দীর্ঘ তিন মাসের বিরতির পর পর্যটক, বনজীবী ও মৎস্যজীবীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে সুন্দরবন। গত বুধবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনে পর্যটনের নতুন মৌসুম। প্রথম দিনে খুলনা থেকে দুটি জাহাজে ১১৫ জনের টিম গিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বনে। আজ শুক্রবার ২৫০ পর্যটক নিয়ে সুন্দরবন পৌঁছাবে আরও ছয়টি জাহাজ।
সুন্দরবনের নদ-নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুমের কারণে গত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস ইকো-ট্যুরিজমসহ বনজীবীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সুন্দরবন মুখর হতে শুরু করেছে পর্যটকদের উপস্থিতিতে।
পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে সড়কপথে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের দূরত্ব কমেছে। ফলে সময় বাঁচবে তিন ঘণ্টা। তাই এবার পর্যটকদের জন্য নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এ পর্যটন মৌসুম চলবে আগামী বছরের ৩১ মে পর্যন্ত।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার বলেন, সুন্দরবন জল-স্থলভাগ শুধু জীববৈচিত্র্যেই নয়, মৎস্য সম্পদের আঁধার। সেই কারণে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। এ বছর থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে বন্ধের সময় এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস করেছে বন মন্ত্রণালয়।
মিহির কুমার আরও বলেন, এই তিন মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বন্ধ করা হয় সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট ও নৌ-চলাচল। ফলে তিন মাস গোটা সুন্দরবন ছিল জেলে ও পর্যটকশূন্য। তিন মাস পার হওয়ায় সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারছেন পর্যটকরা। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বনজ সম্পদ আহরণের জন্য পাস-পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করতে পারছেন বনজীবীরাও।
বন বিভাগ ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তিন মাস সব ধরনের মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপশি সুন্দরবনে পর্যটকসহ বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় ২১০ প্রজাতির মাছের পাশাপাশি ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণীর প্রজনন ও বংশবিস্তারে সুফল আনবে।
এদিকে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোট চালকরা এখন পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত। পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশের ট্যুর অপারেটররা তাদের লঞ্চসহ বোটগুলোকে রঙতুলির আঁচড় দিয়ে ও প্রয়োজনীয় মেরামত সেরে নতুন করে সাজিয়েছেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা