‘জীবনে এই প্রথম হাইকোর্টে আইছি। আগে কখনো আসি নাই। জামিন পাওয়ার জন্য কোর্টে আইছি।’ কথাগুলো বলছিলেন আগাম জামিন নিতে আসা সত্তর বছরের আলী হোসেন।
জমিবিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা করে। সেই মামলায় আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছেন ময়মনসিংহ হালুয়াঘাটের বাসিন্দা আলী হোসেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই উচ্চ আদালতের বারান্দায় অপেক্ষার প্রহর গুনেছেন আলী হোসেনের মতো শত শত মানুষ। তারা প্রত্যেকেই এসেছেন আগাম জামিন নিতে।
ঈদের ছুটির আগে মঙ্গলবারই শেষ কর্ম দিবস ছিল হাইকোর্ট বিভাগের। এ জন্য জামিন প্রার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আগাম জামিনের শুনানি হয়। বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রায় ৫০০ মামলার তালিকা রয়েছে। যে কারণে ওই বেঞ্চের সামনে জামিন প্রার্থীদের প্রচণ্ড ভিড়।
এ সময় কথা হয় আলী হোসেনের সঙ্গে। তিনি মামলার বিস্তারিত না বললেও শুধু এটুকু বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। আলী হোসেনসহ ১২ জন আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন। ঈদের আগে পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচতে আগাম জামিন নিতে চান তারা। আলী হোসেনের সঙ্গে থাকা তমিজ উদ্দিন শিকদার বলেন, ঈদের পরই দুই পক্ষ বসে মীমাংসা করে ফেলব। যেহেতু মামলা হয়েছে গেছে, তাই গ্রেপ্তার এড়াতে আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছি।
একইভাবে কথা হয় কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মিলনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়। সেই মামলায় আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে আসছি।’
পাশে দাঁড়ানো যশোরের অভয়নগর থানার বাসিন্দা সোহাগ মল্লিকসহ অনেকেই আগাম জামিন নিতে আদালতে এসেছেন। সোহাগ বলেন, ‘জমি নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে মারামারি হয়। পরে মামলা করে অপর পক্ষ। এই মামলায় জামিন নিতে এসেছি।’
আইনজীবী জে আর খান রবিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস সে কারণে বিচারপ্রার্থীদের অনেক ভিড়। আমি আজকে ১৬ জনের আগাম জামিন করিয়েছি। একটি রাজনৈতিক মামলায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানার মামলায় সবাইকে আগাম জামিন দিয়েছেন আদালত।’ কোর্টে অনেক ভিড় থাকায় জামিন শুনানিতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে বলেও তিনি জানান।
গত ৯ এপ্রিল থেকে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের অবকাশকালীন ছুটি শুরু হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে জরুরি মামলা শুনানির জন্য অবকাশকালীন পাঁচটি বেঞ্চ খোলা রাখা হয়েছে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা