ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎবিষয়ক কর্তৃপক্ষ, দেশবাসীকে ফোন, টর্চ, ব্যাটারিসহ জরুরি ইলেকট্রনিক পণ্যে চার্জ পূর্ণ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনায় গতকাল বৃহস্পতিবারও হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওলেক্সান্ডার খারচেঙ্কো জানান, রাশিয়ার হামলায় দেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাশিয়ার হামলায় গত বুধবার তিনটি বিদ্যুৎস্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। জ্বালানি সংস্থাগুলো আসন্ন শীতের জন্য ‘সব সম্ভাব্য পরিস্থিতির’ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইইউ নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনে জেলেনস্কির ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। ইইউর দেশগুলো শীতের আগেই গ্যাসের দাম কমানোর বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘে চাপের মুখে রাশিয়া-ইরান
ইউক্রেনে ইরানের নির্মিত কামিকাজে ড্রোন হামলার অভিযোগ ঘিরে জাতিসংঘে চাপের মুখে পড়েছে মস্কো ও তেহরান। রাশিয়ার দাবি, যুদ্ধে তারা নিজেদের নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ নিয়ে তদন্তের বিরুদ্ধে দেশটি জাতিসংঘকে সতর্ক করেছে। অন্যদিকে মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেহরান।
আল-জাজিরা জানায়, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সোমবারের ড্রোন হামলার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ডাকে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে গত বুধবার রাশিয়ার উপ-জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জোর দিয়ে বলেন, অস্ত্রগুলো রাশিয়ায় তৈরি এবং তিনি ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং ষড়যন্ত্রের তত্ত্বের’ নিন্দা করেন।
কিয়েভে গত সোমবার ড্রোন হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত হন। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইউক্রেন বলেছে, এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে তারা ২২০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসব ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন ও তদন্ত করতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসকে আমন্ত্রণ জানায় কিয়েভ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, ইরান যে রাশিয়াকে কামিকাজে ড্রোন সরবরাহ করেছে তার প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। কামিকাজে ড্রোন ইরানের নির্মিত- শহীদ ১৩৬ ড্রোনগুলো কামিকাজে ড্রোন হিসেবে পরিচিত। ইরানের কাছ থেকে এসব অস্ত্র কেনার মাধ্যমে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে।
এদিকে জাতিসংঘে ইরানের দূত আমির সাইদ ইরাভানি রাশিয়ার কাছে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন এবং অপ্রমাণিত দাবি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তেহরানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা
মস্কোকে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ নিয়ে ইরানের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তেহরানের তিন জেনারেল এবং একটি অস্ত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। এদিকে ইইউর এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। এক টুইটে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, এসব ড্রোন েক টুইটেয়রজানিহামনিদে রাশিয়াকে ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে এবং বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সহায়তা করছে। এদিকে যুক্তরাজ্য খুব শিগগির ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। দেশটির সরকার জানায়, ইরান জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অমান্য করতে পারবে না।
শাখারভ পুরস্কার পেলেন ইউক্রেনের জনগণ
ইউক্রেনীয় জনগণকে শাখারভ পুরস্কারে ভূষিত করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। ইউক্রেনের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারের ৫০ হাজার ইউরো তুলে দেয়া হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়াইরত ইউক্রেনীয়দের প্রতি ইইউর সমর্থন জানাতে তাদের এ পুরস্কার দেয়া হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইইউর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ পুরস্কার ইউক্রেন যুদ্ধে প্রতিদিনকার স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতি সম্মান।’ মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ব্যক্তি ও সংস্থাকে শাখারভ পুরস্কার দেয়া হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা