মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১

গৃহযুদ্ধ-কবলিত মিয়ানমারে নতুন বিপর্যয় এনেছে ভূমিকম্প

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িঘর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৯ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৪

গৃহযুদ্ধ, খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক অবনতির মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার। আর এর মধ্যেই নতুন বিপর্যয় ডেকে এনেছে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার প্রাণঘাতী এ ভূমিকম্পে ধ্বংসযজ্ঞের খবর আসছে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় থেকে শুরু করে রাজধানী নেপিদো থেকেও।

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক জান্তা। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবারের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৩৭৬ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার দুপুরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার কেন্দ্রের গভীরতা ১০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।

ভয়াবহ বিপর্যয়

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ও ইন্টারনেট সেবার বাইরে চলে গেছেন লাখ লাখ মানুষ।

ভেঙে পড়েছে বহু এলাকার বাড়িঘর, মসজিদ, উপড়ে গেছে গাছ। ফাটল ধরেছে রাস্তায়, ভেঙে গেছে সেতু, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। তবে মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটির পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ বলেছেন, হাজার হাজার মানুষের জরুরি আশ্রয়, খাবার এবং চিকিৎসা সহায়তা দরকার।

বহু এলাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব কতটা পড়েছে তা জানতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে বলেও তার ধারণা। রেড ক্রসের আশঙ্কা, মিয়ানমারের বড় বড় বাঁধগুলোতে কম্পনের কারণে ফাটল ধরে থাকতে পারে। ফলে বন্যাও দেখা দিতে পারে। এতে বিপর্যয় আরও বাড়বে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের কাছেই। প্রধান ভূমিকম্পের মাত্র ১০ মিনিট পরই ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রাজধানী নেপিদোর বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভবন মাটিতে মিশে গেছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে আক্রান্তদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

ভূমিকম্প ভয়াবহ আঘাত হানা এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে রক্তের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। মান্দালয়ের সড়কগুলোতে বড় ধরনের ফাটল দেখা গেছে। একটি মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেতু ভেঙে পড়েছে। এতে কিছু এলাকায় উদ্ধারকারীদের পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।

মানবিক সংকটে মিয়ানমার

পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি মিয়ানমারে আগে থেকেই ব্যাপক মানবিক সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পের আঘাতে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের তীব্রতার বর্ণনা দিতে গিয়ে সিরিনিয়া নাকুতা নামে এক নারী বলেন, কম্পন থামছিল না। ওপরের তলা থেকে পাথরের মতো জিনিস খসে পড়ার শব্দ পাই। তখন বাচ্চাদের বলি, আমাদের এখানে থাকা ঠিক হবে না, বাইরে চলে যাওয়া উচিত।

সন্তানদের নিয়ে নিজের নেপিদোর অ্যাপার্টমেন্টেই ছিলেন নাকুতা। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি শুরু হলে বেশ কিছু সময়েও তা না থামায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন তিনি। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনের এক বাসিন্দা বলেন, কম্পন ছিল বেশ তীব্র। প্রায় চার মিনিট ধরে ঝাঁকুনি চলে।

আরেক ব্যক্তি ঘটনার বর্ণনায় বলেন, ঘুম থেকে জেগে দেখি ভবন মারাত্মকভাবে দুলছে। কাঁপাকাঁপি প্রায় তিন থেকে চার মিনিট চলে। বন্ধুদের কাছ থেকে মেসেজ পাচ্ছিলাম। দেখলাম কম্পন শুধু ইয়াঙ্গুন নয়, দেশের অনেক এলাকাতেই হয়েছে।

মান্দালয়ে ধ্বংসাবশেষের ছবি ও ভিডিও এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রয়্যাল প্যালেস, ৯০ বছরের পুরোনো ব্রিজ ধসে পড়ার পাশাপাশি মহাসড়কও ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ১৪ আফটারশক

মিয়ানমারে শুক্রবারের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর অন্তত ১৪টি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। ইউএসজিএসের ইন্টারঅ্যাক্টিভ মানচিত্র অনুসারে, অধিকাংশ কম্পনের মাত্রা ছিল ৩ থেকে ৫ এর মধ্যে। সবচেয়ে শক্তিশালী আফটারশকটি ছিল ৬ দশমিক ৭ মাত্রার, যা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১০ মিনিট পর আঘাত হানে।

ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পনগুলোর মধ্যে ৪ দশমিক ৯ এবং ৬ দশমিক ৭ মাত্রার দুটি কম্পন মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের প্রায় ২০ মাইল দূরে আঘাত হানে। মান্দালয় শহরটি এই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য আফটারশক উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা মূল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের একটি রেখা গঠন করে।

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বাধা

মিয়ানমারে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশটির সামরিক সরকার নিয়মিতভাবে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহও কঠিন হয়ে পড়েছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন মিয়ানমারের জাতীয় পরিচালক ড. কাই মিন বলেন, কিছু এলাকাকে পুনর্গঠনের জন্য বছর লেগে যেতে পারে। মহাসড়ক ও বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সহায়তা দলগুলো দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।

মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্সের মিয়ানমার প্রধান ফেদেরিকা ফ্রাঙ্কো বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল, কারণ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চার বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ দেশটিকে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক জো ফ্রিম্যান মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের আঘাত মিয়ানমারের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়ে এসেছে।


থাইল্যান্ডে ধসে পড়া ভবনের নিচে প্রাণের চিহ্ন

চলছে উদ্ধার অভিযান
থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে ৩০ তলা ভবন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়া ৩০ তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ জনের জীবনের চিহ্ন শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের জীবিত উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

গতকাল শনিবার ব্যাংকক দমকল ও উদ্ধার বিভাগের পরিচালক সুরিয়ান রাভিওয়ান জানান, এই দুর্ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

সুরিয়ান জানান, ৩০ তলা নির্মাণাধীন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ জনের অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দল ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধারের জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে ও পানিশূন্যতার কারণে ভুক্তভোগীরা শকে চলে যেতে পারেন। তবে আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শেষ করার চেষ্টা করছি।

তবে এখন পর্যন্ত আটকে পড়া লোকদের কাছে পানি বা খাদ্য পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কারণ তারা ধ্বংসস্তূপের প্রায় তিন মিটার গভীরে রয়েছেন।

এদিকে, ব্যাংককের গভর্নর চাদচার্ট সিত্তিপুন্ত শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, উদ্ধারকাজ সহজ করতে ক্রেন ট্রাক ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপের কংক্রিটের অংশগুলো সরানো হচ্ছে। এ ছাড়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকক মহানগর প্রশাসন ১৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রকৌশলী মোতায়েন করেছে।

শুক্রবার মিয়ানমারে সৃষ্ট শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রভাবে ব্যাংককে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এর ফলে বহু মানুষ আতঙ্কে খোলা স্থানে আশ্রয় নেন। শুক্রবার রাতে ৩০০-এর বেশি মানুষ ব্যাংককের পার্কগুলোতে রাত কাটিয়েছেন। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব পার্ক আরও এক রাত খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর।

থাইল্যান্ডে নিহত ১০, নিখোঁজ শতাধিক

শক্তিশালী ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৬ জন এবং ১০১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ব্যাংককের উপ-গভর্নর তাভিদা কামোলভেজ জানিয়েছেন, নিখোঁজরা মূলত তিনটি নির্মাণস্থলের কর্মী, যার মধ্যে ধসে পড়া একটি ৩০ তলা সরকারি ভবন রয়েছে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে মিয়ানমারের মান্দালয়ে ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। এর তীব্র প্রভাব অনুভূত হয় প্রতিবেশী থাইল্যান্ড, চীন ও ভিয়েতনামেও।

থাইল্যান্ডে এ ভূমিকম্পে ব্যাংককসহ ১০টি প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সামুত সাখোন, চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, ফ্রায়ে, মায়ে হং সন, লাম্পাং, চাই নাট, লাম্পুন, লোই এবং কামফায়েং পেত প্রদেশ উল্লেখযোগ্য বলে জানিয়েছেন দেশটির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিভাগের মহাপরিচালক পাসাকর্ন বুনিয়ালাক।

থাইল্যান্ডের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, শনিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মায়ে হং সন প্রদেশে আরও দুটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রথমটি ছিল ৪ দশমিক ১ মাত্রার, যা রাত ১১টা ২১ মিনিটে পাই জেলায় পাঁচ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। দ্বিতীয়টি ছিল ২ মাত্রার, যা ভোর ৩টা ২৪ মিনিটে একই এলাকায় হয়। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

অব্যাহত থাকতে পারে আফটারশক

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, মিয়ানমারে শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পের আফটারশক আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত থাইল্যান্ডে অনুভূত হতে পারে।

এশিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক এবং থাইল্যান্ডের জাতীয় ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. পেননং ওয়ারনিচাই সতর্ক করেছেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে ভবনগুলোতে কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি বলেন, ভবনগুলোর কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো ক্ষতির লক্ষণ দেখা যায়, তবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী ঘোষণা করা উচিত।

ড. পেননং আরও বলেন, ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের সাগাইং ফল্ট লাইনে সংঘটিত হয়েছে, যা ভারত ও সুন্ডা টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। তবে এটি এমন মাত্রার ছিল যা ভূমিকম্প-সহনশীল ভবনগুলোর জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।

এ ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ জানান, ঝুঁকি পুরোপুরি শেষ হয়নি, তবে বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আফটারশকের মাত্রা কমে আসবে।


ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সোমবার (৩১ মার্চ) ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।
এছাড়া সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেহবাজ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশে আসছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উভয় নেতার এই ফোনালাপে বাংলাদেশের খ্যাতনামা ও কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে একথা জানিয়েছেন শেহবাজ শরিফ।
এক্সে দেওয়া ওই পোস্টে পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে টেলিফোনে মনোরম কথোপকথন হয়েছে। ফোনালাপে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি এবং পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি।
শেহবাজ শরিফ আরও বলেন, আগামী ২২ এপ্রিল একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী/পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে তার সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের জন্য আমার আন্তরিক আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেছি এবং কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লাকে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি সাংস্কৃতিক দলকে পাকিস্তানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল।


মিয়ানমারে জুমার নামাজের সময় ভূমিকম্প, নিহত অন্তত ৭০০ মুসল্লি

ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মিয়ানমার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে সাত শতাধিক মুসল্লি রয়েছেন। সোমবার (৩১ মার্চ) দেশটির একটি মুসলিম সংস্থা এমন তথ্য জানিয়েছে।
গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে রমজানের শেষ দিকে জুমাতুল বিদার দিনে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তখন জুমার নামাজ আদায়ে মসজিদে ছিলেন বেশিরভাগ মুসল্লি।
জান্তা সরকার বলছে, এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০’র বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তবে সেসব মুসল্লিদের নিহতের তথ্য সরকারি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার নয়।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতিতে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে বেশ কিছু মসজিদ ভেঙে পড়ছে। লোকজন ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ জায়গায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
মিয়ানমারের বসন্ত বিপ্লবের মুসলিম নেটওয়ার্কের পরিচালনা কমিটির সদস্য টুন কিই বলেন, মান্দালয়ের এই ভূমিকম্পে ৬০টির বেশি মসজিদ ধ্বংস কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় আগে থেকেই ঝুঁকিতে ছিল বলে জানান তিনি।
জান্তা সরকারের মুখপাত্র জো মিন তুন জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ১ হাজার ৭০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩ হাজার ৪০০ জন। এখনও আরও ৩ শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
ভূমিকম্পে অসংখ্য ভবন মাটিতে মিশে গেছে, রাস্তাঘাট ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে, সেতুগুলো ধসে পড়েছে। দেশটির সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন পড়েছে।
ব্রিট্শি দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর বলছে, উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য স্থানীয়দের কাছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও হাতিয়ার নেই।
রেডক্রসের কর্মকর্তাদের দাবি, গত ১০০ বছরে এই মাত্রার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি এশিয়া।
উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, ‘যাদের সহায়তা দরকার, তারা আমাদের ডাকছেন। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে তাদের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারছি না।’
এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। দেশটির একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভেঙে পড়ায় এই প্রাণহানি ঘটেছে।

সূত্র: ইউএনবি


সৌদিতে চাঁদ দেখা গেছে, দেশটিতে ঈদ কাল

তাবুকের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। সৌদির শেষ স্থান যেখানে সূর্য অস্ত যায়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সৌদি আরবে ১৪৪৬ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশটিতে আগামীকাল রোববার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। দুই মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইনসাইড দ্য হারামাইন আজ শনিবার (২৯ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে। চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার দেশটির মানুষ ২৯টি রোজা রাখলেন।

সৌদি আরবের বড় দুই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সুদাইর ও তুমাইরে সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের চাঁদের অনুসন্ধান শুরু হয়। এর আগে সুদাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সৌদির প্রধান জ্যোতির্বিদ আব্দুল্লাহ আল-খুদাইরি বলেন, “সুদাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে আজ ৬টা ১২ মিনিটে সূর্যাস্ত যাবে। এবং অর্ধচন্দ্র সূর্যাস্তের ৮ মিনিট পর অস্ত যাবে। দৃশ্যমানতার সময় দীর্ঘ অথবা ছোট হোক, যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে তাহলে চাঁদ দেখা সম্ভব।” পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ আল-আমার নামে অপর এক জ্যোতির্বিদ বলেন, “আমি প্রত্যাশা করছি সুদাইরে আজ আমরা চাঁদ দেখতে পাব।” শেষ পর্যন্ত তাদের ধারণা ঠিক হয়।

তাবুকের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। সৌদির শেষ স্থান যেখানে সূর্য অস্ত যায়।

এরআগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছিল, ২৯ মার্চ আরব ও ইসলামিক বিশ্বে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ ওইদিন সূর্যাস্তের আগে চাঁদ অস্ত যাবে এবং চাঁদ সূর্যের সংযোগ ঘটবে সূর্যাস্তের পর।

বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় তুমাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তোলা ছবি। ওই সময় সেখানকার আকাশে মেঘাচ্ছন্ন ছিল।

খালি চোখে, টেলিস্কোপে অথবা অন্য কোনো উপায়ে আগামী ২৯ মার্চ শাওয়াল বা ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা ‘সম্ভব নয়’ বলেও দাবি করেছিল সংস্থাটি।

এদিকে যেসব দেশ শুধুমাত্র চাঁদ দেখে ঈদ ও রমজানের তারিখ নির্ধারণ করে সেসব দেশে এবারের রমজান মাসটি ৩০ দিনের হতে যাচ্ছে। যার অর্থ মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি এবং ইসলামিক বিশ্বে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হবে। —গত ২০ মার্চ এমনই তথ্য জানিয়েছিল আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র। কিন্তু তাদের এসব ধারণা আংশিক ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ সৌদিতে ২৯তম দিনেই চাঁদ দেখা গেলো। তবে সৌদির প্রতিবেশী ওমানের মুসল্লিরা ৩০ রোজা পূর্ণ করবেন। ফলে দেশটিতে আগামী সোমবার ঈদের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।


হোয়াইট হাউসে মুসলিমদের সঙ্গে ট্রাম্পের ইফতার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পবিত্র রমজানে মুসলিমদের জন্য হোয়াইট হাউসে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইফতারের নৈশভোজে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার প্রশাসন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে। খবর আল জাজিরার।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেন, আমার প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস কূটনৈতিক কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তির ওপর ভিত্তি করেই এমনটা হয়েছে। কিন্তু সবাই বলেছিল এটা অসম্ভব হবে। তিনি ইসরায়েল এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এখন আমরা সেগুলো পূরণ করা শুরু করতে যাচ্ছি। রেকর্ড সংখ্যায় তাকে ভোট দেওয়ার জন্য আমেরিকান মুসলিমদের ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প এবং বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাদের পাশে থাকব।

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প গাজাকে অবকাশকেন্দ্রে রূপান্তরের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই অবরুদ্ধ উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের স্থানচ্যুতির জন্য বারবার চাপ দিয়ে দেশে এবং বিদেশে মুসলিমদের ক্ষুব্ধ করেছেন। তবে ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবকে জাতিগত নিধন হিসেবে দেখছে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা চলছেই। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (আনরোয়া) জানিয়েছে, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কোনো সহায়তা প্রবেশ করেনি। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে দিয়েছে যে, গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির মুখোমুখি হচ্ছে।


২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় শিশুর মরদেহ নিয়ে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ১৪:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা চলছেই। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। খবর আল জাজিরার।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (আনরোয়া) জানিয়েছে, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কোনো সহায়তা প্রবেশ করেনি। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে দিয়েছে যে, গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির মুখোমুখি হচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রতি ৪৫ মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল কমপক্ষে ১৭ হাজার ৪০০ শিশুকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৬০০ শিশুকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে চাপা পড়ে আছে, যাদের বেশিরভাগকেই মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৩ লাখই শিশু। গত ১৭ মাস ধরে ইসরায়েলি হামলার কারণে তাদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের স্কুল ধ্বংস করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোও ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ২০৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও এক লাখ ১৩ হাজার ৯১০ জন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।

যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মোট নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। কারণ যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন তারা আর বেঁচে নেই বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজা থেকে তাদের এক-তৃতীয়াংশ কর্মীকে সরিয়ে আনা হবে। কোনোভাবেই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে কর্মীদের তারা গাজায় রাখতে চাইছেন না।

গাজায় মজুদ আছে মাত্র ১৪ দিনের খাদ্য!

ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে গাজাবাসী। উপত্যকাটিতে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। যার ফলে খাদ্য সংকটে রয়েছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। আর মাত্র দুই সপ্তাহের খাদ্য মজুত রয়েছে উপত্যকাটিতে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় মাত্র দুই সপ্তাহের খাবার অবশিষ্ট রয়েছে, সেখানে লাখ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে।

রোমভিত্তিক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডব্লিউএফপির গাজায় প্রায় ৫ হাজার ৭০০ টন খাদ্য অবশিষ্ট রয়েছে- যা সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যথেষ্ট।

জাতিসংঘ গত বুধবার জানিয়েছে, নতুন করে ইসরাইলি অভিযানের ফলে মাত্র সাত দিনে ১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর ইসরায়েল গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দেওয়ার পরে সরবরাহ হ্রাসের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

ডব্লিউএফপি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় নতুন খাদ্য সরবরাহ আনতে অক্ষম। সংস্থাটি বলছে, গাজার লাখ লাখ মানুষ আবারও তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে কারণ উপত্যকায় মানবিক খাদ্য মজুদ কমে যাচ্ছে এবং সাহায্যের জন্য সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।

ডব্লিউএফপি আরও বলছে, গাজায় সামরিক তৎপরতার সম্প্রসারণ খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে এবং প্রতিদিন কর্মীদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।


শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল মিয়ানমার-থাইল্যান্ড

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে ঘরবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে মৃতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প, যার কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে। এর তীব্র প্রভাব অনুভূত হয় প্রতিবেশী বাংলাদেশ, চীন এবং থাইল্যান্ডে। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ব্যাংককে একটি বহুতল ভবন ধসে ৪৩ জন আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে থাই পিবিএস।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, প্রথম ভূমিকম্পের ১২ মিনিট পর মিয়ানমারে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। এদিন তীব্র কম্পনে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের চাতুচাক জেলায় নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন ধসে পড়ে। এতে একজন নিহত হয়েছেন, আরও অন্তত ৪৩ জন ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন।

মিয়ানমারের টাউংগু শহরের একটি মঠ ধসে পাঁচজন বাস্তুচ্যুত শিশু নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইলেভেন মিডিয়া গ্রুপ। এ ছাড়া মান্দালয় অঞ্চলে শুক্রবারের জুমার নামাজের সময় শ্বে ফো শিং মসজিদ ধসে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে খিত থিত মিডিয়া।

এক উদ্ধারকর্মী বলেন, আমরা নামাজ পড়ছিলাম, তখনই ভবনটি ধসে পড়ে। অন্তত তিনটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। অনেকে আটকা পড়েছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন মারা গেছেন, তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পে ঐতিহাসিক মান্দালয় অঞ্চলের আভা সেতু ধসে পড়েছে এবং মান্দালয় প্রাসাদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি জানায়, সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, উত্তর-পূর্ব শান রাজ্য, নেপিদো কাউন্সিল এলাকা এবং বাগো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

থাইল্যান্ডও ব্যাংকককে ‘জরুরি এলাকা’ ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছে থাই পিবিএস নিউজ। ভূমিকম্পের কারণে থাইল্যান্ডের স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই এনকোয়ারার।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোর একটি প্রধান হাসপাতালে বহু আহত ব্যক্তিকে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ভূমিকম্পের ফলে মোবাইল নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভবন ও সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে।

মিয়ানমারের ৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি : শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর মিয়ানমারের ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির তদন্ত করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ সমন্বয় শুরু করবেন।

মিয়ানমারে ধসে পড়েছে সেতু-ভবন, রাস্তায় ফাটল : মিয়ানমারের সাগাইং সেতু ধসে পড়েছে। এ ছাড়া মান্দালয়, নেপিদো, পিনমানা, অউংবান ও ইনলে অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভবন ভেঙে পড়েছে।

ইয়াঙ্গুন-মান্দালয় এক্সপ্রেসওয়ের ওপর অবস্থিত দোথেতাওয়াদি সেতুও ভেঙে গেছে। এ ছাড়া ৩৬২ মাইল দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের বেশ কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে কিছু রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

১২ মিনিট পর দ্বিতীয় ভূমিকম্প : প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১২ মিনিট পরই আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে মিয়ানমারে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪, যা প্রথমটির তুলনায় কম। এর কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইংয়ের দক্ষিণে ১৮ কিলোমিটার দূরে।

তথ্য পাওয়া কঠিন কেন? : ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার সামরিক জান্তার শাসনে রয়েছে, যা তথ্য প্রবাহে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। দেশটির সরকার প্রায় সব ধরনের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে, যার মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, প্রিন্ট ও অনলাইন মাধ্যম অন্তর্ভুক্ত। ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।

মিয়ানমারে ভূমিকম্প : মিয়ানমারে তুলনামূলকভাবে ভূমিকম্পের ঘটনা বেশি ঘটে, বিশেষ করে থাইল্যান্ডের তুলনায়। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সাগাইং ফল্ট লাইনের আশপাশে ৭ মাত্রার ছয়টি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। থাইল্যান্ড ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা নয় এবং সেখানে যেসব ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তার বেশিরভাগই মিয়ানমার থেকে ছড়িয়ে পড়ে।

হাসপাতালে শত শত আহত মানুষ, হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা : মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিডোতে অবস্থিত ১,০০০ শয্যার হাসপাতালে আহত শত শত রোগী ভিড় করছেন। কেউ কেউ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, কারও শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।

চিকিৎসকরা জানান, ভূমিকম্পে রাজধানীর বড় হাসপাতালটি নিজেই কেঁপে ওঠে। প্রায় আধা মিনিট ধরে মাটি প্রচণ্ডভাবে কাঁপতে থাকে। হাসপাতালের আশেপাশে রাস্তাঘাট ভেঙে যায়। জরুরি বিভাগটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত আহত মানুষ আসছে। কিন্তু এখানকার জরুরি ভবনটি অনেকটা ভেঙে পড়েছে।

ধসে পড়ল ৩০ তলা ভবন : থাইল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে ৩০ তলা নির্মাণাধীন একটি ভবন। এতে অন্তত ৪৩ জন শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন। ভয়ংকর সেই মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। ভাইরাল একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভূমিকম্পের তীব্রতায় কাঁপছে আকাশছোঁয়া ভবনটি। কিছুক্ষণ পরেই আচমকা ধসে পড়ে সেটি, ধুলায় ছেয়ে যায় গোটা এলাকা। এ সময় আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন আশপাশে থাকা মানুষজন।

এদিন তীব্র কম্পনে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের চাতুচাক জেলায় নির্মাণাধীন ওই ভবনটি ধসে পড়ে। এতে অন্তত একজন নিহত এবং আরও ৪৩ জন ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাংককে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ভূমিকম্পের কারণে থাইল্যান্ডের স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই এনকোয়ারার।


তুরস্কে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত

সরকার পতনের ডাক শিক্ষার্থীদের
ইস্তাম্বুলের রাজপথে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৫ ১৯:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কে জনতার বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ চলছে। গতকালও বিক্ষোভ করেন তুরস্কের হাজার হাজার মানুষ। এ নিয়ে বিক্ষোভ অষ্টম দিনে গড়াল। এ কয় দিনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ দেড় হাজার মানুষকে আটক করেছে এরদোয়ান সরকার। এদিকে, রাজপথ থেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের কোথাও জায়গা হবে না। বিক্ষোভ দমনে পুলিশের বলপ্রয়োগ ও ব্যাপক ধরপাকড়ের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও অধিকার সংগঠনগুলো।

এ ছাড়া বিক্ষোভের সংবাদ কভারেজ করায় সাতজন সাংবাদিককে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গত মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ করেছে। এ ছাড়া আগামী শনিবার শহরে বড় বিক্ষোভ মিছিল করার পরিকল্পনা করেছে দলটি।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের কোথাও জায়গা হবে না। বিক্ষোভের সূচনা হয় গত সপ্তাহে বুধবার। ওই দিন ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হলে তার সমর্থকেরা রাজপথে নেমে এসে আন্দোলন শুরু করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইমামোগলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতিসংঘ ও অধিকার সংগঠনগুলো বিক্ষোভ দমনে পুলিশের শক্তিপ্রয়োগ ও ব্যাপক ধড়পাকড়ের নিন্দা জানিয়েছে।

মেয়র একরেম ইমামোগলু দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এ দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজধানী আঙ্কারায় তরুণদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, দেশ খুবই নাজুক সময় পার করছে। তিনি সবাইকে ধৈর্য আর কাণ্ডজ্ঞান বিবেচনা করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। এরদোয়ান বলেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, তাদের কোথাও জায়গা হবে না। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা করুণ পরিণতির পথ বেছে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে মিছিলে শামিল হন। তারা সরকার পতনের দাবিতে স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের হাতে থাকা ব্যানার ও পতাকায় এরদোয়ান সরকারের পতনসংক্রান্ত দাবির কথা লেখা ছিল।

শিক্ষার্থীদের মিছিল যাতে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে না ওঠে, সে জন্য ইস্তাম্বুলে বিপুল পরিমাণ দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহর কর্তৃপক্ষ সেখানে যেকোনো বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। মূলত উসকানি প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রক্ষার স্বার্থে বিক্ষোভ প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বেশ কিছু সড়ক। এ পরিস্থিতিতে পুলিশের কাছে পরিচয় আড়াল রাখতে মুখে মাস্ক পরে বহু শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নেন।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে রাজধানী আঙ্কারা, বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলছে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জানান, ১৯ মার্চের পর থেকে ‘বেআইনি’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

এএফপি’র সাংবাদিককে মুক্তি দিল তুরস্কের আদালত

ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি’র সাংবাদিক ইয়াসিন আকগুলকে মুক্তি দিয়েছে তুরস্কের একটি আদালত। এই সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের খবর প্রচারের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়াসিনকে আদালত মুক্তি দিয়ে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রোববার দুর্নীতির অভিযোগে ইমামোগলুর গ্রেপ্তার তুরস্কে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ওই বিক্ষোভের সময় দেশব্যাপী ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছে। মঙ্গলবার একটি আদালত সাতজন সাংবাদিককে বিচার চলাকালীন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তাদের মধ্যে এএফপির ইয়াসিন আকগুলও ছিলেন।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ‘অবৈধ সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ’ এবং ‘বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সতর্কতা উপেক্ষা করে সমাবেশ থেকে বের হয়ে যেতে অস্বীকৃতি’ জানানো। রয়টার্সের দেখা এক আদালতের নথিতে এসব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।

তুরস্কের এনটিভি সম্প্রচার সংস্থা জানিয়েছে, আদালত স্থানীয় অন্য ছয়জন সাংবাদিককেও মুক্তি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ান এই বিক্ষোভকে ‘নাটক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

অবশ্য বিরোধী দল সিএইচপি (সিএইচপি) বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিরোধী দল, পশ্চিমা দেশগুলো এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এর মাধ্যমে তাকে আসন্ন নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

তবে সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আদালত স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং বিচার বিভাগে সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ নেই।

বিষয়:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মার্চ, ২০২৫ ২১:৪৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এর মধ্যে সর্বশেষ হামলাগুলো সোমবার গভীর রাতে এবং মঙ্গলবার ভোরে চালানো হয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইরনার।

প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে একটি তাঁবুতে হামলা চালিয়ে তিন শিশু এবং তাদের বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছে বলে নাসের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৫ মাসের অব্যাহত আগ্রাসনের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করে। আল-জাজিরা জানিয়েছে, এতে গত ৭ দিনে প্রায় ৭৫০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২০০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ২৭০ জনের বেশি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৩ হাজার জনের বেশি আহত হয়েছেন। তবে কয়েকটি অধিকার সংস্থার মতে, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজারেরও বেশি।

প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনের ফলে গাজার ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার বেশির ভাগই ইতোমধ্যেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমনকি চলতি মাসের শুরুতে বর্বর ইসরায়েল সব ধরনের সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর গাজাবাসী খাদ্য ও পানির ক্রমবর্ধমান সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।

এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার গাজার উত্তরের সীমান্তবর্তী শহরগুলোর বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে। জানিয়েছে, এসব এলাকা থেকে নাকি ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।

জোরপূর্বক উচ্ছেদের শিকার ফিলিস্তিনি শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজা শহরের জাবালিয়া, বেইত লাহিয়া, বেইত হানুন এবং শেজাইয়া। দক্ষিণে খান ইউনিস এবং রাফাহ এলাকার জন্যও আদেশ জারি করা হয়েছে।

গাজার ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরগুলোর মধ্যে বৃহত্তম জাবালিয়ার বাসিন্দাদের উদ্দেশে দেওয়া নির্দেশে দখলদার সেনাবাহিনী বলেছে, ‘আপনাদের নিরাপত্তার জন্য সবাইকে অবিলম্বে দক্ষিণের পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে হবে’। এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘গাজা উপত্যকায় কোনো নিরাপদ এলাকা নেই।’

এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নতুন করে আক্রমণের লক্ষ্য হামাসকে গাজায় তাদের আটকে থাকা বাকি ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জন এখনো জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে গত ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী হামাস জানিয়েছে, তারা কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য একটি নতুন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করছে।

তবে, এখনো পর্যন্ত এতে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলেও উল্লেখ করেছে হামাসের কিছু সূত্র। কারণ, মিশরের দেওয়া নতুন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ও হামাস সম্মতি দিলেও ইসরায়েল এখনো তাতে সাড়া দেয়নি।

গাজায় আন্তর্জাতিক কর্মী কমাচ্ছে জাতিসংঘ

গাজায় ইসরায়েলের হামলার মুখে আন্তর্জাতিক কর্মীদের সংখ্যা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলি সেনাদের সাম্প্রতিক হামলায় গাজায় শত শত ফিলিস্তিনির সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মীরাও।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১০০ আন্তর্জাতিক কর্মীর মধ্যে প্রায় ৩০ জন এ সপ্তাহে গাজা ছেড়ে যাবে। তবে দুজারিক স্বীকার করেন যে, এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন গাজায় মানবিক ত্রাণের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগও বেড়েছে। দুজারিক বলেন, এই ‘সাময়িক পদক্ষেপ’ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের নেওয়া ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’, যা নিরাপত্তা ও কার্যক্রমগত কারণে নেওয়া হয়েছে।

মুখপাত্র এও নিশ্চিত করেছেন যে, গাজার কেন্দ্রস্থল দেইর আল-বালাহ এলাকায় গত ১৯ মার্চ জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে হামলার জন্য ইসরায়েলের ট্যাংক দায়ী। ওই হামলায় একজন বুলগেরীয় জাতিসংঘ কর্মী নিহত এবং ছয়জন বিদেশি কর্মী গুরুতর আহত হন।

জাতিসংঘ এই প্রথম তাদের কম্পাউন্ডে হামলার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রকাশ্যে জন্য দায়ী করল। যদিও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বরাবরই হামলার ঘটনায় তাদের দায় অস্বীকার করে এসেছে। ইসরায়েল মাত্র দুই মাসের মাথায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার পর জাতিসংঘ ওই বিবৃতি দিল।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক গ্যাব্রিয়েল এলিজোন্ডো বলেন, কর্মী সংখ্যা হ্রাস করাটা কেবল আন্তর্জাতিক কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। গাজায় এখনও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জাতিসংঘ কর্মী আছেন, যাদের মধ্যে শত শত কর্মী ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন।

গ্যাব্রিয়াল জানান, গাজায় জাতিসংঘের কর্মী সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি, যাদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি। তারা চিকিৎসক, নার্স, ড্রাইভার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কাজে জড়িত।

গত ১৫ মাসে জাতিসংঘ কর্মীদের ২৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। কিন্তু এখন জাতিসংঘ মহাসচিব বলছেন, পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে, গাজায় জাতিসংঘ নিযুক্ত ১০০ আন্তর্জাতিক কর্মীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা প্রায় ৩০ জন আন্তর্জাতিক কর্মী কমাতে হবে। তারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গাজা ছেড়ে যাবেন, বলেছেন আল জাজিরা প্রতিবেদক গ্যাব্রিয়েল।

এদিকে, জাতিসংঘের মুখপাত্র দুজারিক বলেন, গত ১৯ মার্চ জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে ইসরায়েলি ট্যাংক হামলার পূর্ণ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন মহাসচিব গুতেরেস।


যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাটগ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার ঘটনায় গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলাপকালে গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। যাদের মধ্যে ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচারক তুলসি গ্যাবার্ড রয়েছেন।

হামলা পরিকল্পনা নিয়ে বাণিজ্যিক চ্যাটঅ্যাপ সিগনালে কথা বলছিলেন তারা। তখন ভুল করে দেশটির একজন বিখ্যাত সাংবাদিককেও গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সিনেটে সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, ‘বহু বছরের মধ্যে—আমি যতদূর জানি—এটা মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের সবচেয়ে মারাত্মক লঙ্ঘনের একটি।’

স্পর্শকাতর তথ্য নিয়ে আলাপের জন্য সিগনাল ব্যবহারে মার্কিন সরকারের অনুমোদন নেই। সেদিনের এই আলোচনায় ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার, চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফও ছিলেন।

গেল সোমবার দ্য আটলান্টিক সাময়িকীতে এক লেখায় সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানতে পারেন যে ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামে সিগনাল আলাপে তাকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার ১৮ সদস্য এই গ্রুপচ্যাটে ছিলেন।

জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, সিআইয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বর্তমান আভিযানিক বিস্তারিত তথ্যসহ স্পর্শকাতর উপকরণ প্রতিবেদনে নিজের বিবরণ থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রিয়ান হিউগেস এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটলান্টিক সাময়িকীকে তিনি বলেন, ‘একটি বার্তা প্রবাহ থেকে এমনটি ঘটেছে। কীভাবে অসাবধানতাবশত নম্বরটি যুক্ত হয়েছে, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।’

তবে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর আমি আটলান্টিক সাময়িকীর খুব একজন বড় ভক্ত না।’

পেট হেগসেথ বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে বার্তা দেয়নি। এ বিষয়ে আমি এতটুকুই বলতে পারবো।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সফর শেষে সোমবার হাওয়াইতে অবতরণ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

জবাবে জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, ‘হেগসেথ সত্যিকথা বলেননি। তিনি মিথ্যা বলেছেন। হেগসেথ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিলেন।’

পরবর্তীতে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্ডটসসহ জাতীয় নিরাপত্তা টিমের ওপর সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস আছে ট্রাম্পের।


চীন-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে কেউ জিতবে না: লি কিয়াং

লি কিয়াং
আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ না করে শান্তি স্থাপন করলে উভয় দেশই লাভবান হবে, অন্যথায় তা উভয়েই জন্য ক্ষতির কারণ হবে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে কেউ জিতবে না। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এ মন্তব্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান স্টিভ ডেইন্স এবং বেইজিংয়ে থাকা মার্কিন ব্যবসায়ীদের সামনে রোববার তিনি এ কথা বলেছেন। বার্তাসংস্থা আনাদুলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর জবাবে পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণাও দিয়েছে চীন। যা একপ্রকার বাণিজ্য যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। এমন অবস্থায় দুই পরাশক্তির শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সন্ধিক্ষণে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন চীনা প্রধানমন্ত্রী।

