বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১

ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৩১ মার্চ, ২০২৫ ১৮:৫১

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সোমবার (৩১ মার্চ) ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।
এছাড়া সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেহবাজ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশে আসছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উভয় নেতার এই ফোনালাপে বাংলাদেশের খ্যাতনামা ও কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে একথা জানিয়েছেন শেহবাজ শরিফ।
এক্সে দেওয়া ওই পোস্টে পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে টেলিফোনে মনোরম কথোপকথন হয়েছে। ফোনালাপে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি এবং পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি।
শেহবাজ শরিফ আরও বলেন, আগামী ২২ এপ্রিল একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী/পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে তার সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের জন্য আমার আন্তরিক আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেছি এবং কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লাকে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি সাংস্কৃতিক দলকে পাকিস্তানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল।


চট্টগ্রামে বাস-মিনিবাস সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত ১২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১২।

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাস- মিনিবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

নিহত হলেন, লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের মো. পারভেজের ছেলে মো. জাহেদ, একই এলাকার আলমের ছেলে রিফাত (২৯), পদুয়া ইউনিয়নের চরপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে নাজিম, সুখছড়ি মৌলভীপাড়ার আমির হোসেনের ছেলে জিয়ান হোসেন অপু ও সাতকানিয়া উপজেলার ডেলিপাড়ার ছাত্তারের ছেলে ছিদ্দিক।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘সকালে মহাসড়কে বাস-মিনিবাস সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’


লিবিয়ায় ২৩ অপহৃত বাংলাদেশি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

লিবিয়ার মিসরাতা শহরে ২৩ অপহৃত বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিবিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, লিবিয়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ২৩ জন অপহৃত বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে এবং এ ঘটনায় জড়িত দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। মিসরাতার আল-গিরান থানায় বেশ কয়েকজন বিদেশিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি এই তদন্ত শুরু করে।

তদন্তের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান চিহ্নিত করে পুলিশ সফল অভিযান পরিচালনা করে জিম্মিদের মুক্ত করে। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত ব্যক্তি ও গ্রেপ্তারকৃতদের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য আল-গিরান থানায় হস্তান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ দূতাবাস মিসরাতার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করছে।


মিয়ানমার নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার মিয়ানমার এক মিনিট নীরবতা পালন করবে। ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ব্যাংকক পর্যন্ত রাস্তাঘাট ধসে পড়েছে এবং বাড়িঘর, ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

মিয়ানমারের মান্দালয় থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার চার দিন পরও মিয়ানমারের অনেক মানুষ এখনো বাড়ির বাইরে ঘুমাচ্ছে। আরো ভূমিকম্পের আশঙ্কায় এবং ভয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতে মানুষ ফিরতে সাহস পাচ্ছে না।

গত শুক্রবার দেশটিতে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ঠিক একই সময়ে ভূমিকম্পে নিহত মানুষের স্মরণে নীরবতা পালন করা হবে।

ক্ষমতাসীন জান্তা জনগণকে সেই সময় মন্দির এবং প্যাগোডায় প্রার্থনার আহবান জানিয়েছেন। এই সময় নীরবতা পালন করতে মিডিয়ার সম্প্রচার বন্ধ রাখতে এবং শোকের প্রতীক প্রদর্শন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এই নীরবতা পালন পদক্ষেপটি জান্তা কর্তৃক ঘোষিত এক সপ্তাহের জাতীয় শোকের অংশ। যেখানে ’প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির প্রতি সহানুভূতি জানানোর জন্য’ আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ভবনগুলোতে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

জান্তা সরকার সোমবার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩ হাজার ৯শ’ জনেরও বেশি মানুষ আহত এবং ২৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ভূমিকম্পে প্রতিবেশি থাইল্যান্ডে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে ভূমিকম্পের ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শহর ও গ্রামে উদ্ধারকারী দল পৌঁছালে মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের দ্বিতীয় শহর এবং ১৭ লাখেরও বেশি মানুষের আবাসস্থল মান্দালয় ভূমিকম্পের ফলে সবচেয়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে। অনেক আবাসিক ভবন ধ্বংসস্তূপের স্তূপে পরিণত হয়েছে।

