শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
১২ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতের হুমকির প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ

পাকিস্তানে জনতার বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৪৫

সম্প্রতি ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুক হামলায় কয়েকজন নিহত হন। এ ঘটনার পর পাকিস্তানকে হুমকি দেয় ভারত। ভারতের হুমকির প্রতিবাদে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে)-সহ পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। খবর জিও নিউজের।

ওই হামলার সঙ্গে জড়িতদের ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে’ মদদ দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন তিনি। এ ছাড়া ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তানও।

এদিকে পাকিস্তানে স্থানীয় একটি দলের ডাকা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আজমল বালুচ নামের একজন ব্যবসায়ী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ভারত যদি যুদ্ধে জড়াতে চায়, তাহলে প্রকাশ্যে এগিয়ে আসুক।’ আজমল এবং অন্য বিক্ষোভকারীরা সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিলসহ ভারতের ‘অগ্রহণযোগ্য’ নানা হুমকির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

২৫ বছর বয়সি মুহাম্মদ ওয়াইস বলেন, ‘পানি আমাদের অধিকার এবং আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা এটি পুনরুদ্ধার করব। এমনকি যদি এর জন্য যুদ্ধের মাধ্যমেও কিছু করতে হয়, আমরা পিছু হটব না।’ ভারতবিরোধী স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে মুজাফ্ফরাবাদের মূল শহরেও মিছিল হয়।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সিনিয়র নেতা জাভেদ মীর বলেছেন, ‘ভারত যদি আক্রমণ করার মতো ভুল করে, তাহলে পাকিস্তানি কাশ্মীরিরা সামনের সারিতে লড়াই করবে। আমরা পাকিস্তানের জন্য মরতে প্রস্তুত।’ এ ছাড়া বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায়ও বিক্ষোভ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভারত-শাসিত কাশ্মীরের একটি পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় এক নেপালি নাগরিকসহ ২৬ জন নিহত হন। ভারত সরকার এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এ দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করে এবং ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবেও অভিহিত করেছে। হামলার পরদিন বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।

ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বুধবার বেশ কয়েকটি পালটা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পালটাপালটি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যা হয়তো সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতকে হুঁশিয়ারি আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রীর

আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত যদি পাকিস্তানে কোনো আগ্রাসন চালায়, তাহলে পাকিস্তান ‘চূড়ান্ত জবাব’ দেবে। গত বৃহস্পতিবার আজাদ কাশ্মীরের আইন সভায় দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে যদি ভারত কোনো আগ্রাসন চালায়, তাহলে পাকিস্তান ‘চূড়ান্ত জবাব’ দেবে।

আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ভারতের সাহস নেই পাকিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘনের। কিন্তু যদি করে, তাহলে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়বে।’ তিনি ভারতের কূটনৈতিক আচরণকে চাণক্য নীতি- অর্থাৎ ‘কূটনীতির আবরণে ছুরি মারা’ বলেও আখ্যা দেন। তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে ভারত যে গল্প বলছে, তা ভুয়া। ইতোমধ্যে ধরা পড়ে গেছে।

আনোয়ারুল হক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারত কোনো তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহার করে আজাদ কাশ্মীরকে অস্থির করতে চাইতে পারে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ভারত যদি এমন কোনো দুঃসাহস দেখায়, তাহলে উপযুক্ত জবাব পাবে।’

আজাদ কাশ্মীরের এই প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ভারত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ‘পানি আগ্রাসন’ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘পুঁছ ও নীলম নদীর প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো কাজ শুরু করেছে ভারত। এগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। ’

মোদি সরকারের সন্ত্রাসের চেহারা বিশ্ব চিনে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেছেন আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, ‘কানাডা থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত মোদির ভারত রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ হিসেবে সন্ত্রাসকে বেছে নিয়েছেন। বিশ্ব আজ তা বুঝে ফেলেছে।’

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে হক বলেন, আজাদ কাশ্মীরের পতাকার পেছনে শক্তি হচ্ছে পাকিস্তান। আমরা যে স্বাধীনতা উপভোগ করি, তা ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে নেই। আমি আমাদের লাইন অব কন্ট্রোলের ওপারের ভাই-বোনদের পাশে আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি ভারত লাইন অব কন্ট্রোল লঙ্ঘন করে, তাহলে জাতিসংঘ সনদের আওতায় পাকিস্তান পালটা জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে।’ আনোয়ারুল হক বলেন, ‘পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। ভারতসহ কোনো দেশই আমাদের সীমান্ত লঙ্ঘনের সাহস করবে না। আমরা সব সময় প্রস্তুত।’

নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত-পাকিস্তানের গোলাগুলি

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার তৃতীয় দিনের মাথায় পাকিস্তানি ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির খবর দিয়েছে এনডিটিভি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বৃহস্পতিবার রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতীয় চৌকি লক্ষ্য করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অনুমাননির্ভর গুলির পাল্টায় ভারতীয় সেনাবাহিনী গুলি চালিয়েছে।

সামরিক সূত্র বলছে, নিরাপত্তা বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘কার্যকর জবাব’ দিয়েছে এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এক সূত্র এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘গত রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের তরফে ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেই গুলির কার্যকর জবাব দেওয়া হয়েছে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার কয়েক দিন পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে।

বিষয়:

সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চুক্তির অধীনে সৌদির কাছে ১০ হাজার কোটি ডলারের (১০০ বিলিয়ন) বেশি মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছয়টি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থাটি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের আগেই এ চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।

রয়টার্স জানায়, লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স করপোরেশন, বোয়িং, নর্থরপ গ্রুম্যান এবং জেনারেল অ্যাটমিকসের মতো শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলো এ চুক্তির আওতায় থাকছে। ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

সূত্রগুলো জানায়, চুক্তির আওতায় সৌদি আরবকে সি-১৩০ পরিবহন প্লেন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডার সিস্টেমসহ নানা রকম উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে।

তবে সৌদি আরব লকহিড মার্টিনের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কেবল ন্যাটোর মিত্র দেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াকে এ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে।

রয়টার্স জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে একটি নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির চেষ্টা করেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সেই প্রস্তাবিত চুক্তিতে চীনা বিনিয়োগ সীমিত করা এবং বেইজিং থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধের বিষয়টিও ছিল। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত চুক্তিতে এসব শর্ত থাকবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

হোয়াইট হাউস কিংবা সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চুক্তিতে যুক্ত কোনো অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিও রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পর ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করে। ২০২১ সালে মার্কিন কংগ্রেস সৌদি আরবের কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধে দেশটির ভূমিকার প্রেক্ষাপটে।

তবে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সৌদি আরবের প্রতি কঠোর অবস্থান শিথিল করে। সবশেষ, ২০২৪ সালে গাজা পুনর্গঠনে সৌদি আরবকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যা


ভারত ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা জারি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতশাসিত কাশ্মীর এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে মণিপুর এবং মধ্য ও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশেও। গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভারত ভ্রমণের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে ভারতের যেকোনো জায়গা ভ্রমণে ন্যূনতম দ্বিতীয় মাত্রার সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে দেশটির চারটি অঞ্চল ভ্রমণে সর্বোচ্চ চতুর্থ মাত্রার, অর্থাৎ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

পহেলগামে মঙ্গলবারের সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন পর্যটক। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই কাশ্মীর উপত্যকায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা এবং সহিংস বেসামরিক অস্থিরতা ঘটতে পারে। এই অঞ্চলটি ভ্রমণ করবেন না (তবে লাদাখ ও এর রাজধানী লেহ সফরের অনুমতি রয়েছে)। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সম্ভাব্য সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি থাকায় ওই অঞ্চল এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বার্তায় আরও বলা হয়েছে, মাওবাদী চরমপন্থি গোষ্ঠী অথবা নকশালপন্থিরা ভারতের একটি বিশাল অঞ্চলে সক্রিয়। এরা স্থানীয় পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে অনেক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।

এদের হুমকির তীব্রতার কারণে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় এবং উড়িষ্যা রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলে ভ্রমণের আগে অনুমতি নিতে হবে। তবে তারা যদি কেবল এই রাজ্যগুলোর রাজধানী শহরে ভ্রমণ করেন তবে অনুমতির প্রয়োজন নেই। মার্কিন কর্মকর্তাদের জন্য মহারাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে ভ্রমণেও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

সহিংসতা এবং অপরাধের হুমকির কারণে মনিপুর ভ্রমণেও সর্বোচ্চ চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া, জাতিগত বিদ্রোহীদের মধ্যে সহিংসতার কারণে উত্তরপূর্ব ভারতের কিছু এলাকায় ভ্রমণ পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ভারতে ভ্রমণকারী মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে ভ্রমণের আগে এবং আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় এবং ত্রিপুরার রাজধানী শহরগুলোর বাইরের যেকোনো এলাকা পরিদর্শনের সময় পূর্বানুমতি নিতে হবে।


শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার দখল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য জেলেনস্কিই দায়ী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোসালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধের জন্য শান্তি চুক্তি আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছিল। কিন্তু ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে এই যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবেন।

এর আগে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির একটি রোডম্যাপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি দুই পক্ষকেই একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে বাধ্য করবে। ভ্যান্স আরও জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেন- উভয়কেই কিছু অঞ্চল ছাড়তে হবে। তবে কার কোন ভূখণ্ডকে ছাড় দিতে হবে, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানায়নি মার্কিন প্রশাসন।

ক্রিমিয়া নিয়ে জটিলতা যেখানে

ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে প্রশাসন স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছে কি না হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের করা এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যে কোনো প্রকারে তিনি এই চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি চান।

তার ভাষায়, আমার কোনো পক্ষ নাই। আমি শুধু এর একটি সমাধান চাই। এদিকে ইউক্রেন বহুদিন বলে আসছে যে ২০১৪ সালে রাশিয়া অবৈধভাবে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখল করে এবং এ বিষয়ে তারা আপসহীন।

জেলেনস্কি বারবার জানিয়েছেন, তার দেশ কিছুতেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দাবি ছাড়বে না। তিনি বলেন, এটা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। এটি আমাদের সংবিধানের পরিপন্থি। এক সময় ইউক্রেনের দখলে থাকা ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দেওয়া জেলেনস্কির পক্ষে রাজনৈতিকভাবে এমনিতেই সম্ভব নয়।

পাশাপাশি এটি বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নীতিমালারও পরিপন্থি। আন্তর্জাতিক আইনে জোর দিয়ে বলা আছে, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কোনো দেশ তার সীমান্ত পরিবর্তন করতে পারবে না। সে হিসাবে ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার দখলদারিত্বকে আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া অসম্ভব।

এদিকে ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে কিয়েভে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে নয়জন নিহত এবং ৬০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। গত তিন বছর ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর মধ্যে একটি।

এএফপির সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন, তারা রাজধানী কিয়েভ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সতর্কতা জারি করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা মৃতের সংখ্যা আপডেট করে জানিয়েছে, রাশিয়া কিয়েভে বিশাল আকারের হামলা শুরু করেছে।


কাশ্মীরে হামলায় দোষীদের শাস্তির হুঁশিয়ারি মোদির

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত কোনোভাবেই কাশ্মীরের পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের হত্যাকারী এবং এ হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদের ছাড় দেবে না। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একথা জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিহারের এক সভায় তিনি বলেছেন, এমন সাজা দেওয়া হবে, যা ওই হামলাকারীদের কল্পনারও অতীত।

দেশবাসীকে আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বনেতা যারা হামলার পর ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, বিহারের মাটি থেকে আমি পুরো বিশ্বকে বলছি- ভারত প্রত্যেক সন্ত্রাসীকে এবং তাদের যারা সমর্থন করছে, তাদের চিহ্নিত করবে এবং সাজা দেবে। পৃথিবীর শেষ প্রান্তে গিয়ে হলেও তাদের খুঁজে বের করা হবে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ কখনোই ভারতের মনোবল ভাঙতে পারবে না। ন্যায়বিচারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। যারা মনুষ্যত্বে বিশ্বাস করে, তারা প্রত্যেকে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। যেসব দেশ এই সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেসব দেশের নাগরিক এবং তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে আমি এই কথাগুলো বলতে চাই।’

জাতীয় পঞ্চায়েতরাজ দিবস উপলক্ষে বিহারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণের সময় এসব কথা বলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর এটাই প্রথম প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন তিনি। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে মোদি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসীরা নিরপরাধ দেশবাসীদের যে নির্মমতার সঙ্গে হত্যা করেছে, তাতে পুরো দেশ ব্যথিত। দোষীদের সাজার কথাও বলেছেন তিনি। ‘আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এই হামলা করেছে সেই সন্ত্রাসীরা এবং এই ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনাকারীরা তাদের কল্পনার চেয়ে বড় সাজা পাবে।’


পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর স্থগিত

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। আগামী রোববার তার ঢাকা আসার কথা ছিল। গত মঙ্গলবার কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করায় ও গতকাল উভয়পক্ষের বিভিন্ন ঘোষণায় প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হওয়ায় ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফর স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসতে পারছেন না। সফরের পরবর্তী তারিখ আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে তিনি পূর্বনির্ধারিত সময়ে আসতে পারছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করে ঢাকাকে জানানো হয়েছে।

আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) দুই দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় আসার কথা ছিল পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের। দীর্ঘ ১৩ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা ছিল। বৈঠককে কেন্দ্র করে দুই দেশই বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিল। এর আগে গত ১৭ই এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা সফর করেন। ওই সময় মন্ত্রী পর্যায়ের এ সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।


কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে

নরেন্দ্র মোদি ও শাহবাজ শরীফ । ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:২৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে দেশটি। তবে ভারতের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান।

ইতোমধ্যে কাশ্মীরে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন। সংগঠনটি পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা। ধারণা করা হয়, টিআরএফ এর পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সমর্থন আছে।

পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা স্থগিত করল ভারত

পাহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনার পর চিরবৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। এবার পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা স্থগিত করেছে ভারত। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় মেডিকেল ভিসাসহ পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত।

বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইতোমধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য জারি করা সব ধরনের বৈধ ভারতীয় ভিসা আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) থেকে বাতিল হয়ে যাবে। এছাড়া ওই দেশের নাগরিকদের দেওয়া সকল মেডিকেল ভিসাও মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত বৈধ থাকবে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, যেসব পাকিস্তানি নাগরিকের কাছে ভারতীয় ভিসা রয়েছে, তারা ভারত ত্যাগ করার জন্য ৭২ ঘণ্টার সময় পাবেন। ভিসা বাতিলের পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবাও স্থগিত করেছে ভারত। এর ফলে পাকিস্তানি নাগরিকরা ভারত ভ্রমণের জন্য কোনো ধরনের নথি পাবেন না।

ভারতীয়দের অতি দ্রুত দেশে ফেরার পরামর্শ দিল্লির

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের নেওয়া পাঁচটি পদক্ষেপ ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন শুরু করেছে দিল্লি। পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দের অতি দ্রুত দেশে ফেরার পরামর্শ দিয়েছে নয়াদিল্লি। গতকাল বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপ নেয় ভারত।

গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের যেসব নাগরিক বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁদের অবশ্যই ভারত ছাড়তে হবে। এছাড়া ভারতের নাগরিকদের পাকিস্তান ভ্রমণ না করতে কঠোরভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ভারতের যেসব নাগরিক পাকিস্তানে অবস্থান করছেন, তাদের অতি দ্রুত ভারতে প্রত্যাবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভারত সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান

ধীরে ধীরে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে ভারত। অন্য দিকে যুদ্ধের আশঙ্কায় পাল্টা প্রস্তুতি চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই সীমান্ত লাগোয়া ঘাঁটিগুলিতে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন পাকিস্তান।

সামাজিক মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়লেও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর তরফে অবশ্য এই নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ইসলামাবাদের সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটরাডার২৪’-এর স্ক্রিনশট থেকে। এক্স হ্যান্ডলে সেগুলিকে ছড়িয়ে দেন নেটাগরিকদের একাংশ। ওই স্ক্রিনশট অনুযায়ী, করাচি বিমানঘাঁটি থেকে একের পর এক বিমান লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির কাছে মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ।

উল্লেখ্য, করাচির ‘সাউথ এয়ার কমান্ড’ থেকেই গোটা দক্ষিণাঞ্চলের যাবতীয় অপারেশন পরিচালনা করে পাকিস্তান বিমানবাহিনী। উত্তরাঞ্চলে ভারতের সীমান্তের কাছে ইসলামাবাদের মোট চারটি বিমানঘাঁটি রয়েছে। সেগুলি হল, লাহোর সংলগ্ন সারগোধা ও মুরিদ এবং রাওয়ালপিন্ডি সংলগ্ন চাকলালা ও নুর খান। এই ঘাঁটিগুলিকে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর শিরদাঁড়া বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা।

বিমানঘাঁটির পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি) উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেখানকার বাঙ্কারগুলিতেও সেনাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের দাবি, ভারতের সঙ্গে সম্মুখসমরে যেতে যে ইসালামাবাদ প্রস্তুত, এই সব পদক্ষেপেই রয়েছে তার ইঙ্গিত।

পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না ভারতীয় প্লেন

ভারতশাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় সীমান্ত বন্ধ, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ আরও বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। তার প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। এখন থেকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় কোনো ভারতীয় প্লেন প্রবেশ করতে পারবে না। অর্থাৎ, ভারতের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) ভারতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত পানির প্রবাহ ভারতে যদি একতরফাভাবে বন্ধ বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটিকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

পানি বন্ধ করলে যুদ্ধের ইঙ্গিত পাকিস্তানের

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। দেশটির এ পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তান। এছাড়া তারা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটি (এনএসসি) কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের আইনি অধিকারভুক্ত পানি প্রবাহ বন্ধ বা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার যেকোনো পদক্ষেপ সরাসরি ‘যুদ্ধের উসকানি’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এজন্য জাতির শক্তির ব্যবহার করে তার জবাব দেওয়া হবে।

ভারত সরকার এই পানিচুক্তি স্থগিত করার পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভিসা বাতিল, ভিসা সেবা স্থগিত এবং পাকিস্তানিদের ভারতে প্রবেশ নিষেধ। ভারতের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরে মঙ্গলবারের হামলার পিছনে পাকিস্তান-প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীরা রয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগকে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে উল্লেখ করে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।


গাজার ৯০ শতাংশ বাড়িই ধ্বংস হয়ে গেছে

নিহত আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজার ৯০ শতাংশ বাড়িই হয় ধ্বংস হয়েছে, নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূলত, গাজায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার কারণেই, এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় দপ্তর-ওসিএইচএ এর তথ্যের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় ৯০ শতাংশের বেশি বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় দপ্তরের তথ্য উদ্ধৃত করে গতকাল বুধবার এ কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা। ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন গাজার বেসামরিক নাগরিকদের আরও গভীর মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আইওএম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজেদের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে বলেছে, গাজাবাসীর ‘যাওয়ার মতো কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। পরিবারগুলো অনিরাপদ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আশ্রয় নিচ্ছে।’ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তাদের কাছে আশ্রয় সামগ্রী প্রস্তুত। এখন ইসরায়েল গাজায় প্রবেশপথগুলো এখনই খুলে দিলেই সেগুলো স্থানীয়দের কাছে পৌঁছানো হবে। সংস্থাটি অবিলম্বে এসব প্রবেশপথ খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সকল প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছে। এতে সেখানে জরুরি ত্রাণ সরবরাহ ঢুকতে পারছে না। যুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষের একাধিক খবর পাওয়া গেছে। এরপর, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় আবারও হামলা শুরু করেছে। ফলে গত ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি দুই মাস টিকে থাকার পর ভেস্তে গেছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল এই অঞ্চলে ৫১ হাজার ৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫১ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে।

গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং আরও ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। রাতভর গাজায় হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ৩০৫ জনে পৌঁছেছে বলে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১০৫ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিও ভেঙে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

বিষয়:

কাশ্মীরজুড়ে ভারতীয় বাহিনীর অভিযান, দেড় হাজারেরও বেশি আটক

ভারতের কাশ্মীরে চলছে অভিযান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সম্প্রতি ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এই হামলার জেরে কাশ্মীরজুড়ে অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। দেড় হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দাকে আটক করা হয়েছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পুরো কাশ্মীরজুড়ে এ আটক অভিযান চালানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, হামলায় জড়িত ছিল চারজন সন্ত্রাসী, যাদের মধ্যে ভারতীয়দের পাশাপাশি বিদেশি নাগরিক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পুলিশ পহেলগাম হামলায় সন্দেহভাজন তিনজন বন্দুকধারীর নাম উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানের নাগরিক এবং একজন অনন্তনাগের স্থানীয় বাসিন্দা বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। চতুর্থ সন্দেহভাজন সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

পুলিশ জানায়, এদের সবাই পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য। তবে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পাকিস্তান এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই তিনজনের প্রত্যেকের সন্ধানদাতাকে ২০ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। একই সঙ্গে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানে হামলার আহ্বান!

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসাজশ রয়েছে- ভারতের অধিকাংশ মানুষ এমনটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স নামের গোষ্ঠীটি হামলার দায় স্বীকার করার পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও এ ধরনের প্রচার চলছে। এতে ভারতজুড়ে ক্ষোভ চরমে। আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকেই সরকারের প্রতি পাকিস্তানে হামলার আহ্বান জানাচ্ছেন।

আল জাজিরার সংবাদদাতা নেহা পুনিয়া নয়াদিল্লি থেকে এ ধরনের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন। তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনা নিয়ে ভারতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলেন। তাদের মধ্যে অনেকে মনে করেন, ভারত বড় ধরনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।

নেহা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আসা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ চাপ তীব্র হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই সন্ত্রাসী হামলার সাথে সীমান্তের আন্তঃসংযোগ রয়েছে। এরপরই ভারতীয়দের আবেগ তীব্র হচ্ছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর ভারতীয়রা হতবাক এবং ক্ষোভে ফুঁসছে। বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সকলেই এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কিছু করার আহ্বান জানাচ্ছে। এই তালিকায় আছেন বিজেপি নেতারাও। গতকাল বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার গেটে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। যার নেতৃত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হুংকার দেন।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব ভালো করেই জানে, আন্তসীমান্ত নিয়ে তাদের বক্তব্য ক্ষোভ উসকে দেবে। ক্ষোভ বাড়লে পাকিস্তানে হামলা করতে মোদির ওপরও চাপ বাড়বে, এটিই স্বাভাবিক। যদিও পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদি ইচ্ছেকৃতভাবেই এসব করছেন। তার সরকার নিজেদের পরিকল্পনাতেই কাজ করছে।

এমনকি কাশ্মীর হামলাকে ভারতের ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবে সন্দেহ করছেন পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞরা। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) রশিদ ওয়ালি ভারতীয় মিডিয়ার উপর কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, হামলার পরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘বেসামরিক ও অসত্য অভিযোগ’ ছড়ানো শুরু হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি আবারও কোনো ভুল পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে এর ফলাফল হতে পারে বিপর্যয়কর, যেমনটা হয়েছিল ‘বালাকোট হামলার’ পর।

অপরদিকে নেহা যেসব ভারতীয় বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছেন তাদের অনেক বলেছেন, ভারত ২০১৯ সালের হামলার পর পরিচালিত বিমান হামলার মতো সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনা করতে পারে। সে সময় কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক গোষ্ঠীর হামলায় ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়েছিল।

কিন্তু অনেক বিশ্লেষক সংযমের আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা নেহাকে বলেছেন, আরেকটি পূর্ণাঙ্গ সংঘাতের সময় এখন নয়। বিশেষ করে এই দুটি দেশের মধ্যে ইতিহাস বিবেচনা করলে এখানে শান্তি বজায় রাখা আবশ্যক। ভারত-পাকিস্তান তিনটি বড় যুদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যে খুব তিক্ত সম্পর্ক রয়েছে। ফের যুদ্ধ বাধলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

কাশ্মীরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ভারতীয় সেনা নিহত

ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের তুমুল সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এতে ভারতের সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির উধমপুর জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে।

একদিন আগেই মঙ্গলবার কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন এবং এর জেরে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বন্দুকযুদ্ধে ভারতীয় সেনাসদস্যের প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটল।

এনডিটিভি জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর জেলার বাসন্তগড় এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

এনডিটিভি বলছে, সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছিলেন, কারণ গোয়েন্দা তথ্যে সেখানে স্বাধীনতাকামীদের উপস্থিতি ছিল বলে জানানো হয়েছিল। অভিযানের সময় দুদু-বাসন্তগড় এলাকায় স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর হোয়াইট নাইট কর্পস জম্মু অঞ্চলে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) তারা জানায়, বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মির পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে উধমপুরের বাসন্তগড়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। সংঘর্ষের শুরুতেই আমাদের এক সাহসী জওয়ান গুরুতর আহত হন এবং চিকিৎসার সব চেষ্টা সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত নিহত হন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনো সেখানে অভিযান চলছে এবং পুরো এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এনডিটিভি বলছে, এই ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন মাত্র একদিন আগে কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের বেশিরভাগই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পর্যটক ছিলেন।


ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তী প্রধান হলেন কেভিন ফ্যারেল

কেভিন ফ্যারেল
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ভ্যাটিকানসহ সারাবিশ্বেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান জানায়, ২১ এপ্রিল ইস্টার সোমবার ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্টায় নিজ বাসভবনে মারা যান তিনি। ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান এই ধর্মগুরুর মৃত্যুর খবর সোমবার বিশ্ববাসীকে সর্বপ্রথম যিনি দিয়েছিলেন তিনি হলেন কেভিন ফ্যারেল। তিনি একজন কার্ডিনাল, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি এখন থেকে ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান।

সাধারণত পোপের খুবই ঘনিষ্ঠ মহলের সদস্য হন কার্ডিনালরা। পৃথিবীজুড়ে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের চার্চগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্ডিনালরা পোপকে সহায়তা করেন। আইরিশ-আমেরিকান কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল ঘোষণা করেন, পোপ তার প্রভুর ঘরে ফিরে গেছেন। এই ঘোষণার পর তিনি ‌‌‘ক্যামেরলেনগো’ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই এখন থেকে ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান। এই দায়িত্বের জন্য ২০১৯ সালেই তাকে মনোনীত করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।

পোপের মৃত্যু হলে অথবা কোনো পোপ পদত্যাগ করলে পরবর্তী উত্তরসূরি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যে সময় সেটা ‘অ্যাপোস্টোলিকা সেডেস ভ্যাকান্স’ নামে পরিচিত। এখন থেকে কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল ওই শূন্য সময়টুকুর দায়িত্বে থাকবেন।

ধর্মযাজক থেকে ভ্যাটিকানের প্রধান

শুধু প্রশাসনিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে নয়, পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানানোর শত শত বছরের প্রথাগত আনুষ্ঠানিকতার নেতৃত্বেও থাকবেন কেভিন ফ্যারেল। ১৯৪৭ সালে ডাবলিনে জন্ম নেওয়া কেভিন ফ্যারেল পড়াশোনা করেছেন স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব সালামাঙ্কা ও রোমের পন্টিফিক্যাল গ্রেগরিয়ান ইউনিভার্সিটিতে। তিনি কর্মজীবনে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করেছেন। মেক্সিকোর ইউনিভার্সিটি অব মন্টেরেতে চ্যাপলেইন বা ধর্মগুরু হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের বেথেসডার একটি প্যারিশেও (গির্জা ও যাজক সংক্রান্ত দেশের বিভাগ বিশেষ) তিনি কাজ করেছেন।

৭৭ বছর বয়সি কার্ডিনাল ফ্যারেল তার জীবনের ৩০ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গির্জায় কাজ করে। ২০০৭ সালে তিনি ডালাসের বিশপ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে ভ্যাটিকানের প্যাস্টোরালেয়ার বিষয়ক নতুন একটি বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং পাশাপাশি তিনি তাকে কার্ডিনালের মর্যাদায়ও উন্নীত করেন।

‘ক্যামেরলেনগো’ হিসেবে নির্বাচিত করার কয়েক বছর পর ২০২৩ সালে কেভিন ফ্যারেলকে ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট এবং কমিশন ফর কনফিডেনশিয়াল ম্যাটারসের প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়।

এখন তার দায়িত্ব কী?

এখন ক্যামেরলেনগো হিসেবে তার মূল দায়িত্ব পরবর্তী পোপ নির্বাচনের জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করা। তবে এই পদ থেকেও পোপ নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আছে, যদিও তা বিরল। এর আগে ইতিহাসে মাত্র দুজন ক্যামেরলেনগো পোপ হয়েছেন। তাদের একজন হলেন গিওআচিনো পেচি (পোপ লিও ১৩) যিনি ১৮৭৮ সালে ক্যামেরলেনগো পোপ হয়েছিলেন। দ্বিতীয়জন হন ১৯৩৯ সালে। তার নাম ইউগেনিও পাচেলি (পোপ পায়াস ১২)।

কার্ডিনাল ফ্যারেলই আনুষ্ঠানিকভাবে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর সনদে স্বাক্ষর করবেন। তারপর তিনিই পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ কফিনে শায়িত করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে শোকযাত্রার মাধ্যমে পোপের মরদেহ ডোমাস সান্তা মার্তা চ্যাপেল থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এই শোকযাত্রার নেতৃত্বেও থাকবেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল।


ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব

আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় শোকাহত এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান এই যুদ্ধ থামাতে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় একটি নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসি, আল জাজিরা।

বিবিসি বলছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ অবসানে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা নতুন একটি যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে এ কথা বলেছেন।

ওই কর্মকর্তার তথ্যমতে, পাঁচ থেকে সাত বছর স্থায়ী হবে, এমন একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রস্তাবে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি, যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এবং গাজা থেকে পুরোপুরি ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। আলোচনার জন্য হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদলের কায়রো সফরে যাওয়ার কথা।

এই পরিকল্পনায় সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেওয়া, যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান এবং গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে কায়রোতে পৌঁছেছে।

গাজা উপত্যকায় হামলায় খান ইউনিস, জাবালিয়া, বেইত লাহিয়া ও গাজা শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই কায়রোতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন হামাসের রাজনৈতিক কাউন্সিল প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ ও মুখ্য আলোচক খলিল আল-হাইয়া। এর আগে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিল, হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি। যদিও হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে।

২০০৭ সাল থেকে হামাস গাজার শাসনক্ষমতায় থাকলেও ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাস এখন পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা নতুন কোনো প্রশাসন এর নিকট গাজা হস্তান্তরে রাজি। তবে নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এরপর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায়, যাতে এখন পর্যন্ত ৫১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি।

প্রাণ গেল আরও ২৯ ফিলিস্তিনির

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনের মতো সোমবারও ভয়াবহ হামলায় প্রাণ গেছে আরও ২৯ জন ফিলিস্তিনির। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজাজুড়ে নির্বিচারে অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৯ জনকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষও।

গাজা শহরের একটি তাঁবু ক্যাম্পে চালানো হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, এই হামলা এমন সময় চালানো হয়েছে, যখন তাঁবুগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন দিনের খাবার সংগ্রহ বা বিশ্রামে ছিলেন।

এদিকে গাজার বর্তমান অবস্থা যেন এক বন্দিশিবিরে রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী উপত্যকার প্রধান সংযোগ সড়কগুলো বন্ধ করে ফেলার পাশাপাশি গাজাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে ফেলেছে। জানা গেছে, গাজার মোট ভূখণ্ডের ৬৯ শতাংশকেই ‘নো-গো জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে দখলদার ইসরায়েল, যেখানে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা প্রবেশ তো দূরের কথা, নড়াচড়াও করতে পারছে না।

এ ছাড়া গাজা ছাড়াও অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আরও তিন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। সংঘাতময় এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের পুনরায় গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করছে, যেন হামাসের ওপর চাপ আরও বাড়ানো যায়।

এদিকে লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানবাহী রণতরীতে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার দাবি ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুতিদের বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার’ হুমকি দিয়েছেন।

গাজার দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যেও মানবিক সম্পর্কের এক আবেগঘন চিত্র উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রয়াত খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়েছেন গাজার ফিলিস্তিনিরা। পোপ চলমান যুদ্ধে গাজার মানুষের পাশে থেকে ধারাবাহিকভাবে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সমবেদনা জানিয়ে আসছিলেন।

প্রতিদিন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার খোঁজ নিতেন পোপ ফ্রান্সিস

গাজার সংঘাত নিয়ে একাধিকবার মুখ খুলেছেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। একইসঙ্গে গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টানদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার গাজার ল্যাটিন-রাইট চার্চ অব দ্য হোলি ফ্যামিলির যাজক ফাদার গ্যাব্রিয়েল রোমানেলি বিবিসিকে এ কথা জানান। গ্যাব্রিয়েল রোমানেলি জানান, পোপ তাদের নিরাপত্তার খোঁজখবর নিতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন ফোন করতেন। এমনকি তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় কিছু আরবি বাক্যও শিখেছিলেন তিনি।

রোমানেলি জানান, সর্বশেষ শনিবার পোপের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। পোপ তাদের ফোন করে আশীর্বাদ দিয়েছেন এবং তার জন্য প্রার্থনা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। হোলি ফ্যামিলির যাজক আরও বলেন, ‘এখানে জীবনযাপন করা সহজ নয়। এখানকার একজন যাজক হিসেবে পোপের ঘনিষ্ঠতা অনুভব করা আমাদের জন্য ঈশ্বরের বিশেষ দয়ার একটি নিদর্শন ছিল। চার্চে ঈশ্বরের সেবা করার জন্য এটি আমাদের উৎসাহ জুগিয়েছে।’

পোপ ফ্রান্সিস মারা যাওয়ার আগে তার শেষ বার্তায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। ইস্টার সানডের ওই বার্তা উচ্চ স্বরে পড়েছিলেন তার সহযোগী।

বিষয়:

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ট্রাম্পের ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের’ নিন্দা জানিয়ে চিঠি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আইভি লীগ প্রতিষ্ঠান প্রিন্সটন এবং ব্রাউনসহ ১শ’ টিরও বেশি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ মঙ্গলবার শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের’ তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি যৌথ চিঠি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার একদিন পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হল, যা তহবিল হ্রাস এবং বহিরাগত রাজনৈতিক তত্ত্বাবধান আরোপের হুমকি দিয়েছে।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আমেরিকান উচ্চশিক্ষাকে বিপন্ন করে তোলা সরকারের নজিরবিহীন বাড়াবাড়ি এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা এক সুরে কথা বলছি।’

যৌথ চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা গঠনমূলক সংস্কারের জন্য উন্মুক্ত এবং বৈধ সরকারি তত্ত্বাবধানের বিরোধিতা করি না। তবে, আমাদের অবশ্যই অযৌক্তিক সরকারি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে হবে।’ এতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমাদের অবশ্যই জনসাধারণের গবেষণা তহবিলের জোরপূর্বক ব্যবহার প্রত্যাখ্যান করতে হবে।’

ট্রাম্প বেশ কয়েকটি নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ সহ্য করার দাবির বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করেছেন, যা তাদের বাজেট, কর-মুক্ত মর্যাদা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছে, যারা দাবি করে শিক্ষিত অভিজাতরা খুব বেশি বামপন্থী।

হার্ভার্ডের ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউস দেশের প্রাচীনতম এবং ধনী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডের ওপর নজিরবিহীন সরকারি নিয়ন্ত্রণ চাইছে।


পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক

পোপ ফ্রান্সিস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তা বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। বিশ্বনেতাদের মধ্যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রথম দিকেই পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানান। তিনি পোপকে স্মরণ করে বলেন, ‘তিনি ছিলেন বিনয়ের প্রতীক, সবসময় দুর্বল ও অসহায় মানুষের পাশে।’ খবর বিবিসির।

ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেছেন, ‘পোপ তার নম্রতা ও কম ভাগ্যবানদের প্রতি পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে ক্যাথলিক চার্চের বাইরেও লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।’ পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ‘গভীরভাবে ব্যথিত’ জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক পোপ ফ্রান্সিসকে একজন ‘ভালো, উষ্ণ এবং সংবেদনশীল মানুষ’ হিসেবে স্মরণ করেছেন।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিস ‘শান্তি, ভালোবাসা এবং করুণার কণ্ঠস্বর ছিলেন।’ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ‘সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ’ মানুষের প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। শান্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের প্রতি তার অঙ্গীকার এক গভীর দৃষ্টান্ত রেখে গেছে। শান্তিতে থাকুন।’

দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। এর আগে ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন তার চিকিৎসাও চলে।

নতুন পোপ নির্বাচনে ভ্যাটিকানের রহস্যঘেরা প্রক্রিয়া

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর পরবর্তী পোপ নির্বাচন করতে ভ্যাটিকানে একত্রিত হবেন ক্যাথলিক চার্চের শীর্ষ ধর্মগুরুদের সংগঠন—কলেজ অব কার্ডিনালস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তারা রোমে আসবেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং এক ঐতিহাসিক ও গোপন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন। যার নাম কনক্লেভ। এটি লাতিন শব্দ cum clave থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ ‘চাবি-সহ’ বা ‘অবরুদ্ধ বৈঠক’।

কীভাবে কাজ করে এই কনক্লেভ?

বিশ্বজুড়ে ৭০টিরও বেশি দেশে ২২০ জনেরও বেশি কার্ডিনাল বা প্রতিনিধি আছেন। তবে ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে প্রায় ১২০ জনের। যাদের বয়স ৮০ বছরের নিচে। উল্লেখ্য যে, গত এক দশকে এই ভোটারদের দুই-তৃতীয়াংশই পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক মনোনীত। ফলে নতুন পোপ নির্বাচনে তার উদার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দর্শনের প্রতিফলন দেখা যেতে পারে।

রীতিনীতি অনুযায়ী, পোপের মৃত্যুর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কার্ডিনালরা রোমে জমায়েত হন। সিস্টিন চ্যাপেলে তাদের ডেলিবারেশন বা পরামর্শ পর্ব শুরু হয়। যেখানে মাইকেলেঞ্জেলোর বিখ্যাত চিত্রকর্ম তাদের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোর ওপর ছায়া ফেলে।

পর্দার আড়ালের গোপনীয়তা

‘Extra omnes’—অর্থাৎ ‘সবাই বেরিয়ে যান’—এই ঘোষণার পর শুধু ভোটার বা কার্ডিনাল ও কিছু কর্মকর্তা ও ডাক্তার ভেতরে থাকেন। এরপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফোন, সংবাদপত্র, চিঠিপত্র সবকিছুই নিষিদ্ধ থাকে সেখানে। এমনকি সম্ভাব্য গোয়েন্দা যন্ত্র শনাক্ত করতে চ্যাপেল স্ক্যানও করা হয়।

এই গোটা সময়ে কার্ডিনালরা সেন্ট মার্থা হাউসে অবস্থান করেন—যেখানে পোপ ফ্রান্সিস নিজে ১২ বছর ধরে বাস করতেন। এখান থেকেই তারা প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ভোট দিতে যান সিস্টিন চ্যাপেলে।

ভোটদান ও সাদা ধোঁয়া

প্রক্রিয়ার প্রথমে একটি পবিত্র মেস বা প্রার্থনাসভার মাধ্যমে কনক্লেভ শুরু হয়। এরপর কার্ডিনালরা ব্যালট কার্ডে ‘Eligo in summum pontificem’ (আমি সর্বোচ্চ ধর্মগুরু হিসেবে নির্বাচন করছি) কথাটির নিচে নির্বাচিত ব্যক্তির নাম লিখে ভোট দেন। তবে ব্যালট গোপনীয়ভাবে থাকে।

প্রতিদিন দুইবার করে ভোট হয়। প্রতিবারের ভোট শেষে ব্যালট পুড়িয়ে ধোঁয়া বের করা হয়। এতে কালো ধোঁয়া মানে ভোটে সিদ্ধান্ত হয়নি, আর সাদা ধোঁয়া মানে নতুন পোপ নির্বাচিত। ৩০টি ব্যালটেও যদি সিদ্ধান্ত না আসে, তখন সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় কাউকে পোপ ঘোষণা করা হয়।

ভ্যাটিকানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ কনক্লেভ ছিল ১৯২২ সালে। তখন পোপ নির্বাচনে সময় লেগেছিল পুরো পাঁচ দিন।

নতুন পোপের অভিষেক

এরপর নির্বাচিত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি নির্বাচন গ্রহণ করছেন কিনা। একই সঙ্গে তিনি কোন নাম নিতে চান। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘Room of Tears’-এ। সেখানে তিনি সাদা পোশাক ও লাল স্লিপার পরিধান করেন। সেখানে বিভিন্ন মাপের পোশাক আগে থেকেই তৈরি করে রাখা থাকে। সবশেষে, কার্ডিনালদের ডিন সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশে ঘোষণা করেন—‘Annuntio vobis gaudium magnum: Habemus papam’ অর্থাৎ ‘আমি তোমাদের মহাসমাচার জানাচ্ছি: আমাদের একজন পোপ আছেন।’


banner close