শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৫ বৈশাখ ১৪৩২

শস্যচুক্তিতে ফের সম্মতি রাশিয়ার, ইউক্রেন থেকে জাহাজ চলাচল শুরু

আপডেটেড
৩ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:৪৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৩ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:৪৪

ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি গতকাল বুধবার থেকে আবার শুরু হয়েছে। কৃষ্ণসাগর পথে নিরাপদে শস্য রপ্তানির চুক্তিতে রাশিয়া ফের অংশগ্রহণে সম্মতি দেয়ার পরই এ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যায়। বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট পরিস্থিতিতে এ খবর কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। খবর এএফপির।

জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত জুলাইয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন শস্যচুক্তি সম্পাদন করে। তবে মস্কো গত রোববার ওই চুক্তি থেকে সাময়িকভাবে নিজেদের সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়। তুরস্ক ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার এ বিষয়ে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান পার্লামেন্টে বলেন, কৃষ্ণসাগর পথে ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ চলাচল স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তুরস্ককে বলেছে, তারা ওই চুক্তিতে আবারও যোগ দিচ্ছে। কারণ, কিয়েভ ওই নৌপথ থেকে সামরিক উপস্থিতি পুরোপুরি সরিয়ে নেবে বলে ‘পর্যাপ্ত’ নিশ্চয়তা দিয়েছে।

চুক্তিটির আওতায় ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দর থেকে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যের ৯৭ লাখ মেট্রিক টন চালান এখন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হতে পারবে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি। সেখানে গত ফেব্রয়ারিতে রুশ সামরিক হামলা শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট বেড়ে যায়। কারণ, ইউক্রেন থেকে শস্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য পাচ্ছিল না। এ সমস্যা নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে তুরস্কের মধ্যস্থতায় মস্কো ও কিয়েভ গত জুলাইয়ে একটি চুক্তি সম্পাদন করে, যার আওতায় কোনো পক্ষই কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেন থেকে পণ্য রপ্তানিতে নিয়োজিত জাহাজগুলোয় হামলা করতে পারবে না। এরপর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া গত শনিবার ওই চুক্তি সাময়িক স্থগিত রেখে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। তারা কৃষ্ণসাগরে একটি রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করে ওই সিদ্ধান্ত নেয়। তবে কিয়েভ ওই হামলার অভিযোগ স্বীকার করেনি। তবে জাতিসংঘ ও তুরস্কের প্রচেষ্টায় ওই নৌপথে গত মঙ্গলবারও সীমিত পরিসরে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করেছে।

রাশিয়া ওই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিতেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন দেশে খাদ্যশস্য রপ্তানিতে রাশিয়ার বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে বক্তব্য দেন। অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শস্যচুক্তিতে পুনরায় তার দেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য কৃষ্ণসাগরের ওই নৌপথ থেকে ইউক্রেনের সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দাবি করেন।

পুতিন এ বিষয়ে সত্যিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছেন। আর জেলেনস্কি গত মঙ্গলবার বলেন, ওই সমুদ্রপথে দীর্ঘমেয়াদি ও নির্ভরযোগ্য সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

শস্যচুক্তি কার্যকর না হলে সারা বিশ্বেই তার প্রভাব পড়বে- এই বাস্তবতা বুঝতে পেরে বিশ্বনেতারা বিষয়টি মীমাংসার ‍উদ্যোগ নেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ গতকাল জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং রাশিয়ার ওই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার সাময়িক সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, মস্কোর এমন পদক্ষেপে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা ফের হুমকির মুখে পড়বে।

চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার আগে মস্কো ইউক্রেনের ড্রোন হামলার যে অভিযোগ করেছে, সেটিকে ইউক্রেন মিথ্যা অজুহাত বলে উড়িয়ে দিয়েছে। আর ক্রেমলিন আগে থেকেই বলে আসছে, ওই চুক্তির আওতায় যেসব পণ্যবাহী জাহাজ ইউক্রেন ছেড়ে যায় সেগুলোর বেশির ভাগের গন্তব্য ইউরোপে। দরিদ্র দেশগুলোয় যেখানে খাবারের চাহিদা অনেক বেশি, সেখানে জাহাজগুলো পৌঁছাচ্ছে না।

ইউক্রেন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংশ্লিষ্ট তথ্যউপাত্ত তুলে ধরেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ গত সোমবার বলেছেন, রাশিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া ওই নৌপথে পণ্যরপ্তানি অব্যাহত রাখাটা বিপজ্জনক হবে।


গাজায় নৃশংস হামলা অব্যাহত, এক দিনে নিহত ৩২

গাজায় একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে জিনিসপত্র উদ্ধার করছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এতে এক দিনে ৩২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজা আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে খারাপ মানবিক ব্যর্থতাগুলোর মধ্যে একটি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫১ হাজার ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে ইয়েমেনের হোদেইদাহ প্রদেশের রাস ইসা বন্দরকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে আরও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে দখলদার ইসরায়েল।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

একসঙ্গে নিহত হলেন পরিবারের ১০ সদস্য

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলের আলাদা দুই হামলায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা ১০ জনের মরদেহ এবং অনেক মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের পূর্ব দিকের বানি সুহাইলা এলাকায় ইসরায়েলি দখলদারি বাহিনীর হামলার শিকার হওয়া বারাকা পরিবারের বাড়ি ও আশপাশের বাড়িগুলো থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।’

বাসাল পরে ঘোষণা দিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলীয় গাজার তাল আল-জাতার এলাকায় আলাদা আরেকটি হামলা হয়েছে। দুটি বাড়িতে এ হামলার ঘটনায় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেনি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন বাসিন্দা নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল সিভিল ডিফেন্স। নিহতদের বেশির ভাগই বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা ছিলেন। ১৮ মার্চ থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকে তারা গাজায় বিমান হামলা জোরদার এবং স্থল অভিযান বিস্তৃত করেছে।

গাজায় ত্রাণ সংকট চরমে

দেইর আল-বালাহ থেকে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদক মোআথ আল-কালহুত জানান, সারা দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল ও গাজা শহরের পূর্বাংশে ঘরবাড়ি ধ্বংসের অভিযান চালিয়েছে। শুজাইয়া পাড়ায় অসংখ্য আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ পৌঁছানো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা তাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এদিকে, দেড় মাস ধরে ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশে ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ফলে উপত্যকায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো তাদের অসহনীয় কষ্টের কথা জানিয়েছেন। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের খাওয়াতে পারছেন না।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ইসরায়েলের এই অবরোধ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, হামাসের ওপর চাপ বজায় রাখতে এই অবরোধ চলবে এবং তা সরানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ না পৌঁছানোয় গাজায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমশ বাড়ছে। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শিশুরা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত মার্চ মাসেই অপুষ্টিতে ভোগা প্রায় ৩ হাজার ৭০০ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় অনেক বেশি। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটও দেখা দিয়েছে উপত্যকায়।

এ পরিস্থিতিতে গাজা দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জার্মানি। উত্তর কোরিয়াও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েল। এরপর থেকে উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

‘গাজা সফরকারীদের’ স্যোশাল মিডিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এরপর গাজায় গিয়েছিলেন, তাদের স্যোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

অভিবাসী কিংবা অভিবাসী নয় এমন সব ভিসাধারীরাই এ সোশ্যাল মিডিয়া যাচাই-বাছাইয়ে পড়বেন; এতে বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা যেমন থাকবেন তেমনি থাকবেন সেই ব্যক্তিরাও যারা সরকারি বা কূটনীতিক কাজে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে গিয়েছিলেন, তা তারা যত অল্প সময় বা ক্ষণই সেখানে থাকেন না কেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশনে এ সংক্রান্ত যে তারবার্তা পাঠিয়েছে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স তা দেখেছে।

বার্তায় বলা হয়, ’সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনায় যদি নিরাপত্তা-সম্পর্কিত কোনো সন্দেহজনক বা ক্ষতিকর তথ্য উঠে আসে, তাহলে ওই আবেদনকারীর একটি সিকিউরিটি অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন (এসএও) দাখিল করতে হবে।’ এসএও হচ্ছে এক ধরনের আন্তঃসংস্থাগত তদন্ত, যার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়-ভিসা আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না।

বিষয়:

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা ভারত সরকারের। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয় ভারত। এর এক সপ্তাহ পর অন্তর্বর্তী সরকার নির্দেশনা জারি করে ভারত থেকে স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে সুতা আমদানি করা যাবে না। আর স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধের বিষয়টির পরই টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার জানাল, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। এছাড়া ঢাকা বাণিজ্য বিষয়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির বদলে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা দিল্লি হয়ত নেবে না বলে সংবাদমাধ্যমটির শিরোনামে দাবি করা হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারত সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের জট কমাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। যদিও দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমে বেশ ফলাও করে বলা হয়েছিল, প্রধান উপদেষ্টা ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য করার পর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে তাদের সরকার।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ভারত সরকার আশ্বস্ত করেছে।

তারা আরও দাবি করেছে, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের আগেই গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ তিনটি বন্দর বন্ধ ও স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সুতা আমদানি সংক্রান্ত নির্দেশনা গত সপ্তাহে জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এছাড়া গত জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে বাংলাদেশ সতর্কতা বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটিও দুই দেশের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে বাংলাদেশে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে। এতে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনে মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া


গাজায় নতুন করে বাস্তুচ্যুত ৫ লাখ ফিলিস্তিনি

আরও ৩৫ জন নিহত
গাজা ছেড়ে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে গাজায় নতুন করে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বা বারবার ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে ইসরায়েল বুধবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকায় নতুন করে ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তার দেশ এখন ‘সুষ্পষ্ট নীতি’ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা হলো হামাসকে চাপে রাখার ‘হাতিয়ার’ হিসেবে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তাসামগ্রী প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রাখা।

ছয় সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো মানবিক সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ অবরোধ। সেই সঙ্গে গাজাবাসীর ওপর দমন-পীড়নও জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। সেই সঙ্গে ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। ওই দিন রাত থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ১৮ মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় নারী ও শিশু মিলিয়ে ৫১ হাজার ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩৫

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলার একটি ঢেউ গাজা অঞ্চলজুড়ে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একাধিক শিবিরে আঘাত করেছে। ফলে কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের আল-মাওয়াসি এলাকায় গত রাতভর চালানো এক হামলায় বেশ কয়েকটি তাঁবু ধ্বংস হয়। এর ফলে ১৬ জন নিহত হয়। তিনি এএফপিকে বলেন, খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারের আবাসস্থলে দুটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন শহীদ হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই হামলায় ২৩ জন আহত হয়েছেন।

মুখপাত্র বাসালের মতে, বাস্তুচ্যুত মানুষের অন্যান্য শিবিরে আরও দুটি হামলায় ৮ জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়। বাসাল আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহিয়ায় তাঁবুতে হামলায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে আল-মাওয়াসি এলাকার কাছে আরেকটি হামলায় তাঁবুতে বসবাসকারী এক বাবা এবং তার সন্তান নিহত হয়।

গাজা সীমান্তে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ

ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে এবার নিজেদের বাসিন্দাদের ওপর বোমাবর্ষণ করল ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে গিয়ে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইহুদি বসতির ওপরেই বোমাবর্ষণ করে বসল! বুধবার সকালের ওই ঘটনার পরেই অবশ্য সাফাই দিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সেনাবাহিনী (আইডিএফ)।

তাদের যুক্তি, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই গাজা সীমান্তের দু’কিলোমিটার দূরে ইতজাকের কাছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ওপর যুদ্ধবিমান থেকে কয়েকটি বোমা পড়ে গিয়েছে!

ঘটনাচক্রে, নেতানিয়াহুর গাজা সফরের দিনেই ঘটেছে এই বিপত্তি। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনও আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। কার্তজ বলেন, হামাসের উপর চাপ বাড়াতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সেই সঙ্গেই গাজায় মোতায়েন সেনাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বার্তা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নিশানা গাজা ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণ প্রান্ত রাফা। সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেখানে সেনা অভিযান শুরু হলে বহু ফিলিস্তিনির হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন প্রস্তাব এসেছে ইসরায়েলের তরফে। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস যদি ১০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে বিনিময়ে কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে তেলআবিব।

আল-আকসার ভাগাভাগি শুরু?

ইসরায়েল রেকর্ডসংখ্যক ১৮০ জন ইহুদি উপাসককে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এটিই এখন পর্যন্ত চত্বরে ইহুদি প্রবেশের সর্বোচ্চ নজির। বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় উপাসকরা প্রবেশ করে প্রার্থনা করে, যেখানে সাধারণত একসঙ্গে ৩০ জনের বেশি ইহুদিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না।

ঘটনাটিকে ‘ভীতিকর ও নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামিক ওয়াকফের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক আওনি বাজবাজ। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি যা আগে কখনো হয়নি।’

মুসলিম উপাসকদের ওই সময় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এর মাধ্যমে আল-আকসার ‘স্থিতাবস্থা’ পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই টেম্পল মাউন্টে (আল-আকসা চত্বর) প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের জন্য তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। এটি আন্তর্জাতিকভাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত, যদিও ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে এলাকা দখল করে রেখেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি উগ্রপন্থি নেতারা আল-আকসায় ইহুদি উপাসনার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতো বিভাজনের দিকেই পরিস্থিতি এগোচ্ছে।

বিষয়:

ভারতে সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিত

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। গত বুধবার থেকে এ আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এই আইনের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের শুনানির পর আজ বৃহস্পতিবার স্থগিত রাখার ঘোষণা আসে। এতে বলা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা কেন্দ্রকে মানতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, আজ বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ‘ওয়াকফ’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের।

এরপরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। তাই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’ এর আগে গত বুধবার এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

প্রসঙ্গত, ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াকফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। তবে এই আইন নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকরের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। মুর্শিদাবাদে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বালও।

তিনি গত বুধবার শুনানিতে বলেন, ‘এত দিন শুধু মুসলিমরাই ওয়াকফ বোর্ডে থাকতে পারতেন। এখন হিন্দুরাও পারবেন– এটা মৌলিক অধিকারের দখলদারি। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সীমাবদ্ধতা ছিল না। নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’ গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?’


ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে : ট্রাম্পের দূত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ বলেছেন, ওয়াশিংটনের সাথে চুক্তি করতে চাইলে তেহরানকে অবশ্যই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণরপে ‘বাতিল’ করতে হবে। আগামী শনিবার মাস্কাটে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরুর আগে এই দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

উইটকফের এই মন্তব্য তার আগের দিন করা মন্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ, উইটকফ আগের দিন বলেছিলেন, ইরান শক্তি উৎপাদনের জন্য যদি খুব কম পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে তাহলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি থাকবে না।

অথচ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উইটকফ বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য যেকোনো চূড়ান্ত ব্যবস্থার মধ্যে একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। যার অর্থ ইরানকে তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ এবং অস্ত্রায়ন কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে।

উইটকফ জানিয়েছেন, ‘বিশ্বের জন্য এটা অপরিহার্য যে আমরা একটি কঠিন, ন্যায্য চুক্তি করবো যা টেকসই হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে এটাই করতে বলেছেন।’

উইটকফের মতো একই কথা বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাতিল চায় বলে জানায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

এরআগে গত শনিবার ওমানে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রথম দফার আলোচনায় বসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।

এতে ইরানের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ নেতৃত্ব দেন। এই বিষয়ে তেহরান জানায়, প্রথম দফার আলোচনা ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে একটি গঠনমূলক পরিবেশে হয়েছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানকে হুমকি দিয়েছেন, যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সামরিক হামলা এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এরআগে ২০১৫ সালে ইরানের সাথে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর একটি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন।


ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল মালদ্বীপ

গাজায় গণহত্যা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর জেরে ইসরায়েলি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ। গতকাল মঙ্গলবার মালদ্বীপ সরকার এই ঘোষণা দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বিবৃতিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘ক্রমাগত নৃশংসতা এবং গণহত্যার’ কারণে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ‘দৃঢ় সংকল্পের’ অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। গতকাল মঙ্গলবার মালদ্বীপের সংসদে আইনটি পাস হয়। এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু আইনটির অনুমোদন দেন। এটি অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রেসিডেন্টের দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।

টাইমস অব ইসরায়েলের উদ্ধৃতি অনুসারে, মুইজ্জুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই অনুমোদন ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত অব্যাহত নৃশংসতা এবং গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় সরকারের দৃঢ় অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।’

স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, মালদ্বীপের সংসদে ভোটদানকারী সব সংসদ সদস্যের সর্বসম্মত ভোটে এই নিষেধাজ্ঞা পাস হয়েছে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ৭ এপ্রিল পাসপোর্ট ও অভিবাসন বিভাগকে এ সংক্রান্ত চিঠিটি দিয়েছি।’

ইসরায়েলিদের মালদ্বীপে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে গত বছরের জুনে জানিয়েছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে করণীয় ঠিক করতে কমিটি ঠিক করা হয়।

এর আগে, গত রোববার বাংলাদেশ সরকার তাদের নাগরিকদের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া’ শব্দ পুনরায় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তের কথা জানায়। যার ফলে কার্যকরভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েল ভ্রমণে যেতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫০,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া সত্ত্বেও, ১৮ মার্চ গাজায় আবার বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যার ফলে যুদ্ধবিরতি কার্যত শেষ হয়। গাজায় বিমান হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে নারী-শিশুসহ অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষ।


গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিল ইসরায়েল

নিহত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপ গাজার একটি এলাকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতার যৌথভাবে এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের কাছে পাঠিয়েছে। এখন গোষ্ঠীটি এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইজিপ্ট টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিসর ও কাতার যৌথভাবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠিয়েছে। কায়রোভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল কাহেরা নিউজ সূত্রে জানা গেছে, মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের কাছ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

একটি টেলিগ্রাম বার্তায় হামাস (ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্ট) জানায়, তারা প্রস্তাবটি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। প্রয়োজনীয় আলোচনা শেষে দ্রুত এর জবাব দেবে তারা।

হামাসের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তারা তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে, যে কোনো ভবিষ্যৎ চুক্তির মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, বন্দি বিনিময় চুক্তি, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্গঠনের কার্যকর প্রক্রিয়া এবং গাজা থেকে অন্যায় অবরোধ প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

আল আরাবিয়া নেটকে ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল তাদের নতুন প্রস্তাবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের শর্ত দিয়েছে যুদ্ধবিরতির জন্য। তবে হামাসের একজন নেতার বরাতে জানা গেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্তে তারা সব ইসরায়েলি বন্দিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। আন্দোলনের শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল গত শনিবার কায়রোতে পৌঁছায়। তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন।

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআত্তি জানিয়েছেন, তাদের সাম্প্রতিক প্রস্তাব গাজার পরিস্থিতি শান্ত করতে, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে এবং বন্দি-বিনিময় প্রক্রিয়া চালু করতে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রস্তাব সব পক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং ইতিবাচক আলোচনাও চলছে। তবে আজ যে প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেটি ইসরায়েলই মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পাঠিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ জন।

গাজায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজারে পৌঁছে গেছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৯৮৩ জনে পৌঁছেছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১১৮ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৭৪ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬১৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

বিশ্বের সব মুক্ত মানুষকে ইসরায়েলের অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এক হাজার ৮০০ ইরানি সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া কর্মী। এই আহ্বান জানিয়ে এক চিঠিতে তারা বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কোনো মন্দ কথার প্রচারণা ভালোবাসেন না, তবে কেহ অত্যাচারিত হয়ে থাকলে তার কথা স্বতন্ত্র; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী।’ সুরা নিসা-১৪৮

মিডিয়া কর্মীরা বলেন, একটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি ভবনের মাঝখানে আঘাত করে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ গোটা ভূ-স্বর্গ কেঁপে ওঠে। বাতাসে উড়তে দেখা যায় ধোঁয়া, ধুলো এবং আগুন। মুহূর্ত পরে ... কালো দাগ দৃশ্যের পুরো ফ্রেম পূর্ণ করে। এগুলো হলো বিন্দু বিন্দু যা অবিশ্বাস্য গতিতে আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয় এবং মাটিতে পড়ে যায়।

এই বিন্দুগুলো কী? বিস্ফোরণের শক্তি আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে কী বিচরণ করে রেখেছে? ... সময় গড়িয়ে যায় এবং আমরা বুঝতে পারি যে বিন্দুগুলো হলো হাত, দেহ, মাথা এবং অঙ্গ। মানুষগুলো সবচেয়ে জঘন্যতম প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্টতম প্রাণীর বর্বরতার আগুনে পুড়ছে। এই মানুষগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? সেই মানুষটি জ্বলছে এবং আকাশে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে ...। বিভীষিকাময় এই ঘটনা এমন একটি দেশের, যার নাম দুঃখের সঙ্গে জড়িত: সেটি হলো গাজা।


ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে মামলা

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:৩০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাতিল চেয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা হয়েছে। ট্রাম্পের আরোপিত নতুন শুল্কনীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত সোমবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা দায়ের করেছে একটি আইনি সহায়তা সংস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের বিষয়টি স্থগিত করার অনুরোধ জানানো হয়।

সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ‘লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার’ নামে ওই সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা পাঁচটি ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন আমদানিকারক সংস্থার পক্ষে এ মামলাটি করেছে। এসব সংস্থা এমন কিছু পণ্য আমদানি করে যেগুলোর ওপর ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপ করেছে।

মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে যে ব্যবসাগুলোর নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের একটি ওয়াইন ও স্পিরিট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, একটি স্পোর্টফিশিং যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও বিক্রয়কারী ই-কমার্স কোম্পানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করা রজন দিয়ে তৈরি ইউএসভিত্তিক পাইপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ভার্জিনিয়ার একটি ইলেকট্রনিক কিট এবং বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং ভেরমন্টের নারীদের সাইক্লিং পোশাক প্রস্তুতকারক একটি ব্র্যান্ড।

গত ২ এপ্রিল ঘোষণা হওয়া শুল্কের পাশাপাশি চীনের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে আরোপিত শুল্ককে ওই মামলায় চ্যালেঞ্জ করা হয়। লিবার্টি জাস্টিস সেন্টারের সিনিয়র আইনজীবী জেফ্রি শোয়াব এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো ব্যক্তিরই এমন কর আরোপের ক্ষমতা থাকা উচিত নয় যার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এমন বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হ্যারিসন ফিল্ডস এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র হওয়ায় বেশ কিছু বিরল খনিজ পদার্থ ও চুম্বক দেশটিতে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে চীন। পেন্টাগন এবং প্রতিরক্ষা ঠিকাদাররা চীনে খনন বা প্রক্রিয়াজাত করা চুম্বক এবং বিরল মাটির খনিজ পদার্থের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ফলে চীনের এমন পদক্ষেপের কারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে মার্কিন সামরিক কর্মসূচি।

বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো ইঞ্জিন চালু করতে এবং জরুরি শক্তি সরবরাহের জন্য চীনে খনন করা বা প্রক্রিয়াজাত করা বিরল মাটির খনিজ পদার্থ দিয়ে তৈরি চুম্বকের প্রয়োজন হয়।

মার্কিন সেনাবাহিনীর পছন্দের তালিকায় থাকা নির্ভুল-নির্দেশিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে চীনা বিরল আর্থ উপকরণযুক্ত চুম্বক বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া নতুন বৈদ্যুতিক এবং ব্যাটারিচালিত ড্রোন, কম্প্যাক্ট বৈদ্যুতিক মোটরে বিরল চুম্বকের ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।


ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্যালিফোর্নিয়া

ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ব্যস্ততম সড়ক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে অঙ্গরাজ্যটির সান দিয়েগো নগরীর বাইরে গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে পাথরের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া নগরীর সাফারি পার্কে ঝাঁকুনি অনুভব করেন কর্মকর্তারা। তবে কোনো আহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে আঘাত হানে। এটি সান দিয়েগো কাউন্টিতে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল প্রায় ১৫০০ জন লোকের একটি পাহাড়ি শহর জুলিয়ান থেকে মাত্র কয়েক মাইল (৪ কিলোমিটার) দূরে। ভূমিকম্পটি লস এঞ্জেলেস কাউন্টির উত্তরে প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) দূরে অনুভূত হয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি আফটারশক হয়।

জুলিয়ানে ১৮৭০ এর দশকে পরিচালিত একটি প্রাক্তন সোনার খনির মালিক পল নেলসন বলেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম সিঙ্গল-পেন জানালাগুলো ফাটতে চলেছে কারণ সেগুলো বেশ ভালোভাবে কাঁপছিল। উপহারের দোকানের কাউন্টারে থাকা কিছু ছবির ফ্রেম ঝাঁকুনিতে পড়ে গেছে। কিন্তু পর্যটকরা যে সুড়ঙ্গগুলো ঘুরে দেখতে পারেন তার কোনো ক্ষতি হয়নি। এর আগে রোববারও ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানান তিনি।

জুলিয়ানের উত্তর-পশ্চিম স্টেট রুটসহ পাহাড়ি ঢালে এবং রাস্তা ও হাইওয়েতে আছড়ে পড়া পাথরের দিকে সতর্ক থাকতে যানবাহন চালকদের সতর্ক করে দিয়েছেন পরিবহণ কর্মকর্তারা। সান দিয়েগো কাউন্টির ক্যালিফোর্নিয়া পরিবহণ বিভাগ জানিয়েছে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির জন্য সড়কপথের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

সান দিয়েগো সাফারি পার্কে আফ্রিকান হাতির একটি পাল ভূমিকম্পের সময় তাদের বাচ্চাদের রক্ষা করার জন্য দৌড়ে যাওয়ার ঘটনা একটি ভিডিওতে ধরা পড়ে। হাতিদের তাদের পায়ের মাধ্যমে শব্দ অনুভব করার ক্ষমতা রয়েছে এবং আচরণটি একটি ‘সতর্ক বৃত্ত’ হিসাবে পরিচিত।

এই ভূমিকম্পের ফলে উত্তর কাউন্টি ট্রানজিট জেলা ট্রেনগুলো বিলম্বে ছেড়ে যায়। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশন ফর সান ডিয়েগো কাউন্টির ক্যাপ্টেন থমাস শ্যুট জানান, মাটি সরে গেলে সতর্কতা হিসেবে স্কুলছাত্রীদের ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি একটি ঝাঁকুনি সতর্কতা পেয়েছিলেন এবং তারপর ধাক্কা অনুভব করতে শুরু করেছিলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার একজন অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ লুসি জোনসের মতে, ভূমিকম্পটি এলসিনোর ফল্ট জোনের কাছে ৮.৩ মাইল (১৩.৪ কিলোমিটার) গভীরে আঘাত করেছিল। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যস্ততম ভূমিকম্প অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি এবং বিখ্যাত সান আন্দ্রেয়াস ফল্ট সিস্টেমের অংশ যা সাধারণত প্রতি বছর কমপক্ষে একটি ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়। জুলিয়ানে রোববার অনুভূত ভূমিকম্পটি ছিল ৩.৫ মাত্রার কম্পন, যা সোমবারের বৃহত্তর ভূমিকম্পের পূর্বশক ছিল।


গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য জিম্মি মুক্তির দাবি ইসরাইলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস সোমবার জানিয়েছে, গাজায় আটক অবশিষ্ট জিম্মির অর্ধেকের মুক্তি দেওয়া হলে ইসরাইল ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন এটি সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের কবলে। গাজা সিটি থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

হামাসের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ইসরাইল গাজা যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করার জন্য ফিলিস্তিনিদের নিরস্ত্রীকরণেরও দাবি করেছে। তবে কর্মকর্তা বলেছেন, নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে।

কর্মকর্তা এবং মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা জানান, একটি ইসরাইলি প্রস্তাব পাস করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে ‘চুক্তির প্রথম সপ্তাহে অর্ধেক জিম্মির মুক্তি দেওয়া হলে কমপক্ষে ৪৫ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি বাড়ানো হবে ও সাহায্য প্রবেশ করবে।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাস হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে। ওই হামলা যুদ্ধের সূত্রপাত করে।

গাজায় এখনও প্রায় ৫৮ জন বন্দী রয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী যার ৩৪ জন মৃত বলে দাবি করে।

কর্মকর্তা আরো বলেন, হামাস নেতারা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পর্যালোচনা করেন। তবে অস্ত্র প্রতিরোধের বিষয়টি একটি লাল রেখা ও আলোচনার অযোগ্য বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, হামাসের আলোচকরা কাতারে যাচ্ছেন, যেখানে তাদের একটি অফিস রয়েছে এবং ইসরাইলের সাথে মূল মধ্যস্থতাকারী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামাসের বিবৃতির বিষয়ে ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

জাতিসংঘ বলছে, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ, জ্বালানি, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতি রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে মানবিক পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে খারাপ।’

এর আগে, কয়েক সপ্তাহ ধরে এই অঞ্চলে কোনও সাহায্য প্রবেশ না করায় পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং গাজার মানবিক সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে।

কর্মকর্তা বলেন, হামাস মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণ ইসরাইলি প্রত্যাহার ও সাহায্য প্রবেশের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো প্রস্তাবে সম্মত হতে ইচ্ছুক।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় যুদ্ধরত ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে দিয়ে দুই মাস ধরে চলা বিরতি ভেঙে যাওয়ার পর মার্চ মাসে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে পুনরায় অভিযান শুরু করে।

যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার আগে, ২ মার্চ থেকে ইসরাইল মানবিক সাহায্য বন্ধ করে দেয় এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে।

ওসিএইচএ জানিয়েছে, সাহায্য কর্মীদের ‘অবশিষ্ট মজুদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করার জন্য রেশনিং ও সরবরাহ কমাতে’ বাধ্য করা হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালের একজন চিকিৎসক আহমেদ আল-ফারাহ বলেন, ‘সবকিছুর ঘাটতি’ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা দল অবিরাম কাজ করছে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ গাজায় ‘জরুরি’ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, এক ফোনালাপে ম্যাখোঁ ও আব্বাস ‘যুদ্ধবিরতির জরুরি প্রয়োজনীয়তা, মানবিক সহায়তা সরবরাহ ত্বরান্বিত করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুতি প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে জোর দিয়েছেন।’

ম্যাখোঁ এক্স-এ বলেছেন, জিম্মিদের মুক্ত করতে ও লড়াই বন্ধ করতে ‘ফ্রান্স সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।’ তিনি হামাসবিহীন যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা পরিচালনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ‘সংস্কার’ করার পক্ষেও কথা বলেছেন।

হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ‘গুরুতর বন্দী বিনিময়ের’ শর্তে ইসরাইল যুদ্ধের অবসান ঘটানোর নিশ্চয়তা দিলে হামাস সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে ইচ্ছুক। ‘ দখলদার বাহিনী তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে নুনু বলেন, ‘বন্দীর সংখ্যা কোনো বিষয় নয়।’ তবে মিশরীয় ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আলোচনার পর তিনি জোর দিয়ে বলেন, হামাস তাদের অস্ত্র ত্যাগ করবে না।

ইসরাইলি সংবাদ ওয়েবসাইট ওয়াইনেট জানিয়েছে, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের আওতায়, ইসরাইল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেওয়ার মার্কিন গ্যারান্টির বিনিময়ে হামাস ১০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে।

১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রথম যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার আগে একাধিক জিম্মি-বন্দী বিনিময় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ইসরাইল প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করে। অন্যদিকে হামাস সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রূপরেখা অনুসারে চুক্তির অধীনে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ওপর জোর দেয়।

তবে ম্যাখোঁ ঘোষণা করেছেন, ফ্রান্স কয়েক মাসের মধ্যে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে। তিনি সোমবার আশা প্রকাশ করেন যে, ফরাসি স্বীকৃতি অন্যান্য দেশকেও অনুসরণ করতে ‘উদ্দীপনা’ দেবে। তিনি বলেন, দেশগুলো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না তাদেরও তা দেওয়া উচিত।

ইসরাইল ম্যাখোঁর ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে। ইসরাইল জোর দিয়ে বলেছে, স্বীকৃতির পদক্ষেপগুলো অসময়ের।

নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের ভূমির কেন্দ্রস্থলে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র যেটির একমাত্র আকাঙ্ক্ষা হল ইসরাইলের ধ্বংস। সেটির ধারণা প্রচার করে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ মারাত্মক ভুল করছেন।


কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘টাইট’দেওয়া যায়, তা বের করতেই ভিয়েতনামে শি: ট্রাম্প

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (বাঁয়ে), মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (মাঝে), ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতা তো লাম ।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলে ‘টাইট’ দিতেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সফরের শুরুতে স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় পৌঁছান শি। হ্যানয়ের বৈঠক শেষেই এ সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের প্রতিবেশী ৩টি দেশে সফর শুরু করেন চীনের প্রেসিডেন্ট।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্যমতে, শি তার সফরে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় যাবেন এবং ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল কম্বোডিয়ায় যাবেন।

এমন একটি সময় শি এই সফর শুরু করেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কারোপ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এছাড়া ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়াও ট্রাম্পের শুল্কারোপে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

সফরের প্রথমদিনে ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতা তো লামের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণসহ দেশ দুটির মধ্যে সরবরাহ শৃঙ্খল মজবুত করতে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক সই করেন শি ও লাম।

এর পরপরই হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতির উদ্দেশেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘এখানে আমি চীনেরও দোষ দেখছি না, ভিয়েতনামেরও না। খুবই ভালো একটি বৈঠক হয়েছে, যেখানে আলোচনার বিষয় হলো—কীভাবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে টাইট দিতে পারি!’

বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় একটি সংকট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, চীনের মাথার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক। অন্যদিকে, ভিয়েতনামের ওপর রয়েছে ওয়াশিংটনের ৪৬ শতাংশ শুল্ক। যদিও সেটি ৯০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। তাই শঙ্কা এখনো কাটেনি। এককভাবে ভিয়েতনামের পণ্য রপ্তানির সবথেকে বড় বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র।

এ কারণে শুল্ক কার্যকর হলে সেটি ভিয়েতনামের অর্থনীতিতে ‍নিশ্চিতভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আবার চীনের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হলে চীনেরও একটি বিকল্প বাজার দরকার। সে কারণে চীন এবার দক্ষিণ এশিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের প্রেডিডেন্ট আগেই তার এই সফরের পরিকল্পনা করলেও কাকতালীয়ভাবে ট্রাম্পের শুল্কারোপের পর এই সফর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গণে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন অনেকে।

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব কমাতে দেশটির সঙ্গে আলোচনায় জোর দিয়েছে কোনো কোনো দেশ। চীন কিংবা কানাডার মতো কিছু দেশ আবার পাল্টা শুল্কও আরোপ করেছে।

এছাড়া, চীন নিজেদের একটি বিশ্বস্ত বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দিয়েছেন শি জিনপিং।

ভিয়েতনামের সমাজতান্ত্রিক দলের পত্রিকা নিহানদানের একটি প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘এই বাণিজ্যযুদ্ধে আসলে কেউই জয়ী হবে না। এই সুরক্ষাবাদ (শুল্কারোপসহ নানাভাবে বিভিন্নদেশ থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করা) কোনোভাবেই সুফল বয়ে আনবে না।’

ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিনের সঙ্গে বৈঠকের পর শি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই অন্যায় শুল্কারোপের বিরুদ্ধে তাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। এ সময় রেলসহ বিভিন্ন খাতে মোট ৪৫টি চুক্তি সই করা হয়েছে বলে চিন ও ভিয়েতনামের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। তবে চুক্তিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।’

শুধু ভিয়েতনামই নয়; দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে চাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি না করতে পেরে নিজেদের পণ্যগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি করতে পারে চীন। এই আশঙ্কা থেকেই মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাল মিলিয়ে আবার চীনকেও অখুশি না করে চলতে চাইছে দেশগুলো।

চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্বের বৃহৎ দুটির অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক পুরোপুরি নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। আবার সম্পর্ক টিকেও যেতে পারে। এছাড়া এক পর্যায়ে গিয়ে একটি বড় চুক্তি হতে পারে।’

কোনো চুক্তি হবে কিনা বা এই শুল্কারোপ আসলে কি ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করবে; তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প ও তার কর্মকর্তারা আগেই নিশ্চিত করেছেন, ৯০ দিনের জন্য শুল্কের স্থগিতাদেশ সাময়িক।

নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘কোনো দেশই এখনো এই শুল্কের আওতাধীন না, চীন তো একদমই না। তারা আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে।’


বুধবার ঢাকায় আসছেন ট্রাম্পের ২ উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি:সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তিন দিনের সফরে আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় বসেন ট্রাম্প। তার প্রশাসনের প্রথম প্রতিনিধিদলের এ সফরে বাংলাদেশে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা এবং মায়ানমারের পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে নিয়োজিত বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বুধবার প্রথমে ঢাকায় পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক। পরে আরেকটি ফ্লাইটে আসবেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

এরপর তারা পর্যায়ক্রমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ফলে দুই দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রাসঙ্গিকভাবে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।

বাংলাদেশ সফরের সময় নিকোল চুলিক অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংস্কারপ্রক্রিয়া বিশেষ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন। এ সময় তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

এছাড়া অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


ওয়াকফ আইন ইস্যুতে থমথমে পশ্চিমবঙ্গ, গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক

নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ এবং পরবর্তী সহিংসতায় কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্পর্শকাতর এলাকায় টহল দিচ্ছে তারা। ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব কথা বলেন রাজ্য মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন গোবিন্দ মোহন।

বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। পরিস্থিতির ওপর রাজ্য প্রশাসন করা নজর রাখছে। এরই মধ্যে ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও বিএসএফের সহযোগিতা নিয়েছে রাজ্য।

আগেই স্থানীয় ৩০০ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে এবং রাজ্যের অনুরোধে পাঁচ কোম্পানি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে স্পর্শকাতর এলাকায়।

ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন বলেন, পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্যকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন হলে তাও পাঠাতে প্রস্তুত আমরা।

গতকাল রোববার সকাল থেকেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলোর অধিকাংশ জায়গায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা। রাস্তায় লোকজনও বেরিয়েছে খুব কম। ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ধুলিয়ান এবং সুতি রেলস্টেশনে বাড়তি রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

কলকাতার স্পর্শকাতর এলাকায় গণপরিবহন চলাচল করলেও তা সংখ্যায় বেশ কম। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কেও মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বহিরাগত কেউ যেন সহিংসতার মতো ঘটনা না সৃষ্টি করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বহিরাগত প্রবেশ ঠেকাতে গঙ্গা নদীর ধারে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকায়গুলো নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের পর সেটি এরই মধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে। এরপর থেকেই নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে।

বিষয়:

banner close