ভূমিকম্পের ফলে শত শত বাসিন্দা চতুর্থ রাত খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন। তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে অথবা তারা ভীত ছিলেন যে আফটারশক আরো ক্ষতি করবে এই আশঙ্কায়।

ঘড়ি নির্মাতা সো টিন্ট এএফপি’কে বলেন, ’আমি নিরাপদ বোধ করছি না। আমার বাড়ির পাশে ছয় বা সাত তলা ভবন হেলে আছে। সেগুলো যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।


গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা বন্ধে ইসরাইলকে চাপ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইয়ার্ডেন বিবাস নামে হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া এক ইসরাইলি জিম্মি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই আহ্বান জানান তিনি।

জেরুজালেম থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

ইয়ার্ডেন বিবাসের স্ত্রী সিরি বিবাস ও আরো দুই সন্তান গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। তবে বন্দি অবস্থায় তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গত মাসে ইয়ার্ডেন বিবাসকে মুক্তি দেয়া হয়।

মুক্তির পর প্রথমবারের মতো এক সাক্ষাৎকারে ইয়ার্ডেন বিবাস বলেছেন, চলতি মাসে ইসরাইল নতুন করে যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে এর ফলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আটক থাকা কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না।

গত রোববার প্রচারিত সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিটস’-এর সাথে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, দয়া করে এই যুদ্ধ বন্ধ করুন এবং সমস্ত জিম্মিকে ইসরাইলে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করুন।

তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি জানি তিনি সাহায্য করতে পারেন। আমি আজ এখানে একমাত্র ট্রাম্পের কারণেই। আমি মনে করি, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি আবার এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন’।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনী হামলা শুরু হয়। টানা ১৫ মাস পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও তা স্থায়ী হয়নি। চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।

এমনকি ঈদুল ফিতরের উৎসবের মধ্যেও ইসরাইলের হামলা অব্যাহত ছিল। গত দুই দিনে গাজায় ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০৫ জন।

ফলে দীর্ঘ হচ্ছে হতাহতের তালিকা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার ৩৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৪ হাজার ৪শ’ জন আহত হয়েছেন।


ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধাবসানে ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ পালনে প্রস্তুত চীন’: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে চীন ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ পালন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন শীর্ষ কূটনীতিক এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

রাশিয়ার ‘স্বার্থ রক্ষায়’ সমর্থন করে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে তিনি এ কথা বলেন।

মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই চীন বলেছেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সংঘাত নিরসনে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত তার দেশ। মস্কোতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের আগে সংস্থাটি ওয়াং’র উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।


ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন। এরমধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডান পন্থি জোটের মধ্যে উত্তেজনা আরো তীব্র হয়ে উঠল।

স্মোট্রিচের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জাতীয়তাবাদী-ধর্মীয় ইহুদি পাওয়ার পার্টির প্রধান ইতামার বেন গাভীরের সরকারে ফিরে আসার পর আরো মন্ত্রী পদের জন্য অনুরোধের প্রতিবাদে পদত্যাগ করলেন অর্থমন্ত্রী।

স্মোট্রিচ এখন ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে তার আসনে ফিরে আসবেন। সেখানে অতি-ডানপন্থি রিলিজিয়াস জায়োনিজম দলের আইন প্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। যার নেতৃত্ব তিনি দিচ্ছেন।

নেসেট সদস্য জভি সুক্কোতকে পুনর্বহাল করা নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভীরের সাথে বিরোধের জেরে এই পদত্যাগপত্র জমা দেন স্মোট্রিচ।

স্মোট্রিচের দল বেন-গাভীরের প্রতি রাজনৈতিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

এই পদক্ষেপটি ইসরাইলের অতি-ডানপন্থি জোটের মধ্যে হওয়া ভাঙনকে আরো বাড়িয়ে দিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ এবং নীতিমালা নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে এই জোট।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় বার বসা নিয়ে ‘মজা করছি না’ : ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার তার চিন্তাভাবনার কথা পুনর্ব্যক্ত করে ‘এনবিসি নিউজ’কে বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে পারেন। এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, যা মার্কিন সংবিধানে নির্ধারিত দুই মেয়াদের সীমা লঙ্ঘন করবে।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানায়।

রোববার সকালে ‘এনবিসি নিউজ’কে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ’আমি মজা করছি না’, যখন তাকে আরেকটি মেয়াদ বিষয়ে স্পষ্ট করতে বলা হয়, তখন তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, এর জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি আছে যেখানে আপনি এটি করতে পারেন।


ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত প্রায় ৩ হাজার

জীবিতদেরও উদ্ধার করা হচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উদ্ধারকর্মীরা যখন মিয়ানমারের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৬৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করছিলেন, তখন তার মতো আরও অনেকের ফিরে আসার আশা ফিকে হয়ে গেছে। গৃহযুদ্ধকবলিত দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে এরইমধ্যে প্রায় তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। সময় যত গড়াচ্ছে, এই সংখ্যাটা বেড়ে কোথায় গিয়ে ঠেকবে; তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে আশার কথা, এখনো জীবিতদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
গৃহযুদ্ধের কারণে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির মানবিক সংকট বহু পুরোনো। এই ভূমিকম্প সেই সংকটকে আরও ভয়াবহ মাত্রায় নিয়ে গেছে। রাজধানী নেপিদোর উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সাত দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পে ভবন ধসে পড়ার পর ইট-পাথরের স্তূপের নিচে ঢাকা পড়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু তাকে সফলভাবে তুলে আনা সম্ভব হয়েছে।
শুক্রবার দিনের মাঝামাঝিতে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে আঘাত হানে ভূমিকম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর জীবিতদের উদ্ধারের সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে।
দেশটির রাজধানী নেপিদোর একটি ফোরামে জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৭১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চার হাজার ৫২১ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন।’
মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশ থেকে অনুভূত হয়েছে এই বিধ্বংসী ভূমিকম্প। এতে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে একদিকে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
বেশিরভাগ প্রাণহানি হয়েছে মান্দালয় ও নেপিদোতে। ইউনিসেফের মিয়ানমার প্রতিনিধি জুলিয়া রিস বলেন, ‘এখানে ব্যাপক সহায়তা দরকার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটা আরও বাড়ছে। জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ কমে আসছে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরবরাহের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।’
উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ভারী যন্ত্রপাতিরও ঘাটতি রয়েছে। এতে চল্লিশ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও হাত দিয়ে জীবিতদের উদ্ধার করতে হচ্ছে অনেককে।
মিয়ানমার ফর দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রোগ্রাম উপ-পরিচালক লরেন ইলারি বলেন, ‘কী মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা বর্তমান পর্যায়ে এসে আমরা পরিষ্কার হতে পারছি না। মান্দালয়ের আশি শতাংশ ভবন ভেঙে পড়েছে।’
দেশটির তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ও ২২টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, ‘আঘাত ও অস্ত্রোপচারের চিকিৎসার জন্য জরুরি সহায়তা দরকার। রক্ত সরবরাহ, চেতনানাশক, অপরিহার্য চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সহায়তা প্রয়োজন।’
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি ভবন ধসে পড়েছে।

সূত্র: ইউএনবি


মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ২ হাজার, ধীর গতির উদ্ধার অভিযান

আপডেটেড ১ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:০৩
ইউএনবি

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজারে পৌঁছেছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার অভিযান ধীর গতিতে চলছে। গেল শুক্রবার দিনের মাঝামাঝিতে এশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে দেশটিতে। এরপর থেকে নিহতের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, একটি মঠ ভেঙে ২০০ বৌদ্ধ ভিক্ষু নিহত হয়েছেন। একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় ধসে পড়লে ৫০টি শিশুর প্রাণহাটি ঘটেছে। আর জুমাতুল বিদার নামাজ আদায়ের সময়ে সাত শতাধিক মুসল্লি নিহত হয়েছেন।

সাত দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পটি উৎপত্তি স্থল দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে। এতে শহরের বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সড়কগুলো ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে। আর ভেঙে মাটিতে মিশে গেছে শত শত ভবন।

জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থাগুলো হুঁশিয়ারি করে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারে খাদ্যসংকট ও রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। গৃহযুদ্ধে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় আগে থেকেই প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে সেখানে। এই দুর্যোগ সেই পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জ্বালানি সংকট ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ভারী যন্ত্রপাতিরও ঘাটতি রয়েছে। এতে চল্লিশ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও হাত দিয়ে জীবিতদের উদ্ধার করতে হচ্ছে অনেককে।

ভেঙেপড়া মান্দালয়ের ইউ হ্লা থেন মঠের উদ্ধারকারীরা বলছেন, ‘তারা এখনো ১৫০ ভিক্ষুকের মরদেহ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।’

মিয়ানমার ফর দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রোগ্রাম উপ-পরিচালক লরেন ইলারি বলেন, ‘কী মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা বর্তমান পর্যায়ে এসে আমরা পরিষ্কার হতে পারছি না। মান্দালয়ের আশি শতাংশ ভবন ভঙে পড়েছে।’

দেশটির তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ও ২২টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, ‘আঘাত ও অস্ত্রোপচারের চিকিৎসার জন্য জরুরি সহায়তা দরকার। রক্ত সরবরাহ, চেতনানাশক, অপরিহার্য চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সহায়তা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি ভবন ধসে পড়েছে।


ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি ইমরান খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারে ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি। নিরাপত্তার কারণে তাঁকে ঈদের নামাজে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস থেকে শুরু করে তোশাখানা তছরুপের মতো নানা অভিযোগে ১০০টির বেশি মামলা রয়েছে।

ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী। আদিয়ালা কারাগারের ভেতরে কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হলেও নিরাপত্তার কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি।

ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিও কারাবন্দী রয়েছেন। ঈদের নামাজের সময় তাঁকে কারাকক্ষে থাকতে হয়েছে।

তবে কারাগারের অন্য বন্দী ও কারা কর্মকর্তারা ঈদের নামাজ পড়েছেন। আদিয়ালা কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন দিনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়।


থাইল্যান্ডে ধসে পড়া ভবনের নিচে প্রাণের চিহ্ন

চলছে উদ্ধার অভিযান
থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে ৩০ তলা ভবন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়া ৩০ তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ জনের জীবনের চিহ্ন শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের জীবিত উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

গতকাল শনিবার ব্যাংকক দমকল ও উদ্ধার বিভাগের পরিচালক সুরিয়ান রাভিওয়ান জানান, এই দুর্ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

সুরিয়ান জানান, ৩০ তলা নির্মাণাধীন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ জনের অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দল ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধারের জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে ও পানিশূন্যতার কারণে ভুক্তভোগীরা শকে চলে যেতে পারেন। তবে আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শেষ করার চেষ্টা করছি।

তবে এখন পর্যন্ত আটকে পড়া লোকদের কাছে পানি বা খাদ্য পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কারণ তারা ধ্বংসস্তূপের প্রায় তিন মিটার গভীরে রয়েছেন।

এদিকে, ব্যাংককের গভর্নর চাদচার্ট সিত্তিপুন্ত শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, উদ্ধারকাজ সহজ করতে ক্রেন ট্রাক ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপের কংক্রিটের অংশগুলো সরানো হচ্ছে। এ ছাড়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকক মহানগর প্রশাসন ১৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রকৌশলী মোতায়েন করেছে।

শুক্রবার মিয়ানমারে সৃষ্ট শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রভাবে ব্যাংককে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এর ফলে বহু মানুষ আতঙ্কে খোলা স্থানে আশ্রয় নেন। শুক্রবার রাতে ৩০০-এর বেশি মানুষ ব্যাংককের পার্কগুলোতে রাত কাটিয়েছেন। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব পার্ক আরও এক রাত খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর।

থাইল্যান্ডে নিহত ১০, নিখোঁজ শতাধিক

শক্তিশালী ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৬ জন এবং ১০১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ব্যাংককের উপ-গভর্নর তাভিদা কামোলভেজ জানিয়েছেন, নিখোঁজরা মূলত তিনটি নির্মাণস্থলের কর্মী, যার মধ্যে ধসে পড়া একটি ৩০ তলা সরকারি ভবন রয়েছে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে মিয়ানমারের মান্দালয়ে ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। এর তীব্র প্রভাব অনুভূত হয় প্রতিবেশী থাইল্যান্ড, চীন ও ভিয়েতনামেও।

থাইল্যান্ডে এ ভূমিকম্পে ব্যাংককসহ ১০টি প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সামুত সাখোন, চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, ফ্রায়ে, মায়ে হং সন, লাম্পাং, চাই নাট, লাম্পুন, লোই এবং কামফায়েং পেত প্রদেশ উল্লেখযোগ্য বলে জানিয়েছেন দেশটির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিভাগের মহাপরিচালক পাসাকর্ন বুনিয়ালাক।

থাইল্যান্ডের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, শনিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মায়ে হং সন প্রদেশে আরও দুটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রথমটি ছিল ৪ দশমিক ১ মাত্রার, যা রাত ১১টা ২১ মিনিটে পাই জেলায় পাঁচ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। দ্বিতীয়টি ছিল ২ মাত্রার, যা ভোর ৩টা ২৪ মিনিটে একই এলাকায় হয়। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

অব্যাহত থাকতে পারে আফটারশক

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, মিয়ানমারে শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পের আফটারশক আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত থাইল্যান্ডে অনুভূত হতে পারে।

এশিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক এবং থাইল্যান্ডের জাতীয় ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. পেননং ওয়ারনিচাই সতর্ক করেছেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে ভবনগুলোতে কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি বলেন, ভবনগুলোর কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো ক্ষতির লক্ষণ দেখা যায়, তবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী ঘোষণা করা উচিত।

ড. পেননং আরও বলেন, ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের সাগাইং ফল্ট লাইনে সংঘটিত হয়েছে, যা ভারত ও সুন্ডা টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। তবে এটি এমন মাত্রার ছিল যা ভূমিকম্প-সহনশীল ভবনগুলোর জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।

এ ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ জানান, ঝুঁকি পুরোপুরি শেষ হয়নি, তবে বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আফটারশকের মাত্রা কমে আসবে।


গৃহযুদ্ধ-কবলিত মিয়ানমারে নতুন বিপর্যয় এনেছে ভূমিকম্প

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িঘর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গৃহযুদ্ধ, খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক অবনতির মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার। আর এর মধ্যেই নতুন বিপর্যয় ডেকে এনেছে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার প্রাণঘাতী এ ভূমিকম্পে ধ্বংসযজ্ঞের খবর আসছে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় থেকে শুরু করে রাজধানী নেপিদো থেকেও।

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক জান্তা। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবারের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৩৭৬ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার দুপুরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার কেন্দ্রের গভীরতা ১০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।

ভয়াবহ বিপর্যয়

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ও ইন্টারনেট সেবার বাইরে চলে গেছেন লাখ লাখ মানুষ।

ভেঙে পড়েছে বহু এলাকার বাড়িঘর, মসজিদ, উপড়ে গেছে গাছ। ফাটল ধরেছে রাস্তায়, ভেঙে গেছে সেতু, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। তবে মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটির পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ বলেছেন, হাজার হাজার মানুষের জরুরি আশ্রয়, খাবার এবং চিকিৎসা সহায়তা দরকার।

বহু এলাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব কতটা পড়েছে তা জানতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে বলেও তার ধারণা। রেড ক্রসের আশঙ্কা, মিয়ানমারের বড় বড় বাঁধগুলোতে কম্পনের কারণে ফাটল ধরে থাকতে পারে। ফলে বন্যাও দেখা দিতে পারে। এতে বিপর্যয় আরও বাড়বে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের কাছেই। প্রধান ভূমিকম্পের মাত্র ১০ মিনিট পরই ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রাজধানী নেপিদোর বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভবন মাটিতে মিশে গেছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে আক্রান্তদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

ভূমিকম্প ভয়াবহ আঘাত হানা এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে রক্তের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। মান্দালয়ের সড়কগুলোতে বড় ধরনের ফাটল দেখা গেছে। একটি মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেতু ভেঙে পড়েছে। এতে কিছু এলাকায় উদ্ধারকারীদের পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।

মানবিক সংকটে মিয়ানমার

পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি মিয়ানমারে আগে থেকেই ব্যাপক মানবিক সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পের আঘাতে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের তীব্রতার বর্ণনা দিতে গিয়ে সিরিনিয়া নাকুতা নামে এক নারী বলেন, কম্পন থামছিল না। ওপরের তলা থেকে পাথরের মতো জিনিস খসে পড়ার শব্দ পাই। তখন বাচ্চাদের বলি, আমাদের এখানে থাকা ঠিক হবে না, বাইরে চলে যাওয়া উচিত।

সন্তানদের নিয়ে নিজের নেপিদোর অ্যাপার্টমেন্টেই ছিলেন নাকুতা। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি শুরু হলে বেশ কিছু সময়েও তা না থামায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন তিনি। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনের এক বাসিন্দা বলেন, কম্পন ছিল বেশ তীব্র। প্রায় চার মিনিট ধরে ঝাঁকুনি চলে।

আরেক ব্যক্তি ঘটনার বর্ণনায় বলেন, ঘুম থেকে জেগে দেখি ভবন মারাত্মকভাবে দুলছে। কাঁপাকাঁপি প্রায় তিন থেকে চার মিনিট চলে। বন্ধুদের কাছ থেকে মেসেজ পাচ্ছিলাম। দেখলাম কম্পন শুধু ইয়াঙ্গুন নয়, দেশের অনেক এলাকাতেই হয়েছে।

মান্দালয়ে ধ্বংসাবশেষের ছবি ও ভিডিও এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রয়্যাল প্যালেস, ৯০ বছরের পুরোনো ব্রিজ ধসে পড়ার পাশাপাশি মহাসড়কও ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ১৪ আফটারশক

মিয়ানমারে শুক্রবারের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর অন্তত ১৪টি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। ইউএসজিএসের ইন্টারঅ্যাক্টিভ মানচিত্র অনুসারে, অধিকাংশ কম্পনের মাত্রা ছিল ৩ থেকে ৫ এর মধ্যে। সবচেয়ে শক্তিশালী আফটারশকটি ছিল ৬ দশমিক ৭ মাত্রার, যা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১০ মিনিট পর আঘাত হানে।

ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পনগুলোর মধ্যে ৪ দশমিক ৯ এবং ৬ দশমিক ৭ মাত্রার দুটি কম্পন মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের প্রায় ২০ মাইল দূরে আঘাত হানে। মান্দালয় শহরটি এই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য আফটারশক উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা মূল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের একটি রেখা গঠন করে।

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বাধা

মিয়ানমারে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশটির সামরিক সরকার নিয়মিতভাবে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহও কঠিন হয়ে পড়েছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন মিয়ানমারের জাতীয় পরিচালক ড. কাই মিন বলেন, কিছু এলাকাকে পুনর্গঠনের জন্য বছর লেগে যেতে পারে। মহাসড়ক ও বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সহায়তা দলগুলো দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।

মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্সের মিয়ানমার প্রধান ফেদেরিকা ফ্রাঙ্কো বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল, কারণ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চার বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ দেশটিকে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক জো ফ্রিম্যান মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের আঘাত মিয়ানমারের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়ে এসেছে।


banner close