মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
সাত কার্যদিবস

ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ২৮ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৯ জুন, ২০২৪ ২১:৫৫

দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই বড় উত্থান হয়েছে। এর ফলে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বেড়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। একই সঙ্গে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এতে ঈদের পর লেনদেন হওয়া সাত কার্যদিবসেই ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশপাশি সবকটি মূল্যসূচকও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতিও। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৪টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১৭ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। ফলে ঈদের পর লেনদেন হওয়া ৭ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২৭ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা।

এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ১১১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১২ শতাংশ। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ১২৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। অর্থাৎ ঈদের পর সাত কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২৩৭ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এ সূচকটি বেড়েছে ৪৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহের দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ৫৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।

ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও টানা বেড়েছে। গত সপ্তাহে এ সূচকটি বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহের দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ৩৪ পয়েন্ট।

মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৬০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৮৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রেনেটার শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ক্যাপটিক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বিচ হ্যাচারি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।


স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৭৪ টাকা কমল

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার কারণে পাঁচ দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৪ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১ জুলাই) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা সোমবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। গতকাল রোববার (৩০ জুন) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৪ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৬ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৪ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭২৪ টাকা কমিয়ে ৭৯ হাজার ৩৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ছয় টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৪০০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৮ হাজার ৩৫৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৩৪১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১২ হাজার ৯৭৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৪৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ৮৩৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৪৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

তার আগে গত ১২ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৩ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৬ হাজার ৯৫৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৬ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১১ হাজার ৬৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৪ টাকা বাড়িয়ে ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

তারও আগে গত ৯ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৯৫ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৮৮২ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৩৬ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৬১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৪৯ টাকা কমিয়ে ৯৪ হাজার ৮১৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৮ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।


অর্থবিলে ৭ পরিবর্তন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জুলাই, ২০২৪ ১৪:১১
নিজস্ব প্রতিবেদক

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুবিধা বহাল ও সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে সরে আসাসহ বেশকিছু পরিবর্তন এনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অর্থবিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। গত শনিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে পাস হয় বিলটি। বিলটি পাসের আগে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য সংশোধনী আনেন। এর মধ্যে কিছু সংশোধনী অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গ্রহণ করেন। অন্যগুলো তিনি গ্রহণ করেননি। পরে সেগুলো কণ্ঠভোটে অনুমোদন করেন সংসদ সদস্যরা।

অর্থবিলে প্রস্তাবিত বাজেটে দেওয়া ৭টি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ: ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর পরিশোধ সাপেক্ষে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল সরকার। চার বছর পর এবার আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো। অর্থবিলে ওই সুযোগ রাখা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাক না কেন কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট করহারে এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। ফলে ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই ছাড়াই কালো টাকা সাদা করতে পারবেন।

এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুবিধা বহাল: বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। বৈষম্য হ্রাসে এবারের বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। গত ৬ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব প্রকার শুল্ক কর অব্যাহতি বিদ্যমান রয়েছে। কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা হ্রাস করে কেবল আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং মূসক (মূল্য সংযোজন কর) ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্যান্য সব শুল্ক-করাদির অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করছি। এজন্য বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার সুপারিশ করছি। কিন্তু আইনগত জটিলতা ও এমপিদের দাবির মুখে ওই প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে সরকার। সংসদে পাস হওয়া অর্থবিল ২০২৪ অনুযায়ী, আগের মতোই শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা।

সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশই থাকছে: ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছিল প্রস্তাবিত বাজেটে। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসে আগের মতো ২৫ শতাংশেই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

কেবল ব্যক্তিগত একাধিক গাড়ি থাকলে সারচার্জ: প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কোম্পানির কাজে ব্যবহৃত একাধিক গাড়ির পরিবেশ সারচার্জ তুলে দিলেও শুধু ব্যক্তিগত গাড়িতে বহাল রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য পরিবেশ সারচার্জের হার ২৫ হাজার টাকা, ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য ৫০ হাজার, ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য ৭৫ হাজার, ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য দেড় লাখ টাকা, ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ৩৫০০ সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য দুই লাখ টাকা এবং এর চেয়েও বেশি সিসি বা কিলোওয়াট হলে অর্থাৎ সাড়ে তিন হাজার সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াটের অধিক প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা সারচার্জ দিতে হবে।

সর্বজনীন পেনশন করমুক্ত: সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পেনশন বাবদ যে কোনো আয় এবং পেনশন স্কিমে প্রদত্ত যে কোনো পরিমাণ চাঁদা করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে অর্থবিলে। তবে কোম্পানি, তহবিল ও ট্রাস্ট কর্তৃক অর্জিত মূলধনি আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসছে। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেটে শুধু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বিধান রাখা হয়েছিল।

কমিউনিটি সেন্টার ভাড়ায় কর শুধু সিটিতে: অর্থবিলে সারা দেশে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাব সংশোধন করে শুধু সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির মতো তহবিল ও ট্রাস্টের মূলধনি আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স বসানো হয়েছে।

অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর অবকাশ সুবিধা বহাল: অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্কে মূলধনি যন্ত্র আমদানি শুল্কমুক্তই থাকছে। অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্কারোপের প্রস্তাব করেছিলেন। রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোতে বিনিয়োগে কর অবকাশ সুবিধার কথা জানিয়েছিল সরকার। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দাবির মুখে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে সরকার।

অর্থ বিলে বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব আনার পাশাপাশি কিছু নতুন প্রস্তাবও পাস হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আয় পুরোপুরি করমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একজন করদাতা কোনো অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি কর দিলে ওই করদাতার নথি নিরীক্ষায় ফেলা হবে না। এ ছাড়া ট্রাস্টের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসবে। এবারের বাজেটে এসব যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। সুখী সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার শিরোনামে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। এতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ ভাগ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।


অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়েছে

রপ্তানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১৮ কোটি ডলার
ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাক খাতের সামগ্রিক রপ্তানি আয় চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বাড়লেও অপ্রচলিত বাজারে আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত অপ্রচলিত বাজার থেকে পোশাক পণ্যের রপ্তানি আয় ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১৮ কোটি ডলার, যা একই সময়ে আগের বছরে ছিল ৭৬৮ কোটি ৯ লাখ ডলার। মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ এসেছে নতুন বাজার থেকে।

অন্যদিকে, তৈরি পোশাকের পণ্যের সামগ্রিক রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

অপ্রচলিত বাজারের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে জাপান থেকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে জাপান থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৪৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। আগের বছর রপ্তানি হয়েছিল ১৪৫ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। সেখান থেকে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১০৬ কোটি ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকলেও রাশিয়া থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। আয় হয়েছে ৪৬ কোটি ২৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ৪০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের প্রতিবেশী এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার ভারতে পোশাক পণ্যের রপ্তানি কমেছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ৭৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরে ছিল ৯৫ কোটি ডলার।

বাংলাদেশের এক নম্বর বাণিজ্যিক অংশীদার চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। আয় হয়েছে ৩১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ২৫ কোটি ২ লাখ ডলার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে রপ্তানি বেড়েছে ৫৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে ২৭ কোটি ৩ লাখ ডলার, যা গত বছর ছিল ১৭ কোটি ২ লাখ ডলার কোরিয়ায় তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ১১ মাসে আয় হয়েছে ৫৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার। গত বছর পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের ৪৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ আসে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি আয় ইতিবাচক থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে রপ্তানি কমেছে ২ শতাংশ। জুলাই-মে সময়ে আয় হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। প্রথম ১১ মাসে আয় হয়েছে ৭৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। গত বছর একই সময় আয় হয়েছিল ৭৭৩ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আয় হয়েছে ৫১৬ কোটি ডলার, যা গত বছর ছিল ৪৫৯ কোটি ডলার।

পোশাক পণ্যের রপ্তানি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘প্রচলিত বাজারের প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা কমাতে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। ফলে নতুন বাজারে রপ্তানির হিস্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং প্রচলিত বাজারের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হারও বেশি।’ বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমরা সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারছি না। সম্ভাবনা অনুযায়ী আমরা রপ্তানি আয় বাড়াতে পারছি না। এক্ষেত্রে সরকারকে অশুল্ক বাধা দূর করা এবং রপ্তানি সহজীকরণের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। ভারত একটি বড় বাজার। কারণ এর রয়েছে অনেক বড় জনসংখ্যা। সেখানে যদি আমরা খুব সামান্য পরিমাণও মার্কেট ধরতে পারি সেটা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন হবে। সুতরাং ভারতসহ সম্ভাবনাময় সব অপ্রচলিত বাজারগুলোর প্রতি সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে এবং বাণিজ্যিক রিংগুলো কাজে লাগাতে হবে।


পোশাকশিল্পে নারীশ্রমিক কমে ৫৭ শতাংশে নেমেছে

একসময় পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের ৮০ শতাংশের বেশি ছিলেন নারী
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ জুন, ২০২৪ ১৪:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাক খাতে নারীশ্রমিকের সংখ্যা কমছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, অটোমেশন ও অন্যান্য খাতের তুলনায় মজুরি ও সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় এই খাতে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ কমে গেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, পোশাক খাতে নিযুক্ত মোট শ্রমিকের মধ্যে নারীর সংখ্যা কমে ৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

অথচ একসময় পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের ৮০ শতাংশের বেশি ছিলেন নারী। বিশেষ করে যারা গ্রামাঞ্চল থেকে রাজধানীতে এসে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করতেন তারা এই খাতে কাজ নিতেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে অন্যান্য খাতে চাকরির সুযোগ খুব সীমিত থাকায় আশির দশকে মূলত অদক্ষ নারীশ্রমিকরা পোশাক খাতের হাল ধরেন। তখন বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় অনেক কম হওয়ায় নারীশ্রমিকরা কম বেতন হলেও চাকরি নিতে আগ্রহী ছিলেন। এরপর বহু বছর ধরে পোশাক খাতে পুরুষ শ্রমিকের বিপরীতে গড়ে অন্তত দুজন নারীশ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হতো।

তবে, সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুপাত কমেছে। কারণ নারীরা এখন পোশাক কারখানায় শ্রম দেওয়ার চেয়ে করপোরেট চাকরিতে বেশি আগ্রহী।

বছরের পর বছর ধরে নারী শ্রমিকদের অবদানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প। বিশ্ব বাজারে তৈরি পোশাকের ৭ দশমিক ৯ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, নারীশ্রমিকের প্রভাব এখন কমেছে।

অটোমেশন ও স্পিনিং, উইভিং, ডাইং এবং ফিনিশিং সেক্টরের কারণে তা সম্ভব হয়েছে। এগুলো মূলত পুরুষ শ্রমিকরা পরিচালনা করে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া গত পাঁচ দশকে গ্রামাঞ্চলে শ্রমিকদের জন্য প্রচুর কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে তারা এখন জেলা পর্যায়ে বা নিজ শহরে কাজ করতে পারেন। তাই তারা পোশাক কারখানায় কাজ করতে শহরে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

তিনি বলেন, অনেক পোশাক কারখানা শ্রমিক সংকটে ভুগছে। এজন্য কেবল নারী নয়, পুরুষরাও এখন পোশাক খাতে কাজ করতে চান না।

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, কম মজুরি, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, কঠিন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ও ভারী যন্ত্রপাতি চালানোর দক্ষতার অভাবে পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, তরুণ প্রজন্ম পড়ালেখাতে আগ্রহী বেশি। তাই এ খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ার সম্ভাবনা এখন কম।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা অনেক বছর ধরে কারখানায় কাজ করার পর স্বাবলম্বী হন। তখন তারা উদ্যোক্তা হন অথবা স্বামীর সঙ্গে কৃষিকাজের মতো পারিবারিক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন, বলেন তিনি।


কর আদায় বেড়েছে ১৫ শতাংশ

তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা কম
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ জুন, ২০২৪ ১০:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে কর আদায়ে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে কর আদায়ে সরকারের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা হলো ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা। তবে, মে মাসের শেষে কর আদায় এই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা কম ছিল। আগামী ৩০ জুন অর্থবছর শেষ হবে।

একইভাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা পূরণ করা কঠিন হতে পারে।

এনবিআরের সাময়িক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে কর আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা, যা অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৭৯ শতাংশ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, চলতি মাসের রাজস্ব আদায়ের পরও কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, জুন শেষে মোট কর আদায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে, যা গত মাসের চেয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি।

এদিকে সরকার ২০২৫ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা এ বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি এবং গত পাঁচ বছরে এনবিআরের গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির ১১ শতাংশ থেকেও বেশি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে এ লক্ষ্যমাত্রা যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনি রাজস্ব বোর্ডের জন্য কঠিন কাজও বটে, বলেন তিনি।

বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে আনুমানিক ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আহসান এইচ মনসুর বলেন, কর প্রশাসনের দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ততার কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

তারা এখনো কর আদায়ের জন্য পুরোনো পদ্ধতি অনুসরণ করে, যেমনটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল।

তিনি বলেন, এখানে অটোমেশন ও সঠিক ডেটাবেজের অভাব রয়েছে। অন্যদিকে এনবিআরের অনেক কর্মকর্তা অসাধু ব্যক্তিদের কর ফাঁকিতে সহায়তা করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আহসান মনসুর এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের সভাপতি মতিউর রহমানের প্রসঙ্গ টানেন। মতিউর রহমানকে সম্প্রতি সম্পদ নিয়ে বিতর্কের জেরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

এই অর্থনীতিবিদের পরামর্শ, এনবিআরে ডিজিটালাইজেশন আনতে হলে অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে এবং যথাযথ সমন্বয় থাকতে হবে। একইসঙ্গে কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তির দিকেও নজর দেওয়া জরুরি।


নিত্যপণ্যের দামে সুখবর নেই, ক্রেতাদের মাথায় হাত

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। এক পণ্যের দাম কমলে আরেক পণ্যের দাম বাড়ছে। বাজার করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাপালে হাত। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে; আলু ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়।

আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ ও মগবাজার এলাকার বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

সবজির বাজারে গিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি পেঁপে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা, প্রতি কেজি কচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৪০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ ও লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে দেখা গেছে, গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগি ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাঙাশ ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কার্প মাছ ২৬০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, মলা মাছ ২৮০ ও কই ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাবদা মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬০ টাকায়।

এ ছাড়া ইলিশের বাজারে দেখা গেছে, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম আকারের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং এক কেজির ইলিশ এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিষয়:

আরও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম। ভরিতে ১ হাজার ৪০০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। আগামীকাল বুধবার (২৬ জুন) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।’

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৫ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৯৭৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৬ হাজার ৮৩৫ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

এর আগে, সবশেষ গত ১১ জুন ভরিতে ১ হাজার ৭৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৫ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৯ হাজার ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ২৯ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ১৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১৪ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।


এডিবি ৪ বছরে বাংলাদেশকে ২০৮০ কোটি ডলার দেবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৫ জুন, ২০২৪ ১৩:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আগামী চার বছরে বাংলাদেশকে ২০.৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৮০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ঋণ অর্থনীতির গতি বাড়িয়ে দিয়ে ১০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে ভূমিকা রাখবে। এডিবির নথি থেকে জানা যায়, এই অর্থের পরিমাণ গত চার বছরে প্রাপ্ত ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের চেয়ে ৪২.৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে মোট অর্থের ৭৮.৮৫ শতাংশ বা ১৬.৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্স (ওসিআর) হিসেবে দেওয়া হবে। বাকি ঋণ কনসেশনাল হবে। ওসিআর তহবিলের আওতায় ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২৫ বছর এবং ঋণ পরিশোধের জন্য পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারিত। এর সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) সুদহারের সঙ্গে ০.৭৫ শতাংশ চার্জ দিতে হবে। ফেডারেল রিজার্ভ অব ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ডেটা অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার সোফর ছিল ৫.৩২ শতাংশ। কনসেশনাল ঋণ পরিশোধে একই সময়সূচি থাকলেও সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শতাংশ।

নথি থেকে জানা যায়, এডিবি ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সাতটি খাতের ৯২টি প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার জন্য একটি তালিকা তৈরি করেছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫ (দক্ষিণ রুট); দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট ও দক্ষিণ করিডোর উন্নয়ন প্রকল্প (ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক) এবং ঢাকা পাওয়ার সিস্টেম সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প।

এই প্রকল্পগুলো চূড়ান্ত করতে গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর প্রস্তুতি সাপেক্ষে, ২০২৪ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে এডিবি প্রায় ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে এডিবি ২০২৪ সালের জন্য প্রায় ২.৩ বিলিয়ন বা ২৩০ কোটি ডলার, ২০২৫ সালের জন্য ৪.২ বিলিয়ন বা ৪২০ কোটি ডলার, ২০২৬ সালের জন্য ৪.৯ বিলিয়ন বা ৪৯০ কোটি ডলার এবং ২০২৭ সালের জন্য ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এডিবি ২০২৪ থেকে ২০২৭ সালের জন্য কৃষি, খাদ্য, পরিবেশ এবং গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে ১২টি প্রকল্পে ১.৮ বিলিয়ন ডলার দেবে। সে সঙ্গে জ্বালানি খাতে ১৪টি প্রকল্পের জন্য ২.৯ বিলিয়ন ডলার এবং অর্থ খাতে ১০টি প্রকল্পের জন্য ২.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে। এ ছাড়া মানব ও সামাজিক উন্নয়ন খাতের ১৫টি প্রকল্পে ৩.১ বিলিয়ন ডলার, পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট ও গভর্নেন্স সেক্টরের পাঁচটি প্রকল্পের জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলার, পরিবহন খাতে ১৮টি প্রকল্পের জন্য ৫.৯ বিলিয়ন ডলার এবং পানি ও নগর উন্নয়ন খাতের ১৮টি প্রকল্পের জন্য ২.৯ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে। এডিবি জানায়, বাংলাদেশ যে প্রধান উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত ঘাটতি, বেসরকারি খাতে কম প্রতিযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং আঞ্চলিক বৈষম্য। বাংলাদেশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষা এবং শাসন ব্যবস্থা ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বলে এডিবি মনে করে। এসব চ্যালেঞ্জে সাড়া দিয়ে ও সরকারের প্রবৃদ্ধি পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এডিবির কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি (সিপিএস) ২০২১-২৫ সালের লক্ষ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক কর্মসংস্থান তৈরি এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, সবুজয়ান ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা এবং মানব সম্পদ ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করা। বর্তমান সরকার ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করছে।


ঈদের পর ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজার

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের পর পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববারও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলল।

মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসই এবং সিএসইতে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। এর আগে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে ঈদের আগে এক মাসের মধ্যে ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় এক লাখ কোটি টাকা কমে যায়। আর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে প্রায় ৭০০ পয়েন্ট। সে সঙ্গে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে চলে আসে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। বাজারে ক্রেতা সংকট প্রকট হয়ে ওঠে।

এ পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটি শেষে পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাজারে ক্রেতা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অবশ্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দানা বাঁধা আতঙ্ক এখনো কাটেনি। ফলে দাম বাড়ার পরেই দাম কমার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

এরপর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়। লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ছয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। দিনের সর্বোচ্চ দামে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বিপুল পরিমাণ ক্রয় আদেশ আসলেও বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।

এদিকে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৪৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৫২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিন্ডে বাংলাদেশের ১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, ওরিয়ন ইনফিউশ, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিস, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইউনিক হোটেল।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৫টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত। লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।


এমএফএসে মাসিক লেনদেন ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা

গ্রাহক ২২ কোটি ৬৫ লাখ
আপডেটেড ২৩ জুন, ২০২৪ ১৩:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

হিসাব খুলতে কোনো টাকা লাগে না। শহর থেকে গ্রামে রয়েছে সার্বক্ষণিক লেনদেনের সুবিধা। কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, ঋণ নেওয়াসহ যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নানা পরিষেবা। বিদেশ থেকে আসছে রেমিট্যান্সও। ফলে বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা। গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এমএফএস অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় চলতি বছরের এপ্রিলে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এই অংক এযাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন। এর আগে একক মাসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল চলতি বছরের মার্চে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা।

গ্রাহক ২২ কোটি ৬৫ লাখ: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যাও। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ নানা নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার ৫৫৩ জন। গ্রাহক বেশি হওয়ার কারণ অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছে। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমের হিসাব খুলছেন। নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১৩ কোটি ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ও নারী ৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪১টি। এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজেই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপর ‘নগদ’-এর অবস্থান।

বিভিন্ন সেবা: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এখন গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবামাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাক খাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলে দিন দিন নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৪১ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা আর উত্তোলন হয়েছে ৪৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩৭ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আলোচিত সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় চার হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৬ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এ ছাড়া ৮৫৬ কোটি টাকার প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে মোবাইলের মাধ্যমে।


ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিচ্ছে না ৪০ শতাংশ টিআইএনধারী

আপডেটেড ২৩ জুন, ২০২৪ ১০:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন বা কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) সংখ্যা এবং প্রকৃতপক্ষে রিটার্ন জমা দেওয়া ব্যক্তির সংখ্যায় ব্যাপক ব্যবধান থাকায় দেশের রাজস্ব কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০ শতাংশ টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিলের আশা ছেড়ে দিয়েছে।

দেশে বর্তমানে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে গত ৩১ মে পর্যন্ত প্রায় ৬৭ লাখ টিআইএনধারী ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি কাগজপত্রে যে টিআইএনধারী আছেন, তাদের মধ্য থেকে ৪০ লাখের কাছ থেকে রিটার্ন পাওয়া যাবে না।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কী কী কারণে রিটার্ন জমা হচ্ছে না, এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আমরা দুই মাস আগে চেয়ারম্যানের (এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম) কাছে জমা দিয়েছি।’

রিটার্ন জমা না দেওয়া এই টিআইএনধারীদের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, একবার টিআইএন রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাইলেই যেকোনো টিআইএন বন্ধ করা যায় না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আয় না থাকলে টিআইএন স্থগিত করার একটি বিধান আনা হলেও তাতে খুব একটা কাজ হয়নি।

আয়কর বিভাগ প্রায় ৫৪ লাখ টিআইএনধারীর ট্যাক্স রিটার্ন জমা না দেওয়ার বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করেছে আয়কর বিভাগ।

কেবল জমি বিক্রয় এবং অন্যান্য সেবা গ্রহণের জন্য বাধ্য হয়ে টিআইএন নেওয়া, বাধ্য হয়ে টিআইএন নেওয়া প্রান্তিক ব্যবসায়ীর ব্যবসা বন্ধ হওয়া, মৃত্যু দীর্ঘ সময় ধরে করযোগ্য আয় না থাকা, সচেতনতার অভাব, প্রুফ অব সাবমিশন অব রিটার্ন (পিএসআর) শো করার বাধ্যবাধকতা না থাকা, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোয় করের আওতার বাইরে চলে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে আলোচ্য টিআইএনধারীদের কাছ থেকে রিটার্ন পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন কর কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করা, কোম্পানির অবসায়ন বা বিলুপ্তি, করদাতার প্রবাসে থাকা, একই ব্যক্তির দুইবার টিআইএন নেওয়া এবং টিআইএন তথ্যভাণ্ডারে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় বিপুলসংখ্যক টিআইএনের বিপরীতে রিটার্ন পাওয়া যাবে না বলে মনে করছে আয়কর বিভাগ।

করদাতারা অর্থবছরের যেকোনো সময় রিটার্ন জমা দিতে পারেন। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছে এনবিআর। যারা এই সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে পারেননি তারা পরেও জরিমানা পরিশোধ করে অথবা মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

এনবিআরের প্রতিবেদনে একটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ১০ লাখ টিআইএনধারী আছেন, যারা নতুন করে টিআইএন নিয়েছেন এবং তাদের রিটার্ন দেওয়ার সময় আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর। ফলে বাধ্য না হওয়ায় তারা রিটার্ন দেননি।

জমি বিক্রয়ের সময় বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে টিআইএন নিয়েছেন কিন্তু রিটার্ন জমা দেননি এমন সংখ্যা অন্তত ৫ লাখ ২৮ হাজার। এসব টিআইএনধারীর বেশির ভাগের কাছ থেকেই রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এ ছাড়া বিভিন্ন অফিসে সেবা গ্রহণের জন্য বাধ্য হয়ে টিআইএন নিয়েছেন কিন্তু রিটার্ন জমা দেননি প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার।

সচেতনতার অভাবে রিটার্ন জমা দেননি প্রায় ৩ লাখ। ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া প্রান্তিক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা পরবর্তী সময় ব্যবসা বন্ধ হওয়ার কারণে রিটার্ন জমা দেননি- এই সংখা আড়াই লাখের বেশি।

এ ছাড়া মৃত্যুবরণ করা প্রায় আড়াই লাখ টিআইএনধারী আছেন, যাদের উত্তরাধিকারদের কাছ থেকে ওই টিআইএনের বিপরীতে রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনাও কম দেখছেন কর কর্মকর্তারা। অন্যদিকে করযোগ্য আয় নেই, এমন দুই লাখের বেশি টিআইএনধারীরও রিটার্ন দিচ্ছেন না। ২ লাখ টাকা পর্যন্ত সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট কিনেছেন কিন্তু রিটার্ন জমা দেননি, এমন আছেন ২ লাখের বেশি।

এ ছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন কারণে সব মিলিয়ে আরও ১১ লাখের বেশি টিআইএনধারীর রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে না।

রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসি) নিবন্ধিত প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার কোম্পানি রিটার্ন জমা দেয়নি।

যৌক্তিক কারণে যারা ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে পারবেন না, এনবিআরের তথ্যভাণ্ডার থেকে তাদের টিআইএন মুছে ফেলার সুপারিশ করেন বিশেষজ্ঞরা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, মৃত্যু বা বয়স হওয়াসহ যৌক্তিক কারণে যাদের কাছ থেকে ট্যাক্স রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, ওই সব টিআইএন শনাক্ত করে তা এনবিআরের ডাটা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। আর যাদের করযোগ্য আয় নেই কিন্তু রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা আছে, তাদের জন্য সহজ এবং সংক্ষিপ্ত একটি রিটার্ন জমার সুযোগ থাকা উচিত।

আইনগতভাবে এর একটি সমাধান করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশেও টিআইএন সহজে বাতিল করার সুযোগ কম। কিন্তু সেখানে পুরো ব্যবস্থাপনা অটোমেটেড হওয়ায় যেকোনো কার্যক্রম সহজে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে তা খুবই কঠিন।


ক্রেতা নেই, তবুও চড়া সবজির দাম

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২১ জুন, ২০২৪ ১৩:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটি শেষে বাড়ি থেকে এখনও রাজধানীতে ফেরেননি অনেক মানুষ। ফলে বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ। বাজারে ক্রেতাও কম। তবুও চড়া ব্রয়লার মুরগি, ডিম, আলু, কাঁচামরিচ, শসা, টমেটোসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। ঈদুল আজহার পর হুড়হুড় করে ঢাকার বাজারে বেড়েই চলেছে কাঁচামরিচের দাম।

প্রতি কেজি মরিচের দাম এখন ঠেকেছে ৪০০ টাকাতে। তবে দেশি ও হাইব্রিড মরিচের দামে কিছুটা তারতম্য রয়েছে। আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মুগদা, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়ায় কাঁচা মরিচের এই দাম দেখা গেছে। স্থানভেদে প্রতি কেজি দেশি কাঁচা মরিচের দাম ৪০০ টাকা আর হাইব্রিড মরিচের দাম চাওয়া হচ্ছে ৩২০ টাকা।

দোকানিরা জানান, ঈদের আগে কারওয়ানবাজারে প্রতিপাল্লা (পাঁচ কেজি) কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম পড়েছে ৮০০ টাকা। এখন সেই মরিচের দাম পড়ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। আর দেশি মরিচ প্রতি পাল্লার দাম পড়ছে এক হাজার ৫০০ থেকে এক ৬০০ টাকা। যে কারণে খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ৩২০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া সবজির বাজারে দেখা গেছে, কাঁকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কচুর লতা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করোল্লা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচু মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৬০ টাকা এবং ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


banner close