মনে করুন, হাজার হাজার টাকা খরচ করে আপনি একটা স্মার্টফোন কিনলেন। নতুন নতুন সব সুবিধা উপভোগ করলেন। অথচ বছরখানেক পর বাজারে নতুন মডেলের স্মার্টফোন এল আর আপনার নিজেকে সেকেলে মনে হতে শুরু করল। আর দুই বছর পেরোলে নতুন ফোন যেন না কিনলেই নয় অবস্থা। স্মার্টফোনের এই সংক্ষিপ্ত জীবনচক্র অনেকটা অনুমিতই।
সিনেটের খবরে বলা হয়েছে, ক্রেতার জন্য ব্যাপারটা ব্যয়বহুল, ক্লান্তিকরও। আর বিক্রেতা কিংবা উৎপাদকের জন্য এই চক্র লাভের প্রবাহ বজায় রাখার কৌশল। অ্যাপল আর স্যামসাং যেমন প্রতিবছর নতুন আইফোন কিংবা গ্যালাক্সি স্মার্টফোন বাজারে আনে। কারণ তারা জানে, যেকোনো সময় গ্রাহক ফোন কেনার জন্য বাজারে যেতে পারেন আর ক্রেতা সচরাচর আকর্ষণীয় কিছু চান যা দেখে তারা চমকে যাবেন।
অনেকেই আছেন, যারা এক স্মার্টফোনে বছরের পর বছর পার করে দেন। তবে নতুন ফোন বাজারে এলেই কেনার মানুষও কম নেই। তা ছাড়া হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে যেতে পারে, হারিয়ে যেতে পারে, পানিতে পড়ে নষ্ট হতে পারে। অর্থাৎ নতুন একটি ফোন দরকার। আর সময় মিলে গেলে বাজারে আসা নতুন মডেলটিই হয়তো গ্রাহক কিনবেন। স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও চায় যেন ক্রেতা যখনই বাজারে যাক, তাদের প্রতিষ্ঠানের নতুন কোনো ফোন যেন তাকে থাকে।
এমনকি নতুন ফোন কেনার কোনো প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও তা কেনার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি হতে পারে। মনে হতে পারে, নতুন ফোনের উন্নত ক্যামেরা কিংবা বড় স্ক্রিন ব্যবহার না করতে পারলে জীবনটাই বৃথা। সমস্যা হলো, বেশির ভাগ ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের দাম ৫০ হাজার টাকার ওপরে। স্যামসাং বা অ্যাপলের বেলায় সেটা লাখের ওপরে। তাই চাইলেই নতুন ফোন কেনা সম্ভব হয় না। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয় ২৪ মাস। ২০১৬ সালে যা ছিল ২২ মাস। তাতে অবশ্য স্মার্টফোন নির্মাতাদের বছর বছর নতুন স্মার্টফোন বাজারে ছাড়া থেমে থাকেনি।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা