সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১

ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কংগ্রেস

জয়রাম রমেশ। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১৪:৩৭

বিজেপি সরকারের নেতৃত্বে পার্লামেন্টে যে ওয়াকফ বিল পাস হয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করবে কংগ্রেস। ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের এমপি এবং দলের সাধারণ সম্পাদক (যোগাযোগ) জয়রাম রমেশ এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার ভোরে পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল সংবিধান সম্মত কি না তা জানতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে কংগ্রেস।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে জয়রাম রমেশ এই বিলের বিরুদ্ধে চলমান আইনি পদক্ষেপের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দল এরই মধ্যে ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), ২০০৫ সালের তথ্য অধিকার (আরটিআই) আইনের সংশোধনী এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার সংশোধনীর মতো বেশ কয়েকটি আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে লড়ছে। এ ছাড়া, দলটি ১৯৯১ সালের ‘উপাসনাস্থল আইন’ বহাল রাখতে আদালতে হস্তক্ষেপ করছে।

রমেশ বলেন, ‘সিএএ-২০১৯ এর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আরটিআই আইন- ২০০৫ এর ২০১৯ সালের সংশোধনীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার (২০২৪) সংশোধনীর বৈধতার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন অক্ষুণ্ন রাখার জন্য কংগ্রেসের হস্তক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কংগ্রেস খুব শিগগিরই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল- ২০২৪ সাংবিধান সম্মত কি না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানাবে।’

জয়রাম রমেশ দলের আইনি চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর আস্থা প্রকাশ করে আরও বলেন, মোদি সরকারের যেসব পদক্ষেপকে কংগ্রেস ভারতীয় সংবিধানের নীতিগুলোর ওপর আঘাত হিসেবে দেখে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী এবং মোদি সরকারের ভারতের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত নীতি, বিধান ও প্রথাগুলোর ওপর যেকোনো ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাব।’

এর আগে, ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় গত বুধবার কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই পাস হয়ে যায় মুসলিমদের সম্পত্তিসংক্রান্ত বিতর্কিত ওয়াকফ বিল। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে লোকসভায় পাস হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিলটি উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়ও দীর্ঘ বিতর্ক শেষে সহজেই পার হয়ে যায়। ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ১২৮টি এবং বিপক্ষে ৯৫টি ভোট পড়ে।

সংশোধিত বিলের বিতর্কিত বিধানগুলোর মধ্যে রয়েছে—কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল এবং ওয়াকফ বোর্ডগুলোতে দুজন অমুসলিম সদস্যের বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তি। এ ছাড়া, আরেকটি শর্ত হলো, কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্ম পালনকারী ব্যক্তিরাই ওয়াকফ সম্পত্তি দান করতে পারবেন।

তবে সরকার কীভাবে নির্ধারণ করবে কে একজন ‘ইসলাম ধর্ম পালনকারী’ মুসলিম, তা নিয়ে বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে। তারা যুক্তি দিয়েছে, ধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের দান করা থেকে বিরত রাখা ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকার এবং আইনের সমতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ।

প্রস্তাবিত আইন অনুসারে, ওয়াকফ হিসেবে চিহ্নিত সরকারি সম্পত্তি সরকারের মালিকানাধীন থাকবে না এবং স্থানীয় কালেক্টর এর মালিকানা নির্ধারণ করবেন। বিলে আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, কালেক্টরের পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা ওয়াকফ হিসেবে দাবি করা সরকারি সম্পত্তির তদন্ত

বিরোধের ক্ষেত্রে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে যে কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফের নাকি সরকারের। এটি বিদ্যমান ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করবে, যেখানে ওয়াক্ফ ট্রাইব্যুনাল এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিত। বিরোধী দল এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি অংশ এটিকে ওয়াক্ফ সম্পত্তির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে।


ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩

ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালে সতর্ক অবস্থানে দেশটির সেনাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ শহরে চালানো এ হামলায় আহত হয়েছেন তিনজন। স্থানীয় সময় রবিবার (৬ এপ্রিল) এই রকেট হামলা চালানো হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড। ফিলিস্তিনের বেসামরিক জনগণের উপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার জবাবেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচয় আদ্রে জানায়, গাজা থেকে ইসরায়েলের শহর লক্ষ্য করে ছোড়া ১০টি রকেট শনাক্ত করেছে তারা। এর বেশিরভাগই ইসরায়েলি সেনারা প্রতিহত করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, আশকেলন শহরে একটি রকেট পড়ায় সেখানে তিনজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় আশদোদ, আশকেলন ও ইয়াভনি শহরে সর্তকতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে।
এ হামলার কড়া জবাব দিতে মধ্য গাজায় চলমান অভিযান আরও জোরদার করতে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এরপর রবিবার রাত থেকেই মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরে বিমান হামলা শুরু করে আইডিএফ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতভর লাগাতার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো উড়তে দেখা গেছে গাজার আকাশে।এতে আজ (সোমবার) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
নতুন করে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩ হাজার ২৯৭ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পোলিও টিকার অভাবে গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।


গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আজ (সোমবার) বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছে নিপীড়িত গাজাবাসী। গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের সব দেশে একযোগে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এ ধর্মঘটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি।

ফিলিস্তিনভিত্তিক ওয়াফা নিউজ এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক সমর্থক এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে সমগ্র ফিলিস্তিনে সাধারণ ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে ’দ্য ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্স অব প্যালেস্টাইন’ বা প্যালেস্টাইন জাতীয় ও ইসলামিক বাহিনী। আজ সোমবার এই ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফিলিস্তিনি জাতীয় ও ইসলামিক বাহিনী হলো দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূত্রপাতের পরপরই ইয়াসির আরাফাতের অনুমোদনে এবং মারওয়ান বারগুতির নেতৃত্বে গঠিত একটি জোট। এই জোট তার সদস্যদের এজেন্ডা সমন্বয় করে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যৌথ রাজনৈতিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করে।

এক বিবৃতিতে জোটটি প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর উত্থাপন এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধ তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। বিবৃতিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে একত্রিত করার এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের জন্য জবাবদিহিতার দাবি অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গাজাবাসীর এই আহ্বানে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ইংরেজি অক্ষরে ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপ’ অর্থাৎ গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ ও স্কুল বন্ধ। ’ ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, সংহতি জানাই। আগামীকাল ৭ এপ্রিল ইসরায়েলি দখলদারত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিন। ’

আজ বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এক ফেসবুক পোস্টে এ তরুণ নেতা লিখেছেন, মানুষ ও মুসলিম হিসেবে এসব (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-অফিস-আদালত) বন্ধ রাখাতেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয় বরং দলমত নির্বিশেষে সারা দেশের ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারবো না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে।

তিনি বলেন, এনসিপি, বিএনপি জামায়াত বা কোনো (রাজনৈতিক) দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। প্রত্যেক জেলায় ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ হতে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।

একই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুকে পেজে তিনি লিখেছেন, ’গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হোন। সোমবার, ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’- এই কর্মসূচি সফল করুন।’

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সর্বশেষ হামলায় দক্ষিণের খান ইউনিসে এক সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উত্তরের গাজা সিটিতে দুই শিশুও নিহত হয়েছে। গাজার খান ইউনিসে এক ভবনে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো বোমা হামলায় কমপক্ষে আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিদিন গড়ে ১০০ ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা বা আহত করছে। এ সংখ্যা বিশ্বব্যাপী গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বসে আছেন কয়েকজন ফিলিস্তিনি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আগামীকাল সোমবার বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছে নিপীড়িত গাজাবাসী। গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের সব দেশে একযোগে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এ ধর্মঘটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি।

ফিলিস্তিনভিত্তিক ওয়াফা নিউজ এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক সমর্থক এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে সমগ্র ফিলিস্তিনে সাধারণ ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে ’দ্য ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্স অব প্যালেস্টাইন’ বা প্যালেস্টাইন জাতীয় ও ইসলামিক বাহিনী। সোমবার এই ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফিলিস্তিনি জাতীয় ও ইসলামিক বাহিনী হলো দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূত্রপাতের পরপরই ইয়াসির আরাফাতের অনুমোদনে এবং মারওয়ান বারগুতির নেতৃত্বে গঠিত একটি জোট। এই জোট তার সদস্যদের এজেন্ডা সমন্বয় করে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যৌথ রাজনৈতিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করে।

এক বিবৃতিতে জোটটি প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর উত্থাপন এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধ তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। বিবৃতিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে একত্রিত করার এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের জন্য জবাবদিহিতার দাবি অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গাজাবাসীর এই আহ্বানে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ইংরেজি অক্ষরে ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপ’ অর্থাৎ গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ ও স্কুল বন্ধ। ’ ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, সংহতি জানাই। আগামীকাল ৭ এপ্রিল ইসরায়েলি দখলদারত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিন। ’

বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এক ফেসবুক পোস্টে এ তরুণ নেতা লিখেছেন, মানুষ ও মুসলিম হিসেবে এসব (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-অফিস-আদালত) বন্ধ রাখাতেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয় বরং দলমত নির্বিশেষে সারা দেশের ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারবো না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে।

তিনি বলেন, এনসিপি, বিএনপি জামায়াত বা কোনো (রাজনৈতিক) দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। প্রত্যেক জেলায় ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ হতে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।

একই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুকে পেজে তিনি লিখেছেন, ’গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হোন। সোমবার, ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’- এই কর্মসূচি সফল করুন।’

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সর্বশেষ হামলায় দক্ষিণের খান ইউনিসে এক সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উত্তরের গাজা সিটিতে দুই শিশুও নিহত হয়েছে। গাজার খান ইউনিসে এক ভবনে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো বোমা হামলায় কমপক্ষে আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিদিন গড়ে ১০০ ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা বা আহত করছে। এ সংখ্যা বিশ্বব্যাপী গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিষয়:

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন হাজারো মানুষ। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একযোগে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে প্রায় এক হাজার ২০০টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে- যা একক দিনের ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং হালকা বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটন ডিসির জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে বেশ কিছু সংগঠনও যুক্ত হয়। ওয়াশিংটন ছাড়াও নিউইয়র্কে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। এসব বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষেও স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ট্রাম্পবিরোধী জমায়েতে ফিলিস্তিনি পতাকা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন মার্কিনিরা। মিছিলে ইসরায়েলি হামলা এবং এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের নিন্দা জানানো হয়। এ সময় গাজাকে বাঁচতে দাও এমন স্লোগানও ওঠে। গেল ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি বড় ব্যানারও দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের হাতে।

ট্রাম্পবিরোধী এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ’। এর একটি অর্থ হতে পারে, ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’। বিক্ষোভে একশ পঞ্চাশটির মতো গোষ্ঠী অংশ নিয়েছে। সেগুলোর একটি ‘ইনডিভিজিবল’। গোষ্ঠীটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, বিশাল এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে তারা ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ও তাদের মিত্রদের পরিষ্কার বার্তা দিতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।

আন্দোলনের ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রায় ১৫০টি অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকোতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন জানান, ‘আমি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, ডিওজিই বিষয়ক অবস্থান, এই সপ্তাহের ট্যারিফ, শিক্ষা- সবকিছুর বিরুদ্ধেই এসেছি। আমাদের গোটা দেশ, সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে।’

সমাবেশস্থলে অনেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ইউক্রেনের পতাকা নিয়েও হাজির হন। মঞ্চে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন। ওয়েস্ট কেপ মে, নিউ জার্সির অবসরপ্রাপ্ত মানি ম্যানেজার ৭৩ বছর বয়সী ওয়েইন হফম্যান বলেন, ‘এই ট্যারিফগুলোর ফলে লাল রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হবে, কর্মসংস্থান যাবে, ৪০১কে তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন হাজার হাজার ডলার হারাচ্ছে।’

কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ডে ৮৪ বছর বয়সী সু-অ্যান ফ্রিডম্যান একটি উজ্জ্বল গোলাপি লেখা পোস্টার নিয়ে হাজির হন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমার মিছিল করা শেষ, কিন্তু মাস্ক আর ট্রাম্পের মতো লোকেরা আবার আমাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে।’

৭৪ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী পল ক্রেটসম্যান প্রথমবারের মতো কোনো বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভয় হচ্ছে সোশ্যাল সিকিউরিটি ধ্বংস করে ফেলা হবে, আমাদের সেবাগুলো কে দেবে? এটা সরকারের কাঠামো ভেঙে ফেলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে, যেন ট্রাম্প দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একযোগে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে প্রায় এক হাজার ২০০টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে- যা একক দিনের ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং হালকা বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটন ডিসির জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে বেশ কিছু সংগঠনও যুক্ত হয়। ওয়াশিংটন ছাড়াও নিউইয়র্কে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। এসব বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষেও স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ট্রাম্পবিরোধী জমায়েতে ফিলিস্তিনি পতাকা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন মার্কিনিরা। মিছিলে ইসরায়েলি হামলা এবং এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের নিন্দা জানানো হয়। এ সময় গাজাকে বাঁচতে দাও এমন স্লোগানও ওঠে। গেল ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি বড় ব্যানারও দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের হাতে।

ট্রাম্পবিরোধী এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ’। এর একটি অর্থ হতে পারে, ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’। বিক্ষোভে একশ পঞ্চাশটির মতো গোষ্ঠী অংশ নিয়েছে। সেগুলোর একটি ‘ইনডিভিজিবল’। গোষ্ঠীটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, বিশাল এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে তারা ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ও তাদের মিত্রদের পরিষ্কার বার্তা দিতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।

আন্দোলনের ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রায় ১৫০টি অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকোতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন জানান, ‘আমি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, ডিওজিই বিষয়ক অবস্থান, এই সপ্তাহের ট্যারিফ, শিক্ষা- সবকিছুর বিরুদ্ধেই এসেছি। আমাদের গোটা দেশ, সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে।’

সমাবেশস্থলে অনেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ইউক্রেনের পতাকা নিয়েও হাজির হন। মঞ্চে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন। ওয়েস্ট কেপ মে, নিউ জার্সির অবসরপ্রাপ্ত মানি ম্যানেজার ৭৩ বছর বয়সী ওয়েইন হফম্যান বলেন, ‘এই ট্যারিফগুলোর ফলে লাল রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হবে, কর্মসংস্থান যাবে, ৪০১কে তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন হাজার হাজার ডলার হারাচ্ছে।’

কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ডে ৮৪ বছর বয়সী সু-অ্যান ফ্রিডম্যান একটি উজ্জ্বল গোলাপি লেখা পোস্টার নিয়ে হাজির হন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমার মিছিল করা শেষ, কিন্তু মাস্ক আর ট্রাম্পের মতো লোকেরা আবার আমাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে।’

৭৪ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী পল ক্রেটসম্যান প্রথমবারের মতো কোনো বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভয় হচ্ছে সোশ্যাল সিকিউরিটি ধ্বংস করে ফেলা হবে, আমাদের সেবাগুলো কে দেবে? এটা সরকারের কাঠামো ভেঙে ফেলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে, যেন ট্রাম্প দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একযোগে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে প্রায় এক হাজার ২০০টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে- যা একক দিনের ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং হালকা বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটন ডিসির জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে বেশ কিছু সংগঠনও যুক্ত হয়। ওয়াশিংটন ছাড়াও নিউইয়র্কে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। এসব বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষেও স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ট্রাম্পবিরোধী জমায়েতে ফিলিস্তিনি পতাকা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন মার্কিনিরা। মিছিলে ইসরায়েলি হামলা এবং এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের নিন্দা জানানো হয়। এ সময় গাজাকে বাঁচতে দাও এমন স্লোগানও ওঠে। গেল ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি বড় ব্যানারও দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের হাতে।

ট্রাম্পবিরোধী এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ’। এর একটি অর্থ হতে পারে, ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’। বিক্ষোভে একশ পঞ্চাশটির মতো গোষ্ঠী অংশ নিয়েছে। সেগুলোর একটি ‘ইনডিভিজিবল’। গোষ্ঠীটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, বিশাল এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে তারা ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ও তাদের মিত্রদের পরিষ্কার বার্তা দিতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।

আন্দোলনের ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রায় ১৫০টি অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকোতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন জানান, ‘আমি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, ডিওজিই বিষয়ক অবস্থান, এই সপ্তাহের ট্যারিফ, শিক্ষা- সবকিছুর বিরুদ্ধেই এসেছি। আমাদের গোটা দেশ, সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে।’

সমাবেশস্থলে অনেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ইউক্রেনের পতাকা নিয়েও হাজির হন। মঞ্চে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন। ওয়েস্ট কেপ মে, নিউ জার্সির অবসরপ্রাপ্ত মানি ম্যানেজার ৭৩ বছর বয়সী ওয়েইন হফম্যান বলেন, ‘এই ট্যারিফগুলোর ফলে লাল রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হবে, কর্মসংস্থান যাবে, ৪০১কে তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন হাজার হাজার ডলার হারাচ্ছে।’

কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ডে ৮৪ বছর বয়সী সু-অ্যান ফ্রিডম্যান একটি উজ্জ্বল গোলাপি লেখা পোস্টার নিয়ে হাজির হন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমার মিছিল করা শেষ, কিন্তু মাস্ক আর ট্রাম্পের মতো লোকেরা আবার আমাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে।’

৭৪ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী পল ক্রেটসম্যান প্রথমবারের মতো কোনো বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভয় হচ্ছে সোশ্যাল সিকিউরিটি ধ্বংস করে ফেলা হবে, আমাদের সেবাগুলো কে দেবে? এটা সরকারের কাঠামো ভেঙে ফেলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে, যেন ট্রাম্প দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে।’


গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় নিহত ৬০

আহত অন্তত ১৬২ জন
গাজা শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:১৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬২ জন। এর মধ্যে গতকাল রোববার ভোর থেকে চালানো হামলাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের হামলা শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু নিহত হচ্ছে।

গাজার ১০ লাখেরও বেশি শিশু এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পাচ্ছে না বলেও সতর্ক করেছে ইউনিসেফ। গাজায় আগ্রাসনের সময় চলতি বছরের ২৩ মার্চ ১৫ জন জরুরি চিকিৎসা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাতে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল আইডিএফ।

হত্যার শিকার রেফাত রাদওয়ানের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওটি প্রকাশের পর বিষয়টি সামনে আসে। ত্রাণবাহী একটি দল নিহত চিকিৎসা কর্মীদের মরদেহগুলো খুঁজে পায়। এ সময় তারা রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছিল।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসাকর্মী ও ত্রাণকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে, যা নতুন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এটি আন্তর্জাতিক আইনে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

গাজায় ১৫ জন চিকিৎসা ও ত্রাণকর্মীর হত্যাকাণ্ডকে ‘নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধাপরাধ’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক সাবেক প্রধান এবং মেডিয়েশন গ্রুপ ইন্টারন্যাশনালের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মার্টিন গ্রিফিথস। ওই ঘটনায় আটজন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ছয়জন দমকল কর্মী ও একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হন। রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশির ভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।

চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশির ভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এত বেশি যে, ভূখণ্ডটির জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

রাফাকে গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় ইসরায়েল

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি নতুন সামরিক করিডোর স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ইসরায়েল। তারা এর নাম দিয়েছে ‘মোরাগ করিডোর’। ২০০৫ সালে উচ্ছেদ করা একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির নামানুসারে করিডোরটির নামকরণ করা হয়েছে। এই করিডোর রাফাহ শহরকে গাজার বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, রাফাহ ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনারা যে কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। তিনি ওই এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন।

খোদারি বলেন, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনিদের জন্য একমাত্র খোলা পথ হলো উপকূলীয় রাস্তার আল-রাশিদ করিডোর। এর মানে হলো, আরও বেশি ফিলিস্তিনিকে খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং ইসরায়েল আরও বেশি ভূমি দখলের চেষ্টা করছে।

রাফা শহর কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যকার প্রধান বাণিজ্য পথ ‘কারেম আবু সালেম’ ক্রসিংয়ের প্রধান পথ এই শহরটির ভেতর দিয়েই গেছে। পাশাপাশি এটি রাফাহ সীমান্ত দিয়ে বাইরের জগতের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের অন্যতম প্রধান সংযোগস্থলও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই করিডোর নির্মাণ গাজার ভূখণ্ড ভাগ করে ফেলার একটি পরিকল্পিত কৌশল, যা মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

১৫ স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২৩ মার্চ দক্ষিণ গাজায় জরুরি বিভাগের ওই কর্মীদের হত্যা করা হয়। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তাদের সৈন্যরা ভুল করে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

রাফার কাছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, জাতিসংঘের একটি গাড়ি এবং গাজার সিভিল ডিফেন্সের একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাকে গুলি চালানো হয়।

ইসরায়েল প্রথমে দাবি করেছিল, হেডলাইট বা কোনো ধরনের আলো ছাড়াই অন্ধকারে ‌‘সন্দেহজনকভাবে’ গাড়ি বহর এগিয়ে আসার কারণে সৈন্যরা গুলি চালিয়েছিল। যানবাহনের চলাচলের আগে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি বা তাদের সম্মতি নেওয়া হয়নি।

কিন্তু নিহত হওয়া প্যারামেডিকদের একজনের মোবাইলের ফুটেজ খুঁজে দেখা গেছে যে, আহতদের সহায়তা দেওয়ার সময় যানবাহনগুলোতে আলো জ্বলছিল। অর্থাৎ ইসরায়েলি বাহিনীর ওই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী জোর দিয়ে বলছে, কমপক্ষে ছয়জন চিকিৎসক হামাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তারা এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। তারা এটাও স্বীকার করেছে যে, সৈন্যরা যখন গুলি চালায় তখন জরুরি বিভাগের ওই কর্মীরা নিরস্ত্র ছিল।

বিষয়:

চীনের পদক্ষেপে চটেছেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের জবাবে শুক্রবার মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীন। দেশটির এমন পদক্ষেপে বেজায় চটেছেন ট্রাম্প।

চীনের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছেন, বেইজিং ভুল করেছে, তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া আরেক পোস্টে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধকে ঘিরে শেয়ারবাজারের পতন নিয়ে মার্কিনীদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে না করেছেন।

তিনি বলেছেন, এটা ধনী হওয়ার ভালো সুযোগ। এর আগে, বুধবার ট্রাম্প যে শুল্কনীতি ঘোষণা করেছেন তার ধাক্কায় টানা দ্বিতীয় দিনও বিশ্বের প্রায় সব শেয়ারবাজারেই পতন দেখা গেছে।

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্কে ‘মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, প্রবৃদ্ধি কমতে পারে’।

এদিকে, শুক্রবারও ওয়াল স্ট্রিটের অব্যাহত পতন দেখা গেছে। এশিয়া ও ইউরোপের প্রায় সব শেয়ারবাজারেই একই অবস্থা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত সুপরিচিত কোম্পানিগুলোর স্টক মার্কেট ইনডেক্স ডাউ জোন্স পড়েছে ৫.৫ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি পড়েছে ৫.৯৭ শতাংশ।

ট্রাম্পের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দিনে’ ঘোষিত শুল্কের পর এখন পর্যন্ত মার্কিন আর্থিক বাজারে অন্তত ৬ লাখ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ নিয়ে মোটেও অনুতাপ নেই। উল্টো তিনি বলেছেন, ‘আমার নীতি কখনোই বদলাবে না। এটা ধনী হওয়ার জন্য চমৎকার সময়।’

ট্রাম্প যেসব দেশের ওপর পাল্টা ‘সম্পূরক শুল্ক’ দিয়েছেন তার মধ্যে চীনের পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্কের বদলায় বেইজিংও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি পণ্যে একই হারে শুল্ক বসিয়েছে। তবে চীন এখানেই শান্ত হয়নি। বরং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মামলারও হুমকি দিয়েছে দেশটি।

চিকিৎসা খাত ও ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তি লাগে এমন দুর্লভ খনিজ উপাদান রপ্তানিতেও বিধিনিষেধ দিচ্ছে। এতে ট্রাম্প অসন্তুষ্ট হয়ে ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘চীন ভুল করেছে, তারা আতঙ্কিত...এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই তাদের।’

চীন পাল্টা পদক্ষেপ নিলেও যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় অনেক বাণিজ্য অংশীদারই মন্দার ভয়ে ‘উত্তেজনা না বাড়িয়ে সময় নেওয়ার’ কৌশল বেছে নিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ বলেছেন, ট্রাম্প তাদের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও তারা ‘ধীরস্থির ভাবে, সাবধানতার সঙ্গে, ঐক্যবদ্ধ উপায়ে’ পদক্ষেপ নেবে এবং আলোচনার জন্য সময় দেবে। তিনি আরও বলেন, ইউরোপের এই জোট ‘অলস হয়ে বসে থাকবে না’।


যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভের কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:১০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদীদের বাড়াবাড়ি এবং ধনকুবেরদের সমর্থিত এজেন্ডার বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার আমেরিকাজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। দেশটির বামপন্থি সংগঠনগুলো এ কথা জানিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বামপন্থি সংগঠনগুলোর বরাতে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা এবং দেশের অন্যান্য স্থানে ৫ লাখের বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিক্ষোভের পরিকল্পনাকারী দলগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইনডিভিজিবল। এর প্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি আমেরিকান ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একদিনের বিক্ষোভ হতে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট জেমি রাসকিন, ফ্লোরিডার ম্যাক্সওয়েল ফ্রস্ট এবং মিনেসোটার ইলহান ওমরসহ কংগ্রেস সদস্যরা জনতার সঙ্গে কথা বলবেন।

বিক্ষোভকারীদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে নির্লজ্জ ক্ষমতা দখল বন্ধ করার জন্য এটি একটি দেশব্যাপী কর্মসূচি। তারা বলেন, ট্রাম্প, মাস্ক এবং তাদের কোটিপতি বন্ধুরা আমাদের সরকার, আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের মৌলিক অধিকারের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালাচ্ছে।

