শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১

ফের প্রেসিডেন্ট হতে প্রস্তুত এরদোয়ান

গত দুই দশক ধরে তুরস্কে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান এবারও নির্বাচনে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন
আপডেটেড
২৬ মে, ২০২৩ ১৬:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৩ ১৬:০৩

তুরস্কে পুরোদমে চলছে রান-অফ বা দ্বিতীয় ধাপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি। গত বুধবার নতুন ব্যালট পেপার ও অমোচনীয় স্ট্যাম্প আনা হয় সর্বসমক্ষে।

তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় ধাপে গড়াচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই নিরাপত্তা-নতুন নিয়ম-নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে চলছে তোড়জোড়। ভোটের চার দিন আগেই মূল দুই প্রার্থী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং কামাল কিরিচ-দারোগলুর ছবিসংবলিত ব্যালট পেপার গণমাধ্যমকে দেখানো হয়। যেখানে ‘ইয়েস’ লেখা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মতামত জানাবেন ভোটাররা। স্বচ্ছ বাক্সে ফেলা হবে ব্যালট পেপার।

সাম্প্রতিক জনমত জরিপ অনুসারে, দারোগলু এগিয়ে আছেন। ভাবা হচ্ছে, জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় ও নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্য ভোটদানে প্রভাব ফেলবে। প্রথম ধাপে, কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে পারেননি।

তবে গত দুই দশক ধরে তুরস্কে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান এবারও নির্বাচনে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন। অবশ্য দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন এই নেতাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বৈরতন্ত্রের তকমা দেয়া হচ্ছে।

তবে স্বৈরশাসক বলে অভিযোগ তুললেও বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমি যদি কর্তৃত্ববাদীই হতাম, তাহলে তো প্রথম ধাপেই প্রেসিডেন্ট হতাম। নির্বাচনের রাতে আমাদের সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোয় ভ্রান্তিমূলক মনস্তাত্ত্বিক অপারেশন চালানো হয়েছে। আমরা ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে এসব দাবি ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। স্বৈরতন্ত্রের দাবিটি যে ভুয়া, সেটি আমরা প্রমাণ করেছি।’ খবর আনাদোলু এজেন্সির।

এরদোয়ান বারবারই আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সমালোচনা করেন। কারণ তারা নির্বাচনে জনমতের ওপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছে। দেশটিতে ২৮ মে হবে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। কারণ প্রথম ধাপে কোনো প্রার্থীই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে প্রথম ধাপে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন এরদোয়ান।

বিষয়:

জাতিসংঘের পরমাণু ওয়াচডগকে বহিষ্কারের হুমকি ইরানের

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি
আপডেটেড ১১ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:১৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘের পরমাণু ওয়াচডগের ইনসপেক্টরদের বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে ইরান। দেশটি জানিয়েছে, দেশের ওপর বাইরের হুমকি অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের বহিষ্কার করা হতে পারে। গতকাল শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরান জানিয়েছে, দেশের ওপর বাইরের হুমকি অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার পরিদর্শকদের বহিষ্কার করা হতে পারে। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওমানে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় সদিচ্ছা দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাঈ গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা সতর্কতা ও সদিচ্ছার সঙ্গে কূটনীতিকে একটি প্রকৃত সুযোগ দিচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এই সিদ্ধান্তের যথাযথ মূল্যায়ন করা, যদিও তারা এখনো শত্রুতা দেখাচ্ছে।

শনিবার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই ইরান এমন মন্তব্য করেছে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি প্রয়োগের ঘোষণা দেন। বুধবার তিনি বলেন, আলোচনায় ব্যর্থ হলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই নেওয়া হতে পারে এবং এই পদক্ষেপে ইসরায়েল নেতৃত্ব দেবে।

এদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী শামখানি বৃহস্পতিবার বলেন, বাইরের হুমকি ও সামরিক আগ্রাসনের সম্ভাবনার কারণে পারমাণবিক পর্যবেক্ষকদের বহিষ্কার ও সহযোগিতা বন্ধের মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আরও সুরক্ষিত স্থানে স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনা করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, এই ধরনের হুমকি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি সতর্ক করেন, এই পদক্ষেপ ইরানের জন্য একটি গুরুতর ভুল হিসেব হতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, এই বৈঠক একটি বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ, কোনো বৃহত্তর কাঠামোর অংশ নয়। এটি কেবল নির্ধারণ করার জন্য যে ইরান আসলেই আলোচনায় আগ্রহী কি না।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও তেলের নেটওয়ার্ককে কেন্দ্র করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইয়েমেনে বোমাবর্ষণ কার্যক্রমের পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়ায় ছয়টি বি-২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন পারমাণবিক চুক্তি করবে ইরান?

বিশ্ব রাজনীতির উত্তাল পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তীকালীন পারমাণবিক চুক্তির কথা চিন্তা করছে ইরান। সাম্প্রতিক নানা হুমকি ও চাপের মধ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণের কথা ভাবছে তেহরান। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, উত্তেজনা প্রশমনে এটি হতে পারে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতের বিস্তৃত চুক্তির সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দুই মাসের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না করলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা হবে। এর আগে গত মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্প এই দুই মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করেন। ট্রাম্পের দাবি, এই সময়ের মধ্যেই ইরানকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু ইরান মনে করে, এত স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই চুক্তি করা সম্ভব নয়।

এই অবস্থায় ইরান একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির কথা ভাবছে যাতে করে দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতায় পৌঁছানোর সময়সীমা বাড়ানো যায়। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রকল্প পরিচালক আলী ভায়েজ অ্যাক্সিওসকে বলেন, ’ইরানিরা বিশ্বাস করে, ট্রাম্প যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তা যথেষ্ট নয়। তাই তারা চূড়ান্ত চুক্তির পথে অন্তর্বর্তী সমঝোতার কথা ভাবছে।’ এটি কেবল সময়ক্ষেপণ নয়, বরং সংলাপ ও সহযোগিতার একটি কার্যকর ধাপ হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু হবে। তবে ইরান এমন কোনো সরাসরি আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করে জানায়, ওমানে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের মধ্যে মধ্যস্থতাপূর্ণ আলোচনা হবে। এই আলোচনার মধ্যস্থতা করবেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আল-বুসাইদি। তবে একইসঙ্গে ট্রাম্প বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন—চুক্তি না হলে বোমাবর্ষণ বা কঠোর শুল্ক আরোপ হতে পারে।

বিশ্বের নজর এখন এই সম্ভাব্য চুক্তি ও মধ্যস্থতামূলক আলোচনার দিকে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা ও অবিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে এটি যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তাহলে তা হতে পারে পারমাণবিক সংকট নিরসনের পথে একটি আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ। বিশ্ব শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য এমন সংলাপ এবং কৌশলগত সমঝোতা আজ আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।

বিষয়:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা থামছেই না

আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা শহর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১১ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেও ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস গাজায় ইসরায়েলের ত্রাণ অবরোধের কারণে আরও রোগ ও মৃত্যুর আশঙ্কা করেছেন। সেখানের ১০ হাজারের বেশি মানুষকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৮৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন। যদিও উপত্যকাটির সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ হাজার ৭০০ জনে দাঁড়িয়েছে। কারণ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যারা চাপা পড়েছেন আশঙ্কা করা হচ্ছে তারাও মারা গেছেন।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, ক্রমাগত নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত এই উপত্যকার ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ ফিলিস্তিনি।

এদিকে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হওয়া পিউ রিসার্চের ওই জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক এখন ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং পরবর্তীতে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের আগে ২০২২ সালের মার্চে করা এক জরিপে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের তুলনায় মূলত ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলের প্রতি বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। পিউ রিসার্চের জরিপে জানা গেছে, বর্তমানে ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এবং ৩৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালের পর এই হার বেড়েছে ১০ শতাংশ।

গাজায় ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে

৮০,০০০-এরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী এবং দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ১,১০,০০০ মানুষ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারছেন না। গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিম।

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, ৫৯% প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং ৫৪% ক্যান্সার ও রক্ত-সংশ্লিষ্ট ​​রোগের ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৮০ হাজারেরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী এবং ১ লাখ ১০ হাজার দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারছেন না।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এই সংকটের কারণ হলো সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া। দখলদার বাহিনী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের জন্য চিকিৎসা সরবরাহ এবং ওষুধসহ মানবিক সহায়তা সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর আইইডি হামলা

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক যানবাহনে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হামলা হয়েছে। এমন দাবি করেছে সেখানকার যোদ্ধাদল জেনিন ব্রিগেড।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনিন ব্রিগেড ইসরায়েলি সামরিক যানবাহনে ‘অত্যন্ত বিস্ফোরক’ আইইডি হামলার দাবি করেছে। আল-জাজিরা আরবির সংবাদদাতারা জানান, ইসরায়েলি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইরত ফিলিস্তিনিদের একটি গোষ্ঠী জেনিন ব্রিগেড। তারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। এই দলটি এক বিবৃতিতে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হামলার দায় স্বীকার করেছে।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, একটি অত্যন্ত বিস্ফোরক ডিভাইস আগে থেকেই প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং জেনিনের সিলাত আল-হারিথিয়া শহরের প্রবেশপথে শত্রু যানবাহন পৌঁছালে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

তবে প্রাথমিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি বাহিনীর থেকে এখনও কোনো তথ্য জানানো হয়নি। আল-জাজিরা বলেছে, সংবাদদাতারা এ বিষয়ে খোঁজ রাখছেন। কোনো পক্ষ থেকে নতুন তথ্য প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা পাঠকদের জানিয়ে দেবে।

ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের নাবলুস ব্যাটালিয়নও নাবলুসের পুরাতন শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা করেছে। কয়েকটি স্থান থেকে যুদ্ধের খবর এসেছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি খুবই নাজুক হওয়ায় বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় নাবলুসের পুরাতন শহরে নিজ বাড়ি থেকে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সামের খুওয়াইরাকে ধরে নিয়ে গেছে তারা।

বৃহস্পতিবার ভোরে অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে অভিযান চালায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। এ সময় সামেরের বাড়িতে আচমকা ঢুকে পড়ে তারা। একই সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিকটবর্তী বালাতা শরণার্থী শিবিরে অনুপ্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। তারা বাড়ি থেকে ফিলিস্তিনের বের করে দেয় এবং বেশ কয়েকজনকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়।

ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য নাবলুসের পুরাতন শহরেও হামলা চালিয়েছে। আজাজ মসজিদের সামনে সামরিক যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে এবং গ্রেট সালাহ আল-দীন মসজিদের চারপাশ স্থল বাহিনী ঘিরে রেখেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন শহরের আকাবা পাড়ায় একটি ফিলিস্তিনি বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে। গত মাসে, ইসরায়েলি বাহিনী পুরাতন শহরের বেশ কয়েকটি মসজিদ তল্লাশি করে এবং লুটপাত চালায়। এ নিয়ে শহরগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিষয়:

৫৩ শতাংশ মার্কিনি ইসরায়েলকে পছন্দ করেন না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১১ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৩৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    পিউ রিসার্চের জরিপ

ইসরায়েলকে অব্যাহতভাবে সমর্থন এবং সহযোগিতা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। তবে ৫৩ শতাংশ মার্কিনি ইসরায়েলকে পছন্দ করেন না। বর্তমানে অধিকাংশ মার্কিন নাগরিকই ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। সম্প্রতি পিউ রিসার্চের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নজিরবিহীন হামলাই এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার পিউ রিসার্চের ওই জরিপটি প্রকাশিত হয়েছে। এই জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক এখন ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং পরবর্তীতে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের আগে ২০২২ সালের মার্চে করা এক জরিপে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের তুলনায় মূলত ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলের প্রতি বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। পিউ রিসার্চের জরিপে জানা গেছে, বর্তমানে ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এবং ৩৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালের পর এই হার বেড়েছে ১০ শতাংশ।

কমবয়সি রিপাবলিকান বিশেষ করে যাদের বয়স ৫০ বছরের কম তাদের মধ্যে ইসরায়েলকে অপছন্দ করার হার বেড়েছে। এই বয়সি প্রায় ৫০ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। গত কয়েক বছরে মার্কিন ইহুদিদের সঙ্গে ইসরায়েলের দূরত্ব বেড়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই দূরত্ব আরও বেড়েছে।

ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বেড়েছে। এবারের জরিপে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে শুধু ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সি রিপাবলিকান গ্রুপ ছাড়া বাকি বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা তাদের ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অন্তত ৭৩ শতাংশ মার্কিন ইহুদি এখনো ইসরায়েলের পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করেন। তাদের পর শ্বেতাঙ্গ ধর্মপ্রচারকদের মধ্যে ইসরায়েলের পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব বেশি, যা প্রায় ৭২ শতাংশ।

শ্বেতাঙ্গ প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক উভয় দলের মানুষের মধ্যে ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব বেড়েছে। এ হার যথাক্রমে ৫০ শতাংশ ও ৫৩ শতাংশ। এ ছাড়া মার্কিন মুসলিমদের মধ্যে ৮১ শতাংশ ইসরায়েলের বিপক্ষে ও ১৯ শতাংশ পক্ষে মত দিয়েছেন।


কীভাবে এত শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হলো ইসরায়েল?

তেল আবিব। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:১৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মাঝখানে ছোট্ট একটি দেশ ইসরায়েল। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিন ছেড়ে যায় ব্রিটিশ সৈন্যরা। সে সময়ই ইহুদিরা ঘোষণা করে নিজস্ব রাষ্ট্র ইসরায়েলের। তখন থেকেই ইসরায়েল শুধু রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকেনি বরং তাদের পরিধি আরও বাড়িয়েছে। গত ৭৫ বছরে ইসরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে একদিকে যেমন শক্তিশালী হয়েছে, অন্যদিকে আরব রাষ্ট্রগুলোর মাথা ব্যথার কারণও হয়ে উঠেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পরমাণু শক্তিধর দেশ ইসরায়েল। তারাই একমাত্র দেশ যারা শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে সরাসরি নাগরিকত্ব দেয়, সেটা পৃথিবীর যে প্রান্তেরই ইহুদি হোক না কেন। ৭৫ বছরে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি বা সামরিক দিক দিয়ে বিশ্বে একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে ইসরায়েল। এটা সম্ভব হওয়ার পেছনে কাজ করেছে বেশ কয়েকটি বিষয়।

পশ্চিমা সহায়তা

ইসরায়েলের এতটা শক্তির পেছনে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে আমেরিকার একটা বড় অবদান আছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমেরিকার বৈদেশিক সহায়তার সবচেয়ে বড় অংশ পেয়ে আসছে ইসরায়েল।

ইসরায়েল জন্মলগ্ন থেকেই ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আমেরিকার সমর্থন পেয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তিন অঞ্চলটিতে ৪০০ বছরের অটোমান শাসনের অবসান ঘটিয়ে উপনিবেশ গড়েছিল ব্রিটিশরা। ফ্রান্সও এর মাঝে ছিল যদিও এই অঞ্চলটি সমঝোতার ভিত্তিতে ব্রিটেন শাসন করেছে। ইহুদিদের নিজস্ব একটি ভূখণ্ড থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে এসেছিল ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকেই।

তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে আসতে থাকে। এ নিয়ে আরব এবং ইহুদিদের মধ্যে দ্বন্দ্বও বাড়তে থাকে। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে তখন মুসলিমরা ছাড়াও খ্রিস্টানদের বসবাস ছিল। ইহুদিদের বসতি গড়ে তোলার প্রেক্ষাপটে আরবরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এই বিক্ষোভ দমনে ব্রিটেন আরবদের ওপর নির্যাতনও চালায়। পরবর্তীতে ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণার পরও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ নানাভাবে তাদের সঙ্গে ছিল ফ্রান্স এবং ব্রিটেন।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ইসরায়েল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় এবং সে গণতন্ত্রকে সমর্থন দেয় ফ্রান্স এবং ব্রিটেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ছিল সেই দেশ যারা ইসরায়েলকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়। ইসরায়েল রাষ্ট্র যেদিন প্রতিষ্ঠা হয়, ঠিক সেদিনই স্বীকৃতি দিয়েছিল আমেরিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ‘অফিস অব দ্য হিসটোরিয়ানসে’ উল্লেখ রয়েছে হ্যারি এস ট্রুম্যান ১৯৪৬ সালেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরপরই ইহুদি রাষ্ট্রের ব্যাপারে তার সমর্থন ঘোষণা করেন।

আর ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণা হলেও এ অঞ্চলে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্রভাবটাই বেশি ছিল। কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয় ১৯৫৬ সালে দ্বিতীয় আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। ইসরায়েল পশ্চিমাদের মদদে যখন মিসরে হামলা চালায়, তখন মিসরের পক্ষে থাকা দেশগুলোকে সহায়তা করতে আগ্রহ দেখায় সোভিয়েত ইউনিয়ন আর মধ্যপ্রাচ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকাতে ব্রিটিশ সেনাদের হটিয়ে অবস্থান নেয় আমেরিকা।

মূলত ইসরায়েলের জন্মই হয়েছে পরাশক্তিদের বিশাল সমর্থনে যেটা ইসরায়েলের ক্ষমতায়নে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া এটাও মনে করা হয় যে ইহুদিদের সঙ্গে শিক্ষাগত, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক এমন নানা দিক পশ্চিমা চিন্তাধারার সঙ্গে মিলে যায় যেটা আরবদের চেয়ে ভিন্ন।

সামরিক ও প্রযুক্তির বিকাশ

প্রতিবেশী মিসর, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, ফিলিস্তিন সবগুলো দেশ শত্রু হওয়া সত্ত্বেও ঠেকানো যায়নি ইসরায়েলের উত্থান। প্রতিবেশীদের সঙ্গে তিনটি পুরোদমের যুদ্ধ (১৯৪৮, ১৯৬৭ এবং ১৯৭৩) এবং আরও বেশ কয়েকটি ছোটখাটো যুদ্ধ করেছে ইসরায়েল।

এভাবেই টিকে থাকার লড়াই ইসরায়েলকে আরও শক্ত করেছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন ইসরায়েলের সামরিক ও প্রযুক্তিগত আধিপত্য পশ্চিমাদের কারণেই সম্ভব হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইরানের প্রযুক্তিগত বিকাশ ঘটেছে প্রায় আমেরিকার বিপরীতে আর ইসরায়েলের বিকাশ হয়েছে আমেরিকার বন্ধু হিসেবে।

তবে ইসরায়েলের ক্ষেত্রে দক্ষতার মাত্রাটা ভিন্ন। আধুনিক অস্ত্র, সাইবার সিকিউরিটি, আকাশ প্রতিরক্ষা, মিসাইল ব্যবস্থা এবং গোয়েন্দা তৎপরতা- এসব দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছে ইসরায়েল। আমেরিকার কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের রিপোর্ট বলছে, ইসরায়েলের প্রযুক্তিকে অত্যাধুনিক করতে প্রভাব রেখেছে আমেরিকা। ২০২৩ অর্থবছরে যৌথ সামরিক প্রকল্পে ৫২ কোটি মার্কিন ডলারের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস যার মাঝে ৫০ কোটি শুধু মিসাইল তৈরির খাতের জন্য। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়েও ইসরায়েলকে কোটি কোটি ডলার সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এবং বিনিয়োগ ইসরায়েলকে সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভবান করেছে। এভাবেই ইসরায়েল দিন দিন আরও খ্যাতি অর্জন করেছে। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল শুরু থেকেই চেয়েছে সামরিকভাবে শক্তিশালী হতে। কারণ আরব রাষ্ট্রগুলোর মাঝখানে তাদের টিকে থাকার জন্য এটাই ছিল একমাত্র পথ। ইসরায়েল তাদের সামরিক শক্তির বিকাশও ঘটিয়েছে কৌশলে এবং দূরদৃষ্টি মাথায় রেখে।

দেশটিতে অসুস্থ এবং বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া সব নাগরিকের ১৮ বছর বয়সের পর বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয়। তবে এটি শুধু ইহুদিদের জন্য বাধ্যতামূলক। সামরিক প্রশিক্ষণ পুরুষদের জন্য ৩২ মাস এবং নারীদের জন্য ২৪ মাস।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ

শুধু সামরিক দিক থেকেই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও সমানভাবে দক্ষতার দিকে এগিয়েছে ইসরায়েল। তাদের চমক জাগানো সাফল্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তাদের কৃষিখাত। ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার মাধ্যমে ইসরায়েল রাষ্ট্রের যখন প্রতিষ্ঠা হয়, তখন সেখানে পানি এবং উর্বর ভূমির সংকট ছিল।

কৃষিভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে একটি হাই-টেক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে ইসরায়েল। অত্যাধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মরুভূমিতে নানা ধরণের শস্য ফলানোর সাফল্য দেখিয়েছে দেশটি। আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর মতে ইসরায়েলের ফুড প্রসেসিং শিল্প ক্রমাগত নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন করছে।

বিষয়:

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স

ইমানুয়েল মাখোঁ
আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স। স্থানীয় সময় বুধবার ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে আগামী জুনে জাতিসংঘে একটি সম্মেলন হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে ফ্রান্স এই সম্মেলনের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ওই সম্মেলনেই ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চান মাখোঁ। তিনি বলেন, ‘স্বীকৃতির বিষয়ে আমাদের অবশ্যই এগুতে হবে। কয়েক মাসের মধ্যে আমরা এটা করতে চাই।’

প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ফিলিস্তিন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহিন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফ্রান্সের স্বীকৃতির বিষয়টি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার রক্ষা ও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটা সঠিক পথে এগোনোর একটি পদক্ষেপ হবে।

তবে এমানুয়েল মাখোঁর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে যেকোনো ‘একতরফা স্বীকৃতি’ হামাসের হয়ে ভূমিকা রাখবে।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৬টিই ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে গত বছর স্বীকৃতি দিয়েছে আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামাস, জ্যামাইকা, বার্বাডোস ও ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো।

বিষয়:

গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত ইন্দোনেশিয়া

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। ছবি: রয়টার্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেছেন, গাজায় যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিতে তার দেশ প্রস্তুত।

বুধবার মধ্যপ্রাচ্য ও তুরস্ক সফরে রওনা হওয়ার আগে তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে গাজার প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়া হতে পারে। আহত, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং অনাথদের অস্থায়ীভাবে ইন্দোনেশিয়ায় এনে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রাবোও বলেন, ‘আমরা আহতদের, মানসিকভাবে বিপর্যস্তদের এবং অনাথদের সরিয়ে আনতে প্রস্তুত। তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলে এবং গাজায় ফেরার মতো নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি হলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’

তিনি জানান, কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের ইন্দোনেশিয়ায় সরিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে ফিলিস্তিনি ও অন্য পক্ষগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করার জন্য তিনি তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ নয়, তবে ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান থেকেই ইন্দোনেশিয়া সংঘাত নিরসনে তার ভূমিকা বাড়াতে চায়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, ওই বছরের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত হন এবং আরও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।

এদিকে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেওয়া ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পর ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করার দুই মাস পর প্রাবোও এ প্রস্তাব দিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট এর আগেও বলেছিলেন, প্রয়োজনে গাজায় শান্তিরক্ষী সেনা পাঠাতে প্রস্তুত তার দেশ।


চীনের প্রভাব মোকাবিলায় পানামা খাল ফেরত নেবে যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথফাইল। ছবি: রয়টার্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীনকে পানামা খালের কার্যক্রম হুমকির মুখে ফেলতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ মধ্য আমেরিকার দেশ পানামা সফরকালে এ সতর্কবার্তা দেন।

জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হেগসেথ হলেন দ্বিতীয় কোনো শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা, যিনি পানামা সফর করছেন। তিনি জলপথে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের খনন করা খালটি ‘ফেরত নেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রবেশপথে অবস্থিত একটি পুলিশ স্টেশনে বক্তৃতাকালে হেগসেথ বলেন, ‘আজ পানামা খাল ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন। কমিউনিস্ট চীন কিংবা অন্য কোনো দেশকে এই খালের অখণ্ডতা বা কার্যক্রমকে হুমকির মুখে ফেলতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।’

যুক্তরাষ্ট্র শতাব্দীরও বেশি পুরোনো এই খালটি খনন করে এবং ১৯৯৯ সালে এটি পানামার কাছে হস্তান্তর করে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। নিরাপত্তা সম্পর্ক নিশ্চিত করে উভয় পক্ষ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। যদিও খালের ওপর পানামার সার্বভৌমত্বের বিষয়ে উভয় পক্ষের প্রকাশিত ঘোষণায় একটি উল্লেখযোগ্য অসংগতি ছিল।

মুলিনোর কার্যালয় থেকে স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত বিবৃতিতে ‘হেগসেথ পানামা খাল এবং এর আশপাশের এলাকার ওপর পানামার নেতৃত্ব এবং অবিচ্ছেদ্য সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।’

কিন্তু মার্কিন সরকার প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার বিবৃতিতে এই বাক্যটি উল্লেখ করা হয়নি।

হংকংয়ের একটি কোম্পানি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্তকারী পানামা খালের উভয় প্রান্তে দুটি বন্দর পরিচালনা করে। বিশ্বব্যাপী মোট জাহাজ চলাচলের ৫ শতাংশ হয় এই জলপথ দিয়ে।

ট্রাম্প প্রশাসন পানামার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে, যাতে দেশটি খালের ওপর চীনা প্রভাব কমাতে পারে। ওয়াশিংটন এই প্রভাবকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে।

তবে এই জলপথের ওপর চীনের ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের দাবি অস্বীকার করেছে পানামা। যদিও এ বিষয়ে দেশটির প্রতিবাদ দুর্বল হয়ে পড়েছে। হেগসেথের সফরের প্রাক্কালে পানামা হংকংয়ের কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে।

হেগসেথ বলেন, ‘আমি খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, চীন এই খালটি তৈরি করেনি। চীন এই খালটি পরিচালনা করে না। আর চীন এই খালটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে না।’

মুলিনোর সঙ্গে কথা বলার সময় হেগসেথ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পানামা একসঙ্গে ‘চীনের প্রভাব থেকে পানামা খালকে পুনরুদ্ধার করবে। পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে কার্যকর এবং সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধ বাহিনীর প্রতিরোধক্ষমতা ব্যবহার করে এটিকে সব দেশের জন্য উন্মুক্ত রাখবে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, খাল এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ বেইজিংকে পানামাজুড়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার সুযোগ এনে দিয়েছে। এর ফলে পানামা এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘কম নিরাপদ, কম সমৃদ্ধ এবং কম সার্বভৌম’ হয়ে পড়েছে।


