রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিশ্বব্যাপী খাদ্য-সার সংকটের ৩ কারণ, বাংলাদেশও শঙ্কার বাইরে নয়

প্রতীকী ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২২ ১০:১০

মো: ইমরানুর রহমান

বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছে কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট। কারণগুলো হলো- সার ঘাটতি, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূল আবহাওয়া।

সার ঘাটতি

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হলে খাদ্য-শস্য উৎপাদনের অপরিহার্য উপাদান সারের বৈশ্বিক চালান ব্যাহত হয়।

বিশ্বে নাইট্রোজেন সারের শীর্ষ রপ্তানিকারক এবং ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার রপ্তানিতে দ্বিতীয় রাশিয়া। এ ছাড়া রাশিয়ার মিত্র বেলারুশও গুরুত্বপূর্ণ সার রপ্তানিকারক দেশ। পটাশিয়াম সারের বৈশ্বিক চাহিদার ৪০ শতাংশের বেশি রপ্তানি করে এই দুই দেশ।

রাশিয়া বছরে মোট ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলারের সার রপ্তানি করত। প্রধান ক্রেতার তালিকায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও ব্রাজিল।

এ ছাড়া মঙ্গোলিয়া, হন্ডুরাস, ক্যামেরুন, ঘানা, সেনেগাল এবং গুয়েতেমালাসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশ তাদের মোট সার আমদানির পাঁচ ভাগের এক ভাগ রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমারা একের পর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এতে সংকটে পড়েছে রাশিয়া থেকে সার আমদানি করা দেশগুলো। বিপদে পড়েছে বাংলাদেশও। অন্যদিকে চীন সার রপ্তানি না করে মজুত করছে।

এমন পরিস্থিতিতে গত মাসেই কানাডার কাছে সহায়তা চেয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এক সৌজন্য সাক্ষাতে কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাসের কাছে পটাশিয়াম রপ্তানি অব্যাহত রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি প্রভাব ফেলেছে সার উৎপাদনে।

অন্য অনেক দেশের মতো জ্বালানি সংকটে রয়েছে বাংলাদেশও। উল্লেখ্য, গ্যাস সংকটে ২১ জুন থেকে বন্ধ রয়েছে যমুনা সার কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন। দীর্ঘ সময় উৎপাদন বন্ধ থাকলে কারখানা কমান্ডিং এরিয়ায় সার সংকটে আগামী মৌসুমে বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা। গ্যাস সংকটে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) গ্যাস উৎপাদন গত ১৯ জুলাই বন্ধ হয়ে গেছে।

সার রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থান চীনের। বছরে দেশটি ১ হাজার কোটি বেশি ডলারের সার রপ্তানি করত। এখন বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সার রপ্তানি না করে মজুত করছে দেশটি। ফলে সারের বৈশ্বিক সংকট বাড়ছে। ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন।

বৈশ্বিক শস্য রপ্তানি

রুশ কৃষ্ণসাগর নৌবহরের ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো অবরোধ, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী খাদ্য রপ্তানির চেনা চিত্র বদলে দিয়েছে।

বিশ্বে গমের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশের জোগান দেয় রাশিয়া ও ইউক্রেন। গম বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত শস্যগুলোর একটি। এছাড়া ইউক্রেন ভুট্টা, বার্লি ও সূর্যমুখী তেলের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। চলমান সংঘাতে দেশটির খাদ্যপণ্য রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। ইউরোপের বাজারে সূর্যমুখী তেলে পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।

সাম্প্রতিক খাদ্য ঘাটতি

রাশিয়া ও ইউক্রেন বৈশ্বিক বাজারে বছরে প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্যশস্য জোগান দেয়। জাতিসংঘ বলছে, করোনাভাইরাস মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত বছর প্রায় ১০০ কোটি মানুষ খাদ্যাভাবে ছিল।

সাম্প্রতিককালে তাপ, খরা ও বন্যায় উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং ভারতেও ফসলের ক্ষতি হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রাজিলে খরা ও তুষারপাতে ফসল নষ্ট হওয়ায় কফির দাম ৭০ শতাংশ বেড়ে যায়।

এসব সংকটের মুখে বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি কৃষি, পুষ্টি, সামাজিক সুরক্ষা, পানি ও সেচের মতো বিষয়গুলোয় ৩ হাজার কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।

খাদ্য সংকট সমাধানে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগরে অবরোধ শিথিল করবে রাশিয়া। এতে ইউক্রেন থেকে জাহাজে খাদ্য রপ্তানির পথে আর কোনো বাধা থাকবে না। চুক্তিটি পুরোপুরি বাস্তবায়নে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস। জাতিসংঘের মতে, বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।


গাজায় যুদ্ধ বন্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চায় হামাস

আরও ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজার ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। আর এর মধ্যেই যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে, তা শর্তের আবর্তে আটকে আছে। ইসরায়েল একটি অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল, যা প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। ফিলিস্তিনের সংগঠনটি বলছে, তারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চায়। পাশাপাশি ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে তাদের হাতে থাকা বাকি সব জিম্মিকে তারা মুক্তি দিতে আগ্রহী। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। রয়টার্স ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির প্রধান খলিল আল-হায়া এক ভাষণে জানান, তারা আর কোনো ধরনের অন্তর্বর্তী চুক্তিতে রাজি হবেন না। হামাসের যে দলটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে, হায়া তারও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার রয়টার্স জানায়, হামাসের এ অবস্থান ইসরায়েল মেনে নেবে না এবং গাজায় তেল আবিবের সাম্প্রতিক অভিযান আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

হায়া বলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলের কারাগারে থাকা সব ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি ও গাজা পুনর্গঠনের বিনিময়ে সব জিম্মিকে ছাড়তে হামাস যত শিগগির সম্ভব ‘পূর্ণাঙ্গ চুক্তির আলোচনায়’ বসতে চায়। তিনি বলেন, ‘নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার ঢাল হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকার এসব সাময়িক চুক্তিকে ব্যবহার করছে; সব জিম্মিকে বলি দিয়ে হলেও তারা এটা করতে চায়। আমরা এ নীতি বাস্তবায়নের অংশ হতে চাই না।’

১৫ মাসের যুদ্ধ শেষে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। গত ১৮ মার্চ ওই চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে না গিয়ে ইসরায়েল প্রথম ধাপের সম্প্রসারণ করতে চাচ্ছিল। দ্বিতীয় ধাপ অনুযায়ী, গাজায় হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির মুক্তির পাশাপাশি গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা এখনো জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুনরুজ্জীবনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

হামাসের অবস্থানের সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, হামাসের মন্তব্য প্রমাণ করে, তারা শান্তিতে নয়, বরং চিরস্থায়ী সহিংসতায় আগ্রহী। ট্রাম্প প্রশাসনের শর্ত বদলায়নি– জিম্মিদের মুক্তি দাও, নতুবা নরকের মুখোমুখি হও।

যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করা ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে গত সোমবার কায়রোতে হওয়া সর্বশেষ রাউন্ডের আলোচনায় কোনো ধরনের সমঝোতাই হয়নি। জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বন্ধে অপ্রত্যক্ষ আলোচনা শুরু করতে ইসরায়েল ৪৫ দিনের একটি অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল। কিন্তু তাদের দেওয়া বেশ কিছু শর্তে আপত্তি আছে হামাসের। তেল আবিবের শর্তগুলোর মধ্যে একটি ছিল-হামাসের নিরস্ত্রীকরণ। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বারবারই বলেছে, ‘অস্ত্র সমর্পণ’এমন একটি ‘লাল দাগ’, যা নিয়ে আলোচনা তো দূর, এটি বিবেচনাযোগ্যও নয়।

এ অবস্থায় গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত শুক্রবার উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জনসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা ১০ জনের মরদেহ ও অনেক মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। খান ইউনিসের বানি সুহাইলায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর হামলার শিকার হওয়া বারাকা পরিবারের বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।’

আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ভেতরে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ এবং সাহায্য সরবরাহ হ্রাসের ফলে মানসিক চাপের মাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

সফর সংক্ষিপ্ত করে পালালেন ইসরায়েলের মন্ত্রী

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার যুক্তরাজ্য থেকে সফর সংক্ষিপ্ত করে ‘পালিয়েছেন’ বলে জানিয়েছে গ্লোবাল লিগ্যাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (জিএলএএন)। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানোর পরই এ দখলদার পালিয়ে দ্রুত ইসরায়েলে চলে যান। লন্ডনভিত্তিক জিএলএএন ছাড়াও হিন্দ রজব ফাউন্ডেশনও তাঁর গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য আবেদন জানিয়েছিল।

ইসরায়েলি হামলায় ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজাজুড়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এক দিনে ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মেডিকেল সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জরুরি সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, গাজায় এখন খাদ্যের প্রয়োজন। কারণ লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধার ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫১ হাজার ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন।

যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে আরও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে দখলদার ইসরায়েল।

ইসরায়েলে ঝাঁকে ঝাঁকে নামছে মার্কিন সামরিক বিমান

ইসরায়েলে ঝাঁকে ঝাঁকে নামছে মার্কিন বিমান। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৯টি মার্কিন সামরিক পরিবহন বিমান অবতরণ করেছে। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের বরাতে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেলআবিবের কাছে একটি ইসরায়েলি বিমানঘাঁটিতে ওই বিমানগুলো অবতরণ করে। প্রতিটি বিমানই বাংকার বাস্টার বোমা দিয়ে বোঝাই ছিল। মধ্যাঞ্চলীয় ইসরায়েলের তেল আবিবের কাছে নেভাতিম বিমানঘাঁটির অবস্থান। সেখানেই বাংকার বাস্টার বোমা ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ৯টি মার্কিন পরিবহন বিমান অবতরণ করেছে।

বিষয়:

‘হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যাবে না’

নাঈম কাসেম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন কোনোভাবেই নিরস্ত্র হবে না। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যাবে না।’ গত শুক্রবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। নাঈম কাসেম কঠোর ভাষায় জানিয়ে দেন, ‘যারা আমাদের অস্ত্র কেড়ে নিতে চায়, তারা ইসরায়েলি স্বার্থে ষড়যন্ত্র করছে’। তার ভাষায়, ‘এই অস্ত্রই আমাদের স্বাধীনতা এনেছে।’

আল-মানার চ্যানেলে সম্প্রচারিত ভাষণে নাঈম কাসেম বলেন, ‘হিজবুল্লাহর অস্ত্র লেবাননের প্রতিরোধের মূল স্তম্ভ। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীই দেশকে মুক্ত করেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে এবং আজও ইসরায়েলের আগ্রাসনকে প্রতিহত করে চলেছে।’

তার ভাষায়, ‘যারা আমাদের নিরস্ত্র করতে চায়, তারা আসলে দক্ষিণ লেবাননকে দখলের পথে ইসরায়েলের জন্য পথ তৈরি করতে চায়।’ হিজবুল্লাহ মহাসচিব এ সময় জানান, লেবাননে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল ২ হাজার ৭০০-এরও বেশিবার আগ্রাসন চালিয়েছে। আমাদের প্রতিরোধ ছাড়া এই আগ্রাসন থামত না।

তিনি আরও জানান, হিজবুল্লাহ সব সময় যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে চলেছে। তবে দখলদার ইসরায়েল তা একের পর এক ভেঙে চলেছে। মার্কিন চাপ ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নাঈম কাসেম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র লেবাননে নিজেদের ছায়া প্রশাসন বজায় রাখতে চায়। তারা আমাদের অস্ত্র কেড়ে নিতে চায়, যাতে লেবানন দুর্বল হয় এবং ইসরায়েল সহজেই দেশটিকে গ্রাস করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাউকেই ভয় পাই না। আমাদের প্রতিরোধ নীতি অব্যাহত থাকবে। আমেরিকার হুমকিতে নয়, আমাদের জনগণের অধিকার রক্ষার স্বার্থে আমরা এই নীতি বজায় রাখব।’

শেখ কাসেম তার বক্তব্যে ইয়েমেনের হুতি আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীকেও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ইয়েমেনকে স্যালুট জানাই- যারা আজ পুরো বিশ্বের হয়ে মার্কিন-ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এবং প্রতিরোধ ‍সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।’

সেই সঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংলাপ সফল হবে এবং অঞ্চল শান্তির পথে এগোবে। কিন্তু শর্ত একটাই- ‘ইসরায়েলকে লেবানন থেকে পিছু হটতে হবে’।

শেখ নাঈম কাসেমের এই বক্তব্য একদিকে যেমন হিজবুল্লাহর আপসহীন প্রতিরোধ নীতির পুনর্ব্যাখ্যা, তেমনি এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভেতরকার জিওপলিটিকাল লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যেখানে গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলকে নিরস্ত্রীকরণের পথে ঠেলে দিতে চায়, সেখানে হিজবুল্লাহ বলছে- অস্ত্রই নিরাপত্তা।

তাদের বক্তব্যের প্রকারান্তরে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যতদিন ইসরায়েল তার আগ্রাসন চালিয়ে যাবে, ততদিন প্রতিরোধও চলবে।

বিষয়:

যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে ভারতীয়দের ভিসা বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ভিসা বাতিল হওয়াদের মধ্যে অর্ধেক শিক্ষার্থীই ভারতীয়। গতকাল শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস। আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইএলএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ৩২৭টি ভিসা বাতিলের ঘটনার মধ্যে ৫০ শতাংশই ভারতীয়। এই পরিসংখ্যানে উদ্বেগ প্রকাশ করে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ইস্যুটি কি মার্কিন প্রতিরূপের সঙ্গে আলোচনায় তোলা হবে?

এআইএলএর বক্তব্য অনুযায়ী, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (ডিওএস) এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অভিবাসন আইনের কঠোর প্রয়োগে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিশানা করছে। এতে করে ভিসা বাতিল, পড়াশোনার স্ট্যাটাস বাতিল এবং দেশ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা বাড়ছে। সংস্থাটি ৩২৭টি কেস সংগ্রহ করেছে, যার অর্ধেকই ভারতীয় শিক্ষার্থী। এর পরই আছে চীন। দেশটির ১৪ শতাংশ ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশ।

রমেশ এক্স (টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, ভিসা বাতিলের কারণ অস্পষ্ট এবং এলোমেলো। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও আশঙ্কা ছড়াচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন? এআইএলএর দাবি, বিক্ষোভে জড়িত নয়- এমন শিক্ষার্থীদেরও টার্গেট করা হচ্ছে। অনেকের এসইভিআইএস স্ট্যাটাস বাতিল করা হচ্ছে, যা পড়াশোনা ও থাকার অনুমতির মূল ভিত্তি।

৪০ সেকেন্ডের মধ্যে আবেদন বাতিল!

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য বি১/বি২ ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন করেছিলেন ভারতের এক নাগরিক। ভারতে তার স্থিতিশীল চাকরি এবং সুস্পষ্ট ভ্রমণ পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও সাক্ষাৎকারের মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে তার আবেদন বাতিল করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এই অভিজ্ঞতা সামাজিকমাধ্যম রেডিটে শেয়ার করেছেন তিনি, যা মার্কিন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার সাধারণ সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ওই ব্যক্তি ফ্লোরিডায় দুই সপ্তাহের ছুটি কাটাতে চেয়েছিলেন, যেখানে তিনি ডিজনি ওয়ার্ল্ড এবং ইউনিভার্সাল স্টুডিওর মতো জনপ্রিয় স্থান ঘুরে দেখার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মার্কিন দূতাবাসে তার সাক্ষাৎকার মাত্র তিনটি প্রশ্নের পরই শেষ হয়ে যায়।

দূতাবাস তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘আপনি কেন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে চান?’, ‘আপনি কি এর আগে কখনো ভারতের বাইরে সফর করেছেন?’ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্রে কি আপনার বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যদের কেউ থাকে?’ এর পরই তাকে ২১৪(বি) ধারার অধীনে ভিসা প্রত্যাখ্যানের নোটিশ দেওয়া হয়।

জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এর আগে কখনো ভারতের বাইরে সফর করিনি। তবে ফ্লোরিডায় আমার গার্লফ্রেন্ড থাকে এবং তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’ এই জবাবের পরপরই তার আবেদন বাতিল করা হয়।

রেডিটে একজন ব্যবহারকারী এই পরিস্থিতির সারাংশ তুলে ধরে বলেন, ‘আপনার আবেদন সঠিকভাবেই বাতিল হয়েছে, যদিও এটা দুর্ভাগ্যজনক। আপনার কোনো বিদেশ ভ্রমণের রেকর্ড নেই এবং আপনার প্রেমিকা যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক এবং ভারতে ফেরার কোনো শক্তিশালী কারণ না থাকার ইঙ্গিত দেয়।’

মার্কিন ভিসা প্রত্যাখ্যানের অন্যতম প্রধান কারণ হলো নিজ দেশের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক প্রমাণে ব্যর্থতা। এই সম্পর্কের মধ্যে থাকতে পারে স্থিতিশীল চাকরি, সম্পত্তি বা পারিবারিক দায়বদ্ধতা। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর স্থিতিশীল চাকরি থাকা সত্ত্বেও বিদেশে ভ্রমণের রেকর্ড না থাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রেমিকার উপস্থিতি তার সেখানে অতিরিক্ত সময় থাকার ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

ভিসা আবেদনকারীদের উচিত তাদের ভ্রমণের উদ্দেশ্য স্পষ্ট ও সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা। ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে ভুল বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দেওয়া বা ভ্রমণের উদ্দেশ্য পর্যাপ্তভাবে ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হলে সন্দেহের সৃষ্টি হতে পারে এবং আবেদন বাতিল হতে পারে।


গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত (ছবি: সংগৃহীত)
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ইসরায়েলি বিমান হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের বারাকা পরিবারের একটি আবাসিক বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া একটি নাপিতের দোকানে বিমান হামলার পর দুই শিশু ও এক নারীসহ আরও ৬জন নিহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘খান ইউনিসে একাধিক হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আরও দুজন নিহত হয়েছেন।’

বাসাল বলেন, উত্তরে, তাল আল-জাতার এলাকায় মাকদাদ পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গাজা শহরের দুটি বাস্তুচ্যুত তাঁবুতে বিমান হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।

সংবাদ বিবৃতিতে সিভিল ডিফেন্স সতর্ক করে দিয়েছে, জ্বালানি সংকটের কারণে আগামী দিনে তাদের জরুরি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতির জন্য তারা সাহায্য এবং জ্বালানি প্রবেশের উপর ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছে।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইডিএফ সৈন্যরা গাজায় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবকাঠামো ধ্বংস করছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করছে।

আইডিএফ আরও জানায়, ‘ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজা জুড়ে প্রায় ৪০টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এরমধ্যে সন্ত্রাসী, সামরিক কাঠামো এবং অস্ত্র সংরক্ষণাগার রয়েছে।’


গাজায় নৃশংস হামলা অব্যাহত, এক দিনে নিহত ৩২

গাজায় একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে জিনিসপত্র উদ্ধার করছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এতে এক দিনে ৩২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজা আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে খারাপ মানবিক ব্যর্থতাগুলোর মধ্যে একটি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫১ হাজার ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে ইয়েমেনের হোদেইদাহ প্রদেশের রাস ইসা বন্দরকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে আরও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে দখলদার ইসরায়েল।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

একসঙ্গে নিহত হলেন পরিবারের ১০ সদস্য

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলের আলাদা দুই হামলায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা ১০ জনের মরদেহ এবং অনেক মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের পূর্ব দিকের বানি সুহাইলা এলাকায় ইসরায়েলি দখলদারি বাহিনীর হামলার শিকার হওয়া বারাকা পরিবারের বাড়ি ও আশপাশের বাড়িগুলো থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।’

বাসাল পরে ঘোষণা দিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলীয় গাজার তাল আল-জাতার এলাকায় আলাদা আরেকটি হামলা হয়েছে। দুটি বাড়িতে এ হামলার ঘটনায় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেনি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন বাসিন্দা নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল সিভিল ডিফেন্স। নিহতদের বেশির ভাগই বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা ছিলেন। ১৮ মার্চ থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকে তারা গাজায় বিমান হামলা জোরদার এবং স্থল অভিযান বিস্তৃত করেছে।

গাজায় ত্রাণ সংকট চরমে

দেইর আল-বালাহ থেকে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদক মোআথ আল-কালহুত জানান, সারা দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল ও গাজা শহরের পূর্বাংশে ঘরবাড়ি ধ্বংসের অভিযান চালিয়েছে। শুজাইয়া পাড়ায় অসংখ্য আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ পৌঁছানো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা তাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এদিকে, দেড় মাস ধরে ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশে ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ফলে উপত্যকায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো তাদের অসহনীয় কষ্টের কথা জানিয়েছেন। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের খাওয়াতে পারছেন না।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ইসরায়েলের এই অবরোধ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, হামাসের ওপর চাপ বজায় রাখতে এই অবরোধ চলবে এবং তা সরানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ না পৌঁছানোয় গাজায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমশ বাড়ছে। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শিশুরা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত মার্চ মাসেই অপুষ্টিতে ভোগা প্রায় ৩ হাজার ৭০০ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় অনেক বেশি। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটও দেখা দিয়েছে উপত্যকায়।

এ পরিস্থিতিতে গাজা দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জার্মানি। উত্তর কোরিয়াও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েল। এরপর থেকে উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

‘গাজা সফরকারীদের’ স্যোশাল মিডিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এরপর গাজায় গিয়েছিলেন, তাদের স্যোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

অভিবাসী কিংবা অভিবাসী নয় এমন সব ভিসাধারীরাই এ সোশ্যাল মিডিয়া যাচাই-বাছাইয়ে পড়বেন; এতে বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা যেমন থাকবেন তেমনি থাকবেন সেই ব্যক্তিরাও যারা সরকারি বা কূটনীতিক কাজে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে গিয়েছিলেন, তা তারা যত অল্প সময় বা ক্ষণই সেখানে থাকেন না কেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশনে এ সংক্রান্ত যে তারবার্তা পাঠিয়েছে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স তা দেখেছে।

বার্তায় বলা হয়, ’সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনায় যদি নিরাপত্তা-সম্পর্কিত কোনো সন্দেহজনক বা ক্ষতিকর তথ্য উঠে আসে, তাহলে ওই আবেদনকারীর একটি সিকিউরিটি অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন (এসএও) দাখিল করতে হবে।’ এসএও হচ্ছে এক ধরনের আন্তঃসংস্থাগত তদন্ত, যার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়-ভিসা আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না।

বিষয়:

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা ভারত সরকারের। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয় ভারত। এর এক সপ্তাহ পর অন্তর্বর্তী সরকার নির্দেশনা জারি করে ভারত থেকে স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে সুতা আমদানি করা যাবে না। আর স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধের বিষয়টির পরই টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার জানাল, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। এছাড়া ঢাকা বাণিজ্য বিষয়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির বদলে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা দিল্লি হয়ত নেবে না বলে সংবাদমাধ্যমটির শিরোনামে দাবি করা হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারত সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের জট কমাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। যদিও দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমে বেশ ফলাও করে বলা হয়েছিল, প্রধান উপদেষ্টা ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য করার পর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে তাদের সরকার।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ভারত সরকার আশ্বস্ত করেছে।

তারা আরও দাবি করেছে, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের আগেই গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ তিনটি বন্দর বন্ধ ও স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সুতা আমদানি সংক্রান্ত নির্দেশনা গত সপ্তাহে জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এছাড়া গত জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে বাংলাদেশ সতর্কতা বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটিও দুই দেশের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে বাংলাদেশে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে। এতে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনে মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া


গাজায় নতুন করে বাস্তুচ্যুত ৫ লাখ ফিলিস্তিনি

আরও ৩৫ জন নিহত
গাজা ছেড়ে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে গাজায় নতুন করে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বা বারবার ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে ইসরায়েল বুধবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকায় নতুন করে ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তার দেশ এখন ‘সুষ্পষ্ট নীতি’ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা হলো হামাসকে চাপে রাখার ‘হাতিয়ার’ হিসেবে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তাসামগ্রী প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রাখা।

ছয় সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো মানবিক সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ অবরোধ। সেই সঙ্গে গাজাবাসীর ওপর দমন-পীড়নও জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। সেই সঙ্গে ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। ওই দিন রাত থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ১৮ মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় নারী ও শিশু মিলিয়ে ৫১ হাজার ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩৫

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলার একটি ঢেউ গাজা অঞ্চলজুড়ে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একাধিক শিবিরে আঘাত করেছে। ফলে কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের আল-মাওয়াসি এলাকায় গত রাতভর চালানো এক হামলায় বেশ কয়েকটি তাঁবু ধ্বংস হয়। এর ফলে ১৬ জন নিহত হয়। তিনি এএফপিকে বলেন, খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারের আবাসস্থলে দুটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন শহীদ হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই হামলায় ২৩ জন আহত হয়েছেন।

মুখপাত্র বাসালের মতে, বাস্তুচ্যুত মানুষের অন্যান্য শিবিরে আরও দুটি হামলায় ৮ জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়। বাসাল আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহিয়ায় তাঁবুতে হামলায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে আল-মাওয়াসি এলাকার কাছে আরেকটি হামলায় তাঁবুতে বসবাসকারী এক বাবা এবং তার সন্তান নিহত হয়।

গাজা সীমান্তে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ

ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে এবার নিজেদের বাসিন্দাদের ওপর বোমাবর্ষণ করল ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে গিয়ে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইহুদি বসতির ওপরেই বোমাবর্ষণ করে বসল! বুধবার সকালের ওই ঘটনার পরেই অবশ্য সাফাই দিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সেনাবাহিনী (আইডিএফ)।

তাদের যুক্তি, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই গাজা সীমান্তের দু’কিলোমিটার দূরে ইতজাকের কাছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ওপর যুদ্ধবিমান থেকে কয়েকটি বোমা পড়ে গিয়েছে!

ঘটনাচক্রে, নেতানিয়াহুর গাজা সফরের দিনেই ঘটেছে এই বিপত্তি। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনও আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। কার্তজ বলেন, হামাসের উপর চাপ বাড়াতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সেই সঙ্গেই গাজায় মোতায়েন সেনাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বার্তা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নিশানা গাজা ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণ প্রান্ত রাফা। সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেখানে সেনা অভিযান শুরু হলে বহু ফিলিস্তিনির হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন প্রস্তাব এসেছে ইসরায়েলের তরফে। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস যদি ১০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে বিনিময়ে কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে তেলআবিব।

আল-আকসার ভাগাভাগি শুরু?

ইসরায়েল রেকর্ডসংখ্যক ১৮০ জন ইহুদি উপাসককে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এটিই এখন পর্যন্ত চত্বরে ইহুদি প্রবেশের সর্বোচ্চ নজির। বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় উপাসকরা প্রবেশ করে প্রার্থনা করে, যেখানে সাধারণত একসঙ্গে ৩০ জনের বেশি ইহুদিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না।

ঘটনাটিকে ‘ভীতিকর ও নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামিক ওয়াকফের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক আওনি বাজবাজ। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি যা আগে কখনো হয়নি।’

মুসলিম উপাসকদের ওই সময় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এর মাধ্যমে আল-আকসার ‘স্থিতাবস্থা’ পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই টেম্পল মাউন্টে (আল-আকসা চত্বর) প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের জন্য তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। এটি আন্তর্জাতিকভাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত, যদিও ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে এলাকা দখল করে রেখেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি উগ্রপন্থি নেতারা আল-আকসায় ইহুদি উপাসনার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতো বিভাজনের দিকেই পরিস্থিতি এগোচ্ছে।

বিষয়:

ভারতে সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিত

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। গত বুধবার থেকে এ আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এই আইনের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের শুনানির পর আজ বৃহস্পতিবার স্থগিত রাখার ঘোষণা আসে। এতে বলা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা কেন্দ্রকে মানতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, আজ বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ‘ওয়াকফ’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের।

এরপরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। তাই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’ এর আগে গত বুধবার এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

প্রসঙ্গত, ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াকফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। তবে এই আইন নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকরের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। মুর্শিদাবাদে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বালও।

তিনি গত বুধবার শুনানিতে বলেন, ‘এত দিন শুধু মুসলিমরাই ওয়াকফ বোর্ডে থাকতে পারতেন। এখন হিন্দুরাও পারবেন– এটা মৌলিক অধিকারের দখলদারি। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সীমাবদ্ধতা ছিল না। নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’ গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?’


ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে : ট্রাম্পের দূত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ বলেছেন, ওয়াশিংটনের সাথে চুক্তি করতে চাইলে তেহরানকে অবশ্যই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণরপে ‘বাতিল’ করতে হবে। আগামী শনিবার মাস্কাটে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরুর আগে এই দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

উইটকফের এই মন্তব্য তার আগের দিন করা মন্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ, উইটকফ আগের দিন বলেছিলেন, ইরান শক্তি উৎপাদনের জন্য যদি খুব কম পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে তাহলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি থাকবে না।

অথচ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উইটকফ বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য যেকোনো চূড়ান্ত ব্যবস্থার মধ্যে একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। যার অর্থ ইরানকে তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ এবং অস্ত্রায়ন কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে।

উইটকফ জানিয়েছেন, ‘বিশ্বের জন্য এটা অপরিহার্য যে আমরা একটি কঠিন, ন্যায্য চুক্তি করবো যা টেকসই হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে এটাই করতে বলেছেন।’

উইটকফের মতো একই কথা বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাতিল চায় বলে জানায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

এরআগে গত শনিবার ওমানে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রথম দফার আলোচনায় বসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।

এতে ইরানের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ নেতৃত্ব দেন। এই বিষয়ে তেহরান জানায়, প্রথম দফার আলোচনা ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে একটি গঠনমূলক পরিবেশে হয়েছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানকে হুমকি দিয়েছেন, যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সামরিক হামলা এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এরআগে ২০১৫ সালে ইরানের সাথে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর একটি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন।


ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল মালদ্বীপ

গাজায় গণহত্যা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর জেরে ইসরায়েলি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ। গতকাল মঙ্গলবার মালদ্বীপ সরকার এই ঘোষণা দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বিবৃতিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘ক্রমাগত নৃশংসতা এবং গণহত্যার’ কারণে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ‘দৃঢ় সংকল্পের’ অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। গতকাল মঙ্গলবার মালদ্বীপের সংসদে আইনটি পাস হয়। এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু আইনটির অনুমোদন দেন। এটি অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রেসিডেন্টের দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।

টাইমস অব ইসরায়েলের উদ্ধৃতি অনুসারে, মুইজ্জুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই অনুমোদন ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত অব্যাহত নৃশংসতা এবং গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় সরকারের দৃঢ় অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।’

স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, মালদ্বীপের সংসদে ভোটদানকারী সব সংসদ সদস্যের সর্বসম্মত ভোটে এই নিষেধাজ্ঞা পাস হয়েছে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ৭ এপ্রিল পাসপোর্ট ও অভিবাসন বিভাগকে এ সংক্রান্ত চিঠিটি দিয়েছি।’

ইসরায়েলিদের মালদ্বীপে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে গত বছরের জুনে জানিয়েছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে করণীয় ঠিক করতে কমিটি ঠিক করা হয়।

এর আগে, গত রোববার বাংলাদেশ সরকার তাদের নাগরিকদের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া’ শব্দ পুনরায় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তের কথা জানায়। যার ফলে কার্যকরভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েল ভ্রমণে যেতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫০,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া সত্ত্বেও, ১৮ মার্চ গাজায় আবার বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যার ফলে যুদ্ধবিরতি কার্যত শেষ হয়। গাজায় বিমান হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে নারী-শিশুসহ অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষ।


গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিল ইসরায়েল

নিহত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপ গাজার একটি এলাকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতার যৌথভাবে এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের কাছে পাঠিয়েছে। এখন গোষ্ঠীটি এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইজিপ্ট টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিসর ও কাতার যৌথভাবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠিয়েছে। কায়রোভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল কাহেরা নিউজ সূত্রে জানা গেছে, মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের কাছ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

একটি টেলিগ্রাম বার্তায় হামাস (ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্ট) জানায়, তারা প্রস্তাবটি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। প্রয়োজনীয় আলোচনা শেষে দ্রুত এর জবাব দেবে তারা।

হামাসের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তারা তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে, যে কোনো ভবিষ্যৎ চুক্তির মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, বন্দি বিনিময় চুক্তি, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্গঠনের কার্যকর প্রক্রিয়া এবং গাজা থেকে অন্যায় অবরোধ প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

আল আরাবিয়া নেটকে ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল তাদের নতুন প্রস্তাবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের শর্ত দিয়েছে যুদ্ধবিরতির জন্য। তবে হামাসের একজন নেতার বরাতে জানা গেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্তে তারা সব ইসরায়েলি বন্দিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। আন্দোলনের শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল গত শনিবার কায়রোতে পৌঁছায়। তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন।

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআত্তি জানিয়েছেন, তাদের সাম্প্রতিক প্রস্তাব গাজার পরিস্থিতি শান্ত করতে, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে এবং বন্দি-বিনিময় প্রক্রিয়া চালু করতে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রস্তাব সব পক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং ইতিবাচক আলোচনাও চলছে। তবে আজ যে প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেটি ইসরায়েলই মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পাঠিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ জন।

গাজায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজারে পৌঁছে গেছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৯৮৩ জনে পৌঁছেছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১১৮ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৭৪ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬১৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

বিশ্বের সব মুক্ত মানুষকে ইসরায়েলের অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এক হাজার ৮০০ ইরানি সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া কর্মী। এই আহ্বান জানিয়ে এক চিঠিতে তারা বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কোনো মন্দ কথার প্রচারণা ভালোবাসেন না, তবে কেহ অত্যাচারিত হয়ে থাকলে তার কথা স্বতন্ত্র; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী।’ সুরা নিসা-১৪৮

মিডিয়া কর্মীরা বলেন, একটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি ভবনের মাঝখানে আঘাত করে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ গোটা ভূ-স্বর্গ কেঁপে ওঠে। বাতাসে উড়তে দেখা যায় ধোঁয়া, ধুলো এবং আগুন। মুহূর্ত পরে ... কালো দাগ দৃশ্যের পুরো ফ্রেম পূর্ণ করে। এগুলো হলো বিন্দু বিন্দু যা অবিশ্বাস্য গতিতে আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয় এবং মাটিতে পড়ে যায়।

এই বিন্দুগুলো কী? বিস্ফোরণের শক্তি আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে কী বিচরণ করে রেখেছে? ... সময় গড়িয়ে যায় এবং আমরা বুঝতে পারি যে বিন্দুগুলো হলো হাত, দেহ, মাথা এবং অঙ্গ। মানুষগুলো সবচেয়ে জঘন্যতম প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্টতম প্রাণীর বর্বরতার আগুনে পুড়ছে। এই মানুষগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? সেই মানুষটি জ্বলছে এবং আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে ...। বিভীষিকাময় এই ঘটনা এমন একটি দেশের, যার নাম দুঃখের সঙ্গে জড়িত: সেটি হলো গাজা।


ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে মামলা

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:৩০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাতিল চেয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা হয়েছে। ট্রাম্পের আরোপিত নতুন শুল্কনীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত সোমবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা দায়ের করেছে একটি আইনি সহায়তা সংস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের বিষয়টি স্থগিত করার অনুরোধ জানানো হয়।

সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ‘লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার’ নামে ওই সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা পাঁচটি ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন আমদানিকারক সংস্থার পক্ষে এ মামলাটি করেছে। এসব সংস্থা এমন কিছু পণ্য আমদানি করে যেগুলোর ওপর ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপ করেছে।

মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে যে ব্যবসাগুলোর নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের একটি ওয়াইন ও স্পিরিট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, একটি স্পোর্টফিশিং যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও বিক্রয়কারী ই-কমার্স কোম্পানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করা রজন দিয়ে তৈরি ইউএসভিত্তিক পাইপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ভার্জিনিয়ার একটি ইলেকট্রনিক কিট এবং বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং ভেরমন্টের নারীদের সাইক্লিং পোশাক প্রস্তুতকারক একটি ব্র্যান্ড।

গত ২ এপ্রিল ঘোষণা হওয়া শুল্কের পাশাপাশি চীনের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে আরোপিত শুল্ককে ওই মামলায় চ্যালেঞ্জ করা হয়। লিবার্টি জাস্টিস সেন্টারের সিনিয়র আইনজীবী জেফ্রি শোয়াব এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো ব্যক্তিরই এমন কর আরোপের ক্ষমতা থাকা উচিত নয় যার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এমন বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হ্যারিসন ফিল্ডস এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র হওয়ায় বেশ কিছু বিরল খনিজ পদার্থ ও চুম্বক দেশটিতে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে চীন। পেন্টাগন এবং প্রতিরক্ষা ঠিকাদাররা চীনে খনন বা প্রক্রিয়াজাত করা চুম্বক এবং বিরল মাটির খনিজ পদার্থের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ফলে চীনের এমন পদক্ষেপের কারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে মার্কিন সামরিক কর্মসূচি।

বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো ইঞ্জিন চালু করতে এবং জরুরি শক্তি সরবরাহের জন্য চীনে খনন করা বা প্রক্রিয়াজাত করা বিরল মাটির খনিজ পদার্থ দিয়ে তৈরি চুম্বকের প্রয়োজন হয়।

মার্কিন সেনাবাহিনীর পছন্দের তালিকায় থাকা নির্ভুল-নির্দেশিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে চীনা বিরল আর্থ উপকরণযুক্ত চুম্বক বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া নতুন বৈদ্যুতিক এবং ব্যাটারিচালিত ড্রোন, কম্প্যাক্ট বৈদ্যুতিক মোটরে বিরল চুম্বকের ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।


ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্যালিফোর্নিয়া

ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ব্যস্ততম সড়ক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে অঙ্গরাজ্যটির সান দিয়েগো নগরীর বাইরে গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে পাথরের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া নগরীর সাফারি পার্কে ঝাঁকুনি অনুভব করেন কর্মকর্তারা। তবে কোনো আহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে আঘাত হানে। এটি সান দিয়েগো কাউন্টিতে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল প্রায় ১৫০০ জন লোকের একটি পাহাড়ি শহর জুলিয়ান থেকে মাত্র কয়েক মাইল (৪ কিলোমিটার) দূরে। ভূমিকম্পটি লস এঞ্জেলেস কাউন্টির উত্তরে প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) দূরে অনুভূত হয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি আফটারশক হয়।

জুলিয়ানে ১৮৭০ এর দশকে পরিচালিত একটি প্রাক্তন সোনার খনির মালিক পল নেলসন বলেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম সিঙ্গল-পেন জানালাগুলো ফাটতে চলেছে কারণ সেগুলো বেশ ভালোভাবে কাঁপছিল। উপহারের দোকানের কাউন্টারে থাকা কিছু ছবির ফ্রেম ঝাঁকুনিতে পড়ে গেছে। কিন্তু পর্যটকরা যে সুড়ঙ্গগুলো ঘুরে দেখতে পারেন তার কোনো ক্ষতি হয়নি। এর আগে রোববারও ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানান তিনি।

জুলিয়ানের উত্তর-পশ্চিম স্টেট রুটসহ পাহাড়ি ঢালে এবং রাস্তা ও হাইওয়েতে আছড়ে পড়া পাথরের দিকে সতর্ক থাকতে যানবাহন চালকদের সতর্ক করে দিয়েছেন পরিবহণ কর্মকর্তারা। সান দিয়েগো কাউন্টির ক্যালিফোর্নিয়া পরিবহণ বিভাগ জানিয়েছে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির জন্য সড়কপথের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

সান দিয়েগো সাফারি পার্কে আফ্রিকান হাতির একটি পাল ভূমিকম্পের সময় তাদের বাচ্চাদের রক্ষা করার জন্য দৌড়ে যাওয়ার ঘটনা একটি ভিডিওতে ধরা পড়ে। হাতিদের তাদের পায়ের মাধ্যমে শব্দ অনুভব করার ক্ষমতা রয়েছে এবং আচরণটি একটি ‘সতর্ক বৃত্ত’ হিসাবে পরিচিত।

এই ভূমিকম্পের ফলে উত্তর কাউন্টি ট্রানজিট জেলা ট্রেনগুলো বিলম্বে ছেড়ে যায়। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশন ফর সান ডিয়েগো কাউন্টির ক্যাপ্টেন থমাস শ্যুট জানান, মাটি সরে গেলে সতর্কতা হিসেবে স্কুলছাত্রীদের ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি একটি ঝাঁকুনি সতর্কতা পেয়েছিলেন এবং তারপর ধাক্কা অনুভব করতে শুরু করেছিলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার একজন অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ লুসি জোনসের মতে, ভূমিকম্পটি এলসিনোর ফল্ট জোনের কাছে ৮.৩ মাইল (১৩.৪ কিলোমিটার) গভীরে আঘাত করেছিল। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যস্ততম ভূমিকম্প অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি এবং বিখ্যাত সান আন্দ্রেয়াস ফল্ট সিস্টেমের অংশ যা সাধারণত প্রতি বছর কমপক্ষে একটি ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়। জুলিয়ানে রোববার অনুভূত ভূমিকম্পটি ছিল ৩.৫ মাত্রার কম্পন, যা সোমবারের বৃহত্তর ভূমিকম্পের পূর্বশক ছিল।


banner close