স্বাধীনতার মাসে শুরু হচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে দারুণ একটি চলচ্চিত্র উৎসব। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে লিবারেশন ডকফেস্ট বাংলাদেশের ১১তম বারের আসর বসবে ৯ মার্চ থেকে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবারও দেশি ও বিদেশি নানা ধরনের প্রামাণ্যচিত্র দেখা যাবে উৎসবে। সিনেমা দেখা যাবে ১৩ মার্চ পর্যন্ত।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের বিভিন্ন মিলনায়তনে দেখা যাবে ছবিগুলো। এবার ন্যাশনাল কম্পিটিশনে প্রতিযোগিতা করবে আব্দুল্লাহ আল মাসুদ অপুর ‘আগস্ট স্মৃতি’, শামীম আলামিনের ‘একটি দেশের জন্য গান’, ‘মেহজাদ গালিবের ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত: একজন বকুলের আখ্যান’, ফাখরুল আরেফিন খানের ‘অবিনশ্বর’ এবং আনুশা আলমগীরের ‘বুবুর বাসা’।
আন্তর্জাতিক কম্পিটিশনে থাকছে বিদেশি ভাষার ছবি। এই শাখায় প্রতিযোগিতা করবে সিরিয়ার আনাস জাওয়াহিরির ‘সামার, সিটি অ্যান্ড আ ক্যামেরা’, স্পেনের গঞ্জালো ব্যালেস্টারের ‘করিম’, চীনের জিয়াও ইয়াং ও সিসি চেনের ‘থ্রো দ্য উইনডো’, ইরানের আমার মোরাদির ‘আহমেদ’ এবং ইয়াসের তালেবির ‘ডেসটিনি’, পাকিস্তানের জাওয়াদ শরিফের ‘দ্য লুজিং সাইড’ এবং ভারতের সৌরভ কান্তি দত্তের ‘ফাতিমা’।
এ ছাড়া সিনেমা ওয়ার্ল্ডে কানাডা, স্পেন, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পর্তুগাল, রাশিয়া, সুইডেন, পোল্যান্ড, নেপাল, ফিলিস্তিন, মেক্সিকো, লিথুনিয়া, ইতালি, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, গ্রিস, মিসর, ইকুয়েডর, ক্রোয়েশিয়া, চীন, ব্রাজিল, বেলজিয়াম, কঙ্গো, অস্ট্রেলিয়া, আর্মেনিয়া, আর্জেন্টিনাসহ বাংলাদেশের মোট ৭১টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র দেখানো হবে।
স্পেশাল ফিল্ম প্রোগ্রামস বিভাগে থাকছে সিঙ্গাপুরের চলচ্চিত্রকার ট্যান পিন পিনের ছবির ওপর রেট্রোসপেক্টিভ। তার চারটি ছবি দেখানো হবে। থাকবে প্রতিবেশী দেশের বিশেষ পাঁচটি প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী।
শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের প্রথিতযশা অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ নেবেন একটি মাস্টারক্লাস। সেখান তার অভিনয় অভিজ্ঞতার বিষয়টি উঠে আসবে। থাকবে বাংলাদেশের সিনেমার ইতিহাস নিয়ে একটি প্রদর্শনী ‘ফিরে দেখা: বাংলা সিনেমার স্বর্ণালি সময়’ নামে।
প্রতিবারের মতো এবারও থাকছে তরুণ নির্মাতাদের জন্য পিচিং ও ওয়ার্কশপ ল্যাব ‘এক্সপোজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্টস ২০২৩’। এটি একটি ওয়ার্কশপ ও সিনেমার জন্য তহবলি সংগ্রহের প্রোগ্রাম। নির্বাচিত তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা দেশি-বিদেশি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতাদের কাছে প্রকল্প উপস্থাপন নিয়ে তিন দিনের কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। পরে নিজের প্রকল্প বিচারকদের সামনে উপস্থাপনের (পিচিং) সুযোগ পাবেন। সেরা দুটি প্রকল্পকে তহবিল দেবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
এবারের ‘এক্সপোজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্টস’-এ নির্বাচিত প্রকল্প ও নির্মাতারা হলেন সজল কান্তি সরকারের ’৭৫-এর প্রতিরোধ’, শরীফ নাসরুল্লাহর ‘আন্ধারমানিক’, মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনের ‘আন্ডা স্টোরি’, এম ডি আবিদ মল্লিকের ‘অপবিত্র পানি’, মোহাম্মদ এরফানুল হক জুয়েলের ‘মনন থেকে বুনন’, জান্নাতুল ফেরদৌস নীলার ‘দিব্যধাম’, আল হাসিব খান আনন্দ ও তাসনোভা তাবাস্সুম অতশির ‘ল্যান্ড অ্যান্ড ওম্ব’, আল মাহদী সিঞ্চনের ‘নিরুদ্দেশের ট্রেন’, শোয়েবের ‘ঘাতকের জাল’, প্রজ্ঞা আহমেদ জ্যোতির ‘বাংলাদেশ গণনাট্য সংস্থা’, রঞ্জন মল্লিকের ‘মুক্তিযুদ্ধে কুল্লাপাথর’ ও আবদুল্লাহ মাসুদ অপুর ‘মুক্তিযোদ্ধার ক্যামেরা’।
এই আয়োজনে মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ভারতের শিক্ষক ও চলচ্চিত্রকার নিলোৎপল মজুমদার, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা আ কা রেজা গালিব ও ভারতের চলচ্চিত্রকার রণজিৎ রায়।
এবারের আসরে ‘ন্যাশনাল কম্পিটিশন: ১৯৭১ অ্যান্ড বিয়ন্ড’ বিভাগের বিচারক নির্মাতা নুরুল আলম আতিক, শিক্ষক ও চলচ্চিত্র সমালোচক হাবিবা রহমান এবং লেখক ও অনুবাদক জি এইচ হাবিব। আর ‘ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন’ বিভাগের বিচারক সিঙ্গাপুরের নির্মাতা ট্যান পিন পিন, ফ্রান্সের নির্মাতা লিও ডিসক্লোজে ও লেখক ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ।