আপডেট : ৭ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৩৯
‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ আনন্দে ভাসার অপেক্ষায় পাহাড়

‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ আনন্দে ভাসার অপেক্ষায় পাহাড়

বান্দরবান শহরের পুরাতন রাজবাড়ির মাঠে প্রবারণার রথ। ছবি: এস বাসু দাশ

এস বাসু দাশ, বান্দরবান

দুর্গোৎসবের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই পাহাড়ের বৌদ্ধ ধর্মানুসারীদের অন্যতম উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে বান্দরবান এখন উৎসবের শহর। স্থানীয় মারমারা তাদের ভাষায় একে বলে ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’।

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মারমা অধ্যুষিত বান্দরবানের ৭ উপজেলায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ওয়াগ্যোয়াই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হাজারও ফানুস ওড়ানো ও রথটানা। রথে জ্বালানো হয় হাজার হাজার বাতি। রংবেরঙের ফানুসের ঝলকানিতে রঙিন হয়ে ওঠে রাতের আকাশ। স্থানীয় ক্যাং বা বিহারগুলোও সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে। আলোর ঝলকানি জানান দিচ্ছে পাহাড়ের বড় উৎসব এখন সন্নিকটে।

ওয়াগ্যোয়াই উৎসবের সবচেয়ে বর্ণিল আয়োজন রথ টানা। মারমা তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন ধরনের মুখোশ পরে, গান গেয়ে ও নেচে বিশাল আকারের রথ টেনে নিয়ে যান মনের আনন্দে।

এ উৎসবে ঘরে ঘরে রাত জেগে বৈচিত্র্যময় পিঠাপুলি তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। চলতে থাকে আপ্যায়নের পালা। উৎসবকে কেন্দ্র করে আদিবাসীদের শেষ সময়ের কেনাকাটার ব্যস্ততা বেড়ে গেছে স্থানীয় দোকানগুলোতে।

ওয়াগ্যোয়াই উৎসবকে ঘিরে আগামীকাল শনিবার থেকে মঙ্গলবারর‌্য পর্যন্ত শহরের পুরাতন রাজবাড়ি মাঠে আয়োজন করা হয়েছে চার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান, ছোয়াইং দান, বিশেষ প্রার্থনা, বর্ণাঢ্য রথযাত্রা ও রথ উৎসর্গসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিংওয়াই মারমা বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ওয়াগ্যোয়াই পালনের জন্য ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রবারণা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

১০ অক্টোবর মধ্যরাতে শঙ্খ (সাঙ্গু) নদীতে রথ উৎসর্গ করা হবে এবং স্থানীয় বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ধর্মীয় আলোচনা ও নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ উৎসবের ইতি টানা হবে। অনুষ্ঠানগুলোতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন, পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, প্রবারণা উপলক্ষে জেলার ১৪০টি বৌদ্ধ বিহারে ত্রাণকার্য (চাল) এর ডিও বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে পাহাড়ের রঙিন উৎসব দেখতে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় করছেন বান্দরবানে। এ উৎসবকে সামনে রেখে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।