গাজা মানুষ ‘হত্যার ক্ষেত্র’: গুতেরেস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ‘ত্রাণ ফুরিয়ে গেছে ও ভয়াবহতার দুয়ার আবার খুলেছে’ বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। উপত্যকাটিতে ত্রাণ ও সব ধরনের পণ্য সরবরাহের প্রবেশ আটকে দিয়েছে ও সম্প্রতি সেখানে নতুন করে বেপরোয়া হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার বলেন, ‘গাজা মানুষ হত্যার একটা ক্ষেত্র (হয়ে উঠেছে) ও সেখানকার বেসামরিক লোকজন এক অন্তহীন মৃত্যুফাঁদে আটকে পড়েছেন।’

গুতেরেসের এ মন্তব্যের আগে জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থার প্রধান ফিলিস্তিনিদের কাছে জরুরি ভিত্তিতে খাবার ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, গাজায় যথেষ্ট খাবার রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুতেরেস কুৎসা রটাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ গত ২ মার্চ শেষ হয়। এর পর থেকে দেশটি আবারও গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং সেখানে নতুন করে নির্বিচার হামলা ও বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ইসরায়েল তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে।

১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের নতুন করে শুরু করা বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার হামাসনিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েল জোর দিয়ে বলছে, তারা কোনো বেসামরিক লোকজনকে নিশানা করে না।

আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীন গাজার জনগণের কাছে খাবার ও চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছানো নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা দখলদার শক্তির (ইসরায়েল) রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সে পথ বন্ধ। আন্তর্জাতিক আইন ও ইতিহাসের চোখে এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

এসব মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় কোনো খাবারের সংকট নেই। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরিন মারমোরস্টেইন বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় মানবিক ত্রাণের কোনো ঘাটতি নেই। ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতিতে গাজায় ত্রাণবাহী ২৫ হাজারের বেশি ট্রাক ঢুকেছে।’

গুতেরেসের মন্তব্যের আগে গত সোমবার এক যৌথ বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থা। বিবৃতিতে তারা ফিলিস্তিনিদের কাছে খাবার ও ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গাজার বাসিন্দারা আবার ফাঁদে আটকে পড়েছেন এবং বোমা হামলা ও ক্ষুধার শিকার হচ্ছেন। গাজার সব বাসিন্দাকে খাওয়ানোর মতো এখন যথেষ্ট খাদ্য নেই এবং অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ ফুরিয়ে আসছে।’

বিবৃতিতে যেসব সংস্থার প্রধানেরা সই করেছেন, সেসব হলো ওসিএইচএ, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, ডব্লিউএইচও, ইউএনআরডব্লিউএ, ইউএনওপিএস।

ইতোমধ্যে গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৫০ হাজার ৮১০–এর বেশি। সূত্র: বিবিসি


চীন ছাড়া অন্য দেশের ওপর নতুন শুল্ক স্থগিত করলেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীন বাদে যেসব দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৯ এপ্রিল) তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্য দেশগুলোকে ছাড় দিলেও চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ ১০৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশের ওপর গত সপ্তাহে পারস্পরিক শুল্ক হিসেবে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এ ব্যাপারে ট্রাম্প লিখেছেন, 'বিশ্ববাজারের প্রতি চীন যে অসম্মান দেখিয়েছে, সেটির ভিত্তিতে আমি চীনের ওপর শুল্কের পরিমাণ ১২৫ শতাংশে উন্নীত করছি। যা এ মুহূর্ত থেকে কার্যকর হবে।'
'একটা সময়ে, আশা করি দ্রুত চীন বুঝতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশকে ‘শোষন’ করার সময় বিষয়টি আর মানা হবে না।'
অন্যান্য দেশগুলোর ওপর আরোপ করা পারস্পরিক শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার বিষয়টি জানিয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, 'বিপরীতভাবে, ৭৫টিরও বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা জালিয়াতি, অ-আর্থিক শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য ডেকেছে এবং এই দেশগুলো আমার শক্তিশালী পরামর্শের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের জন্য আমি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছি এবং পারস্পরিক শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। বিষয়টিতে মনযোগ দেওয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ।'


মার্কিন সাহায্য বন্ধে মারা যাচ্ছে দক্ষিণ সুদানের শিশুরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন সাহায্য বন্ধের পর জীবন রক্ষাকারী ক্লিনিকগুলোয় সেবা নিতে পৌঁছাতে না পারায় দক্ষিণ সুদানের শিশুরা কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বুধবার একটি আন্তর্জাতিক এনজিও সতর্ক করে একথা বলেছে।

নাইরোবি থেকে এএফপি জানায়, ২০১১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে অত্যন্ত দরিদ্র দেশটি নিরাপত্তার সাথে লড়াই করছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ফলে পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানো শান্তি চুক্তি হুমকির মুখে পড়েছে।

দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে প্রায় ৪০ হাজার কলেরা আক্রান্তের খবর জানা গেছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, এটিকে দেশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ প্রাদুর্ভাব হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বুধবার জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের কমপক্ষে পাঁচ তরুণের মৃত্যুর রেকর্ড করেছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় জোংলেই রাজ্যে জীবন রক্ষাকারী সেবা পেতে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা হেঁটে যান।

দাতব্য সংস্থাটি পূর্ব আকোবো কাউন্টির ২৭টি ক্লিনিককে সহায়তা করে, কিন্তু এটি জানিয়েছে, ইউএসএআইডি-এর কাটছাঁটের কারণে সাতটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি ২০টি আংশিক খোলা রয়েছে।

এটি আরো জানায়, দেশব্যাপী প্রায় ৬শ’টি ক্লিনিকের প্রায় ২শ’ কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে।

ইউএসএআইডি-এর বার্ষিক বাজেট যার প্রায় ৪৩ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মানবিক সাহায্যের প্রায় ৪০ শতাংশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই বাজেটের কাটছাঁট করায় বিশ্বজুড়ে এর ওপর প্রভাব পড়েছে।

২৪ বছর বয়সী পুরোনো কলেরা রোগী সারাহ বলেন, ‘আমরা আগে খুশি ছিলাম। অনেক ডাক্তার ও পর্যাপ্ত ওষুধ ছিল। তাই আমরা খুব বেশি কষ্ট পাইনি। কিন্তু এখন আমরা কষ্ট পাচ্ছি।’

স্বেচ্ছাসেবক স্বাস্থ্যকর্মী মাইকেল বলেছেন, সাহায্য কাটছাঁটের পর থেকে রোগীরা ওষুধের অভাবের সাথে লড়াই করছে।

‘আমরা রোগীদের কষ্ট দেখতে পাচ্ছি কিন্তু তাদের সাহায্য করতে পারছি না।’

‘এখন একটি গুরুতর কলেরা প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা শুধুমাত্র রোগীদের খাবার স্যালাইন সরবরাহ করতে পারছেন।’

এরআগে ইউনিসেফ জানায়, সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ জন কলেরায় মারা গেছে। যার অর্ধেকই ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের ১০টি রাজ্যের মধ্যে ৯টি রাজ্য আক্রান্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় জোংলেই রাজ্য।

দক্ষিণ সুদানের সেভ দ্য চিল্ড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস নিয়ামান্ডি এএফপি’কে বলেন, এই অঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।

তিনি জোংলেইয়ের আকোবোর পূর্বাঞ্চলে একটি ভ্রমণের বর্ণনা দেন, যেখানে উপচে পড়া তাঁবুতে পর্যাপ্ত জায়গা না রাখায় অসুস্থ শিশুদের বাইরে গাছের নীচে শুয়ে রাখা হয়।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে বিশ্বব্যাপী নৈতিক ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়া উচিত।’

তিনি ‘দক্ষিণ সুদানে মানবিক বিপর্যয়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি এমন একটি দেশ যেখানে পাঁচজনের মধ্যে চারজনের বেঁচে থাকার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন।’ নিয়ামান্ডি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে উত্তেজনা আর না বাড়ার এবং যাতে করে চিকিৎসা ব্যবস্থা আর জটিল না হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

দেশের কিছু অংশে সম্প্রতি নতুন করে সহিংসতা দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট সালভা কি ও তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিক মাচার উভয়ের মিত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।


চীনা পণ্যে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ও ট্রাম্প শি চিনপিং
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    নতি স্বীকার না করার বার্তা চীনের

চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে দেশটির ওপর আরও ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে তারা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনোই মেনে নেবে না। নতি স্বীকার করবে না চীন। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, সম্প্রতি তিনি যে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, তা স্থগিত করার ব্যাপারে তিনি ভাবছেন না। এমনকি এ নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে দর কষাকষি করতেও আপাতত ইচ্ছুক নন তিনি।

এর আগে এরকম কিছু আলাপ সামনে এসেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ৯০ দিনের জন্য নতুন আরোপিত শুল্ক স্থগিত করতে পারে। এই দাবিকে ‘ভুয়া খবর’ বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। শুল্ক স্থগিতের সম্ভাব্যতার বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেটার কথা ভাবছি না। অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে আসছে, আর এগুলো হবে ন্যায্য চুক্তি।’

চীন যদি মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আমদানিতে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ১০৪ শতাংশ।

নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর আগে, গত শুক্রবার চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল ‘মুক্তির দিন’ হিসাবে আখ্যা দিয়ে চীনের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কের অংশ হিসাবেই চীনের ওপরও তখন ওই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এর আগে গত মার্চেও চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।

এখন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও চীনের ওপর এই ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত এই মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানি করা মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য এক বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও অনেক বেশি হারে শুল্কের মুখোমুখি হবে।’ এই প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, ‘চীনকে চাপ বা হুমকি দিয়ে কখনোই লাভ হবে না।’

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা এই উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে। পণ্যে রপ্তানিতে চীনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হওয়ায় এই অতিরিক্ত শুল্ক চীনের উৎপাদকদের জন্য একটি বড় আঘাত।

নতি স্বীকার করবে না চীন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যাপক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কাছে নতি স্বীকার করবে না। গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল। এর জবাবে বেইজিং পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা জানায়। বেইজিংয়ের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার ট্রাম্প বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতি থেকে মার্কিন আমদানির ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে মন্তব্য করেন। এরপর ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক আরোপের মন্তব্যকে এভাবে নিন্দা জানাল চীন।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক বাড়ানোর মার্কিন হুমকি ভুলের ওপরে আরেকটি ভুল। এ ধরনের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাকমেইলিং স্বভাবকে উন্মোচিত করে। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সিদ্ধান্তে অটুট থাকে, তাহলে চীন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।’


পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনায় বসছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প ও খামেনি। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছে ইরান, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে মিল রয়েছে। কারণ ট্রাম্পও বলেছেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে যাচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, আগামী শনিবার পরোক্ষভাবে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পরে অবশ্য জানিয়েছে, আরাঘচি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে দেখা করবেন। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকবে ওমান। এর আগে ট্রাম্প সরাসরি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদি ইরান আলোচনায় না আসে তাহলে হামলারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। তাছাড়া তেহরানও এর আগে ওয়াশিংটনের আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছিল।

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশে বসে ট্রাম্প বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছি। এটি শনিবার হবে। আমাদের একটি খুব বড় বৈঠক আছে এবং আমরা দেখব কী হতে পারে। তিনি বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে বলেন, আমি মনে করি সবাই একমত যে একটি চুক্তি করাই ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, তেহরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না। যদি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় তাহলে ইরান বড় বিপদে পড়বে বলেও হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী কে?

