মুসলমানদের দলবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য নির্মিত ধর্মীয় একটি স্থাপনার নাম ‘মসজিদ’। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামাজ পড়ার জন্য রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। মসজিদটি ক্যাম্পাসের এক অংশে ২০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত, যেটি ৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মিত হয়েছে।
তিন গম্বুজবিশিষ্ট তিন তলা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ২ হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদের ফ্লোরে ব্যবহার করা হয়েছে মার্বেল পাথর, রয়েছে ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম। কেন্দ্রীয় মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে এবং মসজিদটি উদ্বোধন করা হয় ২০২০ সালের আগস্ট মাসে। ক্লাস, পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের ফাঁকে মুসলিম শিক্ষার্থীরা নিয়মিত নামাজ আদায় করতে আসেন এই মসজিদ। ছেলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে।
‘মসজিদ’ মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলির প্রাণকেন্দ্র। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলি (দোয়া মাহফিল, কোরআন পাঠ এবং ইসলামিক শিক্ষা প্রদান ইত্যাদি) পালিত হয়। অর্থাৎ এখানে প্রার্থনা করা ছাড়াও শিক্ষা প্রদান ও তথ্য বিতর়ণ করা হয়ে থাকে। গুরুত্বের বিষয় হলো- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ক্যাম্পাসের এক কোনায় মহাসড়কের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় যাত্রাপথের অনেক পথিক এবং যাত্রীও এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সঙ্গে প্রকৃতির যেন এক গভীর যোগসূত্র আছে। যেমন- শরতকালে এই মসজিদের চারপাশে যখন কাশফুল হেলেদুলে পড়ে তখন এক অন্যরকম নয়নাভিরাম দৃশ্য তৈরি হয়। আর শীতের কুয়াশার মাঝেও মসজিদের সুউচ্চ গম্বুজগুলো জ্বলজ্বল করে। উল্লেখ্য, বরিশাল জেলায় গুটিয়া মসজিদের পরে অন্যতম এক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদকে ধরা হয়।
পরিশেষে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো তা হলো- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার জন্যেও রয়েছে একটি মন্দির। মোদ্দাকথা এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত তাদের নিজস্ব ধর্মীয় উৎসব পালন করার সুযোগ পায়।
লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে কুখ্যাত খুনিদের একজনের চামড়ায় বাঁধানো একটি বইয়ের সন্ধান মিলেছে একটি জাদুঘরের কার্যালয়ে। ১৮২৭ সালে ইংল্যান্ডে সাফোকের পোলস্টিডে রেড বার্ন গুদামঘরে প্রেমিকা মারিয়া মার্টেনকে খুন করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন উইলিয়াম কর্ডার নামের এক ব্যক্তি। তার চামড়া দিয়েই বইটি বাঁধানো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাফোকের ময়সেস হল মিউজিয়ামে এই বই একইরকম অন্য আরেকটি বইয়ের সঙ্গে প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হেরিটেজ কর্মকতা ড্যান ক্লার্ক বলেছেন, এই বইগুলোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মূল্য আছে। তাছাড়া, মানুষের চামড়ায় বাঁধানো প্রথম বইটি জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রেখে তিনি কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান।
‘হরিবল হিস্টোরিজ’ রচনা সমগ্রের লেখক টেরি ডেয়ারি অবশ্য এই প্রত্নবস্তুগুলো বীভৎস বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এমন দুটো বই-ই তিনি পুড়িয়ে ফেলতে চান।
সাফোকের পোলস্টিডে ১৮২৭ সালের ওই খুনের ঘটনা জর্জিয়ান ব্রিটেনকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। তখন থেকেই ঘটনাটি বহু সিনেমা, বই, নাটক এবং লোকগীতির বিষয়বস্তু হয়ে আছে।
সবচেয়ে বেশি চাউর হয়েছে কর্ডারের সঙ্গে মার্টেনের প্রেমকাহিনীর সংস্করণ। এই কাহিনীতে বলা আছে, কর্ডার রেড বার্ন -এ দেখা করার জন্য আসতে বলেছিলেন প্রেমিকা মার্টেনকে।
সেখান থেকে পালিয়ে একটি শহরে গিয়ে তারা বিয়ে করবেন বলেও জানিয়েছিলেন কর্ডার। কিন্তু সেই রেড বার্নেই মার্টনকে গুলি করে খুন করেন কর্ডার এবং খড়ের গাদায় পুঁতে দেন লাশ।
১৮২৮ সালের ১১ আগস্ট কর্ডার ধরা পড়েন এবং প্রকাশ্যেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার মৃতদেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় এবং চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা হয় বই। সেই বইয়ে লিপিবদ্ধ ছিল কর্ডারের বিচারের কাহিনি।
১৯৩৩ সালে বইটি জাদুঘরে প্রদর্শন করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়করা ক্যাটালগ দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন সেখানে আরেকটি বই রয়েছে যেটি এত দিন চোখে পড়েনি।
সেই বইটি জাদুঘরে দান করেছিল একটি পরিবার, যাদের সঙ্গে কর্ডারের দেহ কাটাছেঁড়া করার সার্জনের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। বইটি জাদুঘরের গুদামে ছিল না, বরং ছিল কার্যালয়ের বইয়ের শেলফে অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে।
কিন্তু বইটি বাঁধাই করা ছিল অনেক বেশি সনাতনী উপাদান দিয়ে। হেরিটেজ কর্মকর্তা ক্লার্ক বলেন, জাদুঘরে হারানো বই আমরা খুঁজে পেয়েছি। যেটি দশকের পর দশক ধরে দেখা হয়নি।
কর্ডারের চামড়ায় বাঁধানো প্রথম বইয়েরর সঙ্গে দ্বিতীয়টির কিছুটা পার্থক্য আছে। প্রথম বইয়ের চামড়ার মলাট অনেকটাই পূর্ণাঙ্গ। আর দ্বিতীয় বইয়ের কেবল বাঁধাইয়ের জায়গা এবং কোনাগুলোতে চামড়া লাগানো আছে।
মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাই করা ‘এনথ্রোপোডার্মিক বিবলিওপেজি’ নামে পরিচিত। ‘হরিবল হিস্টোরিজ’-এর লেখক টেরি ডেয়ারির মতে, একজন মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার চেয়েও জঘন্য কাজ হচ্ছে মৃত্যুর পর তার দেহ ছিন্নভিন্ন করা। চামড়া দিয়ে বই বাধাঁনো আরও বাড়াবাড়ি।
তবে হেরিটেজ কর্মকর্তা ক্লার্ক বলছেন, ‘দেশজুড়ে প্রতিটি জাদুঘরেই আমরা মানুষের দেহাবশেষ দেখতে পাই।’
সূত্র: বিডিনিউজ
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। তার ১৯ দফা কর্মসূচি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূল তন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি ছিল। ১৯ দফাতেই স্বনির্ভর বাংলাদেশের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। তার আমলে জনপ্রিয় খালকাটা কর্মসূচি চালু করে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ অপবাদ থেকে দেশকে শস্য ভাণ্ডারে রূপান্তরিত করে। তাইত জিয়া অল্পদিনেই জনগণের জনপ্রিয় নেতা হতে সক্ষম হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জাতির ক্রান্তিলগ্নে জনগণের সামনে নিয়ে আসেন ভিষণ ২০৩০। এরই আলোকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমন্বয়ে ও আরও সুপরিসরে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভরসা হিসেবে সমাদৃত হয়েছে রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে তারই ৩১ দফা কর্মসূচি।
তার ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে অনেক জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দলকে একই প্ল্যাটফর্মেও আনতে সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ এ দর্শন নিয়ে দেশে অনুষ্ঠিত কনসার্টগুলো অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে। সবার আগে বাংলাদেশ এই টাইটেলের মাধ্যমে দেশকে ভালোবাসার কথা মমত্ববোধের কথা যেন ধ্বনিত হচ্ছে। তার এ তত্ত্বের মাধ্যমে যেন আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সেই বিশেষ বাক্যটি যেন উচ্চারিত হচ্ছে- ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড় আর দলের চেয়ে দেশ বড়।’
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার ১৭ বছরে দেশের রাষ্ট্রের এমন কোনো খাত নেই যেখানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেননি। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে মানুষের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই অবস্থায় দেখতে পাই তারেক রহমানের ভূমিকা। দৃঢ় কণ্ঠে তার কর্মীদের ধৈর্যধারণ ও প্রতিহিংসা পরিহার করার জন্য আহ্বান জানান। তার আহ্বানে বেশ সাড়া মেলে। যেহেতু রাষ্ট্রের সব কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে তা মেরামত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান। মেরামত করার লক্ষ্য নিয়ে জনগণের সামনে গবেষণার ফসল ৩১ দফা কর্মসূচি পেশ করেছেন। তিনি এ ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন। ওয়ার্ড পর্যায়, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা এবং জেলাপর্যায়ে ৩১ দফার কর্মসূচির প্রশিক্ষণ চলছে। অনেক ক্ষেত্রে তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাতদিন মিটিং-এ অংশগ্রহণ করে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। কর্মীদের প্রতিটি ঘরে ঘরে ৩১ দফার কর্মসূচির বিষয়টি জানানোর জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।
রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ফসল নয় বরং রাষ্ট্র হলো আপামর জনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। রাজা চতুর্দশ লুই বলেছিলেন ‘আমিই রাষ্ট্র’। এই আমিত্ববোধের জন্য সেই চতুর্দশ লুইকে প্রাণ দিতে হয়েছিল গিলোটিনে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও নিজেকে মনে করতেন তিনিই বাংলাদেশ; কিন্তু গণভবনের পেছনের দরজা দিয়ে তাকেও পালিয়ে বাঁচতে হয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদকেও এক সময় ক্ষমতা ত্যাগ করতে হয়েছে। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মনে করেন ৩১ দফা বাস্তবায়নের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের মালিকানা হবে দেশের সব জনগণের এবং যে রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হবে ন্যায্যতা ও সাম্যের ভিত্তিতে এবং সব মানুষের অংশগ্রহণের ভেতর দিয়ে। তারেক রহমান তার প্রতিটি বক্তব্যে বারবার বলেছেন দলীয় নেতা-কর্মীকে জনগণের মনকে জয় করতে হবে আর জনগণের মন জিতে নেওয়ার ভেতর দিয়েই জনগণের দলে পরিণত হতে হবে। তিনি মনেপ্রাণে চান বিএনপি যেন জনগণের দল হয়। তাই তো বলেন, মনে রাখতে হবে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনের ভেতর দিয়ে একটি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ভিত্তিমূল হিসেবে কাজ করবে বহুল কাঙ্ক্ষিত ৩১ দফা।
তারেক রহমান মনে করেন তার প্রতি তার পরিবার ও দলীয় নেতা-কর্মীর ওপর যে অত্যাচার ও নির্যাতন হয়েছে সেটির জবাব দিতে ৩১ দফার সফল বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি মনে করেন ৩১ দফার সফল বাস্তবায়নের ভেতর দিয়ে ভোটের অধিকার আদায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলেই একটি বসবাসযোগ্য আগামীর রাষ্ট্র নির্মাণ করা সম্ভব। অতি সম্প্রতি নিজের একটি বক্তব্যে উল্লেখ করেন তার পিতাকে হত্যা করা হয়েছে তার মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সীমাহীন কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তার কনিষ্ঠ ভাইকে হত্যা করা হয়েছে, তাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে এক নির্বাসিত জীবনে। তিনি বলেছেন এসব ভুলে গিয়ে তিনি ৩১ দফার নিরিখে নির্মাণ করতে চান ভারতের নাগপাশ থেকে মুক্ত একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের আগ্রাসনে বাংলাদেশের জনগণ অতিষ্ঠ। গত ১৭ বছরে আওয়ামী শাসনামলে এটি অমন হয়েছিল যে শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য খাত, অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া যেন অকল্পনীয় ছিল। জনগণ এটাকে নেতিবাচক হিসেবে নিয়েছিল। ক্রমান্বয়ে দেশ যেন ভারত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এরা আমাদের স্থিতিশীলতা গণতন্ত্র বিকাশ অর্থনৈতিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্নের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা হচ্ছে ভারতীয় আগ্রাসন মুক্ত সেই সার্বভৌম ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার বীজ যে বাংলাদেশ ছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার প্রথম দফায় এক যুগান্তকারী ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যেখানে বলা আছে ‘প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যহীন সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।’ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে অগ্রগণ্য রেখে সব মত ও পথকে এক সুতোয় গাঁথার কর্মযজ্ঞ ইতোমধ্যে তারেক রহমানের বক্তব্যের ও দেশব্যাপী দেশের মানুষকে ৩১ দফার আলোয় আলোকিত করার নানান কর্মসূচির মধ্যে ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
শিক্ষা সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে তারেক রহমানের ভাবনা হলো- আমাদের শিক্ষার মান যাচ্ছেতাই অবস্থা। বিগত সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করেছে কিন্তু শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে পারেনি। ৩১ দফায় শিক্ষার বিষয়ে উল্লেখ আছে, ‘বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান নৈরাজ্য দূর করে নিম্ন ও মধ্যপর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হবে। একই মানের শিক্ষা ও মাতৃভাষায় শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া হবে। যোগ্য ও দক্ষ মানবিক জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপি ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে। ক্রীড়া উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ পর্যাপ্ত থাকবে। অনৈতিক সংস্কৃতি অগ্রাসন রোধ করা হবে।’ রাষ্ট্র সংস্কারের সঙ্গে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি এখানে মিল পাওয়া যায় যেমন- পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রতিযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চ কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে। সমাজে দুর্নীতি যেন রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছেয়ে আছে ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যাংক লুটের মাধ্যমে, প্রকল্পের অর্থের নয়ছয় করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। দুর্নীতির ব্যাপারে ৩১ দফা কর্মসূচিতে উল্লেখ আছে- ‘দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না।বিগত দেড়দশকব্যাপী সংগঠিত অর্থ পাচার ও দুর্নীতি অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং শ্বেতপত্রে চিহ্নিত দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশের বাইরে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে দুদকের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে।’
দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দারিদ্র্য বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধা বঞ্চিত হত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করা হবে। শহীদ জিয়া কৃষি খাতকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন ৩১ দফার ক্ষেত্রে এর নমুনা দেখতে পাচ্ছি, যথা: কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে ভর্তকি দিয়ে হলে ও শস্য বিমা, পশু বিমা, মৎস্য বিমা এবং পোলট্রি বিমা চালু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে। কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং গবেষণার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এতদসংশ্লিষ্ট রপ্তানিমুখী কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প খাতকে প্রণোদনা দেওয়া হবে। দেশের সম্পদ হলো যুবসমাজ তাদের নিয়ে ও কর্মসূচি আছে, যেমন- যুবসমাজের ভীষণ চিন্তা আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আধুনিক যুগোপযোগী যুবউন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এক বছরমেয়াদি অথবা কর্মসংস্থান না পর্যন্ত যেটাই আগে হবে শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে নানামুখী বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এবং স্বাচ্ছা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তারই সন্তান তারেক রহমান রাষ্ট্রের দায়িত্ব পেলে দেশেই স্বাধীন সার্বভৌমত্ব সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা পাবে। তারই ইচ্ছার প্রতিফলন ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে জাতির প্রত্যাশা।
লেখক:
মিজানুর রহমান
সাবেক ব্যাংকার ও কলামিস্ট
বিষন্নতা ভর করা আবেগী কোনো মন। হৃদয়ের অব্যক্ত বাসনাগুলো কিছু বলতে চায়। সমাজের বানানো শৃঙ্খল হয়তো কাঁটা হয়েছে মনের দুয়ারে। কিন্তু তা নিয়ে কিছু বলা মানে পাথরের সমাজে অন্যায়। তবে হারিয়ে যাওয়া সেই মন কিছু বলতে চায়। দম বন্ধ হয়ে থাকা কথাগুলো আবেগ-স্পর্শে বাইরে আসতে চায়। ঠিক তা যেনো রং আর তুলির আঁচড়ে বলে যায় হাজারো না বলা কথা। প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় কিংবা কঠিন কোনো দমকা বাতাসের মতো আঁকা বা বলা হয়ে যায় সেই কথা। যা শুধু শিল্পী আর রংয়ের ছোঁয়াগুলোই বুঝে সেসব ভাষা।
পাঠক, এমনি একজন তরুণ চিত্রশিল্পী লুৎফা মাহমুদা। যিনি তার কাজের মধ্যে ফুটিয়ে তোলেন মানুষের আবেগের সম্পর্কগুলোকে প্রকৃতির ছবিতে। সেসব ছবি দেশে-বিদেশের নানা প্রদর্শনীতে বেশ প্রশংসা অর্জনও করেছেন।
লুৎফা মাহমুদা ভারতের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। তাঁর শিল্পকর্মে মানুষের আবেগ, সামাজিক সম্পর্ক এবং পরিবেশের প্রতিফলন দেখা যায়। তাঁর অনন্য শৈলী বাস্তবতাবাদ এবং বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদের উপাদানগুলোর এক ব্যতিক্রমী মিশ্রণ, যা শক্তিশালী ও চিন্তাকর্ষক চিত্ররচনার মাধ্যমে দর্শকদের আকর্ষণ করে।
তাঁর শিল্পকর্মে পরিচয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বিশ্বায়নের প্রভাব অনুসন্ধান করা হয়। প্রাণবন্ত রঙ এবং সূক্ষ্ম বিবরণ ব্যবহার করে তিনি এমন চিত্র সৃষ্টি করেন যা দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখে এবং বিশ্বের জটিলতা নিয়ে ভাবতে অনুপ্রাণিত করে।
লুৎফা মাহমুদার শিল্পকর্মে পরিচয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বিশ্বায়নের প্রভাব অনুসন্ধান করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
কাজের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকা লুৎফা অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে নিজের নিষ্ঠা-একাগ্রতা- অধ্যাবসায়সহ কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই। মনের কোণায় জমে থাকা নিশ্চুপ কষ্টগুলোকে আড়ালে রেখে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ শিল্প মাধ্যমে তিনি নিজের সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
কথায় কথায় বললেন, ‘দেশের অনেক সেক্টরের মতোই আমাদের জগতেও বেশ সিন্ডিকেট রয়েছে। এটার অনেক শিকার হয়েছি আমি। দেখা গেছে একটা কাজের আগে আমাকে নিয়ে নানাভাবে পজিটিভ কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু ফাইনাল প্রজেক্টের সময় আমি নাই। তখন আমি কিছু বলি নাই। নিরবে সরে এসেছি। আসলে আমি কাজে বিশ্বাসি। আমি এটা জানি- যোগ্যতা থাকলে কোনো পলিটিক্স করেই কেউ কাউকে আটকিয়ে রাখতে পারবেন না। আজ আমি বেশ ভালো ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এমনও হয়েছে যারা আমাকে নিয়ে পলিটিক্স করেছেন, তারা দেখা গেছে আমার গ্রুপে থাকা কারও সঙ্গে কাজ করছেন। এটাই আমার পাওয়া।’
এতো গেলো কাজ নিয়ে গ্রুপিং-সিন্ডিকেটের কথা। নিজের কাজের কথা আসতেই লুৎফা বললেন, ‘আমি প্রকৃতি থেকেই কাজের অনুপ্রেরণা পাই। মানুষের মনের অনুভূতিগুলো প্রকৃতির মাধমে ফুটিয়ে তুলি। প্রকৃতি যেমন শান্ত-স্নিগ্ধ। আমি মনেকরি মানুষের মনটাও তাই। আবেগগুলোও তেমন। যা আমি আমার ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। তাছাড়া লেখালেখি করা আমার একটা অন্যরকম ভালো লাগার জায়গা। আমি যেহেতু একটু ইন্ট্রুভাট টাইপের মানুষ। তাই সময় পেলে কবিতা লেখার মাধ্যমে আমার মনের কথাগুলো বলি। সেই লেখাগুলোও আমার ছবির ক্যানভাসে স্থান পায়।’
নিজের চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠার বিষয়ে লুৎফা জানান, টাঙ্গাইলে এইচএসসি পাশ করার পরই চলে যান শান্তিনিকেতনে। সেখানে গ্রাফিক আর্টসে পড়াশোনা করে পেইন্টিংসের ওপর কাজ করা শুরু করেন। পেশাগতভাবে পেইন্টিংসকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। বেশ কিছু বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করে বাড়িয়ে তোলেন আত্মবিশ্বাস। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পেইন্টিংস নিয়ে ঘুরেছেন নানা দেশে। পরিচিত হয়েছেন সেসব দেশের চিত্রকর্ম আর সাধারণ মানুষের জীবনাচারের সঙ্গে। সব দেখেশুনে তিনি এখন সফল, পেশাদার নিভৃতচারী একজন চিত্রশিল্পী।
শান্তিনিকেতন থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে বাংলাদেশে ফেরার পর থেকে পেশার শুরু এবং এর বিস্তৃতি অনেকটা গল্পের মতো। শুরুতেই তিনি পেইন্টিংসের কাজ পেলেন দেশের নামি একটি কোম্পানির পক্ষ থেকে। দেশে দিতে থাকলেন একের পর এক চিত্রপ্রদর্শনী। এসব প্রদর্শনীর মাধ্যমেই তিনি মূলত বাংলাদেশে শিল্পী হিসাবে লুৎফার পরিচিতি বাড়তে থাকে। এরপরই চিত্রকর্ম নিয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে তার সফল পদচারণা।
তিনি আন্তর্জাতিকভাবে চিত্রকলা পাঠদান ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি তাসখেন্টের ফাইন আর্টস একাডেমিতে একজন অ্যাজান্কট ফ্যাকাল্টি হিসেবেও কাজ করেছেন এবং শিল্প প্রকল্পের আয়োজন ও প্রদর্শনী কিউরেট করেছেন। উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তাঁর একক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর শিল্পকর্ম থাইল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, মালদ্বীপ, দুবাই, চীনসহ বহু দেশে প্রদর্শিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, প্যারিসের হারমোনিস্টস পারফিউম, বিভিন্ন দূতাবাস ও কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর কাজ উপস্থাপিত হয়েছে।
লুৎফা মাহমুদার একটি শিল্পকর্ম। ছবি: সংগৃহীত
তিনি সায়পা পুরস্কার, ইন্টারন্যাশনাল আর্ট বিয়েনালে, এশিয়ান আর্ট বিয়েনালেসহ জাতীয় চিত্রপ্রদর্শনী (শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক), এবং শি’আনের সিল্ক রোড প্রদর্শনীর মতো নানা আন্তর্জাতিক শিল্প প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন।
লুৎফা মাহমুদা ভারতীয় খ্যাতনামা শিল্পী সনৎকার, কে.জি. সুব্রহ্মণ্যন এবং সোমনাথ হোর-এর শিল্পকর্ম সংগ্রহ করেছেন।
পেইন্টিংস নিয়ে লুৎফা মাহমুদার বিশেষ স্বপ্নের জায়গাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই চেয়েছি, পেইন্টিংস নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বদল করা। পেইন্টিংসটাকে যারা শুধু সুদৃশ্যমান কোনো চিত্র ভেবে থাকেন, তারা ভুল করেন, তাদের এ দৃষ্টিভঙ্গিটাকে বদলাতে হবে। পেইন্টিংসটা একটা ঐতিহ্যও-সেটা বোঝানোর জন্য আর্ট-অ্যাক্টিভিটিজের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কথা বলা জরুরি। আমি চাই, আর্টিস্টদের কথা বলার মতো সে রকম একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হোক।’
নিজের বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে লুৎফা জানান, সামনে বেশকিছু বড় বড় প্রজেক্টের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রাইভেট কিছু কোম্পানির জন্য পেইন্টিংয়ের কাজ করার পাশাপাশি দেশে অবস্থিত বিদেশি অ্যাম্বাসির কাজ নিয়েও রয়েছে ব্যস্ততা। এছাড়া বেশকিছু চিত্র প্রদর্শনীর কাজ গোছাচ্ছেন বলে জানান লুৎফা মাহমুদা।
রমজানের দীর্ঘ এক মাস রোজার পর ঈদ আসে আনন্দ ও খুশির বার্তা নিয়ে। তবে এই আনন্দ অনেকের জন্য কিছুটা অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যদি খাবারের ব্যাপারে সতর্কতা না নেওয়া হয়।
ঈদে ও পরের কয়েক দিন অতিরিক্ত খাওয়া, তৈলাক্ত ও ভারী খাবারের আধিক্য এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে অনেকেই পেটের সমস্যায় ভোগেন।
বদহজম, গ্যাস, বমি, ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটি ইত্যাদি সমস্যা এড়াতে খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে দীর্ঘ দিনের সংযমের পর হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
হেল্থ এইড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আফিফ বাসার এই বিষয়ে বলেন, “রোজার এক মাস শরীর একটি নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যায়। হঠাৎ করে অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই ঈদের দিন ও পরের কিছুদিন খাদ্য তালিকা ভারসাম্যপূর্ণ রাখা খুবই জরুরি।”
ঈদের দিনে খাবারের পরিকল্পনা
ঈদের দিনে অনেকেই প্রচুর পরিমাণে সেমাই, পায়েস, বিরিয়ানি, কোরমা, রোস্ট, মিষ্টান্ন ইত্যাদি খেয়ে ফেলেন।
তবে পার্সোনা হেলথের পুষ্টিবিদ শওকত আরা বলছেন, “খাবার অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে এবং দিনের বিভিন্ন সময় ভাগ করে খাওয়া উচিত।”
ঈদের খাবারে পোলাও, মাংস, বিরিয়ানি, মিষ্টিজাতীয় খাবার
এই ধরনের খাবার বেশি খাওয়া হয়। আর অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটি, এবং অন্যান্য পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসব খাবার কেমন পরিমাণে এবং কীভাবে খাওয়া উচিত, তা জানা জরুরি।
পোলাও ও বিরিয়ানি
পরিমাণ: ১ কাপ (১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম) পর্যন্ত খেতে পারেন, তবে এটি পুরো প্লেট ভরে না খেয়ে সালাদ ও টক দইয়ের সঙ্গে খাওয়া উচিত।
খাওয়ার পদ্ধতি: দুপুরের খাবারে খেলে ভালো হয়, রাতে এড়িয়ে চলা ভালো। কারণ এতে কার্বোহাইড্রেইট বেশি থাকে, যা রাতে ধীরে হজম হয় এবং ওজন বাড়তে পারে।
গরু ও খাসির মাংস
পরিমাণ: দিনে দুতিন টুকরার বেশি খাওয়া ঠিক নয় (প্রায় ৭৫-১০০ গ্রাম)।
খাওয়ার পদ্ধতি: বেশি তেল-মসলা ছাড়া রান্না করা হলে ভালো হয়। গ্রিল্ড, সেদ্ধ বা হালকা ভাজা অবস্থায় খাওয়া ভালো। রাতে ভারী মাংস না খাওয়াই শ্রেয়।
মুরগির রোস্ট ও কাবাব
পরিমাণ: দুতিন টুকরা (৭৫-১০০ গ্রাম) খাওয়া নিরাপদ।
খাওয়ার পদ্ধতি: গ্রিল্ড, বেইকড বা কম তেল-মসলাযুক্ত রোস্ট বা কাবাব খাওয়া ভালো। মুরগির মাংস গরুর মাংসের তুলনায় হজমে সহজ, তাই এটি দুপুর বা রাতের যে কোনো সময় খাওয়া যেতে পারে।
ফিরনি, জর্দা ও অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবার
পরিমাণ: দুতিন টেবিল-চামচ (৬০-৮০ গ্রাম) পর্যন্ত খাওয়া নিরাপদ।
খাওয়ার পদ্ধতি: ভারী খাবারের পর পরই না খেয়ে অন্তত দুয়েক ঘণ্টা পর খাওয়া ভালো। রাতে মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়াতে হবে। কারণ এটি হজম হতে সময় নেয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
বিকালের খাবার
গ্রিল্ড, বেইকড কাবাব বা রোস্ট, হালকা নাশতা (ফল, বাদাম, দই) খাওয়া হবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ঈদের পরের কয়েক দিনের খাবার যেমন হওয়া উচিত
সকালে
ঈদের সকাল ও পরের কয়েক দিন শুরু হোক হালকা ও সহজপাচ্য খাবারের মাধ্যমে। এসময় পেটের জন্য হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া ভালো। এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে-
এক গ্লাস গরম দুধ বা টক দই
দুতিনটি খেজুর
দুয়েকটি খোসাসহ ফল (আপেল, নাশপাতি, কলা)
সামান্য বাদাম ও চিয়া সিডস
এক টুকরা ব্রাউন ব্রেড বা রুটি
ক্যালোরি পরিমাণ: এই নাশতা থেকে ২৫০ থেকে ৩শ’ ক্যালোরি পাওয়া যায়, যা সকাল শুরু করার জন্য যথেষ্ট।
দুপুর (হালকা ও পরিমিত খাবার)
ঈদের দিনে দুপুরের খাবারে ভারী খাবার খাওয়ার পরের দিনগুলোতে বেশি তেল-মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
এক প্লেট লাল চালের ভাত বা আটার রুটি
এক বাটি ডাল
এক টুকরো মাছ বা গ্রিল্ড চিকেন
প্রচুর পরিমাণে সালাদ
এক গ্লাস লাচ্ছি বা টক দই
ক্যালোরি পরিমাণ: ৪শ’ থেকে ৫শ’ ক্যালোরির মধ্যে রাখা উচিত, যাতে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় কিন্তু অতিরিক্ত ভারী না লাগে।
বিকেল (হালকা খাবার ও পানীয়)
ঈদের দিন ও পরের কয়েকদিন বিকেলে অতিথিদের আপ্যায়নে সাধারণত বিভিন্ন ভাজাপোড়া খাবার পরিবেশন করা হয়। তবে এসব খাবার বেশি না খেয়ে বিকেলের নাশতা স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত।
ছোলা, গাজর, শসা, টমেটো, ধনেপাতা, টকদই মিশিয়ে চটপটি বা সালাদ
এক গ্লাস ফলের স্মুদি (আম, কলা, স্ট্রবেরি বা পেয়ারা)
এক মুঠো বাদাম ও কিশমিশ
দই বা দই-চিড়া।
ক্যালোরি পরিমাণ: ৩শ’ থেকে ৩৫০ ক্যালোরির মধ্যে রাখা উচিত, যাতে রাতের খাবারের জন্য পেট যথেষ্ট খালি থাকে।
রাতের খাবার (সহজপাচ্য ও কম মসলাযুক্ত খাবার)
ঈদের রাতের খাবারে ভারী ও মসলাযুক্ত খাবারের পরের কয়েক রাতে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার বেছে নেওয়া উচিত। এমন খাবারের মধ্যে থাকতে পারে-
মুরগি বা সবজি খিচুড়ি
গ্রিল্ড মাছ বা মুরগি
প্রচুর সালাদ ও টক দই
এক টুকরা ডার্ক চকলেট (মিষ্টি খেতে হলে)
ক্যালোরি পরিমাণ: ৪শ’ থেকে ৫শ’ ক্যালোরি হওয়া উচিত, যাতে ঘুমের আগে হজমের সমস্যা না হয়।
পেটের সমস্যা এড়াতে কিছু পরামর্শ
অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলা
ঈদের দিনে প্রচুর পানি পান (৮-১০ গ্লাস) করতে হবে।
এছাড়া ঈদের দিনে ফলমূল ও শাকসবজিও খেতে হবে।
উৎসবের সময়ে একবারে বেশি না খেয়ে বারবার ছোট পরিমাণে খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিমিত পরিমাণে উপভোগ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
ভারী খাবার খাওয়ার পরপরই অনেকে শুয়ে পড়েন। সেটা না করে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করতে হবে। ঈদের দিনে খাবার টেবিলে টক দই রাখা প্রয়োজন, যা হজমে সহায়ক।
লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড এবং ফ্যামিলি শপিং- এর সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান ‘টপ টেন মার্ট’ এই ঈদে নিয়ে এসেছে নতুন ও আধুনিক ডিজাইনের পোশাকসহ জুতার বিশাল সমাহার। যা ফ্যাশন ব্র্যান্ডটির স্টোর ও অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
টপ টেন মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘আমরা বরাবরই চেষ্টা করি নিয়মিত আমাদের প্রোডাক্টে নতুনত্ব আনার জন্য। একইসঙ্গে প্রোডাক্টের মান উন্নয়ন এবং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার বিষয়টিও মাথায় থাকে।’
পরিবারের সবাইকে নিয়ে একই ছাদের নিচে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মনোরম পরিবেশে ঝামেলা বিহীন ও আকর্ষণীয় মূল্যে ঈদের সব কেনাকাটার অনন্য প্রতিষ্ঠান ‘টপ টেন মার্ট’।
এই ব্র্যান্ডে পাওয়া যাচ্ছে সব বয়সের নারী পুরুষের জন্য দেশি বিদেশি ফরমাল ও ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, প্যান্ট, কাবলি, শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, টপস ও বোরকা ইত্যাদি।
টপ টেন মার্ট-এ আরও রয়েছে বাহারি ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের জুতার বিশাল কালেকশন, লেডিস ব্যাগ, পার্স, ট্রলি ব্যাগ, জায়নামাজ, টুপি, আতরও।
এছাড়া পরিবারের ছোট্ট সোনামণিদের জন্য রয়েছে শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, প্যান্ট, ফ্রক, পার্টি ড্রেসসহ আরও নানা পোশাক।
একই সঙ্গে নিজের পছন্দ মত শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, স্যুট ইত্যাদি বানিয়ে নেয়ায় জন্য বিশ্ববিখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের থান কাপড় ও টেইলারিং সুবিধাতো টপ টেন-এ রয়েছেই।
সাধ্যের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট ঈদের কেনাকাটায় টপ টেনই হোক আপনার অনন্য সঙ্গী। Facebook page: https://www.facebook.com/toptenmart. Website: https: //toptenmartltd.com
মাঘ মাস। কাঁপুনি দিয়ে শীত হওয়ার কথা। কিন্তু শহুরে অট্টালিকা ভেদ করে পাথর মোড়া দিয়ে থাকা রুমগুলোতে শীতের উপস্থিতি খুব বেশি নয়। জানান দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের নানা হিসাব-নিকাশ। তাই তো এবছর শীত যেনো মেঘ-বৃষ্টির মতো লুকোচুরি খেলায় মত্ত। শীতের উপস্থিতি থেকে থেকে উকি দিলেও, এই সময়ে ভিন্ন সব আয়োজনে মাতোয়ারা থাকে শহরের নানা জায়গা।
ঠিক যেমনিভাবে গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) শহরের ব্যস্ততম এলাকা কাওরান বাজারের একটি রেস্টুরেন্টে রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস আড্ডায় এক করেছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। উপলক্ষ্য যত্নে গড়া ‘রঙ বাংলাদেশ’- এর ৩০ বছর অতিক্রম করা। তিন দশক। কম সময় নয়। কিন্তু কাজে ডুবে থাকা মানুষের কাছে এটা অল্প সময়। সৃষ্টির উল্লাসে যারা নিজেদেরকে এক জীবন নিবেদিত করেন, তাদের কাছে মনে হয় ‘এই তো সেদিন’ শুরু করেছিলাম।
রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার পাশেই গড়ে ওঠা আরেক শহর নারায়ণগঞ্জে ছোট্ট একটি জায়গা থেকে যাত্রা এই রঙের। কয়েকজন টগবগে তরুণ তখনকার সময়ে মতের ‘মিল’ নিয়ে শুরু করেছিল ফ্যাশনের এ যাত্রা। কতো সময় ঘড়ির কাঁটা আর ক্যালেন্ডারের পাতায় হারিয়েছে। এক মতের মানুষরা একটা সময় অমতের হলো। মানুষ মাত্রই তো মিল-অমিল। কিন্তু শত বাধায় তো আর স্বপ্ন দেখা থেমে যায় না। ‘রঙ বাংলাদেশ’। একটি স্বপ্ন। ত্রিশ বছরের অধ্যায় পার করে প্রতিষ্ঠানটি বোঝাপড়ার তরুণ। দেশীয় ফ্যাশনের গল্প বুনছে স্বকীয়তায়।
প্রচণ্ড শীতে মানুষ যেমন চায় উষ্ণতা, তেমনি ৩০- এর রঙ বাংলাদেশ উপলক্ষে এক ছাদের নীচে সেদিন গণমাধ্যমকর্মীদের উষ্ণ করেছে। গত কয়েক বছর ধরে সৌমিক দাস এই কাজটি সুনিপুণভাবে করে আসছেন। ফ্যাশন আর লাইফস্টাইল নিয়ে কাজ করা সংবাদকর্মীদের বছরের একটি দিন দারুণভাবে উপহার দিবেন-ই। সবাইও মুখিয়ে থাকেন এ দিনটির জন্য। সংবাদ মাধ্যমে কাজ করা মানুষদের তিনি সম্মাণ করেন একদম মন থেকে। এজন্য সবাই খুব আপনও ভাবেন তাকে। এই আড্ডায় অনেক পুরনো মানুষের যখন পুরো বছর কোনো দেখা-সাক্ষাৎ নেই, এই একটি দিন দেখা হওয়ার পর সবার চোখে-মুখে একরাশ আনন্দ ঝিলিক কাটে।
এবারের আড্ডায় ফ্যাশনের নানা দিক নিয়ে হয়েছে আলোচনা। কেউ কেউ করেছেন সমালোচনাও। কোনো সাংবাদিক বলেছেন রঙের ব্যবহার নিয়ে আবার কেউবা বলেছেন দেশীয় ফ্যাশনের পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে। অগ্রজদের মধ্যে রঙ বাংলাদেশ এই সময়ে আরও বেশি দায়িত্বশীলের ভূমিকা পালন করার কথাও উল্লেখ করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। কেননা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতায় দেশীয় ফ্যাশনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সৌমিক দাসরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে অনেকেই মত দেন। অনুষ্ঠানে সৌমিক দাস মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে থাকলেন। সব কথা তিনি আমলে নিয়েছেন। হয়তো সামনে তার নতুন কোনো কাজে প্রমাণ নিয়ে হাজির হবেন।
আলোচনা-সমালোচনা কিংবা কথার ফুলঝুড়ির পর রাতের চমৎকার ডিনারের আয়োজনও ছিল। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বরাবরের মতো সুন্দর-হাস্যোজ্বল বিদায় দিলেন সৌমিক দাস ও তার রঙ বাংলাদেশের চমৎকার টিমটি। সবাই লিফটে নামতে নামতে বলছিল আবার ‘একটি বছর’ পর। কিন্তু একটি বছর কি বেশি সময়!
এবার কিছু অন্য কথা হোক। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে পথ চলা শুরু হয়েছিল ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’ এর, যে রঙ এখন নতুন রূপে ‘রঙ বাংলাদেশ’ এবং এই ডিসেম্বরেই পৃথিবীর মানচিত্রে নিজস্ব জায়গা ক’রে নিয়েছিল বাংলাদেশ নামক নতুন এক স্বাধীন রাষ্ট্র। ডিসেম্বর মাসটি তাই ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর কাছে সব সময়েই অন্য এক আবেগের মাস, এবং সেই আবেগে নতুন এক চেতনার রঙ এসে দেশী পোশাকের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরও বেশি উজ্জ্বীবিত ও অনুপ্রাণিত করেছে ব’লে, মতামত ব্যক্ত করেছেন বর্তমানে ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর প্রধান নির্বাহী - সৌমিক দাস।
তিনদশকের যাত্রায়, মানুষের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায় ‘রঙ বাংলাদেশ’
তিনি আরও বলেন - বিজয়ের মাস ডিসেম্বর, রঙ বাংলাদেশের জন্ম মাস ডিসেম্বর এবং জুলাই চব্বিশ পরবর্তী এবারের ডিসেম্বর, সব যেন একই চেতনার সুতোয় বোনা। সে চেতনা প্রিয় মাতৃভূমিকে বিশ্বের বুকে অনন্য এক স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে মাথা উঁচু ক’রে দাঁড়াবার প্রত্যয়। সে চেতনা প্রতিটি নাগরিককে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করা। রঙ বাংলাদেশের ৩০ বছরের যাত্রাও সেই অঙ্গীকারেরই গল্প বলে মনে করেন তিনি।
নব্বই দশকে বেড়ে ওঠা চারজন টগবগে তরুণ ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’ এর স্বপ্ন বুকে ধারণ করবার সাথে সাথে দেশপ্রেমের মন্ত্রেও নিজেদের উজ্জীবিত ক’রে নিয়েছিলেন। তাই স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সত্তর ও আশির দশকে জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বুকে ধারণ ক’রে এবং বাংলার তাঁত শিল্পকে লড়াইয়ের হাতিয়ার ক’রে, দেশের বেশকিছু উদ্যোক্তা, দেশীয় পোশাকের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে যে পথ তৈরি করেছিলেন, সেই পথটিকেই নিজস্ব রঙে রাঙিয়ে দিতে ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’ও যুক্ত হয় নিজেদের প্রকাশের মধ্যে দিয়ে, যে রঙ এখন বর্তমানের ‘রঙ বাংলাদেশ’।
পাশাপাশি সৌমিক দাস একথাও মনে করিয়ে দিতে চান যে, প্রথম অবস্থায় রঙ গড়তে প্রধান কারিগর ৪ জন হলেও আরও অনেকের অবদান এতে সংযুক্ত ছিল, যারা ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর প্রিয় বন্ধু-স্বজন। এখনও সবার ভালোবাসা, শুভকামনা ও সহায়তাকে শক্তিতে রূপান্তরিত ক’রে ‘রঙ বাংলাদেশ’ এগিয়ে যাচ্ছে সেই একই চেতনায়। বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বুকে লালন ক’রেই ছড়িয়ে পড়ছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
শুরুটা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ এর সান্ত্বনা সুপার মার্কেটের ছোট্ট পরিসরে। তিনদশকের যাত্রায়, মানুষের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায় ‘রঙ বাংলাদেশ’ বিভিন্ন শাখা প্রশাখা বর্তমানে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের নানান প্রান্তেই। নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর শাখা রয়েছে ঢাকা বসুন্ধরা সিটি, সীমান্ত স্কয়ার, টোকিও স্কয়ার, যমুনা ফিউচার পার্ক, ওয়ারি, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ফেনী, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, খুলনা, কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত। এ ছাড়াও আধুনিক প্রযুক্তিকে গ্রহণ ক’রে দেশের আনাচে-কানাচে বা বিদেশে ছড়িয়ে পড়তে তাদের রয়েছে অনলাইন প্লাটফর্ম।
প্রতিটি বয়সের সৌন্দর্যকে সম্মান জানিয়ে ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর সাব ব্র্যান্ড হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে - ছোটদের জন্য ‘রঙ জুনিয়র’ তরুণদের জন্য ‘ওয়েস্ট রঙ’ এবং প্রবীন নাগরিকদের জন্য ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ এ ছাড়া সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে, বিদেশী বা প্রবাসীদের হাতে দেশের স্মারক তুলে দিতে মূলত উপহার সামগ্রী নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘আমার বাংলাদেশ’।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা সেন্টার ফর ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাডভান্সমেন্ট আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ইউথ ফোরাম- ২০২৪ কনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন প্লান অফ সাস- এর প্রতিষ্ঠাতা সাদিক আল সরকার। যা পর্তুগালের পোর্তো শহরে কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দ্য সেন্টার ফর ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাডভান্সমেন্ট দ্বারা আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফোরাম কাজ করে যাচ্ছে। একটি প্রিমিয়াম আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ইয়ুথদের বিভিন্ন গ্রুপে একত্রিত হয়ে নতুন উদ্ভাবন ও ভবিষ্যৎ বিশ্বের কাঠামো তৈরি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যা সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেশাদার মেধাবী তরুণ ইয়ুথরা অংশগ্রহণ করেছেন। যারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব প্রদান করবেন।
মর্যাদাপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক ইভেন্টের লক্ষ্য হচ্ছে- বৈশ্বিক সমস্যাগুলির উপর গভীরভাবে আলোচনা ও পরিকল্পনা করে সমাধানের পথ খোঁজে বের করা, যোগ্য নেতৃত্বের ক্ষমতা বাড়ানো এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ফোরামের সঙ্গে যুক্ত করা, জাতিসংঘ প্রণীত ১৭টি এসডিজি অর্জনের লক্ষ্য মাত্রা প্রসারিত করা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মশালাসহ নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি পরবর্তী ক্ষমতায়নে নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করা।
বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ সঙ্গে জড়িত করার সুযোগ থাকবে যা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করবে। একইসঙ্গে চিন্তাশীল নেতাদের কাছ থেকে সংযোগসহ অন্তর্দৃষ্টি অর্জনের মাধ্যমে রাজনৈতিক এবং বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার অর্জনের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনকে সফল করবে। যা অংশগ্রহণকারীদের নিজ দিগন্তকে প্রসারিত করাসহ ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, দেশের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসহ জাতিসংঘের ১৭টি এসডিজি গোল নিয়ে কাজ করা সংগঠন প্ল্যান অব সাস– এর প্রতিষ্ঠাতা সাদিক আল সরকার কপ২৯ও এ অংশ নেন। তিনি জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার বিষয়ে নানা দিক সেখানে তুলে ধরেন।
সাদিক আল সরকার এতে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। প্ল্যান অব সাস এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs), এসডিজি বা বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহ হলো ১৭টি আন্তসংযুক্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলোর একটি সংগ্রহ, যা ‘সকলের জন্য একটি ভালো এবং আরও টেকসই ভবিষ্যৎ’ অর্জনের পরিকল্পনা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। জাতিসংঘ প্রনীত এসডিজির মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবগুলোর একটি, শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গার রূপে অশুভ শক্তির বিনাশ ও নারীশক্তির উদ্যাপন করা এই উৎসব আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে।
এ বছরের পূজায় শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে তিন দিনের বড় ছুটি হওয়ায় উৎসবের আমেজেও যেন একটা বাড়তি রং লেগেছে। অনেকেই প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঢাকা থেকে দেশের নানা প্রান্তে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পর্যটনকেন্দ্রগুলোও অতিথিদের বরণ করে নিতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। পূজার সময় বিভিন্ন মণ্ডপে-মণ্ডপে ঘোরা কিংবা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতে ভরসা হয়ে উঠতে পারে উবারের মতো রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো। এর মাধ্যমে উৎসবকে স্বাচ্ছন্দ্য ও ঝামেলাহীন করে তুলতে পারেন যে কেউ।
দুর্গা পূজার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ নিঃসন্দেহে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা। সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার থিম থেকে শুরু করে একদম ক্লাসিক্যাল ঘরনার ডিজাইনের নানান ধরনের পূজা মণ্ডপের দেখা মেলে শহরজুড়ে। মণ্ডপের প্রতিমার অসাধারণ শিল্পরূপ ও মণ্ডপ ঘিরে গড়ে ওঠা মেলার উৎসব মুখর পরিবেশের টানে ভক্তরা এক পূজা মণ্ডপ থেকে আরেক পূজা মণ্ডপে ঘুরে বেড়ায়।
এই পরিস্থিতিতে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে উবার একটি দারুণ বিকল্প হয়ে উঠেছে।
কলাবাগানের বাসিন্দা দর্শন দোলন কর্মকার একই দিনে অনেকগুলো মণ্ডপ ঘোরার অভিজ্ঞতা থেকে জানান, ঢাকার বাসিন্দা হিসেবে পুরান ঢাকার দুর্গাপূজা আমাকে অনেক আকর্ষণ করে। সেখানে তো প্রতিবছর যাই। তবে নতুন ঢাকার পূজামণ্ডপ যেমন বনানী ও উত্তরাতেও দারুণ পূজার আয়োজন হয়, তাই সেখানেও যাওয়ার ইচ্ছে থাকে। বন্ধুদের দল নিয়ে নিয়ে ঠাকুর দেখে বেড়ানো উবার এক্স ও উবার এক্সএল-এর সার্ভিসের কারণেই সহজেই সম্ভব হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা অঞ্জন রয় উবারে ভ্রমণের স্বাচ্ছন্দের বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘অপর্যাপ্ত গণপরিবহনের এই শহরে আমাদের মতো বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের চলাফেরায় উবার অনেক বড় ভরসা হয়ে উঠেছে। পূজার সময় উবারের কারণেই পূজা মণ্ডপে বা পুরাতন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াটা এখনো সম্ভব হচ্ছে।’
ঢাকার বাইরে ভ্রমণকারীরাও এখন উবার ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বড় ছুটির এই সময়ের বাসের টিকেটের জন্য যুদ্ধ করা বা বাস স্টেশনে যাওয়ার ঝামেলা এড়িয়ে সপরিবারে ভ্রমণের জন্য অনেকেই উবার ইন্টারসিটিকে বেছে নিচ্ছেন। এটি একটি সহজলভ্য বিলাসিতা যা ব্যবহারকারীদের সময় ও ঝামেলা বাঁচিয়ে তাদের প্রিয়জনের কাছে নিরাপদে পৌঁছে দিচ্ছে।
এবারের দুর্গাপূজা যেহেতু টানা তিনদিন ছুটি নিয়ে আসছে তাই ইতোমধ্যেই অনেকেই পরিবার ও বন্ধুরা মিলে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এক্ষেত্রেও উবার রেন্টাল ও ইন্টারসিটি একটি আরামদায়ক বিকল্প হতে পারে। তুলনামূলক স্বল্প দূরত্বে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে, যেমন ঢাকার আশেপাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন রিসোর্টে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে উবার রেন্টাল ও ইন্টারসিটি দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আবরার আহমেদ, একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী এই ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে উবারকে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে বলেন, ‘পরিবার ও শিশুসন্তান নিয়ে ঢাকার কাছেই একটা রিসোর্টে যাচ্ছি এই ছুটিতে। নিরাপত্তা, স্বাচ্ছন্দ্য ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতার কথা চিন্তা করে ভ্রমণের জন্য উবারকে বেছে নিয়েছি।’
যেকোনো উৎসব শুধু তখনই পরিপূর্ণতা পায় যখন উৎসব উদযাপনকারীরা একসঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। উবার মানুষকে তার গন্তব্যে ও প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিয়ে বন্ধুর মতো পাশে ছিল। এবারের দুর্গা পূজাতেও উবারের সঙ্গে আরও রঙিন হয়ে উঠবে।
নাসিম হায়দার, একজন ভ্রমণপিপাসু কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ছুটে বেড়ান দেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত। উদ্দেশ্য, নেটিজেনদের গ্রাম-বাংলার মুগ্ধ দৃশ্য দেখানো। এজন্য তিনি ভ্রমণ ভিডিও আপলোড করেন নিয়মিত। দর্শকমহলে ব্যাপক চাহিদার কারণে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন নিজস্ব পেজে।
নাসিম হায়দারের জন্ম ২০০২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তিনি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ওটরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস ইন্সটিটিউটে ৪ বছরের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সিরামিকস ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হন। ২০২৩ সালে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সফলভাবে শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নাসিম হায়দার ছাত্রজীবন থেকেই একজন সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন কয়েকটি সংগঠনের হয়ে। তার কারণ, এসবে অভিজ্ঞতার ঝুলি বড় হবে আর নেতৃত্ব চর্চার দারুণ মাধ্যম হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন নেটওয়ার্ক তৈরি, ক্যারিয়ারের লক্ষ্য নির্ধারণ, নতুন দক্ষতা তৈরি, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ এবং শৈশবে ঘটে যাওয়া সব বিষণ্নতা ভুলতে সহায়ক করবে।
২০২০ সালে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে মহামারি করোনা ভাইরাস। তখন নাসিম হায়দার দেশের মানুষের পাশে একজন সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন (বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির) ঢাকা জেলা ইউনিটে। কাজ করেন মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামে। মানুষের সচেতনতামূলক সব কার্যক্রমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট হাসপাতালে প্রতিনিয়ত মহামারিতে কাজ করেন।
নাসিম হায়দার ছাত্রজীবনে সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা জেলা ইউনিটে; বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস রোভার স্কাউটস গ্রুপ, ঢাকা জেলা রোভার; ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কাজ করেন প্রাইভেট সংগঠন রবিনহুড দ্য অ্যানিম্যাল রেস্কিউয়ার’র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে।
নাসিমের ভাষ্য, আগামীর প্রতিটি সময় তিনি এভাবেই মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চান। কারণ, জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া। আর প্রতিটি পদক্ষেপই একেকটি নতুন অভিজ্ঞতা।
কোরবানির ঈদে খাবারের রেসিপি মানেই গরুর বিভিন্ন পদের রেসিপি। এসবের ভেতর গরুর মাংসের শাহী রেজালার রয়েছে আলাদা কদর। তাই আজকের আয়োজনে থাকছে গরুর মাংসের শাহী রেজালার সহজ এবং প্রিয় একটি রেসিপি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
বাড়িতে গরুর মাংসের শাহী রেজালা তৈরি করতে প্রয়োজন হবে ১ কেজি গরুর মাংস, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ২ চামচ, রসুন বাটা ২ চামচ, হলুদ ১ চামচ, জিরা ১ চামচ, ধনিয়া ১ চামচ, কিশমিশ ১৫ টি, আলু বুখারা ১০টি, টক দই ১ কাপ, বাদাম বাটা ১ চামচ, চিনি ১ চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১/২ চামচ, জয়ফল- জয়ত্রী ১ চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চামচ, তেজপাতা ৪ টি ও সয়াবিন তেল ১/২ কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন:
প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার সব উপকরণ পরিমাণমতো নিয়ে একসাথে মিশিয়ে ঘণ্টাখানেক মেরিনেট করে রেখে দিন। মাংস মেরিনেট হয়ে গেলে চুলায় বসিয়ে দিন একটি সসপ্যান। সসপ্যানে তেল গরমে করে পেঁয়াজ কুচি, তেজপাতা, গরম মসলা দিয়ে মেরিনেট করা মাংস দিয়ে দিন।
মাঝারি আঁচে মাংস ভালো করে নেড়েচেড়ে সিদ্ধ হওয়ার জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন ১০ মিনিটের মতো। এ সময়ের মাঝে ঢাকনা উঠিয়ে একটু নেড়ে দিতে পারেন যেন চুলার তাপে সসপ্যানে মাংস না লেগে যায়।
মাংস সেদ্ধ হয়ে আসলে কিশমিশ ও আলুবোখারা দিয়ে দিন। এরপর ঢাকনা দিয়ে মৃদু আঁচে আরও কিছু সময় রান্না করুন। এ পর্যায়ে লবণ ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখে নিন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই মাংস থেকে তেল উঠতে শুরু করবে। তেল উঠতে শুরু করলেই চুলা থেকে নামিয়ে নিন গরুর মাংসের সুস্বাদু শাহী রেজালা।
অনেকেই ঢাকায় ঈদের ছুটি কাটাবেন। চাইলে একা-দোকা বা সবাইকে নিয়ে ঢাকার আশপাশের কিছু দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন এই সময়ে। এমন পাঁচটি স্থান সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক,
মৈনট ঘাট
ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন মৈনট ঘাটে। ঢাকার খুব কাছেই স্থানটি ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে পরিচিত। ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় ২ ঘণ্টার মধ্যেই আপনি মিনি কক্সবাজারে যেতে পারবেন। তাও আবার মাত্র ৯০ টাকায়। সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঢাকায় ফিরেও আসতে পারবেন।
ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। নদীর ওপারে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা রাস্তা আছে ঘাট পর্যন্ত। এ রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন ধরে। ঢাকা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টা। তবে ছুটির দিনে রাস্তা ফাঁকা থাকলে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব।
মৈনট ঘাটে যাবেন কীভাবে?
ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে- গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যমুনা পরিবহনে চেপে বসতে পারে। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন।
বাহ্রা ঘাট
মিনি কক্সবাজারের মতো ঢাকার আশপাশেই আছে মিনি পতেঙ্গাও। ঢাকার কাছে তেমনই একটি মনোমুগ্ধকর স্থান হলো বাহ্রা ঘাট। দোহার উপজেলায় অবস্থিত এই ঘাট বর্তমানে মিনি পতেঙ্গা নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় রাজধানীবাসী ডে লং ট্রিপের জন্য বেছে নেন দৃষ্টিনন্দন এই স্থান। ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন আপনার ছুটির দিনে।
বিগত কয়েক বছর ধরে বাহ্রাঘাট সেজেছে নতুন আঙ্গিকে। নদীভাঙন ঠেকাতে পদ্মা নদীর পাড়ের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে ব্লক। এই ব্লকের উপর দিয়েই ঘুরে বেড়ান দর্শনার্থীরা। মৈনট ঘাটের মতোই মিনি পতেঙ্গার পাড় থেকে পদ্মা নদীতে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায় পাড় ধরে।
কীভাবে যাবেন মিনি পতেঙ্গায়?
ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে সেখানে যেতে সময় লাগে মাত্র ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। গোলাপশাহ মাজার থেকে দোহারের মৈনট ঘাটে সরাসরি বাসে যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা।
লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর
আবহমান গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিক ধারাকে বিকশিত করার উদ্যোগে ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরোনো বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে খোলা আকাশের নিচে বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশে গ্রামীণ রূপকেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের পরিচয় তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদিন এই জাদুঘর উন্মুক্ত পরিবেশে গড়ে তোলার প্রয়াস নেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্সটি প্রায় ১০০ বছর পুরোনো সর্দার বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। মোট ১০টি গ্যালারি আছে এতে। গ্যালারিগুলোতে কাঠ খোদাই, কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবনভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীণ লোকজীবনের পরিবেশ, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন, তামা-কাসা-পিতলের নিদর্শন, লোহার তৈরি নিদর্শন, লোকজ অলংকারসহ আছে বহু কিছু।
ভবনটির সামান্য পূর্বে দেখবেন লোকজ স্থাপত্যকলায় সমৃদ্ধ আধুনিক এক ইমারতে প্রতিষ্ঠিত জয়নুল আবেদিন স্মৃতি জাদুঘর। এই ভবননে আছে মাত্র দুটি গ্যালারি। একটি গ্যালারি কাঠের তৈরি, যা প্রাচীন ও আধুনিক কালের নিদর্শনসমৃদ্ধ। তা ছাড়া বাংলাদেশের প্রাকৃতিক, বৈশিষ্ট্য কাঠ ও কাঠ থেকে বিভিন্ন কারুপণ্য তৈরি এমনকি সর্বশেষ বিক্রির সামগ্রিক প্রক্রিয়া, অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে সুন্দর মডেল দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে, দুটি ভবনের বাইরে আছে পাঠাগার, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, সেমিনার হল, ক্যান্টিন, কারুমঞ্চ, গ্রামীণ উদ্যান ও বিভিন্ন রকমের বৃক্ষ, মনোরম লেক, লেকের মাঝে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌ-বিহার, মৎস্য শিকারের সুন্দর ব্যবস্থা ও নৌকা। চাইলেই মাত্র ১৫০ টাকার বিনিময়ে ৩০ মিনিটে জন্য চালাতে পারবেন এখানে নৌকা। পানাম নগরী থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে আছে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। ৫০ টাকা টিকেট কেটে ঢুকেই হাতের বামে পাবেন, বিশাল দিঘী। আর সেই চিরচেনা ভবন বড় সর্দার বাড়ি।
গোলাপ গ্রাম
ঢাকার সাদুল্লাহপুরের গোলাপ বাগান সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে! খুবই সুন্দর এই স্থানে যেন লাল চাদর বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কীভাবে গোলাপের চাষ করা হয়, কীভাবে তা সংগ্রহ করা হয় তা নিজ চোখে দেখতে পারবেন। গোলাপের চারা তৈরি, গোলাপ ক্ষেত পরিচর্যা, গোলাপ তোলা দেখতে দেখতে আপনার মন হারিয়ে যাবে ফুলের রাজ্যে। পরিবারসহ ঘুরতে যেতে পারেন গোলাপ গ্রামে।
কীভাবে যাবেন?
সাদুল্লাহপুর যেতে মিরপুর মাজার রোড হয়ে বেড়িবাঁধ সড়কে যাবেন। এক্ষেত্রে মিরপুর ১ থেকে বাস, টেম্পো, অটোরিকশা বা রিকশায় চড়তে হবে। বেড়িবাঁধ তুরাগের তীর শিন্নিরটেক ঘাট থেকে ট্রলারে উঠতে হবে। এই জলযান আপনাকে সাদুল্লাহপুর ঘাটে নিয়ে যাবে। তবে শুকনো মৌসুমে নদী পার হয়ে বেশ খানিকটা পথ হাঁটতে হবে।
বাংলার তাজমহল
সোনারগাঁওতেই অবস্থিত এই তাজমহল মূলত ভারতের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহলের একটি হুবহু নকল বা অবিকল প্রতিরূপ। ১৫০ টাকার এক টিকিটে দুই মুভির মতন, বাংলার তাজমহলের সঙ্গে বাংলার পিরামিড দর্শন করতে পারবেন সেখানে। বাংলার তাজমহলের মালিক আহসানুল্লাহ মনি একজন ধনবান চলচ্চিত্র নির্মাতা।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তার ‘তাজমহলের কপিক্যাট সংস্করণ’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন। এই তাজমহল নির্মাণের কারণ হিসেবে তিনি জানান, দেশের দরিদ্র মানুষ যাদের ভারত গিয়ে প্রকৃত নিদর্শন দেখার সামর্থ্য নেই তারা যেন তাজমহল দেখার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন, এজন্য দেশেই তিনি তৈরি করেছেন তাজমহলের রেপ্লিকা। হাতে সময় থাকলে সোনারগাঁও গেলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলার তাজমহলেও।
আসছে কোরবানির ঈদ। এ ঈদে প্রায় সব পরিবারের খাবার টেবিলে দেখা যায় মাংসের নানান পদ। মাংস আইটেমের বৈচিত্র্য এ ঈদের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই এবারের ঈদে ভোজন বিলাসীদের জন্য মাংসের মজাদার ২টি রেসিপি জানানো হলো,
১. মেজবানি মাংস
উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ ও লাল মরিচ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, সরিষার তেল ১ কাপ, মাংসের মসলা ১ চা চামচ, টক দই ১ কাপ, কাঁচামরিচ ১০/১২টি, গোলমরিচ ১ চা চামচ, দারচিনি ও এলাচ ৫/৬টি, জয়ফল ও জয়ত্রি আধা চা চামচ, মেথি গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, তেল, টক দই, হলুদ, মরিচ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, লবণসহ সব মসলা নিয়ে ঘণ্টা খানিক মেরিনেট করে রাখুন। অর্ধেক পেঁয়াজ তেলে ভেজে বেরেস্তা করে নিন। চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে মেরিনেট করা মাংস কষিয়ে নিন। হাঁড়িতে ২ কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষাতে হবে। মাংস থেকে পানি ঝরে গেলে মৃদু আঁচে মাংস সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিন। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে কাঁচামরিচ, ধনে, জিরা গুঁড়া দিয়ে মৃদু আঁচে ১০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে তারপর পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন সুস্বাদু গরুর মেজবানি মাংস। মেজবান মাংস রান্নার জন্য দোকানে লাল মরিচের গুঁড়া পাওয়া যায় যেটা খেতে খুব একটা ঝাল না কিন্তু মাংসের লালা রং করার জন্য এই ঝালের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।
২. গরুর কালা ভুনা
উপকরণ: ২ কেজি হাড় ছাড়া গরুর মাংস, ১/২ চামচ বা মরিচ গুড়া, ১ চামচ হলুদ গুড়া, ১/২ চামচ জিরা গুড়া, ১/২ চামচ ধনিয়া গুড়া, ১ চা চামুচ পেঁয়াজ বাটা, ২ চামচ রসুন বাটা, ১/২ চামচ আদা বাটা, সামান্য গরম মশলা (দারুচিনি, এলাচি), ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুঁচি, কয়েকটা কাঁচা মরিচ, পরিমান মত লবন, সরিষার তেল।
প্রণালি: গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর লবন, তেল ও বাকি সব মশলা দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিতে হবে (পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ বাদে)। মাখানো মাংসটি এবার চুলায় হালকা আঁচ রেখে জ্বাল দিতে হবে। এবার দুই কাপ পানি দিয়ে আবারো ঢাকনা দিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ হতে সময় লাগবে। যদি মাংস সেদ্ধ না হয় তবে আবারও গরম পানি এবং জাল বাড়িয়ে নিন । ঝোল শুকিয়ে , মাংস নরম হয়ে গেলে রান্নার পাত্রটি সরিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি কড়াই নিয়ে, তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ ভাঁজতে থাকুন। সোনালি রং হয়ে আসলে সেই কড়াইতে গরুর মাংস দিয়ে হালকা আঁচে ভাজতে হবে। মাংস কালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন, খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাংস পুড়ে না যায়। সবশেষে রান্নাটি নামানোর আগে লবণটি চেখে নিন। কালা ভুনার স্বাদ আরও বাড়াতে খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
সামারে তাভাস এবং ডিমান্ড ফ্যাশর হাউজে চলছে ছাড়। ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে আপনি পাবেন পছন্দের পোশাক।
স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি, এম্ব্রয়ডারির কাজ, জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল এমন অনেক কিছুই থাকছে ‘তাভাস এবং ডিমান্ড’ পোশাকের মোটিফ হিসাবে। এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক নিয়ে বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এছাড়াও কালারের ক্ষেত্রে ভাইব্রেন্ট রাখা হয়েছে।
মেয়েদের জন্য ‘তাভাস’ আছে সিঙ্গেল পিস কামিজ, লন থ্রি পিস, আকর্ষণীয় পার্টি থ্রি পিস, এথনিক কুর্তি, ফ্যাশন টপস, কাফতান ইত্যাদি। সারা বাংলাদেশে ডিমান্ড ব্র্যান্ডের মোট ১৮টি আউটলেট রয়েছে এবং তাভাসের রয়েছে ফ্ল্যাগশিপ আকারের মোট ৫টি আউটলেটস! এ ছাড় চলবে ১৭ জুন পযন্ত।