বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২

রাজধানীতে বেপরোয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা

নিয়মকানুন মানার বালাই নেই, সড়কে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা   
ছবি: সংগৃহীত
সৈয়দ ইকবাল 
প্রকাশিত
সৈয়দ ইকবাল 
প্রকাশিত : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:৪৯

রাজধানীর সিপাহীবাগ এলাকা। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্যামে বসে আছে মানুষ। এমনিতেই রাস্তা সরু, তার মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাস্তার দুই পাশে পার্ক করে যাত্রী ওঠানামা করছে। রাস্তার মাঝখানে যে জায়গা রয়েছে তা দিয়ে কোনোভাবেই দুই দিকের গাড়ি আসা-যাওয়া করতে পারছে না। ফলে সৃষ্ট হচ্ছে জটলা, জ্যামের। এটা এই এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা বলে জানান স্থানীয় মোবারক মিয়া। পেশায় তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর একরাশ অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি। বললেন, ‘এটা দেখার কেউ নেই। এখানে এই চিপা রাস্তার মধ্যে ব্যাটারির অটোরিকশাগুলো দুই পাশে পার্কিং করে রাখে। ফলে রাস্তা দিয়ে কোনোভাবেই গাড়ি চলাচল করতে পারে না। অফিস টাইম আর সন্ধ্যা বেলায় ভয়াবহ জ্যাম লাগে এখানে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় এখানে।’

শুধু সিপাহীবাগ বাজার এলাকার চিত্রই নয়। এ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন নগরের এক অন্যরকম এক আতঙ্কের নাম। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ি, বাসাবো, বৌদ্ধ মন্দির, মুগদা, সিপাহীবাগ, মানিকনগর, মান্ডা, সায়েদাবাদ, কোনাপাড়া, বসিলাসহ এই এলাকাতেই হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। আর তো রয়েছেই শহরের অন্যান্য এলাকার চিত্র। এটার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নতুন নতুন গাড়ি প্রতিনিয়ত নামানো হচ্ছে রাস্তায়। কোনো নিয়মকানুন নেই।

তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, নগরীর নিম্ন এলাকাগুলোয় এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নামানোর ব্যাপারে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হয় না। যেমন- গুলশান-বনানী কিংবা বারিধারায় চাইলেই এসব গাড়ি হুট করে নামানো যায় না; কিন্তু যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা কিংবা সিপাহীবাগের মতো এলাকাগুলোতে যে কেউ যখন-তখন নামিয়ে ফেলতে পারে এসব রিকশা। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এসব এলাকায় আরও যানজট বাড়ছে, বাড়ছে রাস্তায় বিশৃঙ্খলাও। অথচ, নিয়ম রয়েছে রাস্তার হিসাব করে যেকোনো নামানো বিষয়টি। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যেন রাস্তায় নামানোই এখন সহজ একটি প্রক্রিয়া।

রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকা, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুরসহ ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং উত্তরাতেও ব্যাপক সংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের বেপরোয়া চলাচলে প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। কিছু কিছু ঘটনা আলোচনায় আসছে। বাকি অনেক ঘটনা জানতেও পারছে না মানুষ।

সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কত, এর সঠিক কোনো তথ্য কোনো সংস্থার কাছে নেই। ডিএসসিসি এলাকায় অবৈধ প্রায় ৪ লাখ রিকশা রয়েছে। ডিএনসিসি এলাকায়ও অবৈধ রিকশার সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লাখ হবে বলে মনে করছেন ডিএনসিসি সংশ্লিষ্টরা। নতুন করে ঢাকায় যেসব রিকশা নামানো হচ্ছে, এর মধ্যে বড় একটি সংখ্যা ব্যাটারিচালিত। শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এ জন্য রিকশার মালিকরাও রিকশায় ব্যাটারি যুক্ত করছেন।

জানা গেছে, এসব রিকশা থেকে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যা স্থানীয় থানাসহ রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতা-কর্মীরা ভাগ পেয়ে থাকে।

এদিকে একটা সময় ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে ওঠানোর বিষয়ে বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়মের কোনো বালাই নেই বললেই চলে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দেদার ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে চলার পাশাপাশি তা বিভিন্ন ফ্লাইওভারেও উঠে যাচ্ছে যেনোতেনোভাবে এসব রিকশা চলার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

এদিকে এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কিছু ইতিবাচক মন্তব্য দিয়েছেন। তাদের মতে, এসব গাড়ির কারণে মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এটা ইতিবাচক দিক। তবে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা একজন চালককে জানাতে হবে- তার কোন রাস্তায় কীভাবে চলাচল করতে হবে। রাস্তায় চলাচলের একটা নিয়ম-নীতি রয়েছে। তাকে সেই শিক্ষাটা দিতে হবে।

ঢাকা শহরের মতো দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন রাস্তার বিষফোড়া। এলাকার ভেতরের রাস্তায় এসব রিকশা চলাচলের কথা থাকলেও এগুলো সব সময় মহাসড়কে উঠে আসে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নিয়ন্ত্রণ করা যায় না রাজনৈতিক কারণেই। কারণ দিনশেষে এ থেকে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যার ভাগ রাস্তার পাতি নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত পেয়ে থাকে।

দেশের অনেক সড়কেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে থাকে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা গাড়িগুলো। অন্যদিকে, দূরপাল্লার পরিবহনগুলো দ্রুত গতির হয়ে থাকে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তা ও ধীরগতির অবৈধ যানবাহনের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ভোগও।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করা এই রিকশার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে এটাই এখন বড় প্রশ্ন? শুধু অভিযান চালিয়ে অবৈধ রিকশার দাপট বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য নগর পরিকল্পনাবিদদের। তাই প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ। খবর নিয়ে জানা গেছে, ইজিবাইকগুলো রুট পারমিট ছাড়াই রাস্তায় চলাচল করছে।

চার্জ দিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রাফিক বিভাগের কাছে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও পুরো দেশজুড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। ধারণা করা হয় এ সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকাসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে চলাচল করছে। সারা দেশে এই অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের খরচ হচ্ছে। সাধারণত একটি ইজিবাইক চালানোর জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন। আর প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৯০০ থেকে ১১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট (দিনে বা রাতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা) বিদ্যুৎ খরচ হয়। সে হিসেবে এক লাখ ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জের জন্য জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন অন্তত ১১০ মেগাওয়াট এবং মাসে ৩৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কথা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ গ্যারেজ চুরি করে ও লুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব ব্যাটারি রিচার্জ করায় সরকার বিদ্যুতের বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রিকশাগুলোর ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য গড়ে উঠেছে বেশ কিছু গ্যারেজ। এসব গ্যারেজে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো চার্জ দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। গ্যারেজের মালিকরা প্রতিটি রিকশা চার্জ দেওয়ার জন্য দৈনিক ৪০ টাকা নিয়ে থাকেন। নিয়মানুযায়ী গ্যারেজগুলোতে বাণিজ্যিক মিটার থাকার কথা। কিন্তু গ্যারেজের মালিকরা বাড়ির পাশে গ্যারেজ গড়ে তুলে বাড়ির মিটারের সংযোগ থেকেই ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন। এতে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক নিজের বাড়িতে অথবা গরিব কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর বাড়িতে রাতব্যাপী রিকশার ব্যাটারিগুলো চার্জ দিচ্ছেন। যার অধিকাংশ গ্যারেজেই নিষিদ্ধ এসব অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন। অনেক স্থানে চলছে মিটার টেম্পারিংয়ের মতো ঘটনা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন করে ইজিবাইক আমদানি বন্ধ ও পুরোনোগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি গত কয়েক বছরেও।

মহাসড়কের আতঙ্ক থ্রি হুইলার

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের শহর ও গ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটো চার্জার ভ্যান, নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার জাতীয় ইজিবাইক, টেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহন। নানা পদক্ষেপের পরও বিপজ্জনক এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কে বাধাহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশার মালিকরা আইন মানতে নারাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের শহর-বন্দর-গ্রামের সড়ক ছেয়ে গেছে এসব ব্যাটারিচালিত ‘থ্রি হুইলার’ রিকশা ও ইজিবাইক।

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করেন বুয়েটের অধ্যাপক ও গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যেসব গাড়ি যেমন- ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন সেগুলোর বিষয়ে করণীয় কী এগুলো কেউ ভাবছেন বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিদিনই এসব গাড়ির জন্য সড়কে দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ। এসব গাড়ির চালকের গাড়ি চালানোর কোনো দক্ষতাই নেই। নেই গাড়ির কোনো নিবন্ধনও। বিআরটিএ এসব গাড়ির বিষয়ে এখনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন বুঝি না। মহাসড়কে ধীরগতির এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন দুর্ঘটনার বড় কারণ। মহাসড়ক সব সময় অবারিত থাকা উচিত। এসব ছোট গাড়ির জন্য আলাদা লেন করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সিঙ্গেল সড়কগুলো যখন সরাসরি মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় আর আইন করা হয় এসব তিন চাকার যান মহাসড়কে ওঠা নিষেধ, তাহলে বিকল্প রাস্তা প্রয়োজনের জন্য। আর বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না করে আইন করে কখনোই এসব যানবাহন বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা ২০০৯ সালে যখন চীন থেকে এসব যানবাহন আমদানি হয়েছে তখনই এ বিষয়ে পরিকল্পনা করা দরকার ছিল। গত ১৫ বছরে কয়েক লাখ মানুষের কর্মনির্ভর করে এখানে। তিনি বলেন, সব মহাসড়কের দুই পাশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সার্ভিস রোড চালু করতে হবে। এতে মহাসড়ক একদিকে ঝুঁকিমুক্ত হবে এবং থ্রি-হুইলারসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে। আনফিট যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত কয়েক বছরে লাখ লাখ অটোরিকশা আমদানি করা হয়েছে। এর অর্ধেকও লাইসেন্স পায়নি; কিন্তু স্থানীয়ভাবে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিয়ে চলছে। ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, ভটভটি একই প্রক্রিয়ায় চলছে। তিনি বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ করতে হলে জাতীয় সড়ক কাউন্সিলের দেওয়া ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সিটি সার্ভিসের ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচলের অযোগ্য। আন্তঃজেলা দূরপাল্লার ৪৮ শতাংশ বাস ২০ বছরের বেশি পুরোনো। আনফিট, লক্কর-ঝক্কর যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দক্ষ চালকের অভাব রয়েছে। পরিকল্পনা করে মহাসড়কগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন খুবই জরুরি। পুলিশ ও মালিক-শ্রমিকদের চাঁদাবাজি বন্ধ করা জরুরি।


মাদকসহ রংধনু গ্রুপের সাইফুল ও তার সহযোগী গ্রেপ্তার

পাঠানো হয়েছে কারাগারে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদকসহ রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত ইউনিক রিজেন্সী হোটেল এন্ড রুফটপ স্কাই রেস্টুরেন্টে রংধনু গ্রুপের হেড অফ মিডিয়া মো. সাইফুল ইসলাম ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপর দুজন হলেন- ইউনিক রিজেন্সী হোটেল অ্যান্ড রুফ টপ স্কাই রেস্টুরেন্টের ইকবাল মাহমুদ বাপ্পী, তার সহযোগী মো. ইয়াছিন আল শুভ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত রেস্টুরেন্টটিতে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল। ঘটনাস্থল থেকে সাইফুল ইসলামসহ তিন জনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬ কেজি সীসা, সীসা সেবনের ১৩টি হুক্কা, ১৬টি খালি মদের বোতল ও তিনটি আইফোন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের হয়।
এদিকে আজ শুক্রবার উক্ত মামলায় তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
এদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমানের আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে আসামিদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক শাহ জালাল খান। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রসিকিউশন বিভাগের মো. সাব্বির গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।


স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ, অতঃপর ৮৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ভাটারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ৮৬ কেজি গাঁজাসহ পেশাদার মাদক কারবারি চক্রের সদস্য মো. তাফসিরকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা গাঁজার মূল্য প্রায় ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। গতকাল বুধবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলছে-স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ জানতে পারে স্বামী তাফসির পেশাদার মাদক কারবারী। পরে অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৮৬ কেজি গাঁজা, গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। উদ্ধার করা গাঁজা তাফসির বিক্রির উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রেখেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, গত বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিজ শয়নকক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে এক নারীর আত্মহত্যার খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ। ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে জানার জন্য স্বামী তাফসিরকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। পরে রেকর্ডপত্র যাচাই করে তফসিরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পায় পুলিশ। এরপর নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, তিনি একজন পেশাদার মাদক কারবারি এবং তার বাসার একটি কক্ষের মধ্যে বিপুল পরিমাণ গাঁজা রয়েছে।
পরে তার দেওয়া তথ্যে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার তার ভাড়া বাসার ৬ষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ৮৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গাঁজার আনুমানিক মূল্য প্রায ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় তফসিরের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।


ছুটি শেষে হতেই ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণে পঞ্চম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:১৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই ঢাকার দূষিত বাতাসের মান আবারও পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। যেখানে গতকাল শনিবার ছিল নবম।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা নগরীর এই বাতাসকে বাসিন্দাদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আজ রোববার সকাল ৮টার ৫০ মনিটে ১৫১ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলেছে।
ভারতের দিল্লি, নেপালের কাঠমান্ডু ও পাকিস্তানের লাহোর শহর যথাক্রমে ২৮৮, ২২৯ ও ২০৪ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ’মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ’সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ’অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ’বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।

সূত্র : ইউএনবি


শাহবাগে ফুলের দোকানে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর শাহবাগে ফুলের দোকানে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিটের এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান।
তিনি জানান, রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে আগুন শাহবাগের ফুলের দোকানের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করেছে।
শনিবার রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে গণমাধ্যমকে জানান ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান জানিয়েছেন, বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুনে সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছি। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
এছাড়া আগুনে কেউ হতাহত হননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


শাহবাগে ফুল মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২৩:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর শাহবাগের ফুল মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান সমকালকে জানান, খবর পেয়ে পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ করছে।
এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যায়নি বলে উল্লেখ করেন ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান।


চেনা চেহারায় ফিরছে ঢাকা

ঈদ উদযাপন শেষে শহরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৫ এপ্রিল, ২০২৫ ২২:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল ফিতরের ৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার খুলছে সরকারি অফিসগুলো। বেসরকারি অফিসগুলো খুলে গেছে আজ শনিবারই। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন চাকরিজীবীরা। ঈদে বাড়ি যাওয়া এসব ঘরমুখো মানুষরা ফিরে আসায় চির চেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে ঢাকা। তবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, ঈদের ছুটিতে যত মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন শনিবার সকাল পর্যন্ত ফিরেছেন তার ৪০ শতাংশ। আর আজ সারা দিনেই ঢাকার সবগুলো দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাটের লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে গ্রাম থেকে মানুষকে সপরিবারে ফিরতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের মধ্যেই ঢাকায় প্রবেশ করেছেন গ্রামে যাওয়া ৮০ শতাংশ মানুষ।

শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে এখনো নেই যানজট, নেই গাড়ির বাড়তি চাপ। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় সড়কে আজ যানবাহনের সংখ্যা ছিল বেশি। বাড়ি থেকে ফেরা মানুষরা ব্যাগ-বস্তা নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। কেউ সিএনজিতে, কেউ রিকশায়, কেউ আবার বাসে করে আবাসস্থলে যাচ্ছেন। ফলে সড়কে আজ মানুষের আনাগোনা ছিল বেশি।

ঈদের আনন্দ শেষে ভোরের বাসে যশোর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন ফার্মগেটের বাসিন্দা তানজিমুল ইসলাম। ফার্মগেটে কথা হলে তানজিম বলেন, কাল থেকে অফিস শুরু। তাই আজ চলে আসতে হয়েছে। আজ অনেক মানুষ ঢাকায় ফিরছে। বাসের টিকিট পেতে কষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকার টার্মিনালগুলোতেও ভিড় ছিল।

সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি এখনো শেষ না হলেও বেশিরভাগ বেসরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি শুক্রবারই শেষ হয়ে গেছে। ফলে আজ থেকেই কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে বেসরকারি অফিসগুলো। তবে ছুটির আমেজ এখনো না কাটায় সেখানেও নেই কর্মব্যস্ততা।

কারওয়ান বাজারের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন রাসেল। তিনি বলেন, কলিগদের বেশিরভাগই ফিরে এসেছেন। দুই-একজন বাড়তি ছুটি নিয়েছেন। তারা এখনো ফেরেননি। কাজ শুরু হলেও আজ তেমন চাপ নেই।

এদিকে বেশ কয়দিন বন্ধ থাকার পর মার্কেট-বিপণিবিতানসহ বেশিরভাগ দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেই সময় কাটছে তাদের।

ফার্মগেট এলাকার ইন্দিরা রোড সোসাইটিতে একটি ডিপার্টমেন্টল স্টোর চালান হাবিব। ঈদের সময় সকাল-বিকেল মিলিয়ে কয়েক ঘণ্টা দোকান খোলা রাখলেও শুক্রবার থেকে পুরোপুরি দোকান শুরু করেছেন তিনি। হাবিব বলেন, ঈদের সময় কয়েক ঘণ্টা করে দোকান খুলেছি। গতকাল থেকে পুরোপুরি খোলা রাখছি। তবে কাস্টমার নেই। আগের মতো কাস্টমার হতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

ঢাকা ছেড়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ সিমধারী, ফিরেছেন ৪৪ লাখ

এদিকে, ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যার ভিত্তিতে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের একটি উপাত্ত প্রকাশ করেছে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল সংস্থাটির দেওয়া উপাত্ত অনুসারে এবারের ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে গত সাত দিনে ১ কোটি ৭ লাখ সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন। তবে সাত দিন পর ৪৪ লাখ মোবাইল সিম ব্যবহারকারী ঢাকায় প্রবেশ করেছেন।

মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর দেওয়া সিম মবিলিটির হিসাবে এই তথ্যের ভিত্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।

মোবাইল অপারেটরগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাত দিনে মোট ১ কোটি ৭২ লাখ ৯ হাজার ১৫৫ সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন। এ সময় ঢাকায় প্রবেশ করেছেন ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ২৭৯ সিম ব্যবহারকারী।

সবচেয়ে বেশি সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন ৩০ মার্চ। এই দিন ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৬১ সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ত্যাগ করেন। আবার ওই দিন ঢাকায় এসেছেন মাত্র ৪ লাখ ৯১ হাজার ৮৮ সিম ব্যবহারকারী।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি সিম ব্যবহারকারী ঢাকায় ফিরেছেন ৩ এপ্রিল। এই দিন ঢাকায় প্রবেশ করেছে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫৭৯ সিম ব্যবহারকারী। কিন্তু একই দিনে ঢাকা ছেড়েছেন মাত্র ৮ লাখের মতো সিম ব্যবহারকারী।

নির্দিষ্ট অপারেটরভিত্তিক তথ্য বলছে, প্রতিদিনই গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকের গ্রাহকদের বড় একটি অংশ রাজধানী ত্যাগ করেছেন। ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত শুধু গ্রামীণফোনের ৬৩ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন।

তবে এক ব্যক্তি একাধিক সিম ব্যবহার করায় এই সংখ্যা প্রকৃত ব্যক্তির সংখ্যা নয়। অনেকেই মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করার কারণে সব অপারেটরের নম্বর নিবন্ধন করে থাকেন।

এ ছাড়া শিশুসহ এমন অনেকেই ঢাকা ছেড়েছে, যারা কোনো মোবাইল সিম ব্যবহার করে না। তাদের নামে সিম নিবন্ধন করা নেই।


বংশালে ফাষ্টফুডের দোকানে নারীসহ দগ্ধ ৬

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর বংশালে বাংলাদেশ মাঠ এলাকায় ফাষ্টফুডের দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে আগুনের ঘটনায় নারীসহ দগ্ধ ছয়।
একটি ভাসমান হকারের ফাস্টফুডের দোকানে সিলিন্ডারের লুজ পাইপ থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। এতে ফাস্টফুডের মালিক ও ক্রেতাসহ ৬ জন দগ্ধ হয়।
দগ্ধরা হলেন- রিমঝিম (১৬), মেহেদী হাসান (১৮), সাগর (২৫), ইকবাল (৩১), নয়ন (২৯) ও অপূর্ব (১৮)।
গতকাল সোমবার ঈদের দিন রাত সাড়ে ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নগরীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বংশাল এলাকায় আগুনে দগ্ধ অবস্থায় ৬ জনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তাদের চিকিৎসা চলছে।
তবে তাদের শরীরের দগ্ধের পরিমাণ কম। সাগর নামে একজনের ১১ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিদেরকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে বংশালের বাংলাদেশ মাঠে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় ফাস্টফুডের দোকানে আগুন লেগে ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন।
দোকানে থাকা গ্যাসের চুলার পাইপের গোলযোগের কারণে এই আগুনের ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।


ঈদের ছুটিতেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের ছুটিতে ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল কমে গেলেও বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আজ ঢাকা রয়েছে চার নম্বরে। বায়ুমানের স্কোর ১৫৩, যা অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান বিষয় ওয়েবসাইট আইকিউএয়ারে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে নেপালের কাঠমান্ডু (স্কোর ২৫৬)। অর্থাৎ সেখানকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এই শহরটির দূষণ স্কোর ১৯২ অর্থাৎ এই শহরের বায়ু অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। তৃতীয় তালিকায় রয়েছে থাইল্যান্ডের চিয়ান মাই (স্কোর ১৬৪) যা অস্বাস্থ্যকর। তালিকায় পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৫১), চীনের উহান (১৪৭)।


বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাতপবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টা।
এরপর এক ঘণ্টা পর পর একটি করে জামাত হবে। শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। গত বুধবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ঈদের দিন সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা ও ১০টা ৪৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল ৭টায় প্রথম ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী।
মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।


ঈদে নগরবাসীর নিরাপত্তায় ভ্যানগার্ড হিসেবে থাকবে ডিবি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ২৩:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উল ফিতর উদযাপনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ভ্যানগার্ড হিসেবে নগরবাসীর পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক।

শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ডিবি কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিএমপি সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মহানগরে চেকপোস্ট টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিএমপির ৫০ টি থানা এলাকায় প্রতিদিন জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭ টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া মহানগর এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি ৭১টি পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে।

ডিবি প্রধান বলেন, পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে অক্সিলিয়ারি ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ইউনিফর্মড পুলিশের পাশাপাশি মহানগরীর নিরাপত্তায় ডিবির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টিম মাঠে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও নগরবাসীর নিরাপত্তায় ডিবি 'ভ্যানগার্ড' হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ও যাবে। পবিত্র ঈদ উপলক্ষে বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিবির কার্যক্রম আরো বেগবান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে ডিবি সর্বদা নগরবাসীর পাশে রয়েছে। নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে ডিবি সদা প্রস্তুত। ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, রেলস্টেশন বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য ডিবি গোয়েন্দা নজরদারি পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া ডিবির সাইবার টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। সাইবার স্পেস ব্যবহার করে ঈদ উপলক্ষ্যে যেকোনো অপপ্রচার রোধে ডিবি তৎপর রয়েছে। প্রো অ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের অংশ হিসেবে ডিবির জাল সর্বত বিস্তৃত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ডিবি সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।

রেজাউল করিম মল্লিক আরো বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহ রোধে ডিবি অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে ডিবির অভিযানে বিপুল সংখ্যক জালনোট ও জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের বেশ কয়েকজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোজা শুরুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত ডিবির অলআউট অ্যাকশনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিনতাইকারী, ডাকাত, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া ডিবির মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেশাদার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ঈদে মহল্লা, বাসা/মার্কেটে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি, থানা বা ডিবিকে অবহিত করবেন। তাছাড়া ডিএমপির কন্ট্রোল রুমের নম্বর অথবা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ যোগাযোগ করা যেতে পারে। বিপণিবিতানসহ যে কোনো স্থানে নাশকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কিত যেকোন তথ্য থাকলে ডিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ছুটির দিনে সদরঘাটে লঞ্চগামী যাত্রীদের ভিড়

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌপথে ঘরমুখো বাড়ি ফেরার মানুষের ভীড় বেড়েছে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার ঢাকার প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌপথে ঘরমুখো বাড়ি ফেরার মানুষের ভীড় বেড়েছে। রমজানের শেষে এসে যাত্রী চাপ বাড়ায় অনেকটা খুশি লঞ্চ মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা। এদিকে স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিস চালু হওয়ায় অনেকটা স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরতে পারছেন বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

শুক্রবার রাত পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, পন্টুনগুলোতে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অন্য দিনগুলোর তুলনায় শুক্রবার লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন লঞ্চগুলোও যথাসময়েই ঘাট ছেড়ে গেছে। মূলত শুক্রবার থেকে সকল বেসরকারি অফিসসহ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় এ ভিড় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা।

তারা জানান, দিনের শুরুতেই পল্টুনগুলোতে নৌপথে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের উপস্থিতি গত কয়েক দিনের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। সকালে চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, হাতিয়া, পটুয়াখালীগামী পন্টুনে বেশ ভিড় দেখা যায়। বরাবরের মতো এদিন দুপুরে যাত্রীদের ভিড় সকালের তুলনায় কম থাকলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় দুপুরে ভিড় একেবারে খারাপ ছিল না। বিকেলে আবার যাত্রীর ভিড় বেড়ে জনসমুদ্র তৈরি হয়। এদিন সব থেকে ভিড় ছিল ইলিশা রুটে। ভোলা রুটের লঞ্চগুলোতেও যাত্রী ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেলে বরিশালগামী লঞ্চগুলোতেও যথেষ্ট ভিড় ছিল।

