রাজধানীর পুরান ঢাকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকতে বাধ্য হন। নিম্ন আয়ের মানুষের বসতি থেকে শুরু করে বহুতল ভবনগুলোর অবস্থাও খুব বেশি আলাদা নয়। রাস্তাগুলোও ভীষণ সরু। যানজট তাই লেগেই থাকে বেশিরভাগ সময়।
রাজউকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগর পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এর মধ্যেই পুরান ঢাকার সাতটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজউকের পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই কাজে সমন্বয় করবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও (ডিএনসিসি) এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছে।
রাজউক বলছে, ‘ঢাকা নগর পুনঃউন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যেই এর প্রাক-উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)।
রাজউক বলছে, নগর পুনঃউন্নয়ন ধারণাটি বাংলাদেশে নতুন। তবে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ উন্নত বিশ্বের নানা দেশে এটি বহুল প্রচলিত একটি কৌশল। এই কৌশলের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা নগর বা ছোট ছোট প্লটে বিভক্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে এলাকাটির সম্পূর্ণ সংস্কার বা আংশিক পুনর্নির্মাণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ছোট ছোট প্লট একত্র করে পুরো এলাকা নিয়ে পরিকল্পনা করা হয় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন অবকাঠামো গড়া হয়।
রাজউক আরও বলছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একজন জমির মালিক স্বেচ্ছায় কিংবা কোনো সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নেয়া কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে জমি একত্রিত করে প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকরা প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে জমির হিস্যা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে সুযোগ-সুবিধা পান।
তবে নগর পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান। তিনি বলেন, এর বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং। কারণ, পুরান ঢাকায় একটি প্লটের মালিক অনেক ব্যক্তি, তাই জটিলতাও বেশি।
পুনঃউন্নয়নে নির্ধারিত ৭ এলাকা
রাজউক বলছে, প্রাথমিকভাবে বংশালের ১২ দশমিক ৭১ একর, চকবাজারের এক দশমিক ৪৬ একর, ইসলামবাগের ১৪ দশমিক ৯৪ একর, মৌলভীবাজারের শূন্য দশমিক ৬ একর, লালবাগের প্রায় ৩৩ একর, কামরাঙ্গীরচরের ৩৩ দশমিক ৭৬৩ একর এবং হাজারীবাগ এলাকার প্রায় ১১১ দশমিক শূন্য ৩ একর জায়গা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থাপনা আছে হাজারীবাগে।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য রক্ষায় জোর দিয়েছেন নগর পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজ করা হবে। পাশাপাশি পুরান ঢাকা দুর্যোগ সহনীয় হিসেবে গড়া হবে এবং সেখানে খোলা জায়গা থাকবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা