গুমের ঘটনা তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে, সেগুলোর তদন্ত রিপোর্ট যেকোনো সময় আমরা হয়তো আদালতে দাখিল করতে পারব। এটার জন্য আমরা তিন মাসের সময় চেয়েছিলাম সেটি আদালত মঞ্জুর করেছেন। গুমের শতশত ঘটনাকে একত্রে করে একটি মামলা করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি মামলা ধরে ধরে আলাদা আলাদা করে তদন্ত করে দেওয়া চিন্তাভাবনা আমরা ও আমাদের তদন্ত সংস্থা করছে এবং তারা আশা করছেন খুব দ্রুতই আমরা তদন্ত রিপোর্টগুলো দিতে সক্ষম হব।

গণহত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো দিন

এদিকে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো মুহূর্তে দাখিল হতে পারে বলেও জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, জুলাই আগস্ট গণহত্যায় যে মামলা দাখিল হয়েছে তাতে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার তদন্ত প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায় আছি বলে আমরা আদালতকে জানিয়েছি। তবুও অধিকতর সতর্কতা ও স্বচ্ছতা অবলম্বন করার জন্য আমরা দুই মাস সময় চেয়েছি। আদালত সেটা মঞ্জুর করে আগামী ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন। কিন্তু আমরা আপনাদের এটা জানাতে পারি যে কোনো মুহূর্তে প্রতিবেদনটি দাখিল হয়ে যাবে। সেটা আগামী সপ্তাহেও হতে পারে, যেকোনো সময় হতে পারে।

সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তের জন্য আমরা সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ যেমন সিসিটিভি ফুটেজ, ক্যামেরা কিংবা ড্রোন ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি।

তদন্তের একেবারে শেষপর্যায়ে এসে মোটামুটি এটা বোঝা যাচ্ছে যে এসব অপরাধ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে, সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির মাধ্যমে হাসিনা তার মন্ত্রী পরিষদ, পুলিশ বাহিনীসহ সবাইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং তারা এই পরিকল্পনা সাজানো থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে কাজ করেছে।

জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১২ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ১৯ জনকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এদের মধ্যে ছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান ফজলুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনাইদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আজ তাদের মামলায় শুনানি হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের আদালতে হাজির করা হলে পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং প্রাক্তন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

১২ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (এনটিএমসি) প্রাক্তন পরিচালক মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসানকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। আজ তাকে শুনানির জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

সূত্র: বাসস


দল নিবন্ধনের সময় বাড়ল দুই মাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গতকাল রোববার নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা শেষ হওয়ার তারিখ ছিল। কিন্তু প্রায় ২০টি নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় বাড়িয়ে আগামী ২২ জুন পর্যন্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।

গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, ইসির গণবিজ্ঞপ্তি জারির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হয়েছে গতকাল। এর মধ্যেই বিভিন্ন দল বিভিন্ন মেয়াদে নিবন্ধনের এই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২২ জুন পর্যন্ত দল নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দল নিবন্ধনে আগ্রহীদের আবেদন আহ্বান করলে আজ পর্যন্ত সাতটি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বলে জানান সচিব।

জানা যায়, আলোচনায় থাকা নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি নিবন্ধন আবেদনের সময় বাড়াতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি।

এরইমধ্যে আদালতে রিট করায় ১৮ মার্চ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জন্য দল নিবন্ধনে গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করে। এরপরই মূলত ভাটা পড়ে নিবন্ধন আগ্রহীদের। গণবিজ্ঞপ্তি জারির দুই সপ্তাহের মাথায় ২৫ মার্চ ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি দলের নিবন্ধন আবেদন প্রথম পান বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।


৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি

# কারিগরির শিক্ষার্থীদের ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ ঘোষণা করেছেন পলিটেকনিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ থেকে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের হাতে দাবি-দাওয়া সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। এ সময় ‘আমি কে তুমি কে, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারি’, ‘দেশ গড়ার হাতিয়ার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’, ‘ এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’সহ নানা স্লোগান দেন তারা।

এর আগে সকাল থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে তারা সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন। মামলা বা রিট দায়ের করার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা এবং ২০২১ সালের বিতর্কিত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করা।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদি অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করা।

উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) পদে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবে না। এ পদ সংরক্ষিত করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছাত্রদের ন্যূনতম দশম গ্রেডের বেসিক অর্থাৎ ১৬ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে।

কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিটি প্রকাশ করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, উপ-পরিচালক, অধ্যক্ষ ও দায়িত্বে থাকা সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলকে দায়িত্ব/নিয়োগ দেওয়া।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত সকল নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল সকল শূন্য পদে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও দক্ষ ল্যাব সহকারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।

ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার গেজেট পাস করতে হবে। বর্তমানে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নড়াইল, খাগড়াছড়ি) শতভাগ সিট নিশ্চিত করা।


জাতিসংঘকে শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশি নারীদের সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

আজ রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রমবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যা উৎসাহিত করি তা হলো শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বাংলাদেশি নারীর অংশগ্রহণ।’

শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ তিন দেশের একটি। বর্তমানে বাংলাদেশের ৫,৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে কাজ করছে।

জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জানান, নারীদের শান্তিরক্ষায় সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে জাতিসংঘের একটি নীতিমালা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা নারীদের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না।’ তিনি উল্লেখ করেন যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষার সব ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগে সমর্থন দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, প্রয়োজনে বাংলাদেশ অতিরিক্ত সৈন্য ও পুলিশ পাঠাতে প্রস্তুত। তিনি জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেম (পিপিআরএস)-এর র‌্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুত পাঁচটি ইউনিটের কথা উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সদর দপ্তর এবং মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশি নেতৃত্ব বৃদ্ধির পক্ষে মত দেন। জাতিসংঘ প্রতিনিধি বলেন, এ ব্যাপারেও তারা বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘের যাচাই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ কঠোরভাবে মেনে চলে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতায় জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আরও সহযোগিতাকে স্বাগত জানায়, যাতে মানবাধিকার প্রতিপালন আরও জোরদার হয়।

প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আগামী ১৩ থেকে ১৪ মে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা, বেসামরিক নাগরিক হতাহত এবং নাফ নদীুসংলগ্ন এলাকায় জীবিকা বিঘ্নিত হওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি সতর্ক করেন, এই অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা আরও অবনতি হয়ে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে বলেন, তার এই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নতুন করে আশা জুগিয়েছে।


মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে জাটকা নিধন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১৮:১১
নরসিংদী প্রতিনিধি

বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। এটা শুধু আমাদের পছন্দের খাবারই নয়, বরং হাজারও জেলের জীবন-জীবিকার মাধ্যমও। ইলিশ শুধু একটি মাছই নয় এই মাছ হচ্ছে বাঙালির আবেগ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির প্রতীক। কিন্তু এই মাছের ওপর নির্ভর করে দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ। প্রতিদিন ভোর হলেই জেলেরা মেঘনা নদীতে ছুটে যান মাছ ধরার আশায়। জাল ফেলেন নদীতে। আর মনে মনে অপেক্ষা করেন রুপালি ইলিশ ধরা পড়বে কি না। একসময় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ত। কালের আর্বতে ইলিশ যেন হারিয়ে গেছে। এর বড় কারণ হচ্ছে জাটকা নিধন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নরসিংদীর মেঘনা নদীতে চলছে জাটক ধরার মহোৎসব। এসব জাটকা জেলেরা প্রকাশ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে এবং শহরের পাড়া-মহল্লায় অবাধে বিক্রি করছে। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা ছিল না।

এমপি মার্কেট, নরসিংদী বড়বাজার, নতুন বাজার, বউ বাজার, হোসেন বাজার, করিমপুর বাজার, ভেলানগর বাজার, বটতলা বাজারে বসেছে জাটকার হাট। জেলার সর্বত্র জাটকা বিক্রি যেন এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। প্রতি কেজি জাটকা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝেমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের টাক্সফোর্স ও নৌ-পুলিশ অভিযান চালালেও মৎস্য বিভাগের কোনো অভিযান নেই। জেলা পুলিশেরও জাটকার বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। অনেকটা ফ্রি-স্টাইলে জাটকা নিধন এবং ক্রয়-বিক্রয় চলছে। জাটকা রক্ষায় মৎস্য বিভাগের এমন ভূমিকায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সমাজের সচেতন মহল বলছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে মেঘনা নদীতে ইলিশ সংকট দেখা দেবে। এতে করে জেলে পল্লিতেও অভাব দেখা দেবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীতে জেলেরা প্রকাশ্যে কারেন্টজাল দিয়ে জাটকা মাছ ধরছেন। এক শ্রেণির মৌসুমি জেলে ও ভাসমান আড়তদার সেজে ইলিশের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করতে ব্যক্তির লাভের আশায় জাটকা ধ্বংস করছে। তারা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে জাতীয় মৎস্য সম্পদের বারোটা বাজাচ্ছে। প্রতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে নদীতে সব ধরনের মাছধরা নিষিদ্ধ থাকলেও মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ জাল ফেলে জাটকাসহ ইলিশ ও নদীর অন্যান্য মাছ শিকার করছেন জেলেরা।

বিষয়টি নিয়ে নরসিংদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আজমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, গত ৮ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জেলা মৎস্য বিভাগের আয়োজনে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সপ্তাহ পালন করা হয়েছে এবং যথাযথভাবে লিফলেট ও মাইকিং করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রয়োজনীয় জনবল এবং অর্থ বরাদ্দ না থাকায় জোরদার অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করলেও কর্তৃপক্ষ নীরব থাকায় নির্বিঘ্নে চলছে জাটকা নিধন। অন্যদিকে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সপ্তাহ পালন করা হলেও বাস্তবে অভয়াশ্রমে দেখা মেলেনি কোনো অভিযান। এ ছাড়া নেই কোনো জাটকা সংরক্ষণের প্রচারণা। নামমাত্র জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের মিটিং দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন মৎস্য কর্মকর্তারা। জেলেদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, দৈনিক আয়নির্ভর জীবনযাপন করছেন। নিষিদ্ধ সময়ে খাদ্য-সহায়তা পান না জেলেরা। এ জন্য জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তারা স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক মাছ শিকার করছেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা একজন মহিলা। তাকে দিয়ে কোনো কিছুই করা সম্ভব না। কাজের প্রতি তার কোনো দায়িত্ব নেই বলেই চলে। আমরা চেষ্টা করছি তার পরিবর্তে এখানে একজন পুরুষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য। সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাসকিরা বেগমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন এবং এ প্রতিবেদককে বলেন, জাটকা ধরার ব্যাপারে আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে নারাজ। এটা মৎস্য বিভাগের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার বিরুদ্ধে যা পারেন লিখেন, এতে আমার কিছুই আসে যায় না।


ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২০ জুলাই

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৪৫ জন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, আমলার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এ বিষয়ে শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম আজ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে একথা জানান।

তিনি বলেন, এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির অভিযোগ আছে। আজ শুনানিতে এ মামলার ১৭ জন আসামিকে আদালতে উপস্থিত করা হয়েছিল। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে একটি রিপোর্ট আদালতকে প্রেরণ করা হয়েছে এবং জানানো হয়েছে যে আমাদের আরও দু'মাস সময় দরকার, আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ২০ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্ধারণ করেছেন। আমরা সময় বেশি চাইলেও তদন্ত রিপোর্ট আগেই তৈরি হয়ে যেতে পারে। কোনো কোনো মামলার তদন্ত রিপোর্ট খুব দ্রুতই পাওয়া সম্ভাবনা আছে।

জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১২ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ১৯ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এদের মধ্যে ছিলেন- আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান ফজলুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনাইদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আজ তাদের বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন মামলায় সময় আবেদনের শুনানি হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের আদালতে হাজির করা হলে পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ১০ সদস্য গ্রেফতার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. সাব্বির আহমদ নির্ঝর (২৮), মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক কামরুল আহসান নিশাদ (২৮), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ওরফে কালু (২৫), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল হোসেন ওরফে জীবন (৩০), ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওহিদ এম আর রহমান (৫০), আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শামীম শাহরিয়ার (৫৮), ডেমরা থানার পাইটি ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস কাঞ্চন (৬৪), ৩৩ নম্বর বংশাল ইউনিট যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মাছুম (৫৮), ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুল হাসান রতন (৩৪) ও উত্তর বাড্ডা এলাকার ছাত্রলীগ কর্মী রবিন দেওয়ান (২৯)।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ২০ এপ্রিল রাতে বংশাল এলাকা থেকে মোহাম্মদ হোসেন মাছুমকে ও মগবাজার এলাকা থেকে মো. হাবিবুল হাসান রতনকে গ্রেফতার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগের পৃথক টিম।