‘তারা আমেরিকার কিছু অংশ কেড়ে নিতে চায় - সামাজিক নিরাপত্তা অফিস বন্ধ করে দেওয়া, প্রয়োজনীয় কর্মীদের বরখাস্ত করা, ভোক্তা সুরক্ষা বাতিল করা এবং মেডিকেডকে ধ্বংস করা - এই সবকিছুই তাদের কোটিপতি কর কেলেঙ্কারির অর্থায়নের জন্য। তারা আমাদের করের ডলার, আমাদের পাবলিক সার্ভিস এবং আমাদের গণতন্ত্র অতি ধনীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। আমরা যদি এখনই লড়াই না করি, তাহলে বাঁচানোর মতো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।’

১ এপ্রিল ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর এই সপ্তাহে শেয়ার বাজারের পতনের পর এই বিক্ষোভ শুরু হয়। অর্থনৈতিক বিপর্যয় সত্ত্বেও, ট্রাম্প শুক্রবার বলেছিলেন: ‘আমার নীতি কখনও পরিবর্তন হবে না।’


গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, আরও ৩৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

ইসরায়েলি তাণ্ডবে বিধ্বস্ত গাজা শহর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:২৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে স্থল আক্রমণ বাড়িয়েছে ইসরায়েল। বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় শুক্রবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ হামলার পর গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য আর কোনো জায়গা নেই বলে জানিয়েছেন মেডিকেল ডিরেক্টর। খবর আল জাজিরার।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল নতুন করে আক্রমণ শুরুর পর থেকে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল দখলের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিমান হামলাও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল লেবানন এবং সিরিয়ার ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে। দক্ষিণ লেবাননের সিডন শহরে এক হামলায় একজন হামাস কমান্ডার এবং তার ছেলে নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

আরব নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় স্থল সেনারা 'নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারণের জন্য' শুজাইয়া এলাকায় অভিযান শুরু করেছে। নাসের হাসপাতালের একটি মেডিকেল সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, খান ইউনিসে একটি ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে।

এলেনা হেলস টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে এএফপিকে বলেন, 'পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক এবং প্রতিটি দিক থেকে আমাদের দিকে মৃত্যু আসছে।' তিনি আরও বলেন, তিনি এবং তার পরিবার শুজাইয়ায় তার বোনের বাড়িতে আটকা পড়েছেন।

নেতানিয়াহুর উগ্র ইহুদিবাদি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গত বুধবার বলেছিলেন, ইসরায়েল গাজা উপত্যকার ভেতরে সামরিক উপস্থিতি আরও জোরদার করবে এবং হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস এবং গাজার বিভিন্ন এলাকা খালি করবে। তিনি উল্লেখ করেন, বিশাল এলাকা দখল করা হবে, যা 'ইসরায়েলি নিরাপত্তা অঞ্চল' হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

নেতানিয়াহু বলেছেন, সেনাবাহিনী গাজাকে বিভক্ত করছে এবং 'অঞ্চল দখল' করছে, যাতে হামাসের কাছে আটক বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে বাধ্য করা যায়।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করা একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছে।

সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেন, গাজা শহরের উত্তর-পূর্বে আল-তুফাহ পাড়ার দার আল-আরকাম স্কুলে হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। সেই সঙ্গে কয়েকজন নিখোঁজদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী ছিলেন, যিনি যমজ সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছিলেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মার্চ ইসরায়েল তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করার পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ১,২৪৯ জন নিহত হয়েছে, যার ফলে মোট নিহতের সংখ্যা ৫০,৬০৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

’গাজায় প্রতিদিন ১০০ শিশু হতাহত হচ্ছে’

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলার পর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু হতাহত হচ্ছে। এমনটি জানিয়েছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি। একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে শিশুদের ওপর। প্রতিদিনের হতাহত সংখ্যা যে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, তা বিশেষ উদ্বেগের বিষয়।

কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজা এখন এক ধরনের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং অনেক পরিবার হারিয়েছে তাদের প্রিয়জনদের।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় যেসব এলাকাকে নতুন করে ইসরায়েলি সামরিক উচ্ছেদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে, সেসব এলাকায় থাকা অন্য বন্দিদের অধিকাংশই এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তারা বলেছে, নতুন অভিযানের কারণে গাজার শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের জন্য পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালালে সেখানে কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে, যা আজ পর্যন্ত থামেনি। এভাবে গাজার উপর যুদ্ধের ভয়াবহতা ক্রমেই বাড়ছে।

বিষয়:

বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ভারতে ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের প্রস্তাব পেশ করার পর থেকেই ভারতজুড়ে শুরু হয়েছিল সমালোচনার ঝড়। তবে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলটি এরই মধ্যে ভারতের সংসদে পাস হয়েছে। এখন এটিতে শুধু রাষ্ট্রপতির সইয়ের অপেক্ষা। এই সংশোধনী বিলটি পাসের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। গতকাল শুক্রবার কলকাতার পার্ক সার্কাসের সেভেন পয়েন্টে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নামে হাজার হাজার মানুষ।

পোস্টার, পতাকা, স্লোগান দিয়ে বিতর্কিত ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে তারা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে শোনা যায়। এই সমাবেশের পর কার্যত সেভেন পয়েন্ট অবরুদ্ধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এক পর্যায়ে তাদেরকে সামাল দিতে নামানো হয় পুলিশ বাহিনী।

কলকাতার পার্ক সার্কাসের পর আসানসোলেও এই বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে পথে নামেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে আসা মো. জামাল উদ্দিন শেখ বলেন, আমারা এই বিলের প্রতিবাদে আসানসোল বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিলাম। আগামী দিনে যদি এই বিল না ফেরত নেওয়া হয় তাহলে কলকাতা থেকে আসানসোল পর্যন্ত অবরোধ করা হবে।

অপর আরও এক বিক্ষোভকারী আব্বাস আলী খান জানিয়েছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছি। আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদেই আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এই বিলের প্রতিবাদ করছি। কেন্দ্রীয় সরকার যদি এখনো এই ওয়াকফ বিল ফেরত না নেয় তাহলে এর থেকেও বড় আন্দোলনে যাওয়া হবে।

ওয়াকফ বিল নিয়ে মুসলিমদের আপত্তির কারণ কী?

ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রবল আপত্তির মধ্যেও লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয়েছে বিতর্কিত ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫। বুধবার গভীর রাতে লোকসভায় এবং বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিলটি অনুমোদন পায়। ৭০ বছরের পুরোনো ওয়াকফ আইনে পরিবর্তন আনতে আনা এই বিল এখন রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের অপেক্ষায়, যা হলে এটি আইনে পরিণত হবে। বিরোধী দলের দাবি, নতুন সংশোধনীর ফলে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব হয়ে যাবে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

নতুন এই সংশোধনী আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ওয়াকফ সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং আয় বাড়ানো। সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু দাবি করেছেন, ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, বর্তমানে দেশে প্রায় ৮ লাখ ৭২ হাজার ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, যেগুলো থেকে রাজস্ব আহরণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে আয় হচ্ছে খুব কম। ২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫ লাখ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা আয় হয়েছিল, যেখানে আয় হওয়া উচিত ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। নতুন আইনের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়বে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে বলে দাবি করেন রিজিজু।

তবে বিরোধী দলগুলো এবং মুসলিম সংগঠনগুলো এই আইনের তীব্র বিরোধিতা করছে। তাদের মতে, নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে এবং অমুসলিমদের বোর্ডের সদস্য করার সুযোগ রাখা হয়েছে, যা বোর্ডের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলবে। বিরোধীদের দাবি, এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি কৌশল। নতুন আইনে সরকারি সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করার ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে এবং ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় রাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকা বাড়ানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই বিল নিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টার তুমুল বিতর্ক চলে। বিরোধীরা বিলের বিরুদ্ধে সরব হলেও শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটিতে বিলটি ১২৮-৯৫ ভোটে পাস হয়। ভোটের মাধ্যমে বিরোধীদের দাবি নাকচ করে সরকার বলছে, নতুন এই আইন মুসলিম সমাজের গরিব, নারী ও অনাথ শিশুদের স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ. ডি. দেবেগৌড়া এই বিলকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, এটি দরিদ্র মুসলিমদের রক্ষা করবে এবং সংবিধানের মৌলিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার মুসলিমদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে এবং এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ওয়াকফ ঘোষণার আগে তার সম্পত্তি থেকে উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারী ও অনাথদের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আয় যদি এক লাখ টাকার বেশি হয়, তবে সেটির নিরীক্ষা করাতে হবে এবং রাজ্যের নিরীক্ষকরা এটি তদারকি করবেন। এর পাশাপাশি, কোনো সরকারি জমিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করা হলে, তার তদন্ত করবেন জেলা কালেক্টরের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সংশোধনীর ফলে ওয়াকফ বোর্ড আরও কার্যকর হবে এবং সম্পত্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে। তবে বিরোধীদের আশঙ্কা, নতুন আইন মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ওয়াকফ বোর্ডের কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতে মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে, যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর পড়বে।

বিষয়:

লী পেনকে দোষী সাব্যস্ত করা ‘এটা গণতন্ত্র নয়’ : মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, ফরাসি অতি-ডানপন্থী নেতা মেরিন লী পেনকে খুব ছোটখাটো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া ‘এটা গণতন্ত্র নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ভ্যান্স নিউজম্যাক্স টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, `তারা তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করার জন্য এবং নির্বাচনে থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে, দেখুন, ‘এটা গণতন্ত্র নয়।’

তিনি বলেন, ফ্রান্সের ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ’কিছু জরিপে লী পেন এগিয়ে ছিলেন এবং ’অবিশ্বাস্যভাবে ছোট অভিযোগে লী পেনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

২০২৭ সালের নির্বাচনে একজন শীর্ষস্থানীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত লে পেনকে সোমবার একটি ফরাসি আদালত ইউরোপীয় ইউনিয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং পাঁচ বছরের জন্য তাকে সরকারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের শুরুতে লী পেনের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তুলনা তার নিজের আইনি লড়াইয়ের সাথে তুলনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে ‘খুব বড় বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন ‘লী পেনের ওপর পাঁচ বছর ভোটে লড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এ রকম হয়েছে।’

একজন পর্ন তারকাকে চুপ থাকার জন্য ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির অভিযোগে নিউইয়র্কে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তবে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা দুটি ফেডারেল ফৌজদারি মামলা বাতিল করা হয়েছে।


ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক একটি ‘জাতীয় সংকট’ : জাপানি প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপান থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যদিও দেশটির সংস্থাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত শুল্ক একটি ‘জাতীয় সঙ্কট’। কারণ, তিনি দেশের ওপর এর প্রভাব কমাতে আন্তঃদলীয় আলোচনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শিগেরু ইশিবা সংসদে বলেন, শুল্ক আরোপকে ‘একটি জাতীয় সংকট বলা যেতে পারে এবং সরকার সকল পক্ষের সাথে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।’

ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে আলোচনার জন্য ‘ঠান্ডা মাথার’ দৃষ্টিভঙ্গির আহ্বান জানিয়ে, ইশিবা তার মন্ত্রীদের শুল্ক ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করার এবং দেশীয় শিল্পের জন্য ‘অর্থায়ন সহায়তা এবং কর্মসংস্থান রক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ ।


গাজার রাফা শহর দখল করল ইসরায়েল

গাজার রাফা ছেড়ে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১৯:৩১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের রাফাকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে শহরটির দখল নিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের ফলে নতুন করে গৃহহীন হয়েছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। গাজার দক্ষিণ প্রান্তে মিসর সীমান্তের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর রাফায় যুদ্ধবিরতির পর গত মাসেই কেবল ফিরতে পেরেছিলেন বাসিন্দারা। তবে দুই মাসের মধ্যেই ইসরায়েলের বাহিনী আবার অভিযান শুরু করায় রাফা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, রাফায় ইসরায়েলি অভিযানে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। রাফা থেকে খান ইউনিসে আশ্রয় নেওয়া একজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, রাফায় শেষ হয়ে গেছে। সেখানে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।

তিনি আরও বলেন, অবশিষ্ট যেসব ঘরবাড়ি রয়েছিল, সেগুলোও তারা এখন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। খান ইউনিসেও এক হামলায় কয়েকজন মারা যাওয়ার পর আদেল আবু ফাখের তার তাঁবুতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছিলেন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এখানে কোনো কিছু কি অবশিষ্ট আছে? আমাদের জন্য কিছুই নেই। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থাতেই আমাদের মেরে ফেলা হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর গাজার বাসিন্দারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছিলেন। তবে নতুন করে ইসরায়েলের অভিযানের মুখে গাজার বাসিন্দারা স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা করছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম সময়সীমা মার্চের শুরুতে শেষ হয়ে গেলেও তা বাড়ানোর জন্য কোনো চুক্তি হয়নি।

এরই মাঝে ইসরায়েল গাজার বসবাসরত ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ত্রাণ সরবরাহ সবদিক থেকেই বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে যুদ্ধবিরতিতে পরিস্থিতির সাময়িক উন্নতি হলেও এখন আবার গাজার মানবিক বিপর্যয় চলছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১১২ জন নিহত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে। এর মধ্যে গাজা সিটি স্কুলে হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, গাজার উপত্যকার অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ জায়গায় এখন আর কোনো ‘নিরাপদ’ অঞ্চল নেই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের নির্বিচার ও নৃশংস হামলার জেরে গাজার হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ও আশ্রয়শিবির ছেড়ে পালাচ্ছেন।

বিপুলসংখ্যক গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়া রাফা দখলের ঘোষণা দেওয়ার এক দিন পর ইসরায়েলি বাহিনী উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরের দিকে অঞ্চল অগ্রসর হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও আশ্রয়শিবির থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার গাজাবাসীর শেষ আশ্রয়স্থল ছিল রাফা।

মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের নৃশংস ও নির্বিচার হামলায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা শহরের উত্তরের শহরতলী শেজায়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলায় নারী, শিশুসহ ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, ফিলিস্তিনি ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।

চিকিৎসাকর্মীরা বলছেন, গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় দার আল-আকরাম স্কুলে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রাফা থেকে পাশের খান ইউনিসে আশ্রয় নেওয়া সাত সন্তানের এক বাবা একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, রাফা শেষ। সেখানকার সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাবা বলেন, রাফাতে যে কয়টি ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি দাঁড়িয়ে আছে, সে সবকিছু তারা ধ্বংস করে ফেলছে।

ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে গত মাসে আবার গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর রাফা দখল করতে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা শহরের উত্তরের শেজায়া এলাকা থেকে বাসিন্দাদের চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাণভয়ে ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে হেঁটে, অনেকে গাধার গাড়ি আবার অনেকে মোটরসাইকেল ও ভ্যানে চড়ে পালাচ্ছেন।

সেখানকার বাসিন্দা উম্ম আয়েদ বারদা বলেন, ‘আমি মরতে চাই। তাদের আমাদের মেরে ফেলতে এবং এই জীবন থেকে মুক্তি দিতে দিন। আমরা এমনিতে বেঁচে নেই। আমরা মৃত।’

আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ট্রাম্প জানান, তিনি বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি আশা করছেন, ইসরায়েলি নেতা সম্ভবত আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন নেতানিয়াহু। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম কোনো বিদেশি নেতা হিসেবে নেতানিয়াহুই প্রথম তার সঙ্গে দেখা করেন।

গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আইসিসি গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তিনি বৃহস্পতিবার হাঙ্গেরি সফর করেন। এই প্রথমবারের মতো ইউরোপের মাটিতে পা রাখলেন তিনি।

বিষয়:

banner close