লি কিয়াং বলেছেন, ‘চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র যদি শান্তি স্থাপন করে, তাহলে আমরা উভয়েই লাভবান হব; যদি তারা যুদ্ধ করে, তাহলে আমরা উভয়েই হেরে যাব। সংঘর্ষের পরিবর্তে আমাদের সংলাপ এবং উইন-উইন সহযোগিতার মাধ্যমে লড়াই করা উচিত। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের সুস্থ, স্থিতিশীল এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করবে চীন এবং আমেরিকা।’

চীনের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, চীন সর্বদা ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের কোম্পানিগুলোকে (চীনা ভূখণ্ডে) স্বাগত জানায়’ এবং ‘তাদের বৈধ দাবিগুলো সক্রিয়ভাবে পূরণ করার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সমানভাবে বিবেচনা এবং একটি সুস্থ ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তুলবে চীন।’

মার্কিন সিনেটর স্টিভ ডেইন্স বলেন, আমরা যখন চীনের দিকে তাকাই, তখন দেখি- ১৯৯১ সালে চীনের অর্থনীতি প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বা তারও কিছু বেশি ছিল। গত ৩৪ বছরে আমরা চীনের বৃদ্ধি এবং পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ডেইন্সও অদূর ভবিষ্যতে উভয় পক্ষের মধ্যে আরও উচ্চ-স্তরের সংলাপের আশা প্রকাশ করেছেন। মার্কিন এই সিনেটর এর আগে আমেরিকান ব্যবসায়িক নির্বাহীদের সাথে বেইজিংয়ে বার্ষিক চীন উন্নয়ন ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছিলেন।

চীনা অর্থনীতির সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ব্যবসায়ীদের দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তাদের অনেকেই চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সাথে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী লি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য চীনের বাজারে প্রবেশের সুযোগ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এছাড়া বহিরাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লি কিয়াং বলেন, সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত ধাক্কার জন্য প্রস্তুত চীন।


ফিলিস্তিনিদের বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েল

পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার
গাজায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ময়লা পানি পান করছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনিদের বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েলি সরকার। গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করতে হামলার পাশাপাশি পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে গাজার পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব পানি দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, দখলদার শক্তি (ইসরায়েল) আমাদের জনগণের দুর্ভোগ, বাস্তুচ্যুতি এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করার জন্য পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে মৌলিক মানবিক পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির পাশাপাশি পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মাহমুদ আব্বাস বলেন, বিশেষ করে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে এবং মানবিক সহায়তা আটকে রেখে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজলিউশন লঙ্ঘন করছে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজার পানির সংকট এতটাই ভয়াবহ যে হাজারো শিশু নিরাপদ পানির অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেকেই দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, গাজার শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি পাওয়া এক কঠিন বাস্তবতা। তারা তৃষ্ণায় মারা যাচ্ছে, অথচ বিশ্বের অন্য শিশুদের মতো সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও থাকা উচিত।

মাহমুদ আব্বাস আরও বলেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি থেকে উৎখাত করতে পরিকল্পিতভাবে পানি সংকট তৈরি করেছে। এটি তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ। তারা ভূগর্ভস্থ এবং ভূপৃষ্ঠের পানির সব উৎস নিয়ন্ত্রণ করছে, যাতে ফিলিস্তিনিরা বাস করতে না পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। টানা ১৫ মাসের এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, দুই মাস যেতে না যেতেই ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

গত মঙ্গলবার নতুন করে বিমান হামলা চালিয়ে ৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছে আরও এক হাজারের বেশি মানুষ। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি ভেস্তে গেছে।

গাজায় ক্রমবর্ধমান পানি সংকট এবং ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীকে বুঝতে হবে, ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাই, তারা যেন গাজার জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং অবিলম্বে গাজার মানবিক সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের ওপর কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক চাপ পরিলক্ষিত হয়নি।

গাজায় আরও এক হামাস নেতা নিহত

গাজার নাসের হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল বারহুমসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই আল-মাওয়াসিতে ইসরায়েলি বাহিনী একটি তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়ে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সালাহ আল-বারদাউইলকে হত্যা করেছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হন। স্থানীয় সময় রোববার সকালে এক হামাস কর্মকর্তা বিবিসিকে এ তথ্য জানান। স্থানীয়দের দাবি, ওই বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য বারদাউইল এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রায় দুই মাস যুদ্ধবিরতির পর মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তবে হামাস ইসরায়েলের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করেছে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল।

এদিকে ইয়েমেনেও সমানতালে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইয়েমেনের দুটি এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে রাজধানী সানার একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাও রয়েছে যেখানে কমপক্ষে একজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।

নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল

রাফাহ এবং খান ইউনিসের কয়েকটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ভয়ংকর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়াও চলে স্থল অভিযান, ইসরায়েল থেকে ছোড়া হয় কামানের গোলা। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।

হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ফলে চলমান গাজা যুদ্ধে এই পর্যন্ত ৫০ হাজার ২১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের সংখ্যায় এই মরদেহ দুটিও যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের হামলায় ৬১ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।


banner close