এদিকে গতকাল দুপুর একটায় মিরপুর-১০ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. সাব্বির আহমদ নির্ঝরকে গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগের একটি টিম।

একই দিন সকাল আনুমানিক ১০টায় ডিবি-গুলশান বিভাগের একটি দল অভিযান চালিয়ে উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে রবিন দেওয়ানকে গ্রেফতার করে।

ডিবি সূত্র আরও জানায়, গতকাল ডিবি-রমনা বিভাগ পৃথক অভিযান পরিচালনা করে দুপুর আনুমানিক ১২টায় ফুলবাড়িয়ার আনন্দ বাজার থেকে ইব্রাহিম খলিল ওরফে কালুকে ও সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় উত্তরা দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে কামরুল আহসান নিশাদকে গ্রেফতার করে।

এছাড়া গতকাল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টায় ডিবি-মতিঝিল বিভাগের একটি টিম রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে শাকিল হোসেন ওরফে জীবনকে গ্রেফতার করে। একই দিন রাত আনুমানিক ১১টা ৫৫ মিনিটে ডিবি-তেজগাঁও বিভাগের একটি দল রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ওহিদ এম আর রহমানকে গ্রেফতার করে।

ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, শনিবার রাতে ডিবি-সাইবার বিভাগের একটি টিম মগবাজার এলাকা থেকে শামীম শাহরিয়ারকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে ১৯ এপ্রিল রাতে ডিবি-ওয়ারী বিভাগের একটি টিম যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মো. ইলিয়াস কাঞ্চনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তারা নানাভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


আ.লীগ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে আলাউদ্দিন জিহাদির মিথ্যা বক্তব্য ছড়াচ্ছে

ছবি: সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস ফেসবুক পেজ
আপডেটেড ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১৬:৫৭
বাসস

দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদির দেয়া মিথ্যা বক্তব্য ছড়াচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ নামক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদি নামে এক বক্তা দাবি করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন।’

প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আলাউদ্দিন জিহাদির এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এটি ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা মূলত অধ্যাপক ইউনূস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্রের অংশ।’

স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো জানিয়েছে, অধ্যাপক ইউনূসের সংগঠন গ্রামীণ আমেরিকা ইসরায়েলকে ১ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে—এমন দাবি প্রথমে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ‘বাংলা ইনসাইডার’ নামে একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়।

পরে এটি ধীরে ধীরে অন্যান্য কিছু অনলাইন পোর্টাল ও সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশ পায়।

এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর রিউমার স্ক্যানার নামে একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা বিষয়টি তদন্ত করে।

তাদের তদন্তে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মম হামলার সময় বাংলাদেশে ছড়ানো হয় যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে এক হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন।

তদন্তে আরও উঠে আসে, ১৩ অক্টোবর ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রচারণামূলক অনলাইন মিডিয়া বাংলা ইনসাইডার একটি ভুয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং তা ছড়িয়ে দেয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি এই তথ্য সমর্থন করেছে। কিন্তু সেই সময় ইসরায়েলি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও রিউমার স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে যে এমন কোনো বিবৃতি তারা প্রকাশ করেনি।

এ ছাড়া ইসরায়েলি সাংবাদিক ও ফ্যাক্ট-চেকাররাও রিউমার স্ক্যানারকে জানান, তারা এমন কোনো সহায়তার বিষয়ে অবগত নন। একইসঙ্গে ইউনূস সেন্টারও নিশ্চিত করে যে এই বিষয়টি মিথ্যা, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের সব আলেম, ওলামা ও দায়িত্বশীল নাগরিকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার এবং যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়েছে।


উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে কমিশনের সুপারিশ

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গতকাল শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

উত্তরাধিকারে নারী ও পুরুষ-এর সমান অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গতকাল শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করে।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান শিরীন পারভিন হক। এ সময় কমিশনের অন্য সদস্যগণও উপস্থিত ছিলেন।

সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়গুলো হচ্ছে- সংবিধান আইন ও নারীর অধিকার, সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি, নারীর অগ্রগতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও জাতীয় সংস্থাসমূহ, নারীর স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন, নারী ও মেয়ে শিশুর জন্য সহিংসতা মুক্ত সমাজ, জনপরিসরে নারীর ভূমিকা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে, জন প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ, নারীর অগ্রগতির জন্য শিক্ষা, প্রযুক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধি, সকল বয়সী নারীর জন্য সুস্বাস্থ্য, অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সম্পদের অধিকার, শ্রম ও কর্মসংস্থান, নারী শ্রমিকের নিরাপদ অভিবাসন, দারিদ্র্য হ্রাসে টেকসই সামাজিক সুরক্ষা, গণমাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ, চিত্রায়ন ও প্রকাশ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে নারীর অন্তর্ভুক্তি ও বিকাশ এবং দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনে নারী।

এসব সুপারিশে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সম্পদের অধিকার বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে করণীয় নারীদের কৃষিখাতে অন্তর্ভুক্তি সহজ করা, মৎস্যজীবী হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি ও বনজ সম্পদের ওপর নারীর অধিকার নিশ্চিত করা। সুপারিশে উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের মেয়াদে করণীয় বিষয়ে বলা হয়েছে যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণে নারীর প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ে প্রবেশ সহজ করা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। যুবনারীদের কর্মসংস্থানে প্রবেশ সহজ করার লক্ষ্যে তাদের উপযোগি শিক্ষা, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সম্ভাবনা সংক্রান্ত তথ্য, আর্থিক সমর্থন ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং প্রদান করা।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন হয়েছে নভেম্বরে। চলতি মাসের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ কমিশনের মেয়াদ রয়েছে। এ সংস্কার কমিশন মোট ৪৩ টি নিয়মিত বৈঠকে মিলিত হয়। নারী অধিকার, উন্নয়ন সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন, পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সাথে ৩৯ টি পরামর্শ সভা করে কমিশন। অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সাথে ৯টি সভায় মিলিত হয়। পরামর্শ সভাগুলো হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খুলনা, শ্রীমঙ্গল, রংপুর ও ময়মনসিংহে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও সংগঠনের পরামর্শ ও সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।


প্রধান উপদেষ্টা কাল কাতার যাচ্ছেন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চারদিনের সরকারি সফরে আগামীকাল কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে তিনি ‘আর্থনা সামিট-২০২৫’ -এ অংশগ্রহণ করবেন।

অধ্যাপক ইউনূস কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন বলে বাসসকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

আজাদ মজুমদার বলেন, সামিটে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন,জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে।

দেশের ইতিহাসে এ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন।

এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।

‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’ প্রতিপাদ্যে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠেয় ‘আর্থনা সামিট’-এ কাতারের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশটির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনন্য প্রতিবেশগত বৈচিত্র্যকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে।

এই সামিট একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যেখানে প্রথাগত জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিক উন্মোচন এবং এক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল এই দুই দিনে সামিটে উপস্থাপনা, ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।


আজ সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ছয় দফা দাবি আদায়ে আজ রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার ‘রাইজ ইন রেড’ নামে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী।

কুমিল্লার কর্মসূচিতে ‘হামলার’ অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে সারা দেশে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে আজ প্ল্যাকার্ড হাতে ‘রাইজ ইন রেড’ নামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দেশ গড়ার হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর আগে শুক্রবার দুপুরে ছয় দফা দাবি আদায়ে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল করেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা।

মিছিল-পরবর্তী এক ব্রিফিংয়ে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে বলব, আমাদের দাবি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নিন, আমরা রাজপথ ছেড়ে দেব। কুমিল্লার ভাইদের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করুন, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী।’

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘এই সরকার আমাদের সরকার, শিক্ষার্থীদের সরকার, বিপ্লবীদের সরকার। এই সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। কারিগরি শিক্ষা সেক্টরে যে বৈষম্য আছে, আমরা চাই সরকার তা দূর করুক।’

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে মশাল মিছিল করেন। তার আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেও সন্তুষ্ট না হয়ে ছয় দফা দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।


banner close