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ইরান। ইতোমধ্যে ভেন্যু ও তারিখ চূড়ান্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনায় বসার বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। এরপর ট্রাম্পের ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করে ইরান।

ইরান জানিয়েছে, তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে। তেহরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সোমবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, আগামী শনিবার পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পরে জানিয়েছে, আরাঘচি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে দেখা করবেন। ওমানে এ বৈঠক হবে এবং দেশটি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করবে।

আরাঘচি এক্স-এ লিখেন, ‘ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র শনিবার ওমানে পরোক্ষ উচ্চস্তরের আলোচনায় বসবে। এটি যতটা সুযোগ, ততটাই পরীক্ষা। বল এখন আমেরিকার কোর্টে।’এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেন। তবে তার বক্তব্যে হুমকিমূলক বাক্য ছিল।

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছি এবং তারা সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে। শনিবার আমাদের খুব বড় একটি বৈঠক আছে এবং আমরা দেখব কী হতে পারে।

তেহরান এর আগে ওয়াশিংটনের আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছিল। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদেশগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল- ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় সহায়তা করলে তাদেরও পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, ইরানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন- পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি সংলাপের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে তেহরান। এর এক দিন পর ট্রাম্প আলোচনার ঘোষণা দেন এবং কয়েক ঘণ্টা পর তেহরান আলোচনার টেবিলে বসার তথ্যটি স্বীকার করে নেয়।


গাজা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এল ভয়াবহ তথ্য

আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গাজাবাসী। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৪৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। এবারের হামলার ভয়াবহতা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিরা বলছেন, এ দফায় বিশ্ব এগিয়ে না এলে তাদের বাঁচার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এর ভয়াবহতা উঠে এসেছে। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করার পর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের মানবিক সহায়তার সহকর্মীরা আমাদের জানিয়েছেন-গাজাজুড়ে ইসরায়েলি আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে নিয়মিতভাবে ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গাজায় অনেক শিশু নিহত এবং আহত হচ্ছে। অনেকে জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, গাজাজুড়ে বেঁচে থাকা মানুষদের বারবার বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে। এমন এক সংকুচিত স্থানে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে যেখানে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা অসম্ভব।

জাতিসংঘের হাতে আসা তথ্য উপস্থাপন করে ডুজারিক বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা অনুমান করি যে, যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রায় ৪ লাখ মানুষ আবারও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটি গাজার মোট ফিলিস্তিনির ১৮%। ডুজারিক আরও জোর দিয়ে বলেন, বাস্তুচ্যুতদের নিরাপত্তা এবং বেঁচে থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এর দায়িত্ব দখলদার শক্তি হিসাবে ইসরায়েলের ওপর বর্তায়।

জাতিসংঘ প্রায়ই ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অথচ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন এসবের কোনো তোয়াক্কাই করেন না। শুধু তাই নয়, গাজায় জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরাও হামলার শিকার হচ্ছেন। ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন স্থাপনা। যেমন- গত ২ এপ্রিল উত্তর গাজায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালায়। কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হামলাটি করা হয়। এতে অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরাও রয়েছেন।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তারা এই হামলাকে সম্পূর্ণ যুদ্ধাপরাধ বলে উল্লেখ করে বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইসরায়েলের ওপর কার্যত কোনো বিশ্বচাপ দৃশ্যমান হয়নি।

ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে। এতে গত এক দিনে ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সময় আহত হয়েছেন শতাধিক। তাদের অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সর্বশেষ নিহতের ঘটনায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। অপরদিকে যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পশ্চিম রাফায় আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শহরের পশ্চিম অংশ রাফায় আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলা অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে তেল আল-সুলতান পাড়ায় সব নিঃশেষ করে ফেলছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। তারা গত ২৩ মার্চ থেকে এলাকাটিতে ভয়াবহ সামরিক আক্রমণ চালিয়ে আসছে।

সেনাবাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ এবং বাফার নিরাপত্তা অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে এলাকাটি অবরুদ্ধ করে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি হয়েছিল। জিম্মিদের উদ্ধার এবং হামাস নির্মূলে হামলা আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল।

গাজায় ২১১ সাংবাদিক নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ২১১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। গতকাল মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি গণমাধ্যম তাঁবুতে গত সোমবার ভোরে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় পর ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি জারি করেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।

মিডিয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, ওই হামলায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া আহমেদ মনসুর গাজায় ইসরায়েলের নিহত ২১১তম গণমাধ্যমকর্মী। এতে বলা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশন, আরব সাংবাদিক ফেডারেশন এবং বিশ্বের সব দেশের সব সাংবাদিক সংগঠনের প্রতি গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে এই পদ্ধতিগত অপরাধের নিন্দা জানাতে আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজায় সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাতভর ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে উপত্যকাজুড়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং কয়েক বহু মানুষ। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, এদিন রাতে পশ্চিম তীরজুড়ে অভিযান অব্যাহত রাখে দখলদার বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে গ্রেপ্তার এবং উচ্ছেদ করা হয়।

বিষয়:

banner close