এদিন বরিশালগামী লঞ্চ সুন্দরবন-১০ এ মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। লঞ্চটির স্টাফ মোজাম্মেল হোসেন জানান, আগে ঈদের সময় সদরঘাট থেকে বরিশালগামী প্রতিটি লঞ্চের একটি অগ্রিম টিকিট পাওয়ার জন্য যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকতো। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে কেবিনের টিকিট না পেয়ে অনেকের মুখ মলিন হতো। একপ্রকার নিরুপায় হয়ে পরিবার নিয়ে ডেকে বসে যেতেন অনেকে। কেউ কেউ ডেকে জায়গা না পেয়ে লঞ্চের ছাঁদে উঠতেন। আবার কেউ নিজ থেকেই টিকিটের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে চাইতেন। কিন্তু সে চিত্র এখন আর নেই। এখন টিকিটের কোনো বাড়তি চাপ নেই। ঘাটে আসলেই টিকিট পাওয়া যায়। এখন খুব বেশি প্রয়োজন হলে যাত্রীরা ফোনে যোগাযোগ করেন।

ইলিশাগামী যাত্রী হারুন শেখ জানান, সদরঘাটে এসেছি জ্যাম ঠেলে। এছাড়া আর কোনো ভোগান্তি নেই। কেবিন পেতে সমস্যা হয়নি। অভিযান-৫ লঞ্চের একটি সিঙ্গেল কেবিন নিয়েছি। ভাড়াও ঠিকঠাক নিয়েছে

ভোলাগামী যাত্রী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সদরঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। ঈদে পরিবারের সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার উদ্দেশ্যে বাসায় যাচ্ছি।

সদরঘাটে দায়িত্বরত আনসার সদস্য রাশেদুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। সবাই সবার দায়িত্ব পালন করছে। এখন পর্যন্ত কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, সদরঘাটে এখনো পর্যন্ত তেমন ভিড় দেখছি না। গার্মেন্টস ছুটি হলেই লঞ্চ ভরবে। আশা করছি ঈদের আগে আরও ভিড় হবে।

লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড়ের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদীবন্দর, সদরঘাট) মুহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ঘাটে ভালোই ভিড় আছে। বিশেষ লঞ্চও চলছে।


রমজানের শেষে এসে চড়া সবজির বাজার, দাম বেড়েছে মাংসেরও

ঈদের আগে দাম বাড়লেও ঈদের ছুটি শেষে তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে মত বাজার সংশ্লিষ্টদের। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঈদ সামনে রেখে রমজানের শেষ সপ্তাহে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে সবজির দাম আকাশচুম্বী। দাম বেড়েছে মাংসেরও।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ সবজিতে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা।

শান্তিনগর কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ অনেকটাই কমে এসেছে। শীত-গ্রীষ্মের মাঝামাঝি মৌসুম হওয়ায় সবজির দাম এ সময়ে বেশি বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।

সবজি বিক্রেতা আরিফ বলেন, ‘এখন বাজারে না শীতের সবজি আসছে, না গরমের সবজির মৌসুম শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে মধ্যবর্তী এমন অবস্থায় সবসময়ই সবজির দাম বেশি থাকে। মৌসুমি সবজি উঠতে শুরু করলে দাম আবার কমে আসবে।’

মালিবাগ কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করল্লা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও সজনে ডাটা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

ঈদের আগে ছুটির দিনে সবজি কিনতে এসে হতাশ ক্রেতারা। তারা বলছেন, রমজানের মাঝামাঝি সময় সবজির দাম অনেকটাই কমে আসলেও শেষের দিকে রীতিমতো আগুনে দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি।

মালিবাগ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ইফাজ বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি সবজির কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। পেঁপে আর ঢেঁড়শ বাদে প্রতিটি সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের বাজারে সরবরাহ কমে আসবে, তাই আগে থেকে সবজি কিনতে এসে দেখি বাজারের বেহাল দশা।’

তবে কমেছে লেবুর দাম। রোজার শুরুতে লেবুর দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা হালি হলেও শেষ সপ্তাহে তা উল্লেখযোগ্য কম দামে বিক্রি হচ্ছে। সিলেটের এলাচ লেবু হালিপ্রতি ২০ টাকা, কাগজি এবং বাতাবি বিক্রি হচ্ছে হালিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

অন্যদিকে, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত উচ্চমূল্যেই বিক্রি হচ্ছে বেগুন। জাতভেদে প্রতি কেজি বেগুন এখনও ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। টমেটোর দাম কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং শসা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

ধনেপাতার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা হলেও দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। খুচরা বাজারগুলোতে কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং চালকুমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এতকিছুর মধ্যেও আলুর দাম কম। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায় এবং খুচরা পর্যায়ে তার দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আলুর দাম কম থাকলেও কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায়। তবে পাইকারিতে প্রতি পাল্লা (১ পাল্লা= ৫ কেজি) পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে ভারতীয় রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা এবং দেশি রসুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। আদার দাম রয়েছে প্রায় আগের মতোই। জাতভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।

দাম বেড়েছে মুরগির মাংসের

ঈদের আগে বেশিরভাগ দোকানে মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে। উত্তর ও মধ্য বাড্ডার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২১০ টাকা থাকলেও, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজিদরে।

একইভাবে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগিও। সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, মুরগি সরবরাহ বা পরিবহন ব্যবস্থায় কোনো সংকট নেই। কিন্তু ঈদের আগে বাজারে অনেক বাড়তি টাকা দিতে হয়। কর্মচারীদের ঈদ বোনাস, বাজারের তোলা টাকা, আড়তের ভাড়া— সব মিলিয়ে বাধ্য হয়েই ঈদের আগে দাম কিছুটা বাড়াতে হয়।

মুরগি বিক্রেতা সবুজ বলেন, ‘ঈদের এই কয়দিন মুরগির দাম একটু বাড়তি থাকবে। এখন যাকে দিয়েই কাজ করাবেন তাকেই ঈদের বকশিস দিতে হবে। সব মিলিয়ে লোকসান এড়াতে মুরগির দাম একটু বাড়াতে হয়েছে।’

বাজারে মুরগির দাম বাড়লেও দাম স্থিতিশীল আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। জায়গাভেদে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যেই আছে।

ডিমের দামও স্থিতিশীল রয়েছে। ফার্মের বাদামি ডিম পাইকারিতে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন এবং খুচরা পর্যায়ে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। সাদা ডিম পাইকারিতে ১১০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে চড়া ইলিশের দাম

মাছের বাজারে প্রায় প্রতিটি মাছের দামই বেড়েছে জিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মতো। সবচেয়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ।

শান্তিনগর কাঁচাবাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ছিল ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এক কেজির ওপরে ওজন হলে কেজিপ্রতি দাম পড়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে। এছাড়া ছোট সাইজের ইলিশের দামও কেজিপ্রতি ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

ইলিশ বিক্রেতারা বলেন, ইলিশের সরবরাহ একেবারেই কম। ছোট ইলিশ কিছুটা পাওয়া গেলেও বড় ইলিশ একেবারেই যৎসামান্য। এদিকে ঈদের আগে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। সব মিলিয়ে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে।

অন্যান্য মাছের মধ্যে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে। এক সপ্তাহ আগে মধ্যম সাইজের গলদা চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা থাকলেও এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

এছাড়া রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, পোয়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের আগে প্রায় প্রতিটি পণ্য উচ্চদরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।


বিপুল ইয়াবাসহ ৩ ইয়াবা কারবারি গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ৪৬ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত বাসসহ তিন পেশাদার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি-রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম। উদ্ধার করা এসব ইয়াবার মূল্য প্রায় ৯২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তাররা হলেন, আবুল হোসেন (৫৫), স্বপন কুমার নট্র ওরফে সালমান (৪২) ও শাকিল (২৩)। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি-রমনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারে কয়েকজন মাদক কারবারি বাসে করে ইয়াবা নিয়ে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগের দিকে আসছে। এমন তথ্যে অভিযান চালিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ এলাকার ফুট ওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে চেকপোস্ট স্থাপন করে তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার করে। এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত বাসটি জব্দ করা হয়।

পরে গ্রেপ্তাররা দেখিয়ে দিলে বাসের মধ্যে বিশেষ কায়দায় রাখা ৪৬ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য প্রায় ৯২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা কক্সবাজার থেকে ইয়াবা ঢাকায় এনে রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন মাদক কারবারির কাছে বিক্রি করত।


banner close