গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ, থানায় জিডি, সাংবাদিকদের গালিগালাজের দরুণ আবার চর্চার শীর্ষে চিত্রনায়িকা পরীমনি। এই ঘটনায় পরীমনিকে নিয়ে যখন নিন্দার ঝড় উঠেছে, ঠিক তখনই তার পাশে দাঁড়ালেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। ফেসবুকে গৃহকর্মীদের প্রসঙ্গে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ন্যান্সি। নিজেও বেশ কয়েকজন গৃহকর্মীর প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে পরীমনিকে নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বানও জানান এ কণ্ঠশিল্পী। ন্যান্সি লিখেছেন, ‘গৃহকর্মী নির্যাতিত হয় যেমন সত্যি ঠিক তেমনি কিছু গৃহকর্মীর দ্বারা গৃহকর্ত্রীও কম সমস্যার মুখোমুখি হন না! আমার পুরো বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে শুধু গৃহকর্মীর মিথ্যা হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য!’
নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে কণ্ঠশিল্পী লিখেছেন, ‘বছর দশেক আগে আমার বাসার গৃহকর্মী বাসার দারোয়ানের সঙ্গে পালিয়ে যায়। গৃহকর্মীর পরিবার তাদের মেয়ে গুম হয়েছে অভিযোগ তুলে মোটা টাকা দাবি করে। আমি সরাসরি পুলিশের শরণাপন্ন হই এবং তাদের আন্তরিক সহযোগিতায় ঘণ্টা দুয়েকের মাথায় পলাতক গৃহকর্মী তার প্রেমিকসহ উদ্ধার হয়। পরে জানতে পারি, আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা পূর্ব পরিকল্পিত! এ ঘটনার পরই আমার বাসায় কথা রেকর্ড হয় এমন সিসি ক্যামেরা সেটাপ করি।’
আরেকটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ন্যান্সি লেখেন, ‘দুই বছর আগে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে দেখাশোনার জন্য এজেন্সি থেকে যে মেয়েটাকে এনেছিলাম সে তার বোনের সঙ্গে মিলে আমার বিয়ের গয়না এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এর স্বর্ণপদক চুরি করে। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর উল্টো গৃহকর্মী আমার নামে নির্যাতনের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করে। আমি সিসি ক্যামেরার বদৌলতে হয়রানির হাত থেকে বেঁচে যাই।’
ন্যান্সি আরও লেখেন, ‘বাসার রান্নার লোক যে কত জ্বালিয়েছে তার হিসাব নেই। বেতনের বাইরে যতই দেই না কেন তাদের খুশি করা যায় না। মন চাইলে কাজে আসে, অন্যথায় আসে না। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পুরো বাসার সিংহ ভাগ ফার্নিচার বদলাই। আগের সব আসবাবপত্র আমার বাসার রান্নার মহিলা ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায়, আমিও ভাবলাম এবার হয়তো সে আর কাজে ফাঁকি দেবে না। এত বড় উপকারের ফলাফল হিসেবে কি পেলাম জানেন? তার চাহিদা এখন আর হাজারের ঘরে রইল না, লাখের ঘরে চলে গেল! বিগত জুলাই মাসে বিরক্ত হয়ে তাকে বিদায় করলাম। আমার বাসার সব রান্না দশ মাস যাবৎ আমিই করি। আমার ঘরে এখন বাজার খরচ কমে গেছে, বাসি খাবার খাই না বললেই চলে। স্বামী সন্তান ভাইও খুশি, তাদের রান্না করে খাইয়ে আমিও অনেক তৃপ্তি পাই।’
সবশেষে সংবাদকর্মীদের দায়িত্ব সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সংবাদ মাধ্যম একটু সংবেদনশীল হোন। সব কিছুতে বাণিজ্য দেখবেন না। নির্যাতিতার পরিচয় গৃহকর্মীও হতে পারে আবার গৃহকর্ত্রীও হতে পারে। সত্যিকারের ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান। পরীমনির মতো এমন আরও তারকাদের ঘাড়ে ভর করে আর কত শিরোনাম বেচবেন বলুন! আপনাদেরও নিশ্চই কিছু দায় আছে, তাই না?’
ন্যান্সির মতোই পরীর পাশে দাঁড়িয়েছেন নির্বাসিতা লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিনেত্রীর সেই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘পরীমনির সুসময়ে আমি পাশে থাকি না। ওঁর দুঃসময়ে আমি ছুটে আসি । আবার ওঁর আঙিনায় দুঃসময় এসে দাঁড়িয়েছে। এক মহিলা গৃহপরিচারিকার চাকরি নিয়ে ওঁর বাড়িতে ঢুকেছিল। কিছুদিন পর সে বেরিয়ে এসে পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে, আর মিডিয়াও বেশ ফলাও করে মহিলার সাক্ষাৎকার ছাপাচ্ছে, যেন মহিলা যা বলছে সবই সত্যি। মিডিয়ার চরিত্র আমরা জানি।’ মিডিয়ার প্রতি আঙুল তুলে তসলিমা নাসরীন লেখেন, ‘নারী, বিশেষ করে সে নারী যদি ব্যতিক্রমী, সাহসী, প্রতিভাময়ী হয়, তাহলে তার সর্বনাশ না করে ছাড়বে না মিডিয়া। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো, রক্ষণশীলতা আঁকড়ে রাখা, ক্ষমতার চাটুকারিতা বাংলাদেশের মিডিয়ার বিশেষ দোষ।
আগামী ১৩ মে শুরু থেকে ফ্রান্সে শুরু হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। আর এবারের কানের আসরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পাম ডি’অর পাচ্ছেন বর্ষীয়ান হলিউড তারকা রবার্ট ডি নিরো। অভিনয় ও প্রযোজনায় জীবনের অসামান্য অবদানের জন্য তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হবে হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। ১৪ বছর আগে, ২০১১ সালে কান উৎসবের প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন দুইবারের অস্কারজয়ী এই অভিনেতা। রবার্ট ডি নিরোর সঙ্গে কান উৎসবের সম্পর্ক অনেক দিনের। ১৯৭৬ সালে তিনি অংশ নেন দুটি অফিসিয়াল নির্বাচিত ছবিতে- বার্নার্ডো বার্তোলুচ্চির ‘১৯০০’ এবং মার্টিন স্করসেজির ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’। এর মধ্যে ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ সেবার জিতে নেয় সেরা ছবির পুরস্কার পাম ডি’অর।
এরপর ১৯৮৩ সালে স্করসেজির ‘দ্য কিং অব কমেডি’ এবং ১৯৮৪ সালে সের্জিও লেওনের ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’ ছবিতে কান উৎসবে ফিরেন তিনি। ১৯৮৬ সালে ‘দ্য মিশন’ ছবির মাধ্যমে আবারও তিনি জিতেছেন পাম ডি’অর। সবশেষ ২০২৩ সালে তিনি ছিলেন স্করসেজির ‘কিলার্স অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন’ ছবির সঙ্গে কানের লাল গালিচায়।
এই সম্মাননা পাওয়ার খবরে আবেগাপ্লুত হয়ে ডি নিরো বলেন, ‘কান উৎসবের প্রতি আমার অনুভূতি অনেক গভীর- বিশেষ করে এখন, যখন বিশ্বে অনেক বিভক্তি, তখন কান আমাদের একত্র করে- গল্পকার, নির্মাতা, দর্শক আর বন্ধুরা সবাই একসঙ্গে হয়ে যাই। এটা যেন ঘরে ফিরে আসার মতো।’
পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি ১৪ মে ডেবুশি থিয়েটারে একটি মাস্টারক্লাসও নেবেন ডি নিরো। উল্লেখ্য, ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ১৩ মে থেকে ২৪ মে, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে।
বলিউডের আইটেম কুইন হিসেবে খ্যাতি পাওয়া মালাইকা অরোরা অল্প বয়স থেকেই সৌন্দর্যের পূজারী। ৫১ বছর বয়সেও যে সৌন্দর্যে কোনো ভাটা পড়ে না, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন মালাইকা। তবে দৈহিক সৌন্দর্য দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করলেও খোলামেলা পোশাকের কারণে মাঝে-মধ্যেই তোপের মুখে পড়তে হয় এই তারকাকে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রেম-ভালোবাসা নিয়েও সারা বছর থাকেন আলোচনায়। তবে এবার তিনি আলোচনায় এসেছেন অন্য একটি বিষয়ে। বড় ধরনের আইনি জটে পড়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। জানা গেছে, ২০১২ সালের একটি মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাকে হাজিরা দিতে বলা হলেও তিনি তা এড়িয়ে যাওয়ায় মুম্বাইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ২০১২ সালের একটি মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাকে হাজিরা দিতে বলা হলেও তিনি তা এড়িয়ে গেছেন মালাইকা। সে কারণে মুম্বাইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিনযোগ্য ধারায় অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, মুম্বাইয়ের কোলাবা এলাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে এনআরআই শিল্পপতি ইকবাল শর্মার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে অভিনেতা সাইফ আলি খান, শিল্পপতি বিলাল আমরোহি এবং মালাইকার ভগ্নিপতি শাহিল লাদাখের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল মালাইকাকে।
১৩ বছরের পুরোনো সেই মারধরের ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আদালতে অমৃতা অরোরা বলেন, ‘আমরা হইহই করে রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ সারছিলাম, হঠাৎই এক ব্যক্তি এসে চিৎকার করে বলে- ‘চুপ করো’! আমরা সবাই তাতে স্বাভাবিকভাবেই চমকে যাই। সাইফ তখনই উঠে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ব্যক্তির সঙ্গে শান্তস্বরে কথা বলার চেষ্টা করেন সাইফ, কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। এরপর ঘর থেকে বেরিয়ে যান ইকবাল নামের সেই ব্যক্তি।’
যদিও অমৃতা বা সাইফ কেউই বুঝতে পারেননি, ওই ব্যক্তি তাদের কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন, আর এরপরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। বয়ানে বলা হয়, ওই ব্যক্তি কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে চলে যান, আর তাদের ডিনার স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে। তবে, কিছুক্ষণ পর সাইফ যখন ওই রেস্তোরাঁর ওয়াশরুমে যান, তখন হঠাৎই তারা একাধিক উঁচু গলায় তর্কাতর্কির আওয়াজ শুনতে পান, যার মধ্যে সাইফের গলাও ছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই, সেই ব্যক্তি আচমকা তাদের ব্যক্তিগত জায়গায় ঢুকে সাইফের গায়ে হাত তোলেন।
পশ্চিমবঙ্গের টিভি অভিনেত্রী ইধিকা পাল প্রথমবার সিনেমায় অভিনয় করেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার মাধ্যমে। ২০২৩ সালের ২৯ জুন মুক্তি পায় হিমেল আশরাফ পরিচালিত এই সিনেমাটি। ওই সময় ছবিটির ব্যাপক সাফল্যের দরুণ শাকিব খানের সঙ্গে ইধিকাও দারুণ পরিচিতি পান বাংলাদেশে। এই সিনেমার মাধ্যমেই তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে। শুধু তাই নয়- বাংলাদেশে ‘কবি’ নামের আরেকটি সিনেমায় শরিফুল রাজের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘প্রিয়তমা’ বাংলাদেশের সিনেমার বিশেষত শাকিব খানের ক্যারিয়ারের ইউটার্ন হিসেবে বিবেচিত হয়। আর এই সিনেমাতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেই প্রথম সিনেমা দিয়েই বাংলাদেশের দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন ইধিকা পাল।
বলা চলে, এক ‘প্রিয়তমা’ই তাকে যে খ্যাতি এনে দিয়েছেন দুই বাংলার দর্শকের কাছে তাতে রাতারাতি তারকায় পরিণত হন ইধিকা। আবার গত বছর কলকাতায় দেবের বিপরীতে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খাদান’ সিনেমাতে অভিনয় করেও আলোচনার শীর্ষে ছিলেন ইধিকা পাল। এবার গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেল বাংলাদেশের ইধিকা পালের দ্বিতীয় সিনেমা মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘বরবাদ’। এই সিনেমাতেও ইধিকা পালের বিপরীতে শাকিব খান। যথারীতি ‘বরবাদ’ সিনেমাটি বাংলাদেশের মুক্তির প্রথম দিন থেকেই দর্শকের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত এই সিনেমা দর্শকের উপচেপড়া ভিড়ে রয়েছে আলোচনায়। ‘প্রিয়তমা’র পর ‘বরবাদ’ ছবিতেও অভিনয় করে তুমুল আলোচনায় ইধিকা পাল। যে কারণে ভীষণ খোশ মেজাজে এই কলকাতার দর্শকপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী।
কলকাতা থেকে মুঠোফোনে কথা বলতে গিয়ে তার মধ্যে ভীষণ উচ্ছ্বাসের আভাস পাওয়া যায়। ‘বরবাদ’-এর সাফল্যে ভীষণ আনন্দিত ইধিকা পাল। ‘প্রিয়তমা’ থেকে ‘বরবাদ’-এর তুমুল সাফল্যে অনেকটাই আবেগাপ্লুত হয়ে ইধিকা পাল বলেন,‘ প্রিয়তমায় কাজ করার অভিজ্ঞতাটা আসলে আলাদা, কারণ ওটা ছিল আমার প্রথম সিনেমা। খুবই আবেগের প্রিয়তমা। যেহেতু প্রথম সিনেমা ছিল, তাই এই ভাবনাটা মাথায় ছিলো যে আমাকে খুব ভালো করতে হবে যেন দর্শকের ভালোবাসাটা পাই আমি। কিন্তু বরবাদের ক্ষেত্রে ভাবনাটা এমন ছিল যে, আমাকে আরও ভালো করে কাজ করতে হবে, যাতে করে আগের পারফরম্যান্স থেকে যেন এক ধাপ হলেও ভালো হয়।’
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমাকে ঘিরে দর্শকের মধ্যে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে সেই প্রত্যাশা পর্যন্ত যেন ছুঁতে পারি- এমনটাই মাথায় ছিল বরবাদে কাজ করার সময়। আর শাকিব খানের সঙ্গে এটা ছিল আমার দ্বিতীয় ছবি, এই জুটিকে দর্শক যে ভালোবাসা দিয়েছেন বরবাদ-এ যেন সেই ভালোবাসা আরও বেড়ে যায় এমনটাও ভাবনায় ছিল আমার। সবমিলিয়ে বরবাদ মুক্তির পর যে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তাতে এটা বলতে পারি আমার যা যা প্রত্যাশা ছিল তার সবই পূরণ হয়েছে। আমি বিশেষত বাংলাদেশের সকল দর্শকের প্রতি ভীষণ ভীষণ কৃতজ্ঞ। তাদের ভালোবাসার কাছে আমি ঋণী হয়ে রইলাম।’
ইধিকা জানান, এরই মধ্যে তিনি সোহমের বিপরীতে আকাশ মালাকারের ‘বহুরূপ’ সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। এ মুহূর্তে তিনি ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত, যাতে তার বিপরীতে আছেন দেব। এটি নির্মাণ করছেন ধ্রুব ব্যানার্জি। আসছে দুর্গাপূজায় ‘রঘু ডাকাত’ মুক্তি পাবে বলে জানালেন ইধিকা।
ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড গাজা উপত্যকা আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিনই এই জনপদে অবিরাম বোমাবর্ষণে ক্ষয়বিক্ষত হচ্ছে অসহায় নারী ও শিশুদের দেহগুলো। আর এসব দৃশ্য নাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে গতকাল সোমবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় ওই এলাকার চারদিকে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ফটোকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মিছিল নিয়ে সমবেত হন শত শত মানুষ। দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারও প্রতিবাদমুখর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা এমন মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের আহবান জানান-
দেশীয় চলচ্চিত্রের শীর্ষ তারকা শাকিব খান, তুখোড় অভিনেতা মিশা সওদাগরসহ বহু তারকা এ নিয়ে তাদের অনুভূতি শেয়ার করেছেন। নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে অনেক তারকা জানিয়েছেন, এ যুদ্ধ বন্ধ হোক। শান্তি ফিরে আসুক গাজার বুকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিত্রতারকা শাকিব খান লিখেছেন, ‘গাজা শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়, এটি যেন আজ নির্যাতিত মানুষের প্রতীক! দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করতে না পারা! তাদের পাশে আছি- ভালোবাসা, সংহতি, আর শান্তির প্রত্যাশায়।’
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও খল অভিনেতা মিশা সওদাগর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে সব থেকে দুর্বল ইমানের মুসলিম মনে হয় আমরাই।’ চিত্রনায়ক আফরান নিশো লিখেছেন, ‘গাজায় চলমান সহিংসতা, শিশুহত্যা ও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ দেখে মন ভেঙে যাচ্ছে। মানবতার পক্ষে কথা বলা আমাদের সকলের দায়িত্ব। যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। ধর্ম, জাতি বা ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে যেকোনো নিরীহ মানুষের ওপর নিপীড়ন বন্ধ হোক। গাজার মানুষগুলোর কান্না যেন আমাদের বিবেক নাড়িয়ে দেয়। সহিংসতা কখনোই সমাধান হতে পারে না। আমরা চাই না আর কোনো শিশু বোমার শব্দে ঘুম ভাঙুক। গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনুন।’
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর লিখেছেন, ‘বিদায় রাফা-গাজার জান্নাতি শহীদরা। শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী আর তাদের নিকৃষ্ট শাসকরা আনন্দে থাকুক জ্বলন্ত জমিনের দোজখে।’ অভিনেত্রী জয়া আহসান লিখেছেন, ‘দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।’
চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ লিখেছেন, ‘গাজার আকাশে যে ধোঁয়া আর অশ্রুর বৃষ্টি, সেই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমরা শুধু প্রার্থনা করতে পারি, কাঁদতে পারি আর চিৎকার করতে পারি। এই মানুষগুলোর অপরাধ কি শুধু এই যে তারা নিজেদের মাটিতে বাঁচতে চায়?’ চিত্রনায়িকা তমা মির্জা লেখেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটা গোটা মুসলিম দেশের মুসলমানদের শাহাদতের চিত্র!’ গাজা নিয়ে লিখেছেন এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানও।
চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ তার ফ্রি প্যালেস্টাইন স্যুটের একটি ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমি যখন এই পোস্ট লিখছি, ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কী মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটা, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব? ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি। যখন ‘জংলি’র গল্প লেখা হচ্ছিল তখনো পাখির জায়গায় আমি বারবার ফিলিস্তিনি শিশুদেরই কল্পনা করতাম। আমরা কি শিশুদের জন্য একটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়ে যেতে পারব না? যখন যুদ্ধবিরতি চলছিল তখনো আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু মনে হতো, এই বিরতি কতক্ষণের? কতক্ষণ এই মানুষগুলো বাঁচবে আসলে?’
মডেল, অভিনেতা আব্দুন নুর সজল বলেন, ‘ঈদের ঠিক পরপরই গাজাবাসীর ওপর এ ধরনের অমানবিকতা, পশুত্ব, নির্যাতন, এটা কোনো মনুষত্বের পর্যায়ে পড়ে না। মানুষ কী করে তাদের মানবতা হারায় এবং কতটা হিংস্র হতে পারে সেটা ইসরায়েলকে দেখে বোঝা যায়। তবে এখানেই শেষ নয় বিচারক একজন আছেন এবং তিনি সুনিপুণ বিচার করবেন যথাসময়ে।’ শিল্পী সমিতির সদস্য ও অভিনেত্রী রত্না কবির বলেন, ‘গাজার বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে এক একটা তাজা প্রাণ। ফেসবুকে গাজার নির্মমতা দেখে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে মনকে বোঝাতে চাচ্ছি আমি এটা কল্পনায় দেখছি। আমি ভাবতে পারছি না সন্তানের সামনে মায়ের, মায়ের সামনে সন্তানের মৃত্যু। আসলে এগুলো নিয়ে কিছু বলার ভাষা নেই শুধু আল্লাহর কাছে এটুকুই প্রার্থনা করি আর যেন কোনো রক্তপাত না হয় বাকি জীবনগুলো যেন রক্ষা পায়।’
চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দিঘি বলেন, ‘গাজায় মুসলমানদের জন্য দোয়া করা ছাড়া কিছুই যেন করতে পারছি না। কতটা নির্মম হলে মানুষ এভাবে নিরপরাধদের হত্যা করতে পারে, সেটা ভাবলে শরীর কেঁপে ওঠে। পৃথিবীর এই নীরবতা আরও বেশি কষ্ট দেয়। গাজার মানুষ যেন আমারই ভাইবোন। আল্লাহর কাছে বলি আপনি তাদেরকে হেফাজত করুন, তাদেরকে শান্তিতে রাখুন। আমার বিশ্বাস একদিন সুবিচার হবেই।’
চিত্রনায়িকা ও চিকিৎসক মিষ্টি জান্নাত বলেন, ‘গাজা নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। গাজার সাথে আছি ভালোবাসা আর দোয়া নিয়ে। আল্লাহ তাদের সহায় হোন।’ চিত্রনায়িকা হুমায়রা সুবাহ বলেন, ‘গাজার অবস্থা প্রতিদিন আমার মন ভেঙে দেয়। মুসলমান হয়ে কিছু করতে না পারার অসহায়ত্বটা কেবল বাড়তেই থাকে। চোখের সামনে শিশুদের কান্না, মায়েদের আহাজারি সবকিছুই বুকের ভেতর কষ্টের পাহাড় জমায়। দোয়া ছাড়া তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করুন শান্তি ফিরিয়ে দিন।’
চিত্রনায়ক মামনুন ইমন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘গাজা আজই শেষ হয়ে যাবে না। যতদিন এই দুনিয়া থাকবে ততদিন গাজা এ ফিলিস্তিনও থাকবে। কারণ এটি আল্লাহর কোরআনিক ওয়াদা এবং রাসূলের (সা.) ভাষায় ঘোষণা।’ ফেসবুকে দুটি আর্টওয়ার্ক এবং একটি ছবি দিয়ে তিনি তুলে ধরেছেন অসহায় ফিলিস্তিনিদের বর্তমান পরিস্থিতি। এরপর বিবেকের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ক্যাপশনে পূজা লিখেছেন, ‘এই ধ্বংসলীলার শেষ কবে প্রভু, যাদের হাত থেকে মাসুম বাচ্চাদেরও রেহাই নেই, এমন নিকৃষ্টদের আপনি ধ্বংস করে দেন প্রভু।’
এ ছাড়াও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অনুভূতি শেয়ার করে পোষ্ট দিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি, শবনম বুবলী, চিত্রনায়িকা আঁচল, কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ অমি, অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান, চিত্রনায়িকা রিয়ানা পারভীন পলি, অভিনেত্রী আনিকা কবির শখ, চিত্রনায়িকা ক্যামেলিয়া নিশান, চিত্রনায়ক মুন্না খান, কণ্ঠশিল্পী শেখ সাদিসহ বহু শোবিজ তারকা।
মা হওয়ার পর আপাতত মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। তার একরত্তি কন্যা দুয়াই এখন তার পৃথিবী। কন্যার সব কাজ নিজে হাতে করছেন অভিনেত্রী। মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সারাক্ষণই। এমনও খবর মিলছে, দীপিকা নাকি খুব তাড়াতাড়ি ফিরতে পারেন তার কাজে। তেমন লোভনীয় প্রস্তাবও পাচ্ছেন অভিনেত্রী। শোনা যাচ্ছে, শাহরুখ খান অভিনীত ছবি ‘কিং’-এ অভিনয় করবেন দীপিকা। সেই ছবিতে রয়েছেন শাহরুখ-কন্যা সুহানা খানও। এটাই সুহানার বড় পর্দায় বড় ব্রেক। এর আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য জোয়া আখতারের পরিচালনায় তৈরি ‘দ্য আর্চিজ’-এ অভিনয় করেছিলেন সুহানা। এ বার বাবা শাহরুখের সঙ্গেই দেখা যাবে তাকে। শোনা যাচ্ছে, ছবিতে তার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করবেন দীপিকা।
‘কিং’ পরিচালনা করছেন সিদ্ধার্থ আনন্দ। সিদ্ধার্থের পরিচালনায় আগেও কাজ করেছেন দীপিকা। ‘কিং’ পরিচালনার কথা ছিল বাঙালি পরিচালক সুজয় ঘোষের। কিন্তু পরবর্তীতে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। ছবিতে ক্যামিও রোল করবেন দীপিকা, তেমনই খবর। চরিত্রটি নাকি শাহরুখের প্রাক্তন প্রেমিকার। এমনটাও জানা গেছে, চরিত্রটির জন্য শুরু থেকেই দীপিকার কথাই চিন্তাভাবনা করে রেখেছিলেন শাহরুখ ও সিদ্ধার্থ। দীপিকার কাছে প্রস্তাব যেতে তিনি আপ্লুত।
শোনা যাচ্ছে, সুহানার মায়ের চরিত্রটি নাকি করার কথা ছিল বলিউড অভিনেত্রী টাবুর। তার বাবার চরিত্রে থাকার কথা ছিল সাইফ আলি খানের। কিন্তু পরে সেটা আর হয়নি। ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করবেন অভিষেক বচ্চন। তার ওপর অনেকখানি দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন শাহরুখ।
চার বছর বিরতির পর যে তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে শাহরুখের, তার দুটিতেই রয়েছেন দীপিকা- ‘পাঠান’ ও ‘জাওয়ান’। অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারের প্রথম ছবি ‘ওম শান্তি ওম’-এ হিরো ছিলেন শাহরুখ। তার সঙ্গে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর মতো ছবিতেও অভিনয় করেছেন দীপিকা। শাহরুখের কো-স্টারদের মধ্যে দীপিকা খুবই প্রিয় ও কাছের- এ কথা বহু সাক্ষাৎকারে স্বীকার করে নিয়েছেন শাহরুখ।
কন্যা জন্মের আগেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে ফেলেছেন দীপিকা। ‘বাজিরাও মাস্তানি’ ও ‘জাওয়ান’-এ একরত্তি ছেলেদের মায়ের চরিত্র করতে দেখা যায় তাকে। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে কখনওই কুণ্ঠা প্রকাশ করেননি অভিনেত্রী। বরং জানিয়েছেন, তিনি পর্দায় মা হতে পছন্দই করেন। এবার তিনি সত্যিই মা হয়েছেন বাস্তব জীবনে। তবে পর্দায় ২৪ বছর বয়সি সুহানার মায়ের চরিত্রে তার অভিনয়ের খবর হইচই ফেলে দিয়েছে নেটপাড়ায়।
এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে মোশাররফ করিম অভিনীত ‘চক্কর’ সিনেমা। দর্শকরাও বেশ সাদরে গ্রহণ করেছেন ছবিটি। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এল নন্দিত এই অভিনেতার নতুন সিনেমার খবর। নূর ইমরান মিঠুর ‘কুরকাব’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। যদিও অনেকটা গোপনে সুন্দরবনে এ সিনেমার শুটিং শুরু হয় গত বছরের এপ্রিলে। সে সময়েই এ প্রতিবেদক সিনেমাটির সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এবার জানা গেল, সিনেমাটির শুটিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। এক দিনের দৃশ্যধারণ বাকি আছে বলে জানালেন নির্মাতা। আপাতত এর বেশি কিছু জানাতে চাননি তিনি। এদিকে আসছে পহেলা বৈশাখে মুক্তি পেতে পারে মোশাররফ করিমের আরেক সিনেমা ‘বিলডাকিনি’। গত ২৪ জানুয়ারি সিনেমাটি মুক্তির কথা থাকলেও সে সময়ে তারা সরে আসেন। নির্মাতার ভাষ্য, ঈদের সময় হলে দর্শকের সমাগম দেখা যায়। সেই রেশ থাকতেই বৈশাখ উপলক্ষে দর্শকের সামনে বিলডাকিনি নিয়ে আসতে চাই। নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীরের উপন্যাস ‘বিলডাকিনি’ অবলম্বনে একই নামে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম ও পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী পার্নো মিত্র।
প্রসঙ্গত, ‘চক্কর’ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন।
আন্তর্জাতিক কুংফু তারকা চ্যান কং স্যাং। বিশ্বজুড়ে যিনি ‘জ্যাকি চ্যান’ নামে পরিচিত। জ্যাকি চ্যান একজন হংকং ভিত্তিক অভিনেতা, অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার, মার্শাল আর্টিস্ট, চলচ্চিত্র প্রণেতা, রঙ্গ অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্য লেখক, উদ্যোক্তা, কণ্ঠশিল্পী, ও স্টান্ট পারফর্মার। খ্যাতিমান এই সুপারস্টার আজ পা দিচ্ছেন জীবনের ৭২তম বছরে। ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে (৭ এপ্রিল) জন্ম গ্রহণ করেন তিনি।
শৈশব থেকেই জ্যাকিকে লড়তে হয়েছে চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে। কম্যুনিস্ট শাসন থেকে বাঁচতে ৭ বছর বয়সি জ্যাকিকে হংকংয়ে রেখেই বাবা-মা পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। এরপর নিঃসঙ্গ চ্যান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন হংকংয়ের চাইনিজ অপেরা ইনস্টিটিউটে। সেখানেই শেখেন মার্শাল আর্ট, সঙ্গীত, অভিনয় ও অ্যাক্রোবেটিকস। ভাগ্যের অন্বেষণে এক পর্যায়ে তিনিও পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। কাজ শুরু করেন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে। তবে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই সুযোগ পান হলিউড সুপারস্টার ব্রুসলির স্টান্টম্যান হিসেবে। আর এ স্টান্টম্যানের কাজই ভাগ্য বদলে দেয় জ্যাকির।
ষাটের দশকে প্রথমবার ‘লিড রোলে’ চলচ্চিত্র অঙ্গনে পা রাখেন তিনি। অভিনয় জীবনে এখন পর্যন্ত নিজের কোনো সিনেমায় কখনও বডি ডাবল ব্যবহার করেননি জ্যাকি। নিজের স্টান্ট নিজেই করতে গিয়ে তিনবার ভেঙেছেন নাক, দুই হাতের সবগুলো আঙুল, কলারবোন এমনকি মাথার খুলিও। এতসব কাটাছেঁড়া আর ভাঙ্গা নিয়ে স্টান্ট করে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা তো পেয়েছেনই, গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসও তাকে দিয়েছে সবচেয়ে বেশি স্টান্ট করা অভিনেতার স্বীকৃতিও।
সিনেমায় যেমনটা দেখা যায়, ব্যক্তি জ্যাকি চ্যান কিন্তু তার থেকে খুব বেশি আলাদা নন। কঠিন জীবন সংগ্রাম তাকে শিখিয়েছে বিচিত্র সব বিদ্যা। অনর্গল কথা বলতে পারেন, ক্যান্টোনিজ, ম্যান্ডারিন, ইংলিশ, জাপানিজ, জার্মান, কোরিয়ান ও থাই ভাষায়। ৫৬ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন দুইশর বেশি সিনেমায়, পেয়েছেন জগৎজোড়া খ্যাতি। ২০১৬ সালে অর্জনের খাতায় যোগ করেছেন অস্কারও।
অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে ভারতের বর্ষীয়ান ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীর বর্ণময় ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে ব্যক্তিগতজীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হচ্ছে বায়োপিক। বিগত দুই-তিন বছর ধরেই দর্শকদের কৌতূহল, কবে দেখা যাবে সিনেপর্দায় সৌরভ গাঙ্গুলীর এই সিনেমাটি। উৎকণ্ঠারও যেন অন্ত নেই। তবে এরই মধ্যে ঘোষণা এসেছে, ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’র চরিত্রে দেখা যাবে রাজকুমার রাওকে। কিন্তু এরপর সৌরভের স্ত্রী ডোনা গাঙ্গুলীর চরিত্রে কে অভিনয় করবেন, তা নিয়ে শুরু হয় কৌতূহল, আলোচনা। এর আগে সৌরভকন্যা সানা অবশ্য বলিউডের এই সময়ের জাতীয় ক্রাশ উপাথিতৃপ্তি দিমরিকে ‘পর্দার মা’ হিসেবে পছন্দের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু মহারাজের বায়োপিকে নায়িকা নির্বাচনে এবার টুইস্ট!
সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন এই সিনেমার কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়া। তিনি টালিউডের একটি সিনেমার সেটে হাজির হন। সেখান থেকেই জল্পনার সূত্রপাত, টলিপাড়ার তারকাদের সঙ্গে নাকি কাজ করতে চাইছেন মুকেশ। শোনা যাচ্ছে, সৌরভের বায়োপিকে নায়িকা হিসেবে নাকি প্রাথমিক পর্যায়ে মিমি চক্রবর্তী এবং ইশা সাহার নাম উঠে এসেছে।
ডোনা গাঙ্গুলীর ভূমিকায় বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলতে মুম্বাইয়ের কাস্টিং ডিরেক্টর নাকি ভরসা রাখছেন বাঙালি অভিনেত্রীর ওপরই। যদিও চূড়ান্তভাবে এখনো কিছু ঠিক হয়নি, তবে গুঞ্জনে সিলমোহর পড়ে কি না, নজর সেদিকেই সবার। সিনেমাটি নির্মাণ করবেন বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে।
সৌরভপত্নীর চেহারায় আদ্যোপান্ত বাঙালিয়ানার ছাপ। যার সঙ্গে তৃপ্তি দিমরির কোনো মিল নেই। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সম্ভবত নায়িকার খোঁজে টলিপাড়ায় পদার্পণ মুকেশ ছাবড়ার। এদিকে মিমি এবং ইশা, দুজনই বেশ দক্ষ অভিনেত্রী। তাই, মহারাজের বায়োপিকে যদি তাদের কোনো একজন নির্বাচিত হন ডোনার চরিত্রে, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে তা নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য সবাইকে অপেক্ষা করতেই হবে।
আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্কের সঙ্গে যেন একই সুতোয় বাঁধা চিত্রনায়িকা পরীমনি। বছরজুড়ে চর্চিত এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার। তিনি জানান, পরীমনির এক বছরের কন্যাশিশুকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন পিংকি আক্তার। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ছি ছি’ পড়ে যায়। সবাই পরীমনিকে একপ্রকার ধুয়ে দেন। এমনকি দেশের গণমাধ্যমেও এ নিয়ে খবরের শিরোনাম হন এই নায়িকা।
তবে বিতর্কিত এ ঘটনাটি নিয়ে রাতেই ফেসবুকে লাইভে আসেন পরীমনি। তিনি জানান, তার হাতে সব প্রমাণ আছে। কিন্তু তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় আনতে চাইছেন না। সেই সঙ্গে মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করারও আহ্বান জানান তিনি। ফেসবুক লাইভের একদম শুরুতেই পরীমনি বলেন, ‘আপনারা আমার বিগত জীবনযাপন দেখলেই বুঝবেন, কোনো আত্মীয়স্বজন নিয়ে আমার জীবনযাপন না। বরং আমার পুরো পরিবারটাই হলো আমার স্টাফদের নিয়ে। বিশেষ দিবসে তাদের নিয়ে লেখালেখি করতাম। মাদার্স ডে, ফাদার্স ডে যাই বলেন না কেন, আমি তাদের নিয়েই থাকি। সেখানে একজন আমার গৃহকর্মী, যে এক মাসও হয়নি আসার, সে দাবি করতেই পারে (গৃহকর্মী হিসেবে), তবে আমি বলব সে আমার গৃহকর্মী না।’
এমনকি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে সব প্রমাণ আছে, কিন্তু দিতে চাচ্ছি না কেন জানেন, কারণ আমি আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে তাকে নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে আসা খবরে বিরক্ত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
পরী অভিযোগ করেছেন, তিনি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন। এই নায়িকা বলেন, ‘আমরা কি একটু ওয়েট করতে পারতাম না? যারা মিডিয়াকর্মী ছিলাম। তারা আমাকে যেভাবে টর্চারটা করল, যেভাবে ফলাও করে ওই নিউজটা করা হলো, যেভাবে তার ইন্টারভিউ করা হলো, তার মানে কি আমরা মিডিয়াকর্মী হয়ে তাকে প্রিভিলেজ (বেশি সুবিধা) দিচ্ছি না? যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে জিডি করলেই সঙ্গে সঙ্গে এটা জাস্টিফাই হয়ে যাবে? এতে আমি ছোট হয়েছি বা বড় হয়েছি তা না, আমি যদি অন্যায় করি ডেফিনেটলি আমার শাস্তি পাওয়া উচিত। যে কেউ অভিযোগ করতেই পারে, কিন্তু সেটা প্রমাণিত হওয়ার আগেই আপনি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দেবেন?’
এমনকি দেশের একটি প্রথম সারির গণমাধ্যমের নিউজ লাইভে দেখিয়ে পরী বলে, ‘একতরফা করবেন না, করলে সবদিক থেকেই করবেন। প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করেন, আমার বাসার নিচে আসতে হবে না। আমি নিজেই আপনাদের কাছে যাব। আমি আপনাদের কয়বার নক দিয়েছি, ওই মেয়ে যে আপনাদের নক দিয়েছে? আপনাদের নাম্বার ও কীভাবে পেল? নাকি আপনাদেরই গরজ। নাকি হাতে ‘এস’ লেখার বিষয়ে আপনাদের বলদ-ফলদ বলেছিলাম বলে আপনাদের গায়ে লাগল? তো বলদের প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছেন?’
এরপর বেশ খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পরী বলেন, ‘আপনারা আইন, সংসার, জীবন- সবকিছুর ঊর্ধ্বে যেতে চান। হিসাব কিন্তু এক দিন আপনাদের দিতেই হবে। মিলিয়ে নিয়েন।’
বিয়ের পর অনেক দিন ধরেই মার্কিন সিরিজে অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে বলিউডের এক সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় ও সফল অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তবে লম্বা সময়ের বিরতি শেষে নতুন করে ভারতীয় সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি চমক দেখালেন ‘দেশি গার্ল’-খ্যাত এই অভিনেত্রী। তার মধ্যে বড় চমক হচ্ছে প্রথমবার দক্ষিণী সিনেমায় ভিলেন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিকের দিক থেকে সব অভিনেত্রীদের ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন এক ইতিহাস গড়েছেন তিনি। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বর্তমানে ‘বাহুবলী’র পরিচালক এসএস রাজামৌলির পরবর্তী ছবিতে কাজ করছেন। এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেতা মহেশ বাবুকে। ছবির শুটিংয়ের জন্য প্রিয়াঙ্কাকে আমেরিকা থেকে হায়দরাবাদে যেতেও দেখা গিয়েছিল। ছবিতে অসাধারণ অ্যাকশন এবং অসাধারণ গল্প দেখা যাবে বলে জানান প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
তবে এর মধ্যেই আরেকটি খবর ছড়িয়ে পড়েছে বলিউড এবং দক্ষিণী সিনেমাপাড়ায়। শোনা যাচ্ছে খ্যাতিমান নির্মাতা অ্যাটলির নতুন ছবিতে সময়ের সবচেয়ে আলোচিত অভিনেতা আল্লু অর্জুনের বিপরীতে কাজ করতে যাচ্ছেন সাবেক এই মিস ইউনিভার্স। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, অ্যাটলি এখন তার নতুন এই প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত। ‘A6’ নামের এই সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে আল্লু চূড়ান্ত হয়েছেন অনেক আগেই। জোর গুঞ্জন এই ছবিতে নাকি প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকেও দেখা যেতে পারে গুরত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকায়। শোনা যাচ্ছে বেশ বড় পরিসরেই তৈরি হচ্ছে সিনেমাটি। ছবিটি নাকি অসাধারণ অ্যাকশনে ভরপুর হতে চলেছে, আর তা একদমই অ্যাটলি স্টাইলে।
পুষ্পার পর আল্লু অর্জুনও তার পুরো সময় এই ছবিতে ব্যয় করেছেন। ছবির শুটিং শুরু হওয়ার আগে অ্যাটলি তার চরিত্রটি নিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে আলোচনাও করছেন। যদি সবকিছু ঠিকঠাক হয়, তাহলে এই ছবিতে প্রিয়াঙ্কাকে আল্লু অর্জুনের নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে। খবর চাউর হয়েছে অ্যাটলির এই ছবিতে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন। আল্লু অর্জুন এবং প্রিয়াঙ্কাকে একসঙ্গে দেখে ভক্তরা যে বেশ আনন্দ পাবেন তা বলাই বাহুল্য। ছবির বাজেটও বেশ বড়। আরও জানা গেছে, শাহরুখ খানের ‘জাওয়ান’ -এর মতো এই ছবিতেও নাকি আল্লু অর্জুনকে দ্বৈত ভূমিকায় দেখা যাবে। সঙ্গে দারুণ অ্যাকশন ঠাসা হবে এই ছবি। ছবিটি আল্লু অর্জুনের জন্মদিনে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন অ্যাটলি।
খুব সহজ-সরল কৃষ্ণা নামের সুন্দরী, সুহাসিনী মেয়েটি যখন তার পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশের পাবনা থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় গিয়ে স্থায়ী হয়েছিলেন, তখন কি কারও পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব ছিল এই মেয়েটি এক বিরল ইতিহাস রচনা করে দেখাবেন? অথচ ইতিহাস সৃষ্টি করে সেই সময়ে একজন সাধারণ নারী রমা দাসগুপ্ত থেকে সুচিত্রা সেন হতে পেরেছিলেন। আকর্ষণীয় সৌন্দর্য কাহিনীর সঙ্গে একাকার হয়ে যাওয়ার অসাধারণ নৈপুণ্য তাকে খ্যাতির শিখরে নিয়েছিল। তার রূপ, চালচলন, পোশাক ও সাজসজ্জা বাঙালি নারীর ফ্যাশনেই পরিণত হয়নি, তিনিও হয়ে উঠেছিলেন শাশ্বত বাঙালি নারীর প্রতীকী রূপ। ১৯৩১ সালের এই দিনে (৬ এপ্রিল) সুচিত্রা সেনের জন্ম হয় পাবনা, নানাবাড়িতে। পাবনা শহরের দিলালপুরে কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। ছিলেন পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
১৯৯৫ সালে দক্ষিণ কলকাতার ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। সেই ছবির পর দুই দশক বহির্বিশ্বকে আর কোনো ছবি দেখতে দেননি তিনি। ’৭৮ সালে চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানোর ৩৪ বছর পরেও এমনকি তার মৃত্যুর পরও তার প্রতি তুমুল আকর্ষণ, আবেগ ও কৌতূহলে ভাসিয়েছে পঞ্চাশোর্ধ্ব বাঙালিদেরও। সুচিত্রা সেন জেনেছিলেন কোথায় থামতে হয়। তাই তিনি নায়িকা হিসেবে পর্দায় দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে- এই চরম সত্যটি উপলব্ধি করেই সচেতনভাবে বাইরের দুনিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে নির্জনতায় ডুবেছিলেন। এতে তার ভরা যৌবনের পরমা সুন্দরীর ইমেজের প্রেমে নিজেই যে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সেটিই সত্য নয়, তার লাখো কোটি ভক্তকেও সেই মায়াজালে আটকে দিয়েছিলেন। তিনি পর্দার বাইরে বাকি জীবন কাটিয়ে দিলে তার সেই চিরচেনা চিরসুন্দর রূপের মূর্তি ভেঙে যেমন খান খান হয়ে যেত, তেমনি এভাবে মিথেও পরিণত হতেন না।
বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে বাংলা রোমান্টিক সিনেমাযুগকে স্বর্ণযুগে পৌঁছে দিয়েছিলেন উত্তম কুমারের সঙ্গে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের চিরসবুজ জুটি। বাংলা ভাষাভাষি সিনেমা দর্শকদের কাছে মহানায়ক উত্তম কুমার ও মহানায়িকা সুচিত্রা সেন যে ইমেজ দাঁড় করিয়ে গেছেন, যে গগনচুম্বী জনপ্রিয়তা রেখে গেছেন, তা আর কেউ যেমন ভাঙতে পারেননি, তেমনি আগামী শত বছরে ভাঙতে পারবেন বলে কেউ বিশ্বাস করেন না। লাখো কোটি দর্শকের হৃদয় জয় করা এমন চলচ্চিত্র জুটি এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, হাজার হাজার রমণী নানা বয়সের মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রেমে পড়েছিলেন। মৃত্যুর পরও উত্তম-সুচিত্রা সম্পর্ক মিথ হয়ে এখনো সিনেমা দর্শকদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দেয় চায়ের টেবিলে।
সুচিত্রা সেনের চলচ্চিত্রে অভিষেক ‘৫২ সালে। তার প্রথম ছবির নামা ছিল ‘শেষ কোথায়’। কিন্তু সেটি মুক্তি পায়নি। তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবির নাম ‘সাত নম্বর কয়েদি’। সেটি তাকে জনপ্রিয়তা দিতে পারেনি। কিন্তু ’৫৪ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবির মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তায় উঠে আসেন সুচিত্রা সেন। তার অভিনীত বাংলা ছবির সংখ্যা অর্ধশতাধিক। উত্তম কুমার ছাড়াও সুচিত্রা বিকাশ রায়, বসন্ত চৌধুরী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং হিন্দিতে দিলীপ কুমার, দেব আনন্দ, ধর্মেন্দ্র ও সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেছেন; কিন্তু কালের যাত্রাপথে বাংলা চলচ্চিত্রে সুচিত্রা-উত্তম জুটিই ছিল সবচেয়ে রোমান্টিক ও জনপ্রিয়। একসঙ্গে ৩০ ছবি করা রুপালি পর্দার এই জুটির আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা আর কেউ ভাঙতে পারেননি। সুচিত্রা হয়ে উঠেছিলেন কোটি কোটি তরুণের স্বপ্নের নারী। আর নারীদের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।
সুচিত্রা অভিনীত ছবির মধ্যে ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘সবার উপরে’, ‘শাপমোচন’, ‘শিল্পী’, ‘পথে হলো দেরি’, ‘হারানো সুর’, ‘গৃহদাহ’ ও ‘সাগরিকা’ অন্যতম। এসব ছবি দেখে দর্শকদের হৃদয় মনজুড়ে প্রেমের আগুনই জ্বলে ওঠেনি, সৌন্দর্যের পিপাসাও তীব্র হয়ে উঠেছিল। ‘সাগরিকা’ ছবিতে জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে উত্তমের সিগারেট টানার দৃশ্য আপনা-আপনি ধূমপায়ী পুরুষরা অনুসরণ করেছিলেন। আর সুচিত্রা সেনের ‘দ্বীপ জ্বেলে যায়’ ছবি দেখতে দেখতে আপন মনে কাঁদেননি, এমন নারীদর্শক কমই ছিলেন।
এক সময় অভিনয় ছেড়ে পর্দা ও লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর তিনি পর্দার অন্তরালে বাস করেন কন্যা মুনমুন সেন, নাতনি রাইমা ও রিয়া এবং নিকটাত্মীয় ছাড়া তার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের নিজস্ব ফ্ল্যাটে আর কেউ দেখা করতে পারেননি। ২০১৪ সালে ১৭ জানুয়ারি তিনি অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে না-ফেরার দেশে চলে যান। কিন্তু একজন সত্যিকারের তারকাদের কখনো মৃত্যু হয় না। মহানায়িকা তথা নায়িকাদের নায়িকা হয়েই বেঁচে থাকবেন সুচিত্রা সেন।
চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এক বছরের সন্তানকে খাবার খাওয়ানো নিয়ে বিরোধের জেরে গৃহকর্মী পিংকি আক্তারকে মারধরের অভিযোগ উঠে নায়িকার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন পরীমণি। ২১ মিনিট ৬ সেকেন্ডের লাইভে তিনি অভিযোগ আইনিভাবে মোকাবিলার কথা বলেন এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
লাইভের শুরুতেই নিজের স্টাফদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পরীমণি বলেন, আমার জীবনজুড়ে যারা আছে, তারা সবাই আমার স্টাফ। ফ্যামিলির মতো করে ওদের নিয়েই সব বিশেষ দিন কাটে। এই যে মেয়ে, যাকে ঘিরে এখন এত কিছু বলা হচ্ছে, সে গৃহকর্মী দাবি করতেই পারে, কিন্তু আমার কাছে সে গৃহকর্মী নয়।
পরীমণি অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের আগে সত্যতা যাচাই করা হয়নি, এবং তাকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। অভিনেত্রী বলেন, আমি এ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একদম প্রস্তত ছিলাম না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে কড়া গলায় বললেন, এত মিডিয়া ট্রায়াল (একপাক্ষিক সংবাদ) বন্ধ করে দেন। এরপর খানিকটা মুচকি হেসে হুমকির সুরে বলেন, জনগণ কিন্তু আস্ত একটি মিডিয়া, যদি সে সঠিক হয়, সত্যি হয়। এসব স্ট্যাম্পমারা মিডিয়ার দরকার হয় না। এগুলো করবেন না, এগুলো সুন্দর দেখায় না। আপনারা হবেন সাপোর্টিভ, এগুলো কি করেন আপনারা।
তিনি আরও বলেন, আমরা মিডিয়াকর্মী হয়ে যদি কাউকে বাড়তি সুবিধা দিই, সেটা ঠিক না। কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে, সেটা যাচাই না করেই যদি আমরা দোষী বানিয়ে ফেলি, সেটা কি ন্যায্য? আমি যদি দোষ করি, অবশ্যই শাস্তি পাব। কিন্তু আগে প্রমাণ তো হোক।
পরীমণি বলেন, একতরফা করবেন না, করলে সবদিক থেকেই করবেন। প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করেন, আমার বাসার নিচে আসতে হবে না। আমি নিজেই আপনাদের কাছে যাব। আমি আপনাদের কয়বার নক দিয়েছি, ওই মেয়ে যে আপনাদের নক দিয়েছে? আপনাদের নাম্বার ও কীভাবে পেল? নাকি আপনাদেরই গরজ। নাকি হাতে এস লেখা বলে আপনাদের বলদ ফলদ বলেছিলাম বলে আপনাদের গায়ে লাগল? তো বলদের প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছেন?
উল্লেখ্য, এরপর বেশ খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পরীমণি বলেন, আপনারা আইন, সংসার, জীবন-সবকিছুর ঊর্ধ্বে যেতে চান। হুমকির সুরে পরীমণি আবার বললেন, 'হিসাব কিন্তু একদিন আপনাদের দিতেই হবে। মিলিয়ে নিয়েন।
তিনি আরও বলেন, আমার হাতে সমস্ত প্রমাণ আছে, কিন্তু আমি এখনই কিছু দিতে চাই না, কারণ আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি। লাইভে একাধিকবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। লাইভের শেষাংশে তিনি বলেন, এই যে মিডিয়া ট্রায়াল, দয়া করে এটা বন্ধ করুন। অন্যদিকে, এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে।